আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ

المسند الصحيح لمسلم

মুকাদ্দামায়ে মুসলিম শরীফ - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

0
৬. আন্ আন্' পদ্ধতিতে বর্ণিত হাদীস দলীল হিসেবে গ্রহণ করা জায়েয যদি এর রাবীদের পারস্পরিক সাক্ষাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং তাদের কেউ মুদাল্লিস না হয়।
ইমাম মুসলিম (রাহঃ) বলেন, আমাদের যুগের কোন স্বঘোষিত হাদীস বিশারদ হাদীসের সনদ সবল ও দুর্বল হওয়ার ব্যাপারে অভিমত প্রকাশ করেছেন। তার সেই ভ্রান্ত অভিমত লিপিবদ্ধ করা এবং তার ত্রুটি-বিচ্যুতি আলোচনা করা থেকে বিরত থাকাই সঠিক মত ও পথ। কেননা ভ্রান্ত মতামত নির্মূল করা এবং এর প্রবক্তার নাম মুছে ফেলার জন্যে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নীরব থাকাটাই বেশী কার্যকর। এটাই অশিক্ষিত লোকদেরকে এইসব ভ্রান্ত মতামত সম্বন্ধে অনবহিত রাখার উত্তম ব্যবস্থা। কিন্তু যখন মূর্খ লোকদের ভুল মতামতের প্রতি ত্বরিৎ বিশ্বাস স্থাপন ও উলামায়ে কিরামের কাছে অগ্রহণযোগ্য কথার প্রতি তাদের আকৃষ্ট হওয়ার অশুভ পরিণাম সম্পর্কে চিন্তা করলাম, তখন আমরা এদের ভ্রান্ত মতের উল্লেখ করে তার মূলোচ্ছেদ করা জরুরী মনে করলাম।

ইন্‌শাআল্লাহ্, এ কাজ মানুষের জন্যে হবে কল্যাণকর এবং এর পরিণামও হবে শুভ। যার বক্তব্য কেন্দ্র করে আমরা আলোচনা শুরু করেছি এবং যার অগ্রহণযোগ্য অভিমত আমরা বাতিল বলে ঘোষণা করেছি, তিনি বলে থাকেন, যদি সনদের মধ্যে 'অমুক অমুকের কাছ থেকে' (jbaje ji) এভাবে উল্লেখ থাকে এবং এ কথা জানা যায় যে, তারা উভয়ই একই যুগের রাবী, একই সময়ে বর্তমান ছিলেন, তা ছাড়া হাদীসটি সরাসরি শোনার এবং পরস্পর সাক্ষাত হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে, কিন্তু নীচের রাবী তার উর্ধ্বতন রাবীর কাছ থেকে শুনেছেন বলে আমরা নিশ্চিতভাবে জানতে পারিনি এবং কোন রিওয়ায়াতেও আমরা পাইনি যে, তাদের উভয়ের মধ্যে কখনও সাক্ষাত ঘটেছে অথবা সামনাসামনি কথাবার্তা হয়েছে, তাহলে এক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির থেকে এভাবে যত হাদীস বর্ণিত হবে, তা দলীল হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না—যে পর্যন্ত প্রমাণ না হবে তারা উভয়ে জীবনে একবার কিংবা একাধিকবার কোথাও একত্রিত অথবা সামনাসামনি হয়েছিলেন অথবা এমন হাদীস পাওয়া যায়, যাতে উল্লেখ রয়েছে যে, জীবনে অন্তত একবার বা একাধিকবার তারা একত্রিত হয়েছেন বা একবার বা একাধিকবার তাদের সাক্ষাত হয়েছে।

সুতরাং যদি এই বর্ণনাকারী ও গ্রহণকারীর মধ্যে সাক্ষাতের কিংবা সামনাসামনি হওয়ার কথা না জানা যায় এবং কোন হাদীস বর্ণনায় যদি তাদের মধ্যে অন্তত একবার সাক্ষাতের এবং তার থেকে কিছু শোনার প্রমাণ না পাওয়া যায়, তাহলে ঐ ব্যক্তির হাদীস দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়; বরং এ পর্যায়ের হাদীস গ্রহণ করা স্থগিত থাকবে—যে পর্যন্ত এক বা একাধিক হাদীসদ্বারা সাক্ষাত ও শোনার প্রমাণ না পাওয়া যায়।

ইমাম মুসলিম (রাহঃ) বলেন, হে আবু ইসহাক! আল্লাহ্ তোমার প্রতি অনুগ্রহ করুন। হাদীসের সনদ সমালোচনার এ এমন একটি মনগড়া অভিমত, যা এর আগে কেউ বলেনি। আর তাতে হাদীস বিশারদ আলিমদের কারো সমর্থনও নেই। কেননা অতীত ও বর্তমানকালের হাদীস বর্ণনাকারীদের ঐকমত্য হচ্ছে, কোন নির্ভরযোগ্য রাবী যখন কোন নির্ভরযোগ্য রাবী থেকে একটি হাদীস বর্ণনা করেন এবং তাঁরা দু'জন একই যুগের লোক হওয়ার দরুন তাঁদের মধ্যে পরস্পর দেখা-সাক্ষাত এবং কোন রিওয়ায়াত শোনার সম্ভাবনা থাকে; যদিও কোন হাদীস বা খবর দ্বারা কখনো তাঁদের একত্রিত হওয়ার কথা বা সামনাসামনি বসে আলোচনা করার কথা জানা নাও যায়, তবুও আলিমদের মতে এ জাতীয় হাদীস প্রামাণ্য বলে স্বীকৃত হবে এবং তা দলীল হিসেবে গৃহীত হবে। তবে হ্যাঁ, যদি কোন সুস্পষ্টভাবে এ প্রমাণ পাওয়া যায় যে, উক্ত রাবী যার থেকে বর্ণনা করেন তার সাথে আদৌ তার সাক্ষাত হয়নি অথবা তার থেকে এ ব্যক্তি কোন কিছু শোনেও নি, তবে এ হাদীস দলীল হিসেবে গৃহীত হবে না। কিন্তু যেখানে ব্যাপারটি অস্পষ্ট এবং তাদের উভয়ের মধ্যে দেখা-সাক্ষাত ও কথাবার্তার সম্ভাবনা বিদ্যমান, সেখানে অধঃস্তন রাবী তার উর্ধ্বতন রাবীর কাছে হাদীসটি শুনেছে বলে ধরে নেওয়া হবে।

এই নব মতবাদের আবিষ্কারক কে যার মতামতের কথা আমরা পূর্বে উল্লেখ করেছি, প্রশ্ন করা যেতে পারে যে, অবশ্যই আপনি আপনার আলোচনায় এ অভিমত প্রকাশ করেছেন যে, একজন নির্ভরযোগ্য রাবীর হাদীস অন্য একজন নির্ভরযোগ্য রাবী থেকে বর্ণিত হলে তা দলীল হিসেবে স্বীকৃত এবং তদানুযায়ী আমল করা অনস্বীকার্য। পরে আপনি এ কথার পিছনে এ শর্তটি যোগ করে দিয়েছেন যে, “যতক্ষণ পর্যন্ত না জানা যাবে, তারা দু'জন একবার কিংবা একাধিকবার পরস্পর মিলিত হয়েছেন অথবা একজন অপরজন থেকে কিছু শুনেছেন।" এখন আপনার কাছে জিজ্ঞেস, এ শর্তটির সমর্থন আপনি কি এমন কোন ব্যক্তি থেকে পেয়েছেন, যার কথা মেনে নেওয়া অপরিহার্য? তা না হলে আপনি নিজেই আপনার এ দাবির সমর্থনে কোন প্রমাণ উপস্থিত করুন।

