মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
৩০- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৫ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৫৭৫০

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ
৫৭৫০। হযরত সওবান (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন : আল্লাহ্ তা'আলা সমগ্র ভূপৃষ্ঠকে আমার জন্য সংকুচিত করিলেন, তখন আমি উহার পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত দেখিতে পাইলাম। অদূর ভবিষ্যতে আমার উম্মতের রাজত্ব সেই পর্যন্ত পৌঁছিয়া যাইবে, যেই পর্যন্ত যমীন আমার জন্য সংকুচিত করা হইয়াছিল। আর আমাকে দুইটি ধনভাণ্ডার দেওয়া হইয়াছে, একটি লাল এবং অপরটি সাদা (অর্থাৎ, কায়সার ও কিসরার ধন ভাণ্ডার) আর আমি আমার রবের কাছে আমার উম্মতের জন্য এই ফরিয়াদ করি যেন তাহা দিগকে ব্যাপক দুর্ভিক্ষে ধ্বংস না করা হয়। আর তাহাদের উপর যেন স্বজাতি ব্যতীত অন্য শত্রুকে এমনভাবে চাপাইয়া না দেওয়া হয় যে, তাহারা মুসলমানদের কেন্দ্রস্থলকে গ্রহণ করিয়া লয়। আমার রব বলিলেন: হে মুহাম্মাদ। আমি যখন কোন ব্যাপারে ফয়সালা করিয়া ফেলি, তখন উহা পরিবর্তন হয় না। আমি তোমাকে তোমার উম্মতের ব্যাপারে এই প্রতিশ্রুতি দিতেছি যে, আমি তাহাদিগকে ব্যাপক দুর্ভিক্ষের দ্বারা ধ্বংস করিব না এবং তাহাদের স্বজাতি ব্যতীত শত্রুকে তাহাদের উপর এমনভাবে চাপাইয়া দিব না, যাহাতে উহারা মুসলমানদের কেন্দ্রস্থল ধ্বংস করিতে পারে। এমন কি যদি দুনিয়ার সমস্ত কাফের বিশ্বের সকল প্রান্ত হইতেও একত্রিত হইয়া মুসলমানদের উপর আক্রমণ চালায়। অবশ্য তাহারা (মুসলমানরা) পরস্পরে লড়াই করিবে। একে অন্যকে ধ্বংস করিতে থাকিবে এবং কয়েদ ও বন্দী করিতে থাকিবে। —মুসলিম,

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৭৫১

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ
৫৭৫১। হযরত সা'দ (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনু মুআবিয়ার মসজিদের নিকট দিয়া যাইতেছিলেন। তখন উহাতে প্রবেশ করিয়া দুই রাকআত নামায পড়িলেন এবং আমরাও তাঁহার সাথে নামায আদায় করিলাম। নামায শেষে তিনি এক দীর্ঘ দো'আ করিলেন, অতঃপর আমাদের দিকে ফিরিয়া বলিলেন: আমি আমার রবের কাছে তিনটি বিষয়ে ফরিয়াদ করিয়াছিলাম। তিনি আমাকে দুইটি দিয়াছেন এবং একটি নিষেধ করিয়া ছেন। (১) আমি আমার রবের কাছে চাহিয়াছিলাম, ব্যাপক দুর্ভিক্ষ দ্বারা যেন আমার উম্মতকে ধ্বংস না করা হয়। আমার এই দো'আ তিনি কবুল করিয়াছেন। (২) আমি আমার রবের কাছে ইহাও চাহিয়াছিলাম যেন আমার উম্মতকে পানিতে ডুবাইয়া ধ্বংস করা না হয়। তিনি আমার এই দো'আও কবুল করিয়াছেন। এবং (৩) আমি তাঁহার কাছে চাহিয়াছিলাম যেন আমার উম্মতের পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধ-বিগ্রহ না হয়। কিন্তু তিনি ইহা আমাকে দান করেন নাই।—মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৭৫২

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ
৫৭৫২। হযরত আতা ইবনে ইয়াসার (রাঃ) বলেন, একদা আমি আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর ইবনুল আসের সহিত সাক্ষাৎ করিয়া তাঁহাকে বলিলাম, তওরাতে রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যেই গুণ বর্ণিত আছে, সেই সম্পর্কে আমাকে অবহিত করুন। তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, আল্লাহর কসম! কুরআনে বর্ণিত তাঁহার কিছু গুণাবলীসহ তওরাতে তাহার গুণাগুণ বর্ণনা করা হইয়াছে—"হে নবী, আমি তোমাকে সাক্ষ্যদাতা, সুসংবাদদাতা, সতর্ককারী হিসাবে এবং উম্মীদের রক্ষাকারী হিসাবে পাঠাইয়াছি।" তুমি আমার বান্দা ও রাসুল। আমি তোমার নাম দিয়াছি মুতাওয়াক্কিল বা ভরসাকারী, তুমি রূঢ় ও কঠোর হৃদয় এবং বাজারে ঝগড়া-ঝাটি ও হৈ হল্পাকারী নও। তিনি কোন মন্দ দ্বারা মন্দকে প্রতিহত করিবেন না; বরং তিনি ইহাদিগকে ক্ষমা করিয়া দিবেন এবং মাফ করিয়া দিবেন। আল্লাহ্ তাহাকে ততদিন পর্যন্ত দুনিয়া হইতে উঠাইয়া নিবেন না, যতদিন বক্রপথে চালিত জাতিকে তাহার দ্বারা সৎপথের উপর প্রতিষ্ঠিত করিবেন না। অর্থাৎ, যতক্ষণ লোকজন “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্”-এর উপর বিশ্বাসী না হয় এবং তাহার দ্বারা অন্ধ চক্ষু, বধির কর্ণ এবং বন্ধ অন্তর উন্মুক্ত না হইয়া যায়। বুখারী,

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৭৫৩

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ
৫৭৫৩। দারেমীও আতার সূত্রে ইবনে সালাম হইতে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। আর আবু হোরায়রার হাদীস জুমআ অধ্যায়ে উল্লিখিত হইয়াছে।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৭৫৪

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ
৫৭৫৪। হযরত খাববাব ইবনুল আরাত্ব (রাঃ) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদিগকে নামায পড়াইলেন এবং নামায খুব দীর্ঘায়িত করিলেন। সাহাবীগণ বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনি তো আজ এমনভাবে নামায পড়িয়াছেন যে, এইরূপ নামায আপনি আর কখনও পড়েন নাই। তিনি বলিলেনঃ হ্যাঁ, ঠিকই বলিয়াছ। কেননা, ইহা ছিল রহমতের আশায় আশান্বিত এবং আযাবের ভয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থার নামায। আমি এই নামাযের মধ্যেই আল্লাহর কাছে তিনটি জিনিস চাহিয়াছি। তিনি দুইটি আমাকে দিয়াছেন এবং একটি নিষেধ করিয়াছেন। (১) আমি চাহিয়াছিলাম যেন আমার উম্মতকে (ব্যাপক) দুর্ভিক্ষের দ্বারা ধ্বংস না করা হয়। তিনি আমাকে ইহা দান করিয়াছেন। (২) আমি চাহিয়াছিলাম যেন সমগ্র মুসলমানদের উপর অমুসলিমগিকে চাপাইয়া দেওয়া না হয়। ইহাও তিনি আমাকে দান করিয়াছেন। (৩) আর আমি ইহাও চাহিয়াছিলাম, যেন আমার উম্মতের কেহ অপরের উপর অত্যাচার না করে, কিন্তু ইহা তিনি আমাকে দান করেন নাই। —তিরমিযী ও নাসাঈ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান