কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ

كتاب السنن للإمام أبي داود

৭. তালাক - ডিভোর্স অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ১৪ টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:২২৪০
আন্তর্জাতিক নং: ২২৪৬
১৭১. লিআন।
২২৪০. আব্দুল আযীয ইবনে ইয়াহয়া ....... আব্বাস ইবনে সাহল (রাহঃ) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেছেন যে, নবী করীম (ﷺ) আসিম ইবনে আদীকে বলেন, তুমি তাকে তোমার নিকট রাখ, যতদিন না সে সন্তান প্রসব করে।
باب فِي اللِّعَانِ
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنِي مُحَمَّدٌ، - يَعْنِي ابْنَ سَلَمَةَ - عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، حَدَّثَنِي عَبَّاسُ بْنُ سَهْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لِعَاصِمِ بْنِ عَدِيٍّ " أَمْسِكِ الْمَرْأَةَ عِنْدَكَ حَتَّى تَلِدَ " .
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:২২৪১
আন্তর্জাতিক নং: ২২৪৭
১৭১. লিআন।
২২৪১. আহমদ ইবনে সাহিল ..... সাহল ইবনে সা’দ আল্ সাঈদী বলেন, তাদের (উয়াইমির ও তার স্ত্রীর) লিআনের বিষয়টি যখন রাসূলূল্লাহ্ (ﷺ) এর খিদমতে পেশ করা হয়, তখন আমি পনের বছরের যুবক ছিলাম। এরপর (রাবী ইউনুস বর্ণিত) হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে। তিনি (ইউনুস) অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, এরপর সে গর্ভবতী হওয়া প্রকাশ পায়। আর যে সন্তান সে প্রসব করে তাকে তার মাতার সাথে সম্পর্কিত করা হয়, (পিতার সাথে নয়)।
باب فِي اللِّعَانِ
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ، قَالَ حَضَرْتُ لِعَانَهُمَا عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا ابْنُ خَمْسَ عَشْرَةَ سَنَةً . وَسَاقَ الْحَدِيثَ قَالَ فِيهِ ثُمَّ خَرَجَتْ حَامِلاً فَكَانَ الْوَلَدُ يُدْعَى إِلَى أُمِّهِ .
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:২২৪২
আন্তর্জাতিক নং: ২২৪৮
১৭১. লিআন।
২২৪২. মুহাম্মাদ ইবনে জা‘ফর ..... সাহল ইবনে সা’দ (রাহঃ) হতে, লিআন সম্পর্কিত হাদীসটি বর্ণনা হয়েছে। তিনি বলেন, নবী করীম (ﷺ) সব কিছু শ্রবনের পর ইরশাদ করেন, উক্ত মহিলার দিকে তোমার দৃষ্টি রাখ; যদি সে কালোবর্ণ চক্ষুবিশিষ্ট এবং পৃষ্ঠে ও রানে অধিক গোশতবিশিষ্ট সন্তান প্রসব করে, যেন সে তারই অংশ; তবে আমার ধারণায় সে (উয়াইমির) মিথ্যাবাদী প্রতিপন্ন হবে। তিনি (সাহল) বলেন, এরপর সে এমন সন্তান প্রসব করে, যাতে উওয়াইমের সত্যবাদী হিসাবে প্রতিপন্ন হয়, (এবং সে মহিলা মিথ্যাবাদী প্রতিপন্ন হয়)।
باب فِي اللِّعَانِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ الْوَرَكَانِيُّ، أَخْبَرَنَا إِبْرَاهِيمُ، - يَعْنِي ابْنَ سَعْدٍ - عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، فِي خَبَرِ الْمُتَلاَعِنَيْنِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَبْصِرُوهَا فَإِنْ جَاءَتْ بِهِ أَدْعَجَ الْعَيْنَيْنِ عَظِيمَ الأَلْيَتَيْنِ فَلاَ أُرَاهُ إِلاَّ قَدْ صَدَقَ وَإِنْ جَاءَتْ بِهِ أُحَيْمِرَ كَأَنَّهُ وَحَرَةٌ فَلاَ أُرَاهُ إِلاَّ كَاذِبًا " . قَالَ فَجَاءَتْ بِهِ عَلَى النَّعْتِ الْمَكْرُوهِ .
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:২২৪৩
আন্তর্জাতিক নং: ২২৪৯
১৭১. লিআন।
২২৪৩. মাহমুদ ইবনে খালিদ ..... সাহল ইবনে সা‘দ আস সাঈদী (রাযিঃ) হতে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। রাবী যুহরী (রাহঃ) বলেন, এরপর সে সন্তানকে তার মাতার সাথে সম্পর্কিত করে ডাকা হতো।
باب فِي اللِّعَانِ
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ خَالِدٍ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا الْفِرْيَابِيُّ، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ، بِهَذَا الْخَبَرِ قَالَ فَكَانَ يُدْعَى - يَعْنِي الْوَلَدَ - لأُمِّهِ .
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:২২৪৪
আন্তর্জাতিক নং: ২২৫০
১৭১. লিআন।
২২৪৪. আহমদ ইবনে আমর ইবনে সারহ্ .... সাহল ইবনে সা’দ (রাযিঃ) হতে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। রাবী বলেন, তখন সে (উয়াইমির) তাকে রাসূলূল্লাহ্ (ﷺ) এর সম্মুখেই তিন তালাক প্রদান করে। আর রাসূলূল্লাহ্ (ﷺ) তাকে তালাক হিসাবে গণ্য করেন। আর সে নবী করীম (ﷺ)-এর খিদমতে এরূপ করাতে তা সুন্নতরূপে পরিগণিত হয়। রাবী সাহল বলেন, তা (লিআনের ব্যাপারটি) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর নিকট উপস্থিত হওয়াতে তা পরস্পর ব্যভিচারের দোষারোপকারীদের জন্য সুন্নত হিসাবে পরিগণিত হয় যে, তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাতে হবে এবং আর কখনও তাদেরকে একত্রিত করা যাবে না।
باب فِي اللِّعَانِ
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ السَّرْحِ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ عِيَاضِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْفِهْرِيِّ، وَغَيْرِهِ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، فِي هَذَا الْخَبَرِ قَالَ فَطَلَّقَهَا ثَلاَثَ تَطْلِيقَاتٍ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَنْفَذَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَكَانَ مَا صُنِعَ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم سُنَّةً . قَالَ سَهْلٌ حَضَرْتُ هَذَا عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَمَضَتِ السُّنَّةُ بَعْدُ فِي الْمُتَلاَعِنَيْنِ أَنْ يُفَرَّقَ بَيْنَهُمَا ثُمَّ لاَ يَجْتَمِعَانِ أَبَدًا .
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:২২৪৫
আন্তর্জাতিক নং: ২২৫১
১৭১. লিআন।
২২৪৫. মুসাদ্দাদ সূত্রে মিলিত সনদে ..... সাহল ইবনে সা‘দ (রাহঃ) হতে বর্ণিত। রাবী মুসাদ্দাদ তার হাদীসে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি (সাহল) বলেন, রাসূলূল্লাহ্ (ﷺ) এর যুগে দু‘জন পরস্পর অভিসম্পাত ও দোষারোপকারীর ব্যাপারটা যখন উপস্থাপিত হয়, তখন আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম এবং এ সময় আমার বয়স ছিল পনর বছর। এরপর তারা শপথ করে পরস্পর অভিসম্পাত ও যিনার দোষারোপ করার পর রাসূলূল্লাহ্ (ﷺ) তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দেন। এরূপে মুসাদ্দাদ বর্ণিত হাদীসের বর্ণনা সমাপ্ত হয়েছে। আর অন্যের (সাহলের) বর্ণনা এই যে, তিনি নবী করীম (ﷺ)কে তাদের পরস্পরের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাতে দেখেন। তখন ঐ ব্যক্তি (উওয়াইমির) বলেন, যদি আমি তাকে আমার নিকট রাখি, তবে লোকদের নিকট আমি মিথ্যাবাদী বিবেচিত হব। তবে কোনো কোনো শায়খ,عَلَيْهَا শব্দটির উল্লেখ করেননি।
باب فِي اللِّعَانِ
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، وَوَهْبُ بْنُ بَيَانٍ، وَأَحْمَدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ السَّرْحِ، وَعَمْرُو بْنُ عُثْمَانَ، قَالُوا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ مُسَدَّدٌ قَالَ شَهِدْتُ الْمُتَلاَعِنَيْنِ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا ابْنُ خَمْسَ عَشْرَةَ فَفَرَّقَ بَيْنَهُمَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ تَلاَعَنَا . وَتَمَّ حَدِيثُ مُسَدَّدٍ . وَقَالَ الآخَرُونَ إِنَّهُ شَهِدَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَرَّقَ بَيْنَ الْمُتَلاَعِنَيْنِ فَقَالَ الرَّجُلُ كَذَبْتُ عَلَيْهَا يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنْ أَمْسَكْتُهَا - لَمْ يَقُلْ بَعْضُهُمْ عَلَيْهَا - قَالَ أَبُو دَاوُدَ لَمْ يُتَابِعِ ابْنَ عُيَيْنَةَ أَحَدٌ عَلَى أَنَّهُ فَرَّقَ بَيْنَ الْمُتَلاَعِنَيْنِ .
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:২২৪৬
আন্তর্জাতিক নং: ২২৫২
১৭১. লিআন।
২২৪৬. সুলাইমান ইবনে দাউদ আল্ উতাকী ..... সাহল ইবনে সা‘দ (রাযিঃ) হতে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। আর সে (মহিলা) ছিল গর্ভবতী, যা সে অপছন্দ করতো। আর তার ভূমিষ্ট সন্তানকে, তার (মহিলার) দিকে সম্পর্কিত করা হতো। এরপর মীরাসে (উত্তরাধিকার আইনে) এটা সুন্নত হিসাবে নির্ধারিত হয় যে, সে সন্তান তার মায়ের সম্পত্তির এবং মাতা তার (সন্তানের) সম্পত্তির ওয়ারিস হবে। আর তা ঐ হিসাবে, যা আল্লাহ্ তাআলা নির্ধারিত করেছেন।
باب فِي اللِّعَانِ
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ الْعَتَكِيُّ، حَدَّثَنَا فُلَيْحٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، فِي هَذَا الْحَدِيثِ وَكَانَتْ حَامِلاً فَأَنْكَرَ حَمْلَهَا فَكَانَ ابْنُهَا يُدْعَى إِلَيْهَا ثُمَّ جَرَتِ السُّنَّةُ فِي الْمِيرَاثِ أَنْ يَرِثَهَا وَتَرِثَ مِنْهُ مَا فَرَضَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ لَهَا .
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:২২৪৭
আন্তর্জাতিক নং: ২২৫৩
১৭১. লিআন।
২২৪৭. উসমান ইবনে আবি শাঈবা .... আব্দুল্লাহ্ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক জুমআর রাতে আমি মসজিদে উপস্থিত ছিলাম। তখন সেখানে জনৈক আনসার প্রবেশ করে এবং বলে, যদি কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীর নিকট কোন অপরিচিত ব্যক্তিকে অবৈধ কর্মে লিপ্ত দেখে, এরপর সে তা ব্যক্ত করে, তবে এজন্য কি তোমরা তাকে (মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করে) তার উপর হদ্ (শারীআতের শাস্তি বিধান) প্রয়োগ করবে? অথবা তাকে (যিনাকারীকে) হত্যা করার অভিযোগে, তাকেও হত্যা করবে? আর যদি সে এ ব্যাপারে চুপ থাকে, তবে সে গযবের উপর চুপ থাকবে। আল্লাহর শপথ! আমি এ ব্যাপারে অবশ্যই রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কে জিজ্ঞাসা করবো।

পরদিন সে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর খিদমতে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞাসা করে, যদি কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীর সাথে কোন ব্যক্তিকে অবৈধ কাজে (যিনায়) লিপ্ত অবস্থায় দেখে, আর সে যদি এ সম্পর্কে কিছু বলে, তখন কি তাকে (মিথ্যা দোষারোপ করার অভিযোগে) শাস্তি দেওয়া হবে? অথবা সে যদি তাকে হত্যা করে তবে হত্যার অভিযোগে কিসাস হিসাবে কি তাকেও হত্যা করা হবে? আর সে যদি এ ব্যাপারে চুপ থাকে, তবে সে গযবের উপরে চুপ থাকবে। তিনি বলেনঃ ইয়া আল্লাহ্! এ ব্যাপারে কী হুকুম আমাকে জ্ঞাত করুন। এরূপ তিনি দুআ করতে থাকেন। তখন লিআন সম্পর্কীয় আয়াতটি নাযিল হয়ঃ ‘‘যারা তাদের স্ত্রীদের ব্যাপারে যিনার দোষারোপ করে, আর এ ব্যাপারে তারা নিজেরা ব্যতীত কোন সাক্ষ্যদাতা না থাকে’’ ......... আয়াতের শেষ পর্যন্ত।

তখন লোকদের মধ্য হতে সে ব্যক্তিকে এ ব্যাপারে পরীক্ষা করা হয়। সে ব্যক্তি ও তার স্ত্রী রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর খিদমতে হাযির হয় এবং একে অপরকে হলফ করিয়ে দোষারোপ করে অভিসম্পাত দিতে থাকে। তখন সে ব্যক্তি চারবার আল্লাহকে সাক্ষী রেখে সাক্ষ্য প্রদান করে যে, সে সত্যবাদীদের অন্তর্ভূক্ত, এরপর পঞ্চমবারে সে নিজের উপরই অভিসম্পাত করে, যদি সে মিথ্যাবাদী হয়। রাবী বলেন, এরপর সেই মহিলা শপথ করে অভিসম্পাত করতে গেলে, নবী করীম (ﷺ) তাকে ধমক দিয়ে তা করা হতে বিরত থাকতে বলেন। কিন্তু সে তা মানতে অস্বীকার করে এবং অভিসম্পাত করে। এরপর সে যখন প্রত্যাবর্তন করতে থাকে, তখন তিনি বলেনঃ অবশ্যই সে একটি কালোকায় স্থুলদেহী সন্তান প্রসব করবে। (কারণ, যার সাথে সে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়ে এ সন্তান গর্ভে ধারণ করেছে, তার দৈহিক রূপ ও আকার এরূপই ছিল)।
باب فِي اللِّعَانِ
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ إِنَّا لَلَيْلَةُ جُمْعَةٍ فِي الْمَسْجِدِ إِذْ دَخَلَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ فِي الْمَسْجِدِ فَقَالَ لَوْ أَنَّ رَجُلاً وَجَدَ مَعَ امْرَأَتِهِ رَجُلاً فَتَكَلَّمَ بِهِ جَلَدْتُمُوهُ أَوْ قَتَلَ قَتَلْتُمُوهُ فَإِنْ سَكَتَ سَكَتَ عَلَى غَيْظٍ وَاللَّهِ لأَسْأَلَنَّ عَنْهُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . فَلَمَّا كَانَ مِنَ الْغَدِ أَتَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلَهُ فَقَالَ لَوْ أَنَّ رَجُلاً وَجَدَ مَعَ امْرَأَتِهِ رَجُلاً فَتَكَلَّمَ بِهِ جَلَدْتُمُوهُ أَوْ قَتَلَ قَتَلْتُمُوهُ أَوْ سَكَتَ سَكَتَ عَلَى غَيْظٍ . فَقَالَ " اللَّهُمَّ افْتَحْ " . وَجَعَلَ يَدْعُو فَنَزَلَتْ آيَةُ اللِّعَانِ ( وَالَّذِينَ يَرْمُونَ أَزْوَاجَهُمْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُمْ شُهَدَاءُ إِلاَّ أَنْفُسُهُمْ ) هَذِهِ الآيَةُ فَابْتُلِيَ بِهِ ذَلِكَ الرَّجُلُ مِنْ بَيْنِ النَّاسِ فَجَاءَ هُوَ وَامْرَأَتُهُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَتَلاَعَنَا فَشَهِدَ الرَّجُلُ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ بِاللَّهِ إِنَّهُ لَمِنَ الصَّادِقِينَ ثُمَّ لَعَنَ الْخَامِسَةَ عَلَيْهِ إِنْ كَانَ مِنَ الْكَاذِبِينَ قَالَ فَذَهَبَتْ لِتَلْتَعِنَ فَقَالَ لَهَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " مَهْ " . فَأَبَتْ فَفَعَلَتْ فَلَمَّا أَدْبَرَا قَالَ " لَعَلَّهَا أَنْ تَجِيءَ بِهِ أَسْوَدَ جَعْدًا " . فَجَاءَتْ بِهِ أَسْوَدَ جَعْدًا .
হাদীস নং:২২৪৮
আন্তর্জাতিক নং: ২২৫৪
১৭১. লিআন।
২২৪৮. মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার ..... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা হিলাল বিন উমাইয়া, তার স্ত্রীর সাথে শুরায়ক ইবনে সাহমর অবৈধ প্রণয় সম্পর্কে নবী করীম (ﷺ) এর নিকট অভিযোগ করে। নবী করীম (ﷺ) তাকে বলেন, তুমি এ সম্পর্কে প্রমাণ পেশ করো, নতুবা তোমার উপর হদ্ কায়েম করা হবে। সে বলে, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! যখন আমাদের কেউ স্বচক্ষে তার স্ত্রীকে এরূপ কাজে লিপ্ত দেখে, সেখানেও কী সাক্ষীর প্রয়োজন? নবী করীম (ﷺ) বলেনঃ তুমি সাক্ষী পেশ করো, নতুবা মিথ্যা দোপষারোপের অভিযোগে তোমার উপর হদ্ (শাস্তি) কায়েম করা হবে।

হিলাল (রাযিঃ) বলেন, যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, তাঁর শপথ করে বলছি, নিশ্চয়ই আমি সত্যবাদী। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তাআলা আমার ব্যাপারে এমন আয়াত নাযিল করবেন, যা আমার পৃষ্ঠকে শাস্তি হতে রক্ষা করবে। তখন এ আয়াত নাযিল হয়ঃ (অর্থ) ‘‘যারা তাদের স্ত্রীদের উপরে যিনার দোষারোপ করে, এ ব্যাপারে তারা নিজেরা ব্যতীত আর কোন সাক্ষী না থাকে ......... হতেمِنَ الصَّادِقِينَ (বা তারাই সত্যবাদী) পর্যন্ত তিলাওয়াত করেন।

নবী করীম (ﷺ) প্রত্যাবর্তন করেন এবং জনৈক ব্যক্তিকে তাদের ডাকার জন্য নির্দেশ দেন। তারা উভয়ে সেখানে উপস্থিত হলে, হিলাল ইবনে উমাইয়া দণ্ডায়মান হন এবং সাক্ষ্য প্রদান করেন। নবী করীম (ﷺ) বলেনঃ আল্লাহ্ই অবগত, নিশ্চয় তোমাদের দু‘জনের মধ্যে একজন মিথ্যাবাদী। কাজেই তোমাদের মধ্যে কেউ তাওবাকারী আছ কি? সে যখন পঞ্চমবার সাক্ষ্য প্রদান করে, তখন বলে, তার (নিজের) উপর আল্লাহর গযব (অভিসম্পাত), যদি সে ( তার স্বামী) সত্যবাদীদের অর্ন্তভুক্ত হয়।

আর তখন তারা তাকে (মহিলাকে) পঞ্চমবার সাক্ষ্য প্রদানের পরিণতি হিসাবে সতর্ক করে বলেন, অবশ্যই এটা আল্লাহর গযবকে নির্দিষ্ট করবে। ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, এটা শুনে সে থমকে দাঁড়ায় এবং মুখ ফিরিয়ে নেয়, যাতে আমরা ধারণা করি যে, নিশ্চয়ই সে এহেন অভিশাপের সাক্ষ্য প্রদান হতে বিরত থাকবে। কিন্তু পরক্ষণেই সে বলে, না আমি আমার বংশের কলঙ্ক হব না। সে মহিলা শপথ করে সাক্ষ্য প্রদান করে। নবী করীম (ﷺ) বলেন, তোমরা এর দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখবে। যদি সে সুরমারঞ্জিত ভ্রু এবং স্থুলগোছা বিশিষ্ট সন্তান প্রসব করে, তবে তা হবে শুরায়ক ইবনে সাহমের ঔরসজাত সন্তান। সে মহিলা তদ্রূপ সন্তান প্রসব করলে নবী করীম (ﷺ) বলেনঃ যদি এ ব্যাপারে নির্দিষ্টভাবে কুরআনের নির্দেশ না আসত, তবে আমার ও তার (মহিলার) মধ্যকার ফায়সালার ব্যাপারটি সংকটজনক হতো।
باب فِي اللِّعَانِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ حَسَّانَ، حَدَّثَنِي عِكْرِمَةُ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ هِلاَلَ بْنَ أُمَيَّةَ، قَذَفَ امْرَأَتَهُ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِشَرِيكِ بْنِ سَحْمَاءَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " الْبَيِّنَةَ أَوْ حَدٌّ فِي ظَهْرِكَ " . قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِذَا رَأَى أَحَدُنَا رَجُلاً عَلَى امْرَأَتِهِ يَلْتَمِسُ الْبَيِّنَةَ فَجَعَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " الْبَيِّنَةَ وَإِلاَّ فَحَدٌّ فِي ظَهْرِكَ " . فَقَالَ هِلاَلٌ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ نَبِيًّا إِنِّي لَصَادِقٌ وَلَيُنْزِلَنَّ اللَّهُ فِي أَمْرِي مَا يُبَرِّئُ ظَهْرِي مِنَ الْحَدِّ فَنَزَلَتْ ( وَالَّذِينَ يَرْمُونَ أَزْوَاجَهُمْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُمْ شُهَدَاءُ إِلاَّ أَنْفُسُهُمْ ) فَقَرَأَ حَتَّى بَلَغَ ( مِنَ الصَّادِقِينَ ) فَانْصَرَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَأَرْسَلَ إِلَيْهِمَا فَجَاءَا فَقَامَ هِلاَلُ بْنُ أُمَيَّةَ فَشَهِدَ وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " اللَّهُ يَعْلَمُ أَنَّ أَحَدَكُمَا كَاذِبٌ فَهَلْ مِنْكُمَا مِنْ تَائِبٍ " . ثُمَّ قَامَتْ فَشَهِدَتْ فَلَمَّا كَانَ عِنْدَ الْخَامِسَةِ أَنَّ غَضَبَ اللَّهِ عَلَيْهَا إِنْ كَانَ مِنَ الصَّادِقِينَ وَقَالُوا لَهَا إِنَّهَا مُوجِبَةٌ . قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَتَلَكَّأَتْ وَنَكَصَتْ حَتَّى ظَنَنَّا أَنَّهَا سَتَرْجِعُ فَقَالَتْ لاَ أَفْضَحُ قَوْمِي سَائِرَ الْيَوْمِ . فَمَضَتْ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " أَبْصِرُوهَا فَإِنْ جَاءَتْ بِهِ أَكْحَلَ الْعَيْنَيْنِ سَابِغَ الأَلْيَتَيْنِ خَدَلَّجَ السَّاقَيْنِ فَهُوَ لِشَرِيكِ بْنِ سَحْمَاءَ " . فَجَاءَتْ بِهِ كَذَلِكَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " لَوْلاَ مَا مَضَى مِنْ كِتَابِ اللَّهِ لَكَانَ لِي وَلَهَا شَأْنٌ " . قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَهَذَا مِمَّا تَفَرَّدَ بِهِ أَهْلُ الْمَدِينَةِ حَدِيثُ ابْنِ بَشَّارٍ حَدِيثُ هِلاَلٍ .
হাদীস নং:২২৪৯
আন্তর্জাতিক নং: ২২৫৫
১৭১. লিআন।
২২৪৯. মুখাল্লাদ ইবনে খালিদ ..... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম (ﷺ) তাঁর জনৈক সাহাবীকে নির্দেশ প্রদান করেন, যখন তিনি পরস্পর অভিসম্পাতকারীদ্বয়কে পরস্পর অভিসম্পাত করার জন্য বলেছিলেন, যেনঅভিসম্পাতকারী পঞ্চমবার অভিসম্পাত করার সময় তার মুখে হাত রেখে বলেঃ নিশ্চয় এত (সে মিথ্যাবাদী হলে) শাস্তি অবধারিত হবে।[১]

[১] লিআন শব্দটি লা'নত (অর্থাৎ অভিসম্পাত) হতে উদ্ভূত। স্বামী-স্ত্রীর একে অপরের প্রতি ব্যভিচারের অপবাদ আরোপ করলে সাক্ষী প্রমাণ না থাকলে নিজের সাক্ষী নিজেই শপথ করে প্রদান করতে হয়। এর বিধান হল ঃ প্রত্যেকে প্রথমে চারবার শপথ করে নিজে সত্য বলার সাফাই সাক্ষ্য দিবে আর পঞ্চমবারে শপথ করে বলবে যে, আমি যদি মিথ্যা বলে থাকি তবে যেন আমার উপর আল্লাহর গযব নাযিল হয়। এরূপে উভয়ের সাফাই সাক্ষ্য প্রদানের পর আপনাআপনি বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে যায়। বিচারককে বিবাহ বিচ্ছেদের রায় দান করতে হয়। অন্যথায় অপরাধী স্বীয় অপরাধ স্বীকার করলে ও সাফাই সাক্ষ্য দানে বিরত থাকলে সে শরী'আতের বিধান মতে শান্তি পাওয়ার যোগ্য হয়। অপরাধের মাত্রানুপাতে শাস্তির বিধানকে শরী'আতের পরিভাষায় হদ বলা হয় ।
باب فِي اللِّعَانِ
حَدَّثَنَا مَخْلَدُ بْنُ خَالِدٍ الشَّعِيرِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَمَرَ رَجُلاً حِينَ أَمَرَ الْمُتَلاَعِنَيْنِ أَنْ يَتَلاَعَنَا أَنْ يَضَعَ يَدَهُ عَلَى فِيهِ عِنْدَ الْخَامِسَةِ يَقُولُ إِنَّهَا مُوجِبَةٌ .
হাদীস নং:২২৫০
আন্তর্জাতিক নং: ২২৫৬
১৭১. লিআন।
২২৫০. আল্ হাসান ইবনে আলী .... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা হিলাল ইবনে উমাইয়্যা, যিনি ঐ ব্যক্তির একজন ছিলেন, (যারা অকারণে তাবুক যুদ্ধে গমন করনেনি, যার ফলে অপরাধী সাব্যস্ত হন এবং কান্নাকাটির পর) আল্লাহ তাদের তাওবা কবুল কনে। একদা তিনি তার খামার হতে রাতে প্রত্যাবর্তনের পর তার স্ত্রীর সাথে এক ব্যক্তিকে (শুরায়ক ইবনে সাহমকে) যিনায় লিপ্ত দেখতে পান এবং তার দু’কর্ণে তাদের কথোপকথন শ্রবণ করেন। কিন্তু তিনি এতদসত্ত্বেও কোনরূপ বাড়াবাড়ি না করে রাতযাপন করেন।

সকালবেলা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর খিদমতে হাযির হয়ে বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি রাতে আমার স্ত্রীর নিকট গমনপূর্বক তার সাথে এক ব্যক্তিকে (ব্যভিচারে লিপ্তবস্থায়) আমার স্বচক্ষে অবলোকন করি এবং তার কথাও আমি স্বকর্ণে শ্রবণ করি। এতে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং তার নিকট ইহা খুবই গুরুতর মনে হয়। তখন এ আয়াত নাযিল হয়ঃ (অর্থ) ‘‘যারা তাদের স্ত্রীদের ব্যাপারে যিনার দোষারোপ করে, আর এব্যাপারে (স্ত্রী ব্যভিচারের) তাদের কোন সাক্ষী থাকে না নিজে ব্যতীত’’ ......... আয়াতের শেষ পর্যন্ত নাযিল হয়।

আর ঐ সময় রাসূলূল্লাহ্ (ﷺ) এর উপর ওহী নাযিল হওয়াকালীন সময়ের কাঠিন্যতা প্রকাশ পায়। এরপর তিনি বলেনঃ হে হিলাল! তুমি সুসংবাদ গ্রহণ কর। আল্লাহ্ তাআলা তোমার ব্যাপারে স্বস্তির বিধান জারি করেছেন। তখন হিলাল (রাযিঃ) বলেন, আমি আমার রবের নিকট এ রকম কিছুর প্রত্যাশা করেছিলাম। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেনঃ তাকে এখানে নিয়ে এসো! তখন সে (হিলালের স্ত্রী) সেখানে আসে। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাদের (উভয়ের) সম্মুখে ঐ আয়াত তিলাওয়াত করেন এবং বলেন, আখিরাতের আযাব দুনিয়ার আযাবের চাইতে ভয়াবহ।

হিলাল (রাযিঃ) বলেন, আল্লাহর শপথ! আমি তার (স্ত্রীর) ব্যাপারে যা বলছি, সত্য বলছি। তার স্ত্রী বলে, সে মিথ্যা বলছে। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁর সাহাবীদের বলেন, তোমরা তাদের পরস্পরের মধ্যে লিআন করতে বল। হিলালকে বলা হয়, তুমি সাক্ষ্য প্রদান কর। তিনি আল্লাহর শপথপূর্বক চারবার বলেন যে, তিনি সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত। এরপর তিনি পঞ্চমবারের জন্য সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুত হলে তাঁকে বলা হয়, তুমি আল্লাহকে ভয় করো। কেননা, আখিরাতের আযাবের চেয়ে দুনিয়ার আযাব খুবই নগণ্য। আর এ সাক্ষ্য (পঞ্চমবারের) তোমার শাস্তিকে অবধারিত করবে (যদি তুমি মিথ্যাবাদী হও)।

তিনি বলেন, আল্লাহর শপথ! তিনি আমাকে এজন্য শাস্তি প্রদান করবেন না, যেমন তিনি তার সম্পর্কে বলাতে আমাকে শাস্তি প্রদান করনেনি। অতঃপর তিনি পঞ্চমবারের শাস্তি প্রদানের সময় বলেন, যদি সে (নিজে) মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভূক্ত হয়, তবে তার উপর আল্লাহর লা‘নত (যেন বর্ষিত হয়)। এরপর তার স্ত্রীকে সাক্ষ্য প্রদান করতে বলা হলে, সে চারবার আল্লাহ নামে এরূপ সাক্ষ্য প্রদান করে যে, সে (তার স্বামী) মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভূক্ত। এরপর সে পঞ্চমবার শপথবাক্য উচ্চারণের জন্য প্রস্তুত হলে তাকে বলা হয়, তুমি আল্লাহকে ভয় করো এবং (জেনে রাখ) আখিরাতের আযাবের তুলনায় দুনিয়ার আযাব খুবই নগণ্য। আর এটা তোমার জন্য শাস্তিকে অবধারিত করবে।

এতদশ্রবণে সে ক্ষণকালের জন্য থেমে যায় এবং পরে বলে, আমি আমার কওমের লোকদের হেয় করব না। এরপর সে পঞ্চমবারের মতো সাক্ষ্য প্রদানের সময় বলে, তার (নিজের) উপর আল্লাহর গযব (যেন লালায়িত হয়), যদি সে (তার স্বামী) সত্যবাদীদের অন্তর্ভূক্ত হয়। অতঃপর রাসূলূল্লাহ্ (ﷺ) তাদের উভয়ের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দেন এবং ফায়সালা দেন যে, তার গর্ভস্থিত সন্তান যেন তার পিতার সাথে সম্পর্কিত না করা হয়। আর সেই মহিলাকে যেন যিনাকারী হিসাবে এবং তার সন্তানকে যেন ব্যভিচারের ফসল হিসাবে আখ্যায়িত করা না হয়। আর যে ব্যক্তি তাকে (মহিলাকে) ব্যভিচারীর দোষারোপ করবে অথবা তার সন্তানের প্রতি এরূপ দোষারোপ করবে তার উপর হদ (শরীআতের শাস্তি বিধান) জারি করা হবে। আর তিনি এরূপ সিদ্ধান্ত ব্যক্ত করেন যে, তার উপর (স্বামীর) ঐ মহিলার থাকার জন্য এবং ভরণ পোষণের জন্য কোনরূপ দায়-দায়িত্ব বর্তাবে না। কেননা, তারা তালাক ব্যতীত উভয়েই বিচ্ছিন্ন হয়েছে।

আর সে (স্বামী) তার প্রতি দৃষ্টিপাতও করতে পারবেনা। এরপর তিনি বলেনঃ সে যদি স্থুল (পায়ের) গোছাবিশিষ্ট, লাল চুল বিশিষ্ট (যার উপরিভাগ কালো) এবং হালকা পাতলা গড়নের সন্তান প্রসব করে তবে তা হবে হিলালের সন্তান। অপর পক্ষে, সে যদি স্বাস্থ্যবান, মোটাতাজা সন্তান প্রসব করে, তবে তার গর্ভজাত সন্তান হবে, যার প্রতি দোষারোপ করা হয়েছে। সে (মহিলা) মোটাতাজা, স্বাস্থ্যবান একটি সন্তান প্রসব করল। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেনঃ যদি সে আল্লাহর নামে সাক্ষ্য প্রদান না করতো, তবে তার ও আমার মধ্যকার ফায়সালার ব্যাপারটি অন্যরকম হতো। রাবী ইকরিমা বলেন, পরবর্তীকালে সে (সন্তান) মুদের গোত্রের আমীর হয়। কিন্তু তাকে তার পিতার সাথে সম্পর্কিত করা হতো না।
باب فِي اللِّعَانِ
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، حَدَّثَنَا عَبَّادُ بْنُ مَنْصُورٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ جَاءَ هِلاَلُ بْنُ أُمَيَّةَ وَهُوَ أَحَدُ الثَّلاَثَةِ الَّذِينَ تَابَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ فَجَاءَ مِنْ أَرْضِهِ عَشِيًّا فَوَجَدَ عِنْدَ أَهْلِهِ رَجُلاً فَرَأَى بِعَيْنَيْهِ وَسَمِعَ بِأُذُنَيْهِ فَلَمْ يَهِجْهُ حَتَّى أَصْبَحَ ثُمَّ غَدَا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي جِئْتُ أَهْلِي عِشَاءً فَوَجَدْتُ عِنْدَهُمْ رَجُلاً فَرَأَيْتُ بِعَيْنِي وَسَمِعْتُ بِأُذُنِي فَكَرِهَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَا جَاءَ بِهِ وَاشْتَدَّ عَلَيْهِ فَنَزَلَتْ ( وَالَّذِينَ يَرْمُونَ أَزْوَاجَهُمْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُمْ شُهَدَاءُ إِلاَّ أَنْفُسُهُمْ فَشَهَادَةُ أَحَدِهِمْ ) الآيَتَيْنِ كِلْتَيْهِمَا فَسُرِّيَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " أَبْشِرْ يَا هِلاَلُ قَدْ جَعَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ لَكَ فَرَجًا وَمَخْرَجًا " . قَالَ هِلاَلٌ قَدْ كُنْتُ أَرْجُو ذَلِكَ مِنْ رَبِّي . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَرْسِلُوا إِلَيْهَا " . فَجَاءَتْ فَتَلاَ عَلَيْهِمَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَذَكَّرَهُمَا وَأَخْبَرَهُمَا أَنَّ عَذَابَ الآخِرَةِ أَشَدُّ مِنْ عَذَابِ الدُّنْيَا فَقَالَ هِلاَلٌ وَاللَّهِ لَقَدْ صَدَقْتُ عَلَيْهَا فَقَالَتْ قَدْ كَذَبَ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَعِنُوا بَيْنَهُمَا " . فَقِيلَ لِهِلاَلٍ اشْهَدْ . فَشَهِدَ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ بِاللَّهِ إِنَّهُ لَمِنَ الصَّادِقِينَ فَلَمَّا كَانَتِ الْخَامِسَةُ قِيلَ لَهُ يَا هِلاَلُ اتَّقِ اللَّهَ فَإِنَّ عَذَابَ الدُّنْيَا أَهْوَنُ مِنْ عَذَابِ الآخِرَةِ وَإِنَّ هَذِهِ الْمُوجِبَةُ الَّتِي تُوجِبُ عَلَيْكَ الْعَذَابَ . فَقَالَ وَاللَّهِ لاَ يُعَذِّبُنِي اللَّهُ عَلَيْهَا كَمَا لَمْ يَجْلِدْنِي عَلَيْهَا . فَشَهِدَ الْخَامِسَةَ أَنَّ لَعْنَةَ اللَّهِ عَلَيْهِ إِنْ كَانَ مِنَ الْكَاذِبِينَ ثُمَّ قِيلَ لَهَا اشْهَدِي . فَشَهِدَتْ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ بِاللَّهِ إِنَّهُ لَمِنَ الْكَاذِبِينَ فَلَمَّا كَانَتِ الْخَامِسَةُ قِيلَ لَهَا اتَّقِي اللَّهَ فَإِنَّ عَذَابَ الدُّنْيَا أَهْوَنُ مِنْ عَذَابِ الآخِرَةِ وَإِنَّ هَذِهِ الْمُوجِبَةُ الَّتِي تُوجِبُ عَلَيْكِ الْعَذَابَ . فَتَلَكَّأَتْ سَاعَةً ثُمَّ قَالَتْ وَاللَّهِ لاَ أَفْضَحُ قَوْمِي فَشَهِدَتِ الْخَامِسَةَ أَنَّ غَضَبَ اللَّهِ عَلَيْهَا إِنْ كَانَ مِنَ الصَّادِقِينَ فَفَرَّقَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَهُمَا وَقَضَى أَنْ لاَ يُدْعَى وَلَدُهَا لأَبٍ وَلاَ تُرْمَى وَلاَ يُرْمَى وَلَدُهَا وَمَنْ رَمَاهَا أَوْ رَمَى وَلَدَهَا فَعَلَيْهِ الْحَدُّ وَقَضَى أَنْ لاَ بَيْتَ لَهَا عَلَيْهِ وَلاَ قُوتَ مِنْ أَجْلِ أَنَّهُمَا يَتَفَرَّقَانِ مِنْ غَيْرِ طَلاَقٍ وَلاَ مُتَوَفَّى عَنْهَا وَقَالَ " إِنْ جَاءَتْ بِهِ أُصَيْهِبَ أُرَيْصِحَ أُثَيْبِجَ حَمْشَ السَّاقَيْنِ فَهُوَ لِهِلاَلٍ وَإِنْ جَاءَتْ بِهِ أَوْرَقَ جَعْدًا جُمَالِيًّا خَدَلَّجَ السَّاقَيْنِ سَابِغَ الأَلْيَتَيْنِ فَهُوَ لِلَّذِي رُمِيَتْ بِهِ فَجَاءَتْ بِهِ أَوْرَقَ جَعْدًا جُمَالِيًّا خَدَلَّجَ السَّاقَيْنِ سَابِغَ الأَلْيَتَيْنِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لَوْلاَ الأَيْمَانُ لَكَانَ لِي وَلَهَا شَأْنٌ " . قَالَ عِكْرِمَةُ فَكَانَ بَعْدَ ذَلِكَ أَمِيرًا عَلَى مُضَرَ وَمَا يُدْعَى لأَبٍ .
হাদীস নং:২২৫১
আন্তর্জাতিক নং: ২২৫৭
১৭১. লিআন।
২২৫১. আহমাদ ইবনে হাম্বল ..... আমর ইবনে সাঈদ ইবনে জুবাইর বলেন, আমি ইবনে উমর (রাযিঃ)-কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ব্যভিচারের পরস্পর অভিসম্পাতকারীদের সম্পর্কে ইরশাদ করেছেনঃ তোমাদের হিসাব আল্লাহর উপর ন্যস্ত। আর অবশ্যই তোমাদের দুজনের মধ্যে একজন মিথ্যাবাদী। আর তোমার তার (স্ত্রীর) উপর কোন অধিকার নেই। তখন সে (স্বামী) জিজ্ঞাসা করে, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমার প্রদত্ত মালের (মোহর) বিষয় কী? তিনি বলেনঃ যদি তুমি তার ব্যাপারে সত্য কথাও বলে থাকো, তবুও তোমার দেয়া মাল (মোহর) তুমি ফেরত পাবে না আর তা এজন্য যে, তুমি তার যৌনাঙ্গ এর বিনিময়ে হালাল করেছিলে। আর যদি তুমি তার সম্পর্কে মিথ্যা বলে থাকো তবে তো এ সম্পর্কে কোন কথাই ওঠতে পারে না।
باب فِي اللِّعَانِ
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، قَالَ سَمِعَ عَمْرٌو، سَعِيدَ بْنَ جُبَيْرٍ يَقُولُ سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِلْمُتَلاَعِنَيْنِ " حِسَابُكُمَا عَلَى اللَّهِ أَحَدُكُمَا كَاذِبٌ لاَ سَبِيلَ لَكَ عَلَيْهَا " . قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَالِي . قَالَ " لاَ مَالَ لَكَ إِنْ كُنْتَ صَدَقْتَ عَلَيْهَا فَهُوَ بِمَا اسْتَحْلَلْتَ مِنْ فَرْجِهَا وَإِنْ كُنْتَ كَذَبْتَ عَلَيْهَا فَذَلِكَ أَبْعَدُ لَكَ " .
হাদীস নং:২২৫২
আন্তর্জাতিক নং: ২২৫৮
১৭১. লিআন।
২২৫২. আহমাদ ইবনে হাম্বল .... সাঈদ ইবনে জুবাইর বলেন, আমি ইবনে উমর (রাযিঃ)-কে বলি, যদি কেউ তার স্ত্রীর উপর মিথ্যে দোষারোপ করে, তবে কি তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাতে হবে? তিনি বলেন, রাসুলুল্লহ (ﷺ) বনী আজলান গোত্রস্থিত আমার ভাই ও তার স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দেন। এরপর তিনি বলেন, আল্লাহ সবই অবগত। তবে নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে একজন মিথ্যেবাদী, কাজেই তোমাদের দু’জনের মধ্যে কেউ তওবকরী আছে কি? এরূপ তিনি তিনবার উচ্চারণ করলেন। এরপর তারা উভয়ে এরূপ করতে অস্বীকার করলে তিনি তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দেন।
باب فِي اللِّعَانِ
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، قَالَ قُلْتُ لاِبْنِ عُمَرَ رَجُلٌ قَذَفَ امْرَأَتَهُ . قَالَ فَرَّقَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ أَخَوَىْ بَنِي الْعَجْلاَنِ وَقَالَ " اللَّهُ يَعْلَمُ أَنَّ أَحَدَكُمَا كَاذِبٌ . فَهَلْ مِنْكُمَا تَائِبٌ " . يُرَدِّدُهَا ثَلاَثَ مَرَّاتٍ فَأَبَيَا فَفَرَّقَ بَيْنَهُمَا .
হাদীস নং:২২৫৩
আন্তর্জাতিক নং: ২২৫৯
১৭১. লিআন।
২২৫৩. আল্ কা‘নবী ..... ইবনে উমর (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর যুগে জনৈক ব্যক্তি তার স্ত্রী সম্পর্কে লিআন করে এবং স্ত্রীর গর্ভস্থিত সন্তানকে তার ঔরসজাত নয় বলে। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দেন এবং সন্তানের সম্পর্ক মায়ের সাথে স্থির করেন।
باب فِي اللِّعَانِ
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَجُلاً، لاَعَنَ امْرَأَتَهُ فِي زَمَانِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَانْتَفَى مِنْ وَلَدِهَا فَفَرَّقَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَهُمَا وَأَلْحَقَ الْوَلَدَ بِالْمَرْأَةِ .
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান