আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
৩৪- ইসলামী রাষ্ট্রনীতির অধ্যায়
হাদীস নং: ৪৭৭০
৪৩. লোক দেখানো এবং খ্যাতির উদ্দেশ্যে যে যুদ্ধ করে সে জাহান্নামের যোগ্য হয়
৪৭৭০। ইয়াহয়া ইবনে হাবীব আল হারিসী (রাহঃ) ......... সুলাইমান ইবনে ইয়াসার (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা লোকজন যখন আবু হুরায়রা (রাযিঃ) এর নিকট থেকে বিদায় নিচ্ছিলো, তখন সিরিয়াবাসী নাতিল (রাহঃ) বললেন, হে শায়খ! আপনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট থেকে শুনেছেন এমন একখানা হাদীস আমাদেরকে শুনান। তিনি বললেন, হ্যাঁ (শুনাবো)।
আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যার বিচার করা হবে, সে হচ্ছে এমন একজন যে শহীদ হয়েছিল। তাঁকে হাযির করা হবে এবং আল্লাহ তাঁর নিআমত রাশির কথা তাকে বলবেন এবং সে তার সবটাই চিনতে পারবে (এবং যথারীতি তার স্বীকারোক্তিও করবে।) তখন আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ এর বিনিময়ে কি আমল করেছিলে? সে বলবে, আমি আপনার (সন্তুষ্টির) জন্য যুদ্ধ করেছি এমন কি শেষ পর্যন্ত শহীদ হয়েছি। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলেছো। তুমি বরং এ জন্যেই যুদ্ধ করেছিলে যাতে লোকে তোমাকে বলে তুমি বীর। তা তো বলা হয়েছে। এরপর নির্দেশ দেওয়া হবে। সে মতে তাকে উপুড় করে হেঁচড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
তারপর এমন এক ব্যক্তির বিচার করা হবে, যে জ্ঞান অর্জন ও বিতরণ করেছে এবং কুরআন অধ্যয়ন করেছে। তখন তাকে হাযির করা হবে। আল্লাহ তাআলা তার প্রদত্ত নিআমতের কথা তাকে বলবেন এবং সে তা চিনতে পারবে (এবং যথারীতি তার স্বীকারোক্তিও করবে) তখন আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ এত (বড় নিআমত পেয়ে বিনিময়ে) তুমি কি করলে? জবাবে সে বলবে, আমি জ্ঞান অর্জন করেছি এবং তা শিক্ষা দিয়েছি এবং আপনারই (সন্তুষ্টি লাভের) উদ্দেশ্যে কুরআন অধ্যয়ন করেছি। জবাবে আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলেছো। তুমি তো জ্ঞান অর্জন করেছিলে এজন্যে যাতে লোকে তোমাকে জ্ঞানী বলে। কুরআন তিলাওয়াত করেছিলে এ জন্যে যাতে লোকে বলে সে একজন ক্বারী। তা বলা হয়েছে। তারপর আদেশ দেওয়া হবে এবং তাকেও উপুড় করে হেঁচড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
তারপর এমন এক ব্যক্তির বিচার হবে যাকে আল্লাহ তাআলা স্বচ্ছলতা এবং সর্ববিধ সম্পদ দান করেছেন। তাকে হাযির করা হবে এবং তাকে প্রদত্ত নিআমত সমূহের কথা তাঁকে বলবেন। সে তা চিনতে পারবে (স্বীকারোক্তি করবে।) তখন তিনি (আল্লাহ তাআলা) বলবেনঃ এর বিনিময়ে তুমি কি আমল করেছো? জবাবে সে বলবে, সম্পদ ব্যয়ের এমন কোন খাত নেই যাতে সস্পদ ব্যয় আপনি পছন্দ করেন অথচ আমি সে খাতে আপনার (সন্তুষ্টির) জন্যে করিনি। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলছো। তুমি বরং এ জন্যে তা করেছিলে যাতে লোকে তোমাকে “দানবীর” বলে অবিহিত করে। তা বলা হয়েছে। তারপর নির্দেশ দেওয়া হবে, সে মতে তাকেও উপুড় করে হেঁচড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যার বিচার করা হবে, সে হচ্ছে এমন একজন যে শহীদ হয়েছিল। তাঁকে হাযির করা হবে এবং আল্লাহ তাঁর নিআমত রাশির কথা তাকে বলবেন এবং সে তার সবটাই চিনতে পারবে (এবং যথারীতি তার স্বীকারোক্তিও করবে।) তখন আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ এর বিনিময়ে কি আমল করেছিলে? সে বলবে, আমি আপনার (সন্তুষ্টির) জন্য যুদ্ধ করেছি এমন কি শেষ পর্যন্ত শহীদ হয়েছি। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলেছো। তুমি বরং এ জন্যেই যুদ্ধ করেছিলে যাতে লোকে তোমাকে বলে তুমি বীর। তা তো বলা হয়েছে। এরপর নির্দেশ দেওয়া হবে। সে মতে তাকে উপুড় করে হেঁচড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
তারপর এমন এক ব্যক্তির বিচার করা হবে, যে জ্ঞান অর্জন ও বিতরণ করেছে এবং কুরআন অধ্যয়ন করেছে। তখন তাকে হাযির করা হবে। আল্লাহ তাআলা তার প্রদত্ত নিআমতের কথা তাকে বলবেন এবং সে তা চিনতে পারবে (এবং যথারীতি তার স্বীকারোক্তিও করবে) তখন আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ এত (বড় নিআমত পেয়ে বিনিময়ে) তুমি কি করলে? জবাবে সে বলবে, আমি জ্ঞান অর্জন করেছি এবং তা শিক্ষা দিয়েছি এবং আপনারই (সন্তুষ্টি লাভের) উদ্দেশ্যে কুরআন অধ্যয়ন করেছি। জবাবে আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলেছো। তুমি তো জ্ঞান অর্জন করেছিলে এজন্যে যাতে লোকে তোমাকে জ্ঞানী বলে। কুরআন তিলাওয়াত করেছিলে এ জন্যে যাতে লোকে বলে সে একজন ক্বারী। তা বলা হয়েছে। তারপর আদেশ দেওয়া হবে এবং তাকেও উপুড় করে হেঁচড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
তারপর এমন এক ব্যক্তির বিচার হবে যাকে আল্লাহ তাআলা স্বচ্ছলতা এবং সর্ববিধ সম্পদ দান করেছেন। তাকে হাযির করা হবে এবং তাকে প্রদত্ত নিআমত সমূহের কথা তাঁকে বলবেন। সে তা চিনতে পারবে (স্বীকারোক্তি করবে।) তখন তিনি (আল্লাহ তাআলা) বলবেনঃ এর বিনিময়ে তুমি কি আমল করেছো? জবাবে সে বলবে, সম্পদ ব্যয়ের এমন কোন খাত নেই যাতে সস্পদ ব্যয় আপনি পছন্দ করেন অথচ আমি সে খাতে আপনার (সন্তুষ্টির) জন্যে করিনি। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলছো। তুমি বরং এ জন্যে তা করেছিলে যাতে লোকে তোমাকে “দানবীর” বলে অবিহিত করে। তা বলা হয়েছে। তারপর নির্দেশ দেওয়া হবে, সে মতে তাকেও উপুড় করে হেঁচড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
باب مَنَ قَاتَلَ لِلرِّيَاءِ وَالسُّمْعَةِ اسْتَحَقَّ النَّارَ
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَبِيبٍ الْحَارِثِيُّ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ، حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، حَدَّثَنِي يُونُسُ بْنُ يُوسُفَ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ، قَالَ تَفَرَّقَ النَّاسُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، فَقَالَ لَهُ نَاتِلُ أَهْلِ الشَّامِ أَيُّهَا الشَّيْخُ حَدِّثْنَا حَدِيثًا سَمِعْتَهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ نَعَمْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِنَّ أَوَّلَ النَّاسِ يُقْضَى يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَيْهِ رَجُلٌ اسْتُشْهِدَ فَأُتِيَ بِهِ فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ فَعَرَفَهَا قَالَ فَمَا عَمِلْتَ فِيهَا قَالَ قَاتَلْتُ فِيكَ حَتَّى اسْتُشْهِدْتُ . قَالَ كَذَبْتَ وَلَكِنَّكَ قَاتَلْتَ لأَنْ يُقَالَ جَرِيءٌ . فَقَدْ قِيلَ . ثُمَّ أُمِرَ بِهِ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ حَتَّى أُلْقِيَ فِي النَّارِ وَرَجُلٌ تَعَلَّمَ الْعِلْمَ وَعَلَّمَهُ وَقَرَأَ الْقُرْآنَ فَأُتِيَ بِهِ فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ فَعَرَفَهَا قَالَ فَمَا عَمِلْتَ فِيهَا قَالَ تَعَلَّمْتُ الْعِلْمَ وَعَلَّمْتُهُ وَقَرَأْتُ فِيكَ الْقُرْآنَ . قَالَ كَذَبْتَ وَلَكِنَّكَ تَعَلَّمْتَ الْعِلْمَ لِيُقَالَ عَالِمٌ . وَقَرَأْتَ الْقُرْآنَ لِيُقَالَ هُوَ قَارِئٌ . فَقَدْ قِيلَ ثُمَّ أُمِرَ بِهِ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ حَتَّى أُلْقِيَ فِي النَّارِ . وَرَجُلٌ وَسَّعَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَأَعْطَاهُ مِنْ أَصْنَافِ الْمَالِ كُلِّهِ فَأُتِيَ بِهِ فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ فَعَرَفَهَا قَالَ فَمَا عَمِلْتَ فِيهَا قَالَ مَا تَرَكْتُ مِنْ سَبِيلٍ تُحِبُّ أَنْ يُنْفَقَ فِيهَا إِلاَّ أَنْفَقْتُ فِيهَا لَكَ قَالَ كَذَبْتَ وَلَكِنَّكَ فَعَلْتَ لِيُقَالَ هُوَ جَوَادٌ . فَقَدْ قِيلَ ثُمَّ أُمِرَ بِهِ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ ثُمَّ أُلْقِيَ فِي النَّارِ " .


বর্ণনাকারী: