আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ

الجامع الكبير للترمذي

৪৬. কুরআনের তাফসীর অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:৩২৫৬
আন্তর্জাতিক নং: ৩২৫৬
সূরা আহকাফ
৩২৫৬. আলী ইবনে সাঈদ কিন্দী (রাহঃ) ....... আব্দুল্লাহ্ ইবনে সালাম (রাযিঃ)-এর জনৈক ভ্রাতুষ্পুত্র থেকে বর্ণিত।

তিনি বলেন, উসমান (রাযিঃ)-কে যখন (বিদ্রোহীদের কর্তৃক হত্যার) পরিকল্পনা করা হয় সে সময় আব্দুল্লাহ্ ইবনে সালাম (রাযিঃ) তাঁর কাছে এলেন। উসমান (রাযিঃ) তাঁকে বললেনঃ আপনি কেন এসেছেন? তিনি বললেনঃ আপনার সাহায্যের জন্য এসেছি।

উসমান (রাযিঃ) বললেনঃ আপনি (বিদ্রোহী) লোকদের কাছে যান এবং আমার থেকে এদের হটিয়ে রাখুন। আপনি ভিতরে থাকার চেয়ে বাইরে (গিয়ে এদের হটানো ব্যবস্থায়) থাকা আমার জন্য বেশী কল্যাণকর।

আব্দুল্লাহ্ ইবনে সালাম (রাযিঃ) লোকদের উদ্দেশ্যে বের হয়ে গেলেন। তাদের বললেনঃ হে লোক সকল! জাহিলী যুগে আমার নাম ছিল অমুক (হাসীন)। পরে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমার নাম রাখেন আব্দুল্লাহ আমার বিষয়ে আল্লাহর কিতাবে একাধিক আয়াত নাযিল হয়েছে। আমার প্রসঙ্গেই নাযিল হয়েছিলঃ

وشَهِدَ شَاهِدٌ مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ عَلَى مِثْلِهِ فَآمَنَ وَاسْتَكْبَرْتُمْ إِنَّ اللَّهَ لاَ يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ

বনু ইসরাঈলের একজন সাক্ষী (আব্দুল্লাহ্ ইবনে সালাম) এর অনুরূপ (এক কিতাবে) সাক্ষী দিয়েও এতে (আল-কুরআনে) ঈমান এনেছে। আর তোমরা করলে ঔদ্ধত্য প্রদর্শন। আল্লাহ্ জালিমদের হেদায়ত করেন না (সূরা আহকাফ ৪৬ঃ১০)।

আমার বিষয়ে আরো নাযিল হয়েছেঃ

قلْ كَفَى بِاللَّهِ شَهِيدًا بَيْنِي وَبَيْنَكُمْ وَمَنْ عِنْدَهُ عِلْمُ الْكِتَابِ

আল্লাহ্ এবং যার নিকট কিতাবের জ্ঞান আছে (আব্দুল্লাহ) সে আমার ও তোমাদের মাঝে সাক্ষী হিসাবে যথেষ্ট (সূরা রাদ ১৩ঃ ৪৩)।

আল্লাহর তরবারী তোমাদের থেকে খাপবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তোমাদের এই শহর যেখানে তোমাদের নবী অবতরণ করেছেন। ফিরিশতারা এখানে তোমাদের প্রতিবেশী। এই মহান ব্যক্তির (উছমান) হত্যার বিষয়ে তোমরা আল্লাহ কে ভয় কর। আল্লাহর কসম, তোমরা তাঁকে হত্যা করলে তোমাদের প্রতিবেশী (রহমতের) ফিরিশতাগণকে সরিয়ে দেওয়া হবে। আল্লাহর খাপবদ্ধ কোষমুক্ত হয়ে যাবে। কিয়ামত পর্যন্ত আর তা কোষবদ্ধ হবে না।

রাবী বলেন, তখন বিদ্রোহীরা বললঃ এই ইয়াহুদীটিকে কতল কর, উছমানকে কতল কর।
بَابٌ: وَمِنْ سُورَةِ الأَحْقَافِ
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ سَعِيدٍ الْكِنْدِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو مُحَيَّاةَ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنِ ابْنِ أَخِي عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَلاَمٍ، لَمَّا أُرِيدَ عُثْمَانُ جَاءَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَلاَمٍ فَقَالَ لَهُ عُثْمَانُ مَا جَاءَ بِكَ قَالَ جِئْتُ فِي نَصْرِكَ قَالَ اخْرُجْ إِلَى النَّاسِ فَاطْرُدْهُمْ عَنِّي فَإِنَّكَ خَارِجٌ خَيْرٌ لِي مِنْكَ دَاخِلٌ . فَخَرَجَ عَبْدُ اللَّهِ إِلَى النَّاسِ فَقَالَ أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّهُ كَانَ اسْمِي فِي الْجَاهِلِيَّةِ فُلاَنٌ فَسَمَّانِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَبْدَ اللَّهِ وَنَزَلَ فِيَّ آيَاتٌ مِنْ كِتَابِ اللَّهِ نَزَلَتْ فِيَّ : ( وشَهِدَ شَاهِدٌ مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ عَلَى مِثْلِهِ فَآمَنَ وَاسْتَكْبَرْتُمْ إِنَّ اللَّهَ لاَ يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ ) وَنَزَلَتْ فِيَّ : (قلْ كَفَى بِاللَّهِ شَهِيدًا بَيْنِي وَبَيْنَكُمْ وَمَنْ عِنْدَهُ عِلْمُ الْكِتَابِ ) إِنَّ لِلَّهِ سَيْفًا مَغْمُودًا عَنْكُمْ وَإِنَّ الْمَلاَئِكَةَ قَدْ جَاوَرَتْكُمْ فِي بَلَدِكُمْ هَذَا الَّذِي نَزَلَ فِيهِ نَبِيُّكُمْ فَاللَّهَ اللَّهَ فِي هَذَا الرَّجُلِ أَنْ تَقْتُلُوهُ فَوَاللَّهِ إِنْ قَتَلْتُمُوهُ لَتَطْرُدُنَّ جِيرَانَكُمُ الْمَلاَئِكَةَ وَلَتَسُلُّنَّ سَيْفَ اللَّهِ الْمَغْمُودَ عَنْكُمْ فَلاَ يُغْمَدُ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ قَالَ فَقَالُوا اقْتُلُوا الْيَهُودِيَّ وَاقْتُلُوا عُثْمَانَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَقَدْ رَوَاهُ شُعَيْبُ بْنُ صَفْوَانَ عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ عَنِ ابْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَلاَمٍ عَنْ جَدِّهِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَلاَمٍ .
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৩২৫৭
আন্তর্জাতিক নং: ৩২৫৭
সূরা আহকাফ
৩২৫৭. আব্দুর রহমান ইবনে আসওয়াদ আবু আমর বসরী (রাহঃ) ..... আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (ﷺ) যখন মেঘের ঘনঘটা দেখতেন তখন অস্থির হয়ে একবার সামনে যেতেন আরেকবার পেছনে যেতেন। বৃষ্টি হয়ে গেলে তাঁর পেরেশানী বিদূরিত হত। আয়িশা (রাযিঃ) বলেনঃ আমি এই বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেনঃ কি জানি এই মেঘ হয়ত এমনও হতে পারে যেমন আল্লাহ্ তাআলা এই আয়াতে ইরশাদ করেছেনঃ

فلمَّا رَأَوْهُ عَارِضًا مُسْتَقْبِلَ أَوْدِيَتِهِمْ قَالُوا هَذَا عَارِضٌ مُمْطِرُنَا

তারা যখন তাদের উপত্যকার দিকে মেঘ আসতে দেখল তখন তারা বলতে লাগলঃ এই তো মেঘ আমাদের বৃষ্টি দান করবে। কিন্তু পরিণাম তা তাদের জন্য আযাব বয়ে নিয়ে আসে (সূরা আহকাফ ৪৬ঃ ২৪)।
بَابٌ: وَمِنْ سُورَةِ الأَحْقَافِ
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الأَسْوَدِ أَبُو عَمْرٍو الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَبِيعَةَ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ عَائِشَةَ، رضى الله عنها قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا رَأَى مَخِيلَةً أَقْبَلَ وَأَدْبَرَ فَإِذَا مَطَرَتْ سُرِّيَ عَنْهُ . قَالَتْ فَقُلْتُ لَهُ . فَقَالَ " وَمَا أَدْرِي لَعَلَّهُ كَمَا قَالَ اللَّهُ تَعَالَى : (فلمَّا رَأَوْهُ عَارِضًا مُسْتَقْبِلَ أَوْدِيَتِهِمْ قَالُوا هَذَا عَارِضٌ مُمْطِرُنَا ) " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
হাদীস নং:৩২৫৮
আন্তর্জাতিক নং: ৩২৫৮
সূরা আহকাফ
৩২৫৮. আলী ইবনে হুজর (রাহঃ) ...... আলকামা (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি ইবনে মাসউদ (রাযিঃ)-কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। জিনদের সঙ্গে নবীজীর যেদিন সাক্ষাতকার হয় সেদিন আপনাদের কেউ কি তাঁর সঙ্গে ছিলেন?

তিনি বললেনঃ না, আমাদের কেউ সেদিন তাঁর সঙ্গে ছিল না। মক্কা থাকাকালে একরাতে আমরা তাঁকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। আমরা ভাবছিলাম, তাঁকে গোপনে হত্যা করে ফেলেছে না কি? তাঁকে কোন জিনে উড়িয়ে নিয়েছে কি? কি হয়েছে তাঁর? সবচেয়ে অস্থির রাত আমরা কাটালাম। শেষে যখন ভোর হয়ে এল বা উষার মুখে হঠাৎ আমরা তাঁকে পেলাম। তিনি হেরার দিক থেকে আসছেন। তাঁরা (সাহাবীরা) তাঁকে তারা যে দুশ্চিন্তায় ছিলেন তা বললেন। নবীজী (ﷺ) বললেনঃ জিনদের পক্ষ থেকে একজন আমন্ত্রণকারী আমার কাছে এসেছিল। এরপর আমি তাদের কাছে পৌঁছলাম এবং তাদেরকে কুরআন পাঠ করে শুনালাম।

ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) বলেন, এরপর নবীজী আমাদের নিয়ে চললেন এবং তাদের চি‎হ্ন ও তাদের আগুনের চিহ্ন আমাদের দেখালেন। শা’বী (রাহঃ) বলেনঃ এরা ছিল জাযীরা অঞ্চলের জিন। তারা নবী (ﷺ) এর কাছে খাদ্যের দরখাস্ত জানায়।

তিনি বললেনঃ যে হাড্ডি (আহারের সময়) বিসমিল্লাহ্ বলে আহার করা হবে তা তোমাদের হাতে আরো অধিক গোশত পূর্ণ হয়ে আসবে। আর উটের বিষ্ঠা বা গোবর তোমাদের পশু খাদ্য রূপে পাবে।

রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেনঃ তোমরা হাড্ডি ও বিষ্ঠা দিয়ে ইস্তিনজা করবে না। কারণ এ দু’টো হল তোমাদের ভাই জিনদের খাদ্য।
بَابٌ: وَمِنْ سُورَةِ الأَحْقَافِ
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ دَاوُدَ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ عَلْقَمَةَ، قَالَ قُلْتُ لاِبْنِ مَسْعُودٍ رضى الله عنه هَلْ صَحِبَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةَ الْجِنِّ مِنْكُمْ أَحَدٌ قَالَ مَا صَحِبَهُ مِنَّا أَحَدٌ وَلَكِنْ قَدِ افْتَقَدْنَاهُ ذَاتَ لَيْلَةٍ وَهُوَ بِمَكَّةَ فَقُلْنَا اغْتِيلَ أَوِ اسْتُطِيرَ مَا فُعِلَ بِهِ فَبِتْنَا بِشَرِّ لَيْلَةٍ بَاتَ بِهَا قَوْمٌ حَتَّى إِذَا أَصْبَحْنَا أَوْ كَانَ فِي وَجْهِ الصُّبْحِ إِذَا نَحْنُ بِهِ يَجِيءُ مِنْ قِبَلِ حِرَاءَ قَالَ فَذَكَرُوا لَهُ الَّذِي كَانُوا فِيهِ فَقَالَ " أَتَانِي دَاعِيَ الْجِنِّ فَأَتَيْتُهُمْ فَقَرَأْتُ عَلَيْهِمْ " . فَانْطَلَقَ فَأَرَانَا آثَارَهُمْ وَآثَارَ نِيرَانِهِمْ . قَالَ الشَّعْبِيُّ وَسَأَلُوهُ الزَّادَ وَكَانُوا مِنْ جِنِّ الْجَزِيرَةِ فَقَالَ " كُلُّ عَظْمٍ لَمْ يُذْكَرِ اسْمُ اللَّهِ عَلَيْهِ يَقَعُ فِي أَيْدِيكُمْ أَوْفَرَ مَا كَانَ لَحْمًا وَكُلُّ بَعْرَةٍ أَوْ رَوْثَةٍ عَلَفٌ لِدَوَابِّكُمْ " . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " فَلاَ تَسْتَنْجُوا بِهِمَا فَإِنَّهُمَا زَادُ إِخْوَانِكُمْ مِنَ الْجِنِّ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .