আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
৪৭- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
হাদীস নং: ৬১৭১
আন্তর্জাতিক নং: ২৪৯১
৩৫. আবু হুরায়রা আদ-দুসী (রাযিঃ) এর ফযীলত
৬১৭১। আমর আন-নাকিদ (রাহঃ) ......... আবু কাসীর থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বর্ণনা করেছেন যেন, আমি আমার মাকে ইসলামের প্রতি আহবান জানাতাম, তখন তিনি মুশরিক ছিলেন। একদিন আমি তাকে ইসলাম কবুলের জন্য আহবান জানালাম। তখন তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সম্পর্কে আমাকে এমন এক কথা শোনালেন যা আমার কাছে খুবই অপ্রিয় ছিল। আমি কাঁদতে কাঁদতে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে এলাম। আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি আমার মাকে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে আসছিলাম। আর তিনি অস্বীকার করে আসছিলেন। এরপর আমি তাকে আজ দাওয়াত দেওয়াতে তিনি আমাকে আপনার সম্পর্কে এমন কথা শোনালেন, যা আমি পছন্দ করি না। সুতরাং আপনি আল্লাহর কাছে দুআ করুন যেন তিনি আবু হুরায়রার মাকে হিদায়াত দান করেন।
তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ “হে আল্লাহ! আবু হুরায়রার মাকে হিদায়াত দান কর”। নবী (ﷺ) এর দুআর কারণে আমি খুশি মনে বেরিয়ে এলাম। যখন আমি (ঘরের) দরজায় পৌঁছলাম তখন তা বন্ধ দেখতে পেলাম। আমার মা আমার পায়ের আওয়াজ শুনতে পেলেন। তিনি বললেন, আবু হুরায়রা! একটু দাড়াও (থাম)। তখন আমি পানির কলকল শব্দ শুনছিলাম। তিনি বলেন, এরপর তিনি (আমার মা) গোসল করলেন এবং গায়ে চাঁদর পরলেন। আর তড়িঘড়ি করে দোপাট্টা ও ওড়না জড়িয়ে নিলেন, এরপর ঘরের দরজা খুলে দিলেন।
এরপর বললেন, “হে আবু হুরায়রা! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতিত কোন ইলাহ নেই, আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (ﷺ) তাঁর বান্দা ও রাসুল”। তিনি বলেন, তখন আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর খিদমতে রওয়ানা হলাম। এরপর তাঁর কাছে গেলাম এবং আমি তখন আনন্দে কাঁদছিলাম। তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সুসংবাদ গ্রহণ করুন। আল্লাহ আপনার দুআ কবুল করেছেন এবং আবু হুরায়রার মাকে হিদায়াত দান করেছেন। তখন তিনি আল্লাহর শুকর আদায় করলেন ও তাঁর প্রশংসা করলেন এবং ভাল ভাল (কথা) বললেন।
তিনি বলেন, এরপর আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি আল্লাহর কাছে দুআ করুন, তিনি যেন আমাকে এবং আমার মাকে মু’মিন বান্দাদের কাছে প্রিয় করেন এবং তাদের ভালবাসা আমাদের অন্তরে বদ্ধমূল করে দেন। তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন, এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ “হে আল্লাহ! তোমার এই বান্দা (আবু হুরায়রা) কে এবং তাঁর মাকে মুমিন বান্দাদের কাছে প্রিয়ভাজন করে দাও এবং তাদের কাছেও মুমিন বান্দাদের প্রিয় করে দাও”। এরপর এমন কোন মুমিন বান্দা সৃষ্টি হয়নি, যে আমার কথা শুনেছে অথবা আমাকে দেখেছে অথচ আমাকে ভালোবাসেনি।
তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ “হে আল্লাহ! আবু হুরায়রার মাকে হিদায়াত দান কর”। নবী (ﷺ) এর দুআর কারণে আমি খুশি মনে বেরিয়ে এলাম। যখন আমি (ঘরের) দরজায় পৌঁছলাম তখন তা বন্ধ দেখতে পেলাম। আমার মা আমার পায়ের আওয়াজ শুনতে পেলেন। তিনি বললেন, আবু হুরায়রা! একটু দাড়াও (থাম)। তখন আমি পানির কলকল শব্দ শুনছিলাম। তিনি বলেন, এরপর তিনি (আমার মা) গোসল করলেন এবং গায়ে চাঁদর পরলেন। আর তড়িঘড়ি করে দোপাট্টা ও ওড়না জড়িয়ে নিলেন, এরপর ঘরের দরজা খুলে দিলেন।
এরপর বললেন, “হে আবু হুরায়রা! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতিত কোন ইলাহ নেই, আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (ﷺ) তাঁর বান্দা ও রাসুল”। তিনি বলেন, তখন আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর খিদমতে রওয়ানা হলাম। এরপর তাঁর কাছে গেলাম এবং আমি তখন আনন্দে কাঁদছিলাম। তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সুসংবাদ গ্রহণ করুন। আল্লাহ আপনার দুআ কবুল করেছেন এবং আবু হুরায়রার মাকে হিদায়াত দান করেছেন। তখন তিনি আল্লাহর শুকর আদায় করলেন ও তাঁর প্রশংসা করলেন এবং ভাল ভাল (কথা) বললেন।
তিনি বলেন, এরপর আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি আল্লাহর কাছে দুআ করুন, তিনি যেন আমাকে এবং আমার মাকে মু’মিন বান্দাদের কাছে প্রিয় করেন এবং তাদের ভালবাসা আমাদের অন্তরে বদ্ধমূল করে দেন। তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন, এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ “হে আল্লাহ! তোমার এই বান্দা (আবু হুরায়রা) কে এবং তাঁর মাকে মুমিন বান্দাদের কাছে প্রিয়ভাজন করে দাও এবং তাদের কাছেও মুমিন বান্দাদের প্রিয় করে দাও”। এরপর এমন কোন মুমিন বান্দা সৃষ্টি হয়নি, যে আমার কথা শুনেছে অথবা আমাকে দেখেছে অথচ আমাকে ভালোবাসেনি।
باب مِنْ فَضَائِلِ أَبِي هُرَيْرَةَ الدَّوْسِيِّ رضى الله عنه
حَدَّثَنَا عَمْرٌو النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ يُونُسَ الْيَمَامِيُّ، حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، عَنْ أَبِي كَثِيرٍ، يَزِيدَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ حَدَّثَنِي أَبُو هُرَيْرَةَ، قَالَ كُنْتُ أَدْعُو أُمِّي إِلَى الإِسْلاَمِ وَهِيَ مُشْرِكَةٌ فَدَعَوْتُهَا يَوْمًا فَأَسْمَعَتْنِي فِي رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَا أَكْرَهُ فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا أَبْكِي قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي كُنْتُ أَدْعُو أُمِّي إِلَى الإِسْلاَمِ فَتَأْبَى عَلَىَّ فَدَعَوْتُهَا الْيَوْمَ فَأَسْمَعَتْنِي فِيكَ مَا أَكْرَهُ فَادْعُ اللَّهَ أَنْ يَهْدِيَ أُمَّ أَبِي هُرَيْرَةَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " اللَّهُمَّ اهْدِ أُمَّ أَبِي هُرَيْرَةَ " . فَخَرَجْتُ مُسْتَبْشِرًا بِدَعْوَةِ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا جِئْتُ فَصِرْتُ إِلَى الْبَابِ فَإِذَا هُوَ مُجَافٌ فَسَمِعَتْ أُمِّي خَشْفَ قَدَمَىَّ فَقَالَتْ مَكَانَكَ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ . وَسَمِعْتُ خَضْخَضَةَ الْمَاءِ قَالَ - فَاغْتَسَلَتْ وَلَبِسَتْ دِرْعَهَا وَعَجِلَتْ عَنْ خِمَارِهَا فَفَتَحَتِ الْبَابَ ثُمَّ قَالَتْ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ - قَالَ - فَرَجَعْتُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَتَيْتُهُ وَأَنَا أَبْكِي مِنَ الْفَرَحِ - قَالَ - قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَبْشِرْ قَدِ اسْتَجَابَ اللَّهُ دَعْوَتَكَ وَهَدَى أُمَّ أَبِي هُرَيْرَةَ . فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَقَالَ خَيْرًا - قَالَ - قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ ادْعُ اللَّهَ أَنْ يُحَبِّبَنِي أَنَا وَأُمِّي إِلَى عِبَادِهِ الْمُؤْمِنِينَ وَيُحَبِّبَهُمْ إِلَيْنَا - قَالَ - فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " اللَّهُمَّ حَبِّبْ عُبَيْدَكَ هَذَا - يَعْنِي أَبَا هُرَيْرَةَ وَأُمَّهُ - إِلَى عِبَادِكَ الْمُؤْمِنِينَ وَحَبِّبْ إِلَيْهِمُ الْمُؤْمِنِينَ " . فَمَا خُلِقَ مُؤْمِنٌ يَسْمَعُ بِي وَلاَ يَرَانِي إِلاَّ أَحَبَّنِي .
