আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ

الجامع الكبير للترمذي

৪০. ঈমানের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:২৬১০
আন্তর্জাতিক নং: ২৬১০
জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) কর্তৃক নবী (ﷺ)-কে ঈমান ও ইসলামের পরিচয় প্রদান।
২৬১১. আবু আম্মার হুসাইন ইবনে হুরায়ছ খুযাঈ (রাহঃ) ......... ইয়াহয়া ইবনে ইয়া’মুর (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সর্বপ্রথম মা’বাদ জুহানী 'কাদর মতবাদ'’* সম্পর্কে কথা বলেন। ইয়াহয়া (রাহঃ) বলেনঃ একবার আমি এবং হুমায়দ ইবনে আব্দুর রহমান হিমায়ারী (হজ্জ বা উমরার উদ্দেশ্যে) বের হলাম। শেষে আমরা মদীনায় আসলাম। আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছিলাম যে, যদি নবী (ﷺ) এর কোন সাহাবীর সাক্ষাত পেতাম তবে এসব লোক যে নতুন মতবাদ প্রকাশ করছে সে বিষয়ে তাঁর কাছে জিজ্ঞাসা করতাম। (সৌভাগ্যক্রমে) আমরা তাঁর অর্থাৎ আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর (রাযিঃ) (রাযিঃ)-এর সাক্ষাত পেলাম। তিনি তখন মসজিদে নববী থেকে বের হচ্ছিলেন। আমি এবং আমার সঙ্গী গিয়ে তাঁর পাশে পাশে চললাম। (আমার ধারণা হয় যে, আমার সঙ্গী কথা বলার ভার আমার উপরই ন্যস্ত করবেন। তাই) আমি আরম্ভ করলামঃ হে আবু আব্দুর রহমান! (আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর (রাযিঃ) এর উপনাম) একদল লোক এমন আছে যারা কুরআন পাঠ করে, ইলম র্চচা করে বটে কিন্তু তারা মনে করে তাকদীর বলতে কিছুই নেই। সবকিছু তাৎক্ষণিক ভাবে ঘটে।

তিনি বললেনঃ এদের সঙ্গে তোমার যখন সাক্ষাত হবে তখন বলে দিবে যে, তাদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই এবং তারাও আমার সঙ্গে সম্পর্কহীন। যে সত্তার নামে আব্দুল্লাহ্ কসম করে সেই সত্তার (আল্লাহ্ তাআলা) কসম তাদের কেউ যদি উহূদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণও আল্লাহর পথে ব্যয় করে তবুও তাকদীরের ভাল-মন্দ আল্লাহর থেকেই হয় এই কথার উপর ঈমান না আনা পর্যন্ত তার কিছুই কবুল করা হবে না।

ইয়াহয়া বলেনঃ এরপর তিনি হাদীস বর্ণনা করতে শুরু করলেন। বললেনঃ উমর ইবনুল খাত্তাব (রাযিঃ) বলেছেন, আমরা একদিন রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট হাযির হলাম। এমন হয় এক লোক এসে হাযির হল, তাঁর কাপড় ছিল সাদা ধবধবে আর চুল ছিল কাল কুচকুচে। তার মধ্যে সফরের কোন চিহ্ন পরিলক্ষিত হচ্ছিল না। কিন্তু আমাদের কেউই তাঁকে চিনতে পারছিল না। তিনি নবী (ﷺ) এর কাছে এলেন এবং নিজের দুই হাঁটু নবী (ﷺ) এর দুই হাঁটুর সঙ্গে লাগিয়ে বসে পড়লেন। তারপর বললেনঃ হে মুহাম্মাদ! ঈমান কি?

নবী (ﷺ) বললেনঃ তুমি আল্লাহর উপর, তাঁর ফিরিশতা, কিতাব, রাসূলগণ এবং শেষ দিন ও তাকদীরের ভাল-মন্দ তাঁর পক্ষ থেকে ই হয় সেই কথার উপর বিশ্বাস স্থাপন করবে।

লোকটি বললেনঃ ইসলাম কি?

তিনি বললেনঃ এই কথার সাক্ষ্য প্রদান যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই, মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও তাঁর রাসূল, নামায কায়েম করা, যাকাত প্রদান করা, বায়তুল্লাহর হজ্জ করা, রমযানের রোযা পালন করা।

লোকটি বললেনঃ ইহসান কি?

তিনি বললেনঃ এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে যেন তুমি তাঁকে প্রত্যক্ষ করছ। যদি তুমি তাঁকে না-ও দেখ তবে তিনি তো তোমাকে দেখছেন।

উমর (রাযিঃ) বলেনঃ এই লোকটি প্রতিটি বিষয়েই রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলছিল, ’আপনি ঠিক বলেছেন’। লোকটির এই আচরণে আমরা বিস্মিত বোধ করছিলাম যে, তিনিই প্রশ্ন করছেন আবার তিনিই তা সত্যায়িত করছেন!

লোকটি বললেনঃ কিয়ামত কবে হবে?

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ এই বিষয়ে প্রশ্নকর্তা অপেক্ষা জিজ্ঞাসিত জন অধিক অবহিত নন।

লোকটি বললেনঃ এর আলামত কি?

তিনি বললেনঃ তা হল, দাসী তার প্রভুর জননী হবে। আর খালি পা, খালি দেহ, দরিদ্র মেষ পালকদেরকে বিরাট বিরাট অট্রালিকার প্রতিযোগিতায় গর্বিত দেখতে পাবে।

উমর (রাযিঃ) বলেন, এর তিন দিন পর নবী (ﷺ) এর সঙ্গে আমার সাক্ষাত হয়। তখন তিনি বললেনঃ হে উমর! তুমি কি জান এই প্রশ্নকারী কে? তিনি জিবরাঈল। তিনি তোমাদের দ্বীনী বিষয়ে শিক্ষা দিতে এসেছিলেন। -ইবনে মাজাহ, মুসলিম

আহমদ ইবনে মুহাম্মাদ (রাহঃ) কাহমাস ইবনে হাসান (রাহঃ) থেকে এই সনদে ই উক্ত মর্মে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। মুহাম্মাদ ইবনে মুছান্না (রাহঃ) কাহমাস (রাহঃ) থেকে এই সনদে উক্ত মর্মে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। এই বিষয়ে তালহা ইবনে উবাইদুল্লাহ্, আনাস ইবনে মালিক ও আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে।

হাদীসটি সহীহ-হাসান। একাধিক সূত্রে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত আছে। হাদীসটি ইবনে উমর ......... নবী (ﷺ) সূত্রেও বর্ণিত আছে। ইবনে উমর ......... উমর ......... নবী (ﷺ) সনদটিই হল সহীহ।

* তাকদীর অস্বীকার করা বিষয়ক মতবাদ।
باب مَا جَاءَ فِي وَصْفِ جِبْرِيلَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الإِيمَانَ وَالإِسْلاَمَ
حَدَّثَنَا أَبُو عَمَّارٍ الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ الْخُزَاعِيُّ، أَخْبَرَنَا وَكِيعٌ، عَنْ كَهْمَسِ بْنِ الْحَسَنِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ يَعْمُرَ، قَالَ أَوَّلُ مَنْ تَكَلَّمَ فِي الْقَدَرِ مَعْبَدٌ الْجُهَنِيُّ قَالَ فَخَرَجْتُ أَنَا وَحُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحِمْيَرِيُّ حَتَّى أَتَيْنَا الْمَدِينَةَ فَقُلْنَا لَوْ لَقِينَا رَجُلاً مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلْنَاهُ عَمَّا أَحْدَثَ هَؤُلاَءِ الْقَوْمُ . قَالَ فَلَقِينَاهُ يَعْنِي عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ وَهُوَ خَارِجٌ مِنَ الْمَسْجِدِ قَالَ فَاكْتَنَفْتُهُ أَنَا وَصَاحِبِي قَالَ فَظَنَنْتُ أَنَّ صَاحِبِي سَيَكِلُ الْكَلاَمَ إِلَىَّ فَقُلْتُ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ إِنَّ قَوْمًا يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ وَيَتَقَفَّرُونَ الْعِلْمَ وَيَزْعُمُونَ أَنْ لاَ قَدَرَ وَأَنَّ الأَمْرَ أُنُفٌ قَالَ فَإِذَا لَقِيتَ أُولَئِكَ فَأَخْبِرْهُمْ أَنِّي مِنْهُمْ بَرِيءٌ وَأَنَّهُمْ مِنِّي بُرَآءُ وَالَّذِي يَحْلِفُ بِهِ عَبْدُ اللَّهِ لَوْ أَنَّ أَحَدَهُمْ أَنْفَقَ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا مَا قُبِلَ ذَلِكَ مِنْهُ حَتَّى يُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ . قَالَ ثُمَّ أَنْشَأَ يُحَدِّثُ فَقَالَ قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ كُنَّا عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَجَاءَ رَجُلٌ شَدِيدُ بَيَاضِ الثِّيَابِ شَدِيدُ سَوَادِ الشَّعَرِ لاَ يُرَى عَلَيْهِ أَثَرُ السَّفَرِ وَلاَ يَعْرِفُهُ مِنَّا أَحَدٌ حَتَّى أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَلْزَقَ رُكْبَتَهُ بِرُكْبَتِهِ ثُمَّ قَالَ يَا مُحَمَّدُ مَا الإِيمَانُ قَالَ " أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلاَئِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ " . قَالَ فَمَا الإِسْلاَمُ قَالَ " شَهَادَةُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ وَإِقَامُ الصَّلاَةِ وَإِيتَاءُ الزَّكَاةِ وَحَجُّ الْبَيْتِ وَصَوْمُ رَمَضَانَ " . قَالَ فَمَا الإِحْسَانُ قَالَ " أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ فَإِنَّكَ إِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاكَ " . قَالَ فِي كُلِّ ذَلِكَ يَقُولُ لَهُ صَدَقْتَ . قَالَ فَتَعَجَّبْنَا مِنْهُ يَسْأَلُهُ وَيُصَدِّقُهُ . قَالَ فَمَتَى السَّاعَةُ قَالَ " مَا الْمَسْئُولُ عَنْهَا بِأَعْلَمَ مِنَ السَّائِلِ " . قَالَ فَمَا أَمَارَتُهَا قَالَ أَنْ تَلِدَ الأَمَةُ رَبَّتَهَا وَأَنْ تَرَى الْحُفَاةَ الْعُرَاةَ الْعَالَةَ أَصْحَابَ الشَّاءِ يَتَطَاوَلُونَ فِي الْبُنْيَانِ " . قَالَ عُمَرُ فَلَقِيَنِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ ذَلِكَ بِثَلاَثٍ فَقَالَ " يَا عُمَرُ هَلْ تَدْرِي مَنِ السَّائِلُ ذَاكَ جِبْرِيلُ أَتَاكُمْ يُعَلِّمُكُمْ مَعَالِمَ دِينِكُمْ " .
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا كَهْمَسُ بْنُ الْحَسَنِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ .
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ مُعَاذٍ، عَنْ كَهْمَسٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ بِمَعْنَاهُ . وَفِي الْبَابِ عَنْ طَلْحَةَ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ وَأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ قَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ نَحْوُ هَذَا عَنْ عُمَرَ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَالصَّحِيحُ هُوَ ابْنُ عُمَرَ عَنْ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .