মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
২৯- সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামত পরবর্তী বর্ণনা - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৫ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৫৬৬১

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ তাআলার দর্শনলাভ
৫৬৬১। হযরত শা'বী (রহঃ) বলেন, হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ)-এর সহিত আরাফাতের মাঠে হযরত কা'বে আবার (রাঃ)-এর সাক্ষাৎ হইলে তিনি তাহাকে এক ব্যাপারে (অর্থাৎ, আল্লাহ্ পাকের দর্শন সম্পর্কে) জিজ্ঞাসা করিলেন। উহা শ্রবণে হযরত কা'ব (রাঃ) এমন জোরে আল্লাহু আকবার ধ্বনি দিলেন যে উহা পাহাড় পর্যন্ত প্রতিধ্বনিত হইয়া উঠিল। তখন হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলিলেন, আমরা হাশেমের বংশধর। (অর্থাৎ, যথার্থ জ্ঞানের অধিকারী, সুতরাং অবাস্তব ও অযৌক্তিক কথা আমরা বলি না।) অতঃপর হযরত কা'ব (রাঃ) বলিলেন, আল্লাহ্ তা'আলা তাঁহার দর্শন ও বচনকে হযরত মুহাম্মাদ (ﷺ) ও হযরত মুসা (আঃ)-এর মধ্যে বিভক্ত করিয়াছেন। অতএব, হযরত মুসা (আঃ) আল্লাহর সহিত দুইবার কথাবার্তা বলিয়াছেন এবং হযরত মুহাম্মাদ (ﷺ) আল্লাহকে দুইবার দেখিয়াছেন।
হযরত মাসরূক (রহঃ) বলেন, আমি হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর খেদমতে উপস্থিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, মুহাম্মাদ (ﷺ) তাঁহার পরওয়ারদিগারকে দেখিয়াছেন কি? জবাবে আয়েশা (রাঃ) বলিলেন, হে মাসরূক! তুমি আমাকে এমন এক কথা জিজ্ঞাসা করিয়াছ, যাহা শ্রবণে আমার গায়ের পশম খাড়া হইয়া গিয়াছে। মাসরূক বলেন, আমি বলিলাম, আপনি আমাকে অবকাশ দিন। অতঃপর আমি এই আয়াতটি পাঠ করিলাম— لقد رأى من آيَات ربّه الْكُبْرَى [অর্থাৎ, মুহাম্মাদ (ﷺ) তাঁহার পরওয়ারদিগারের বিরাট বিরাট নিদর্শনসমূহ দেখিয়াছেন।] তখন হযরত আয়েশা (রাঃ) বলিলেন, এই আয়াত তোমাকে কোথায় নিয়া পৌঁছাইয়াছে ? (অর্থাৎ, ইহার অর্থ তুমি যাহা বুঝিয়াছ তাহা নহে।) বরং ইহা দ্বারা জিবরাঈলকে উদ্দেশ্য করা হইয়াছে। [অতঃপর হযরত আয়েশা (রাঃ) মাসরূককে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন,] যে ব্যক্তি তোমাকে বলে, মুহাম্মাদ (ﷺ) তাঁহার পরওয়ারদিগারকে দেখিয়াছেন অথবা তাঁহাকে যাহাকিছু নির্দেশ করা হইয়াছে, উহা হইতে তিনি কিছু গোপন করিয়াছেন অথবা মুহাম্মাদ (ﷺ) সেই পাঁচটি বিষয় অবগত ছিলেন, যেইগুলি এই আয়াতে বর্ণিত হইয়াছে— إِنَّ اللَّهَ عِنْدَهُ عِلْمُ السَّاعَةِ وَيُنَزِّلُ الْغَيْثَ সে ব্যক্তি মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর উপর জঘন্য মিথ্যা আরোপ করিল। (প্রকৃত কথা হইল, না তিনি আল্লাহকে দেখিয়াছেন, না তিনি আল্লাহর কোন বিধান গোপন করিয়াছেন, আর না তিনি ঐ পাঁচটি ব্যাপারে অবগত ছিলেন, যেগুলির জ্ঞান আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত ও তাহার একক বৈশিষ্ট্য) হ্যাঁ; বরং তিনি হযরত জিবরাঈলকে দেখিয়াছেন। অবশ্য জিবরাঈলকেও তিনি তাঁহার আসল রূপে মাত্র দুইবার দেখিয়াছেন। একবার সিদরাতুল মুনতাহার নিকটে, আরেকবার আজইয়াদে। (আজ্ইয়াদ মক্কা নগরীতে একটি বস্তির নাম। باب الا جياد নামে হেরেম শরীফের একটি দ্বারও আছে।) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যখন তাঁহাকে আসল আকৃতিতে দেখিয়াছেন তখন তাঁহার ছয় শত ডানা ছিল, এবং উহা গোটা আকাশ জুড়িয়া ছিল। —তিরমিযী
তবে বুখারী ও মুসলিমের রেওয়ায়তে কিছু বাক্য বৃদ্ধি ও পার্থক্যসহ বর্ণিত আছে। যথা— মাসরূক বলেন, আমি হযরত আয়েশাকে প্রশ্ন করিলাম, ব্যাপার যদি তাহাই হয়, যাহা আপনি বলিয়াছেন, তাহা হইলে আল্লাহর বাণী ثُمَّ دَنَا فَتَدَلَّى فَكَانَ قَابَ قَوْسَيْنِ أَوْ أَدْنَى (অর্থাৎ, এমন কি তিনি দুই ধনুকের ব্যবধানে ছিলেন কিংবা আরও নিকটবর্তী হইয়াছিলেন।) ইহার অর্থ কি ? উত্তরে হযরত আয়েশা (রাঃ) বলিলেন, ইহার দ্বারা জিবরাঈল (আঃ)-কে বুঝান হইয়াছে। তিনি সাধারণতঃ মানুষের আকৃতিতে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর কাছে আসিতেন, কিন্তু এইবার তিনি তাঁহার আসল রূপে হুযুরের সম্মুখে আসিয়াছিলেন, ফলে উহাতে গোটা আকাশ জুড়িয়া গিয়াছিল।
হযরত মাসরূক (রহঃ) বলেন, আমি হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর খেদমতে উপস্থিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, মুহাম্মাদ (ﷺ) তাঁহার পরওয়ারদিগারকে দেখিয়াছেন কি? জবাবে আয়েশা (রাঃ) বলিলেন, হে মাসরূক! তুমি আমাকে এমন এক কথা জিজ্ঞাসা করিয়াছ, যাহা শ্রবণে আমার গায়ের পশম খাড়া হইয়া গিয়াছে। মাসরূক বলেন, আমি বলিলাম, আপনি আমাকে অবকাশ দিন। অতঃপর আমি এই আয়াতটি পাঠ করিলাম— لقد رأى من آيَات ربّه الْكُبْرَى [অর্থাৎ, মুহাম্মাদ (ﷺ) তাঁহার পরওয়ারদিগারের বিরাট বিরাট নিদর্শনসমূহ দেখিয়াছেন।] তখন হযরত আয়েশা (রাঃ) বলিলেন, এই আয়াত তোমাকে কোথায় নিয়া পৌঁছাইয়াছে ? (অর্থাৎ, ইহার অর্থ তুমি যাহা বুঝিয়াছ তাহা নহে।) বরং ইহা দ্বারা জিবরাঈলকে উদ্দেশ্য করা হইয়াছে। [অতঃপর হযরত আয়েশা (রাঃ) মাসরূককে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন,] যে ব্যক্তি তোমাকে বলে, মুহাম্মাদ (ﷺ) তাঁহার পরওয়ারদিগারকে দেখিয়াছেন অথবা তাঁহাকে যাহাকিছু নির্দেশ করা হইয়াছে, উহা হইতে তিনি কিছু গোপন করিয়াছেন অথবা মুহাম্মাদ (ﷺ) সেই পাঁচটি বিষয় অবগত ছিলেন, যেইগুলি এই আয়াতে বর্ণিত হইয়াছে— إِنَّ اللَّهَ عِنْدَهُ عِلْمُ السَّاعَةِ وَيُنَزِّلُ الْغَيْثَ সে ব্যক্তি মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর উপর জঘন্য মিথ্যা আরোপ করিল। (প্রকৃত কথা হইল, না তিনি আল্লাহকে দেখিয়াছেন, না তিনি আল্লাহর কোন বিধান গোপন করিয়াছেন, আর না তিনি ঐ পাঁচটি ব্যাপারে অবগত ছিলেন, যেগুলির জ্ঞান আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত ও তাহার একক বৈশিষ্ট্য) হ্যাঁ; বরং তিনি হযরত জিবরাঈলকে দেখিয়াছেন। অবশ্য জিবরাঈলকেও তিনি তাঁহার আসল রূপে মাত্র দুইবার দেখিয়াছেন। একবার সিদরাতুল মুনতাহার নিকটে, আরেকবার আজইয়াদে। (আজ্ইয়াদ মক্কা নগরীতে একটি বস্তির নাম। باب الا جياد নামে হেরেম শরীফের একটি দ্বারও আছে।) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যখন তাঁহাকে আসল আকৃতিতে দেখিয়াছেন তখন তাঁহার ছয় শত ডানা ছিল, এবং উহা গোটা আকাশ জুড়িয়া ছিল। —তিরমিযী
তবে বুখারী ও মুসলিমের রেওয়ায়তে কিছু বাক্য বৃদ্ধি ও পার্থক্যসহ বর্ণিত আছে। যথা— মাসরূক বলেন, আমি হযরত আয়েশাকে প্রশ্ন করিলাম, ব্যাপার যদি তাহাই হয়, যাহা আপনি বলিয়াছেন, তাহা হইলে আল্লাহর বাণী ثُمَّ دَنَا فَتَدَلَّى فَكَانَ قَابَ قَوْسَيْنِ أَوْ أَدْنَى (অর্থাৎ, এমন কি তিনি দুই ধনুকের ব্যবধানে ছিলেন কিংবা আরও নিকটবর্তী হইয়াছিলেন।) ইহার অর্থ কি ? উত্তরে হযরত আয়েশা (রাঃ) বলিলেন, ইহার দ্বারা জিবরাঈল (আঃ)-কে বুঝান হইয়াছে। তিনি সাধারণতঃ মানুষের আকৃতিতে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর কাছে আসিতেন, কিন্তু এইবার তিনি তাঁহার আসল রূপে হুযুরের সম্মুখে আসিয়াছিলেন, ফলে উহাতে গোটা আকাশ জুড়িয়া গিয়াছিল।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৬৬২

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ তাআলার দর্শনলাভ
৫৬৬২। হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) আল্লাহর বাণী فَكَانَ قَابَ قَوْسَيْنِ أَوْ أَدْنَى ও مَا كَذَبَ الْفُؤَادُ مَا رَأَى এবং لَقَدۡ رَاٰی مِنۡ اٰیٰتِ رَبِّهِ الۡکُبۡرٰی এই সকল আয়াতের ব্যাখ্যায় বলিয়াছেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) হযরত জিবরাঈলকে দেখিয়াছেন যে, তাঁহার ছয় শত ডানা আছে। —মোত্তাঃ। আর তিরমিযীর বর্ণনায় আছে—ইবনে মাসউদ (রাঃ) مَا كَذَبَ الْفُؤَادُ مَا رَأَى -এর সম্পর্কে বলিয়াছেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) জিবরাঈলকে এক জোড়া সবুজ পোশাক পরিহিত অবস্থায় দেখিয়াছেন, তিনি আসমান ও যমীনের মধ্যবর্তী শূন্যতাকে জুড়িয়া রাখিয়াছেন। আর বুখারীর এক বর্ণনায় আছে — لَقَدۡ رَاٰی مِنۡ اٰیٰتِ رَبِّهِ الۡکُبۡرٰی এর ব্যাখ্যায় ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলিয়াছেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) সবুজ বর্ণের রফরফ (পরিহিত জিবরাঈলকে) দেখিয়াছেন, যাহা গোটা আকাশ জুড়িয়া রাখিয়াছে।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৬৬৩

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ তাআলার দর্শনলাভ
৫৬৬৩। হযরত ইমাম মালেক ইবনে আনাস (রাঃ)-কে আল্লাহর বাণী إِلى ربِّها ناظرة সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয় এবং বলা হয়, এক সম্প্রদায় (মু'তাযেলাগণ) বলে যে, ইহার অর্থ ‘তাহারা নিজ সওয়াবের দিকে তাকাইয়া থাকিবে।' তখন ইমাম মালেক বলেন, তাহারা মিথ্যা বলিয়াছে। তাহারা এই আয়াতের কি ব্যাখ্যা করিবে ? كَلَّا إِنَّهُمْ عَنْ رَبِّهِمْ يَوْمَئِذٍ لمحجوبونَ (অর্থাৎ, কাফেরদিগকে তাহাদের পরওয়ারদিগারের দর্শন হইতে আড়ালে রাখা হইবে।) সুতরাং ইমাম মালেক (রহঃ) বলেন, আয়াতটির ভাষ্য হইতে সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, ঈমানদার লোকেরা কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তা'আলাকে চাক্ষুষ দেখিতে পাইবে। তিনি আরও বলেন, কিয়ামতের দিন যদি ঈমানদারগণ তাহাদের পরওয়ারদিগারকে দেখিতে না পাইত, তাহা হইলে —كَلَّا إِنَّهُمْ عَنْ رَبِّهِمْ يَوْمَئِذٍ لمحجوبون এই বাক্য দ্বারা আল্লাহ্ তা'আলা কাফেরদিগকে তাঁহার দর্শন না পাওয়াতে তিরস্কার করিতেন না। —শরহে সুন্নাহ্

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৬৬৪

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ তাআলার দর্শনলাভ
৫৬৬৪। হযরত জাবের (রাঃ) বলেন, নবী (ﷺ) বলিয়াছেনঃ বেহেশ্ববাসীগণ যখন তাহাদের আনন্দ উপভোগে লিপ্ত থাকিবে, এমন সময় হঠাৎ তাহাদের উপর একটি আলো চমকিত হইবে, তখন তাহারা মাথা তুলিয়া সেই দিকে তাকাইয়া দেখিবে, রাব্বুল আলামীন উপর হইতে তাহাদের প্রতি লক্ষ্য করিয়া আছেন। সে সময় আল্লাহ্ বলিবেনঃ হে জান্নাতবাসীগণ! আসসালামু আলাইকুম (তোমরা আরামে ও নিরাপদে থাক।) আল্লাহর কালামে سَلَامٌ قَوْلًا مِنْ رَبٍّ رحيمٍ দ্বারা এই সময়ের ও অবস্থার দিকে ইংগিত করা হইয়াছে। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেন; আল্লাহ্ জান্নাতীদের দিকে এবং জান্নাতীগণ আল্লাহর দিকে তাকাইবে, ফলে তাহারা আল্লাহর দর্শন হইতে চক্ষু ফিরাইয়া অন্য কোন নেয়ামতের প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করিবে না এবং আল্লাহ্ আড়াল হইয়া যাওয়া পর্যন্ত এক দৃষ্টিতে শুধু সেই দিকে চাহিয়া থাকিবে, অবশেষে কেবলমাত্র তাঁহার নূরই বাকী থাকিবে। — ইবনে মাজাহ্

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৬৬৫

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - জাহান্নাম ও জাহান্নামীদের বর্ণনা
৫৬৬৫। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন তোমাদের (ব্যবহৃত) আগুনের উত্তাপ জাহান্নামের আগুনের (উত্তাপের) সত্তর ভাগের একভাগ মাত্র। বলা হইল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (জাহান্নামীদের শাস্তিদানের জন্য) দুনিয়ার আগুনই তো যথেষ্ট ছিল। তিনি বলিলেন; দুনিয়ার আগুনের উপর উহার সমপরিমাণ তাপসম্পন্ন জাহান্নামের আগুন আরও উনসত্তর ভাগ বাড়াইয়া দেওয়া হইয়াছে। —মোত্তাঃ, উল্লিখিত হাদীসটির শব্দগুলি বুখারীর। আর মুসলিমের রেওয়ায়তের শব্দ হইল—نَارُكُمُ الَّتِي يُوقِدُ ابْنُ آدَمَ এবং উহার বর্ণনায় عَلَيْهِنَّ كُلهنَّ এই শব্দ দুইটির পরিবর্তে—عَلَيْهَا و كلهَا

তাহকীক:
তাহকীক চলমান