আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ
الجامع الكبير للترمذي
৮. নবীজী ﷺ থেকে বর্ণিত রোযার অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১ টি
অনুসন্ধান করুন...
হাদীস নং:৭২৪
আন্তর্জাতিক নং: ৭২৪
রমযানের রোযা ভঙ্গ করার কাফফারা।
৭২২. নসর ইবনে আলী জাহযামী ও আবু আম্মার (রাহঃ) ..... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তাঁরা বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি তো ধ্বংস হয়ে গেছি। তিনি বললেনঃ কিসে তোমাকে ধ্বংস করলো? লোকটি বলল, রমযানে আমি স্ত্রী সঙ্গম করেছি। তিনি বললেন, তুমি কি একটি গোলাম আযাদ করতে সক্ষম? লোকটি বলল, না। তিনি বললেন, তুমি কি লাগাতার দুই মাস রোযা পালনে সমর্থ? লোকটি বলল, না। তিনি বললেন, ষাটজন মিসকিনকে আহার করাতে সক্ষম? লোকটি বলল, না। তখন তিনি তাকে বললেন, তুমি বসো। লোকটি বসে রইলো। তারপর নবী (ﷺ) এর কাছে এক আরক খেজুর এলো। আরক’ হল বড় থলে বা টুকরি। তিনি লোকটিকে বললেন, এগুলো নিয়ে সাদ্কা করে দাও। লোকটি বলল, মদীনার দুই প্রান্তের মাঝে আমার চাইতে অভাবগ্রস্ত আর কেউ নেই। আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বলেন, তিনি শুনে হেসে উঠলেন, এমন কি তার চোয়ালের দাঁত প্রকাশ পেল। তিনি বললেন, তুমি নিয়ে নাও তোমার পরিবারবর্গকে আহার করাও। - ইবনে মাজাহ ১৬৭১, বুখারি ও মুসলিম
এই বিষয়ে ইবনে উমর, আয়িশা ও আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। ইমাম আবু ঈসা (রাহঃ) বলেন, আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ। যে ব্যক্তি রমযান মাসে ইচ্ছাকৃতভাবে স্ত্রী সঙ্গম দ্বারা রোযা ভঙ্গ করে তার ব্যাপারে এই হাদীস অনুসারে উলামায়ে কিরামদের আমল রয়েছে। কিন্তু কেউ যদি পানাহার করে ইচ্ছাকৃতভাবে রোযা ভেঙ্গে ফেলে তবে তার বিষয়ে আলিমগণের মতভেদ রয়েছে। কোন কোন আলিম বলেন, তাকে কাযা ও কাফফারা উভয় আদায় করতে হবে। তারা পানাহারকে স্ত্রী সঙ্গমের সাথে সা’দৃশ্যপূর্ণ বলে মনে করেন। এ হলো সুফিয়ান সাওরী, ইবনে মুবারক ও ইসহাক এর অভিমত।
কোন কোন আলিম বলেন, তাকে কাযা করতে হবে। কিন্তু কাফফারা দিতে হবেনা। কারণ, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে স্ত্রী সঙ্গমের ক্ষেত্রেই কাফফারা উল্লেখ রয়েছে। পানাহারের ক্ষেত্রে এর উল্লেখ নেই। তারা বলেন, স্ত্রী সঙ্গমের সাথে পানাহারের সা’দৃশ্য নেই। এ হলো, ইমাম শাফিঈ ও আহমাদ (রাহঃ) এর অভিমত।
ইমাম শাফিঈ (রাহঃ) বলেন, রোযা ভঙ্গকারী ব্যক্তিকে নবী (ﷺ) উক্ত সাদ্কা করে দিয়েছিলেন; তার উক্তি নাও, তোমার পরিবারবর্গকে তার আহার করাও, বিভিন্নার্থ বহন করে। হতে পারে যে, কাফফারা তো যে সক্ষম তার দিতে হয়। এই ব্যক্তি তখন কাফফারা দিতে সক্ষম ছিল না। পরে নবী (ﷺ) যখন তাকে কিছু দিলেন আর সে তার মালিক হয়ে গেল তখন সে বলল, এ এলাকায় আমাদের চাইতে বেশী অভাবগ্রস্ত আর কেউ নাই। নবী (ﷺ) বললেন, নিয়ে যাও এবং তোমার পরিবারবর্গকে আহার করাও। কেননা, জীবন ধারণের মত পরিমাণ খাদ্যের অতিরিক্ত যা হয় তা কাফফারা হয়। যার অবস্থা এই ব্যক্তির ন্যায় তার সম্পর্কে ইমাম শাফেঈর মত হলো, সে ঐ মাল ভোগ করতে পারে। আর কাফফারা তার রোযা থেকে যাবে। যেদিন সে মালিক হবে সেদিন সে কাফফারা দিবে।
এই বিষয়ে ইবনে উমর, আয়িশা ও আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। ইমাম আবু ঈসা (রাহঃ) বলেন, আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ। যে ব্যক্তি রমযান মাসে ইচ্ছাকৃতভাবে স্ত্রী সঙ্গম দ্বারা রোযা ভঙ্গ করে তার ব্যাপারে এই হাদীস অনুসারে উলামায়ে কিরামদের আমল রয়েছে। কিন্তু কেউ যদি পানাহার করে ইচ্ছাকৃতভাবে রোযা ভেঙ্গে ফেলে তবে তার বিষয়ে আলিমগণের মতভেদ রয়েছে। কোন কোন আলিম বলেন, তাকে কাযা ও কাফফারা উভয় আদায় করতে হবে। তারা পানাহারকে স্ত্রী সঙ্গমের সাথে সা’দৃশ্যপূর্ণ বলে মনে করেন। এ হলো সুফিয়ান সাওরী, ইবনে মুবারক ও ইসহাক এর অভিমত।
কোন কোন আলিম বলেন, তাকে কাযা করতে হবে। কিন্তু কাফফারা দিতে হবেনা। কারণ, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে স্ত্রী সঙ্গমের ক্ষেত্রেই কাফফারা উল্লেখ রয়েছে। পানাহারের ক্ষেত্রে এর উল্লেখ নেই। তারা বলেন, স্ত্রী সঙ্গমের সাথে পানাহারের সা’দৃশ্য নেই। এ হলো, ইমাম শাফিঈ ও আহমাদ (রাহঃ) এর অভিমত।
ইমাম শাফিঈ (রাহঃ) বলেন, রোযা ভঙ্গকারী ব্যক্তিকে নবী (ﷺ) উক্ত সাদ্কা করে দিয়েছিলেন; তার উক্তি নাও, তোমার পরিবারবর্গকে তার আহার করাও, বিভিন্নার্থ বহন করে। হতে পারে যে, কাফফারা তো যে সক্ষম তার দিতে হয়। এই ব্যক্তি তখন কাফফারা দিতে সক্ষম ছিল না। পরে নবী (ﷺ) যখন তাকে কিছু দিলেন আর সে তার মালিক হয়ে গেল তখন সে বলল, এ এলাকায় আমাদের চাইতে বেশী অভাবগ্রস্ত আর কেউ নাই। নবী (ﷺ) বললেন, নিয়ে যাও এবং তোমার পরিবারবর্গকে আহার করাও। কেননা, জীবন ধারণের মত পরিমাণ খাদ্যের অতিরিক্ত যা হয় তা কাফফারা হয়। যার অবস্থা এই ব্যক্তির ন্যায় তার সম্পর্কে ইমাম শাফেঈর মত হলো, সে ঐ মাল ভোগ করতে পারে। আর কাফফারা তার রোযা থেকে যাবে। যেদিন সে মালিক হবে সেদিন সে কাফফারা দিবে।
باب مَا جَاءَ فِي كَفَّارَةِ الْفِطْرِ فِي رَمَضَانَ
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، وَأَبُو عَمَّارٍ وَالْمَعْنَى وَاحِدٌ وَاللَّفْظُ لَفْظُ أَبِي عَمَّارٍ قَالاَ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ أَتَاهُ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلَكْتُ . قَالَ " وَمَا أَهْلَكَكَ " . قَالَ وَقَعْتُ عَلَى امْرَأَتِي فِي رَمَضَانَ . قَالَ " هَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تُعْتِقَ رَقَبَةً " . قَالَ لاَ . قَالَ " فَهَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تَصُومَ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ " . قَالَ لاَ . قَالَ " فَهَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تُطْعِمَ سِتِّينَ مِسْكِينًا " . قَالَ لاَ . قَالَ " اجْلِسْ " . فَجَلَسَ فَأُتِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِعَرَقٍ فِيهِ تَمْرٌ - وَالْعَرَقُ الْمِكْتَلُ الضَّخْمُ قَالَ " تَصَدَّقْ بِهِ " . فَقَالَ مَا بَيْنَ لاَبَتَيْهَا أَحَدٌ أَفْقَرَ مِنَّا . قَالَ فَضَحِكَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم حَتَّى بَدَتْ أَنْيَابُهُ . قَالَ " فَخُذْهُ فَأَطْعِمْهُ أَهْلَكَ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَعَائِشَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي مَنْ أَفْطَرَ فِي رَمَضَانَ مُتَعَمِّدًا مِنْ جِمَاعٍ وَأَمَّا مَنْ أَفْطَرَ مُتَعَمِّدًا مِنْ أَكْلٍ أَوْ شُرْبٍ فَإِنَّ أَهْلَ الْعِلْمِ قَدِ اخْتَلَفُوا فِي ذَلِكَ فَقَالَ بَعْضُهُمْ عَلَيْهِ الْقَضَاءُ وَالْكَفَّارَةُ . وَشَبَّهُوا الأَكْلَ وَالشُّرْبَ بِالْجِمَاعِ . وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَابْنِ الْمُبَارَكِ وَإِسْحَاقَ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ عَلَيْهِ الْقَضَاءُ وَلاَ كَفَّارَةَ عَلَيْهِ لأَنَّهُ إِنَّمَا ذُكِرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الْكَفَّارَةُ فِي الْجِمَاعِ وَلَمْ تُذْكَرْ عَنْهُ فِي الأَكْلِ وَالشُّرْبِ . وَقَالُوا لاَ يُشْبِهُ الأَكْلُ وَالشُّرْبُ الْجِمَاعَ . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ . وَقَالَ الشَّافِعِيُّ وَقَوْلُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لِلرَّجُلِ الَّذِي أَفْطَرَ فَتَصَدَّقَ عَلَيْهِ " خُذْهُ فَأَطْعِمْهُ أَهْلَكَ " . يَحْتَمِلُ هَذَا مَعَانِيَ يَحْتَمِلُ أَنْ تَكُونَ الْكَفَّارَةُ عَلَى مَنْ قَدَرَ عَلَيْهَا وَهَذَا رَجُلٌ لَمْ يَقْدِرْ عَلَى الْكَفَّارَةِ فَلَمَّا أَعْطَاهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم شَيْئًا وَمَلَكَهُ فَقَالَ الرَّجُلُ مَا أَحَدٌ أَفْقَرَ إِلَيْهِ مِنَّا . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " خُذْهُ فَأَطْعِمْهُ أَهْلَكَ " . لأَنَّ الْكَفَّارَةَ إِنَّمَا تَكُونُ بَعْدَ الْفَضْلِ عَنْ قُوتِهِ . وَاخْتَارَ الشَّافِعِيُّ لِمَنْ كَانَ عَلَى مِثْلِ هَذَا الْحَالِ أَنْ يَأْكُلَهُ وَتَكُونَ الْكَفَّارَةُ عَلَيْهِ دَيْنًا فَمَتَى مَا مَلَكَ يَوْمًا مَا كَفَّرَ .