আল মুওয়াত্তা - ইমাম মালিক রহঃ

كتاب الموطأ للإمام مالك

১৭. যাকাতের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ৫৯৬
যাকাতের অধ্যায়
২০. শস্য ও যায়তুন তৈলের যাকাত
রেওয়ায়ত ৩৫. মালিক (রাহঃ) বর্ণনা করেন, যায়তুনের যাকাত সম্পর্কে ইবনে শিহাব (রাহঃ)-কে জিজ্ঞাসা করা হইলে তিনি বলিলেনঃ ইহাতে উশর বা উৎপন্ন শস্যের এক-দশমাংশ যাকাত ধার্য হইবে।

মালিক (রাহঃ) বলেন, যায়তুন দানা পিষানোর পর পাঁচ অছক পরিমাণ তৈল হইলে উহাতে উশর হইবে। পরিমাণে পাচ আছক হইতে কম হইলে উহাতে আর যাকাত ধার্য হইবে না।

মালিক (রাহঃ) বলেন, যায়তুনের (যাকাতের) হুকুম খেজুরে প্রযোজ্য হুকুমের মতই। বৃষ্টি, ঝর্ণা ও শিকড় দ্বারা সংগৃহীত পানি দ্বারা উৎপন্ন যায়তুন শস্যে উশর বা এক-দশমাংশ, আর সেচ প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন শস্যে নিসফে উশর বা এক-বিংশতিতমাংশ যাকাত ধার্য হইবে। যায়তুনের অনুমান করিয়া বৃক্ষস্থ শস্যের পরিমাণ নির্ধারণ করিয়া যাকাত ধার্য হইবে না।

মালিক (রাহঃ) বলেন, যে সমস্ত শস্য মানুষ সংরক্ষণ করে এবং ভক্ষণ করে, সেই সমস্ত শস্য যদি বৃষ্টি, ঝর্ণা বা কেবল মূলের সাহায্যে সংগৃহীত পানি দ্বারা উৎপন্ন হয়, তবে পাঁচ অছক পরিমাণ হইলে উহাতে উশর বা এক-দশমাংশ, আর সেচ প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন হইলে এক-বিংশতিতমাংশ যাকাত ধার্য হইবে; পাঁচ অছক হইতে বেশী হইলে বর্ধিত হার অনুপাতে উহার যাকাত প্রদান করিতে হইবে।

মালিক (রাহঃ) বলেনঃ গম, যব, ভুট্টা, বুট, ধান, মসুর, মাষ, সিম, তিল ইত্যাদি শস্য যাহা ভোজ্যদ্রব্য হিসাবে ব্যবহৃত হয় উহার সব কিছুতেই শস্য-কর্তন ও মাড়াইয়ের পর যাকাত ধার্য হইয়া থাকে।

তিনি বলেনঃ এইসব বিষয়ে শস্য মালিকের ভাষ্য সত্য বলিয়া বিবেচ্য হইবে এবং মালিক যাহাই প্রদান করে তাহাই যাকাতে গ্রহণ করা হইবে।

ইয়াহইয়া (রাহঃ) বলেনঃ মালিক (রাহঃ)-কে জিজ্ঞাসা করা হইয়াছিল, যায়তুন তৈলের যাকাত (উশর) পারিবারিক ব্যয় নির্বাহের পর যাহা অবশিষ্ট থাকিবে উহা হইতে আদায় করা হইবে, না ব্যয়ের পূর্বের সর্বমোট পরিমাণ হইতে আদায় করা হইবে? তিনি তখন উত্তরে বলিলেন, ব্যয়ের দিকে দৃষ্টি দেওয়া হইবে না। খাদ্য-শস্যের বেলায় যেমন মালিককে পরিমাণ জিজ্ঞাসা করা হয়, এখানেও তদ্রূপ মালিককে উৎপন্ন যায়তুনের মোট পরিমাণ জিজ্ঞাসা করিয়া নেওয়া হইবে এবং তাহাকে সত্যবাদী বলিয়া গণ্য করা হইবে। মোট কথা, পাঁচ অছক পরিমাণ যায়তুন উৎপন্ন হইলে যায়তুন দানা পিষার পর উহা হইতে উশর’ বা এক-দশমাংশ যাকাত উসুল করা হইবে, আর পাঁচ অছক পরিমাণ না হইলে উহাতে যাকাত ধার্য হইবে না।

ইয়াহইয়া (রাহঃ) বলেনঃ মালিক (রাহঃ) বলিয়াছেনঃ শস্য পক্ক ও থোড় শুষ্ক হওয়ার পর কেহ যদি তাহা বিক্রয় করে তবে বিক্রেতার উপর উহার যাকাত ধার্য হইবে, ক্রেতার উপর ধার্য হইবে না।

মালিক (রাহঃ) বলেনঃ শস্য, থোড় শুষ্ক না হওয়া পর্যন্ত এবং পানির প্রয়োজন শেষ না হওয়া পর্যন্ত উহা বিক্রয় করা বৈধ নহে।

আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করিয়াছেনঃ (وَآتُوا حَقَّهُ يَوْمَ حَصَادِهِ) আর ফসল তুলিবার দিনে উহার দেয় প্রদান করবে। (সূরা আল-আন’আমঃ ১৪১) এই আয়াতের তাফসীর প্রসঙ্গে মালিক (রাহঃ) বলিয়াছেনঃ এইখানে হক অর্থ হইল উহার যাকাত প্রদান করিয়া দেওয়া। বিজ্ঞ আলিমগণকে আমি উক্ত আয়াতের অনুরূপ তফসীর করিতে শুনিয়াছি।

মালিক (রাহঃ) বলেনঃ বদয়িসালাহ বা পরিপক্ক হওয়ার পূর্বেই যদি কেহ স্বীয় বাগান বা শস্যক্ষেত্রের মূল বৃক্ষ বিক্রয় করিয়া দেয় তবে উহার যাকাত ক্রেতার উপর ধার্য হইবে। আর পরিপক্ক হওয়ার পর যদি বিক্রয় করে তবে ঐ শস্য বা ফলের যাকাত বিক্রেতার উপর ধার্য হইবে। তবে বিক্রয়ের সময় যদি বিক্রেতা শর্ত করে যে, যাকাত ক্রেতাকে আদায় করিতে হইবে তবে উহা ক্রেতার উপরই ধার্য হইবে।
كتاب الزكاة
بَاب زَكَاةِ الْحُبُوبِ وَالزَّيْتُونِ
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك أَنَّهُ سَأَلَ ابْنَ شِهَابٍ عَنْ الزَّيْتُونِ فَقَالَ فِيهِ الْعُشْرُ
قَالَ مَالِك وَإِنَّمَا يُؤْخَذُ مِنْ الزَّيْتُونِ الْعُشْرُ بَعْدَ أَنْ يُعْصَرَ وَيَبْلُغَ زَيْتُونُهُ خَمْسَةَ أَوْسُقٍ فَمَا لَمْ يَبْلُغْ زَيْتُونُهُ خَمْسَةَ أَوْسُقٍ فَلَا زَكَاةَ فِيهِ وَالزَّيْتُونُ بِمَنْزِلَةِ النَّخِيلِ مَا كَانَ مِنْهُ سَقَتْهُ السَّمَاءُ وَالْعُيُونُ أَوْ كَانَ بَعْلًا فَفِيهِ الْعُشْرُ وَمَا كَانَ يُسْقَى بِالنَّضْحِ فَفِيهِ نِصْفُ الْعُشْرِ وَلَا يُخْرَصُ شَيْءٌ مِنْ الزَّيْتُونِ فِي شَجَرِهِ وَالسُّنَّةُ عِنْدَنَا فِي الْحُبُوبِ الَّتِي يَدَّخِرُهَا النَّاسُ وَيَأْكُلُونَهَا أَنَّهُ يُؤْخَذُ مِمَّا سَقَتْهُ السَّمَاءُ مِنْ ذَلِكَ وَمَا سَقَتْهُ الْعُيُونُ وَمَا كَانَ بَعْلًا الْعُشْرُ وَمَا سُقِيَ بِالنَّضْحِ نِصْفُ الْعُشْرِ إِذَا بَلَغَ ذَلِكَ خَمْسَةَ أَوْسُقٍ بِالصَّاعِ الْأَوَّلِ صَاعِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَا زَادَ عَلَى خَمْسَةِ أَوْسُقٍ فَفِيهِ الزَّكَاةُ بِحِسَابِ ذَلِكَ قَالَ مَالِك وَالْحُبُوبُ الَّتِي فِيهَا الزَّكَاةُ الْحِنْطَةُ وَالشَّعِيرُ وَالسُّلْتُ وَالذُّرَةُ وَالدُّخْنُ وَالْأُرْزُ وَالْعَدَسُ وَالْجُلْبَانُ وَاللُّوبِيَا وَالْجُلْجُلَانُ وَمَا أَشْبَهَ ذَلِكَ مِنْ الْحُبُوبِ الَّتِي تَصِيرُ طَعَامًا فَالزَّكَاةُ تُؤْخَذُ مِنْهَا بَعْدَ أَنْ تُحْصَدَ وَتَصِيرَ حَبًّا قَالَ وَالنَّاسُ مُصَدَّقُونَ فِي ذَلِكَ وَيُقْبَلُ مِنْهُمْ فِي ذَلِكَ مَا دَفَعُوا وَسُئِلَ مَالِك مَتَى يُخْرَجُ مِنْ الزَّيْتُونِ الْعُشْرُ أَوْ نِصْفُهُ أَقَبْلَ النَّفَقَةِ أَمْ بَعْدَهَا فَقَالَ لَا يُنْظَرُ إِلَى النَّفَقَةِ وَلَكِنْ يُسْأَلُ عَنْهُ أَهْلُهُ كَمَا يُسْأَلُ أَهْلُ الطَّعَامِ عَنْ الطَّعَامِ وَيُصَدَّقُونَ بِمَا قَالُوا فَمَنْ رُفِعَ مِنْ زَيْتُونِهِ خَمْسَةُ أَوْسُقٍ فَصَاعِدًا أُخِذَ مِنْ زَيْتِهِ الْعُشْرُ بَعْدَ أَنْ يُعْصَرَ وَمَنْ لَمْ يُرْفَعْ مِنْ زَيْتُونِهِ خَمْسَةُ أَوْسُقٍ لَمْ تَجِبْ عَلَيْهِ فِي زَيْتِهِ الزَّكَاةُ قَالَ مَالِك وَمَنْ بَاعَ زَرْعَهُ وَقَدْ صَلَحَ وَيَبِسَ فِي أَكْمَامِهِ فَعَلَيْهِ زَكَاتُهُ وَلَيْسَ عَلَى الَّذِي اشْتَرَاهُ زَكَاةٌ وَلَا يَصْلُحُ بَيْعُ الزَّرْعِ حَتَّى يَيْبَسَ فِي أَكْمَامِهِ وَيَسْتَغْنِيَ عَنْ الْمَاءِ قَالَ مَالِك فِي قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى وَآتُوا حَقَّهُ يَوْمَ حَصَادِهِ أَنَّ ذَلِكَ الزَّكَاةُ وَقَدْ سَمِعْتُ مَنْ يَقُولُ ذَلِكَ قَالَ مَالِك وَمَنْ بَاعَ أَصْلَ حَائِطِهِ أَوْ أَرْضَهُ وَفِي ذَلِكَ زَرْعٌ أَوْ ثَمَرٌ لَمْ يَبْدُ صَلَاحُهُ فَزَكَاةُ ذَلِكَ عَلَى الْمُبْتَاعِ وَإِنْ كَانَ قَدْ طَابَ وَحَلَّ بَيْعُهُ فَزَكَاةُ ذَلِكَ عَلَى الْبَائِعِ إِلَّا أَنْ يَشْتَرِطَهَا عَلَى الْمُبْتَاعِ
tahqiq

তাহকীক: