মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
৫- নামাযের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১৩ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ১০৭২

পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামাআত ও তার ফযীলত সম্পর্কে
১০৭২। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, আমি আমাদের সাহাবী দলকে জানি তাঁহারা (কখনও) জামাআত বরখেলাফ করেন না। নামাযের জামাআত বরখেলাফ করে কেবল প্রকাশ্য মুনাফেকই অথবা রোগী। আর আমি ইহাও দেখিয়াছি যে, রোগী দুই ব্যক্তির মধ্যখানে (তাহাদের সাহায্যে) পথ চলিয়াছে যাহাতে মসজিদে নামায লাভ করিতে পারে। অতঃপর তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমাদিগকে 'সুনানে হুদা' শিক্ষা দিয়াছেন, আর আযান হয় এমন মসজিদে জামাআতের সহিত নামায পড়া ‘সুনানে হুদা'রই অন্তর্গত। অপর এক বর্ণনায় আছে, ইবনে মাসউদ বলিয়াছেন, যে আগামীকাল কেয়ামতে পূর্ণ মুসলিম হিসাবে আল্লাহর সহিত সাক্ষাৎ করিতে ভালবাসে, সে যেন এই পাঞ্জেগানা নামাযের প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখে যেখানে উহার আযান দেওয়া হয়। কেননা, আল্লাহ্ তা'আলা তোমাদের নবীর জন্য 'সুনানে হুদা' নির্ধারণ করিয়াছেন। আর এই পাঞ্জেগানা নামায জামাআতে পড়াও ‘সুনানে হুদা'র অন্তর্গত। যদি তোমরা তোমাদের ঘরে নামায পড় যেভাবে এই জামাআত বরখেলাফকারী তাহার ঘরে পড়িয়া থাকে, তাহা হইলে তোমরা তোমাদের নবীর সুন্নত ত্যাগ করিলে, আর যদি তোমরা তোমাদের নবীর সুন্নত ত্যাগ কর তাহা হইলে নিশ্চয় গোমরাহ্ হইয়া যাইবে। অতঃপর তিনি বলেন, যে ব্যক্তি পাকী লাভ করে এবং উত্তমরূপে পাকী লাভ করে, অতঃপর ঐ মসজিদসমূহের মধ্যে কোন মসজিদের দিকে গমন করে, সে যেসকল কদম বাড়ায় উহার প্রত্যেক কদমেই তাহার জন্য আল্লাহ্ একটি নেকী নির্ধারণ করেন এবং উহা দ্বারা তাহার একটি পদ উন্নত করেন, এতদ্ব্যতীত উহা দ্বারা তাহার একটা গোনাহও মাফ করিয়া দেন। খোদার কসম, আমি তাঁহাদিগকে দেখিয়াছি তাহারা (কখনও) জামাআত ছাড়িতেন না, জামাআত ছাড়ে কেবল প্রকাশ্য মুনাফেকই। নিশ্চয়, পূর্বে এইরূপ ব্যক্তিও দেখা গিয়াছে যাহাকে দুই ব্যক্তির মধ্যখানে তাহাদের গায়ে ভর দিয়া মসজিদে আনা হইয়াছে যাহাতে তাহাকে ছফে দাঁড় করান যায়। – মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১০৭৩

পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামাআত ও তার ফযীলত সম্পর্কে
১০৭৩। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) নবী করীম (ﷺ) হইতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলিয়াছেনঃ যদি ঘরসমূহে স্ত্রীলোকসকল ও বালক-বালিকারা না থাকিত, তাহা হইলে আমি এশার নামাযের জামাআত কায়েম করিয়া আমার যুবকদিগকে আদেশ দিতাম তাহারা যেন ঘরে যাহা আছে সবকে আগুনে জ্বালাইয়া দেয়। —আহমদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১০৭৪

পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামাআত ও তার ফযীলত সম্পর্কে
১০৭৪। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমাদিগকে নির্দেশ দিয়াছেন, যখন তোমরা মসজিদে থাকিবে আর তথায় আযান দেওয়া হইবে, তোমাদের কেহ যেন তথা হইতে চলিয়া না যায় যাবৎ না নামায আদায় করে। – আহ্মদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১০৭৫

পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামাআত ও তার ফযীলত সম্পর্কে
১০৭৫। তাবেয়ী আবুশশা'ছা বলেন, একদা এক ব্যক্তি মসজিদে আযান দেওয়ার পর বাহির হইয়া গেল। ইহা দেখিয়া হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলিলেন, এই ব্যক্তি আবুল কাসেম মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর নাফরমানী করিল। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১০৭৬

পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামাআত ও তার ফযীলত সম্পর্কে
১০৭৬। হযরত ওসমান ইবনে আফফান রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি মসজিদে আযান পাইয়াছে, অতঃপর সে বাহির হইয়া গিয়াছে, অথচ সে কোন জরুরী কাজেও বাহির হয় নাই এবং পুনরায় মসজিদে প্রত্যাবর্তনেরও ইচ্ছা রাখে না, সে হইল মুনাফেক। —— ইবনে মাজাহ্

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১০৭৭

পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামাআত ও তার ফযীলত সম্পর্কে
১০৭৭। হযরত ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহু নবী করীম (ﷺ) হইতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি আযান শুনিয়াছে অথচ জামাআতে হাযির হয় নাই, তাহার নামায নাই; কিন্তু যদি তাহার কোন গ্রহণীয় ওযর থাকে। —দারা কুতনী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১০৭৮

পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামাআত ও তার ফযীলত সম্পর্কে
১০৭৮। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উম্মে মাকতুম (রাঃ) বলেন, একবার আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! মদীনা হইতেছে সরীসৃপ ও হিংস্র জন্তুবহুল স্থান; আর আমি একজন অন্ধ মানুষ। অতএব, আমার জামাআতে হাযির না হওয়ার পক্ষে রুখসত (অনুমতি) আছে বলিয়া আপনি কি মনে করেন ? তিনি বলিলেনঃ তুমি 'হাইয়া আলাস্ সালাহ্' ও 'হাইয়া আলাল ফালাহ্' শুনিয়া থাক কি? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। হুযূর বলিলেন, তবে জামাআতে হাযির হইবে এবং তাঁহাকে 'রুখসত' দিলেন না। –আবু দাউদ ও নাসায়ী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১০৭৯

পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামাআত ও তার ফযীলত সম্পর্কে
১০৭৯। হযরত উম্মুদ্দারদা (রাঃ) বলেন, একদা (আমার স্বামী) আবুদ্দারদা অত্যন্ত রাগান্বিত অবস্থায় আমার নিকট উপস্থিত হইলেন। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, আপনার এই রাগ করার কারণ কি? তিনি বলিলেন, খোদার কসম, আমি উম্মতে মুহাম্মাদীর পরিচয় এছাড়া আর কিছুই জানি না যে, তাহারা সকলে মিলিয়া একত্রে নামায পড়ে (অথচ আজ দেখিতেছি কেহ কেহ জামাআত তরক করিয়া চলিয়াছে)। — বোখারী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১০৮০

পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামাআত ও তার ফযীলত সম্পর্কে
১০৮০। হযরত আবু বকর ইবনে সুলায়মান ইবনে আবু হাসমাহ্ (রঃ) বলেন, একদা হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) আমার বাবা সুলায়মান ইবনে আবু হাসমাহ্কে ফজরের নামাযে পাইলেন না। অতঃপর হযরত ওমর বাজারের দিকে চলিলেন। সুলায়মানের ঘর তখন মসজিদে নববী ও বাজারের মধ্যবর্তী জায়গায় ছিল। হযরত ওমর পথ চলিতে সুলায়মানের মা বিবি শাফার সাক্ষাৎ পাইলেন এবং জিজ্ঞাসা করিলেন, ফজরের নামাযে সুলায়মানকে যে দেখিলাম না। তিনি উত্তর করিলেন, সে সারারাত্রি (নফল) নামায পড়িয়াছে। অতঃপর তাহার চক্ষুদ্বয় ঘুমে অভিভূত হইয়া গিয়াছে। ইহা শুনিয়া হযরত ওমর বলিলেন, আমি ফজরের নামাযের জামাআতে উপস্থিত হই—ইহা আমার নিকট সারারাত্রি নফল পড়া অপেক্ষা পছন্দনীয়। — মালেক

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১০৮১

পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামাআত ও তার ফযীলত সম্পর্কে
১০৮১। হযরত আবু মুসা আশআরী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ দুই ব্যক্তি বা তদপেক্ষা অধিক সংখ্যক হইলেই জামাআত হয়। —ইবনে মাজাহ্

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১০৮২

পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামাআত ও তার ফযীলত সম্পর্কে
১০৮২। বেলাল ইবনে আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমর তাঁহার পিতা (হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমর) হইতে বর্ণনা করেন যে, তাঁহার পিতা আব্দুল্লাহ্ বলিয়াছেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ স্ত্রীলোকদিগকে মসজিদে আপন আপন অংশ গ্রহণ করিতে বাধা দিও না যখন তাহারা তোমাদের নিকট অনুমতি প্রার্থনা করে। তখন বেলাল বলিলেন খোদার কসম, আমি তাহাদিগকে নিশ্চয় বাধা দিব। ইহা শুনিয়া হযরত আব্দুল্লাহ্ বলিলেন, (পামর !) আমি বলিতেছি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেন, (তাহাদের বাধা দিও না,) আর তুই বলিতছিস্ আমি নিশ্চয় তাহাদিগকে বাধা দিব ।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১০৮৩

পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামাআত ও তার ফযীলত সম্পর্কে
১০৮৩। সালেমের বর্ণনায় আছে, সালেম তাঁহার পিতা হইতে বর্ণনা করিয়া বলেন, আমার ভাই বেলালের উত্তর শুনিয়া আমার পিতা হযরত আব্দুল্লাহ্ তাহার প্রতি লক্ষ্য করিয়া তাহাকে এইরূপ ভৎসনা করিলেন যেইরূপ ভৎসনা তিনি তাহাকে করিতে আমি আর কখনও শুনি নাই। এবং বলিলেন, আমি তোকে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর কথা শুনাইতেছি আর তুই বলিস্ খোদার কসম আমি নিশ্চয় তাহাদিগকে বাধা দিব। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১০৮৪

পরিচ্ছেদঃ ২৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জামাআত ও তার ফযীলত সম্পর্কে
১০৮৪। তাবেয়ী মুজাহিদ হইতে বর্ণিত আছে, একদা হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমর (রাঃ) বলিলেন, নবী করীম (ﷺ) বলিয়াছেনঃ কোন ব্যক্তি যেন তাহার পরিবারকে মসজিদে আসিতে বাধা না দেয়। ইহা শুনিয়া হযরত আব্দুল্লাহর এক পুত্র (বেলাল) বলিয়া উঠিল, নিশ্চয় আমরা তাহাদিগকে বাধা দিব। তখন হযরত আব্দুল্লাহ্ বলিলেন, (পাজি!) আমি তোকে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর বাণী শুনাইতেছি আর তুই বলিস্ ইহা! বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর হযরত আব্দুল্লাহ্ মৃত্যু পর্যন্ত তাহার সহিত কথা বলেন নাই। – আহ্মদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান