আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

১৯- জানাযার অধ্যায়

হাদীস নং: ১১৯৯
আন্তর্জতিক নং: ১২৭৩

পরিচ্ছেদঃ ৮০৭. পাগড়ী ব্যতীত কাফন

১১৯৯। ইসমাঈল (রাহঃ) ......... আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে তিনখানা সাদা সাহুলী কাপড় দিয়ে কাফন দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে কোন কামীস ও পাগড়ী ছিল না।

হাদীসের ব্যাখ্যাঃ

এ হাদীছটিতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাফনের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, তাঁকে সাদা সাহূলী কাপড় দ্বারা কাফন দেওয়া হয়েছে। সাহূল ইয়ামানের একটি জায়গার নাম। সেকালে কাপড় তৈরির জন্য জায়গাটি বিখ্যাত ছিল। সেখানকার তৈরি কাপড়কে সাহূলী কাপড় বলা হত। হাদীছটিতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাফনে তিনটি কাপড় ব্যবহৃত হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে এ কথাও বলা হয়েছে যে, তাতে কামীস (জামা) ও পাগড়ি ছিল না। মায়্যিতের কাফনে তিনটি কাপড় ব্যবহার সম্পর্কে সকলেই একমত। তবে তাতে কামীস থাকবে কি না, এ বিষয়ে মতভিন্নতা আছে। হানাফী মাযহাব অনুযায়ী তিনটি কাপড়ের একটি হল কামীস। অন্যদু'টি হল ইযার ও লিফাফা। আলোচ্য হাদীছটি বাহ্যত হানাফী মতের পরিপন্থি মনে হয়। প্রকৃতপক্ষে পরিপন্থি নয়। কারণ এতে যে কামীস ছিল না বলা হয়েছে, তার মানে জীবিতরা যেরকম কামীস বা জামা পরে, মায়্যিতের কামীস সেরকম নয়। মায়্যিতের কামীসে কলি, হাতা ও সেলাই থাকে না। কেবল মাথা ঢোকানোর জন্য একটা ফোকর থাকে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যে কামীস পরানো হয়েছিল, খুবসম্ভব তা এরকমই ছিল। জীবিতদের কামীসের মতো ছিল না। সে হিসেবেই হাদীছটিতে কামীস না থাকার কথা বলা হয়েছে। এরকম ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন এজন্য যে, অন্যান্য বর্ণনায় তাঁর কাফনের মধ্যে কামীস থাকার কথা বলা হয়েছে। এক বর্ণনায় আছে কামীস নেই, অপর বর্ণনায় আছে কামীস ছিল। বাহ্যত এটা সাংঘর্ষিক। এর সমাধান এভাবে হতে পারে যে, কামীস ছিল না মানে জীবিতদের জামার মতো জামা ছিল না। আর কামীস থাকার মানে সেলাই ও হাতাবিহীন জামা। হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ মায়্যিতকে তিনটি কাপড় দিয়ে কাফন পরাতে হয়। তা সাদা হওয়া উত্তম।


tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক নিষ্প্রয়োজন