মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
৩১- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৬০৩৪

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - আবু বাকর সিদ্দীক (রাঃ) -এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৩৪। হযরত ওমর (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদা তাঁহার সম্মুখে হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর আলোচনা উঠিল। তখন তিনি কাঁদিয়া ফেলিলেন এবং বলিলেন, আমি আন্তরিকভাবে এই আকাঙ্ক্ষা পোষণ করি যে, হায়। আমার গোটা জীবনের আমলসমূহ যদি আবু বকরের জীবনের দিনসমূহের এক দিনের আমলের সমান হইত এবং তাঁহার জীবনের রাত্রসমূহের মধ্য হইতে এক রাত্রির আমলের সমান হইত। তাহার ঐ রাত্র হইল সেই রাত্র, যে রাত্রিতে তিনি (হিজরতের সফরে) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সঙ্গে গারে সত্তরের দিকে রওয়ানা হন। তাঁহারা উভয়ে যখন ঐ গুহার নিকটে পৌঁছিলেন, তখন আবু বকর [(রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে লক্ষ্য করিয়া] বলিলেন, (ইয়া রাসূলাল্লাহ্।) আল্লাহর কসম! আপনি এখন গুহার ভিতরে প্রবেশ করিবেন না, যে পর্যন্ত না আমি আপনার আগে উহার ভিতরে প্রবেশ করি, যদি উহাতে ক্ষতিকর কিছু থাকে, তবে উহার ক্ষতি আপনার পরিবর্তে আমার উপর দিয়াই যাক্। এই বলিয়া তিনি গুহার ভিতরে ঢুকিয়া পড়িলেন এবং উহার অভ্যন্তরকে ঝাড়িয়া মুছিয়া পরিষ্কার করিয়া নিলেন। অতঃপর উহার এক পার্শ্বে কয়েকটি ছিদ্র দেখিতে পাইলেন, তখন তিনি নিজের ইযার ছিঁড়িয়া ছিদ্রগুলি বন্ধ করিয়া দিলেন; কিন্তু তন্মধ্যে দুইটি ছিদ্র অবশিষ্ট রহিয়া গেল। উক্ত ছিদ্র দুইটির মুখে তিনি নিজের পা দুইটি রাখিয়া বন্ধ করিলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)কে তিনি বলিলেন, (এখন আপনি ইহার ভিতরে) প্রবেশ করুন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) উহার ভিতরে প্রবেশ করিলেন এবং আবু বকর (রাঃ)-এর উরুতে মাথা রাখিয়া ঘুমাইয়া পড়িলেন। এই সময় উক্ত ছিদ্র হইতে আবু বকরের পা (সাপ বা বিচ্ছু কর্তৃক) দংশিত হইল। কিন্তু রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিদ্রা ভঙ্গ হইয়া যাইবে এই আশংকায় তিনি এতটুকুও নড়াচড়া করিলেন না। তবে তাঁহার চক্ষুর পানি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর চেহারা মুবারকে পড়িল। তখন তিনি বলিলেনঃ হে আবু বকর। তোমার কি হইয়াছে? উত্তরে তিনি বলিলেন, আমার পিতা-মাতা আপনার উপর কোরবান। আমি দংশিত হইয়াছি। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁহার ক্ষতস্থানে স্বীয় থুথু লাগাইয়া দিলেন। ফলে তিনি যেই বিষ-যন্ত্রণায় ভুগিতেছিলেন, তাহা চলিয়া গেল। ইহার পর (শেষ বয়সে) উক্ত বিষ-ক্রিয়া তাঁহার উপর পুনরায় দেখা দিল এবং ইহাই তাঁহার মৃত্যুর কারণ হইল ।
আর তাঁহার সেই দিনটি হইল—যখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর ওফাতের পর আরববাসীরা মুরতাদ হইয়া গেল এবং তাহারা বলিল; আমরা যাকাত প্রদান করিব না। তখন তিনি বলিয়াছিলেন, “যদি তাহারা একখানা রশি প্রদানেও অস্বীকার করে, আমি নিশ্চয় তাহাদের বিরুদ্ধে জেহাদ করিব।” তখন আমি বলিয়াছিলাম, হে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর খলীফা! মানুষের সাথে হৃদ্যতা প্রদর্শন করুন এবং তাহাদের সহিত কোমল ব্যবহার করুন। উত্তরে তিনি আমাকে বলিয়াছিলেন, জাহেলিয়াতের যুগে তুমি তো ছিলে বড়ই বাহাদুর, এখন ইসলামের পর কি তুমি কাপুরুষ হইয়া পড়িলে ? জানিয়া রাখ, নিশ্চয় ওহী আসার সিলসিলা চিরতরে বন্ধ হইয়া গিয়াছে এবং দ্বীন পূর্ণ হইয়া গিয়াছে। দ্বীন হ্রাস পাইবে আর আমি জীবিত ? (তাহা কখনও হইতে পারে না।) — রাযীন
আর তাঁহার সেই দিনটি হইল—যখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর ওফাতের পর আরববাসীরা মুরতাদ হইয়া গেল এবং তাহারা বলিল; আমরা যাকাত প্রদান করিব না। তখন তিনি বলিয়াছিলেন, “যদি তাহারা একখানা রশি প্রদানেও অস্বীকার করে, আমি নিশ্চয় তাহাদের বিরুদ্ধে জেহাদ করিব।” তখন আমি বলিয়াছিলাম, হে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর খলীফা! মানুষের সাথে হৃদ্যতা প্রদর্শন করুন এবং তাহাদের সহিত কোমল ব্যবহার করুন। উত্তরে তিনি আমাকে বলিয়াছিলেন, জাহেলিয়াতের যুগে তুমি তো ছিলে বড়ই বাহাদুর, এখন ইসলামের পর কি তুমি কাপুরুষ হইয়া পড়িলে ? জানিয়া রাখ, নিশ্চয় ওহী আসার সিলসিলা চিরতরে বন্ধ হইয়া গিয়াছে এবং দ্বীন পূর্ণ হইয়া গিয়াছে। দ্বীন হ্রাস পাইবে আর আমি জীবিত ? (তাহা কখনও হইতে পারে না।) — রাযীন

তাহকীক:
তাহকীক চলমান