তিনি যদি দাবি করেন যে, তার এই শর্তের সমর্থনে উলামায়ে সালাফের অভিমত বর্তমান রয়েছে, তবে তার কাছে তা তলব করা করা যেতে পারে। কিন্তু তিনি বা আর কেউ এ আবিষ্কারের সমর্থনে এমন প্রমাণ উপস্থাপন করার কোন পথ পাবেন না। আর যদি তিনি অন্য কোন যুক্তি পেশ করতে চান, তবে বলা হবে তা কি ? যদি তিনি বলেন, আমি এ মতটি এ কারণে গ্রহণ করছি যে, আমি অতীত ও বর্তমানে সব রাবীকে দেখেছি, তাদের একজন কখনও অন্যজনকে স্বচক্ষে না দেখলেও এবং তাদের একজন অন্যজন থেকে কোন কিছু শ্রবণ না করলেও মুরসালরূপে হাদীস বর্ণনা করে থাকেন এবং এরূপ বর্ণনাকে তারা নিজেদের জন্য বৈধ করে নিয়েছেন, অথচ মুরসাল হাদীসসমূহের ব্যাপারে আমাদের মুহাদ্দিসীনের অভিমত হচ্ছে ‘মুরসাল হাদীস’ দলীল হিসেবে পরিগণিত নয়। এ জন্য আমি হাদীসের কোন বর্ণনাকারীর জন্য তার উর্ধ্বতন রাবীর কাছ থেকে শ্রবণ করার শর্তারোপ করেছি। যখন আমি প্রমাণ পেয়ে যাব যে, সে তার উর্ধ্বতন রাবীর কাছ থেকে হাদীসটি সরাসরি শুনেছে। তখন আমি ধরে নেব সে তার উর্ধ্বতন রাবীর সূত্রে যতগুলো হাদীস বর্ণনা করেছে, তা সবই তার কাছ থেকে শুনেছে। অর্থাৎ তার কাছ থেকে যতগুলো হাদীস ‘মুআন আন্' হিসেবে বর্ণিত হবে, তার সবগুলোই আমার মতে ‘মা’ হাদীসের অন্তর্ভুক্ত হবে। কিন্তু যদি ‘একবারও’ শ্রবণ করার প্রমাণ না পাওয়া যায়, তাহলে তার বর্ণিত হাদীসকে আমি ‘মাওকৃষ্ণ’ হাদীস নামে অভিহিত করব। ফলে তা ‘মুরসাল' হওয়ার সম্ভাবনায় আমার কাছে দলীল হিসেবে পরিগণিত হবে না।

তাকে বলা যায়, কোন হাদীসের মুরসাল হওয়ার সম্ভাবনাই যদি সে হাদীসটি যঈফ বলে পরিগণিত হওয়ার বা তা দলীল হিসেবে গৃহীত না হওয়ার কারণ হয়, তাহলে আপনাদের মত অনুযায়ী ‘মুআন আন’ হাদীসের সনদে উল্লেখিত প্রথম রাবী থেকে শেষ রাবী পর্যন্ত প্রত্যেকে তার উর্ধ্বতন রাবীর কাছে সরাসরি শুনেছেন বলে প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত সে সনদটি প্রামাণ্য বলে গ্রহণ করতে পারেন না। কেননা মনে করুন, একটি হাদীস হিশাম ইন উরওয়া থেকে তাঁর পিতার সূত্রে এবং তাঁর পিতা থেকে হযরত আয়েশা (রাযিঃ)-এর সূত্রে বর্ণিত হয়ে আমাদের কাছে পৌঁছেছে। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, হিশাম নিশ্চিতই তাঁর পিতার কাছ থেকে শুনেছেন এবং তাঁর পিতা আয়েশা (রাযিঃ)-এর কাছে শুনেছেন। যেমন আমরা জানি যে, আয়েশা (রাযিঃ) নিশ্চয়ই নবী করীম -এর কাছে শুনেছেন। এরূপ নিশ্চয়তা থাকা সত্ত্বেও যদি কোন বর্ণনায় হিশাম (রাহঃ), 'আমি আমার পিতার কাছে শুনেছি অথবা তিনি আমাকে খবর দিয়েছেন' না বলে যদি কেবল দ্বারা বর্ণনা করেন, তা হলে এই সম্ভাবনা থেকে যায় যে, হিশাম (রাহঃ) এবং উরওয়া (রাহঃ)-এর মাঝখানে আরো একজন রাবী আছেন, যিনি উরওয়া (রাহঃ)-এর কাছে শুনে হিশাম (রাহঃ)-কে অবগত করেছেন, হিশাম (রাহঃ) সরাসরি তাঁর পিতার কাছে এ হাদীস শোনেন নি। কিন্তু হিশাম (রাহঃ) যেহেতু এ হাদীসটি ‘মুরসাল' হিসেবে বর্ণনা করার ইচ্ছা করেছেন। তিনি যার মাধ্যমে শুনেছেন তার নাম উল্লেখ করেননি। তা ছাড়া হিশাম (রাহঃ) ও তাঁর পিতার মাঝখানে যেমন অন্য কোন রাবী থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, অনুরূপভাবে উরওয়া ও আয়েশা (রাযিঃ)-এর মাঝখানেও অন্য কোন রাবী থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এভাবে হাদীসের এমন প্রতিটি সনদে যেখানে একে অন্যের কাছ থেকে শোনার কথা উল্লেখ নেই, সেখানে ঐ একই সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও এ কথা জানা থাকে যে, এক রাবী অপর রাবীর কাছে অনেক হাদীস শুনেছেন, তবে এও হতে পারে যে, তিনি তার কতকগুলো বর্ণনা অন্য রাবীর মাধ্যমে শুনে তা মুরসাল হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এগুলো তিনি যার কাছে শুনেছেন কখনো তার নাম উল্লেখ করেন নি; আবার কখনো অস্পষ্টতা দূর করার জন্য নাম উল্লেখ করে ইরসাল বাদ দিয়েছেন।

অধঃস্তন ও উর্ধ্বতন রাবীদ্বয়ের মধ্যে বারবার দেখা-সাক্ষাত হওয়া সত্ত্বেও তাদের বর্ণিত হাদীস মুরসাল হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে আমরা যে অভিমত প্রকাশ করছি, তা নির্ভরযোগ্য মুহাদ্দিস ও বিশেষজ্ঞ আলিমদের বর্ণনার মধ্যেও বিদ্যমান। এ পর্যায়ে আমরা তাদের বর্ণিত হাদীস থেকে আমাদের বক্তব্যের সমর্থনে দলীল হিসেবে কিছুসংখ্যক হাদীস পেশ করছি। যেমন : আইয়্যূব সাতিয়ানী, ইব্‌ন মুবারক, ওকী', ইবন নুমায়র এবং আরো বহু রাবী হিশাম ইব্‌ন উরওয়া থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তিনি আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, আয়েশা (রাযিঃ) বলেছেন : “আমি রাসূলুল্লাহ্ -কে তাঁর ইহরাম বাঁধার সময় ও ইহরাম থেকে হালাল হওয়ার সময় সর্বোৎকৃষ্ট সুগন্ধি লাগিয়েছি, যা আমার কাছে ছিল।” হুবহু এ হাদীসটিই লায়স ইব্‌ন সা'দ, দাউদ আত্তার, হুমায়দ ইবন আসওয়াদ, উহায়ব ইব্‌ন খালিদ ও আবু উসামা (রাহঃ) হিশামের সূত্রে বর্ণনা করেছেন। হিশাম বলেছেন, আমাকে উসমান ইবন উরওয়া অবহিত করেছেন, তিনি উরওয়া থেকে, তিনি আয়েশা (রাযিঃ) থেকে এবং তিনি নবী করীম থেকে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। অনুরূপ হিশাম তাঁর পিতার সূত্রে আর তিনি আয়েশা (রাযিঃ)-এর থেকে বর্ণনা করেন যে, আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, নবী করীম ই'তিকাফে থাকাকালীন আমার দিকে তাঁর মাথা ঝুঁকিয়ে দিতেন এবং আমি তাঁর মাথা আঁচড়ে দিতাম। অথচ আমি ছিলাম ঋতুমতি। অপরদিকে হুবহু এ হাদীসটিই মালিক ইব্‌ন আনাস যুহরী থেকে, তিনি উরওয়া থেকে তিনি আমরা থেকে তিনি 'আয়েশ (রাযিঃ) থেকে এবং নবী করীম থেকে বর্ণনা করেছেন। যুহরী ও সালিহ্ ইব্‌ন আবু হাস্সান (রাহঃ) আবু সালমা থেকে, তিনি আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, নবী করীম সায়েম (রোযাদার) অবস্থায় চুমু খেতেন। পক্ষান্তরে ইয়াহ্ইয়া ইব্‌ন আবু কাসীর ‘চুমু খাওয়া সম্পর্কিত’ এ হাদীসটি এভাবে বর্ণনা করেছেন : আবু সালামা আমাকে খবর দিয়েছেন যে, তার কাছে বর্ণনা করেছেন উমর ইব্‌ন আব্দুল আযীয (রাহঃ), তিনি বলেন, তার কাছে বর্ণনা করেছেন, আয়েশা (রাযিঃ) আর তিনি বলেন যে, নবী করীম সায়েম অবস্থায় তাঁকে চুমু দিতেন।

ইব্‌ন 'উআয়না ও অপরাপর রাবীগণ আমর ইব্‌ন দীনার থেকে, তিনি জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ আমাদের ঘোড়ার গোশত খাইয়েছেন এবং তিনি আমাদের গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। ঠিক এ হাদীসটিই হাম্মাদ ইবন যায়দ আমুর থেকে, তিনি মুহাম্মাদ ইব্‌ন আলী থেকে, তিনি জাবির (রাযিঃ) থেকে, তিনি নবী থেকে বর্ণনা করেছেন। এ জাতীয় সনদে বর্ণিত অসংখ্য হাদীস রয়েছে। আমরা যে কয়টি দৃষ্টান্ত উল্লেখ করেছি বুদ্ধিমান, চিন্তাশীল ও বিবেকবান লোকদের জন্য তাই যথেষ্ট।

নীচের রাবী উর্ধ্বতন রাবীর কাছ থেকে সরাসরি কিছু শুনেছেন বলে জানা না থাকলে তাতে ‘ইসাল'-এর সম্ভাবনা থাকে, হাদীস ত্রুটিপূর্ণ হওয়া সম্পর্কে পূর্বোক্ত ব্যক্তির পেশকৃত এই যুক্তি যদি সঙ্গত বলে মেনে নিতে হয়, তবে যে হাদীসটিতে উর্ধ্বতন রাবী থেকে ‘শ্রুতির' উল্লেখ আছে, সেটি ছাড়া অন্যসব রিওয়ায়াত বাতিল বলে গণ্য করতে হবে। কেননা সে ক্ষেত্রেও অনুরূপ 'ইসাল' হওয়ার সম্ভাবনা বিদ্যমান। কেননা আমরা পূর্বে আলোচনা করেছি যে, হাদীসের রাবীদের বিভিন্ন অবস্থা হয়ে থাকে। কখনো তাঁরা স্বেচ্ছায় হাদীসকে মুরসাল হিসেবে বর্ণনা করেন এবং যাঁর কাছ থেকে হাদীস শুনেছেন তার নাম উল্লেখ করেন না। আবার কখনো তারা হাদীস বর্ণনাকালে প্রফুল্লচিত্ত থাকেন ফলে তারা যেভাবে শুনেছেন সেইভাবে পূর্ণ সনদ উল্লেখ করেন। যদি নুযূল বা দীর্ঘ সনদ হয়, তবে দীর্ঘ সনদেই হাদীস বর্ণনা করেন। আবার যদি সুউদ বা স্বল্প স্তরবিশিষ্ট সনদ হয়, তবে সেই সনদের সাথেই হাদীস বর্ণনা করেন, যেমন পূর্বে ব্যাখ্যা করেছি।

পূর্বসূরি সালফে সালেহীন ইমামদের মধ্যে যাঁরা হাদীসের প্রয়োগ ও ব্যবহার করতেন এবং সনদের বিশুদ্ধতা বা অশুদ্ধতা ও দুর্বলতা র্যাঁচাই করতেন, যেমন—হাদীস বিশারদ আইয়্যুব সাতিয়ানী, ইব্‌ন আওন, মালিক ইব্‌ন আনাস, শু'বা ইব্‌ন হাজ্জাজ, ইয়াহইয়া ইব্‌ন সাঈদ আল-কাত্তান, আব্দুর রহমান ইবন মাহদী এবং পরবর্তী স্তরের মুহাদ্দিসগণ তাঁদের কেউ সনদে রাবীদের পারস্পরিক ‘শ্রবণস্থল' তালাশ করেছেন বলে আমাদের জানা নেই, যেমন আমাদের পূর্বোক্ত আলোচক দাবি করেন।

অবশ্য যিনি মুদাল্লিস রাবী হিসেবে পরিচিত ও প্রসিদ্ধ, কেবল তার রিওয়ায়াত গ্রহণ করার সময়ই তাঁরা “সরাসরি শোনার” ব্যাপারে অনুসন্ধান করে দেখতেন এবং তা পর্যালোচনা করতেন। যাতে সনদ থেকে তাদলীস জনিত ত্রুটি বিদূরিত হয়। কিন্তু যিনি মুদাল্লিস রাবী নন, তাঁর বেলায়ও যে সাক্ষাতে শোনার ব্যাপারে উল্লেখিত মনীষিগণ অনুসন্ধান করেছেন এমন কথা আমাদের জানা নেই; যেমন পূর্বোল্লিখিত আলোচক দাবি করে থাকেন।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আব্দুল্লাহ্ ইব্‌ন ইয়াযীদ আল-আনসারী (রাযিঃ) নবী করীম -কে দেখেছেন। তা সত্ত্বেও তিনি (তাঁর সমসাময়িক ও সমবয়সী) সাহাবী হুযায়ফা ইন ইয়ামান (রাযিঃ) এবং আবু মাসউদ (উকবা ইন আমের) আল-আনসারী (রাযিঃ) এতদুভয় থেকে একটি করে হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং এর সনদ নবী করীম -এর সঙ্গে সংযোজন করেছেন। অথচ তাঁর কোথাও এই দু'জন সাহাবী থেকে সরাসরি শোনার কথা উল্লেখ নেই।

তা ছাড়া আব্দুল্লাহ্ ইব্‌ন ইয়াযীদ (রাযিঃ) কখনো হুযায়ফা (রাযিঃ) এবং আবু মাসউদ (রাযিঃ)-এর সঙ্গে মুখোমুখি আলাপ করেছেন এবং তাঁদের কাছে হাদীস শুনেছেন বলেও উল্লেখ নেই। এমনকি, তিনি তাদের দু'জনকে চাক্ষুষ দেখেছেন বলেও সুনির্দিষ্ট বর্ণনা পাইনি। অথচ হাদীস বিশারদদের মধ্যে যাঁরা অতীত হয়েছেন এবং যাদের আমরা পেয়েছি, তাঁদের কেউই আব্দুল্লাহ্ ইব্‌ন ইয়াযীদ (রাযিঃ)-এর সূত্রে বর্ণিত হুযায়ফা (রাযিঃ) ও আবু মাসউদ (রাহঃ)-এর বর্ণিত হাদীস দুটিকে ত্রুটিপূর্ণ বলে দোষারোপ করেননি, বরং হাদীস বিশারদদের মধ্যে যাঁদের সঙ্গে আমার সাক্ষাত হয়েছে, তাঁরা সকলে এ হাদীস দু'টি এবং অনুরূপ বর্ণনাগুলোকে সহীহ্ এবং সবল হাদীসের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তাঁরা এসব হাদীস প্রয়োগ করা এবং এগুলো দলীল হিসেবে গ্রহণ করা জায়েয বলেছেন। কিন্তু আমাদের পূর্বোক্ত সমালোচিত ব্যক্তির মতানুযায়ী এগুলো গর্হিত ও অকেজো হাদীসরূপে গণ্য হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত ‘সাক্ষাত' এবং 'শ্রবণ’ প্রমাণিত না হবে।

মুহাদ্দিসীনে কিরামের কাছে যে সমস্ত হাদীস সহীহ্ ও নির্দোষ হিসেবে স্বীকৃত কিন্তু আমাদের সমালোচিত ব্যক্তির কাছে সে সব ‘যঈফ' (দুর্বল) হিসেবে চিহ্নিত, যদি আমরা সে সবের পরিপূর্ণ সংখ্যা হিসেব করার চেষ্টা করি, তাহলে নিশ্চয়ই আমরা অক্ষম হয়ে পড়ব এবং সবগুলোর আলোচনা করাও আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে না। তবে নমুনাস্বরূপ এর কিছু আমরা এখানে উল্লেখ করতে চাই।

যেমন, আবু উসমান নাহ্দী এবং আবু রাফি' সাইগ (নুফাই মাদানী)। তাঁরা উভয়ে জাহিলী যুগ পেয়েছেন [কিন্তু মহানবী হ-এর সাক্ষাত লাভে সমর্থ হননি] রাসূলুল্লাহ্ -এর বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বিশিষ্ট সাহাবীদের সাহচর্য লাভ করেছেন এবং তাঁদের থেকে হাদীসও বর্ণনা করেছেন। অতঃপর আবু হুরায়রা (রাযিঃ), ইবন উমর (রাযিঃ) এবং তাঁদের মত পরবর্তী যুগের আরো অনেকের সাহচর্য লাভ করেছেন। তাঁরা উভয়ই উবাই ইবন কা'ব (রাযিঃ)-এর সূত্রে নবী করীম থেকে একটি করে হাদীস বর্ণনা করেছেন। এতদ্‌সত্ত্বেও কোন নির্দিষ্ট বর্ণনার মাধ্যমে জানা যায়নি যে, তাঁরা উভয়ে উবাই ইব্‌ন কা'ব (রাযিঃ)-কে দেখেছেন অথবা তাঁর কাছে কিছু শুনেছেন।

আবু আর শায়বানী (সা'দ ইব্‌ন আইয়াস) জাহিলী যুগও পেয়েছেন আর নবী করীম ছিলেন একজন প্রাপ্তবয়স্ক। তিনি এবং আবু মা'মার আব্দুল্লাহ্ ইব্‌ন সাখবারা উভয়ে আবু মাসউদ আনসারী (রাযিঃ)-এর সূত্রে নবী করীম এবং হয়ে থেকে দু'টি করে হাদীস বর্ণনা করেছেন। -এর সময় তিনি

আর উবায়দ ইবন উমায়র (রাহঃ) নবী করীম -এর পত্নী উম্মু সালামা (রাযিঃ)-এর সূত্রে তাঁর একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন । উবায়দ মহানবী -এর যুগে জন্মগ্রহণ করেন। কায়স ইব্‌ন আবু হাযিম (রাযিঃ) যিনি রাসূলুল্লাহ্ -এর যুগ পেয়েছেন, আবু মাসউদ আনসারী (রাযিঃ) -এর সূত্রে তাঁর তিনটি হাদীস বর্ণনা করেছেন।

আব্দুর রহমান ইব্‌ন আবু লায়লা (রাহঃ) উমর ইবনুল খাত্তাব (রাযিঃ) থেকে হাদীস লাভ করেছেন এবং আলী (রাযিঃ)-এর সাহচর্য পেয়েছেন। তিনি আনাস ইবন মালিক (রাযিঃ)-এর সূত্রে নবী করেছেন। রিবঈ ইব্‌ন হিরাশ (রাহঃ) ইমরান ইবন হুসায়ন (রাযিঃ)-এর সূত্রে নবী করীম মামলার-এর একটি হাদীস বর্ণনা মার-এর দু'টি হাদীস এবং আবু বাকরা [নুফাই ইবন হারিস ইবন কালাদা (রাযিঃ)]-এর সূত্রে একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। রিবঈ (রাহঃ) আলী ইব্‌ন আবু তালিব (রাযিঃ) থেকে হাদীস শুনেছেন এবং বর্ণনা করেছেন।

নাফি' ইবন জুবায়র ইবন মুতঈম, আবু শুরায়হ্ (খুয়ালিদ ইবন আমর) আল-খুযাঈ (রাযিঃ)-এর সূত্রে নবী -এর একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। নু'মান ইব্‌ন আবু আয়য়্যাশ (রাহঃ) আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ -এর তিনটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। আতা ইব্‌ন ইয়াযীদ লায়সী (রাহঃ) তামীমুদ্দারী (রাযিঃ)-এর সূত্রে একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। সুলায়মান ইবন ইয়াসার, রাফি' ইবন খাদীজ (রাযিঃ)-এর সূত্রে নবী করীম-এর একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। হুমায়দ ইব্‌ন আব্দুর রহমান হিমইয়ারী, আবু হুরায়রা (রাযিঃ)-এর সূত্রে নবী করীম এর অনেকগুলো হাদীস বর্ণনা করেছেন। এই যে'কজন তাবিঈর নাম আমরা এখানে উল্লেখ করলাম, এদের সকলেই সাহাবীদের সূত্রে হাদীস বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তাঁরা সাহাবীদের থেকে সরাসরি হাদীস শুনেছেন বলে কোন নির্দিষ্ট বর্ণনার মাধ্যমে জানা যায়নি এবং তাঁদের পরস্পরের মধ্যে সরাসরি সাক্ষাত হয়েছে বলেও কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তা সত্ত্বেও এসব হাদীস এবং এর সনদ হাদীস বিশারদদের কাছে সহীহ্ বলে গৃহীত। তাঁদের কেউ এর কোন একটি বর্ণনাকে যঈফ (দুর্বল) বলেছেন বলে অথবা বর্ণনাকারী সরাসরি শুনেছেন কি-না তা অনুসন্ধান করেছেন বলে আমাদের জানা নেই। কেননা তাঁরা (الراوي و المروي عنه - রাবী ও যার থেকে বর্ণিত) উভয়ে একই যুগের লোক হওয়ার কারণে তাঁদের পরস্পরের মধ্যে সাক্ষাতের সম্ভাবনা ছিল, আর তা অস্বাভাবিকও নয় । বস্তুত আমাদের সমালোচিত ব্যক্তি হাদীসকে দুর্বল ও ত্রুটিপূর্ণ সাবস্ত করার জন্য যে কারণ দাঁড় করিয়েছেন, তা ভ্রুক্ষেপযোগ্য নয়। কেননা এটা একটা নতুন মতবাদ এবং বানোয়াট কথা। পূর্বসূরী সালফে সালেহীনের কেউই এমন কথা বলেননি। পরবর্তীকালের বিশেষজ্ঞগণও এ মত প্রত্যাখ্যান করেছেন। সুতরাং এর খন্ডনে যা বলা হলো তার চাইতে বেশী আলোচনার প্রয়োজন নেই।
وَاللهُ الْمُسْتَعَانُ وَعَلَيْهِ التُّكْلَانُ
بَابُ صِحَّةِ الِاحْتِجَاجِ بِالْحَدِيثِ الْمُعَنْعَنِ إِذَا أَمْكَنَ لِقَاءُ الْمُعَنْعِنِينَ وَلَمْ يَكُنْ فِيهِمْ مُدَلِّسٌ
وَقَدْ تَكَلَّمَ بَعْضُ مُنْتَحِلِي الْحَدِيثِ مِنْ أَهْلِ عَصْرِنَا فِي تَصْحِيحِ الْأَسَانِيدِ وَتَسْقِيمِهَا بِقَوْلٍ لَوْ ضَرَبْنَا عَنْ حِكَايَتِهِ، وَذِكْرِ فَسَادِهِ صَفْحًا لَكَانَ رَأْيًا مَتِينًا، وَمَذْهَبًا صَحِيحًا، إِذِ الْإِعْرَاضُ عَنِ الْقَوْلِ الْمُطَّرَحِ أَحْرَى لِإِمَاتَتِهِ، وَإِخْمَالِ ذِكْرِ قَائِلِهِ، وَأَجْدَرُ أَنْ لَا يَكُونَ ذَلِكَ تَنْبِيهًا لِلْجُهَّالِ عَلَيْهِ، غَيْرَ أَنَّا لَمَّا تَخَوَّفْنَا مِنْ شُرُورِ الْعَوَاقِبِ، وَاغْتِرَارِ الْجَهَلَةِ بِمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ، وَإِسْرَاعِهِمْ إِلَى اعْتِقَادِ خَطَأِ الْمُخْطِئِينَ، وَالْأَقْوَالِ السَّاقِطَةِ عِنْدَ الْعُلَمَاءِ، رَأَيْنَا الْكَشْفَ عَنْ فَسَادِ قَوْلِهِ وَرَدَّ مَقَالَتِهِ بِقَدْرِ مَا يَلِيقُ بِهَا مِنَ الرَّدِّ، أَجْدَى عَلَى الْأَنَامِ، وَأَحْمَدَ لِلْعَاقِبَةِ إِنْ شَاءَ اللهُ»
وَزَعَمَ الْقَائِلُ الَّذِي افْتَتَحْنَا الْكَلَامَ عَلَى الْحِكَايَةِ عَنْ قَوْلِهِ، وَالْإِخْبَارِ عَنْ سُوءِ رَوِيَّتِهِ، أَنَّ كُلَّ إِسْنَادٍ لِحَدِيثٍ فِيهِ فُلَانٌ عَنْ فُلَانٍ، وَقَدِ اَحَاطَ الْعِلْمُ بِأَنَّهُمَا قَدْ كَانَا فِي عَصْرٍ وَاحِدٍ، وَجَائِزٌ أَنْ يَكُونَ الْحَدِيثُ الَّذِي رَوَى الرَّاوِي عَمَّنْ رَوَى عَنْهُ قَدْ سَمِعَهُ مِنْهُ وَشَافَهَهُ بِهِ غَيْرَ أَنَّهُ لَا نَعْلَمُ لَهُ مِنْهُ سَمَاعًا، وَلَمْ نَجِدْ فِي شَيْءٍ مِنَ الرِّوَايَاتِ أَنَّهُمَا الْتَقَيَا قَطُّ، أَوْ تَشَافَهَا بِحَدِيثٍ، أَنَّ الْحُجَّةَ لَا تَقُومُ عِنْدَهُ بِكُلِّ خَبَرٍ جَاءَ هَذَا الْمَجِيءَ حَتَّى يَكُونَ عِنْدَهُ الْعِلْمُ بِأَنَّهُمَا قَدِ اجْتَمَعَا مِنْ دَهْرِهِمَا مَرَّةً فَصَاعِدًا، أَوْ تَشَافَهَا بِالْحَدِيثِ بَيْنَهُمَا، أَوْ يَرِدَ خَبَرٌ فِيهِ بَيَانُ اجْتِمَاعِهِمَا وَتَلَاقِيهِمَا مَرَّةً مِنْ دَهْرِهِمَا فَمَا فَوْقَهَا، فَإِنْ لَمْ يَكُنْ عِنْدَهُ عِلْمُ ذَلِكَ، وَلَمْ تَأْتِ رِوَايَةٌ تُخْبِرُ أَنَّ هَذَا الرَّاوِيَ عَنْ صَاحِبِهِ قَدْ لَقِيَهُ مَرَّةً، وَسَمِعَ مِنْهُ شَيْئًا لَمْ يَكُنْ فِي نَقْلِهِ الْخَبَرَ عَمَّنْ رَوَى عَنْهُ ذَلِكَ وَالْأَمْرُ كَمَا وَصَفْنَا حُجَّةٌ، وَكَانَ الْخَبَرُ عِنْدَهُ مَوْقُوفًا حَتَّى يَرِدَ عَلَيْهِ سَمَاعُهُ مِنْهُ لِشَيْءٍ مِنَ الْحَدِيثِ، قَلَّ أَوْ كَثُرَ فِي رِوَايَةٍ مِثْلِ مَا وَرَدَ "
وَهَذَا الْقَوْلُ يَرْحَمُكَ اللهُ فِي الطَّعْنِ فِي الْأَسَانِيدِ قَوْلٌ مُخْتَرَعٌ، مُسْتَحْدَثٌ غَيْرُ مَسْبُوقٍ صَاحِبِهِ إِلَيْهِ، وَلَا مُسَاعِدَ لَهُ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ عَلَيْهِ، وَذَلِكَ أَنَّ الْقَوْلَ الشَّائِعَ الْمُتَّفَقَ عَلَيْهِ بَيْنَ أَهْلِ الْعِلْمِ بِالْأَخْبَارِ وَالرِّوَايَاتِ قَدِيمًا وَحَدِيثًا، أَنَّ كُلَّ رَجُلٍ ثِقَةٍ رَوَى عَنْ مِثْلِهِ حَدِيثًا، وَجَائِزٌ مُمْكِنٌ لَهُ لِقَاؤُهُ وَالسَّمَاعُ مِنْهُ لِكَوْنِهِمَا جَمِيعًا كَانَا فِي عَصْرٍ وَاحِدٍ، وَإِنْ لَمْ يَأْتِ فِي خَبَرٍ قَطُّ أَنَّهُمَا اجْتَمَعَا وَلَا تَشَافَهَا بِكَلَامٍ فَالرِّوَايَةُ ثَابِتَةٌ، وَالْحُجَّةُ بِهَا لَازِمَةٌ، إِلَّا أَنَّ يَكُونَ هُنَاكَ دَلَالَةٌ بَيِّنَةٌ أَنَّ هَذَا الرَّاوِي لَمْ يَلْقَ مَنْ رَوَى عَنْهُ، أَوْ لَمْ يَسْمَعْ مِنْهُ شَيْئًا، فَأَمَّا وَالْأَمْرُ مُبْهَمٌ عَلَى الْإِمْكَانِ الَّذِي فَسَّرْنَا، فَالرِّوَايَةُ عَلَى السَّمَاعِ أَبَدًا حَتَّى تَكُونَ الدَّلَالَةُ الَّتِي بَيَّنَّا، فَيُقَالُ لِمُخْتَرِعِ هَذَا الْقَوْلِ الَّذِي وَصَفْنَا مَقَالَتَهُ، أَوْ لِلذَّابِّ عَنْهُ: قَدْ أَعْطَيْتَ فِي جُمْلَةِ قَوْلِكَ أَنَّ خَبَرَ الْوَاحِدِ الثِّقَةِ عَنِ الْوَاحِدِ الثِّقَةِ حُجَّةٌ يَلْزَمُ بِهِ الْعَمَلُ، ثُمَّ أَدْخَلْتَ فِيهِ الشَّرْطَ بَعْدُ، فَقُلْتَ: حَتَّى نَعْلَمَ أَنَّهُمَا قَدْ كَانَا الْتَقَيَا مَرَّةً فَصَاعِدًا، أَوْ سَمِعَ مِنْهُ شَيْئًا، فَهَلْ تَجِدُ هَذَا الشَّرْطَ الَّذِي اشْتَرَطْتَهُ عَنْ أَحَدٍ يَلْزَمُ قَوْلُهُ؟ وَإِلَّا فَهَلُمَّ دَلِيلًا عَلَى مَا زَعَمْتَ، فَإِنِ ادَّعَى قَوْلَ أَحَدٍ مِنْ عُلَمَاءِ السَّلَفِ بِمَا زَعَمَ مِنْ إِدْخَالِ الشَّرِيطَةِ فِي تَثْبِيتِ الْخَبَرِ، طُولِبَ بِهِ، وَلَنْ يَجِدَ هُوَ وَلَا غَيْرُهُ إِلَى إِيجَادِهِ سَبِيلًا، وَإِنْ هُوَ ادَّعَى فِيمَا زَعَمَ دَلِيلًا يَحْتَجُّ بِهِ، قِيلَ: وَمَا ذَاكَ الدَّلِيلُ؟ فَإِنْ قَالَ: قُلْتُهُ لِأَنِّي وَجَدْتُ رُوَاةَ الْأَخْبَارِ قَدِيمًا وَحَدِيثًا يَرْوِي أَحَدُهُمْ عَنِ الْآخَرِ الْحَدِيثَ، وَلَمَّا يُعَايِنْهُ وَلَا سَمِعَ مِنْهُ شَيْئًا قَطُّ، فَلَمَّا رَأَيْتُهُمْ اسْتَجَازُوا رِوَايَةَ الْحَدِيثِ بَيْنَهُمْ هَكَذَا عَلَى الْإِرْسَالِ مِنْ غَيْرِ سَمَاعٍ، وَالْمُرْسَلُ مِنَ الرِّوَايَاتِ فِي أَصْلِ قَوْلِنَا، وَقَوْلِ أَهْلِ الْعِلْمِ بِالْأَخْبَارِ لَيْسَ بِحُجَّةٍ احْتَجْتُ لِمَا وَصَفْتُ مِنَ الْعِلَّةِ إِلَى الْبَحْثِ عَنْ سَمَاعِ رَاوِي كُلِّ خَبَرٍ عَنْ رَاوِيهِ، فَإِذَا أَنَا هَجَمْتُ عَلَى سَمَاعِهِ مِنْهُ لِأَدْنَى شَيْءٍ ثَبَتَ عِنْدِي بِذَلِكَ جَمِيعُ مَا يَرْوِي عَنْهُ بَعْدُ، فَإِنْ عَزَبَ عَنِّي مَعْرِفَةُ ذَلِكَ أَوْقَفْتُ الْخَبَرَ، وَلَمْ يَكُنْ عِنْدِي مَوْضِعَ حُجَّةٍ لِإِمْكَانِ الْإِرْسَالِ فِيهِ،
فَيُقَالُ لَهُ: فَإِنْ كَانَتِ الْعِلَّةُ فِي تَضْعِيفِكَ الْخَبَرَ، وَتَرْكِكَ الِاحْتِجَاجَ بِهِ إِمْكَانَ الْإِرْسَالِ فِيهِ، لَزِمَكَ أَنْ لَا تُثْبِتَ إِسْنَادًا مُعَنْعَنًا حَتَّى تَرَى فِيهِ السَّمَاعَ مِنْ أَوَّلِهِ إِلَى آخِرِهِ " وَذَلِكَ أَنَّ الْحَدِيثَ الْوَارِدَ عَلَيْنَا بِإِسْنَادِ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ فَبِيَقِينٍ نَعْلَمُ أَنَّ هِشَامًا قَدْ سَمِعَ مِنْ أَبِيهِ، وَأَنَّ أَبَاهُ قَدْ سَمِعَ مِنْ عَائِشَةَ، كَمَا نَعْلَمُ أَنَّ عَائِشَةَ قَدْ سَمِعَتْ مِنَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَقَدْ يَجُوزُ إِذَا لَمْ يَقُلْ هِشَامٌ فِي رِوَايَةٍ يَرْوِيهَا عَنْ أَبِيهِ: سَمِعْتُ، أَوْ أَخْبَرَنِي، أَنْ يَكُونَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ أَبِيهِ فِي تِلْكَ الرِّوَايَةِ إِنْسَانٌ آخَرُ، أَخْبَرَهُ بِهَا عَنْ أَبِيهِ، وَلَمْ يَسْمَعْهَا هُوَ مِنْ أَبِيهِ، لَمَّا أَحَبَّ أَنَّ يَرْوِيهَا مُرْسَلًا، وَلَا يُسْنِدَهَا إِلَى مَنْ سَمِعَهَا مِنْهُ، وَكَمَا يُمْكِنُ ذَلِكَ فِي هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، فَهُوَ أَيْضًا مُمْكِنٌ فِي أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، وَكَذَلِكَ كُلُّ إِسْنَادٍ لِحَدِيثٍ لَيْسَ فِيهِ ذِكْرُ سَمَاعِ بَعْضِهِمْ مِنْ بَعْضٍ، وَإِنْ كَانَ قَدْ عُرِفَ فِي الْجُمْلَةِ أَنَّ كُلَّ وَاحِدٍ مِنْهُمْ قَدْ سَمِعَ مِنْ صَاحِبِهِ سَمَاعًا كَثِيرًا، فَجَائِزٌ لِكُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمْ أَنَّ يَنْزِلَ فِي بَعْضِ الرِّوَايَةِ، فَيَسْمَعَ مِنْ غَيْرِهِ عَنْهُ بَعْضَ أَحَادِيثِهِ، ثُمَّ يُرْسِلَهُ عَنْهُ أَحْيَانًا، وَلَا يُسَمِّيَ مَنْ سَمِعَ مِنْهُ، وَيَنْشَطَ أَحْيَانًا فَيُسَمِّيَ الَّذِي حَمَلَ عَنْهُ الْحَدِيثَ وَيَتْرُكَ الْإِرْسَالَ، وَمَا قُلْنَا مِنْ هَذَا مَوْجُودٌ فِي الْحَدِيثِ مُسْتَفِيضٌ، مِنْ فِعْلِ ثِقَاتِ الْمُحَدِّثِينَ وَأَئِمَّةِ أَهْلِ الْعِلْمِ، وَسَنَذْكُرُ مِنْ رِوَايَاتِهِمْ عَلَى الْجِهَةِ الَّتِي ذَكَرْنَا عَدَدًا يُسْتَدَلُّ بِهَا عَلَى أَكْثَرَ مِنْهَا إِنْ شَاءَ اللهُ تَعَالَى، فَمِنْ ذَلِكَ "
أَنَّ أَيُّوبَ السَّخْتِيَانِيَّ، وَابْنَ الْمُبَارَكِ، وَوَكِيعًا، وَابْنَ نُمَيْرٍ، وَجَمَاعَةً غَيْرَهُمْ، رَوَوْا عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا، قَالَتْ: «كُنْتُ أُطَيِّبُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِحِلِّهِ، وَلِحِرْمِهِ بِأَطْيَبِ مَا أَجِدُ» .
فَرَوَى هَذِهِ الرِّوَايَةَ بِعَيْنِهَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، وَدَاوُدُ الْعَطَّارُ، وَحُمَيْدُ بْنُ الْأَسْوَدِ، وَوُهَيْبُ بْنُ خَالِدٍ، وَأَبُو أُسَامَةَ، عَنْ هِشَامٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عُثْمَانُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
وَرَوَى هِشَامٌ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا اعْتَكَفَ، يُدْنِي إِلَيَّ رَأْسَهُ فَأُرَجِّلُهُ وَأَنَا حَائِضٌ» فَرَوَاهَا بِعَيْنِهَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَمْرَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
وَرَوَى الزُّهْرِيُّ، وَصَالِحُ بْنُ أَبِي حَسَّانَ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقَبِّلُ وَهُوَ صَائِمٌ»
فَقَالَ يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ فِي هَذَا الْخَبَرِ فِي الْقُبْلَةِ، أَخْبَرَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ عَبْدِ الْعَزِيزِ، أَخْبَرَهُ أَنَّ عُرْوَةَ، أَخْبَرَهُ أَنَّ عَائِشَةَ أَخْبَرَتْهُ «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ» كَانَ يُقَبِّلُهَا وَهُوَ صَائِمٌ "
وَرَوَى ابْنُ عُيَيْنَةَ، وَغَيْرُهُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ: «أَطْعَمَنَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لُحُومَ الْخَيْلِ، وَنَهَانَا عَنْ لُحُومِ الْحُمُرِ» ، فَرَوَاهُ حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِيٍّ، عَنْ جَابِرٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «وَهَذَا النَّحْوُ فِي الرِّوَايَاتِ كَثِيرٌ يَكْثُرُ تَعْدَادُهُ، وَفِيمَا ذَكَرْنَا مِنْهَا كِفَايَةٌ لِذَوِي الْفَهْمِ، فَإِذَا كَانَتِ الْعِلَّةُ عِنْدَ مَنْ وَصَفْنَا قَوْلَهُ مِنْ قَبْلُ فِي فَسَادِ الْحَدِيثِ وَتَوْهِينِهِ، إِذَا لَمْ يُعْلَمْ أَنَّ الرَّاوِيَ قَدْ سَمِعَ مِمَّنْ رَوَى عَنْهُ شَيْئًا، إِمْكَانَ الْإِرْسَالَ فِيهِ، لَزِمَهُ تَرْكُ الِاحْتِجَاجِ فِي قِيَادِ قَوْلِهِ بِرِوَايَةِ مَنْ يُعْلَمُ أَنَّهُ قَدْ سَمِعَ مِمَّنْ رَوَى عَنْهُ، إِلَّا فِي نَفْسِ الْخَبَرِ الَّذِي فِيهِ ذِكْرُ السَّمَاعِ، لِمَا بَيَّنَّا مِنْ قَبْلُ عَنِ الْأَئِمَّةِ الَّذِينَ نَقَلُوا الْأَخْبَارَ أَنَّهُمْ كَانَتْ لَهُمْ تَارَاتٌ يُرْسِلُونَ فِيهَا الْحَدِيثَ إِرْسَالًا، وَلَا يَذْكُرُونَ مَنْ سَمِعُوهُ مِنْهُ، وَتَارَاتٌ يَنْشَطُونَ فِيهَا، فَيُسْنِدُونَ الْخَبَرَ عَلَى هَيْئَةِ مَا سَمِعُوا، فَيُخْبِرُونَ بِالنُّزُولِ فِيهِ إِنْ نَزَلُوا، وَبِالصُّعُودِ إِنْ صَعِدُوا، كَمَا شَرَحْنَا ذَلِكَ عَنْهُمْ،
وَمَا عَلِمْنَا أَحَدًا مِنْ أَئِمَّةِ السَّلَفِ مِمَّنْ يَسْتَعْمِلُ الْأَخْبَارَ، وَيَتَفَقَّدُ صِحَّةَ الْأَسَانِيدِ وَسَقَمَهَا، مِثْلَ أَيُّوبَ السَّخْتِيَانِيِّ وَابْنِ عَوْنٍ، وَمَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، وَشُعْبَةَ بْنِ الْحَجَّاجِ، وَيَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ الْقَطَّانِ، وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ مَهْدِيٍّ، وَمَنْ بَعْدَهُمْ مِنْ أَهْلِ الْحَدِيثِ، فَتَّشُوا عَنْ مَوْضِعِ السَّمَاعِ فِي الْأَسَانِيدِ، كَمَا ادَّعَاهُ الَّذِي وَصَفْنَا قَوْلَهُ مِنْ قَبْلُ» وَإِنَّمَا كَانَ تَفَقُّدُ مَنْ تَفَقَّدَ مِنْهُمْ سَمَاعَ رُوَاةِ الْحَدِيثِ مِمَّنْ رَوَى عَنْهُمْ، إِذَا كَانَ الرَّاوِي مِمَّنْ عُرِفَ بِالتَّدْلِيسِ فِي الْحَدِيثِ، وَشُهِرَ بِهِ، فَحِينَئِذٍ يَبْحَثُونَ عَنْ سَمَاعِهِ فِي رِوَايَتِهِ، وَيَتَفَقَّدُونَ ذَلِكَ مِنْهُ كَيْ تَنْزَاحَ عَنْهُمْ عِلَّةُ التَّدْلِيسِ، فَمَنِ ابْتَغَى ذَلِكَ مِنْ غَيْرِ مُدَلِّسٍ، عَلَى الْوَجْهِ الَّذِي زَعَمَ مَنْ حَكَيْنَا قَوْلَهُ، فَمَا سَمِعْنَا ذَلِكَ عَنْ أَحَدٍ مِمَّنْ سَمَّيْنَا، وَلَمْ نُسَمِّ مِنَ الْأَئِمَّةِ
فَمِنْ ذَلِكَ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ يَزِيدَ الْأَنْصَارِيَّ، وَقَدْ رَأَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَدْ رَوَى عَنْ حُذَيْفَةَ، وَعَنْ أَبِي مَسْعُودٍ الْأَنْصَارِيِّ، وَعَنْ كُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا حَدِيثًا يُسْنِدُهُ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَلَيْسَ فِي رِوَايَتِهِ عَنْهُمَا ذِكْرُ السَّمَاعِ مِنْهُمَا، وَلَا حَفِظْنَا فِي شَيْءٍ مِنَ الرِّوَايَاتِ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ يَزِيدَ شَافَهَ حُذَيْفَةَ، وَأَبَا مَسْعُودٍ بِحَدِيثٍ قَطُّ، وَلَا وَجَدْنَا ذِكْرَ رُؤْيَتِهِ إِيَّاهُمَا فِي رِوَايَةٍ بِعَيْنِهَا،
وَلَمْ نَسْمَعْ عَنْ أَحَدٍ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ مِمَّنْ مَضَى، وَلَا مِمَّنْ أَدْرَكْنَا أَنَّهُ طَعَنَ فِي هَذَيْنِ الْخَبَرَيْنِ اللَّذَيْنِ رَوَاهُمَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يَزِيدَ، عَنْ حُذَيْفَةَ، وَأَبِي مَسْعُودٍ بِضَعْفٍ فِيهِمَا، بَلْ هُمَا وَمَا أَشْبَهَهُمَا عِنْدَ مَنْ لَاقَيْنَا مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ بِالْحَدِيثِ مِنْ صِحَاحِ الْأَسَانِيدِ وَقَوِيِّهَا، يَرَوْنَ اسْتِعْمَالَ مَا نُقِلَ بِهَا، وَالِاحْتِجَاجَ بِمَا أَتَتْ مِنْ سُنَنٍ وَآثَارٍ، وَهِيَ فِي زَعْمِ مَنْ حَكَيْنَا قَوْلَهُ مِنْ قَبْلُ وَاهِيَةٌ مُهْمَلَةٌ، حَتَّى يُصِيبَ سَمَاعَ الرَّاوِي عَمَّنْ رَوَى، وَلَوْ ذَهَبْنَا نُعَدِّدُ الْأَخْبَارَ الصِّحَاحَ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِمَّنْ يَهِنُ بِزَعْمِ هَذَا الْقَائِلِ، وَنُحْصِيهَا لَعَجَزْنَا عَنْ تَقَصِّي ذِكْرِهَا وَإِحْصَائِهَا كُلِّهَا،
وَلَكِنَّا أَحْبَبْنَا أَنْ نَنْصِبَ مِنْهَا عَدَدًا يَكُونُ سِمَةً لِمَا سَكَتْنَا عَنْهُ مِنْهَا» وَهَذَا أَبُو عُثْمَانَ النَّهْدِيُّ، وَأَبُو رَافِعٍ الصَّائِغُ، وَهُمَا مِمَّنْ أَدْرَكَ الْجَاهِلِيَّةَ، وَصَحِبَا أَصْحَابَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ الْبَدْرِيِّينَ هَلُمَّ جَرًّا، وَنَقَلَا عَنْهُمُ الْأَخْبَارَ حَتَّى نَزَلَا إِلَى مِثْلِ أَبِي هُرَيْرَةَ، وَابْنِ عُمَرَ، وَذَوِيهِمَا قَدْ أَسْنَدَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا عَنْ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَدِيثًا، وَلَمْ نَسْمَعْ فِي رِوَايَةٍ بِعَيْنِهَا أَنَّهُمَا عَايَنَا أُبَيًّا، أَوْ سَمِعَا مِنْهُ شَيْئًا،
وَأَسْنَدَ أَبُو عَمْرٍو الشَّيْبَانِيُّ وَهُوَ مِمَّنْ أَدْرَكَ الْجَاهِلِيَّةَ، وَكَانَ فِي زَمَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلًا، وَأَبُو مَعْمَرٍ عَبْدُ اللهِ بْنُ سَخْبَرَةَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ الْأَنْصَارِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَبَرَيْنِ، وَأَسْنَدَ عُبَيْدُ بْنُ عُمَيْرٍ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَدِيثًا، وَعُبَيْدُ بْنُ عُمَيْرٍ وُلِدَ فِي زَمَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَأَسْنَدَ قَيْسُ بْنُ أَبِي حَازِمٍ وَقَدِ اَدْرَكَ زَمَنَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ الْأَنْصَارِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلَاثَةَ أَخْبَارٍ، وَأَسْنَدَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي لَيْلَى، وَقَدْ حَفِظَ عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، وَصَحِبَ عَلِيًّا، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَدِيثًا ، وَأَسْنَدَ رِبْعِيُّ بْنُ حِرَاشٍ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَدِيثَيْنِ، وَعَنْ أَبِي بَكْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَدِيثًا، وَقَدْ سَمِعَ رِبْعِيٌّ مِنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ وَرَوَى عَنْهُ، وَأَسْنَدَ نَافِعُ بْنُ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِي شُرَيْحٍ الْخُزَاعِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَدِيثًا، وَأَسْنَدَ النُّعْمَانُ بْنُ أَبِي عَيَّاشٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، ثَلَاثَةَ أَحَادِيثَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَأَسْنَدَ عَطَاءُ بْنُ يَزِيدَ اللَّيْثِيُّ، عَنْ تَمِيمٍ الدَّارِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَدِيثًا، وَأَسْنَدَ سُلَيْمَانُ بْنُ يَسَارٍ، عَنْ رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَدِيثًا، وَأَسْنَدَ حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحِمْيَرِيُّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَحَادِيثَ، فَكُلُّ هَؤُلَاءِ التَّابِعِينَ الَّذِينَ نَصَبْنَا رِوَايَتَهُمْ عَنِ الصَّحَابَةِ الَّذِينَ سَمَّيْنَاهُمْ لَمْ يُحْفَظْ عَنْهُمْ سَمَاعٌ عَلِمْنَاهُ مِنْهُمْ فِي رِوَايَةٍ بِعَيْنِهَا، وَلَا أَنَّهُمْ لَقُوهُمْ فِي نَفْسِ خَبَرٍ بِعَيْنِهِ، وَهِيَ أَسَانِيدُ عِنْدَ ذَوِي الْمَعْرِفَةِ بِالْأَخْبَارِ وَالرِّوَايَاتِ مِنْ صِحَاحِ الْأَسَانِيدِ، لَا نَعْلَمُهُمْ وَهَّنُوا مِنْهَا شَيْئًا قَطُّ، وَلَا الْتَمَسُوا فِيهَا سَمَاعَ بَعْضِهِمْ مِنْ بَعْضٍ، إِذِ السَّمَاعُ لِكُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمْ مُمْكِنٌ مِنْ صَاحِبِهِ غَيْرُ مُسْتَنْكَرٍ، لِكَوْنِهِمْ جَمِيعًا كَانُوا فِي الْعَصْرِ الَّذِي اتَّفَقُوا فِيهِ، وَكَانَ هَذَا الْقَوْلُ الَّذِي أَحْدَثَهُ الْقَائِلُ الَّذِي حَكَيْنَاهُ فِي تَوْهِينِ الْحَدِيثِ بِالْعِلَّةِ الَّتِي وَصَفَ أَقَلَّ مِنْ أَنْ يُعَرَّجَ عَلَيْهِ، وَيُثَارَ ذِكْرُهُ، إِذْ كَانَ قَوْلًا مُحْدَثًا وَكَلَامًا خَلْفًا لَمْ يَقُلْهُ أَحَدٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ سَلَفَ، وَيَسْتَنْكِرُهُ مَنْ بَعْدَهُمْ خَلَفَ، فَلَا حَاجَةَ بِنَا فِي رَدِّهِ بِأَكْثَرَ مِمَّا شَرَحْنَا، إِذْ كَانَ قَدْرُ الْمَقَالَةِ وَقَائِلِهَا الْقَدْرَ الَّذِي وَصَفْنَاهُ، وَاللهُ الْمُسْتَعَانُ عَلَى دَفْعِ مَا خَالَفَ مَذْهَبَ الْعُلَمَاءِ وَعَلَيْهِ التُّكْلَانُ "
tahqiq

তাহকীক: