আল মুওয়াত্তা - ইমাম মালিক রহঃ

كتاب الموطأ للإمام مالك

৩৯. মুকাতাবা-গোলামের আযাদীর জন্য অর্থ প্রদানের চুক্তি - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:১৫৩৪
১০. মুকাতাব-এর উত্তরাধিকার প্রসঙ্গে যদি সে ক্রীতদাসকে আযাদ করে
রেওয়ায়ত ১২. মালিক (রাহঃ) বলেনঃ মুকাতাবের পক্ষে আপন গোলামকে কর্তার অনুমতি ব্যতীত আযাদ করা জায়েয নহে। অতঃপর কর্তা যদি তাহাকে এই কার্যের অনুমতি দান করে তারপর মুকাতাব আযাদ হইয়া যায়, তবে উহার (মুকাতাব কর্তৃক আযাদকৃত গোলামের) উত্তরাধিকারিত্ব হইবে মুকাতাবের জন্য। আর মুকাতাব যদি আযাদী লাভের পূর্বে মারা যায় মু’তাক (معتق যাহাকে কিতাবাত চুক্তির মাধ্যমে আযাদ করা হইয়াছে)-এর স্বত্বাধিকারিত্ব মুকাতাব (প্রথম)-এর কর্তার জন্য হইবে। আর যদি মুকাতাব-এর মৃত্যু হয় (তাহার কর্তা) মুকাতাবের আযাদী লাভের পূর্বে তবে মুকাতাবের কর্তা উহার মীরাস পাইবে। [মুকাতাব পাইবে না। কারণ গোলাম উত্তরাধিকার লাভ করে না।]

মালিক (রাহঃ) বলেনঃ অনুরূপ মুকাতাব তাহার গোলামের সহিত যদি কিতাবাত চুক্তি করে এবং পরবর্তী মুকাতাব উহার সহিত কিতাবাত চুক্তি সম্পাদনকারী কর্তার পূর্বে আযাদী লাভ করে, তবে উহার স্বত্বাধিকার (ولاء) হইবে তাহার মুকাতাবের কর্তার জন্য যাবত প্রথম মুকাতাব যে উহার সহিত কিতাবাত করিয়াছে আযাদী লাভ না করিলে অতঃপর উহার কিতাবাত সম্পাদনকারী যদি আযাদ হইয়া যায় তাহার পূর্বে আযাদী লাভকারী তাহার মুকতাব-এর স্বত্বাধিকার (ولاء) তাহার দিকে রুজু করা হইবে। আর যদি প্রথম মুকাতাবের মৃত্যু হয় ″বদলে কিতাবাত″ আদায়ের পূর্বে অথবা “বদলে-কিতাবাত” পরিশোধ করিতে অপারক হয় এবং তাহার আযাদ সন্তান রহিয়াছে তবে উহারা তাহদের পিতার মুকাতাবের স্বত্বাধিকার (ولاء) এর অধিকারী হইবে না। কারণ উহাদের পিতার জন্য স্বত্বাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয় নাই। আর স্বত্বাধিকার লাভ করা হয় না আযাদী লাভ না করা পর্যন্ত।

মালিক (রাহঃ) বলেনঃ যে মুকাতাব দুই ব্যক্তির মালিকানায় থাকে তাহাদের দুইজনেই একজন মুকাতাবের উপর তাহার যে “বদলে কিতাবাত” প্রাপ্য রহিয়াছে উহা মাফ করিয়া দিল, অপরজন ইহা করিতে কার্পণ্য প্রদর্শন করিল। অতঃপর মুকাতাব-এর মৃত্যু হইল এবং সে সম্পদ রাখিয়া গেল। মালিক (রাহঃ) বলেনঃ যে শরীক তাহার প্রাপ্য “বদলে কিতাবাত” ত্যাগ করে নাই সম্পদ হইতে তাহার প্রাপ্য “বদলে কিতাবাত” পরিশোধ করা হইবে। তারপর ক্রীতদাস অবস্থায় মারা গেলে যেইভাবে উহার সম্পদ উভয়ের মধ্যে বন্টন করা হইত, সেইরূপে উভয়ের মধ্যে অবশিষ্ট সম্পদ বন্টন করা হইবে। কারণ যে শরীক প্রাপ্য ছাড়িয়াছে উহা আযাদ করা নহে, বরং তাহার প্রাপ্য হক মাফ করিয়াছে।

মালিক (রাহঃ) বলেনঃ উপরিউক্ত মাসআলার বিশদ ব্যাখ্যা এইরূপ : এক ব্যক্তির মৃত্যু হইল। সে রাখিয়া গেল একজন মুকাতাব এবং কয়েকজন ছেলে ও মেয়ে, অতঃপর সন্তানদের একজন মুকাতাবের নিকট (প্রাপ্য) অংশ আযাদ করিয়া দিল, ইহাতে তাহার জন্য উত্তরাধিকার (ولاء) প্রতিষ্ঠিত হইবে না। পক্ষান্তরে উহা যদি আযাদকৃত বলিয়া গণ্য হইত তবে নারী-পুরুষের মধ্যে যে সন্তান মুকাতাবকে আযাদ করিয়াছে সে সন্তানের স্বত্বাধিকারিত্ব প্রতিষ্ঠিত হইঝে।

মালিক (রাহঃ) বলেনঃ ইহার আরেক বর্ণনা এই, উহাদের একজন নিজের অংশ আযাদ করিয়া দিল, তারপর মুকাতাব অপারক হইল তবে মুকাতাবের উপর যে “বদলে-কিতাবাত” অবশিষ্ট রহিয়াছে উহার জন্য যে (মুকাতাবের মধ্য হইতে) তাহার প্রাপ্য অংশ আযাদ করিয়াছে তাহার উপর মূল্য নির্ধারিত করা হইবে না (অংশ আযাদ করিয়া দেওয়ার জন্য)। যদি আযাদী প্রদান বলিয়া গণ্য হইত তবে উহার মূল্য নির্ধারণ করা হইত এবং তাহার মাল হইতে মুকাতাব আযাদ হইয়া যাইত। যেমন বলিয়াছেন রাসূলুল্লাহ (ﷺ), যে গোলামের নিকট হইতে তাহার প্রাপ্য অংশ ছাড়িয়া দেয়, ন্যায়সঙ্গতভাবে অবশিষ্ট অংশের মূল্য নির্ধারণ করিয়া তাহার উপর উহা আরোপ করা যাইবে। যদি তাহার মাল না থাকে তবে যতটুকু আযাদ করিয়াছে ততটুকু আযাদ হইয়া যাইবে।

মালিক (রাহঃ) বলেনঃ ইহার অপর ব্যাখ্যা এই, মুসলমানদের সুন্নত (পদ্ধতি) এই যে, যাহাতে কোন দ্বিমত নাই, যে ব্যক্তি মুকাতাব হইতে তাহার অংশ আযাদ কারিয়া দেয়, তবে তাহার মাল হইতে বাকী বদলে কিতাবাত পরিশোধ করিয়া মুকাতাবকে পূর্ণরূপে আযাদী দেওয়া হইবে না, যদি উহার মাল হইতে আযাদ করা হইত তবে উত্তরাধিকার (ولاء) তাহারই প্রাপ্য হইত, তাহার অংশগণের প্রাপ্য হইত না।

মালিক (রাহঃ) বলেনঃ ইহার আর এক ব্যাখ্যা এই — মুসলমানদের নিয়ম হইতেছে, উত্তরাধিকার (ولاء) সেই ব্যক্তির জন্য হইবে, যে ব্যক্তি কিতাবাত চুক্তি করিয়াছে। আর স্ত্রীলোকদের মধ্যে যে মহিলা মুকাতাবের কর্তার মীরাসের অধিকারী উহার জন্য মুকাতাবের উত্তরাধিকারের কিছুই হইবে না যদিও সে নিজের অংশ আযাদ করিয়া দেয়। মুকাতাবের উত্তরাধিকার লাভ করিবে মুকাতাবের পুত্র সন্তানগণ কিংবা পুরুষ আসাবা।
باب وَلَاءِ الْمُكَاتَبِ إِذَا أَعْتَقَ
قَالَ مَالِك إِنَّ الْمُكَاتَبَ إِذَا أَعْتَقَ عَبْدَهُ إِنَّ ذَلِكَ غَيْرُ جَائِزٍ لَهُ إِلَّا بِإِذْنِ سَيِّدِهِ فَإِنْ أَجَازَ ذَلِكَ سَيِّدُهُ لَهُ ثُمَّ عَتَقَ الْمُكَاتَبُ كَانَ وَلَاؤُهُ لِلْمُكَاتَبِ وَإِنْ مَاتَ الْمُكَاتَبُ قَبْلَ أَنْ يُعْتَقَ كَانَ وَلَاءُ الْمُعْتَقِ لِسَيِّدِ الْمُكَاتَبِ وَإِنْ مَاتَ الْمُعْتَقُ قَبْلَ أَنْ يُعْتَقَ الْمُكَاتَبُ وَرِثَهُ سَيِّدُ الْمُكَاتَبِ قَالَ مَالِك وَكَذَلِكَ أَيْضًا لَوْ كَاتَبَ الْمُكَاتَبُ عَبْدًا فَعَتَقَ الْمُكَاتَبُ الْآخَرُ قَبْلَ سَيِّدِهِ الَّذِي كَاتَبَهُ فَإِنَّ وَلَاءَهُ لِسَيِّدِ الْمُكَاتَبِ مَا لَمْ يَعْتِقْ الْمُكَاتَبُ الْأَوَّلُ الَّذِي كَاتَبَهُ فَإِنْ عَتَقَ الَّذِي كَاتَبَهُ رَجَعَ إِلَيْهِ وَلَاءُ مُكَاتَبِهِ الَّذِي كَانَ عَتَقَ قَبْلَهُ وَإِنْ مَاتَ الْمُكَاتَبُ الْأَوَّلُ قَبْلَ أَنْ يُؤَدِّيَ أَوْ عَجَزَ عَنْ كِتَابَتِهِ وَلَهُ وَلَدٌ أَحْرَارٌ لَمْ يَرِثُوا وَلَاءَ مُكَاتَبِ أَبِيهِمْ لِأَنَّهُ لَمْ يَثْبُتْ لِأَبِيهِمْ الْوَلَاءُ وَلَا يَكُونُ لَهُ الْوَلَاءُ حَتَّى يَعْتِقَ قَالَ مَالِك فِي الْمُكَاتَبِ يَكُونُ بَيْنَ الرَّجُلَيْنِ فَيَتْرُكُ أَحَدُهُمَا لِلْمُكَاتَبِ الَّذِي لَهُ عَلَيْهِ وَيَشِحُّ الْآخَرُ ثُمَّ يَمُوتُ الْمُكَاتَبُ وَيَتْرُكُ مَالًا قَالَ مَالِك يَقْضِي الَّذِي لَمْ يَتْرُكْ لَهُ شَيْئًا مَا بَقِيَ لَهُ عَلَيْهِ ثُمَّ يَقْتَسِمَانِ الْمَالَ كَهَيْئَتِهِ لَوْ مَاتَ عَبْدًا لِأَنَّ الَّذِي صَنَعَ لَيْسَ بِعَتَاقَةٍ وَإِنَّمَا تَرَكَ مَا كَانَ لَهُ عَلَيْهِ قَالَ مَالِك وَمِمَّا يُبَيِّنُ ذَلِكَ أَنَّ الرَّجُلَ إِذَا مَاتَ وَتَرَكَ مُكَاتَبًا وَتَرَكَ بَنِينَ رِجَالًا وَنِسَاءً ثُمَّ أَعْتَقَ أَحَدُ الْبَنِينَ نَصِيبَهُ مِنْ الْمُكَاتَبِ إِنَّ ذَلِكَ لَا يُثْبِتُ لَهُ مِنْ الْوَلَاءِ شَيْئًا وَلَوْ كَانَتْ عَتَاقَةً لَثَبَتَ الْوَلَاءُ لِمَنْ أَعْتَقَ مِنْهُمْ مِنْ رِجَالِهِمْ وَنِسَائِهِمْ قَالَ مَالِك وَمِمَّا يُبَيِّنُ ذَلِكَ أَيْضًا أَنَّهُمْ إِذَا أَعْتَقَ أَحَدُهُمْ نَصِيبَهُ ثُمَّ عَجَزَ الْمُكَاتَبُ لَمْ يُقَوَّمْ عَلَى الَّذِي أَعْتَقَ نَصِيبَهُ مَا بَقِيَ مِنْ الْمُكَاتَبِ وَلَوْ كَانَتْ عَتَاقَةً قُوِّمَ عَلَيْهِ حَتَّى يَعْتِقَ فِي مَالِهِ كَمَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ أَعْتَقَ شِرْكًا لَهُ فِي عَبْدٍ قُوِّمَ عَلَيْهِ قِيمَةَ الْعَدْلِ فَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُ مَالٌ عَتَقَ مِنْهُ مَا عَتَقَ قَالَ وَمِمَّا يُبَيِّنُ ذَلِكَ أَيْضًا أَنَّ مِنْ سُنَّةِ الْمُسْلِمِينَ الَّتِي لَا اخْتِلَافَ فِيهَا أَنَّ مَنْ أَعْتَقَ شِرْكًا لَهُ فِي مُكَاتَبٍ لَمْ يُعْتَقْ عَلَيْهِ فِي مَالِهِ وَلَوْ عَتَقَ عَلَيْهِ كَانَ الْوَلَاءُ لَهُ دُونَ شُرَكَائِهِ وَمِمَّا يُبَيِّنُ ذَلِكَ أَيْضًا أَنَّ مِنْ سُنَّةِ الْمُسْلِمِينَ أَنَّ الْوَلَاءَ لِمَنْ عَقَدَ الْكِتَابَةَ وَأَنَّهُ لَيْسَ لِمَنْ وَرِثَ سَيِّدَ الْمُكَاتَبِ مِنْ النِّسَاءِ مِنْ وَلَاءِ الْمُكَاتَبِ وَإِنْ أَعْتَقْنَ نَصِيبَهُنَّ شَيْءٌ إِنَّمَا وَلَاؤُهُ لِوَلَدِ سَيِّدِ الْمُكَاتَبِ الذُّكُورِ أَوْ عَصَبَتِهِ مِنْ الرِّجَالِ
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান