মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
১৮- শরীআতের দন্ড বিধি অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৩ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৩৬২৭

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে বদ্দুআ না করা
৩৬২৭। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, মায়েয আসলামী আল্লাহর নবী (ﷺ)-এর নিকট আসিয়া স্বীকার করিল যে, সে এক মহিলার সাথে হারাম কাজ করিয়াছে। এই কথাটি সে চারিবার স্বীকার করিল; কিন্তু প্রত্যেকবারই নবী (ﷺ) তাহার দিক হইতে অন্য দিকে মুখ ফিরাইয়া নিলেন। উদ্দেশ্য, সে তাহার কথা হইতে ফিরিয়া যাউক। কিন্তু সে বারবার একই কথা বলিতে থাকে। পরে নবী (ﷺ) পঞ্চমবার তাহার দিকে ফিরিলেন এবং বলিলেনঃ তুমি কি উক্ত মহিলাটির সাথে সহবাস করিয়াছ? সে বলিল, হা হুযূর (ﷺ)। কথাটি আরও স্পষ্ট হওয়ার জন্য জিজ্ঞাসা করিলেন, আচ্ছা। তোমার লজ্জাস্থান (পুরুষাঙ্গ) তাহার লজ্জাস্থান (ফুরূজ)-এর মধ্যে প্রবেশ করিয়া অদৃশ্য হইয়া গিয়াছিল, সে বলিল, হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, কি এমনভাবে যে, সুরমার শলা সুরমাদানীর মধ্যে প্রবেশ করে এবং বালতি রশিসহ কূপের ভিতরে ঢুকিয়া যায়? উত্তরে সে বলিল, জি হ্যাঁ। অতঃপর তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, আচ্ছা! তুমি কি জান যিনা কাহাকে বলে ? সে বলিল, হ্যাঁ জানি। আমি তাহার সাথে এমনভাবে হারাম কাজ করিয়াছি, যেমনিভাবে কোন ব্যক্তি তাহার স্ত্রীর সাথে হালালভাবে সঙ্গম করে। অতঃপর তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, এই সমস্ত কথার দ্বারা তোমার উদ্দেশ্য কি ? সে বলিল, আমি চাহিতেছি যে, আপনি আমাকে এই গুনাহ্ হইতে পবিত্র করিয়া দেন। সুতরাং তিনি আদেশ করিলেন, ফলে তাহাকে রজম করা হইল। ইহার পর আল্লাহর নবী (ﷺ) তাঁহার দুইজন সাহাবীকে আলোচনা করিতে শুনিলেন যে, একজন অপরজনকে বলিতেছে, ঐ লোকটির অবস্থা দেখ তো? আল্লাহ্ তা'আলা তাহার দোষ গোপন করিয়াছিলেন ; কিন্তু তাহার মনের প্রেরণা তাহাকে ছাড়িল না। ফলে তাহাকে এমনভাবে পাথর নিক্ষেপ করিয়া মারা হইয়াছে, যেমন কুকুরকে পাথর নিক্ষেপ করা হয়। তাহাদের উভয়ের বাক্যালাপ শুনিয়া হুযূর (ﷺ) নীরব থাকিলেন এবং তিনি কিছুক্ষণ পথ চলিলেন। অবশেষে তিনি এমন একটি মৃত গাধার নিকট দিয়া গেলেন যাহার পা ফুলিয়া উপরের দিকে উঠিয়া রহিয়াছে। এইবার তিনি বলিলেন, অমুক অমুক (অর্থাৎ, ঐ লোক দুইজন ) কোথায়? তাহারা বলিল, এই তো আমরা ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তিনি বলিলেন, তোমরা দুইজন নামো এবং এই মৃত গাধাটির গোশত খাও। তাহারা বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! এই মৃত গাধার গোশত কে খাইতে পারিবে? এইবার তিনি বলিলেন, কিছুক্ষণ পূর্বে তোমরা দুইজন তোমাদের ভাইয়ের ইযযত-আবরুকে যে নষ্ট করিয়াছ, উহা এই মৃত গাধার গোশত খাওয়ার চাইতেও অধিক জঘন্য। সেই সত্তার কসম যাহার হাতে আমার প্রাণ! ঐ ব্যক্তি (অর্থাৎ, সাজাপ্রাপ্ত মায়েয) নিশ্চয়ই এখন বেহেশতের (প্রবহমান নহরসমূহে ডুব দিয়া বেড়াইতেছে। –আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৬২৮

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে বদ্দুআ না করা
৩৬২৮। হযরত খুযায়মা ইবনে সাবেত (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি কোন অপরাধ করে এবং তাহার উপর এই অপরাধের ‘হদ্' কায়েম করা হয়, তখন উক্ত 'হদ্'ই তাহার অপরাধের কাফ্ফারা (প্রতিশোধ) হইয়া যায়। —শরহে সুন্নাহ্

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৬২৯

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে বদ্দুআ না করা
৩৬২৯। হযরত আলী (রাঃ) বলেন, নবী (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি এমন কোন অপরাধ করিল, যাহার সাজা নির্ধারিত আছে। আর দুনিয়াতে উহা তাহার উপর কার্যকরীও করা হইয়াছে, আল্লাহ্ তা'আলা তাহার বান্দার প্রতি সর্বাধিক ন্যায়পরায়ণ। তিনি ন্যায়কে খুব বেশী পছন্দ করেন। সুতরাং (আশা করা যায় যে,) তাহাকে পরকালে দ্বিতীয়বার সাজা দিবেন না। আর যে ব্যক্তি কোন অপরাধ করিল, অথচ আল্লাহ্ তাহার সেই অপরাধকে গোপন করিয়া রাখিয়াছেন এবং শাস্তি প্রয়োগ হইতে অব্যাহতি দিয়াছেন। আল্লাহ্ তা'আলা অত্যন্ত দয়ালু, সুতরাং (আশা করা যায় যে,) পরকালে তাহাকে ঐ অপরাধে আর সাজা দিবেন না, যাহা দুনিয়াতে তিনি ক্ষমা করিয়া দিয়াছেন। — তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ্ । আর তিরমিযী এই হাদীসটিকে গরীব বলিয়াছেন।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান