মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
৫- নামাযের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৬ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৯৭৩

পরিচ্ছেদঃ ১৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতের পর যিকর-আযকার
৯৭৩। হযরত যায়েদ ইবনে ছাবেত (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, আমাদেরকে বলা হয়েছে, প্রত্যেক নামাযের পর তেত্রিশবার সুবহানাল্লাহ্, তেত্রিশবার আলহামদুলিল্লাহ এবং চৌত্রিশবার আল্লাহু আকবার বলবে। এক রাত্রে এক আনছারীকে স্বপ্নে দেখানো হল এবং জিজ্ঞেস করা হলো যে, তোমাদেরকে কি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এত এতবার এইসব তাসবীহ ইত্যাদি পড়তে বলেছেন? আনছারী স্বপ্নের মধ্যেই বললেন, হ্যাঁ। তখন স্বপ্নে দেখা ব্যক্তি বলল, সেই তাসবীহ তিনটিকে তেত্রিশ ও চৌত্রিশের স্থলে পঁচিশ পঁচিশবার পড়বেন এবং পঁচিশবার লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু বাড়িয়ে দিলেন (তাতে মোট একশতবার হয়ে যাবে)! প্রত্যুষে সেই আনছারী রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে তাঁকে স্বপ্নের ঘটনাটি বললেন। তিনি শুনে বললেন, তবে তাই কর। -আহমদ, নাসায়ী, দারেমী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৯৭৪

পরিচ্ছেদঃ ১৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতের পর যিকর-আযকার
৯৭৪। হযরত আলী (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি এই মিম্বরের কাঠে দাঁড়িয়ে ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক নামাযের পর আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে তার বেহেশতে প্রবেশে মৃত্যু ছাড়া অন্য কোন কিছুই বাধা থাকে না। আর যে ব্যক্তি ঘুমানোর সময় তা পাঠ করবে, আল্লাহ্ পাক তার ঘর, তার প্রতিবেশীর ঘর এবং আশপাশের আরও কতক ঘবকে নিরাপদে রাখবেন। বায়হাকী শোআবুল ঈমানে এই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন যে, এটা দুর্বল।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৯৭৫

পরিচ্ছেদঃ ১৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতের পর যিকর-আযকার
৯৭৫। হযরত আব্দুর রহমান ইবনে গানাম (রাযিঃ) নবী পাক (ﷺ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি মাগরিব এবং ফজরের নামাযের সালাম ফেরাবার পরে এবং পা ছড়িয়ে দেয়ার পূর্বে (অর্থাৎ সালাম ফেরাবার সাথে সাথে) দশবার বলবে, “আল্লাহ্ ছাড়া কোন মা'বুদ নেই। তিনি একক। তাঁর কোন শরীক নেই। রাজত্ব তাঁরই। যাবতীয় প্রশংসা তাঁরই। সমগ্র কল্যাণ তাঁরই। তিনি সকলকে জীবিত করেন এবং মৃত্যু দেন। তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান।" তাঁর জন্য প্রত্যেকটি শব্দের বিনিময়ে দশটি করে নেকী লেখা হবে। দশ দশটি করে গুনাহ মোচন করা হবে এবং দশ দশটি করে মর্যাদা বাড়িয়ে দেয়া হবে। এছাড়া তার জন্য প্রত্যেক কুকাজ হতে এটা রক্ষাকবজস্বরূপ হবে এবং এটা শয়তান হতেও বাঁচিযে রাখবে। অধিকন্তু এর দরুন তাকে কোন গুনাহ স্পর্শ করতে পারবে না শিরক ছাড়া; এবং সে হবে সকল মানুষ হতে উত্তম আমলকারী; কিন্তু যে ব্যক্তি তার কথা হতেও উত্তম কথা বলবে সে অবশ্য তার তুলনায়ও উত্তম হবে। -আহমদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৯৭৬

পরিচ্ছেদঃ ১৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতের পর যিকর-আযকার
৯৭৬। তিরমিযী (রহ) আবু যার সূত্রে “শিরক ছাড়া” পর্যন্ত উদ্ধৃত করেছেন এবং সেটিতে “মাগরিবের নামায” ও “তাঁর হাতে সকল কল্যাণ” কথাটি নেই। তিনি বলেছেন, এটি হাসান, সহীহ ও গরীব হাদীছ।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৯৭৭

পরিচ্ছেদঃ ১৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতের পর যিকর-আযকার
৯৭৭। হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, নবী পাক (ﷺ) একবার নজদের দিকে একটি অভিযান প্রেরণ করলেন। তারা বহু যুদ্ধলব্ধ মাল নিয়ে অল্প দিনের মধ্যে ফিরে আসল। এটা দেখে আমাদের মধ্যকার এক ব্যক্তি, যে এই অভিযানে শরীক হয় নি বলল যে, এই অভিযানের তুলনায় এত দ্রুত প্রত্যাবর্তনকারী এবং বহু পরিমাণ গনিমত লাভকারী আর কোন অভিযান আমরা দেখি নি। এ কথা শুনে নবী পাক (ﷺ) বললেন, আমি কি তোমাদেরকে এমন একটি দলের কথা বলব না, যারা ইহাদের তুলনায়ও গনিমত লাভে শ্রেষ্ঠ এবং প্রত্যাবর্তনে দ্রুত। সেই দলটি হলো যারা ফজরের নামায জামাতে পড়ে সূর্যোদয় পর্যন্ত বসে আল্লাহর যিকির করেছ, এরাই হলো প্রত্যাবর্তনে দ্রুততর এবং গনিমত লাভে শ্রেষ্ঠতর।
তিরমিযী এই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন যে, এই হাদীসটি গরীব।
তিরমিযী এই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন যে, এই হাদীসটি গরীব।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৯৭৮

পরিচ্ছেদঃ ১৯. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাতের মাঝে যে সব কাজ করা নাজায়েয ও যে সব কাজ করা জায়েয
৯৭৮। হযরত মুআবিয়া ইবনে হাকাম (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি রাসূলুক্লাহ (ﷺ)-এর সাথে নামায পড়ছিলাম। (এমন সময়) হঠাৎ একটি লোক হাঁচি দিয়ে উঠল। আমি তাতে “ইয়ারহামুকাল্লাহ” অর্থাৎ “আল্লাহ্ তোমাকে রহম করুন” বললাম। এতে (নামাযে রত) লোকজন আমার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাল। আমি বললাম, কি ব্যাপার তোমরা আমার দিকে এভাবে তাকাচ্ছ কেন? আমার এই কথায় তারা তাদের উরুর উপর হাত চাপড়াল, আমি বুঝতে পারলাম যে, তারা আমাকে নীরব থাকতে বলছে। (আমার তাতে রাগ আসল কিন্তু) আমি নীরব হলাম। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নামায শেষ করলেন। আমার পিতা-মাতা তাঁর উপর কুরবান হউক। তাঁর ন্যায় উত্তম কোন উপদেশদাতা আমি পূর্বেও দেখি নি এবং পরেও দেখি নি। আল্লাহর কসম! তিনি আমাকে কোনরূপ তিরস্কার করলেন না, সাজা দিলেন না এবং গালি-ভর্ৎসনাও করলেন না; বরং আমাকে বললেন, শোন নামাযের মধ্যে মানুষের সাধারণ কথাবার্তার ন্যায় কোন কথাবার্তা বলা ঠিক নয়। কেননা নামায হল শুধু তাকবীর, তাসবীহ এবং কুরআনের সূরা-কিরাত পাঠের নাম। অথবা এই ধরনের কোন কথা বললেন।
আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)! আমি তো এই সেইদিন পর্যন্তও অন্ধকার যুগের অজ্ঞতায় আচ্ছন্ন ছিলাম। এমন সময় আল্লাহ্ আমাকে ইসলামের আলো দান করেছেন। তারপর আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)! আমাদের মধ্যকার কোন কোন লোক যে গণকদের নিকট গিয়ে ভবিষ্যৎ ও অদৃশ্যের বিষয় জানতে চায় (ইহা ঠিক কি-না?) তিনি বললেন, তাদের নিকট কখনও যাবে না। আমি বললাম, আমাদের মধ্যে কতক লোক আছে যারা যাত্রার শুভাশুভ বিচার করে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, হ্যাঁ মনের মধ্যে এই ধরনের কল্পনা সৃষ্টি হয়, তবে তা যেন মন হতে আল্লাহর নির্ভরতা দূর করে না দেয়। বর্ণনাকারী বলেন, আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)! আমাদের মধ্যে কতক লোক যমিনের উপর রেখা টেনে ভবিষ্যদ্বাণী করে থাকে। তিনি (ﷺ) বললেন, হ্যাঁ, নবীদের মধ্যে একজন নবী এরূপ করতেন। যদি কারো রেখা সেই নবীর রেখার অনুরূপ হয় তবে তা ঠিক হবে। —মুসলিম
আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)! আমি তো এই সেইদিন পর্যন্তও অন্ধকার যুগের অজ্ঞতায় আচ্ছন্ন ছিলাম। এমন সময় আল্লাহ্ আমাকে ইসলামের আলো দান করেছেন। তারপর আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)! আমাদের মধ্যকার কোন কোন লোক যে গণকদের নিকট গিয়ে ভবিষ্যৎ ও অদৃশ্যের বিষয় জানতে চায় (ইহা ঠিক কি-না?) তিনি বললেন, তাদের নিকট কখনও যাবে না। আমি বললাম, আমাদের মধ্যে কতক লোক আছে যারা যাত্রার শুভাশুভ বিচার করে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, হ্যাঁ মনের মধ্যে এই ধরনের কল্পনা সৃষ্টি হয়, তবে তা যেন মন হতে আল্লাহর নির্ভরতা দূর করে না দেয়। বর্ণনাকারী বলেন, আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)! আমাদের মধ্যে কতক লোক যমিনের উপর রেখা টেনে ভবিষ্যদ্বাণী করে থাকে। তিনি (ﷺ) বললেন, হ্যাঁ, নবীদের মধ্যে একজন নবী এরূপ করতেন। যদি কারো রেখা সেই নবীর রেখার অনুরূপ হয় তবে তা ঠিক হবে। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান