মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

مشكاة المصابيح للتبريزي

৩০- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ১৩ টি

অনুসন্ধান করুন

হাদীস নংঃ ৫৮৩৮
details icon

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর নুবুওয়্যাতপ্রাপ্তি ও ওয়াহীর সূচনা
৫৮৩৮। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (নবুওতের পর) মক্কায়, পনর বৎসর অবস্থান করিয়াছেন—সাত বৎসর পর্যন্ত ফেরেশ্তার আওয়ায় শুনিতেন এবং আলো দেখিতে পাইতেন; ইহা ছাড়া আর কিছুই দেখিতেন না। আট বৎসর তাঁহার নিকট অহী পাঠান হইতে থাকে। আর দশ বৎসর মদীনায় অবস্থানের পর পঁয়ষট্টি বৎসর বয়সে তিনি ইনতেকাল করেন। — মোত্তাঃ

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নংঃ ৫৮৩৯
details icon

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর নুবুওয়্যাতপ্রাপ্তি ও ওয়াহীর সূচনা
৫৮৩৯। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্ তা'আলা রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ষাট বৎসর বয়সে ওফাত দান করিয়াছেন। —মোত্তাঃ

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নংঃ ৫৮৪০
details icon

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর নুবুওয়্যাতপ্রাপ্তি ও ওয়াহীর সূচনা
৫৮৪০। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৬৩ বৎসর বয়সে ইন্তেকাল করিয়াছেন। (অনুরূপভাবে) হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) এবং হযরত ওমর ফারূক (রাঃ) তেষট্টি বৎসর বয়সে ওফাত পাইয়াছেন। —মুসলিম। ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল বুখারী (রহঃ) বলিয়াছেন, অধিকাংশ রেওয়ায়তে হুযূরের বয়সকাল ৬৩ বৎসরই রহিয়াছে।

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নংঃ ৫৮৪১
details icon

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর নুবুওয়্যাতপ্রাপ্তি ও ওয়াহীর সূচনা
৫৮৪১। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি সর্বপ্রথম অহীর সূচনা হয় সত্য স্বপ্নের মাধ্যমে। তিনি যেই স্বপ্নই দেখিতেন তাহা ভোরের আলোর মতই ফলিত। ইহার পর তাহার নিকট নির্জনতা পছন্দনীয় হইতে লাগিল। তাই তিনি একাধারে কয়েকদিন পর্যন্ত নিজের পরিবার-পরিজনদের নিকট হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া হেরা পর্বতের গুহায় নির্জন পরিবেশে আল্লাহর এবাদতে মগ্ন থাকিতে লাগিলেন। আর এই উদ্দেশ্যে তিনি কিছু খাবার সঙ্গে লইয়া যাইতেন। উহা শেষ হইয়া গেলে তিনি বিবি খাদীজা (রাঃ)-এর নিকট ফিরিয়া আসিয়া আবার ঐ পরিমাণ কয়েক দিনের জন্য কিছু খাবার সঙ্গে লইয়া যাইতেন। অবশেষে হেরা গুহায় থাকাকালে তাহার নিকট সত্য (অহী) আসিল। জিবরাঈল ফিরিশতা তথায় আসিয়া তাঁহাকে বলিলেন, 'পড়ুন।' রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ) বলিলেনঃ আমি তো পড়িতে পারি না। তিনি বলেন, ফিরিশতা তখন আমাকে ধরিয়া এমন জোরে চাপিলেন যে, ইহাতে আমি চরম কষ্ট অনুভব করিলাম। অতঃপর তিনি আমাকে ছাড়িয়া দিয়া বলিলেন, 'পড়ুন।' আমি বলিলাম, আমি তো পড়িতে পারি না। তখন তিনি দ্বিতীয়বার আমাকে ধরিয়া আবারও খুব জোরে চাপিলেন। এইবারও আমি ভীষণ কষ্ট অনুভব করিলাম। ইহার পর তিনি আমাকে ছাড়িয়া দিয়া বলিলেন, ‘পড়ুন!” এইবারও আমি বলিলাম, আমি পড়িতে পারি না। নবী (ছাঃ) বলেন, ফিরিশতা তৃতীয় বার আমাকে ধরিয়া দৃঢ়ভাবে চাপিয়া ধরিলেন। এইবারও আমি বিশেষভাবে কষ্ট পাইলাম । অতঃপর তিনি আমাকে ছাড়িয়া দিয়া বলিলেন: (অর্থাৎ, "আপনার রব-এর নামে পড়ুন। যিনি সৃষ্টি করিয়াছেন। জমাট রক্ত হইতে যিনি মানুষকে সৃষ্টি করিয়াছেন। পড়ুন! আর আপনার রব সর্বাপেক্ষা বেশী সম্মানিত। তিনিই কলম দ্বারা এলম শিখাইয়াছেন। তিনি মানুষকে উহাই শিখাইয়াছেন যাহা সে জানিত না।" অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত আয়াতগুলি আয়ত্ত করিয়া ফিরিয়া আসিলেন। তখন তাহার হৃদয় কাঁপিতেছিল। তিনি বিবি খাদীজার নিকট আসিয়া বলিলেন আমাকে চাদর দিয়া ঢাকিয়া দাও আমাকে চাদর দিয়া ঢাকিয়া দাও। তখন তিনি তাহাকে চাদর দিয়া ঢাকিয়া দিলেন। অবশেষে তাঁহার ভীতি কাটিয়া গেলে তিনি বিবি খাদীজার কাছে ঘটনা বর্ণনা করিয়া বলিলেন (আল্লাহর কসম।) আমি আমার নিজের জীবন সম্পর্কে আশংকাবোধ করিতেছি। তখন বিবি খাদীজা (সান্ত্বনা দিয়া দৃঢ়তার সাথে বলিলেন, আমি আল্লাহর কসম করিয়া বলিতেছি। এইরূপ কখনও হইতে পারে না। আল্লাহ্ তা'আলা কখনই আপনাকে অপমানিত করিবেন না। কারণ, আপনি আত্মীয়-স্বজনের সাথে সদ্ব্যবহার করেন, সর্বদা সত্য কথা বলেন, আপনি অক্ষমদের বোঝা বহন করেন। নিঃস্বদিগকে উপার্জন করিয়া সাহায্য করেন, অতিথিদের মেহমানদারী করেন এবং প্রকৃত বিপদগ্রস্তদিগকে সাহায্য করেন।

ইহার পর বিবি খাদীজা রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ)-কে সঙ্গে লইয়া আপন চাচাত ভাই ওরাকা ইবনে নওফল-এর নিকট চলিয়া গেলেন। (ওরাকা ঈসায়ী ধর্ম গ্রহণ করিয়াছিলেন।) খাদীজা তাহাকে বলিলেন, হে চাচাত ভাই। তোমার ভাতিজা কি বলে তাহা একটু শোন। তখন ওরাকা তাহাকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন, হে ভাতিজা, তুমি কি দেখিয়াছ। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাহা দেখিয়াছিলেন তাহা সবিস্তারে বর্ণনা করিলেন। ঘটনা শুনিয়া ওরাকা তাঁহাকে বলিলেন, এই তো সেই রহস্যময় ফিরিশতা (জিবরাঈল), যাঁহাকে আল্লাহ্ তা'আলা হযরত মুসা (আঃ)-এর নিকট পাঠাইয়াছিলেন। হায়! আমি যদি তোমার নবুওতকালে বলবান যুবক থাকিতাম। হায়! আমি যদি সেই সময় জীবিত থাকিতাম যখন তোমার কওম তোমাকে মক্কা হইতে বাহির করিয়া দিবে। তখন রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন; তাহারা. কি সত্যই আমাকে বাহির করিয়া দিবে? ওরাকা বলিলেন, হ্যাঁ, তুমি যাহা লইয়া দুনিয়াতে আসিয়াছ, অনুরূপ কোন কিছু লইয়া যেই ব্যক্তিই আসিয়াছে, তাহার সাথে শত্রুতাই করা হইয়াছে। আমি তোমার সেই যুগ পাইলে সর্বশক্তি দিয়া তোমার সাহায্য করিব। ইহার অব্যবহিত পর ওরাকা ওফাত পাইয়া গেলেন। এদিকে অহীর আগমনও বন্ধ হইয়া গেল। মোত্তাঃ

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নংঃ ৫৮৪২
details icon

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর নুবুওয়্যাতপ্রাপ্তি ও ওয়াহীর সূচনা
৫৮৪২। আর বুখারী অতিরিক্ত বর্ণনা করিয়াছেন, ইহাতে এইটুকু আছে যে, অহী আসা স্থগিত হওয়ায় রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্যধিক চিন্তামগ্ন হইয়া পড়েন। এমন কি তিনি কয়েকবার ভোরে এই উদ্দেশ্যে পাহাড়ের চূড়ায় উঠিয়াছিলেন যে, সেখান হইতে নিজেকে নীচে নিক্ষেপ করিবেন। যখনই তিনি নিজেকে নিক্ষেপ করিবার উদ্দেশ্যে পাহাড়ের চূড়ায় উঠিতেন, তখনই হযরত জিবরাঈল আসিয়া তাঁহার সম্মুখে উপস্থিত হইতেন এবং বলিতেন, হে মুহাম্মাদ। আপনি সত্য সত্যই আল্লাহর রাসূল (ধৈর্যধারণ করুন, অস্থিরতার কিছুই নাই), তখন জিবরাঈলের আশ্বাসবাণীতে তাঁহার অস্থিরতা দূর হইয়া হৃদয়ে প্রশান্তি আসিত।

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নংঃ ৫৮৪৩
details icon

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর নুবুওয়্যাতপ্রাপ্তি ও ওয়াহীর সূচনা
৫৮৪৩। হযরত জাবের (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি অহী স্থগিত হওয়া সম্পর্কে রাসূ লুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলিতে শুনিয়াছেন—একদা আমি পথে চলিতেছিলাম, এমন সময় আমি আসমানের দিক হইতে একটি আওয়ায শুনিতে পাইলাম। তখন আমি উপরে তাকাইয়া দেখি, হেরা গুহায় যিনি আমার নিকট আসিয়াছিলেন, সেই ফিরিশতা আসমান ও যমীনের মাঝখানে একটি কুরসীতে বসিয়া আছেন। তাহাকে দেখিয়া আমি ভয়ে ঘাবড়াইয়া গেলাম, এমন কি আমি মাটিতে লুটাইয়া পড়িলাম, অতঃপর (উঠিয়া) পরিবারের কাছে বাড়ীতে চলিয়া আসিলাম এবং বলিলাম: আমাকে চাদর জড়াও আমাকে চাদর জড়াও! তাহারা আমাকে চাদর জড়াইয়া দিল। এই সময় আল্লাহ্ তা'আলা নাযিল করিলেন— (অর্থাৎ) “ হে চাদর জড়ান ব্যক্তি। উঠ, আর সতর্ক কর। আর তোমার রবের মাহাত্ম্য ঘোষণা কর। তোমার কাপড় পবিত্র কর এবং অপবিত্রতা ত্যাগ কর।" ইহার পর হইতে অহী পুরোদমে একের পর এক নাযিল হইতে লাগিল মোত্তাঃ

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নংঃ ৫৮৪৪
details icon

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর নুবুওয়্যাতপ্রাপ্তি ও ওয়াহীর সূচনা
৫৮৪৪। হযরত আয়েশা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদা হারেস ইবনে হেশাম রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আপনার নিকট অহী কিভাবে আসে? রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেনঃ অহী কোন সময় আমার নিকট ঘণ্টার আওয়াযের মত আসে। আর উহাই আমার পক্ষে সর্বাপেক্ষা কঠিন প্রকৃতির অহী। তবে এই অবস্থায় ফিরিশতা যাহা বলে, উহা শেষ হইতেই আমি তাহার নিকট হইতে উহা আয়ত্ত করিয়া ফেলি। আবার কোন সময় ফিরিশতা আমার কাছে মানুষের আকৃতিতে আসিয়া আমার সাথে কথা বলেন, তিনি যাহা বলেন আমি তাহা সাথে সাথেই আয়ত্ত করিয়া ফেলি। হযরত আয়েশা বলেন, বস্তুতঃ আমি প্রচণ্ড শীতের দিনেও তাহার উপর অহী নাযিল হইতে দেখিয়াছি যখন উহার অবসান হইত তখন তাহার কপাল হইতে ঘাম ঝরিয়া পড়িত। — মোত্তাঃ

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নংঃ ৫৮৪৫
details icon

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর নুবুওয়্যাতপ্রাপ্তি ও ওয়াহীর সূচনা
৫৮৪৫। হযরত উবাদা ইবনে সামেত (রাঃ) বলেন, যখন নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর অহী নাযিল হইত, তখন তিনি কষ্ট অনুভব করিতেন বলিয়া মনে হইত এবং তাঁহার চেহারার বর্ণ পরিবর্তন হইয়া যাইত। অপর এক বর্ণনায় আছে—অহী নাযিল হওয়ার সময় তিনি মাথা ঝুঁকাইয়া ফেলিতেন এবং তাহার সঙ্গে উপস্থিত সাহাবীগণও (আদবের খাতিরে ) আপন আপন মাথা নত করিয়া নিতেন। অহী আসা শেষ হইলে তিনি স্বীয় মাথা উঠাইতেন।—মুসলিম

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নংঃ ৫৮৪৬
details icon

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর নুবুওয়্যাতপ্রাপ্তি ও ওয়াহীর সূচনা
৫৮৪৬। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, যখন (ভীতি প্রদর্শন সম্পৰ্কীয়) আয়াত (অর্থাৎ) "তুমি তোমার নিকটতম আত্মীয়দিগকে হুঁশিয়ার করিয়া দাও" নাযিল হইল, তখন নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাফা পাহাড়ে আরোহণ করিয়া – হে বনী ফিহর! হে বনী আদী! বলিয়া কুরাইশদের গোত্রসমূহকে ডাক দিলেন। অবশেষে তথায় সকলে সমবেত হইল। এমন কি যাহারা স্বয়ং উপস্থিত হইতে পারে নাই, তাহারা প্রতিনিধি পাঠাইয়া জানিতে চাহিল যে, ব্যাপার কি? বিশেষতঃ আবু লাহাব এবং কুরাইশের সর্বসাধারণ লোকেরাও আসিল। তখন নবী (ছাঃ) বলিলেন: বল তো! যদি আমি তোমাদিগকে বলি যে, (শত্রুপক্ষের) একদল অশ্বারোহী এই পাহাড়ের অপর প্রান্ত হইতে—অপর এক বর্ণনামতে একদল অশ্বারোহী উপত্যকার এক প্রাপ্ত হইতে বাহির হইয়া অতর্কিতে তোমাদের উপর আক্রমণ করিতে চায়, তোমরা কি আমার এই কথাটি বিশ্বাস করিবে? তাহারা সকলে বলিয়া উঠিল, হ্যাঁ, নিশ্চয়ই। কেননা, বিগত দিনে তোমাকে আমরা সত্যবাদীই পাইয়াছি। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ) বলিলেন, তোমাদের সম্মুখে আগত এক কঠিন আযাব সম্পর্কে আমি তোমাদেরকে সতর্ক করিতেছি। এতদূশ্রবণে আবু লাহাব বলিয়া উঠিল, তোমার সর্বনাশ হউক। এই জন্যই কি তুমি আমাদিগকে একত্রিত করিয়াছ? বর্ণনাকারী বলেন, তখনই আয়াত – (অর্থাৎ,) “আবু লাহাবের উভয় হাত ধ্বংস হউক, এবং সে ধ্বংস হইয়াছে," নাযিল হইল। — মোত্তাঃ

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নংঃ ৫৮৪৭
details icon

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর নুবুওয়্যাতপ্রাপ্তি ও ওয়াহীর সূচনা
৫৮৪৭। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কা'বা শরীফের নিকটে নামায পড়িতেছিলেন। এই সময় কুরাইশদের একদল লোক সেইখানে বসা ছিল। তখন তাহাদের মধ্য হইতে একজন বলিল, তোমাদের মধ্যে এমন কে আছে, যে অমুক গোত্রের উটের নাড়িভুঁড়ি আনিয়া কিছুক্ষণ অপেক্ষা করিবে, অতঃপর এই ব্যক্তি [রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ)-এর দিকে ইংগিত করিয়া বলিল,] যখন সজদায় যাইবে তখন উহা তাহার দুই কাধের মাঝখানে রাখিয়া দিবে। অতঃপর তাহাদের মধ্য হইতে সর্বাপেক্ষা বড় পাপিষ্ঠটি উঠিয়া গেল। যখন রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ) সজদায় গেলেন তখন সে উহা তাহার দুই কাধের মাঝখানে রাখিয়া দিল। এমতাবস্থায় নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সজদারত রহিলেন। সেই পাপিষ্ঠরা খুব হাসাহাসি করিতে লাগিল, এমন কি হাসিতে হাসিতে একজন আরেকজনের উপর ঢলিয়া পড়িল। এমন সময় জনৈক ব্যক্তি [হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ)] বিবি ফাতেমার নিকট গিয়া বলিলেন, তিনি দৌড়াইয়া আসিলেন। অথচ নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখনও পূর্ববৎ সজদায় রহিয়াছিলেন। ফাতেমা নাড়িভুঁড়িটি নবী (ছাঃ)-এর উপর হইতে সরাইয়া ফেলিলেন এবং ঐ সমস্ত পাপিষ্ঠ কাফেরদের লক্ষ্য করিয়া গাল-মন্দ করিলেন।

বর্ণনাকারী হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায শেষ করিয়া তিনবার বলিলেনঃ হে আল্লাহ্ তুমি কুরাইশদিগকে পাকড়াও কর' আর হুযুর (ছাঃ)-এর নিয়ম ছিল, তিনি যখন কোন বিষয়ে দোআ বা বদ-দোআ করিতেন কিংবা আল্লাহর কাছে চাহিতেন, তখন তিন তিনবার বাক্যগুলি উচ্চারণ করিতেন। অতঃপর তিনি (কাফেরদের এই সাত ব্যক্তির নাম ধরিয়া ) বলিলেন, হে আল্লাহ্! তুমি ১। আমর ইবনে হেশাম (আবু জাহল), ২। উতবা ইবনে রবিয়া, ৩। শাইবা ইবনে রবিয়া', ৪ ওলীদ ইবনে উতবা, ৫। উমাইয়্যা ইবনে খালফ, ৬। উকবা ইবনে আবু মু'আইত এবং ৭। উমারাহ ইবনুল ওলীদ——ইহাদিগকে পাকড়াও কর। বর্ণনাকারী হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ) যেই সকল লোকের নাম লইয়া বদ্-দো'আ করিয়াছিলেন, আমি বদরের যুদ্ধে উহাদের লাশ মাটিতে পড়িয়া থাকিতে দেখিয়াছি। অতঃপর উহাদিগকে টানিয়া বদরের একটি অনাবাদ কূপের মধ্যে নিক্ষেপ করা হইয়াছে। ইহার পর রাসুলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন এই কূপে যাহাদিগকে নিক্ষেপ করা হইল, তাহাদের উপর লা'নতের পর লা'নত রহিয়াছে। -মোত্তাঃ

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নংঃ ৫৮৪৮
details icon

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর নুবুওয়্যাতপ্রাপ্তি ও ওয়াহীর সূচনা
৫৮৪৮। হযরত আয়েশা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদা তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! ওহুদের দিন অপেক্ষা অধিক কষ্টের কোন দিন আপনার জীবনে আসিয়াছিল কি? বলিলেন: হ্যাঁ, তোমার কওম হইতে যেই আচরণ পাইয়াছি—তাহা উহা হইতেও অধিক কষ্টদায়ক ছিল। তাহাদের নিকট হইতে সর্বাধিক বেদনাদায়ক যাহা আমি পাইয়াছি তাহা হইল আকাবার দিনের আঘাত' যেইদিন আমি (তায়েফের বনী সাকীফ নেতা) ইবনে আবুদে ইয়ালীল ইবনে কোলালের নিকট (ইসলামের দাওয়াত লইয়া) স্বয়ং উপস্থিত হইয়াছিলাম। আমি যাহা লইয়া তাহার সম্মুখে উপস্থিত হইয়াছিলাম সে উহাতে কোন সাড়া দেয় নাই। তখন আমি অতি ভারাক্রান্ত অবস্থায় (নিরুদ্দেশ) সম্মুখের দিকে চলিতে লাগিলাম, 'কারনে সাআলিব' নামক স্থানে পৌঁছার পর আমি কিছুটা স্বস্তির হইলাম। তখন আমি উপরের দিকে মাথা তুলিয়া দেখিতে পাইলাম, একখণ্ড মেঘ আমাকে ছায়া করিয়া রাখিয়াছে। পুনরায় লক্ষ্য করিলে উহাতে হযরত জিবরাঈলকে দেখিলাম। তখন তিনি আমাকে সম্বোধন করিয়া বলিলেন, আপনি আপনার কওমের নিকট যে কথা বলিয়াছেন এবং উহার জওয়াবে তাহারা আপনাকে যাহা বলিয়াছে, এইসব আল্লাহ্ তা'আলা শুনিয়াছেন। এখন তিনি পাহাড়-পর্বত তদারককারী ফিরিশতাকে আপনার খেদমতে পাঠাইয়াছেন। সুতরাং ঐ সমস্ত লোকদের সম্পর্কে আপনার যাহা ইচ্ছা তাহাকে নির্দেশ দিতে পারেন। রাসুলুল্লাহ্ (ছাঃ) বলেন, অতঃপর 'মালাকুল জিবাল' আমার নাম লইয়া আমাকে সালাম করিলেন এবং বলিলেন, হে মুহাম্মাদ। আল্লাহ্ তা'আলা আপনার কওমের উক্তি সমূহ শুনিয়াছেন। আমি ‘মালাকুল জিবাল' (পাহাড়-পর্বত নিয়ন্ত্রণকারী ফিরিশতা), আপনার রব আমাকে আপনার নিকট পাঠাইয়াছেন। অতএব, আপনার যাহা ইচ্ছা আমাকে নির্দেশ করিতে পারেন, আপনি ইচ্ছা করিলে এই পাহাড় দুইটি তাহাদের উপর চাপাইয়া দিব। উত্তরে রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন, (আমি ইহা চাহি না:) বরং আশা করি আল্লাহ তা'আলা উহাদের ঔরসে এমন বংশধরের জন্ম দিবেন যাহারা এক আল্লাহর এবাদত করিবে, তাহার সহিত কাহাকেও শরীক করিবে না। – মোত্তাঃ

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নংঃ ৫৮৪৯
details icon

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর নুবুওয়্যাতপ্রাপ্তি ও ওয়াহীর সূচনা
৫৮৪৯। হযরত আনাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, ওহুদের যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সম্মুখের পাশের একটি দাঁত ভাংগিয়া গিয়াছিল এবং তাঁহার মাথায় জখম হইয়াছিল। এই সময় তিনি নিজের রক্ত মুছিতে মুছিতে বলিলেনঃ সেই জাতি কি ভাবে সফল কাম হইবে, যাহারা তাহাদের নবীর মাথায় জখম করিল এবং তাঁহার একটি দাত ভাংগিয়া ফেলিল। —মুসলিম

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নংঃ ৫৮৫০
details icon

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর নুবুওয়্যাতপ্রাপ্তি ও ওয়াহীর সূচনা
৫৮৫০। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁহার ভাঙ্গা দাতের প্রতি ইশারা করিয়া বলিলেন আল্লাহ্ তা'আলা সেই কওমের উপর ভীষণ রাগান্বিত, যাহারা আল্লাহর নবীর সাথে এই দুর্ব্যবহার করিয়াছে। তিনি আরও বলিয়াছেন ; সেই ব্যক্তিও আল্লাহর ভীষণ রোমানলে নিপতিত হইয়াছে, যাহাকে আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাস্তায় (জেহাদের ময়দানে) কতল করিয়াছেন। —মোত্তাঃ
[এই অধ্যায়ে দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ নাই]

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান