মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
১৭- কিসাসের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১২ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৩৪৯৭

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)
৩৪৯৭। খিশফ ইবনে মালেক হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) হইতে বর্ণনা করেন, তিনি বলিয়াছেন, ভুলবশতঃ হত্যার দিয়ত রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) (একশত উট) নির্ধারণ করিয়াছেন। তাহার মধ্যে বিশটি বিনতে মাখায় (মাদী) এবং বিশটি ইবনে মাখায নর, বিশটি বিনতে লাবুন, বিশটি জাযআ এবং বিশটি ছিল হিক্কা। — তিরমিযী, আবু দাউদ ও নাসায়ী
আর ইহাই সহীহ্ যে, এই হাদীসটি ইবনে মাসউদ (রাঃ)-এর উক্তি (অর্থাৎ, হুযূর [ﷺ]-এর কথা নহে) এবং খিশফ একজন অপরিচিত বর্ণনাকারী। এই হাদীস ব্যতীত অন্য কোন হাদীসে তাঁহার নাম উল্লেখ নাই। শরহে সুন্নাহর মধ্যে বর্ণিত হইয়াছে যে, যেই লোকটি খায়বরে নিহত হইয়াছিল, নবী (ﷺ) তাহার দিয়াতে যাকাতের উট হইতে একশত উট আদায় করিয়াছেন এবং বয়স হিসাবে যাকাতের উটের মধ্যে “ইবনে মাখায” (এক বৎসরের নর উট) কে না; বরং “ইবনে লাবুন” (দুই বৎসর বয়সের নর উট) থাকিতে পারে।
আর ইহাই সহীহ্ যে, এই হাদীসটি ইবনে মাসউদ (রাঃ)-এর উক্তি (অর্থাৎ, হুযূর [ﷺ]-এর কথা নহে) এবং খিশফ একজন অপরিচিত বর্ণনাকারী। এই হাদীস ব্যতীত অন্য কোন হাদীসে তাঁহার নাম উল্লেখ নাই। শরহে সুন্নাহর মধ্যে বর্ণিত হইয়াছে যে, যেই লোকটি খায়বরে নিহত হইয়াছিল, নবী (ﷺ) তাহার দিয়াতে যাকাতের উট হইতে একশত উট আদায় করিয়াছেন এবং বয়স হিসাবে যাকাতের উটের মধ্যে “ইবনে মাখায” (এক বৎসরের নর উট) কে না; বরং “ইবনে লাবুন” (দুই বৎসর বয়সের নর উট) থাকিতে পারে।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৪৯৮

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)
৩৪৯৮। হযরত আমর ইবনে শোআয়ব তাঁহার পিতার মাধ্যমে তাঁহার দাদা হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি বলিয়াছেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর যমানায় দিয়তের মূল্য ছিল আট শত দীনার (স্বর্ণমুদ্রা) অথবা আট হাজার দিরহাম (রৌপ্য মুদ্রা) আর সেই সময় কিতাবী সম্প্রদায়ের দিয়ত ছিল একজন মুসলমানের দিয়তের অর্ধেক। আমর ইবনে শোআয়বের দাদা বলেন, এইরূপ চলিয়া আসিয়াছিল; কিন্তু যখন হযরত ওমর (রাঃ) খলীফা নিযুক্ত হন, তখন লোকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে যাইয়া বলিলেন, বর্তমানে উটের দাম অনেক চড়া হইয়া গিয়াছে। বর্ণনাকারী বলেন, তাই হযরত ওমর (রাঃ) দিয়তের হার নির্ধারণ করিলেন, স্বর্ণের মালিকের উপর এক হাজার দীনার, রৌপ্যের মালিকের উপর বার হাজার দেরহাম। গরুর মালিকের উপর দুইশত গাভী, ছাগলের মালিকের উপর দুই হাজার বকরী এবং বস্ত্র মালিকের উপর দুই শত জোড়া কাপড়। বর্ণনাকারী বলেন, যিম্মীদের দিয়ত হুযূর (ﷺ)-এর যমানায় যাহা ছিল, হযরত ওমর (রাঃ) তাহা পরিবর্তন না করিয়া উহাই বহাল রাখিলেন। —আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৪৯৯

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)
৩৪৯৯। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) নবী (ﷺ) হইতে বর্ণনা করিয়াছেন যে, তিনি দিয়তের পরিমাণ বার হাজার (দেরহাম) নির্ধারণ করিয়াছেন। —তিরমিযী, আবু দাউদ, নাসায়ী ও দারেমী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৫০০

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)
৩৫০০। হযরত আমর ইবনে শোআয়ব তাঁহার পিতার মাধ্যমে তাঁহার দাদা হইতে বর্ণনা করিয়াছেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) “কাতলে খাতার” (ভুলবশতঃ হত্যার) দিয়ত বস্তিবাসীর উপর ধার্য করিয়াছেন চারি শত দীনার (স্বর্ণমুদ্রা) অথবা উহার সমপরিমাণ মূল্যের রৌপ্য মুদ্রা। বস্তুতঃ এই দিয়ত উটের দামের সাথে সামঞ্জস্য রাখিয়াই নির্ধারণ করিয়াছিলেন। সুতরাং যখনই উটের মূল্য চড়িয়া যাইত, তখন দিয়তের মুদ্রার পরিমাণ বর্ধিত হইত। আর যখন উটের মূল্য কমিয়া যাইত, তখন দিয়তের মুদ্রার পরিমাণ হ্রাস পাইত । অতএব, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর যমানায় দিয়তের মূল্য চারি শত দীনার হইতে আট শত দীনার পর্যন্ত উঠানামা করিত। আর আট শত স্বর্ণ মুদ্রার সমপরিমাণ রৌপ্য মুদ্রা ছিল আট হাজার দেরহাম। বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) গাভীর মালিকদের উপর দুই শত গাভী, ছাগল মালিকদের উপর দুই হাজার বকরী দিয়তস্বরূপ ধার্য করিয়াছেন। রাসুলুল্লাহ্ (ﷺ) আরও বলিয়াছেনঃ দিয়ত নিহত ব্যক্তির মীরাস। সুতরাং তাহার ওয়ারিসগণ হিস্যা অনুপাতে উহার মালিক হইবে এবং হুযূর (ﷺ) নির্দেশ দিয়াছেন যে, মহিলার দেয় দিয়ত তাহার আসাবাগণ হিস্যা অনুপাতে বহন করিবে। আর হত্যাকারী কিছুতেই নিহত ব্যক্তির সম্পদের ওয়ারিস হইবে না। —আবু দাউদ ও নাসায়ী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৫০১

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)
৩৫০১। হযরত আমর ইবনে শোআয়ব তাঁহার পিতার মাধ্যমে তাঁহার দাদা হইতে বর্ণনা করিয়াছেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ শিবহে আমদ-এর দিয়তও কাতলে আমদ-এর দিয়তের ন্যায় কঠোর প্রকৃতির হইবে। তবে তাহাকে কেসাসস্বরূপ হত্যা করা যাইবে না। –আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৫০২

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)
৩৫০২। হযরত আমর ইবনে শোআয়র তাঁহার পিতার মাধ্যমে তাঁহার দাদা হইতে বর্ণনা করিয়াছেন যে, কোন ব্যক্তিকে এমন মারধর করা হইয়াছে যাহার দরুন তাহার চক্ষুর জ্যোতি নষ্ট হইয়া গিয়াছে; কিন্তু চক্ষু যথাস্থানে বহাল আছে, এই অপরাধের জন্য রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) পূর্ণ দিয়তের এক তৃতীয়াংশ ধার্য করিয়াছেন । —আবু দাউদ ও নাসায়ী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৫০৩

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)
৩৫০৩। মুহাম্মাদ ইবনে আমর হইতে বর্ণিত, তিনি আবু সালামা হইতে, তিনি হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি বলিয়াছেন, গর্ভস্থিত ভ্রূণ নষ্ট করার বিনিময় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একটি “গোররা” ধার্য করিয়াছেন। তাহা হইল, একটি ক্রীতদাস বা দাসী অথবা একটি ঘোড়া বা একটি খচ্চর। –আবু দাউদ
আবু দাউদ আরও বলেন, এই হাদীসটি হাম্মাদ ইবনে সালামা ও খালেদ ওয়াসেতী মুহাম্মাদ ইবনে আমর হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু সেইখানে 'ঘোড়া ও খচ্চরের' কথা উল্লেখ নাই। (শরহে সুন্নাহ্ কিতাবে উল্লেখ আছে যে, 'ঘোড়া ও খচ্চর' এই শব্দ দুইটি উর্ধ্বতন বর্ণনাকারী ঈসা ইবনে ইউনুস কর্তৃক ভ্রম হইয়াছে।)
আবু দাউদ আরও বলেন, এই হাদীসটি হাম্মাদ ইবনে সালামা ও খালেদ ওয়াসেতী মুহাম্মাদ ইবনে আমর হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু সেইখানে 'ঘোড়া ও খচ্চরের' কথা উল্লেখ নাই। (শরহে সুন্নাহ্ কিতাবে উল্লেখ আছে যে, 'ঘোড়া ও খচ্চর' এই শব্দ দুইটি উর্ধ্বতন বর্ণনাকারী ঈসা ইবনে ইউনুস কর্তৃক ভ্রম হইয়াছে।)

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৫০৪

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)
৩৫০৪। হযরত আমর ইবনে শোআয়ব তাঁহার পিতার মাধ্যমে তাঁহার দাদা হইতে বর্ণনা করিয়াছেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যদি কেহ কোন রোগীর চিকিৎসা করে, অথচ তাহার চিকিৎসা-জ্ঞান সুপরিচিত নহে, তবে সে দায়ী হইবে। —আবু দাউদ ও নাসায়ী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৫০৫

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)
৩৫০৫। হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদা গরীব সম্প্রদায়ের একটি বালক বিত্তবান সম্প্রদায়ের একটি বালকের কান কাটিয়া ফেলিল। পরে অপরাধী ছেলেটির অভিভাবকগণ নবী (ﷺ)-এর নিকট আসিয়া বলিল, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা দুস্থ গরীব লোক। তাহাদের কথা শুনিয়া হুযূর (ﷺ) তাহাদের উপর কোন কিছুই আরোপ করেন নাই। –আবু দাউদ ও নাসায়ী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৫০৬

পরিচ্ছেদঃ ১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)
৩৫০৬। হযরত আলী (রাঃ) বলেন, 'শিবহে আমদ'-এর দিয়ত তিন প্রকারের উট দ্বারা পরিশোধ করিতে হইবে। তেত্রিশটি 'হিক্কা' (অর্থাৎ, যেই উটের বয়স চতুর্থ বৎসরে পড়িয়াছে), তেত্রিশটি 'জাযআ' (অর্থাৎ, যেই উটের বয়স পঞ্চম বৎসরে পড়িয়াছে), চৌত্রিশটি 'সানিয়্যা' হইতে “বাযিল” বয়স পর্যন্ত (অর্থাৎ, ষষ্ঠ বৎসর হইতে নবম বৎসর পর্যন্ত বয়সের উট), তবে এই সমস্ত উট গর্ভবতী হইতে হইবে। অন্য আরেক রেওয়ায়তে আছে, 'ভুলবশতঃ হত্যার' দিয়ত চারি প্রকারের উট দ্বারা পরিশোধ করিতে হইবে। পঁচিশটি পূর্ণ তিন তিন বৎসরের, পঁচিশটি পূর্ণ চার চারি বৎসরের, পঁচিশটি দুই দুই বৎসরের এবং পঁচিশটি এক এক বৎসরের উটনী হইতে হইবে। —আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৫০৭

পরিচ্ছেদঃ ১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)
৩৫০৭। মুজাহিদ (রঃ) বলেন, হযরত ওমর (রাঃ) 'শিবহে আমদ' হত্যার দিয়তের মধ্যে ত্রিশটি তিন তিন বৎসরের আর ত্রিশটি চারি চারি বৎসরের; আর চল্লিশটি গর্ভবতী, যাহাদের বয়স পাঁচ বৎসরের উর্ধ্ব হইতে নবম বৎসরের মধ্যে রহিয়াছে, এমন সব উট আদায় করিতে রায় প্রদান করিয়াছেন। – আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৫০৮

পরিচ্ছেদঃ ১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)
৩৫০৮। হযরত সায়ীদ ইবনে মুসাইয়াব (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একবার রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এমন একটি গর্ভস্থিত ভ্রূণ, যাহা তাহার মায়ের পেটের মধ্যে থাকাবস্থায় হত্যা করা হইয়াছে, তাহার দিয়তস্বরূপ একটি দাস কিংবা দাসী দেওয়ার জন্য হুকুম করিলেন। তখন প্রতিপক্ষ ব্যক্তি (হামল ইবনে মালেক ইবনে নাবেগা ছন্দাকারে) বলিয়া উঠিল, আমি কি কারণে এমন একটি বস্তুর দিয়ত (জরিমানা) আদায় করিব? যে পান করে নাই, কিছু খায়ও নাই, কথাও বলে নাই এবং কাঁদেও নাই (শব্দও করে নাই), এই জাতীয় অপরাধ দণ্ডযোগ্য নহে। (তাহার ছন্দাকারের আবৃত্তি শুনিয়া) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) (ভৎসনা ও প্রতিবাদের স্বরে) বলিলেনঃ এই লোকটি তো গণক গোষ্ঠীর ভাই। — মালেক ও নাসায়ী হাদীসটি মোরসাল পর্যায়ে বর্ণনা করিয়াছেন।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান