আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ

৪৭- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল

হাদীস নং: ৬২৬১
৫৫. উওয়াইস করনী (রাহঃ) এর ফযীলত
৬২৬১। ইসহাক ইবনে ইবরাহীম হানযালী, মুহাম্মাদ ইবনে মুসান্না ও মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার (রাহঃ) ......... উসায়র ইবনে জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উমর ইবনে খাত্তাব (রাযিঃ) এর অভ্যাস ছিল, যখন ইয়ামানের কোন সাহায্যকারী দল তার কাছে আসত তখন তিনি তাঁদের জিজ্ঞাসা করতেন, তোমাদের মধ্যে কি উওয়াইস ইবনে আমির আছে? অবশেষে তিনি উওয়াসকে পান। তখন তিনি বললেন, তুমি কি উওয়াইস ইবনে আমির? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, মুরাদ গোত্রের কারান বংশের? বললেন, হ্যাঁ। জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার কি শ্বেত রোগ ছিল এবং তা নিরাময় হয়েছে, কেবলমাত্র এক দিরহাম স্থান ব্যতীত? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার মা কি আছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ।

তখন উমর (রাযিঃ) বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ “তোমাদের কাছে মুরাদ গোত্রের কারান বংশের উওয়াইস ইবনে আমির ইয়ামানের সাহায্যকারী দলের সঙ্গে আসবে। তাঁর ছিল শ্বেত রোগ। পরে তা নিরাময় হয়ে গিয়েছে। কেবলমাত্র এক দিরহাম ব্যতিরেকে। তার মা রয়েছেন। সে তাঁর প্রতি অতি সেবাপরায়ন। এমন ব্যক্তি আল্লাহর উপর কসম করে নিলে আল্লাহ তা পূর্ণ করে দেন। কাজেই যদি তুমি তোমার জন্য তার কাছে মাগফিরাতের দুআ কামনার সুযোগ পাও তাহলে তা করবে।” সুতরাং আপনি আমার জন্য মাগফিরাতের দুআ করুন।

তখন উওয়াইস (রাহঃ) তার মাগফিরাতের জন্য দুআ করলেন। এরপর উমর (রাযিঃ) তাকে বললেন, তুমি কোথায় যেতে চাও? তিনি বললেন, কুফা এলাকায়। উমর (রাযিঃ) বললেন, আমি কি তোমার জন্য কুফার গভর্ণরের কাছে চিঠি লিখে দেব? তিনি বললেন, আমি অখ্যাত গরীব লোকদের মধ্যে থাকাই পছন্দ করি।

বর্ণনাকারী বলেন, পরবর্তী বছরে তাদের অভিজাত লোকদের মধ্যে এক ব্যক্তি হজ্জ করতে এলো এবং উমর (রাযিঃ) এর সঙ্গে তার সাক্ষাত হল। তখন তিনি তাকে উওয়াইস কারানী (রাহঃ) এর অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। সে বলল, আমি তাঁকে জীর্ণ ঘরে সম্পদহীন অবস্থায় রেখে এসেছি। তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেছেনঃ তোমাদের কাছে কারান বংশের মুরাদ গোত্রের উওয়াইস ইবনে আমির (রাহঃ) ইয়ামানের সাহায্যকারীর সেনাদলের সঙ্গে আসবে। তার শ্বেত রোগ ছিল। সে তা থেকে আরোগ্য লাভ করে, এক দিরহাম পরিমাণ স্থান ব্যতীত। তাঁর মা রয়েছেন, সে তার অতি সেবাপরায়ণ। যদি সে আল্লাহর নামে কসম খায় তবে আল্লাহ তাআলা তা পূর্ণ করে দেন। তোমরা নিজের জন্য তাঁর কাছে মাগফিরাতের দুআ চাওয়ার সুযোগ পেলে তা করবে।

পরে অভিজাত সে ব্যক্তি উওয়াইস (রাহঃ) এর কাছে এল এবং বলল, আমার জন্য মাগফিরাত এর দুআ করুন। তিনি বললেন, আপনি তো নেক সফর (হজ্জের সফর) থেকে সদ্য আগত। সুতরাং আপনি আমার জন্য মাগফিরাতের দুআ করুন। সে ব্যক্তি বলল আপনি আমার জন্য মাগফিরাতের এর দুআ করুন। উওয়াইস (রাহঃ) বললেন, আপনি সদ্য নেক সফর থেকে এসেছেন আপনি আমার জন্য মাগফিরাতের এর দুআ করুন।

এরপর তিনি বললেন। আপনি কি উমর (রাযিঃ) এর সাক্ষাত লাভ করেছেন? সে বললঃ হ্যাঁ। তখন তিনি তার জন্য মাগফিরাতের দুআ করলেন। তখন লোকেরা তার (মর্যাদা) সম্পর্কে অবহিত হল। তারপর তিনি যেদিকে মুখ সেদিকে চললেন (অর্থাৎ নিরুদ্দেশ হয়ে গেলেন)। উসাইর (রাহঃ) বলেন, আমি তাকে একখানি ডোরাদার চাদর দিয়েছিলাম। এরপর যখন কোন ব্যক্তি তাকে দেখত তখন বলত, উওয়াসার এই চাদরখানি কোথায় গেল?
باب مِنْ فَضَائِلِ أُوَيْسٍ الْقَرَنِيِّ رضى الله عنه
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْحَنْظَلِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَمُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، - قَالَ إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ، حَدَّثَنَا - وَاللَّفْظُ، لاِبْنِ الْمُثَنَّى - حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى، عَنْ أُسَيْرِ بْنِ جَابِرٍ، قَالَ كَانَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ إِذَا أَتَى عَلَيْهِ أَمْدَادُ أَهْلِ الْيَمَنِ سَأَلَهُمْ أَفِيكُمْ أُوَيْسُ بْنُ عَامِرٍ حَتَّى أَتَى عَلَى أُوَيْسٍ فَقَالَ أَنْتَ أُوَيْسُ بْنُ عَامِرٍ قَالَ نَعَمْ . قَالَ مِنْ مُرَادٍ ثُمَّ مِنْ قَرَنٍ قَالَ نَعَمْ . قَالَ فَكَانَ بِكَ بَرَصٌ فَبَرَأْتَ مِنْهُ إِلاَّ مَوْضِعَ دِرْهَمٍ قَالَ نَعَمْ . قَالَ لَكَ وَالِدَةٌ قَالَ نَعَمْ . قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " يَأْتِي عَلَيْكُمْ أُوَيْسُ بْنُ عَامِرٍ مَعَ أَمْدَادِ أَهْلِ الْيَمَنِ مِنْ مُرَادٍ ثُمَّ مِنْ قَرَنٍ كَانَ بِهِ بَرَصٌ فَبَرَأَ مِنْهُ إِلاَّ مَوْضِعَ دِرْهَمٍ لَهُ وَالِدَةٌ هُوَ بِهَا بَرٌّ لَوْ أَقْسَمَ عَلَى اللَّهِ لأَبَرَّهُ فَإِنِ اسْتَطَعْتَ أَنْ يَسْتَغْفِرَ لَكَ فَافْعَلْ " . فَاسْتَغْفِرْ لِي . فَاسْتَغْفَرَ لَهُ . فَقَالَ لَهُ عُمَرُ أَيْنَ تُرِيدُ قَالَ الْكُوفَةَ . قَالَ أَلاَ أَكْتُبُ لَكَ إِلَى عَامِلِهَا قَالَ أَكُونُ فِي غَبْرَاءِ النَّاسِ أَحَبُّ إِلَىَّ . قَالَ فَلَمَّا كَانَ مِنَ الْعَامِ الْمُقْبِلِ حَجَّ رَجُلٌ مِنْ أَشْرَافِهِمْ فَوَافَقَ عُمَرَ فَسَأَلَهُ عَنْ أُوَيْسٍ قَالَ تَرَكْتُهُ رَثَّ الْبَيْتِ قَلِيلَ الْمَتَاعِ . قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " يَأْتِي عَلَيْكُمْ أُوَيْسُ بْنُ عَامِرٍ مَعَ أَمْدَادِ أَهْلِ الْيَمَنِ مِنْ مُرَادٍ ثُمَّ مِنْ قَرَنٍ كَانَ بِهِ بَرَصٌ فَبَرَأَ مِنْهُ إِلاَّ مَوْضِعَ دِرْهَمٍ لَهُ وَالِدَةٌ هُوَ بِهَا بَرٌّ لَوْ أَقْسَمَ عَلَى اللَّهِ لأَبَرَّهُ فَإِنِ اسْتَطَعْتَ أَنْ يَسْتَغْفِرَ لَكَ فَافْعَلْ " . فَأَتَى أُوَيْسًا فَقَالَ اسْتَغْفِرْ لِي . قَالَ أَنْتَ أَحْدَثُ عَهْدًا بِسَفَرٍ صَالِحٍ فَاسْتَغْفِرْ لِي . قَالَ اسْتَغْفِرْ لِي . قَالَ أَنْتَ أَحْدَثُ عَهْدًا بِسَفَرٍ صَالِحٍ فَاسْتَغْفِرْ لِي . قَالَ لَقِيتَ عُمَرَ قَالَ نَعَمْ . فَاسْتَغْفَرَ لَهُ . فَفَطِنَ لَهُ النَّاسُ فَانْطَلَقَ عَلَى وَجْهِهِ . قَالَ أُسَيْرٌ وَكَسَوْتُهُ بُرْدَةً فَكَانَ كُلَّمَا رَآهُ إِنْسَانٌ قَالَ مِنْ أَيْنَ لأُوَيْسٍ هَذِهِ الْبُرْدَةُ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

হযরত উয়ায়স আল-কারনী রহ. একজন উচ্চস্তরের আল্লাহওয়ালা ছিলেন। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগ পেয়েছিলেন। কিন্তু মায়ের খেদমতে নিয়োজিত থাকায় তাঁর পক্ষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাক্ষাতলাভ সম্ভব হয়নি। ফলে সাহাবী হওয়ার সৌভাগ্য তিনি লাভ করতে পারেননি। তবে তাবি‘ঈ হিসেবে তাঁর মর্যাদা অতি উচ্চে।

হাদীছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উক্তি বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি শ্রেষ্ঠতম তাবি'ঈ। অবশ্য সর্বশ্রেষ্ঠ তাবি'ঈ কে, এ সম্পর্কে বিভিন্ন মত আছে। কারও মতে হযরত সাঈদ ইবনুল মুসায়্যিব রহ.। কারও মতে হযরত যায়নুল আবিদীন আলী ইবনুল হুসায়ন রহ.। তাছাড়া আবূ উছমান নাহ্দী রহ., আলকামা রহ কায়স ইবন আবী হাযিম রহ. ও হাসান বসরী রহ.-কেও শ্রেষ্ঠতম তাবি'ঈ বলা হয়েছে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে যেহেতু স্পষ্টভাবে উয়ায়স আল-কারনী রহ.-কে শ্রেষ্ঠ তাবি'ঈর সনদ দেওয়া হয়েছে, তখন সাধারণভাবে তাঁকেই শ্রেষ্ঠ তাবি‘ঈ গণ্য করা উচিত। অন্য যাদেরকে শ্রেষ্ঠ বলা হয়েছে, তা বিশেষ বিশেষ বিবেচনায়। যেমন হযরত সাঈদ ইবনুল মুসায়্যিব রহ. শ্রেষ্ঠ ছিলেন তাফসীর, হাদীছ প্রভৃতি ইলমের বিবেচনায়। হযরত আলকামা রহ. শ্রেষ্ঠ ছিলেন ফকীহ হিসেবে। হযরত হাসান বসরী রহ. শ্রেষ্ঠ ছিলেন ইলম, যুহদ ইত্যাদির বিচারে। এভাবে একেকজন একেক বিবেচনায় শ্রেষ্ঠ তাবি'ঈ ছিলেন। কিন্তু আল্লাহ তাআলার কাছে মর্যাদা ও নৈকট্যের দিক থেকে উয়ায়স আল-কারনী রহ.-ই সবার সেরা।

উয়ায়স আল-কারনী রহ.-এর এত উচ্চমর্যাদার কারণ বিবিধ। তার মধ্যে সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য তাঁর মাতৃভক্তি। মায়ের সেবাযত্নে নিয়োজিত থাকার কারণে এমনকি তিনি সাহাবী হওয়ার সৌভাগ্যলাভকে পর্যন্ত ত্যাগ করেছিলেন।

তাঁর একটি বিশেষ গুণ ছিল প্রচারবিমুখতা। তিনি নিভৃত, অজ্ঞাত ও অখ্যাত জীবন ভালোবাসতেন। যেমন হাদীছে তাঁর এ উক্তি উদ্ধৃত হয়েছে যে- أَكُونُ فِي غَبْرَاءِ النَّاسِ أَحَبُّ إِلَيَّ (আমি গরীব ও অখ্যাত লোকদের একজন হয়ে থাকাই বেশি পসন্দ করি)। ফলে যখন তাঁর সম্পর্কে জানাজানি হয়ে গেল, তখন সম্পূর্ণ নিরুদ্দেশ হয়ে গেলেন। বিভিন্ন হাদীছ দ্বারা জানা যায়, অখ্যাত অজ্ঞাত থাকা আল্লাহ তাআলার কাছেও পসন্দ।

হযরত উয়ায়স রহ. ছিলেন অত্যন্ত দুনিয়াবিমুখ। দুনিয়ার প্রতি তাঁর বিন্দুমাত্র আসক্তি ও লোভ-লালসা ছিল না। খুবই গরীবানা হালে দিন কাটাতেন। হযরত উমর ফারূক রাযি. তাঁর সম্পর্কে ‍কূফার আমীরকে কিছু লিখে দিতে চাইলে তিনি তাতে অসম্মতি জানান এবং সাধারণ জীবনযাপনের প্রতিই নিজ আগ্রহ ব্যক্ত করেন। এসব গুণের প্রত্যেকটিই আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি ও নৈকট্যলাভের অতি বড় উপায়।

হাদীছে আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত উমর ফারূক রাযি.-কে হুকুম দিয়েছিলেন- যদি উয়ায়সের সাক্ষাত পান, তবে তার কাছে যেন গুনাহমাফীর দুআ চান।
এর দ্বারা এ কথা বোঝার কোনও সুযোগ নেই যে, তিনি হযরত উমর রাযি.-এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ ছিলেন। উয়ায়স আল-কারনী রহ. অনেক বড় বুযুর্গ ছিলেন বটে, কিন্তু ছিলেন তিনি একজন তাবি'ঈ। যে-কোনও তাবি'ঈ অপেক্ষা যে-কোনও সাহাবীর মর্যাদা অনেক উপরে। হযরত উমর ফারূক রাযি. শুধু সাহাবীই নন; সাহাবীদের মধ্যেও সর্বোচ্চ স্তরের। তিনি হযরত আবূ বকর সিদ্দীক রাযি.-এর পরেই এ উম্মতের শ্রেষ্ঠতম ব্যক্তি। কাজেই তাঁর তুলনায় কোনও তাবি'ঈ বা অন্য কোনও ওলী-বুযুর্গের শ্রেষ্ঠ হওয়ার প্রশ্নই আসে না।

বস্তুত উয়ায়স আল-কারনী রহ.-এর কাছে গুনাহমাফীর দুআ চাইতে বলা হয়েছে বাড়তি ফযীলতলাভের উদ্দেশ্যে। আল্লাহ তাআলার নৈকট্য ও সন্তুষ্টির স্তর পরিক্রমার কোনও সীমা-পরিসীমা নেই। তাই নৈকট্যের কোনও স্তরে পৌঁছে ক্ষান্ত ও পরিতৃপ্ত হয়ে যাওয়ারও অবকাশ নেই। এ পথের অভিযাত্রীগণ আল্লাহ তাআলার নৈকট্যের যত উচ্চতায় উপনীত হতে থাকেন, ততই তাদের আরও উচ্চতায় উন্নীত হওয়ার আগ্রহ অদম্য হয়ে ওঠে। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর প্রিয় সাহাবীদেরকে সে অদম্য আগ্রহে উদ্দীপিত করে তোলার প্রতি লক্ষ রাখতেন। উয়ায়স আল-কারনীর কাছে দুআ চাওয়ার উপদেশদান সেরকমই এক প্রণোদনাবিশেষ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও তো একবার হযরত উমর ফারূক রাযি.-কে বলেছিলেন-

لاَ تَنْسَنَا يَا أَخَيَّ مِنْ دُعَائِكَ

(ওহে প্রিয় ভাই! তোমার দুআয় আমাদের ভুলে যেও না),

তিনি আমাদেরকেও উৎসাহ দিয়েছেন যেন তাঁর জন্য রহমতের দুআ করি এবং তাঁর প্রতি সালাত ও সালাম পাঠ করি। আমাদেরকে তাঁর জন্য ওয়াসীলা ও মাকামে মাহমূদের দুআ করার শিক্ষাদান করা হয়েছে।

সুতরাং ছোট বড়'র কাছে, বড় ছোট'র কাছে, সাধারণ ব্যক্তি বুযুর্গের কাছে এবং বুযুর্গ ব্যক্তি সাধারণ লোকের কাছে, এমনিভাবে যে-কেউ যে-কারও কাছে দুআ চাইতে পারে। অবশ্য বিভিন্ন হাদীছ দ্বারা বিশেষভাবে আল্লাহওয়ালা ও নেককার ব্যক্তিদের কাছে দুআ চাওয়ার প্রতি উৎসাহ পাওয়া যায়।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. পিতা-মাতার সেবাযত্ন করা আল্লাহ তাআলার নৈকট্য ও সন্তুষ্টিলাভের একটি উপায়।

খ. প্রচারবিমুখ থাকা আল্লাহওয়ালাদের বৈশিষ্ট্য। এটি ইখলাস রক্ষার পক্ষে সহায়ক।

গ. তুচ্ছ বেশভূষা ও গরীবী হাল দেখে কাউকে হেলা করতে নেই, বাস্তবিকপক্ষে সে আল্লাহ তাআলার অনেক প্রিয় ও নৈকট্যপ্রাপ্ত বান্দা হতে পারে।

ঘ. আল্লাহওয়ালা ও নেককার ব্যক্তিদের কাছে দুআ চাওয়া উচিত, বিশেষত নিজ গুনাহমাফীর জন্য।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন
সহীহ মুসলিম - হাদীস নং ৬২৬১ | মুসলিম বাংলা