আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ

الجامع الكبير للترمذي

৪৬. কুরআনের তাফসীর অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:২৯৮৮
আন্তর্জাতিক নং: ২৯৮৮
শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
২৯৮৮. হান্নাদ (রাহঃ) ..... আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, আদম সন্তানের মাঝে শয়তানের স্পর্শ রয়েছে এবং ফিরিশতারও স্পর্শ রয়েছে। শয়তানের স্পর্শ হল মন্দ কাজে প্ররোচিত করা এবং সত্য অস্বীকার করা। আর ফিরিশতাদের স্পর্শ হল ভাল কাজে উৎসাহিত করা এবং সত্যকে স্বীকার করা। কেউ যদি তার নিজের মধ্যে এই জিনিস (ভাল ভাবে) পায় তবে সে যেন এটিকে আল্লাহর পক্ষ থেকেই জানে এবং এর জন্য যেন আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হয় আর কোন ব্যক্তি যদি নিজের মধ্যে অন্য ভাব পায় তখন যেন সে শয়তান থেকে আল্লাহর পানাহ চায়। এরপর তিনি পাঠ করলেনঃ (الشََّيْطَانُ يَعِدُكُمُ الْفَقْرَ وَيَأْمُرُكُمْ بِالْفَحْشَاءِ) ‘‘শয়তান তোমাদের দারিদ্রের ভয় দেখায় এবং অশ্লীলতা ও কার্পণ্যের নির্দেশ দেয়।’’ (২ঃ ২৬৮)

হাদীসটি হাসান-গারীব। এটি আবুল আহওয়াস (রাহঃ) এর রিওয়ায়াত। আবুল আহওয়াস (রাহঃ) এর সূত্র ছাড়া এটি মারফূ’রূপে বর্ণিত আছে বলে আমাদের জানা নেই।
بَابٌ
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ مُرَّةَ الْهَمْدَانِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ لِلشَّيْطَانِ لَمَّةً بِابْنِ آدَمَ وَلِلْمَلَكِ لَمَّةً فَأَمَّا لَمَّةُ الشَّيْطَانِ فَإِيعَادٌ بِالشَّرِّ وَتَكْذِيبٌ بِالْحَقِّ وَأَمَّا لَمَّةُ الْمَلَكِ فَإِيعَادٌ بِالْخَيْرِ وَتَصْدِيقٌ بِالْحَقِّ فَمَنْ وَجَدَ ذَلِكَ فَلْيَعْلَمْ أَنَّهُ مِنَ اللَّهِ فَلْيَحْمَدِ اللَّهَ وَمَنْ وَجَدَ الأُخْرَى فَلْيَتَعَوَّذْ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ ثُمَّ قَرَأ : (الشََّيْطَانُ يَعِدُكُمُ الْفَقْرَ وَيَأْمُرُكُمْ بِالْفَحْشَاءِ ) " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ وَهُوَ حَدِيثُ أَبِي الأَحْوَصِ لاَ نَعْلَمُهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ أَبِي الأَحْوَصِ .
হাদীস নং:২৯৮৯
আন্তর্জাতিক নং: ২৯৮৯
সূরা আল-বাকারা
২৯৮৯. আব্দ ইবনে হুমায়দ (রাহঃ) ..... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেনঃ হে লোক সকল! আল্লাহ্ পবিত্র আর পবিত্র জিনিস ছাড়া তিনি কিছু গ্রহণ করেন না। আল্লাহ্ তাআলা তার রাসূলগণকে যে বিষয়ের নির্দেশ দিয়েছেন মু’মিনদেরও সে বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন। বলেছেনঃ

يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ

‘‘হে রাসূলগণ, আপনারা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করুন এবং সৎকর্ম করুন। আপনারা যা করেন সে সম্বদ্ধে আমি সবিশেষ অবহিত (মু’মিনূন ২৩ঃ ৫১)।

হে মু’মিনগণ, তোমাদেরকে আমি যে সব পবিত্র বস্ত দিয়েছি তা থেকে আহার কর(২ঃ ১৭২)

আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বলেনঃ তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, দীর্ঘ সফরে তার অবস্থা উস্কুখুস্ক, ধূলি মলিন, আসমানের দিকে হাত লম্বা করে বলে, হে পরওয়ারদিগার, হে পরওয়ারদিগার, কিন্তু খাদ্য তার হারাম, পানীয় তার হারাম, পোশাক-পরিচ্ছদ তার হারাম। তার লালন-পালন হয়েছে হারাম মাল দিয়ে সুতরাং কেমন করে তার দুআ কবুল করা হবে? মুসলিম

হাদীসটি হাসান-গারীব। ফুযায়ল ইবনে মারযূক (রাহঃ) এর সূত্র ব্যতীত একটি সম্পর্কে আমাদের জানা নেই। আবু হাযিম হলেন আশজাঈ। তাঁর নাম হল সালমান (রাহঃ)। ইনি হলেন আযযা আশজাইয়্যা-এর মাওলা বা আযাদ কৃত দাস।
بَابٌ: وَمِنْ سُورَةِ البَقَرَةِ
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا فُضَيْلُ بْنُ مَرْزُوقٍ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ اللَّهَ طَيِّبٌ وَلاَ يَقْبَلُ إِلاَّ طَيِّبًا وَإِنَّ اللَّهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ فَقَالَ : (يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ ) وَقَالَ أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ ) " . قَالَ وَذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ يَمُدُّ يَدَهُ إِلَى السَّمَاءِ يَا رَبِّ يَا رَبِّ وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ وَإِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ فُضَيْلِ بْنِ مَرْزُوقٍ وَأَبُو حَازِمٍ هُوَ الأَشْجَعِيُّ اسْمُهُ سَلْمَانُ مَوْلَى عَزَّةَ الأَشْجَعِيَّةِ .
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:২৯৯০
আন্তর্জাতিক নং: ২৯৯০
সূরা আল-বাকারা
২৯৯০. আব্দ ইবনে হুমায়দ (রাহঃ) ..... আলী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ

إِنْ تُبْدُوا مَا فِي أَنْفُسِكُمْ أَوْ تُخْفُوهُ يُحَاسِبْكُمْ بِهِ اللَّهُ فَيَغْفِرُ لِمَنْ يَشَاءُ وَيُعَذِّبُ مَنْ يَشَاءُ

তোমাদের মনে যা আছে তা প্রকাশ কর বা গোপন রাখ আল্লাহ্ এর হিসাব তোমাদের নিকট থেকে গ্রহণ করবেন। তারপর যাকে ইচ্ছা তিনি ক্ষমা করবেন এবং যাকে খুশি শাস্তি দিবেন (২ঃ ২৮৪)

এই আয়াত নাযিল হলে আমাদের তা খুবই চিন্তিত করে তোলে। আমরা বললাম, আমাদের কেউ মনে মনেও যে কথা বলবে তারও হিসাব হবে। এরপর জানি না কি ক্ষমা করা হবে কি ক্ষমা করা হবে না। এরপর এর পরবর্তী আয়াত নাযিল হয় এবং এই আয়াতের বক্তব্য রহিত করে দেওয়া হয় ইরশাদ হচ্ছেঃ

لاَ يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلاَّ وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ

আল্লাহ কারো উপর তার সাধ্যাতীত বস্তর দায়িত্ব অর্পন করেন না। সে ভাল যা উপার্জন করে তা তারই আর মন্দ যা উপার্জন করে তাও তারই (২ঃ ২৮৬)।
بَابٌ: وَمِنْ سُورَةِ البَقَرَةِ
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنِ السُّدِّيِّ، قَالَ حَدَّثَنِي مَنْ، سَمِعَ عَلِيًّا، يَقُولُ لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ : (إِنْ تُبْدُوا مَا فِي أَنْفُسِكُمْ أَوْ تُخْفُوهُ يُحَاسِبْكُمْ بِهِ اللَّهُ فَيَغْفِرُ لِمَنْ يَشَاءُ وَيُعَذِّبُ مَنْ يَشَاءُ ) الآيَةَ أَحْزَنَتْنَا قَالَ قُلْنَا يُحَدِّثُ أَحَدُنَا نَفْسَهُ فَيُحَاسَبُ بِهِ لاَ نَدْرِي مَا يُغْفَرُ مِنْهُ وَلاَ مَا لاَ يُغْفَرُ فَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ بَعْدَهَا فَنَسَخَتْهَا ( لاَ يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلاَّ وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ ).
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:২৯৯১
আন্তর্জাতিক নং: ২৯৯১
সূরা আল-বাকারা
২৯৯১. আব্দ ইবনে হুমায়দ (রাহঃ) .... উমাইয়া (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আয়িশা (রাযিঃ)-কে আল্লাহ্ তাআলার এই ইরশাদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলেনঃ

إِنْ تُبْدُوا مَا فِي أَنْفُسِكُمْ أَوْ تُخْفُوهُ يُحَاسِبْكُمْ بِهِ اللَّهُ

তোমাদের মনে যা আছে তা প্রকাশ কর বা গোপন কর আল্লাহ্ তোমাদের থেকে এর হিসাব নিবেন (مَنْ يَعْمَلْ سُوءًا يُجْزَ بِهِ) (২ঃ ২৮৪) এবং ............... যে কেউ মন্দ কাজ করলে তার প্রতিফল সে পাবে। (৪ঃ ১২৩)।

আয়িশা (রাযিঃ) বললেনঃ এই বিষয়ে রাসুল্লাহ্ (ﷺ)-কে প্রশ্ন করার পর আজ পর্যন্ত আর কেউ আমাকে এই প্রশ্ন করে নি। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছিলেনঃ আল্লাহ্ তাআলা জ্বর-জারি, আপদ-বিপদের মাধ্যমে বান্দাকে যে শাস্তি দেন এ হল তা। এমনকি যে সামান্য জিনিস-পত্র সে জামার হাতার মধ্যে রাখে তা হারিয়ে গেলে যে পেরেশানী তার হয় তাও। (তাতেও তার গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়)। অবশেষে লাল সোনা যেমন হ্যাঁপর থেকে (আগুনে পুড়ে) নির্মল হয়ে বেরিয়ে আসে তেমনি বান্দাও তার গুনাহ্ সমূহ থেকে (নির্মল হয়ে) বেরিয়ে আসে।

আয়িশা (রাযিঃ) এর রিওয়ায়াত হিসাবে হাদীসটি হাসান-গারীব। হাম্মাদ ইবনে সালামা (রাহঃ) এর সূত্র ছাড়া এটি সম্পর্কে আমরা কিছু জানি না।
بَابٌ: وَمِنْ سُورَةِ البَقَرَةِ
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُوسَى، وَرَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ أُمَيَّةَ، أَنَّهَا سَأَلَتْ عَائِشَةَ عَنْ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى : (إِنْ تُبْدُوا مَا فِي أَنْفُسِكُمْ أَوْ تُخْفُوهُ يُحَاسِبْكُمْ بِهِ اللَّهُ) وَعَنْ قَوْلِهِ : (مَنْ يَعْمَلْ سُوءًا يُجْزَ بِهِ ) فَقَالَتْ مَا سَأَلَنِي عَنْهَا أَحَدٌ مُنْذُ سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " هَذِهِ مُعَاتَبَةُ اللَّهِ الْعَبْدَ فِيمَا يُصِيبُهُ مِنَ الْحُمَّى وَالنَّكْبَةِ حَتَّى الْبِضَاعَةُ يَضَعُهَا فِي كُمِّ قَمِيصِهِ فَيَفْقِدُهَا فَيَفْزَعُ لَهَا حَتَّى إِنَّ الْعَبْدَ لَيَخْرُجُ مِنْ ذُنُوبِهِ كَمَا يَخْرُجُ التِّبْرُ الأَحْمَرُ مِنَ الْكِيرِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ عَائِشَةَ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ .