আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ

৩৭- পানাহার ও পানীয় দ্রব্যাদীর বিবরণ

হাদীস নং: ৫১৯২
আন্তর্জাতিক নং: ২০৫৭-১
৩১. মেহমানের সমাদর করা ও তাকে প্রাধন্য দেওয়ার ফযীলত
৫১৯২। উবাইদুল্লাহ ইবনে মু’আয আম্বারী, হামিদ ইবনে উমর বাকারাবী ও মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল আলা কায়সী (রাহঃ) ......... আব্দুর রহমান ইবনে আবু বকর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে আসহাবে সুফফায় অবস্থানকারী লোকজন ছিলেন দরিদ্র। তাই রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একবার বললেনঃ যার নিকট দুজেনের খাবার আছে সে যেন তিন (তৃতীয়) একজনকে নিয়ে যায়। আর যার কাছে চারজনের খাবার আছে, সে যেন পঞ্চম কিংবা ষষ্ঠ ব্যক্তিকে নিয়ে যায়। অথবা বর্ণনাকারী যেভাবে বর্ণনা করেছেন।

রাবী বলেন, আবু বকর (রাযিঃ) তিন জন কে নিয়ে আললেন। আর আল্লাহর নবী (ﷺ) দশজনকে নিয়ে রওয়ানা হলেন।আবু বকর (রাযিঃ) তিন জন কে নিলেন এ কারণে যে, (আমাদের পরিবারে আমরা ছিলাম) তিনজন। আমি, আমার পিতা ও আমার মাতা। বর্ণনাকারী বলেন, আমি জানি না, তিনি বলেছেন, কি না যে, আমার স্ত্রী। আর ছিল আমাদের ও আবু বকরের বাড়িতে শরিক খাদিম। রাবী বলেন, আবু বকর (রাযিঃ) নবী (ﷺ) এর ওখানে রাতের খানা খেলেন। এরপর তিনি অপেক্ষা করলেন। অবশেষে ইশার নামায আদায় করা হলো। নামায থেকে প্রত্যাবর্তন করে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর তন্দ্রাচন্ন হওয়া পর্যন্ত তিনি অপেক্ষা করলেন। তারপর আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী রাতের একটি পরিমাণ অতিবাহিত হলে তিনি (ঘরে) ফিরে আসলেন।

তাঁর স্ত্রী তাঁকে বললেন, মেহমান রেখে দেরী করলেন কেন? তিনি বললেন, কেন? তুমি কি তাঁদের রাতের খাবার খাওয়াও নি? তাঁর স্ত্রী বললেন আপনি না আসা পর্যন্ত তাঁরা আহার করতে অস্বীকার করেছেন। (কয়েকবারই) খাবার পেশ করা হয়েছে কিন্তু মেহমানরা তাঁদের (বাড়ির লোকদের) মধ্যস্থ করেছেন তারা তাদের কথা থেকে হটেননি। আব্দুর রহমান (রাযিঃ) বলেন, আমি গিয়ে লুকিয়ে রইলাম তিনি বললেন, হে নির্বোধ! তারপর তিনি আমাকে বকাবকি করলেন। আর (মেহমানদের) বললেন, ভাল হলো না। আপনারা আহার করুন। তিনি আরও বললেন, আল্লাহর কসম! আমি এ আহার গ্রহণ করবো না।

তিনি [আব্দুর রহমান (রাযিঃ)] বলেন, আল্লাহর শপথ! আমরা যে লোকমাই গ্রহণ করছিলাম তার নীচে তার চেয়ে অধিক পরিমাণে বেড়ে যাচ্ছিল। এমনকি আমরা পরিতৃপ্ত হয়েও আমাদের খাদ্য পূর্বে যা ছিল তার চেয়ে অনেক বেশী হয়ে গেল। আবু বকর (রাযিঃ) খাবারের প্রতি লক্ষ্য করে দেখলেন, তা যেমন ছিল তেমনি আছে বা তার চেয়েও অধিক হয়েছে। তিনি তাঁর স্ত্রীকে বললেন, হে বনী ফিরাসের বোন, একি ব্যাপার! তিনি বললেন, কিছু না। আমার চোখের প্রশান্তি, এগুলি পূর্বে যা ছিল তার চেয়ে তিন গুণ বেড়ে গেছে। আব্দুর রহমান বলেন, এরপর আবু বকর (রাযিঃ) কিছু খেলেন এবং বললেন, ওটা অর্থাৎ কসমটা ছিল শয়তানের পক্ষ থেকে। অতঃপর আরও এক লুকমা খেলেন। তারপর সেগুলো রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে নিয়ে গেলেন। আমিও তাঁর কাছে সকাল পর্যন্ত থাকলাম।

তিনি বলেন, আমাদের এবং কোন এক সম্প্রদায়ের মাঝে একটি চুক্তি ছিল। চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেল। প্রতিপক্ষ চুক্তি নবায়নের জন্য আগমন করল। আমরা তাদের বারজনের নেতৃত্বে বিভক্ত করলাম। প্রত্যেক ব্যক্তির সাথে অনেক লোক ছিল। আল্লাহই ভাল জানেন, প্রত্যেক ব্যক্তির সাথে কতজন লোক ছিল। তাদের প্রত্যেকের নিকট এ খাবার পাঠানো হলো। আর তারা সকলেই সে খাবার খেলেন। অথবা বর্ণনাকারী যেভাবে বর্ণনা করেছেন।
باب إِكْرَامِ الضَّيْفِ وَفَضْلِ إِيثَارِهِ
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ الْعَنْبَرِيُّ، وَحَامِدُ بْنُ عُمَرَ الْبَكْرَاوِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى، الْقَيْسِيُّ كُلُّهُمْ عَنِ الْمُعْتَمِرِ، - وَاللَّفْظُ لاِبْنِ مُعَاذٍ - حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، قَالَ قَالَ أَبِي حَدَّثَنَا أَبُو عُثْمَانَ، أَنَّهُ حَدَّثَهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي بَكْرٍ، أَنَّ أَصْحَابَ الصُّفَّةِ، كَانُوا نَاسًا فُقَرَاءَ وَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَرَّةً " مَنْ كَانَ عِنْدَهُ طَعَامُ اثْنَيْنِ فَلْيَذْهَبْ بِثَلاَثَةٍ وَمَنْ كَانَ عِنْدَهُ طَعَامُ أَرْبَعَةٍ فَلْيَذْهَبْ بِخَامِسٍ بِسَادِسٍ " . أَوْ كَمَا قَالَ . وَإِنَّ أَبَا بَكْرٍ جَاءَ بِثَلاَثَةٍ وَانْطَلَقَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِعَشَرَةٍ وَأَبُو بَكْرٍ بِثَلاَثَةٍ - قَالَ - فَهُوَ وَأَنَا وَأَبِي وَأُمِّي - وَلاَ أَدْرِي هَلْ قَالَ وَامْرَأَتِي وَخَادِمٌ بَيْنَ بَيْتِنَا وَبَيْتِ أَبِي بَكْرٍ - قَالَ وَإِنَّ أَبَا بَكْرٍ تَعَشَّى عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . ثُمَّ لَبِثَ حَتَّى صُلِّيَتِ الْعِشَاءُ ثُمَّ رَجَعَ فَلَبِثَ حَتَّى نَعَسَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَجَاءَ بَعْدَ مَا مَضَى مِنَ اللَّيْلِ مَا شَاءَ اللَّهُ قَالَتْ لَهُ امْرَأَتُهُ مَا حَبَسَكَ عَنْ أَضْيَافِكَ - أَوْ قَالَتْ - ضَيْفِكَ قَالَ أَوَمَا عَشَّيْتِهِمْ قَالَتْ أَبَوْا حَتَّى تَجِيءَ قَدْ عَرَضُوا عَلَيْهِمْ فَغَلَبُوهُمْ - قَالَ - فَذَهَبْتُ أَنَا فَاخْتَبَأْتُ وَقَالَ يَا غُنْثَرُ . فَجَدَّعَ وَسَبَّ وَقَالَ كُلُوا لاَ هَنِيئًا . وَقَالَ وَاللَّهِ لاَ أَطْعَمُهُ أَبَدًا - قَالَ - فَايْمُ اللَّهِ مَا كُنَّا نَأْخُذُ مِنْ لُقْمَةٍ إِلاَّ رَبَا مِنْ أَسْفَلِهَا أَكْثَرُ مِنْهَا - قَالَ - حَتَّى شَبِعْنَا وَصَارَتْ أَكْثَرَ مِمَّا كَانَتْ قَبْلَ ذَلِكَ فَنَظَرَ إِلَيْهَا أَبُو بَكْرٍ فَإِذَا هِيَ كَمَا هِيَ أَوْ أَكْثَرُ . قَالَ لاِمْرَأَتِهِ يَا أُخْتَ بَنِي فِرَاسٍ مَا هَذَا قَالَتْ لاَ وَقُرَّةِ عَيْنِي لَهِيَ الآنَ أَكْثَرُ مِنْهَا قَبْلَ ذَلِكَ بِثَلاَثِ مِرَارٍ - قَالَ - فَأَكَلَ مِنْهَا أَبُو بَكْرٍ وَقَالَ إِنَّمَا كَانَ ذَلِكَ مِنَ الشَّيْطَانِ - يَعْنِي يَمِينَهُ - ثُمَّ أَكَلَ مِنْهَا لُقْمَةً ثُمَّ حَمَلَهَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَصْبَحَتْ عِنْدَهُ - قَالَ - وَكَانَ بَيْنَنَا وَبَيْنَ قَوْمٍ عَقْدٌ فَمَضَى الأَجَلُ فَعَرَّفْنَا اثْنَا عَشَرَ رَجُلاً مَعَ كُلِّ رَجُلٍ مِنْهُمْ أُنَاسٌ اللَّهُ أَعْلَمُ كَمْ مَعَ كُلِّ رَجُلٍ إِلاَّ أَنَّهُ بَعَثَ مَعَهُمْ فَأَكَلُوا مِنْهَا أَجْمَعُونَ . أَوْ كَمَا قَالَ .
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)
সহীহ মুসলিম - হাদীস নং ৫১৯২ | মুসলিম বাংলা