আল মুওয়াত্তা - ইমাম মালিক রহঃ

كتاب الموطأ للإمام مالك

২৮. বিবাহ-শাদীর অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:১১৪৩
২০. মুশরিক স্বামীর পূর্বে তাহার স্ত্রী মুসলমান হইলে তাহাদের বিবাহ সম্পর্কিত হুকুম
রেওয়ায়ত ৪৪. মালিক (রাহঃ) ইবনে শিহাব (রাহঃ) হইতে বর্ণনা করেন যে, তাহার নিকট রেওয়ায়ত পৌছিয়াছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর যুগে স্ত্রীলোকেরা তাহদের নিজের শহরে থাকিয়া ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করিতেন। তাহারা মদীনার দিকে হিজরত করিতে পারিতেন না। তাহারা মুসলমান হইতেন অথচ তাহাদের স্বামীগণ কাফের রহিয়াছে। এইরূপ স্ত্রীলোকের মধ্যে ছিলেন ওলীদ ইবনে মুগীরার কন্যা। তিনি সফওয়ান ইবনে উমাইয়ার স্ত্রী ছিলেন, মক্কা বিজয়ের সময় তিনি মুসলমান হইলেন। আর তাহার স্বামী সফওয়ান ইবনে উমাইয়া ইসলাম কবুল না করিয়া পলায়ন করিল। সফওয়ানকে নিরাপত্তা প্রদানের প্রতীক স্বরূপ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাহাকে পবিত্র চাদরসহ সফওয়ানের চাচাতো ভাই ওয়াহব ইবনে উমায়রকে প্রেরণ করিলেন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাহাকে ইসলামের দিকে আহবান করিলেন এবং তাহার নিকট আসিতে বলিলেন, যদি সে খুশীতে মুসলমান হয়, তবে উহা গ্রহণ করা হইবে, নতুবা তাহাকে দুই মাস সময় দেওয়া হইবে।

সফওয়ান রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর চাদর লইয়া আগমন করিল এবং লোকসম্মুখে চিৎকার করিয়া বলিল, হে মুহাম্মাদ, এই যে ওয়াহব ইবনে উমায়র, সে আপনার চাদর লইয়া আমার নিকট গিয়াছিল এবং সে বলিয়াছে, আপনি আমাকে আপনার নিকট আসিতে আহবান জানাইয়াছেন, আমি যদি খুশীতে মুসলমান হই, উহা গ্রহণ করা হইবে। নতুবা আপনি আমাকে দুই মাস সময় দিবেন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেনঃ হে আবু ওয়াহব (ইহা সফওয়ানের কুনিয়ত), তুমি (উটের পিঠ হইতে) অবতরণ কর। সফওয়ান বলিল, না নামিব না। আল্লাহর কসম, যাবৎ আপনি ব্যাখ্যা না করিবেন (ইহা সত্য কিনা)। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলিলেনঃ বরং তোমাকে চার মাস সময় দেওয়া হইবে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) হুনায়নের হাওয়াযিন গোত্রের দিকে (অভিযানে) বাহির হইলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সফওয়ানের দিকে লোক প্রেরণ করিলেন তাহার নিকট যে সকল আসবাব ও যুদ্ধাস্ত্র ছিল সেগুলি (আরিয়ত) ধার স্বরূপ দেওয়ার জন্য।

সফওয়ান বলিল, বাধ্যতামূলক না স্বেচ্ছায়? তিনি [রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)] বলিলেনঃ (বাধ্যতামূলক নহে) বরং খুশীতে। সে তাহার নিকট যাহা ছিল আসবাব ও যুদ্ধাস্ত্র রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)কে দিল। অতঃপর (মক্কা হইতে) হুনায়ন-এর দিকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সঙ্গে বাহির হইল। সে তখনও কাফের। তারপর হুনায়ন ও তায়েফ-এর অভিযানে শরীক হইল, সে তখনও কাফের আর তার স্ত্রী মুসলমান। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সফওয়ান ও তাহার স্ত্রীকে পৃথক করেন নাই। পরে সফওয়ান মুসলমান হইলেন। তাহার স্ত্রীকে তাহার নিকট রাখা হইল সেই (আগের) বিবাহে।
بَاب نِكَاحِ الْمُشْرِكِ إِذَا أَسْلَمَتْ زَوْجَتُهُ قَبْلَهُ
حَدَّثَنِي مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ نِسَاءً كُنَّ فِي عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُسْلِمْنَ بِأَرْضِهِنَّ وَهُنَّ غَيْرُ مُهَاجِرَاتٍ وَأَزْوَاجُهُنَّ حِينَ أَسْلَمْنَ كُفَّارٌ مِنْهُنَّ بِنْتُ الْوَلِيدِ بْنِ الْمُغِيرَةِ وَكَانَتْ تَحْتَ صَفْوَانَ بْنِ أُمَيَّةَ فَأَسْلَمَتْ يَوْمَ الْفَتْحِ وَهَرَبَ زَوْجُهَا صَفْوَانُ بْنُ أُمَيَّةَ مِنْ الْإِسْلَامِ فَبَعَثَ إِلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ابْنَ عَمِّهِ وَهْبَ بْنَ عُمَيْرٍ بِرِدَاءِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَانًا لِصَفْوَانَ بْنِ أُمَيَّةَ وَدَعَاهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى الْإِسْلَامِ وَأَنْ يَقْدَمَ عَلَيْهِ فَإِنْ رَضِيَ أَمْرًا قَبِلَهُ وَإِلَّا سَيَّرَهُ شَهْرَيْنِ فَلَمَّا قَدِمَ صَفْوَانُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِرِدَائِهِ نَادَاهُ عَلَى رُءُوسِ النَّاسِ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ إِنَّ هَذَا وَهْبَ بْنَ عُمَيْرٍ جَاءَنِي بِرِدَائِكَ وَزَعَمَ أَنَّكَ دَعَوْتَنِي إِلَى الْقُدُومِ عَلَيْكَ فَإِنْ رَضِيتُ أَمْرًا قَبِلْتُهُ وَإِلَّا سَيَّرْتَنِي شَهْرَيْنِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ انْزِلْ أَبَا وَهْبٍ فَقَالَ لَا وَاللَّهِ لَا أَنْزِلُ حَتَّى تُبَيِّنَ لِي فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَلْ لَكَ تَسِيرُ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ فَخَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قِبَلَ هَوَازِنَ بِحُنَيْنٍ فَأَرْسَلَ إِلَى صَفْوَانَ بْنِ أُمَيَّةَ يَسْتَعِيرُهُ أَدَاةً وَسِلَاحًا عِنْدَهُ فَقَالَ صَفْوَانُ أَطَوْعًا أَمْ كَرْهًا فَقَالَ بَلْ طَوْعًا فَأَعَارَهُ الْأَدَاةَ وَالسِّلَاحَ الَّذِي عِنْدَهُ ثُمَّ خَرَجَ صَفْوَانُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ كَافِرٌ فَشَهِدَ حُنَيْنًا وَالطَّائِفَ وَهُوَ كَافِرٌ وَامْرَأَتُهُ مُسْلِمَةٌ وَلَمْ يُفَرِّقْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ امْرَأَتِهِ حَتَّى أَسْلَمَ صَفْوَانُ وَاسْتَقَرَّتْ عِنْدَهُ امْرَأَتُهُ بِذَلِكَ النِّكَاحِ
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:১১৪৪
২০. মুশরিক স্বামীর পূর্বে তাহার স্ত্রী মুসলমান হইলে তাহাদের বিবাহ সম্পর্কিত হুকুম
রেওয়ায়ত ৪৫. মালিক (রাহঃ) ইবনে শিহাব (রাহঃ) হইতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলিয়াছেনঃ সফওয়ানের ইসলাম ধর্ম গ্রহণ ও তাহার স্ত্রীর ইসলাম ধর্ম গ্রহণের মধ্যে ব্যবধান ছিল অন্তত এক মাসের।

ইবনে শিহাব (রাহঃ) বলেনঃ কোন স্ত্রীলোক আল্লাহ ও তাহার রাসূলের দিকে হিজরত করিলে এবং তাহার স্বামী কাফের অবস্থায় দারুল কুফরে থাকিলে তবে তাহার হিজরত তাহার ও তাহার স্বামীর মধ্যে বিচ্ছেদ সৃষ্টি করিবে। তবে যদি তাঁহার স্বামী ইদ্দত শেষ হওয়ার পূর্বে হিজরত করে (এমতাবস্থায় স্ত্রী তাহারই থাকিবে)।
بَاب نِكَاحِ الْمُشْرِكِ إِذَا أَسْلَمَتْ زَوْجَتُهُ قَبْلَهُ
وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّهُ قَالَ كَانَ بَيْنَ إِسْلَامِ صَفْوَانَ وَبَيْنَ إِسْلَامِ امْرَأَتِهِ نَحْوٌ مِنْ شَهْرَيْنِ قَالَ ابْنُ شِهَابٍ وَلَمْ يَبْلُغْنَا أَنَّ امْرَأَةً هَاجَرَتْ إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ وَزَوْجُهَا كَافِرٌ مُقِيمٌ بِدَارِ الْكُفْرِ إِلَّا فَرَّقَتْ هِجْرَتُهَا بَيْنَهَا وَبَيْنَ زَوْجِهَا إِلَّا أَنْ يَقْدَمَ زَوْجُهَا مُهَاجِرًا قَبْلَ أَنْ تَنْقَضِيَ عِدَّتُهَا
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:১১৪৫
২০. মুশরিক স্বামীর পূর্বে তাহার স্ত্রী মুসলমান হইলে তাহাদের বিবাহ সম্পর্কিত হুকুম
রেওয়ায়ত ৪৬. ইবনে শিহাব (রাহঃ) হইতে বর্ণিত, হারিস ইবনে হিশামের কন্যা উম্মে হাকীম ইকরাম ইবনে আবু জাহলের স্ত্রী ছিল। উম্মে হাকীম মক্কা বিজয়ের দিন ইসলাম ধর্ম কবুল করেন। তাহার স্বামী ইকরিমা ইবনে আবু জাহল ইসলাম গ্রহণ না করিয়া পলায়ন করিয়া ইয়ামনের দিকে চলিয়া যায়। উম্মে হাকীম ইয়ামনে গিয়া তাহার স্বামীর নিকট উপস্থিত হন এবং তাহাকে ইসলামের দিকে আহবান জানান। ইকরিমা ইসলাম কবুল করেন এবং মক্কা বিজয়ের বৎসর রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর খিদমতে উপস্থিত হন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাহাকে দেখিয়া আনন্দে এত দ্রুত উঠিলেন যে, তাহার পবিত্র দেহ তখন চাদরে আবৃত রহিল না। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইকরিমার বায়’আত গ্রহণ করিলেন এবং স্বামী স্ত্রী উভয়ের পূর্ব বিবাহ বহাল রাখিলেন।

মালিক (রাহঃ) বলেনঃ স্ত্রীর পূর্বে কোন ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করিলে অতঃপর স্ত্রীকে ইসলামের দিকে আহবান করিলে সে যদি মুসলমান না হয় তবে উভয়ের মধ্যে বিচ্ছেদ হইয়া যাইবে। কারণ আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করিতেছেনঃ (وَلَا تُمْسِكُوا بِعِصَمِ الْكَوَافِرِ) তোমরা অবিশ্বাসী নারীদিগের সহিত দম্পত্য সম্পর্ক বজায় রাখিও না।” (সূরা মুমতাহিনাঃ ১০)
بَاب نِكَاحِ الْمُشْرِكِ إِذَا أَسْلَمَتْ زَوْجَتُهُ قَبْلَهُ
وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّ أُمَّ حَكِيمٍ بِنْتَ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ وَكَانَتْ تَحْتَ عِكْرِمَةَ بْنِ أَبِي جَهْلٍ فَأَسْلَمَتْ يَوْمَ الْفَتْحِ وَهَرَبَ زَوْجُهَا عِكْرِمَةُ بْنُ أَبِي جَهْلٍ مِنْ الْإِسْلَامِ حَتَّى قَدِمَ الْيَمَنَ فَارْتَحَلَتْ أُمُّ حَكِيمٍ حَتَّى قَدِمَتْ عَلَيْهِ بِالْيَمَنِ فَدَعَتْهُ إِلَى الْإِسْلَامِ فَأَسْلَمَ وَقَدِمَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ الْفَتْحِ فَلَمَّا رَآهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَثَبَ إِلَيْهِ فَرِحًا وَمَا عَلَيْهِ رِدَاءٌ حَتَّى بَايَعَهُ فَثَبَتَا عَلَى نِكَاحِهِمَا ذَلِكَ
قَالَ مَالِك وَإِذَا أَسْلَمَ الرَّجُلُ قَبْلَ امْرَأَتِهِ وَقَعَتْ الْفُرْقَةُ بَيْنَهُمَا إِذَا عُرِضَ عَلَيْهَا الْإِسْلَامُ فَلَمْ تُسْلِمْ لِأَنَّ اللَّهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَقُولُ فِي كِتَابِهِ وَلَا تُمْسِكُوا بِعِصَمِ الْكَوَافِرِ
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান