মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
২৫- স্বপ্ন ও তার ব্যাখ্যা সংক্রান্ত অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৩ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৪৬২৩

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৪৬২৩। হযরত আয়েশা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কে ওয়ারাকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হইল। (অর্থাৎ, তিনি মুসলমান ছিলেন কিনা।) হযরত খাদীজা (রাঃ) তো নবী (ﷺ)-এর সম্মুখে বলিয়াছিলেন, ওয়ারাকা তো আপনাকে সত্যবাদী বলিয়া স্বীকার করিয়াছিলেন। কিন্তু আপনার নবুওত প্রকাশের পূর্বেই তিনি মৃত্যু বরণ করিয়াছেন। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেনঃ ওয়ারাকাকে স্বপ্নে আমাকে দেখানো হইয়াছে, তাহার গায়ে সাদা কাপড় রহিয়াছে। যদি সে জাহান্নামী হইত তাহা হইলে তাহার গায়ে অন্য ধরনের কাপড় হইত। — আমদ ও তিরমিযী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৪৬২৪

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৪৬২৪। হযরত ইবনে খোয়ায়মা ইবনে সাবেত (রাঃ) তাঁহার চাচা আবু খোয়ায়মা (রাঃ) হইতে বর্ণনা করেন যে, ঘুমন্ত ব্যক্তি যেইভাবে স্বপ্ন দেখে, তিনি অনুরূপ স্বপ্ন দেখিলেন যে, তিনি নবী (ﷺ)-এর কপালে সজদা করিয়াছেন। তাঁহাকে স্বপ্নের কথাটি বর্ণনা করা হইলে, তিনি বলিলেন, তুমি তোমার স্বপ্নটিকে বাস্তবায়ন কর, এই বলিয়া তিনি চিৎ হইয়া শুইয়া পড়িলেন অতঃপর তিনি হুযূর (ﷺ)-এর কাপালে সজদা করিলেন। শরহে সুন্নাহ্ এই প্রসঙ্গে আবু বাকরাহ বর্ণিত হাদীস, “যেন আসমান হইতে একটি পাল্লা অবতীর্ণ হইয়াছে” আবু বকর ও ওমর (রাঃ)-এর মানাকিবে বর্ণিত হইবে।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৪৬২৫

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৪৬২৫। হযরত সামুরা ইবনে জুনদুব (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, (ফজরের নামাযের পর) অধিকাংশ সময় রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁহার সাহাবীদিগকে জিজ্ঞাসা করিতেন, তোমাদের কেহ কোন স্বপ্ন দেখিয়াছে কি? যে ব্যক্তি কোন কিছু স্বপ্ন দেখিত আল্লাহ্ পাক তাওফীক দিলে সে তাহা হুযূর (ﷺ)-এর কাছে বর্ণনা করিত। একদিন সকালে তিনি আমাদিগকে বলিলেনঃ আজ রাত্রে দুইজন আগন্তুক (স্বপ্নের মধ্যে) আমার কাছে আসিয়াছিল। তাহারা আমাকে উঠাইল এবং বলিল, আমাদের সঙ্গে চলুন। আমি তাহাদের সঙ্গে চলিলাম । অতঃপর প্রথম পরিচ্ছেদে যে একটি লম্বা হাদীস বর্ণিত হইয়াছে উহার অনুরূপ বিস্তারিত ঘটনাটি তিনি বর্ণনা করিয়াছেন। অবশ্য অত্র হাদীসে এমন কিছু কথা বর্ধিত আছে, যাহা পূর্বে বর্ণিত হাদীসে উল্লেখ করা হয় নাই। আর তাহা হইল—
সম্মুখে আমরা একটি ঘন সন্নিবিষ্ট বাগানে আসিয়া উপনীত হইলাম। বাগানটি বসন্তের হরেক রকম ফুলে সুশোভিত ছিল। হঠাৎ বাগানের মধ্যস্থলে আমার দৃষ্টি এমন এক ব্যক্তির উপরে পড়িল, যিনি এত দীর্ঘকায় ছিলেন যে, উপরের দিকে তাঁহার মাথা দেখা আমার জন্য কষ্টকর ছিল। তাঁহার চতুষ্পার্শ্বে এত বিপুল সংখ্যক শিশু ছিল, যাহাদিগকে আমি কখনও দেখি নাই। আমি সঙ্গীদ্বয়কে জিজ্ঞাসা করিলাম, এই লোকটি কে? আর ইহারাই বা কাহারা ? কিন্তু তাহারা আমাকে বলিলেন, সামনে চলুন। সুতরাং আমরা সম্মুখের দিকে অগ্রসর হইয়া বিরাট একটি বাগানে আসিয়া উপনীত হইলাম। এইরূপ বড় ও সুন্দর বাগান ইহার পূর্বে আর আমি কখনো দেখি নাই । হুযূর (ﷺ) বলেন, তাহারা আমাকে বলিলেন, বাগানের বৃক্ষে আরোহণ করুন। আমরা উহাতে আরোহণ করিলে এমন একটি শহর আমাদের নজরে পড়িল যাহা সোনা ও রূপার ইট দ্বারা নির্মিত ছিল। আমরা ঐ শহরের দরজায় পৌঁছিলাম, দরজা খুলিতে বলিলে আমাদের জন্য দরজা খোলা হইল। উহার ভিতরে প্রবেশ করিয়া আমরা কতিপয় লোকের সাক্ষাৎ পাইলাম। যাহাদের শরীরের অর্ধেক ছিল যে সব রূপ তুমি দেখিয়াছ তাহার চাইতে খুবই সৌন্দর্যমণ্ডিত। আর অর্ধেক ছিল তোমার দেখা রূপের মধ্যে অত্যধিক বিশ্রী। হুযূর (ﷺ) বলেন, আমার সঙ্গী দুইজন ঐ সমস্ত লোকদের উদ্দেশ্যে বলিল, যাও, তোমরা এই ঝর্ণায় নামিয়া পড়। তথায় প্রস্থের দিকে প্রবহমান একটি ঝর্ণা ছিল। উহার পানি ছিল একেবারে সাদা। তাহারা গিয়া উহাতে নামিল। অতঃপর নহরের পানিতে ডুব দিয়া তাহারা আমাদের কাছে ফিরিয়া আসিল। দেখা গেল, এখন তাহাদের দেহের কদাকৃতি দূর হইয়া গিয়াছে। এক্ষণে তাহারা খুব সুন্দর আকৃতিবিশিষ্ট হইয়া গিয়াছে।
হাদীসটির বর্ধিত এই কথাগুলির ব্যাখ্যায় বলা হইয়াছে যে, বাগানে যে দীর্ঘাকৃতির লোকটিকে দেখিয়াছিলেন, তিনি ছিলেন হযরত ইবরাহীম (আঃ)। আর তাঁহার চারি পার্শ্বের বালকগুলি ছিল সেই সমস্ত শিশু, যাহারা দ্বীনে ফেতরাতের (ইসলামের) উপর মৃত্যুবরণ করিয়াছে। বর্ণনাকারী বলেন, তখন মুসলমানদের কেহ কেহ জিজ্ঞাসা করিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আর মুশরিকদের সন্তান? জবাবে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেন, তাহারাও সেখানে। আর ঐ সমস্ত লোক যাহাদের শরীরের অর্ধেক অংশ সুন্দর ছিল আর বাকী অংশ ছিল কদাকার, তাহারা সেই সমস্ত লোক, যাহারা ভালোর সহিত মন্দ কাজও মিশ্রিতভাবে করিয়াছিল। অতঃপর আল্লাহ্ তা'আলা তাহাদের ত্রুটিসমূহ ক্ষমা করিয়া দেন। —বুখারী
সম্মুখে আমরা একটি ঘন সন্নিবিষ্ট বাগানে আসিয়া উপনীত হইলাম। বাগানটি বসন্তের হরেক রকম ফুলে সুশোভিত ছিল। হঠাৎ বাগানের মধ্যস্থলে আমার দৃষ্টি এমন এক ব্যক্তির উপরে পড়িল, যিনি এত দীর্ঘকায় ছিলেন যে, উপরের দিকে তাঁহার মাথা দেখা আমার জন্য কষ্টকর ছিল। তাঁহার চতুষ্পার্শ্বে এত বিপুল সংখ্যক শিশু ছিল, যাহাদিগকে আমি কখনও দেখি নাই। আমি সঙ্গীদ্বয়কে জিজ্ঞাসা করিলাম, এই লোকটি কে? আর ইহারাই বা কাহারা ? কিন্তু তাহারা আমাকে বলিলেন, সামনে চলুন। সুতরাং আমরা সম্মুখের দিকে অগ্রসর হইয়া বিরাট একটি বাগানে আসিয়া উপনীত হইলাম। এইরূপ বড় ও সুন্দর বাগান ইহার পূর্বে আর আমি কখনো দেখি নাই । হুযূর (ﷺ) বলেন, তাহারা আমাকে বলিলেন, বাগানের বৃক্ষে আরোহণ করুন। আমরা উহাতে আরোহণ করিলে এমন একটি শহর আমাদের নজরে পড়িল যাহা সোনা ও রূপার ইট দ্বারা নির্মিত ছিল। আমরা ঐ শহরের দরজায় পৌঁছিলাম, দরজা খুলিতে বলিলে আমাদের জন্য দরজা খোলা হইল। উহার ভিতরে প্রবেশ করিয়া আমরা কতিপয় লোকের সাক্ষাৎ পাইলাম। যাহাদের শরীরের অর্ধেক ছিল যে সব রূপ তুমি দেখিয়াছ তাহার চাইতে খুবই সৌন্দর্যমণ্ডিত। আর অর্ধেক ছিল তোমার দেখা রূপের মধ্যে অত্যধিক বিশ্রী। হুযূর (ﷺ) বলেন, আমার সঙ্গী দুইজন ঐ সমস্ত লোকদের উদ্দেশ্যে বলিল, যাও, তোমরা এই ঝর্ণায় নামিয়া পড়। তথায় প্রস্থের দিকে প্রবহমান একটি ঝর্ণা ছিল। উহার পানি ছিল একেবারে সাদা। তাহারা গিয়া উহাতে নামিল। অতঃপর নহরের পানিতে ডুব দিয়া তাহারা আমাদের কাছে ফিরিয়া আসিল। দেখা গেল, এখন তাহাদের দেহের কদাকৃতি দূর হইয়া গিয়াছে। এক্ষণে তাহারা খুব সুন্দর আকৃতিবিশিষ্ট হইয়া গিয়াছে।
হাদীসটির বর্ধিত এই কথাগুলির ব্যাখ্যায় বলা হইয়াছে যে, বাগানে যে দীর্ঘাকৃতির লোকটিকে দেখিয়াছিলেন, তিনি ছিলেন হযরত ইবরাহীম (আঃ)। আর তাঁহার চারি পার্শ্বের বালকগুলি ছিল সেই সমস্ত শিশু, যাহারা দ্বীনে ফেতরাতের (ইসলামের) উপর মৃত্যুবরণ করিয়াছে। বর্ণনাকারী বলেন, তখন মুসলমানদের কেহ কেহ জিজ্ঞাসা করিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আর মুশরিকদের সন্তান? জবাবে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেন, তাহারাও সেখানে। আর ঐ সমস্ত লোক যাহাদের শরীরের অর্ধেক অংশ সুন্দর ছিল আর বাকী অংশ ছিল কদাকার, তাহারা সেই সমস্ত লোক, যাহারা ভালোর সহিত মন্দ কাজও মিশ্রিতভাবে করিয়াছিল। অতঃপর আল্লাহ্ তা'আলা তাহাদের ত্রুটিসমূহ ক্ষমা করিয়া দেন। —বুখারী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান