আশ-শামাঈলুল মুহাম্মাদিয়্যাহ- ইমাম তিরমিযী রহঃ

الشمائل المحمدية للإمام الترمذي

শামাইলে নববীর পরিচ্ছেদসমূহ - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ১৪ টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:৩৪৪
রাসূলুল্লাহ্ -এর চরিত্র মাধুর্যের বিবরণ
৩৪৪। ইসহাক ইবন মুসা (রাহঃ)... 'আমর ইবনুল আস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) সমাজের নিকৃষ্ট ব্যক্তির মন রক্ষার্থেও তার সঙ্গে কথা বলতেন। এমনকি আমার সঙ্গেও তিনি কথা বলতেন এবং আমার মনোযোগ আকর্ষণ করতেন। তাতে আমার মনে হতো, আমি সমাজের একজন ভাল মানুষ । আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি ভাল না আবু বাকর (রাযিঃ)? তিনি বললেন,

. আবু বাকর! আমি জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি ভাল না উমর (রাযিঃ)? তিনি বললেন, উমর! আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, আমি ভাল না উসমান (রাযিঃ)? তিনি বললেন, উসমান (রাযিঃ)! আমি যখন বিস্তারিতভাবে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কে জিজ্ঞেস করলাম, তখন আমাকে সঠিক কথা বলে দিলেন। পরে আমার মনে হলো, আমাকে এরূপ প্রশ্ন কখনো জিজ্ঞেস করা উচিত হয়নি।
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى قَالَ : حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ بُكَيْرٍ ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ ، عَنْ زِيَادِ بْنِ أَبِي زِيَادٍ ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ كَعْبٍ الْقُرَظِيِّ ، عَنْ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ : كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقْبِلُ بِوَجْهِهِ وَحَدِيثِهِ عَلَى أَشَرِّ الْقَوْمِ يَتَأَلَّفُهُمْ بِذَلِكَ فَكَانَ يُقْبِلُ بِوَجْهِهِ وَحَدِيثِهِ عَلَيَّ ، حَتَّى ظَنَنْتُ أَنِّي خَيْرُ الْقَوْمِ ، فَقُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، أَنَا خَيْرٌ أَوْ أَبُو بَكْرٍ ؟ قَالَ : أَبُو بَكْرٍ فَقُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، أَنَا خَيْرٌ أَوْ عُمَرُ ؟ فَقَالَ : عُمَرُ ، فَقُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، أَنَا خَيْرٌ أَوْ عُثْمَانُ ؟ قَالَ : عُثْمَانُ ، فَلَمَّا سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَصَدَقَنِي فَلَوَدِدْتُ أَنِّي لَمْ أَكُنْ سَأَلْتُهُ.
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৩৪৫
রাসূলুল্লাহ্ -এর চরিত্র মাধুর্যের বিবরণ
৩৪৫। কুতায়বা ইবন সা'ঈদ (রাহঃ)... আনাস ইবন মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন : আমি দশ বছর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর খিদমত করেছি; কিন্তু এই সময়ের মধ্যে তিনি কখনো আমার কোন কাজে আহ উহ্ করেননি। আমি করেছি, এমন কোন কাজের ব্যাপারে তিনি কখনো জিজ্ঞেস করেননি যে, কেন করেছি? আর না করা কাজের ব্যাপারেও তিনি কখনো জিজ্ঞেস করেননি, কেন করিনি। চরিত্র মাধুর্যে তিনি ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ। কোন রেশমী কাপড় বা বিশুদ্ধ রেশম বা অন্য কোন এমন নরম জিনিস স্পর্শ করিনি যা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর হাতের তালুর চাইতে নরম। আমি এমন কোন মিশক্ বা আতরের সুবাস পাইনি, যা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর ঘামের ঘ্রাণ থেকে অধিক সুগন্ধিময়।
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ قَالَ : حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ سُلَيْمَانَ الضُّبَعِيُّ ، عَنْ ثَابِتٍ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ : خَدَمْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَشْرَ سِنِينَ فَمَا قَالَ لِي أُفٍّ قَطُّ ، وَمَا قَالَ لِشَيْءٍ صَنَعْتُهُ لِمَ صَنَعْتَهُ وَلاَ لِشَيْءٍ تَرَكْتُهُ لِمَ تَرَكْتَهُ ، وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ أَحْسَنِ النَّاسِ خُلُقًا ، وَلاَ مَسَسْتُ خَزًّا وَلاَ حَرِيرًا وَلاَ شَيْئًا كَانَ أَلْيَنَ مِنْ كَفِّ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، وَلاَ شَمَمْتُ مِسْكًا قَطُّ وَلاَ عِطْرًا كَانَ أَطْيَبَ مِنْ عَرَقِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
হাদীস নং:৩৪৬
রাসূলুল্লাহ্ -এর চরিত্র মাধুর্যের বিবরণ
৩৪৬। কুতায়বা ইবন সা'ঈদ ও আহমদ ইবন আব্দাযাদী প্রমূখ (রাহঃ)... আনাস ইবন মালিক (রাযিঃ)-এর বরাতে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি হলুদ পোশাক পরিধান করে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর কাছে বসা ছিল। আনাস (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর অভ্যাস ছিল যে, কারো কোন বিষয় অপসন্দ হলেও তিনি তা সামনা সামনি বলতেন না। যখন সেই ব্যক্তি চলে গেল, তখন তিনি উপস্থিত সকলকে লক্ষ্য করে বললেন, তোমরা যদি তাকে হলুদ পোশাক পরিধান করতে নিষেধ করতে!
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، وَأَحَمْدُ بْنُ عَبْدَةَ هُوَ الضَّبِّيُّ وَالْمَعْنَى وَاحِدٌ ، قَالاَ : حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ ، عَنْ سَلْمٍ الْعَلَوِيِّ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ كَانَ عِنْدَهُ رَجُلٌ بِهِ أَثَرُ صُفْرَةٍ قَالَ : وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لاَ يكَادُ يُواجِهُ أَحَدًا بِشَيْءٍ يَكْرَهُهُ ، فَلَمَّا قَامَ قَالَ لِلْقَوْمِ : لَوْ قُلْتُمْ لَهُ يَدَعُ هَذِهِ الصُّفْرَةَ.
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৩৪৭
রাসূলুল্লাহ্ -এর চরিত্র মাধুর্যের বিবরণ
৩৪৭। মুহাম্মাদ ইবন বাশ্শার (রাহঃ)... 'আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কখনো ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় কোনপ্রকার অশোভনীয় কথা বলতেন না। বাজারেও তিনি উচ্চৈস্বরে কথা বলতেন না। মন্দের প্রতিকার মন্দ দ্বারা করতেন না; বরং মাফ করে দিতেন। কখনো তা আলোচনাও করতেন না।
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ قَالَ : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ قَالَ : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ ، عَنْ أَبِي عَبْدِ اللَّهِ الْجَدَلِيِّ وَاسْمُهُ عَبْدُ بْنُ عَبْدٍ ، عَنْ عَائِشَةَ ، أَنَّهَا قَالَتْ : لَمْ يَكُنْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاحِشًا وَلاَ مُتَفَحِّشًا وَلاَ صَخَّابًا فِي الأَسْوَاقِ ، وَلاَ يَجْزِىءُ بِالسَّيِّئَةِ السَّيِّئَةَ ، وَلَكِنْ يَعْفُو وَيَصْفَحُ.
হাদীস নং:৩৪৮
রাসূলুল্লাহ্ -এর চরিত্র মাধুর্যের বিবরণ
৩৪৮। হারূন ইবন ইসহাক আল-হামদানী (রাহঃ).... 'আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কখনো স্বীয় হাত দ্বারা কাকেও প্রহার করেননি, না কোন দাস-দাসী বা স্ত্রীলোককে। কেবল একমাত্র আল্লাহর পথে জিহাদ করেছেন।
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ الْهَمْدَانِيُّ قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدَةُ ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : مَا ضَرَبَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِيَدِهِ شَيْئًا قَطُّ إِلاَ أَنْ يُجَاهِدَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ، وَلاَ ضَرَبَ خَادِمًا أَوِ امْرَأَةً.
হাদীস নং:৩৪৯
রাসূলুল্লাহ্ -এর চরিত্র মাধুর্যের বিবরণ
৩৪৯। আহমাদ ইবন আব্দা আয্-যাব্বী (রাহঃ)... 'আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -কে কখনো নিজের জন্য প্রতিশোধ নিতে দেখিনি, যতক্ষণ না কেউ আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করত। অবশ্য যখন কেউ আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করত, তখন তাঁর ন্যায় অধিক ক্রোধান্বিত আর কেউ হতো না। তাঁকে যদি দু'টি কাজের মধ্যে যে কোন একটির অনুমতি দেয়া হতো, তবে তিনি সহজ কাজটি বেছে নিতেন, যতক্ষণ না এতে কোন গুনাহ্ হতো।
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ قَالَ : حَدَّثَنَا فُضَيْلُ بْنُ عِيَاضٍ ، عَنْ مَنْصُورٍ ، عَنِ الزُّهْرِيِّ ، عَنْ عُرْوَةَ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : مَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُنْتَصِرًا مِنْ مَظْلَمَةٍ ظُلِمَهَا قَطُّ مَا لَمْ يُنْتَهَكْ مِنْ مَحَارِمِ اللَّهِ تَعَالَى شَيْءٌ ، فَإِذَا انْتُهِكَ مِنْ مَحَارِمِ اللَّهِ شَيْءٌ كَانَ مِنْ أَشَدِّهِمْ فِي ذَلِكَ غَضَبًا ، وَمَا خُيِّرَ بَيْنَ أَمْرَيْنِ إِلَّا اخْتَارَ أَيْسَرَهُمَا مَا لَمْ يَكُنْ مَأْثَمًا.
হাদীস নং:৩৫০
রাসূলুল্লাহ্ -এর চরিত্র মাধুর্যের বিবরণ
৩৫০। ইবন আবু 'উমার (রাহঃ)... 'আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেনঃ এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর কাছে আসার অনুমতি চাইল। আমি সে সময় তাঁর কাছে বসা ছিলাম। তিনি বললেন, এই ব্যক্তি গোত্রের কতই না খারাপ লোক! অতঃপর তাকে আসার অনুমতি দেয়া হলো এবং তিনি তার সঙ্গে অতিশয় নরমভাবে কথা বললেন। অতঃপর লোকটি বেরিয়ে গেলে আমি জিজ্ঞেস.করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। ব্যক্তিটি সম্পর্কে এইরূপ কথা বললেন, আবার তার সাথে বিনম্র ব্যবহার করলেন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেন, হে 'আয়িশা! যে লোকদের খারাপ ব্যবহারের জন্য তাকে পরিহার এবং তার থেকে দূরে থাকে, সে কতই না খারাপ লোক!
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ ، عَنْ عُرْوَةَ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتِ : اسْتَأْذَنَ رَجُلٌ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنَا عِنْدَهُ ، فَقَالَ : بِئْسَ ابْنُ الْعَشِيرَةِ أَوْ أَخُو الْعَشِيرَةِ ، ثُمَّ أَذِنَ لَهُ ، فَأَلاَنَ لَهُ الْقَوْلَ ، فَلَمَّا خَرَجَ قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، قُلْتَ مَا قُلْتَ ثُمَّ أَلَنْتَ لَهُ الْقَوْلَ ؟ فَقَالَ : يَا عَائِشَةُ ، إِنَّ مِنْ شَرِّ النَّاسِ مَنْ تَرَكَهُ النَّاسُ أَوْ وَدَعَهُ النَّاسُ اتِّقَاءَ فُحْشِهِ.
হাদীস নং:৩৫১
রাসূলুল্লাহ্ -এর চরিত্র মাধুর্যের বিবরণ
৩৫১। সুফয়ান ইবন ওয়াকী' (রাহঃ)..... হাসান ইবন 'আলী (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেনঃ হুসায়ন ইবন আলী বলেছেন, আমি আমার পিতাকে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর মজলিসি চরিত্র সম্পর্কে জিজ্ঞেস করি। তৎপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ছিলেন সদাহাস্যকারী ও বিনম্র স্বভাবের অধিকারী। তিনি রূঢ়ভাষী বা কঠিন হৃদয়ের অধিকারী ছিলেন না। তিনি উচ্চৈস্বরে কথা বলতেন না, অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করতেন না, অপরের দোষ খুঁজে বেড়াতেন না এবং বখীল ছিলেন না। তিনি অশ্রাব্য কথা থেকে বিরত থাকতেন। তিনি যেমন কাউকে নিরাশ করতেন না, তেমনি কাউকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতিও দিতেন না। তিনটি বিষয় থেকে তিনি দূরে থাকতেন : ঝগড়া বিবাদ করা, অহংকার করা এবং অযথা কথাবার্তা বলা। তিনটি কাজ থেকে লোকদেরকে বিরত রাখতেনঃ কাউকে নিন্দাবাদ করতেন না, কাউকে অপবাদ দিতেন না, কারো দোষ-ত্রুটি তালাশ করতেন না। যে কথায় ছওয়াব হয়, তা ছাড়া অন্য কোন কথা বলতেন না। তিনি যখন কথা বলতেন, তখন উপস্থিত শ্রোতাদের মনোযোগ এমনভাবে আকর্ষণ করতেন যে, তাদের মাথায় যেন পাখি বসে আছে। তিনি কথা বলা শেষ করলে অন্যান্যরা তাঁকে প্রয়োজনীয় কথাবার্তা জিজ্ঞেস করতে পারত। তাঁর কথায় কেউ বাদানুবাদ করতেন না।

কেউ কোন কথা বলা শুরু করলে তার কথা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি চুপ থাকতেন। কেউ কোন কথায় হাসলে বা বিস্ময় প্রকাশ করলে তিনিও হাসতেন কিংবা বিস্ময় প্রকাশ করতেন। অপরিচিত ব্যক্তির রূঢ় আচরণ কিংবা কঠোর উক্তি তিনি ধৈর্য্যের সঙ্গে সহ্য করতেন। অযথা প্রশ্ন বা বেয়াদবিতেও তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করতেন না। কখনো কখনো সাহাবীরা অপরিচিত লোক নিয়ে আসতেন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলতেন, কারো কোন প্রয়োজন দেখলে তা সমাধা করতে তোমরা সাহায্য করবে। কেউ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে তিনি চুপ করে থাকতেন। কেউ কথা বলতে থাকলে তাকে থামিয়ে দিয়ে নিজে কথা বলা আরম্ভ করতেন না। অবশ্য কেউ অযথা কথা বলতে থাকলে তাকে থামিয়ে দিতেন। অথবা মজলিস থেকে উঠে যেতেন, যাতে বক্তা নিজেই চুপ হয়ে যায়।
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ قَالَ : حَدَّثَنَا جُمَيْعُ بْنُ عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْعِجْلِيُّ قَالَ : أَنْبَأَنَا رَجُلٌ مِنْ بَنِي تَمِيمٍ مِنْ وَلَدِ أَبِي هَالَةَ زَوْجِ خَدِيجَةَ وَيُكْنَى أَبَا عَبْدِ اللَّهِ ، عَنِ ابْنٍ لِأَبِي هَالَةَ ، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ قَالَ : قَالَ الْحُسَيْنُ : سَأَلْتُ أَبِي ، عَنْ سِيرَةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي جُلَسَائِهِ ، فَقَالَ : كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَائِمَ الْبِشْرِ ، سَهْلَ الْخُلُقِ ، لَيِّنَ الْجَانِبِ ، لَيْسَ بِفَظٍّ وَلاَ غَلِيظٍ ، وَلاَ صَخَّابٍ وَلاَ فَحَّاشٍ ، وَلاَ عَيَّابٍ وَلاَ مُشَاحٍ ، يَتَغَافَلُ عَمَّا لاَ يَشْتَهِي ، وَلاَ يُؤْيِسُ مِنْهُ رَاجِيهِ وَلاَ يُخَيَّبُ فِيهِ ، قَدْ تَرَكَ نَفْسَهُ مِنْ ثَلاَثٍ : الْمِرَاءِ وَالإِكْثَارِ وَمَا لاَ يَعْنِيهِ ،وَتَرَكَ النَّاسَ مِنْ ثَلاَثٍ : كَانَ لاَ يَذُمُّ أَحَدًا وَلاَ يَعِيبُهُ ، وَلاَ يَطْلُبُ عَوْرتَهُ ، وَلاَ يَتَكَلَّمُ إِلَّا فِيمَا رَجَا ثَوَابَهُ ، وَإِذَا تَكَلَّمَ أَطْرَقَ جُلَسَاؤُهُ كَأَنَّمَا عَلَى رُءُوسِهِمُ الطَّيْرُ ، فَإِذَا سَكَتَ تَكَلَّمُوا لاَ يَتَنَازَعُونَ عِنْدَهُ الْحَدِيثَ ، وَمَنْ تَكَلَّمَ عِنْدَهُ أَنْصَتُوا لَهُ حَتَّى يَفْرُغَ ، حَدِيثُهُمْ عِنْدَهُ حَدِيثُ أَوَّلِهِمْ ، يَضْحَكُ مِمَّا يَضْحَكُونَ مِنْهُ ، وَيَتَعَجَّبُ مِمَّا يَتَعَجَّبُونَ مِنْهُ ، وَيَصْبِرُ لِلْغَرِيبِ عَلَى الْجَفْوَةِ فِي مَنْطِقِهِ وَمَسْأَلَتِهِ حَتَّى إِنْ كَانَ أَصْحَابُهُ لَيَسْتَجْلِبُونَهُمْ وَيَقُولُ : إِذَا رَأَيْتُمْ طَالِبَ حَاجَةٍ يِطْلُبُهَا فَأَرْفِدُوهُ ، وَلاَ يَقْبَلُ الثَّنَاءَ إِلَّا مِنْ مُكَافِئٍ وَلاَ يَقْطَعُ عَلَى أَحَدٍ حَدِيثَهُ حَتَّى يَجُوزَ فَيَقْطَعُهُ بِنَهْيٍ أَوْ قِيَامٍ.
হাদীস নং:৩৫২
রাসূলুল্লাহ্ -এর চরিত্র মাধুর্যের বিবরণ
৩৫২। মুহাম্মাদ ইবন বাশ্শার (রাহঃ)... জাবির ইবন 'আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর নিকট কোন কিছু চাইলে তিনি কখনো না বলতেন না।
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ قَالَ : سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ يَقُولُ : مَا سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَيْئًا قَطُّ فَقَالَ : لاَ.
হাদীস নং:৩৫৩
রাসূলুল্লাহ্ -এর চরিত্র মাধুর্যের বিবরণ
৩৫৩। 'আব্দুল্লাহ ইবন ইমরান আবুল কাসিম আল-কুরাশী আল-মক্কী (রাহঃ)... ইবন 'আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ছিলেন লোকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দানশীল। বিশেষ করে রমযান মাসে তিনি উদার হস্তে দান করতেন। এ মাসে জিবরীল (আ) তাঁর কাছে আগমন করতেন এবং তাঁকে কুরআন শরীফ শুনাতেন। যখন তাঁর কাছে জিবরীল আগমন করতেন, তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এত বেশী দান খয়রাত করতেন, যেন প্রচণ্ড বায়ু প্রবাহ কিংবা মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষিত হতো।
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عِمْرَانَ أَبُو الْقَاسِمِ الْقُرَشِيُّ الْمَكِّيُّ قَالَ : حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ : كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَجْوَدَ النَّاسِ بِالْخَيْرِ وَكَانَ أَجْوَدَ مَا يَكُونُ فِي شَهْرِ رَمَضَانَ ، حَتَّى يَنْسَلِخَ فَيَأْتِيهِ جِبْرِيلُ فَيَعْرِضُ عَلَيْهِ الْقُرْآنَ ، فَإِذَا لَقِيَهُ جِبْرِيلُ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَجْوَدَ بِالْخَيْرِ مِنَ الرِّيحِ الْمُرْسَلَةِ.
হাদীস নং:৩৫৪
রাসূলুল্লাহ্ -এর চরিত্র মাধুর্যের বিবরণ
৩৫৪। কুতায়বা ইবন সাঈদ (রাহঃ)..... আনাস ইবন মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর অভ্যাস ছিল যে, তিনি আগামীকালের জন্য কিছু রেখে দিতেন না।
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ قَالَ : أَخْبَرَنَا جَعْفَرُ بْنُ سُلَيْمَانَ ، عَنْ ثَابِتٍ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ : كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لاَ يَدَّخِرُ شَيْئًا لِغَدٍ.
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৩৫৫
রাসূলুল্লাহ্ -এর চরিত্র মাধুর্যের বিবরণ
৩৫৫। হারূন ইবন মুসা ইবন আবী 'আলকামা আল-ফারওয়াবী আল-মাদানী.... 'উমার ইবনুল খাত্তাব (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, জনৈক দুঃস্থ ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর নিকট কিছু চাইল। নবী (ﷺ) বললেন, আমার নিকট তো এখন কিছু নেই। তবে তুমি আমার নাম করে অন্য কারো কাছ থেকে কিছু ক্রয় করো। আমার নিকট যখন কিছু আসবে, তখন তা পরিশোধ করে দেব। 'উমার (রাযিঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনার নিকট যা ছিল, তা তো দান করে দিয়েছেন। যা করার আপনার ক্ষমতা নেই, তার জন্য তো আল্লাহ্ তা'আলা আপনাকে বাধ্য করেননি। নবী (ﷺ) তা শুনে অসন্তুষ্ট হলেন। জনৈক আনসারী বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনি খরচ করুন, ভয় পাবেন না। "আরশের মালিকের তো কোন কিছুরই কমতি নেই। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) মুচকি হাসলেন। আনসারীর কথায় তাঁর চেহারায় সন্তুষ্টির চিহ্ন ফুটে উঠল। অতঃপর বললেন : আমাকে তো এরূপই নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ مُوسَى بْنِ أَبِي عَلْقَمَةَ الْمَدِينِيُّ قَالَ : حَدَّثَنِي أَبِي ، عَنْ هِشَامِ بْنِ سَعْدٍ ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ ، أَنَّ رَجُلاً جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَأَلَهُ أَنْ يُعْطِيَهُ ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : مَا عِنْدِي شَيْءٌ وَلَكِنِ ابْتَعْ عَلَيَّ ، فَإِذَا جَاءَنِي شَيْءٌ قَضَيْتُهُ فَقَالَ عُمَرُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، قَدْ أَعْطَيْتُهُ فَمَّا كَلَّفَكَ اللَّهُ مَا لاَ تَقْدِرُ عَلَيْهِ ، فَكَرِهَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَوْلَ عُمَرَ ، فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، أَنْفِقْ وَلاَ تَخَفْ مِنْ ذِي الْعَرْشِ إِقْلاَلاً ، فَتَبَسَّمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَرَفَ فِي وَجْهِهِ الْبِشْرَ لِقَوْلِ الأَنْصَارِيِّ ، ثُمَّ قَالَ : بِهَذَا أُمِرْتُ.
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৩৫৬
রাসূলুল্লাহ্ -এর চরিত্র মাধুর্যের বিবরণ
৩৫৬। আলী ইবন হুজর (রাহঃ)... রুবাই বিনতে মু'আওওয়ায ইবন 'আফা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, আমি এক পাত্র খেজুর এবং কিছু হালকা পাতলা শসা নিয়ে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর খেদমতে উপস্থিত হলাম । রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমাকে এক মুঠ অলংকার ও স্বর্ণ দান করলেন ।
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ قَالَ : أَخْبَرَنَا شَرِيكٌ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَقِيلٍ ، عَنِ الرُّبَيِّعِ بِنْتِ مُعَوِّذِ بْنِ عَفْرَاءَ ، قَالَتْ : أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِقِنَاعٍ مِنْ رُطَبٍ وَأَجْرٍ زُغْبٍ فَأَعْطَانِي مِلْءَ كَفِّهِ حُلِيًّا وَذَهَبًا.
হাদীস নং:৩৫৭
রাসূলুল্লাহ্ -এর চরিত্র মাধুর্যের বিবরণ
৩৫৭। আলী ইবন খাশরাম প্রমুখ (রাহঃ)... 'আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) দান গ্রহণ করতেন এবং প্রতিদান দিতেন।
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ ، وَغَيْرُ وَاحِدٍ قَالُوا : حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ عَائِشَةَ : أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقْبَلُ الْهَدِيَّةَ وَيُثِيبُ عَلَيْهَا.