মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
৩১- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৭ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৬০৩০

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আবু বাকর সিদ্দীক (রাঃ) -এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৩০। হযরত ওমর (রাঃ) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমাদিগকে আল্লাহর রাস্তায় সদকা-খয়রাত করিবার জন্য নির্দেশ করিলেন। (সৌভাগ্যবশত) সেই সময় আমার কাছে পর্যাপ্ত সম্পদ ছিল। তখন আমি (মনে মনে) বলিলাম, (দানের প্রতিযোগিতায়) যদি আমি কোনদিন আবু বকরের উপর জিতিতে পারি, তবে আজিকার দিনেই আবু বকরের উপর জিতিয়া যাইব। ওমর বলেন, অতঃপর আমি আমার সমস্ত মালের অর্ধেক লইয়া রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর খেদমতে উপস্থিত হইলাম। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) জিজ্ঞাসা করিলেন, পরিবার-পরিজনের জন্য কি (পরিমাণ) রাখিয়া আসিয়াছ? আমি বলিলাম, ইহার সমপরিমাণ। আর আবু বকরের কাছে যাহাকিছু ছিল তিনি সমুদয় লইয়া উপস্থিত হইলেন। এইবার রাসূলুল্লাহ্ [(ﷺ) তাঁহাকে লক্ষ্য করিয়া] বলিলেন, হে আবু বকর। পরিবার-পরিজনের জন্য আপনি কি রাখিয়া আসিয়াছেন? উত্তরে তিনি বলিলেন, তাহাদের জন্য আল্লাহ্ এবং তাঁহার রাসূলকে রাখিয়া আসিয়াছি। ওমর বলেন, তখন আমি (মনে মনে) বলিলাম, আর আমি কখনও কোন ব্যাপারে তাঁহার উপর জিতিতে পারিব না। – তিরমিযী ও আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬০৩১

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আবু বাকর সিদ্দীক (রাঃ) -এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৩১। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, একদা হযরত আবু বকর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর খেদমতে উপস্থিত হইলে তিনি তাঁহাকে (লক্ষ্য করিয়া) বলিলেন, আপনি দোযখের আগুন হইতে আল্লাহর আতীক (আযাদপ্রাপ্ত)। সেইদিন হইতে তিনি “আতীক” উপাধিতে প্রসিদ্ধ হন। —তিরমিযী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬০৩২

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আবু বাকর সিদ্দীক (রাঃ) -এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৩২। হযরত ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ (কিয়ামতের দিন) যমীন ফাটিয়া যাহারা উত্থিত হইবে, তাহাদের মধ্যে আমি হইব প্রথম, তারপর আবু বকর, তারপর ওমর। অতঃপর আমি জান্নাতুল বাকী কবরস্থানবাসীদের নিকট আসিব এবং তাহাদের সকলকে আমার সহিত একত্রিত করা হইবে। ইহার পর আমি মক্কাবাসীদের আগমনের অপেক্ষা করিব। পরিশেষে উভয় হারামাইনের তথা মক্কা ও মদীনার মধ্যবর্তী সকলকে আমার সহিত একত্রিত করা হইবে। —তিরমিযী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬০৩৩

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আবু বাকর সিদ্দীক (রাঃ) -এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৩৩। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ একদা হযরত জিবরাঈল (আঃ) আমার নিকট আসিলেন এবং আমার হাত ধরিয়া আমাকে বেহেশতের ঐ দরজাটি দেখাইলেন, যেই পথে আমার উম্মত প্রবেশ করিবে। তখন আবু বকর (রাঃ) বলিলেন, কতই না আনন্দিত হইতাম ইয়া রাসূলাল্লাহ্! যদি আমি আপনার সঙ্গে থাকিয়া উক্ত প্রবেশদ্বারটি দেখিতে পারিতাম। এতদশ্রবণে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেন, জানিয়া রাখ, হে আবু বকর। আমার উম্মতের মধ্যে তুমিই সর্বপ্রথম বেহেশতে প্রবেশ করিবে। — আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬০৩৫

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৩৫। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের মধ্যে কিছু লোক মুহাদ্দাস ছিল। আমার উম্মতের মধ্যে এমন কেহ যদি থাকে, তবে সে ওমরই হইবে। মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬০৩৬

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৩৬। হযরত সা'দ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, একদা হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট (তাহার কক্ষে) হাযির হওয়ার অনুমতি চাহিলেন। তখন কোরাইশ গোত্রের কয়েকজন মহিলা (অর্থাৎ, নবীর বিবিগণ) তাহার নিকট বসিয়া কথাবার্তা বলিতেছিলেন এবং তাহারা অতি উচ্চ স্বরে তাহার নিকট হইতে অধিক (খোরপোষ) দাবী করিতেছিলেন। যখন হযরত ওমর (রাঃ) অনুমতি চাহিলেন, তখন মহিলাগণ, উঠিয়া দ্রুত পর্দার আড়ালে চলিয়া গেলেন। ইহার পর ওমর প্রবেশ করিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসিতেছিলেন। ওমর বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল। আল্লাহ আপনাকে সর্বদা প্রফুল্ল রাখুন। (তবে আপনার হাসার কারণ কি ।) তখন নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেনঃ আমি আশ্চর্য বোধ করিতেছি ঐ সকল মহিলাদের আচরণে, যাহারা এতক্ষণ আমার নিকট ছিল এবং তাহারা যখনই তোমার আওয়াজ শুনিতে পাইল, দ্রুত পর্দার আড়ালে চলিয়া গেল। তখন ওমর [(রাঃ) মহিলাদিগকে উদ্দেশ্য করিয়া] বলিলেন, ওহে স্বীয় জানের দুশমনেরা! তোমরা আমাকে ভয় কর, আর রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভয় কর না। তাহারা উত্তরে বলিলেন, হ্যাঁ। (তোমাকে এই জন্য ভয় করি, ) তুমি যে অধিকতর রুক্ষ ও কঠোরভাষী। তখন রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন, হে খাত্তাবের পুত্র। ইহাদের কথা ছাড়। ঐ সত্তার কসম, বাহার হাতে আমার প্রাণ। শয়তান তোমাকে যেপথে চলিতে দেখিতে পায়, সে তোমার রাস্তা ছাড়িয়া অন্য রাস্তা ধরে। মোত্তাঃ
হোমাইদী বলেন, ইমাম বারকানী, ইয়া রাসুলুল্লাহ (ছাঃ) শব্দের পর "কিসে আপনাকে হাসাইতেছে ?”—এই বাক্যটি অতিরিক্ত বলিয়াছেন।
হোমাইদী বলেন, ইমাম বারকানী, ইয়া রাসুলুল্লাহ (ছাঃ) শব্দের পর "কিসে আপনাকে হাসাইতেছে ?”—এই বাক্যটি অতিরিক্ত বলিয়াছেন।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬০৩৭

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৩৭। হযরত জাবের (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন (স্বপ্নযোগে অথবা মে'রাজের রাতে) আমি যখন জান্নাতে প্রবেশ করিলাম, এমন সময় হঠাৎ আবু তালহার স্ত্রী রুমাইছাকে দেখিতে পাইলাম এবং কাহারও পদক্ষেপের শব্দ শুনিতে পাইলাম। তখন আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, এই ব্যক্তি কে? উত্তরে (ফিরিশতা) বলিলেন, ইনি বেলাল। ইহার পর আমি একটি প্রাসাদও দেখিতে পাইলাম—যাহার আঙ্গিনায় একজন কিশোরী বসা ছিল। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম। এই প্রাসাদটি কাহার তখন (সঙ্গী) ফিরিশতাগণ বলিলেন, ইহা ওমর ইবনুল খাত্তাবের। তখন আমার ইচ্ছা হইয়াছিল যে, ভিতরে প্রবেশ করিয়া প্রাসাদটি দেখি, কিন্তু হে ওমর। ঐ সময় তোমার অভিমানের কথা আমার মনে পড়িয়া গেল। (তাই আমি আর প্রাসাদে প্রবেশ করিলাম না।) তখন ওমর (রাঃ) বলিলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্। আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হউন। আমি কি আপনার প্রতি অভিমান করিব?

তাহকীক:
তাহকীক চলমান