মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
২৯- সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামত পরবর্তী বর্ণনা - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৮ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৫৭২৫

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সৃষ্টির সূচনা ও নবী-রাসূলদের আলোচনা
৫৭২৫। হযরত আবু রাযীন (রাঃ) বলেন, আমি আরয করিলাম ইয়া রাসূলাল্লাহ্! সৃষ্টিকুল সৃষ্টির পূর্বে আমাদের পরওয়ারদিগার কোথায় ছিলেন? তিনি বলিলেনঃ আমা’-এর মধ্যে ছিলেন। তাহার নীচেও খালি ছিল এবং উপরেও খালি ছিল। আর তিনি তাঁহার আরশকে পানির উপরেই সৃষ্টি করিয়াছেন। —তিরমিযী, ইমাম তিরমিযী বলেন, উর্ধ্বতন রাবীদের অন্যতম ইয়াযীদ ইবনে হারূন বলিয়াছেন, 'আমা' অর্থ—যাহার সহিত অন্য কোন বস্তু নাই।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৭২৬

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সৃষ্টির সূচনা ও নবী-রাসূলদের আলোচনা
৫৭২৬। হযরত আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব (রাঃ) বলিয়াছেন, একদা তিনি একদল লোকসহ মুহাছাব উপত্যকায় বসা ছিলেন এবং রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)ও তাহাদের মধ্যে উপবিষ্ট ছিলেন। এমন সময় একখণ্ড মেঘ তাহাদের উপর দিয়া অতিক্রম করিল। লোকেরা উহার প্রতি তাকাইল, তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেনঃ তোমরা ইহাকে কি নামে আখ্যায়িত কর? তাহারা বলিল, 'সাহাব'। হুযূর (ﷺ) বলিলেন; এবং 'মুযন'ও বল। লোকেরা বলিল, 'মুযন'ও বলা হয়। তিনি বলিলেন; ইহাকে “আনান’ও বল। লোকেরা বলিল, 'আনান'ও বলা হয়। অতঃপর হুযূর (ﷺ) বলিলেন, তোমরা কি জান, আসমান ও যমীনের মধ্যবর্তী দূরত্ব কত? লোকেরা বলিল, আমরা জানি না। তিনি বলিলেন; উভয়টির মাঝখানে একাত্তর, বাহাত্তর অথবা তেহাত্তর বৎসরের দূরত্ব। এবং সেই আসমান হইতে উহার পরের আসমানের দূরত্বও অনুরূপ। এইভাবে তিনি সাত আসমান পর্যন্ত গণনা করিলেন। তারপর বলিলেন; সপ্তম আসমানের উপর রহিয়াছে একটি সমুদ্র। উহার উপর ও নীচের পানির স্তরের মধ্যবর্তী দূরত্ব—যেমন দূরত্ব দুই আসমানের মাঝখানে রহিয়াছে। অতঃপর সেই সমুদ্রের উপরে আছে আটটি বিরাট আকারের পাঁঠা (অর্থাৎ, অনুরূপ আকৃতির ফিরিশতা) এবং তাহাদের পায়ের খুর ও কোমরের মাঝখানে ব্যবধান হইল দুই আসমানের মধ্যবর্তী দূরত্বের মত। অতঃপর উহাদের পিঠের উপর রহিয়াছে 'আরশ'। উহার নীচ ও উপরের মধ্যবর্তী ব্যবধান হইল দুই আসমানের মধ্যবর্তী ব্যবধানের মত। অতঃপর উহার উপরেই রহিয়াছেন আল্লাহ্ পাক সোবহানাহু তা'আলা। -তিরমিযী ও আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৭২৭

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সৃষ্টির সূচনা ও নবী-রাসূলদের আলোচনা
৫৭২৭। হযরত জুবাইর ইবনে মুতয়িম (রাঃ) বলেন, একদা একজন গ্রাম্য বেদুইন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট আসিয়া বলিল, লোকেরা অসহনীয় দুঃখে নিপতিত হইয়াছে। পরিবার-পরিজন ক্ষুধার্ত, মাল-সম্পদ ধ্বংসের উপক্রম এবং গবাদিপশুসমূহ মৃত্যুমুখে পতিত হইয়াছে। সুতরাং আল্লাহর কাছে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করুন। আমরা আপনাকে আল্লাহর নিকট উসীলা বানাইতেছি এবং আল্লাহকে আপনার নিকট শাফা'আতকারী হিসাবে সাব্যস্ত করিতেছি। তাহার কথা শুনিয়া নবী (ﷺ) বলিলেনঃ আল্লাহ্ তা'আলা অতি পবিত্র। আল্লাহ তা'আলা মহাপবিত্র। তিনি এই বাক্যটি বারবার উচ্চারণ করিতে থাকিলেন, এমন কি তাঁহার চেহারা মুবারকের বর্ণ পরিবর্তন হইতে দেখিয়া উপস্থিত সাহাবায়ে কেরামদের মুখমণ্ডলসমূহও বিবর্ণ হইয়া গেল। অতঃপর তিনি বলিলেন; আফসোস তোমার প্রতি! তুমি জানিয়া রাখ, আল্লাহ্ তা'আলাকে কাহারও নিকট সুপারিশকারী সাব্যস্ত করা যায় না। আল্লাহ্ তা'আলার শান ও মর্যাদা ইহা হইতে অতি মহান ও বিরাট। আক্ষেপ তোমার প্রতি! তুমি কি আল্লাহ্র যাত ও সত্তা সম্পর্কে অবগত আছ ? তাহার আরশ সমস্ত আকাশমণ্ডলীকে এইভাবে বেষ্টন করিয়া রাখিয়াছে। এই কথা বলিয়া তিনি স্বীয় অঙ্গুলী দ্বারা একটি গুম্বুজের ন্যায় গোলাকৃতি বস্তু দেখাইয়া বলিলেন; আল্লাহর আরশ সমস্ত আকাশমণ্ডলীকে অনুরূপভাবে বেষ্টন করিয়া রাখা সত্ত্বেও আল্লাহ্র বিরাটত্বের চাপে উহা এমনভাবে কড়মড় শব্দ করে, যেমন- কোন সওয়ারীর গদি কড়মড় শব্দ করিতে থাকে। —আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৭২৮

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সৃষ্টির সূচনা ও নবী-রাসূলদের আলোচনা
৫৭২৮। হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ্ (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ আমাকে এই অনুমতি দেওয়া হইয়াছে যে, আমি আল্লাহ্ তা'আলার আরশ বহনকারী ফিরিশতাদের মধ্য হইতে একজন ফিরিশতার অবস্থা প্রকাশ করিব। সেই ফেরেস্তার কানের লতি হইতে তাহার গর্দানের মধ্যবর্তী দূরত্ব সাত শত বৎসরের পথ । —আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৭২৯

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সৃষ্টির সূচনা ও নবী-রাসূলদের আলোচনা
৫৭২৯। হযরত যুরারাহ্ ইবনে আওফা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) একদা হযরত জিবরাঈলকে জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি কি তোমার পরওয়ারদিগারকে দেখিয়াছ? এই কথা শুনিয়া জিবরাঈল কাঁপিয়া উঠিলেন এবং বলিলেন, ইয়া মুহাম্মাদ ! আমার ও তাঁহার মাঝখানে সত্তরটি নূরের পর্দা রহিয়াছে। যদি আমি উহার কোন একটির নিকটবর্তী হই, তবে আমি পুড়িয়া যাইব। এইরূপ 'মাসাবীহ' কিতাবে বর্ণিত।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৭৩০

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সৃষ্টির সূচনা ও নবী-রাসূলদের আলোচনা
৫৭৩০। আর আবু নোআইম তাঁহার ‘হিলইয়া” গ্রন্থে হযরত আনাস (রাঃ)-এর সূত্রে এই হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে জিবরাঈলের কাঁপিয়া উঠার কথাটি সেই বর্ণনায় উল্লেখ নাই।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৭৩১

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সৃষ্টির সূচনা ও নবী-রাসূলদের আলোচনা
৫৭৩১। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ আল্লাহ্ তা'আলা যেইদিন হযরত ইসরাফীলকে সৃষ্টি করিয়াছেন, তিনি তখন হইতে নিজের দুই পায়ের উপর দাঁড়াইয়া রহিয়াছেন। চক্ষু তুলিয়াও দেখেন না। তাঁহার এবং তাঁহার রবের মাঝখানে সত্তরটি নূরের পর্দা রহিয়াছে। তিনি উহার যে কোন একটি পর্দার নিকটবর্তী হইলে তখনই উহা তাহাকে জ্বালাইয়া ফেলিবে। —তিরমিযী, এবং তিনি বলিয়াছেন, হাদীসটি সহীহ্ ।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৭৩২

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সৃষ্টির সূচনা ও নবী-রাসূলদের আলোচনা
৫৭৩২। হযরত জাবের (রাঃ) হইতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলিয়াছেনঃ আল্লাহ্ তা'আলা যখন আদম (আঃ) ও তাঁহার বংশধরকে সৃষ্টি করিলেন, তখন ফিরিশতাগণ বলিলেন, হে পরওয়ারদিগার! তুমি এমন এক মাখলুক সৃষ্টি করিয়াছ যাহারা খাওয়া-দাওয়া ও পানাহার করিবে, বিবাহ-শাদী করিবে এবং যানবাহনে সওয়ার হইবে। সুতরাং তাহাদিগকে দুনিয়া তথা পার্থিব সম্পদ দিয়া দাও এবং আমাদিগকে পরকাল প্রদান কর। আল্লাহ্ তা'আলা বলিলেন; আমি যাহাকে নিজ হাতে সৃষ্টি করিয়াছি এবং তাহার মধ্যে আমার রূহ ফুঁকিয়াছি, তাহাকে ঐ মাখলুকের সমান করিব না যাহাকে كُنْ (হইয়া যাও) শব্দ দ্বারা সৃষ্টি করিয়াছি। —বায়হাকী শোআবুল ঈমানে

তাহকীক:
তাহকীক চলমান