আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ

المسند الصحيح لمسلم

৩৩- জিহাদের বিধানাবলী ও নবীজীর যুদ্ধাভিযানসমূহ - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং: ৪৪৫৬
আন্তর্জাতিক নং: ১৭৭৩-১
২৬. বাদশাহ হিরাকল (হিরাক্লিয়াস) এর নিকট ইসলামের দাওয়াত প্রদান করে নবী (ﷺ) এর পত্র
৪৪৫৬। ইসহাক ইবনে ইবরাহীম হানযালী, ইবনে আবু উমর, মুহাম্মাদ ইবনে রাফি ও আব্দ ইবনে হুমায়দ (রাহঃ) ......... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, আবু সুফিয়ান (রাযিঃ) মুখোমুখি (সরাসরি) এ হাদীস অবহিত করেছেন। যখন আমার মধ্যে এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর মধ্যে (হুদায়বিয়ার) সন্ধির সময়কাল কার্যকর ছিল (ষষ্ঠ হিজরীতে) তখন আমি (সফরে) বের হলাম। যখন আমি শাম দেশে উপস্থিত হলাম, তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর প্রেরিত একটি পত্র হিরাকল (হিরাক্লিয়াস) বাদশাহর নিকট পৌঁছল। দিহইয়া আল-কালবী (রাযিঃ) (দূত) এই পত্র নিয়ে গিয়েছিলন। তিনি সেই পত্র ‘বুসরার’ প্রধান শাসনকর্তাকে প্রদান করেন। এরপর বুসরার প্রধান, হিরাকল বাদশাহর নিকট পত্রটি হস্তান্তর করেন। তখন হিরাকল বাদশাহ বললেন, এখানে ঐ লোকটির (মুহাম্মাদ (ﷺ) এর) সম্প্রদায়ের কোন লোক আছে কি, যিনি নিজেকে নবী বলে দাবী করেছেন? তারা বলল, হ্যাঁ। তখন কুরাইশদের এক দল লোকের সঙ্গে আমাকেও ডাকা হল।

এরপর আমরা হিরাকল বাদশাহর নিকটে প্রবেশ করলাম। আমাদেরকে তার সম্মুখেই বসান হল। তখন তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, যিনি নবী দাবী করছেন আত্মীয়তার দিক দিয়ে তোমাদের মধ্যে কে অধিক নিকটবর্তী? তখন আবু সুফিয়ান বললেন, আমি। তখন তাঁরা আমাকে বাদশাহর সামনেই বসালেন এবং আমার সঙ্গীদেরকে আমার পিছনে বসালেন। এরপর তিনি তার দোভাষীকে ডাকলেন এবং তাকে বললেন, “আমি তাদেরকে আমার পক্ষ থেকে বলে দাও যে, আমি তাকে (আবু সুফিয়ানকে) ঐ লোকটি সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞাসা করব, যিনি নিজেকে নবী বলে দাবী করছেন। যদি তিনি (আবু সুফিয়ান) আমার নিকট মিথ্যা কথা বলেন, তবে আপনারা তাকে মিথ্যাবাদী বলে ঘোষণা দেবেন। তখন আবু সুফিয়ান বলেন, আল্লাহর শপথ! যদি আমার এই ভয় না হত যে, মিথ্যা বললে তা আমার নামে উদ্ধৃত হতে থাকবে তবে নিশ্চয়ই (তাঁর সম্পর্কে) মিথ্যা কথা বলতাম।

অতঃপর বাদশাহ তার দোভাষীকে বললেন, তুমি তাকে (আবু সুফিয়ানকে) জিজ্ঞাসা কর, আপনাদের মাঝে ঐ লোকটির বংশ পরিচয় কেমন? আমি বললাম, তিনি আমাদের মাঝে সম্ভ্রান্ত বংশীয়। এরপর তিনি বললেন, তাঁর পিতৃ পুরুষদের মধ্যে কি কেউ কখনও বাদশাহ ছিলেন? আমি বললাম, না। এরপর তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, আপনারা কি কখনও তাঁকে এ কথা বলার পূর্বে, যা তিনি বলেছেন, মিথ্যা বলার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন? আমি বললাম না। তিনি আবার বললেন, সমাজের কোন শ্রেণীর লোক তাঁর অনুসরণ করে? সম্ভ্রান্ত প্রভাবশালীরা, না দুর্বলেরা? আমি বললাম, (সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিরা নয়); বরং দুর্বল শ্রেণীর লোকেরা।

তিনি বললেন, তাঁর অনুগামীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, না কমছে? আমি বললাম, (কমছে না), বরং (দিনদিন) বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরপর তিনি বললেন, যে সব লোক তাঁর ধর্মে প্রবেশ করছে তারা কি পরবর্তীতে তাঁর প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে ধর্মান্তরিত হচ্ছে? আমি বললাম, না। এরপর তিনি বললেন, আপনারা কি কখনও তাঁর সাথে যুদ্ধ করেছেন? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, আপনাদের এবং তাঁর মাঝে সংঘটিত যুদ্ধের ফলাফল কিরূপ? আমি বললাম, আমাদের এবং তাঁর মাঝে যুদ্ধের অবস্থা পালাবদল হচ্ছে। কখনও তিনি বিজয়ী হন এবং কখনও বা আমরা বিজয়ী হই। সম্রাট হিরাকল বললেন, তিনি কি (কখনও সন্ধির শর্ত ভঙ্গ করে) বিশ্বাস ভঙ্গ করেন? আমি বললাম না। কিন্তু আমরা বর্তমানে তাঁর সঙ্গে একটা নির্দিষ্ট সময়সীমা (পর্যন্ত সন্ধি চুক্তিতে আব্দ্ধ আছি)। আমরা জানি না যে, পরিশেষে তিনি তাতে কী করবেন। আবু সুফিয়ান বললেন, আল্লাহর শপথ! (প্রশ্ন উত্তরে) আমার পক্ষ হতে এ কথাটি ছাড়া অন্য কোন দ্বিধামূলক কথা সংযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এরপর সম্রাট হিরাকল বললেন, (আপনাদের দেশে) তাঁর (নবুওয়াত দাবীর) পূর্বে কি কোন ব্যক্তি কখনও এরূপ দাবী করেছে? আমি বললাম, না। এরপর সম্রাট হিরাকল তার দোভাষীকে বললেন, আমি তাকে (আবু সুফিয়ানকে) বলে দাও যে, আমি আপনাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তাঁর (মুহাম্মাদ (ﷺ) এর) বংশ পরিচয় সম্পর্কে। আপনি তখন বলেছিলেন যে, তিনি সম্ভ্রান্ত বংশীয়। এমনিভাবে রাসূলগণ তাদের সম্প্রদায়ের উত্তম বংশে প্রেরিত হয়ে থাকেন। এরপরে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তাঁর পিতৃ পুরুষগণের মধ্যে কি কেউ বাদশাহ ছিলন? আপনি প্রতি উত্তরে বলেছিলেন, না। আমি মনে মনে বললাম যে, যদি তাঁর পিতৃপুরুষগণের মধ্যে হতে কেউ বাদশাহ থাকতেন, তবে আমি মনে করতাম যে, হয়তবা তিনি তাঁর পিতৃপুরুষের রাজত্ব পুনরুদ্ধার করতে চান। তারপর আমি আপনাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তাঁর অনুসারী কি দুর্বল শ্রেণীর লোক, না সম্ভ্রান্ত শ্রেণীর লোক? আপনি বলেছিলেন, দুর্বল শ্রেণীর লোক (আমি বলছি,) তারাই রাসূলগণের অনুসারী হয়ে থাকে।

এরপর আমি আপনাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, যে তিনি (নবুওয়াতের) যে কথা বলছেন এর পূর্বে কি আপনারা তাঁকে কখনও মিথ্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন? আপনি বলেছিলেন যে, না। এতে আমি বুঝতে পারলাম, যে ব্যক্তি (জাগতিক ব্যপারে) মানুষের সাথে মিথ্যা বলেন না, তিনি কি কারণে আল্লাহর উপর মিথ্যারোপ করতে যাবেন? এরপর আমি আপনাকে প্রশ্ন করেছিলাম যে, কোন ব্যক্তি কি তাঁর ধর্ম গ্রহণ করার পর তাঁর প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে তাঁর ধর্ম পরিত্যাগ করেছে? আপনি বলেছিলেন, না। ঈমানের প্রকৃত অবস্থা এটাই। যখন অন্তরের অন্তস্থলে একবার তা সংমিশ্রিত হয় (তখন সেখানেই স্থায়ীভাবে অবস্থান করে)। এরপর আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তাঁর অনুগামীদের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে, না কমছে? আপনি বলেছিলেন, তারা সংখায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটাই হল ঈমানের প্রকৃত অবস্থা। তা বৃদ্ধি পেতে পেতে অবশেষে পূর্ণতা লাভ করে।

এরপর আমি আপনাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আপনারা কি তাঁর সঙ্গে কোন যুদ্ধ করেছেন? আপনি বলেছিলেন, হ্যাঁ, আপনারা তাঁর সাথে যুদ্ধ করেছেন। তবে আপনাদের মাঝে ও তাঁর মাঝে যুদ্ধের অবস্থা হল পালাবদলের মত। কখনও তিনি বিজয়ী হন, আবার কখনও আপনারা বিজয়ী হন। এভাবে রাসূলগণকে পরীক্ষার সম্মুখীন করা হয়। পরিণামে তাঁরাই বিজয়ী হয়ে থাকেন। এরপর আমি আপনাকে প্রশ্ন করেছিলাম, তিনি কি কখনও (কোন সন্ধির) চুক্তি ভঙ্গ করেন? আপনি বলেছিলেন, তিনি কোন চুক্তিভঙ্গ করেন না, এভাবে রাসূলগণ কখনও কোন চুক্তি ভঙ্গ করেন না। আর আমি আপনাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে, তাঁর এই কথা (নবুওয়াতের কথা) বলার পূর্বে কি কোন ব্যক্তি অনুরূপ কথা বলেছেন? আপনি বলেছিলেন যে, না। আমি তা এ কারণে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে ,যদি তাঁর পূর্বে কেউ এরূপ দাবী করে থাকতো , তবে আমি মনে করতাম যে, সে ব্যক্তি তাঁর পূর্বে যে কথা বলা হয়েছিল তার অনুকরণ করেছে।

রাবী বলেন এরপর হিরাকল জিজ্ঞাসা করলেন, তিনি আপনাদের কি করতে আদেশ করেন? আমি (আবু সুফিয়ান) বললাম, তিনি আমাদেরকে নামায আদায় করতে, যাকাত দিতে, আত্মীয় সম্বন্ধ অটুট রাখতে (নিকট আত্মীয় ও হকদার ব্যক্তিদের প্রতি সদ্ব্যবহার করতে) এবং চারিত্রিক পবিত্রতা রক্ষা করতে (অবৈধ ও অসৌজন্যমূলক কাজ থেকে বিরত থাকতে) আদেশ করে থাকেন।

তিনি (বাদশাহ হিরাকল) বললেন, আপনি তাঁর সম্পর্কে যা বললেন তাঁর অবস্থা যদি ঠিক তাই হয় তবে তিনি অবশ্যই নবী। আমি জানতাম যে, একজন নবীর আবির্ভাব ঘটবে। কিন্তু আমি ধারণা করিনি যে, তিনি আপনাদের থেকে হবেন। যদি আমি জানতাম যে, আমি তাঁর নিকট নির্বিঘ্নে পৌঁছাতে পারবো তবে নিশ্চয়ই আমি তাঁর মুবারক পদদ্বয় ধুইয়ে দিতাম। (জেনে রেখো) নিশ্চয়ই তাঁর রাজত্ব আমার দু’পায়ের নীচ পর্যন্ত পৌঁছাবে। এরপর তিনি রাসূলুল্লাহ(ﷺ) এর চিঠিটি তলব করলেন এবং তা পাঠ (করার আদেশ) করলেন। এতে ছিলঃ

“দয়াবান দয়ালু আল্লাহর নামে! এটা মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর পক্ষ থেকে রোমের প্রধান ব্যক্তি হিরাকল এর প্রতি। সালাম সেই ব্যক্তির উপর, যিনি (হিদায়াতের) সঠিক পথ অনুসরণ করেন। অতঃপর নিশ্চয়ই আমি আপনাকে ইসলামের আহবান জানাচ্ছি। ইসলাম গ্রহণ করুন, নিরাপদ থাকবেন। আপনি মুসলমান হউন, আল্লাহ আপনাকে আপনার প্রতিদান দ্বিগুণ করে দান করবেন। আর যদি আপনি (ইসলাম থেকে) বিমুখ থাকেন, তবে নিশ্চয়ই প্রজাদের পাপ আপনার উপর আরোপিত হবে।

“হে আহলে কিতাব! তোমরা এসো সে কথায়, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই; যে আমরা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারও ইবাদত করব না, কোন কিছুকেই তাঁর শরীক করব না, যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় (অবাধ্য হয়) তবে বল, তোমরা সাক্ষী থাক আমরা মুসলিম”

এরপর তিনি পত্র পাঠ শেষ করলে তাঁর নিকটে শোরগোল এবং হৈ চৈ হতে লাগল। এদিকে আমাদেরকে বেরিয়ে আসার নির্দেশ দেয়া হল। আমরা বেরিয়ে এলাম। আবু সুফিয়ান বলেন, আমরা যখন বেরিয়ে এলাম তখন আমি আমার সঙ্গীদের বললাম, আবু কাবাশার পুত্রের ব্যপারটি অত্যন্ত সুদৃঢ় হয়েছে। বনী আসফার (লাল চামড়াদের) বাদশাহও তাঁকে ভয় করছে। অবশেষে এক সময় আল্লাহ তাআলা আমার অন্তরে ইসলাম প্রবেশ করিয়ে দিলেন।
باب كِتَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلَى هِرَقْلَ يَدْعُوهُ إِلَى الإِسْلاَمِ
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْحَنْظَلِيُّ، وَابْنُ أَبِي عُمَرَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، وَعَبْدُ بْنُ، حُمَيْدٍ - وَاللَّفْظُ لاِبْنِ رَافِعٍ - قَالَ ابْنُ رَافِعٍ وَابْنُ أَبِي عُمَرَ حَدَّثَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ أَبَا سُفْيَانَ، أَخْبَرَهُ مِنْ، فِيهِ إِلَى فِيهِ قَالَ انْطَلَقْتُ فِي الْمُدَّةِ الَّتِي كَانَتْ بَيْنِي وَبَيْنَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَبَيْنَا أَنَا بِالشَّأْمِ إِذْ جِيءَ بِكِتَابٍ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى هِرَقْلَ يَعْنِي عَظِيمَ الرُّومِ - قَالَ - وَكَانَ دِحْيَةُ الْكَلْبِيُّ جَاءَ بِهِ فَدَفَعَهُ إِلَى عَظِيمِ بُصْرَى فَدَفَعَهُ عَظِيمُ بُصْرَى إِلَى هِرَقْلَ فَقَالَ هِرَقْلُ هَلْ هَا هُنَا أَحَدٌ مِنْ قَوْمِ هَذَا الرَّجُلِ الَّذِي يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ قَالُوا نَعَمْ - قَالَ - فَدُعِيتُ فِي نَفَرٍ مِنْ قُرَيْشٍ فَدَخَلْنَا عَلَى هِرَقْلَ فَأَجْلَسَنَا بَيْنَ يَدَيْهِ فَقَالَ أَيُّكُمْ أَقْرَبُ نَسَبًا مِنْ هَذَا الرَّجُلِ الَّذِي يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ فَقَالَ أَبُو سُفْيَانَ فَقُلْتُ أَنَا . فَأَجْلَسُونِي بَيْنَ يَدَيْهِ وَأَجْلَسُوا أَصْحَابِي خَلْفِي ثُمَّ دَعَا بِتَرْجُمَانِهِ فَقَالَ لَهُ قُلْ لَهُمْ إِنِّي سَائِلٌ هَذَا عَنِ الرَّجُلِ الَّذِي يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ فَإِنْ كَذَبَنِي فَكَذِّبُوهُ . قَالَ فَقَالَ أَبُو سُفْيَانَ وَايْمُ اللَّهِ لَوْلاَ مَخَافَةَ أَنْ يُؤْثَرَ عَلَىَّ الْكَذِبُ لَكَذَبْتُ . ثُمَّ قَالَ لِتَرْجُمَانِهِ سَلْهُ كَيْفَ حَسَبُهُ فِيكُمْ قَالَ قُلْتُ هُوَ فِينَا ذُو حَسَبٍ قَالَ فَهَلْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مَلِكٌ قُلْتُ لاَ . قَالَ فَهَلْ كُنْتُمْ تَتَّهِمُونَهُ بِالْكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُولَ مَا قَالَ قُلْتُ لاَ . قَالَ وَمَنْ يَتَّبِعُهُ أَشْرَافُ النَّاسِ أَمْ ضُعَفَاؤُهُمْ قَالَ قُلْتُ بَلْ ضُعَفَاؤُهُمْ . قَالَ أَيَزِيدُونَ أَمْ يَنْقُصُونَ قَالَ قُلْتُ لاَ بَلْ يَزِيدُونَ . قَالَ هَلْ يَرْتَدُّ أَحَدٌ مِنْهُمْ عَنْ دِينِهِ بَعْدَ أَنْ يَدْخُلَ فِيهِ سَخْطَةً لَهُ قَالَ قُلْتُ لاَ . قَالَ فَهَلْ قَاتَلْتُمُوهُ قُلْتُ نَعَمْ . قَالَ فَكَيْفَ كَانَ قِتَالُكُمْ إِيَّاهُ قَالَ قُلْتُ تَكُونُ الْحَرْبُ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُ سِجَالاً يُصِيبُ مِنَّا وَنُصِيبُ مِنْهُ . قَالَ فَهَلْ يَغْدِرُ قُلْتُ لاَ . وَنَحْنُ مِنْهُ فِي مُدَّةٍ لاَ نَدْرِي مَا هُوَ صَانِعٌ فِيهَا . قَالَ فَوَاللَّهِ مَا أَمْكَنَنِي مِنْ كَلِمَةٍ أُدْخِلُ فِيهَا شَيْئًا غَيْرَ هَذِهِ . قَالَ فَهَلْ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ أَحَدٌ قَبْلَهُ قَالَ قُلْتُ لاَ . قَالَ لِتَرْجُمَانِهِ قُلْ لَهُ إِنِّي سَأَلْتُكَ عَنْ حَسَبِهِ فَزَعَمْتَ أَنَّهُ فِيكُمْ ذُو حَسَبٍ وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ تُبْعَثُ فِي أَحْسَابِ قَوْمِهَا . وَسَأَلْتُكَ هَلْ كَانَ فِي آبَائِهِ مَلِكٌ فَزَعَمْتَ أَنْ لاَ . فَقُلْتُ لَوْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مَلِكٌ قُلْتُ رَجُلٌ يَطْلُبُ مُلْكَ آبَائِهِ . وَسَأَلْتُكَ عَنْ أَتْبَاعِهِ أَضُعَفَاؤُهُمْ أَمْ أَشْرَافُهُمْ فَقُلْتَ بَلْ ضُعَفَاؤُهُمْ وَهُمْ أَتْبَاعُ الرُّسُلِ . وَسَأَلْتُكَ هَلْ كُنْتُمْ تَتَّهِمُونَهُ بِالْكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُولَ مَا قَالَ فَزَعَمْتَ أَنْ لاَ . فَقَدْ عَرَفْتُ أَنَّهُ لَمْ يَكُنْ لِيَدَعَ الْكَذِبَ عَلَى النَّاسِ ثُمَّ يَذْهَبَ فَيَكْذِبَ عَلَى اللَّهِ . وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَرْتَدُّ أَحَدٌ مِنْهُمْ عَنْ دِينِهِ بَعْدَ أَنْ يَدْخُلَهُ سَخْطَةً لَهُ فَزَعَمْتَ أَنْ لاَ . وَكَذَلِكَ الإِيمَانُ إِذَا خَالَطَ بَشَاشَةَ الْقُلُوبِ . وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَزِيدُونَ أَوْ يَنْقُصُونَ فَزَعَمْتَ أَنَّهُمْ يَزِيدُونَ وَكَذَلِكَ الإِيمَانُ حَتَّى يَتِمَّ . وَسَأَلْتُكَ هَلْ قَاتَلْتُمُوهُ فَزَعَمْتَ أَنَّكُمْ قَدْ قَاتَلْتُمُوهُ فَتَكُونُ الْحَرْبُ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُ سِجَالاً يَنَالُ مِنْكُمْ وَتَنَالُونَ مِنْهُ . وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ تُبْتَلَى ثُمَّ تَكُونُ لَهُمُ الْعَاقِبَةُ وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَغْدِرُ فَزَعَمْتَ أَنَّهُ لاَ يَغْدِرُ . وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ لاَ تَغْدِرُ . وَسَأَلْتُكَ هَلْ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ أَحَدٌ قَبْلَهُ فَزَعَمْتَ أَنْ لاَ . فَقُلْتُ لَوْ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ أَحَدٌ قَبْلَهُ قُلْتُ رَجُلٌ ائْتَمَّ بِقَوْلٍ قِيلَ قَبْلَهُ . قَالَ ثُمَّ قَالَ بِمَ يَأْمُرُ كُمْ قُلْتُ يَأْمُرُنَا بِالصَّلاَةِ وَالزَّكَاةِ وَالصِّلَةِ وَالْعَفَافِ قَالَ إِنْ يَكُنْ مَا تَقُولُ فِيهِ حَقًّا فَإِنَّهُ نَبِيٌّ وَقَدْ كُنْتُ أَعْلَمُ أَنَّهُ خَارِجٌ وَلَمْ أَكُنْ أَظُنُّهُ مِنْكُمْ وَلَوْ أَنِّي أَعْلَمُ أَنِّي أَخْلُصُ إِلَيْهِ لأَحْبَبْتُ لِقَاءَهُ وَلَوْ كُنْتُ عِنْدَهُ لَغَسَلْتُ عَنْ قَدَمَيْهِ وَلَيَبْلُغَنَّ مُلْكُهُ مَا تَحْتَ قَدَمَىَّ . قَالَ ثُمَّ دَعَا بِكِتَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَرَأَهُ فَإِذَا فِيهِ " بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ مِنْ مُحَمَّدٍ رَسُولِ اللَّهِ إِلَى هِرَقْلَ عَظِيمِ الرُّومِ سَلاَمٌ عَلَى مَنِ اتَّبَعَ الْهُدَى أَمَّا بَعْدُ فَإِنِّي أَدْعُوكَ بِدِعَايَةِ الإِسْلاَمِ أَسْلِمْ تَسْلَمْ وَأَسْلِمْ يُؤْتِكَ اللَّهُ أَجْرَكَ مَرَّتَيْنِ وَإِنْ تَوَلَّيْتَ فَإِنَّ عَلَيْكَ إِثْمَ الأَرِيسِيِّينَ وَ ( يَا أَهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْا إِلَى كَلِمَةٍ سَوَاءٍ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ أَنْ لاَ نَعْبُدَ إِلاَّ اللَّهَ وَلاَ نُشْرِكَ بِهِ شَيْئًا وَلاَ يَتَّخِذَ بَعْضُنَا بَعْضًا أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللَّهِ فَإِنْ تَوَلَّوْا فَقُولُوا اشْهَدُوا بِأَنَّا مُسْلِمُونَ) فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ قِرَاءَةِ الْكِتَابِ ارْتَفَعَتِ الأَصْوَاتُ عِنْدَهُ وَكَثُرَ اللَّغْطُ وَأَمَرَ بِنَا فَأُخْرِجْنَا . قَالَ فَقُلْتُ لأَصْحَابِي حِينَ خَرَجْنَا لَقَدْ أَمِرَ أَمْرُ ابْنِ أَبِي كَبْشَةَ إِنَّهُ لَيَخَافُهُ مَلِكُ بَنِي الأَصْفَرِ - قَالَ - فَمَا زِلْتُ مُوقِنًا بِأَمْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ سَيَظْهَرُ حَتَّى أَدْخَلَ اللَّهُ عَلَىَّ الإِسْلاَمَ .
হাদীস নং: ৪৪৫৭
আন্তর্জাতিক নং: ১৭৭৩-২
২৬. বাদশাহ হিরাকল (হিরাক্লিয়াস) এর নিকট ইসলামের দাওয়াত প্রদান করে নবী (ﷺ) এর পত্র
৪৪৫৭। হাসান হুলওয়ানী ও আব্দ ইবনে হুমায়দ (রাহঃ) ......... ইবনে শিহাব (রাহঃ) থেকে এই একই সূত্রে উল্লিখিত হাদীস বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এই হাদীসে অধিক বর্ণনা করেছেন, “যখন আল্লাহ তাআলা রোম সম্রাট (কায়সার) দ্বারা পারস্যের সেনাদলকে পরাজিত করলেন, তখন তিনি এই বিজয়ের জন্য আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উদ্দেশ্যে ’হেমস’ থেকে ’ইলিয়া’ (বায়তুল মুকাদ্দাস) পর্যন্ত পায়ে হেঁটে যান আর তিনি এই হাদীসে “এই পত্র মুহাম্মাদ আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূলের পক্ষ হতে” এবং أارِيسِين শব্দের পরিবর্তে يَرِيسِيِّينَ শব্দ বলেছেন। আর তিনি دعاية الاسلام শব্দের পরিবর্তে داعية الاسلام শব্দ বর্ণনা করেছেন।
باب كِتَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلَى هِرَقْلَ يَدْعُوهُ إِلَى الإِسْلاَمِ
وَحَدَّثَنَاهُ حَسَنٌ الْحُلْوَانِيُّ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، - وَهُوَ ابْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ - حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَزَادَ فِي الْحَدِيثِ وَكَانَ قَيْصَرُ لَمَّا كَشَفَ اللَّهُ عَنْهُ جُنُودَ فَارِسَ مَشَى مِنْ حِمْصَ إِلَى إِيلِيَاءَ شُكْرًا لِمَا أَبْلاَهُ اللَّهُ . وَقَالَ فِي الْحَدِيثِ " مِنْ مُحَمَّدٍ عَبْدِ اللَّهِ وَرَسُولِهِ " . وَقَالَ " إِثْمَ الْيَرِيسِيِّينَ " . وَقَالَ " بِدَاعِيَةِ الإِسْلاَمِ " .