মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
৯- কুরআনের ফাযাঈল অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৪ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ২২১০

পরিচ্ছেদঃ ১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - (কুরআন অধ্যয়ন ও তিলাওয়াতের আদব)
২২১০। হযরত উবায়দা মুলাইকী (রাঃ) বলেন, আর তিনি ছিলেন হুযুরের সহচর— রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ হে কোরআনধারীগণ! তোমরা কোরআনকে বালিশ বানাইবে না; বরং তেলাওয়াত করার মত উহা তেলাওয়াত করিবে—রাত ও দিনে এবং উহাকে প্রকাশ করিবে ও সুর করিয়া পড়িবে; অধিকন্তু উহাতে যাহা আছে সেইসব (বিষয়বস্তু) সম্পর্কে চিন্তা-গবেষণা করিবে, যাহাতে তোমরা সফলকাম হইতে পার এবং শীঘ্র শীঘ্র (দুনিয়ায়) ইহার প্রতিফল পাওয়ার জন্য ব্যস্ত হইবে না। কেননা, (আখেরাতে) উহার (উত্তম) প্রতিফল রহিয়াছে। – বায়হাকী শো'আবুল ঈমানে

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২২১১

পরিচ্ছেদঃ ২. প্রথম অনুচ্ছেদ - কিরাআতের ভিন্নতা ও কুরআন সংকলন প্রসঙ্গে
২২১১। হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বলেন, আমি হেশাম ইবনে হাকীম ইবনে হেযামকে সূরা ‘ফোরকান' পড়িতে শুনিলাম আমি যেভাবে উহা পড়ি তাহা হইতে ভিন্নতররূপে, অথচ স্বয়ং রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে উহা পড়াইয়াছেন। অতএব, আমি তাহার উপর ঝাঁপাইয়া পড়িতে উদ্যত হইলাম কিন্তু (তখন সে নামায পড়িতেছিল। তাই) নামায শেষ করা পর্যন্ত তাহাকে সময় দিলাম। অতঃপর আমি তাহাকে তাহার চাদর গলায় পেঁচাইয়া রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট লইয়া গেলাম এবং বলিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনি যেরূপে আমাকে পড়াইয়াছেন তাহা হইতে ভিন্নতররূপে আমি ইহাকে সূরা 'ফোরকান’ পড়িতে শুনিয়াছি। তখন রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেনঃ তাহাকে ছাড়িয়া দাও এবং হেশামকে বলিলেন, হেশাম, তুমি উহা পড় তো দেখি! সে উহা আমি তাহাকে যেরূপ পড়িতে শুনিয়াছিলাম সেরূপই পড়িল। শুনিয়া রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন, এইরূপেও ইহা নাযিল হইয়াছে। অতঃপর আমাকে বলিলেন, তুমি পড় দেখি! সুতরাং আমিও পড়িলাম। শুনিয়া তিনি বলিলেন, ইহা এইরূপেও নাযিল হইয়াছে। বস্তুতঃ এই কোরআন সাত রীতিতে নাযিল করা হইয়াছে। সুতরাং তোমাদের (যাহার জন্য) যাহা সহজ হয় তাহাই পড়িবে। —মোত্তাঃ, কিন্তু পাঠ মুসলিমের।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২২১২

পরিচ্ছেদঃ ২. প্রথম অনুচ্ছেদ - কিরাআতের ভিন্নতা ও কুরআন সংকলন প্রসঙ্গে
২২১২। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, আমি এক ব্যক্তিকে কোর আন পড়িতে শুনিলাম, অথচ আমি নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে উহার অন্যরূপ পড়িতে শুনিয়াছি। সুতরাং আমি তাহাকে নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট লইয়া গেলাম এবং উহা জানাইলাম। তখন আমি তাঁহার চেহারায় বিরক্তির ভাব লক্ষ্য করিলাম। তিনি বলিলেনঃ তোমাদের উভয়ই শুদ্ধ। সুতরাং তোমরা ইহা লইয়া বিবাদ করিও না। কেননা, তোমাদের পূর্ববর্তীরা বিবাদ-বিসম্বাদে লিপ্ত হইয়াছে, ফলে ধ্বংস হইয়াছে।
—বুখারী
—বুখারী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২২১৩

পরিচ্ছেদঃ ২. প্রথম অনুচ্ছেদ - কিরাআতের ভিন্নতা ও কুরআন সংকলন প্রসঙ্গে
২২১৩। হযরত উবাই ইবনে কা'ব (রাঃ) বলেন, আমি মসজিদে আছি এমন সময় এক ব্যক্তি আসিয়া নামায পড়িতে লাগিল। সে এমন এক পাঠে কোরআন পড়িল যাহা আমার অজানা ছিল। অতঃপর অপর এক ব্যক্তি আসিল এবং প্রথম ব্যক্তি হইতে ভিন্নতর পাঠে কেরাআত পড়িল। যখন আমরা নামায শেষ করিলাম সকলেই রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট গেলাম এবং আমি বলিলাম, হুযুর! এ ব্যক্তি এমন কেরাআতে কোরআন পড়িয়াছে যাহা আমার জানা নাই। অতঃপর দ্বিতীয় ব্যক্তি আসিয়া ইহার ভিন্নতর পাঠে কেরাআত পড়িল। নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাদিগকে হুকুম করিলেন, তাহারা কোরআন পড়িল আর তিনি উভয়ের পড়াকেই শুদ্ধ বলিলেন। ইহাতে আমার মনে হুযূর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি এমন এক সন্দেহের সৃষ্টি হইল যাহা জাহেলিয়াত যুগেও হয় নাই। যখন রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে যাহা আচ্ছন্ন করিয়া ফেলিয়াছে তাহা লক্ষ্য করিলেন, আমার সিনার উপর হাত মারিলেন। ইহাতে আমি ঘামে ভাসিয়া গেলাম এবং এতই ভীত হইলাম যেন আমি আল্লাহকে দেখিতেছি। এ সময় হুযূর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলিলেন, হে উবাই, আমার নিকট ওহী পাঠানো হইয়াছিল যে, কোরআন এক পাঠে (বা এক রীতিতে) পড়। কিন্তু আমি আল্লাহ্র নিকট আরয করিলাম যে, আপনি আমার উম্মতের প্রতি সহজ করিয়া দিন! আল্লাহ্ দ্বিতীয়বারে উত্তর দিলেন, তবে দুই রীতিতে পড়! আমি পুনরায় আরয করিলাম, আপনি আমার উম্মতের প্রতি আরও সহজ করিয়া দিন। তিনি তৃতীয়বারে আমাকে উত্তর করিলেন, তবে সাত রীতিতে পড়। কিন্তু তোমার প্রত্যেক আরযের পরিবর্তেই যাহা তোমাকে আমি দিয়াছি, তদভিন্নও এক একটি যাজ্ঞার অধিকার রহিল, তাহা তুমি করিতে পার। হুযূর বলেন, আমি বলিলাম, আল্লাহ্, আপনি আমার উম্মতকে মাফ করিয়া দিন। আল্লাহ্, আপনি আমার উম্মতকে মাফ করিয়া দিন। আর তৃতীয়টি আমি এমন দিনের জন্য পিছাইয়া রাখিলাম, যে দিন সমগ্র সৃষ্টি আমার সুপারিশের দিকে চাহিয়া থাকিবে, এমন কি হযরত ইবরাহীম (আঃ)-ও। –মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান