শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

شرح معاني الآثار المختلفة المروية عن رسول الله صلى الله عليه وسلم في الأحكام

১. পবিত্রতা অর্জনের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:৭৪৪
আন্তর্জাতিক নং: ৭৪৫
ইস্তিঞ্জার অধ্যায়
৭৪৪-৭৪৫। আহমদ ইব্‌ন দাউদ (রাহঃ).... আব্দুল্লাহ্ ইবন মাসউদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, একবার আমি নবী (ﷺ)-এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি পায়খানায় গেলেন এবং বললেন, আমাকে তিনটি ঢেলা এনে দাও। আমি তালাশ করলাম এবং শুধু দুটি ঢেলা ও এক টুকরা গোবর পেলাম। তিনি গোবরের টুকরাটি ফেলে দিলেন এবং ঢেলা দুটি গ্রহণ করলেন। (গোবর সম্পর্কে) বললেন, এটি হল অপরিত্র।

ইবন আবী দাউদ (রাযিঃ).......ইবন মাসউদ (রাযিঃ) থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন।

বিশ্লেষণ

এ হাদীস দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, নবী (ﷺ) পায়খানার জন্য এরূপ স্থানে বসেছেন, যেখানে পাথর (ঢেলা) ছিল না। যেহেতু তিনি আব্দুল্লাহ্ (রাযিঃ)-কে বলেছেন, আমাকে তিনটি পাথর এনে দাও। যদি সেখানে এর থেকে কিছু বিদ্যমান থাকত তাহলে তিনি অন্যস্থান থেকে নেয়ার প্রয়োজনিয়তা অনুভব করতেন না। যখন আব্দুল্লাহ্ (রাযিঃ) তাঁর জন্য দুটি পাথর ও একটি গোবরের টুকরা নিয়ে এলেন, তখন তিনি গোবরের টুকরাটি ফেলে দিলেন এবং দুটি পাথর গ্রহণ করলেন। এটা তো দুই পাথর ব্যবহার করার প্রমাণ বহন করে। উপরন্তু এতে এটা বুঝা যাচ্ছে যে, যেখানে তিনটি পাথর যথেষ্ট সেখান দুটি পাথর কেও তিনি যথেষ্ট মনে করতেন। কেননা যদি তিনটি পাথরের কম সংখ্যক যথেষ্ট না হত তাহলে তিনি দুটিকে যথেষ্ট মনে করতেন না এবং আব্দুল্লাহ (রাযিঃ)-কে তৃতীয় পাথর তালাশ করার নির্দেশ প্রদান করতেন। তিনি তা না করায় প্রমাণিত হয় যে, দুটি পাথরই যথেষ্ট। হাদীসসমূহ বর্ণনার সঠিক মর্ম নির্ধারণে এটাই হচ্ছে এ অনুচ্ছেদের যথার্থ বিশ্লেষণ।

ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর যুক্তিভিত্তিক দলীল বস্তুত যুক্তির নিরিখে আমরা লক্ষ্য করেছি যে, যখন পায়খানা ও পেশাব পানি দ্বারা একবার ধৌত করা হয় এবং এতে উভয়ের চিহ্ন বা দুর্গন্ধ বিদূরিত হয়ে যায় যাতে এর কোন কিছুই অবশিষ্ট না থাকে তাহলে উক্ত স্থান (পায়খানা ও পেশাবের স্থান) পবিত্র হয়ে যাবে। আর যদি (একবার ধৌত করার দ্বারা) পায়খানা-পেশাবের রং ও দুর্গন্ধ বিদূরিত না হয় তাহলে তা দ্বিতীয়বার ধৌত করার প্রয়োজন পড়বে। যদি দ্বিতীয়বার ধৌত করার দ্বারা তার রং ও দুর্গন্ধ দূর হয়ে যায় তাহলে এ অবস্থায়ও তা পাক হয়ে যাবে যেমনিভাবে একবার ধৌত করার দ্বারা পাক হয়ে যায়। যদি দু'বার ধৌত করার দ্বারাও এর রং ও দুর্গন্ধ দূর না হয় তাহলে পরবর্তী আরো অধিক বার ধৌত করা আবশ্যক, যতক্ষণ না (নাজাসাতের) রং ও দুর্গন্ধ বিদূরিত হয়। সুতরাং তা ধৌত করার যেটি উদ্দেশ্য, তা হচ্ছে ওই নাজাসাতসমূহ বিদূরিত হওয়া, যতবার ধৌত করার দ্বারাই তা দূর হয়। ধৌত করার কোন সংখ্যা বা পরিমাণ উদ্দেশ্য নয় যে, এর কমে যথেষ্ট হবে না।

অতএব অনুরূপভাবে পাথর দ্বারা ইস্তিঞ্জার বিষয়ে যুক্তির দাবি হচ্ছে এ ব্যাপারে পাথরের কোন নির্দিষ্ট পরিমাণ উদ্দেশ্য নয় যে, এর কমে ইস্তিঞ্জা যথেষ্ট হবে না। বরং সেই পরিমাণ পাথর যথেষ্ট, যা দ্বারা. নাজাসাত দূর হয়ে যায়, কম হউক বা অধিক। এটাই যুক্তির দাবি। আর এটা ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান (রাহঃ)-এর অভিমত।
744 - حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ دَاوُدَ، قَالَ: ثنا مُسَدَّدٌ، قَالَ: ثنا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ زُهَيْرٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَبُو إِسْحَاقَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْأَسْوَدِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ: كُنْتُ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَتَى الْغَائِطَ فَقَالَ: " ائْتِنِي بِثَلَاثَةِ أَحْجَارٍ فَالْتَمَسْتُ فَلَمْ أَجِدْ إِلَّا حَجَرَيْنِ وَرَوْثَةً , فَأَلْقَى الرَّوْثَةَ وَأَخَذَ الْحَجَرَيْنِ، وَقَالَ: إِنَّهَا رِكْسٌ "

745 - حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي دَاوُدَ، قَالَ: ثنا زُهَيْرُ بْنُ عَبَّادٍ، قَالَ: ثنا يَزِيدُ بْنُ عَطَاءٍ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، وَالْأَسْوَدِ، قَالَا قَالَ ابْنُ مَسْعُودٍ , فَذَكَرَ نَحْوَهُ. فَفِي هَذَا الْحَدِيثِ مَا يَدُلُّ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , قَعَدَ لِلْغَائِطِ , فِي مَكَانٍ لَيْسَ فِيهِ أَحْجَارٌ لِقَوْلِهِ: لِعَبْدِ اللهِ «نَاوِلْنِي ثَلَاثَةَ أَحْجَارٍ» . وَلَوْ كَانَ بِحَضْرَتِهِ مِنْ ذَلِكَ شَيْءٌ , لَمَا احْتَاجَ إِلَى أَنْ يُنَاوِلَهُ مِنْ غَيْرِ ذَلِكَ الْمَكَانِ. فَلَمَّا أَتَاهُ عَبْدُ اللهِ بِحَجَرَيْنِ وَرَوْثَةٍ , فَأَلْقَى الرَّوْثَةَ , وَأَخَذَ الْحَجَرَيْنِ , دَلَّ ذَلِكَ عَلَى اسْتِعْمَالِهِ الْحَجَرَيْنِ , وَعَلَى أَنَّهُ قَدْ رَأَى أَنَّ الِاسْتِجْمَارَ بِهِمَا يُجْزِئُ مِمَّا يُجْزِئُ مِنْهُ الِاسْتِجْمَارُ بِالثَّلَاثِ. لِأَنَّهُ لَوْ كَانَ لَا يُجْزِئُ الِاسْتِجْمَارُ بِمَا دُونَ الثَّلَاثِ , لَمَا اكْتَفَى بِالْحَجَرَيْنِ وَلَأَمَرَ عَبْدَ اللهِ أَنْ يَبْغِيَهُ ثَالِثًا. فَفِي تَرْكِهِ ذَلِكَ , دَلِيلٌ عَلَى اكْتِفَائِهِ بِالْحَجَرَيْنِ فَهَذَا وَجْهُ هَذَا الْبَابِ مِنْ طَرِيقِ تَصْحِيحِ مَعَانِي الْآثَارِ. وَأَمَّا مِنْ طَرِيقِ النَّظَرِ فَإِنَّا رَأَيْنَا الْغَائِطَ وَالْبَوْلَ إِذَا غُسِلَا بِالْمَاءِ مَرَّةً , فَذَهَبَ بِذَلِكَ أَثَرُهُمَا أَوْ رِيحُهُمَا حَتَّى لَمْ يَبْقَ مِنْ ذَلِكَ شَيْءٌ أَنَّ مَكَانَهُمَا قَدْ طَهُرَ. وَلَوْ لَمْ يَذْهَبْ بِذَلِكَ لَوْنُهُمَا وَلَا رِيحُهُمَا , احْتِيجَ إِلَى غُسْلِهِ ثَانِيَةً. فَإِنْ غُسِلَ ثَانِيَةً فَذَهَبَ لَوْنُهُمَا وَرِيحُهُمَا , طَهُرَ بِذَلِكَ , كَمَا يَطْهُرُ بِالْوَاحِدَةِ. وَلَوْ لَمْ يَذْهَبْ لَوْنُهُمَا وَلَا رِيحُهُمَا يُغْسَلُ مَرَّتَيْنِ , احْتِيجَ إِلَى أَنْ يُغْسَلَ بَعْدَ ذَلِكَ حَتَّى يَذْهَبَ لَوْنُهُمَا وَرِيحُهُمَا. فَكَانَ مَا يُرَادُ فِي غَسْلِهِمَا هُوَ ذَهَابُهُمَا بِمَا أَذْهَبَهُمَا , مِنَ الْغُسْلِ , وَلَمْ يَرِدْ فِي ذَلِكَ مِقْدَارٌ مِنَ الْغُسْلِ مَعْلُومٌ لَا يُجْزِئُ مَا هُوَ أَقَلُّ مِنْهُ. فَالنَّظَرُ عَلَى ذَلِكَ أَنْ يَكُونَ كَذَلِكَ الِاسْتِجْمَارُ بِالْحِجَارَةِ , لَا يُرَادُ مِنَ الْحِجَارَةِ فِي ذَلِكَ مِقْدَارٌ مَعْلُومٌ لَا يُجْزِئُ الِاسْتِجْمَارُ بِأَقَلَّ مِنْهُ , وَلَكِنْ يُجْزِئُ مِنْ ذَلِكَ مَا أَذْهَبَ بِالنَّجَاسَةِ , مِمَّا قَلَّ أَوْ كَثُرَ. وَهَذَا هُوَ النَّظَرُ , وَهُوَ قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ , وَأَبِي يُوسُفَ , وَمُحَمَّدِ بْنِ الْحَسَنِ رَحِمَهُمُ اللهُ تَعَالَى