আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
৩৩- জিহাদের বিধানাবলী ও নবীজীর যুদ্ধাভিযানসমূহ
হাদীস নং: ৪৩৭৮
আন্তর্জাতিক নং: ১৭৩৪
৩. সহজ পন্থা অবলম্বন ও বিতৃষ্ণা সৃষ্টি না করার নির্দেশ
৪৩৭৮। উবাইদুল্লাহ ইবনে মু’আয আনবারী, আবু বকর ইবনে আবি শাঈবা, মুহাম্মাদ ইবনে ওয়ালীদ (রাহঃ) ......... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, সহজভাবে কাজ করবে, কঠিনতা আরোপ করবে না, প্রশান্তি-স্থিরতা সৃষ্টি করবে, অশান্তি-বিতৃষ্ণা সৃষ্টি করবে না।
باب فِي الأَمْرِ بِالتَّيْسِيرِ وَتَرْكِ التَّنْفِيرِ
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ الْعَنْبَرِيُّ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ، عَنْ أَنَسٍ، ح. وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ، الْوَلِيدِ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، كِلاَهُمَا عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يَسِّرُوا وَلاَ تُعَسِّرُوا وَسَكِّنُوا وَلاَ تُنَفِّرُوا ".
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু'টি বিষয়ে আদেশ করেছেন। সর্বপ্রথম আদেশ করেছেন- (তোমরা সহজতা প্রদর্শন করো)। অর্থাৎ সহজ ও সহনীয় আচরণ করো নিজের প্রতিও এবং অন্যের প্রতিও। আল্লাহ তা'আলা সহজ দীন দিয়েছেন। দীনের কোনও বিধানই পালন করা মানুষের পক্ষে সাধ্যের অতীত নয়। ইরশাদ হয়েছে-
وَمَا جَعَلَ عَلَيْكُمْ فِي الدِّينِ مِنْ حَرَجٍ
তিনি দীনের ব্যাপারে তোমাদের প্রতি কোনও সংকীর্ণতা আরোপ করেননি। (সূরা হজ্জ (২২), আয়াত ৭৮)
এ কারণেই সফরে নামায কসর করার বিধান দেওয়া হয়েছে। সফর অবস্থায় রোযা না রেখে পরে রাখার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কোনও কারণে দাঁড়িয়ে নামায পড়তে না পারলে বসে পড়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। ওযু করতে না পারলে তায়াম্মুম করার বিধান দেওয়া হয়েছে ইত্যাদি। কাজেই প্রত্যেকের কর্তব্য দীনের দেওয়া এ সহজতা অবলম্বন করা। শুধু শুধু নিজের প্রতি বা অন্যের প্রতি কঠোরতা আরোপ করা কিছুতেই উচিত নয়। যে ব্যক্তি দাঁড়িয়ে নামায পড়তে না পারে, সে বসেই পড়বে। হাজার কষ্ট হলেও দাঁড়িয়ে পড়তে হবে, এমন কোনও কথা নেই; বরং তা বাঞ্ছনীয়ও নয়। এমনিভাবে অন্যের প্রতি আচরণও সহজ হওয়া কাম্য। শিক্ষকের কর্তব্য ছাত্রকে শিক্ষাদান করা সহজ পন্থায়। শিক্ষাদান পদ্ধতিও যেমন সহজ হওয়া চাই, তেমনি শিক্ষাদানের সময়টাও হওয়া চাই সহনীয় মাত্রায়। দলনেতা ও আমীরেরও কর্তব্য অধীনস্থদের পরিচালনায় কঠোরতা পরিহার করে সহজ কর্মপন্থা অবলম্বন করা। এটা শিক্ষা গ্রহণ করা, শিক্ষ অনুযায়ী আমল করা, আদেশ পালন করা এবং আনুগত্য বজায় রাখার পক্ষে অনেক বেশি সহায়ক।
সহজতা অবলম্বনের আদেশদানের পর নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করছেন-(কঠোরতা প্রদর্শন করো না)। এ নিষেধাজ্ঞাটি আগের আদেশ দ্বারা এমনিই বোঝা যায়। কেননা যে-কোনও বিষয়ের আদেশ করা হলে তার বিপরীত বিষয়টি আপনা-আপনিই নিষিদ্ধ হয়ে যায়। সুতরাং যখন সহজতা অবলম্বনের আদেশ করা হয়েছে, তখন কঠোরতা অবলম্বন যে নিষিদ্ধ তা বলার প্রয়োজন পড়ে না। তা সত্ত্বেও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ নিষেধাজ্ঞা স্বতন্ত্রভাবেও ব্যক্ত করে দিয়েছেন। এর দ্বারা উদ্দেশ্য সহজতা অবলম্বনের আদেশকে জোরদার করা এবং কোনও অবস্থায়ই যেন কঠোরতা অবলম্বন না করা হয়, সে বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা আরোপ করা। এর দ্বারা স্পষ্ট হয়ে ওঠে, সহজ পন্থা অবলম্বন করা, তা নিজের প্রতি হোক বা অন্যের প্রতি, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে কত বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. প্রত্যেকের উচিত ইবাদত-বন্দেগীসহ যাবতীয় কাজকর্মে কঠোর-কঠিন পন্থা বাদ দিয়ে সহজ পন্থা ও সহজ মাত্রা অবলম্বন করা।
খ. অভিভাবক, শিক্ষক ও নেতৃবর্গের তাদের সংশ্লিষ্টজনদের প্রতি সর্বদা সহজ ও কোমল আচরণ করা উচিত। কিছুতেই কঠোরতা প্রদর্শন করা উচিত নয়।
وَمَا جَعَلَ عَلَيْكُمْ فِي الدِّينِ مِنْ حَرَجٍ
তিনি দীনের ব্যাপারে তোমাদের প্রতি কোনও সংকীর্ণতা আরোপ করেননি। (সূরা হজ্জ (২২), আয়াত ৭৮)
এ কারণেই সফরে নামায কসর করার বিধান দেওয়া হয়েছে। সফর অবস্থায় রোযা না রেখে পরে রাখার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কোনও কারণে দাঁড়িয়ে নামায পড়তে না পারলে বসে পড়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। ওযু করতে না পারলে তায়াম্মুম করার বিধান দেওয়া হয়েছে ইত্যাদি। কাজেই প্রত্যেকের কর্তব্য দীনের দেওয়া এ সহজতা অবলম্বন করা। শুধু শুধু নিজের প্রতি বা অন্যের প্রতি কঠোরতা আরোপ করা কিছুতেই উচিত নয়। যে ব্যক্তি দাঁড়িয়ে নামায পড়তে না পারে, সে বসেই পড়বে। হাজার কষ্ট হলেও দাঁড়িয়ে পড়তে হবে, এমন কোনও কথা নেই; বরং তা বাঞ্ছনীয়ও নয়। এমনিভাবে অন্যের প্রতি আচরণও সহজ হওয়া কাম্য। শিক্ষকের কর্তব্য ছাত্রকে শিক্ষাদান করা সহজ পন্থায়। শিক্ষাদান পদ্ধতিও যেমন সহজ হওয়া চাই, তেমনি শিক্ষাদানের সময়টাও হওয়া চাই সহনীয় মাত্রায়। দলনেতা ও আমীরেরও কর্তব্য অধীনস্থদের পরিচালনায় কঠোরতা পরিহার করে সহজ কর্মপন্থা অবলম্বন করা। এটা শিক্ষা গ্রহণ করা, শিক্ষ অনুযায়ী আমল করা, আদেশ পালন করা এবং আনুগত্য বজায় রাখার পক্ষে অনেক বেশি সহায়ক।
সহজতা অবলম্বনের আদেশদানের পর নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করছেন-(কঠোরতা প্রদর্শন করো না)। এ নিষেধাজ্ঞাটি আগের আদেশ দ্বারা এমনিই বোঝা যায়। কেননা যে-কোনও বিষয়ের আদেশ করা হলে তার বিপরীত বিষয়টি আপনা-আপনিই নিষিদ্ধ হয়ে যায়। সুতরাং যখন সহজতা অবলম্বনের আদেশ করা হয়েছে, তখন কঠোরতা অবলম্বন যে নিষিদ্ধ তা বলার প্রয়োজন পড়ে না। তা সত্ত্বেও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ নিষেধাজ্ঞা স্বতন্ত্রভাবেও ব্যক্ত করে দিয়েছেন। এর দ্বারা উদ্দেশ্য সহজতা অবলম্বনের আদেশকে জোরদার করা এবং কোনও অবস্থায়ই যেন কঠোরতা অবলম্বন না করা হয়, সে বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা আরোপ করা। এর দ্বারা স্পষ্ট হয়ে ওঠে, সহজ পন্থা অবলম্বন করা, তা নিজের প্রতি হোক বা অন্যের প্রতি, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে কত বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. প্রত্যেকের উচিত ইবাদত-বন্দেগীসহ যাবতীয় কাজকর্মে কঠোর-কঠিন পন্থা বাদ দিয়ে সহজ পন্থা ও সহজ মাত্রা অবলম্বন করা।
খ. অভিভাবক, শিক্ষক ও নেতৃবর্গের তাদের সংশ্লিষ্টজনদের প্রতি সর্বদা সহজ ও কোমল আচরণ করা উচিত। কিছুতেই কঠোরতা প্রদর্শন করা উচিত নয়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
