মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

مشكاة المصابيح للتبريزي

২৯- সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামত পরবর্তী বর্ণনা - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন

হাদীস নংঃ ৫৫৫০
details icon

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - হিসাব-নিকাশ, প্রতিশোধ গ্রহণ ও মীযানের বর্ণনা
৫৫৫০। হযরত আদী ইবনে হাতেম (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন তোমাদের মধ্যে এমন কেহ নাই যাহার সহিত তাহার রব কথাবার্তা বলিবেন না। তাহার ও তাহার রবের মধ্যখানে কোন দোভাষী এবং এমন কোন পর্দা থাকিবে না, যাহা তাহাকে আড়াল করিয়া রাখিবে। সে তাহার ডানে তাকাইবে, তখন পূর্বে প্রেরিত আমল ছাড়া আর কিছুই দেখিতে পাইবে না। আবার বামে তাকাইবে, তখনও পূর্ব প্রেরিত ছাড়া আর কিছুই দেখিতে পাইবে না। আর সম্মুখের দিকে তাকাইলে দোযখ ছাড়া আর কিছুই দেখিতে পাইবে না, যাহা একেবারে চেহারার সম্মুখে অবস্থিত। সুতরাং খেজুরের বিনিময়ে হইলেও দোযখ হইতে বাচিতে চেষ্টা কর। —মোত্তাঃ

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নংঃ ৫৫৫১
details icon

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - হিসাব-নিকাশ, প্রতিশোধ গ্রহণ ও মীযানের বর্ণনা
৫৫৫১। হযরত ইবনে উমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: (কিয়ামতের দিন) আল্লাহ্ তাআলা মু'মেনদিগকে নিজের নিকটবর্তী করিবেন এবং আল্লাহ্ তা'আলা নিজ বাজু তাহার উপরে রাখিয়া তাহাকে ঢাকিয়া লইবেন। অতঃপর আল্লাহ্ সেই বান্দাকে বলিবেনঃ আচ্ছা বল দেখি। এই গোনাহটি তুমি করিয়াছ কি ? এই গোনাহটি সম্পর্কে তুমি অবগত আছ কি? সে বলিবে হ্যাঁ, হে আমার রব। আমি অবগত আছি। শেষ নাগাদ এক একটি করিয়া তাহার কৃত সমস্ত গোনাহের স্বীকৃতি আদায় করিবেন। এদিকে সে বান্দা মনে মনে এই ধারণা করিবে যে, সে এই সমস্ত অপরাধের কারণে নির্ঘাত ধ্বংস হইবে। তখন আল্লাহ্ তা'আলা বলিবেন দুনিয়াতে আমি তোমার এই সমস্ত অপরাধ ঢাকিয়া রাখিয়াছিলাম। আর আজ আমি উহা মাফ করিয়া তোমাকে নাজাত দিব। অতঃপর তাহাকে নেকীর আমলনামা দেওয়া হইবে। আর কাফের ও মুনাফেকদিগকে সমস্ত সৃষ্টিকুলের সম্মুখে আনয়ন করা হইবে এবং উচ্চ স্বরে এই ঘোষণা দেওয়া হইবে ইহারা তাহারা, যাহারা আপন পরওয়ারদিগারের বিরুদ্ধে মিথ্যা আরোপ করিত। জানিয়া রাখ, এই সমস্ত যালিমদের উপর আজ আল্লাহর লা'নত।—মোত্তাঃ

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নংঃ ৫৫৫২
details icon

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - হিসাব-নিকাশ, প্রতিশোধ গ্রহণ ও মীযানের বর্ণনা
৫৫৫২। হযরত আবু মুসা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: যখন কিয়ামতের দিন আসিবে, তখন আল্লাহ্ তা'আলা প্রত্যেক মুসলমানকে এক একটি করিয়া ইহুদী অথবা নাছারা প্রদান করিবেন, অতঃপর বলিবেনঃ ইহা দোযখ হইতে তোমার নিষ্কৃতির বিনিময়। — মুসলিম

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নংঃ ৫৫৫৩
details icon

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - হিসাব-নিকাশ, প্রতিশোধ গ্রহণ ও মীযানের বর্ণনা
৫৫৫৩। হযরত আবু সাঈদ [খুদূী (রাঃ)] বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: কিয়ামতের দিন হযরত নূহ (আঃ)-কে উপস্থিত করা হইবে এবং তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করা হইবে; তুমি কি আমার হুকুম-আহকাম মানুষদের কাছে পৌঁছাইয়াছিলে ? তিনি বলিবেন : হ্যাঁ, পৌঁছাইয়াছিলাম – হে আমার রব! তখন তাহার উম্মতগণকে জিজ্ঞাসা করা হইবে, - তিনি কি তোমাদিগকে (আমার হুকুম-আহকাম ) পৌঁছাইয়া দিয়াছিলেন? তাহারা বলিবে— আমাদের কাছে (এই দিন সম্পর্কে) কোন ভীতি প্রদর্শনকারী আসে নাই। তখন নূহ (আঃ)-কে বলা হইবে; তোমার সাক্ষী কে আছে? উত্তরে নূহ (আঃ) বলিবেন, মুহাম্মাদ (ছাঃ) ও তাঁহার উম্মতগণ। রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তখন তোমাদিগকে উপস্থিত করা হইবে এবং তোমরা এই সাক্ষ্য দিবে যে, অবশ্যই হযরত নূহ (আঃ) তাহার উম্মতের নিকট আল্লাহর বাণী পৌঁছাইয়া দিয়াছেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই আয়াতটি পাঠ করিলেন— অর্থাৎ, আর এইভাবেই আমি তোমাদিগকে একটি মধ্যপন্থী উম্মতরূপে প্রতিষ্ঠিত করিয়াছি, যাহাতে তোমরা মানব জাতির সাক্ষী হইতে পার। আর রাসুল [হযরত মুহাম্মাদ (ছাঃ)] তোমাদের জন্য সাক্ষী হন। বুখারী

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নংঃ ৫৫৫৪
details icon

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - হিসাব-নিকাশ, প্রতিশোধ গ্রহণ ও মীযানের বর্ণনা
৫৫৫৪। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লামের কাছে ছিলাম, হঠাৎ তিনি হাসিলেন। অতঃপর জিজ্ঞাসা করিলেন, তোমরা কি জান আমি কেন হাসিতেছি? আমরা বলিলাম, আল্লাহ্ এবং তাহার রাসুলই ভাল জানেন। তিনি বলিলেন: কিয়ামতের দিন বান্দা যে তাহার রবের সাথে সরাসরি কথা বলিবে, সেই কথাটি স্মরণ করিয়া হাসিতেছি। বান্দা বলিবে, আয় রব। তুমি কি আমাকে যুগ্ম হইতে নিরাপত্তা দান কর নাই? আল্লাহ্ বলিবেন : হ্যাঁ, তখন বান্দা বলিবে, আজ আমি আমার সম্পর্কে আপনজন ব্যতীত আমার বিরুদ্ধে অন্য কাহারও সাক্ষ্য গ্রহণ করিব না। তখন আল্লাহ্ বলিবেন: আজ তুমি নিজেই তোমার সাক্ষী হিসাবে এবং কেরামান কাতেবীনের সাক্ষ্যই তোমার জন্য যথেষ্ট। অতঃপর আল্লাহ্ তা'আলা তাহার মুখের উপর মোহর লাগাইয়া দিবেন এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে বলা হইবে তোমরা (কে কখন কি কি কাজ করিয়াছ) বল। তখন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গসমূহ তাহাদের কৃতকর্মসমূহ প্রকাশ করিয়া দিবে। ইহার পর তাহার মুখকে স্বাভাবিক অবস্থায় খুলিয়া দেওয়া হইবে। তখন সে স্বীয় অঙ্গসমূহকে লক্ষ্য করিয়া আক্ষেপের সাথে বলিবে, হে দুর্ভাগা অঙ্গসমূহ! তোরা দূর হ! তোদের ধ্বংস হউক! তোদের জন্যই তো আমি আমার রবের সহিত ঝগড়া করিতেছিলাম। —মুসলিম

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নংঃ ৫৫৫৫
details icon

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - হিসাব-নিকাশ, প্রতিশোধ গ্রহণ ও মীযানের বর্ণনা
৫৫৫৫। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, সাহাবাগণ বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! কিয়ামতের দিন কি আমরা আমাদের রবকে দেখিতে পাইব? তিনি বলিলেনঃ দ্বিপ্রহরে মেঘমুক্ত আকাশে সূর্য দেখিতে কি তোমাদের মধ্যে পরস্পরে বাধা সৃষ্টি হয় ? তাহারা বলিলেন, না। তিনি আরও বলিলেন; মেঘমুক্ত আকাশে পূর্ণিমার রাত্রে পূর্ণ চাঁদ দেখিতে কি তোমাদের কোন প্রকারের অসুবিধা হয় ? তাহারা বলিলেন, না। অতঃপর তিনি বলিলেন; সেই মহান সত্তার কসম, যাহার হাতে আমার প্রাণ ! এই দুইটির কোন একটিকে দেখিতে তোমাদের যেই পরিমাণ অসুবিধা হয়, সেই দিন তোমাদের রবকে দেখিতে সেই পরিমাণ অসুবিধাও হইবে না। ইহার পর হুযূর (ﷺ) বলিয়াছেন, তখন আল্লাহ্ তা'আলা কোন এক বান্দাকে লক্ষ্য করিয়া বলিবেনঃ হে অমুক! আমি কি তোমাকে মর্যাদা দান করি নাই? আমি কি তোমাকে সর্দারী দান করি নাই? আমি কি তোমাকে বিবি দান করি নাই? আমি কি তোমার জন্য ঘোড়া ও উটকে অনুগত করিয়া দেই নাই? আমি কি তোমাকে এই সুযোগ দেই নাই যে, তুমি নিজ সম্প্রদায়ের নেতৃত্ব দিবে এবং তাহাদের নিকট হইতে এক-চুতর্থাংশ মাল ভোগ করিবে? জবাবে বান্দা বলিবে—হ্যাঁ, (আয় আমার পরওয়ারদিগার!) অতঃপর হুযূর (ﷺ) বলেন, তখন আল্লাহ্ তা'আলা বান্দাকে বলিবেনঃ আচ্ছা বল দেখি; তোমার কি এই ধারণা ছিল যে, তুমি আমার সাক্ষাৎ লাভ করিবে? বান্দা বলিবে না। এইবার আল্লাহ্ বলিবেনঃ (দুনিয়াতে) তুমি যেইভাবে আমাকে ভুলিয়া রহিয়াছিলে, আজ আমিও (আখেরাতে) অনুরূপভাবে তোমাকে ভুলিয়া থাকিব। (অর্থাৎ, তোমাকে আযাবে লিপ্ত রাখিব।) অতঃপর আল্লাহ্ তা'আলা দ্বিতীয় এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করিবেন, সেও অনুরূপ বলিবে। তারপর তৃতীয় এক ব্যক্তির সাথে সাক্ষাৎ করিবেন এবং তাহাকেও অনুরূপ কথা জিজ্ঞাসা করিলে সে বলিবে, হে পরওয়ারদিগার! আমি তোমার প্রতি, তোমার কিতাবের প্রতি এবং তোমার সমস্ত নবীগণের প্রতি ঈমান রাখিয়াছি, নামায পড়িয়াছি, রোযা রাখিয়াছি এবং দান-সদকা করিয়াছি। মোটকথা, সে সাধ্য পরিমাণ নিজের নেক কার্যসমূহের একটি তালিকা আল্লাহর সম্মুখে তুলিয়া ধরিবে। তখন আল্লাহ্ তা'আলা বলিবেনঃ আচ্ছা! তুমি তো তোমার কথা বলিলে, এখন—এখানেই দাঁড়াও, এক্ষুণি তোমার ব্যাপারে সাক্ষী উপস্থিত করিতেছি। এই কথা শুনিয়া বান্দা মনে মনে চিন্তা করিবে, এমন কে আছে যে, এখানে আমার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিবে?
অতঃপর তাহার মুখে মোহর লাগাইয়া দেওয়া হইবে এবং তাহার রানকে বলা হইবে, তুমি বল, তখন তাহার রান, হাড়, মাংস প্রভৃতি এক একটি করিয়া বলিয়া ফেলিবে, উহারা যাহা যাহা করিয়াছিল। তাহার মুখে মোহর লাগাইয়া অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হইতে এই জন্য সাক্ষ্য গ্রহণ করা হইবে, যেন সেই বান্দা কোন ওযর আপত্তি পেশ করিতে না পারে। বস্তুতঃ যেই বান্দার কথা আলোচনা করা হইয়াছে, সে হইল মুনাফিক এবং এই কারণেই আল্লাহ্ তাহার প্রতি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হইবেন। —মুসলিম। আর হযরত আবু হোরায়রা কর্তৃক বর্ণিত হাদীস — يَدْخُلُ مِنْ أُمَّتِي الْجَنَّةَ তাওয়াক্কুলের অধ্যায়ে ইবনে আব্বাসের রেওয়ায়তে বর্ণনা করা হইয়াছে।

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নংঃ ৫৫৫৬
details icon

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - হিসাব-নিকাশ, প্রতিশোধ গ্রহণ ও মীযানের বর্ণনা
৫৫৫৬। হযরত আবু উমামাহ্ (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলিতে শুনিয়াছি, আমার পরওয়ারদিগার আমার সহিত এই ওয়াদা করিয়াছেন যে, তিনি আমার উম্মতের মধ্য হইতে সত্তর হাজার ব্যক্তিকে বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করাইবেন এবং তাহাদের উপর কোন আযাবও হইবে না। আবার উক্ত প্রত্যেক হাজারের সাথে সত্তর হাজার এবং আমার পরওয়ারদিগারের তিন অঞ্জলি ভর্তি লোকও (অর্থাৎ, আরও বহু লোক ) জান্নাতে প্রবেশ করাইবেন। – আহমদ, তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান