মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
২৯- সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামত পরবর্তী বর্ণনা - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৫ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৫৬০৭

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - হাওযে কাওসার ও শাফাআতের বর্ণনা
৫৬০৭। হযরত ইবনে উমর (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ তোমাদের সম্মুখে (কিয়ামতের দিন) আমার হাউয রহিয়াছে—যাহার দুই কিনারার দূরত্ব ‘জারবা ও আযরুহ' স্থানদ্বয়ের মধ্যবর্তী দূরত্বের ন্যায়। কোন রাবী বলিয়াছেন, এই দুইটি সিরিয়ার দুই বস্তির নাম। ইহার মধ্যবর্তী দূরত্ব তিন রাত্রের পথ। অপর এক রেওয়ায়তে আছে—উহার পেয়ালার সংখ্যা আকাশের নক্ষত্রের ন্যায় (অগণিত)। যে উক্ত হাউযে আসিয়া একবার উহা হইতে পান করিবে, সে পরে আর কখনও পিপাসার্ত হইবে না। —মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৬০৮
আন্তর্জতিক নংঃ ৫৬০৯

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - হাওযে কাওসার ও শাফাআতের বর্ণনা
৫৬০৮। হযরত হোযাইফা ও আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ আল্লাহ্ তা'আলা কিয়ামতের দিন সমস্ত মানুষদিগকে একত্রিত করিবেন। অতঃপর মু'মেনগণ এক স্থানে দাঁড়াইবেন, অবশেষে বেহেশতকে তাহাদের নিকটবর্তী করা হইবে। ইহার পর তাহারা হযরত আদম (আঃ)-এর নিকট আসিয়া বলিবে, হে আমাদের পিতা! আমাদের জন্য বেহেশত খুলিয়া দিন। তিনি বলিবেন, তোমাদের পিতার অপরাধই তো তোমাদিগকে জান্নাত হইতে বহিষ্কার করিয়াছে। সুতরাং আমি এই কাজের উপযুক্ত নহি। তোমরা আমার পুত্র আল্লাহর বন্ধু ইবরাহীম (আঃ)-এর নিকট যাও। তিনি বলেন তখন হযরত ইবরাহীম (আঃ) বলিবেন, এই কাজের উপযুক্ত আমি নহি। আমি আল্লাহর বন্ধু ছিলাম বটে, কিন্তু পশ্চাতে পশ্চাতে (কখনও আল্লাহর সম্মুখীন হওয়ার সুযোগ হয় নাই)। বরং তোমরা মুসার শরণাপন্ন হও। যাহার সাথে আল্লাহ্ সরাসরি কথা-বার্তা বলিয়াছেন। সুতরাং তাহারা হযরত মুসা (আঃ)-এর নিকট আসিবে। তিনি বলিবেন, আমি ইহার যোগ্য নই। তোমরা ঈসা (আঃ)-এর কাছে যাও। তিনি আল্লাহর কালেমা এবং তাঁহার রূহ। তখন হযরত ঈসা (আঃ) বলিবেন, আমি ইহার যোগ্য নহি। অবশেষে তাহারা হযরত মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর নিকট আসিবে। তখন তিনি (আরশের ডান পার্শ্বে) দাঁড়াইবেন (এবং শাফা'আতের জন্য অনুমতি চাহিবেন) তাঁহাকে অনুমতি দেওয়া হইবে। অতঃপর আমানত ও রেহেমকে (আত্মীয়তার সম্পর্ককে) পাঠান হইবে, তখন উভয়টি (ইনসাফের প্রার্থী হইয়া) পুলসিরাতের ডানে ও বামে দুই পার্শ্বে দাড়াইয়া যাইবে। এইবার লোকেরা উহার উপর দিয়া অতিক্রম করিতে থাকিবে। তোমাদের প্রথম দল বিদ্যুতের ন্যায় চলিয়া যাইবে। আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমার পিতা-মাতা আপনার প্রতি কোরবান, বিদ্যুতের ন্যায় চলিয়া যাইবে ইহার অর্থ কি? তিনি বলিলেন; তোমরা কি দেখিতে পাও না, বিদ্যুতের রশ্মি কিরূপে তড়িৎ গতিতে চলিয়া যায় এবং চোখের পলকেই আবার ফিরিয়া আসে? তারপরের দল বাতাসের ন্যায় অতিক্রম করিবে। তারপরের দল উড়ন্ত পাখির ন্যায় এবং পুরুষদের দৌড়ের গতিতে যাইবে। আমল অনুপাতে সকলকেই তাহাদের আমল (সম্মুখের দিকে) লইয়া যাইবে। আর তোমাদের নবী পুলসিরাতের উপর দাঁড়াইয়া বলিতে থাকিবেন, “ইয়া রাব্বে! সাল্লেম, সাল্লেম” (অর্থাৎ, হে আমার রব। আমার উম্মতকে নিরাপদে রাখ, নিরাপদে রাখ।) পরিশেষে কিছুসংখ্যক বান্দার আমল এতই স্বল্প হইবে যে, তাহাদের পুলসিরাত অতিক্রম করিবার সামর্থ্য থাকিবে না। এমন কি সেই সময় এক ব্যক্তি হামাগুড়ি দিতে দিতে অতিক্রম করিবে। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেন; পুলসিরাতের উভয় কিনারায় আংটা ঝুলন্ত থাকিবে। যাহাকে পাকড়াও করার নির্দেশ থাকিবে উক্ত আংটা তাহাকে পাকড়াও করিবে। ফলে কেহ কহ ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় নাজাত পাইবে আবার কোন কোন ব্যক্তিকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হইবে। কসম ঐ সত্তার যাঁহার হাতে আবু হোরায়রার প্রাণ! জাহান্নামের গভীরতা সত্তর বৎসর দূরত্বের সমান। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৬০৯

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - হাওযে কাওসার ও শাফাআতের বর্ণনা
৫৬০৮-[৪৩] ও ৫৬০৯-[৪৪] হুযায়ফাহ্ ও আবু হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তাঁরা বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন সকল মানুষকে একত্রিত করবেন। অতঃপর মু’মিনগণ এক স্থানে দাঁড়াবেন, সবশেষে জান্নাতকে তাদের কাছাকাছি করা হবে। এরপর তারা আদম ’আলায়হিস-এর নিকট এসে বলবে, হে আমাদের পিতা! আমাদের জন্য জান্নাত খুলে দিন। তিনি বলবেন, তোমাদের পিতার অপরাধই তো তোমাদেরকে জান্নাত থেকে বের করে দিয়েছে। অতএব আমি এ কাজের উপযুক্ত নই। তোমরা আমার পুত্র আল্লাহর বন্ধু ইবরাহীম আলায়হিস সালাম-এর কাছে যাও। তিনি বলেন, তখন ইবরাহীম আলায়হিস সালাম বলবেন, এ কাজের যোগ্য আমি নই। আমি আল্লাহর বন্ধু ছিলাম বটে, কিন্তু পশ্চাতে পশ্চাতে (কখনো আল্লাহর সম্মুখীন হওয়ার সুযোগ হয়নি,) বরং তোমরা মুসা আলায়হিস সালাম -এর দারস্থ হও। যার সাথে আল্লাহ তাআলা সরাসরি কথা বলেছেন। অতএব তারা মুসা আলায়হিস সালাম -এর কাছে আসবে। তিনি বলবেন, আমি এর যোগ্য নই। তোমরা ’ঈসা আলায়হিস সালাম -এর কাছে যাও। তিনি আল্লাহর কালিমাহ এবং তাঁর রূহ। তখন ’ঈসা আলায়হিস সালাম বলবেন, আমি যোগ্য নই। সবশেষে তারা মুহাম্মাদ (সা.)-এর নিকট আসবে।
তখন তিনি (’আরশের ডানপার্শ্বে) দাঁড়াবেন। (শাফা’আতের জন্য) তাঁকে অনুমতি দেয়া হবে। অতঃপর আমানত ও রেহেমকে (আত্মীয়তার সম্পর্কে) পাঠানো হবে, তখন উভয়টি (ইনসাফের প্রার্থী হয়ে) পুলসিরাতের ডানে ও বামে দুই পার্শে দাড়িয়ে যাবে। তার উপর দিয়ে এবার লোকেরা অতিক্রম করতে থাকবে। তোমাদের প্রথম দল বিদ্যুতের মতো চলে যাবে। আবু হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতামাতা আপনার প্রতি কুরবান, বিদ্যুতের মতো চলে যাবে’ এর অর্থ কী? তিনি বলবেন, তোমরা কি দেখতে পাও না, বিদ্যুতের রশ্মি কিরূপে দ্রুত গতিতে চলে যায় এবং চোখের পলকেই পুনরায় ফিরে আসে? তারপরের দল বাতাসের মতো এবং পুরুষদের দৌড়ের মতো আমল তাদেরকে (সম্মুখের দিকে) নিয়ে যাবে। আর তোমাদের নবী পুলসিরাতের উপর দাঁড়িয়ে বলতে থাকবেন, ’ইয়া- রবি! সাল্লিম সাল্লিম (অর্থাৎ হে আমার রব। নিরাপদে রাখ, নিরাপদে রাখ)
পরিশেষে কিছুসংখ্যক বান্দার ’আমল এতই কম হবে যে, তাদের পুলসিরাত অতিক্রম করার সাধ্য থাকবে না। এমনকি সে সময় এক লোক হামাগুড়ি দিতে দিতে অতিক্রম করবে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, পুলসিরাতের উভয় কিনারায় আংটা ঝুলন্ত থাকবে। যাকে পাকড়াও করার নির্দেশ থাকবে উক্ত আংটা তাকে পাকড়াও করবে। ফলে কেউ কেউ ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় মুক্তি পাবে আবার কোন কোন ব্যক্তিকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। শপথ ঐ সত্তার! যার হাতে আবু হুরায়রার প্রাণ! জাহান্নামের গভীরতা সত্তর বছর দূরত্বের সমান। (মুসলিম)
তখন তিনি (’আরশের ডানপার্শ্বে) দাঁড়াবেন। (শাফা’আতের জন্য) তাঁকে অনুমতি দেয়া হবে। অতঃপর আমানত ও রেহেমকে (আত্মীয়তার সম্পর্কে) পাঠানো হবে, তখন উভয়টি (ইনসাফের প্রার্থী হয়ে) পুলসিরাতের ডানে ও বামে দুই পার্শে দাড়িয়ে যাবে। তার উপর দিয়ে এবার লোকেরা অতিক্রম করতে থাকবে। তোমাদের প্রথম দল বিদ্যুতের মতো চলে যাবে। আবু হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতামাতা আপনার প্রতি কুরবান, বিদ্যুতের মতো চলে যাবে’ এর অর্থ কী? তিনি বলবেন, তোমরা কি দেখতে পাও না, বিদ্যুতের রশ্মি কিরূপে দ্রুত গতিতে চলে যায় এবং চোখের পলকেই পুনরায় ফিরে আসে? তারপরের দল বাতাসের মতো এবং পুরুষদের দৌড়ের মতো আমল তাদেরকে (সম্মুখের দিকে) নিয়ে যাবে। আর তোমাদের নবী পুলসিরাতের উপর দাঁড়িয়ে বলতে থাকবেন, ’ইয়া- রবি! সাল্লিম সাল্লিম (অর্থাৎ হে আমার রব। নিরাপদে রাখ, নিরাপদে রাখ)
পরিশেষে কিছুসংখ্যক বান্দার ’আমল এতই কম হবে যে, তাদের পুলসিরাত অতিক্রম করার সাধ্য থাকবে না। এমনকি সে সময় এক লোক হামাগুড়ি দিতে দিতে অতিক্রম করবে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, পুলসিরাতের উভয় কিনারায় আংটা ঝুলন্ত থাকবে। যাকে পাকড়াও করার নির্দেশ থাকবে উক্ত আংটা তাকে পাকড়াও করবে। ফলে কেউ কেউ ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় মুক্তি পাবে আবার কোন কোন ব্যক্তিকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। শপথ ঐ সত্তার! যার হাতে আবু হুরায়রার প্রাণ! জাহান্নামের গভীরতা সত্তর বছর দূরত্বের সমান। (মুসলিম)

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৬১০

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - হাওযে কাওসার ও শাফাআতের বর্ণনা
৫৬১০। হযরত জাবের (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ শাফা'আতের দ্বারা এমন কিছুসংখ্যক লোক জাহান্নাম হইতে বাহির হইবে, উহারা ‘সাআরীরের' ন্যায়। আমরা জিজ্ঞাসা করিলাম, সা'আরীর কি? তিনি বলিলেন; উহা হইল ক্ষীরা। —মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৬১১

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - হাওযে কাওসার ও শাফাআতের বর্ণনা
৫৬১১। হযরত ওসমান ইবনে আফ্ফান (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ কিয়ামতের দিন তিন শ্রেণীর লোক সুপারিশ করিবেন—নবীগণ, আলেমগণ ও শহীদগণ। —ইবনে মাজাহ্

তাহকীক:
তাহকীক চলমান