মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

مشكاة المصابيح للتبريزي

৫- নামাযের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন

হাদীস নংঃ ৮১২
details icon

পরিচ্ছেদঃ ১১. প্রথম অনুচ্ছেদ - তাকবীরে তাহরীমার পর যা পড়তে হয়
৮১২। হযরত আবু হুরায়রাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাকবীরে তাহরীমা এবং কিরাতের মাঝখানে কিছু সময় নীরব থাকতেন। একবার আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)! আমার পিতামাতা আপনার প্রতি উৎসর্গিত। আপনি তাকবীর এবং কিরাতের মাঝখানে যে (কিছু সময়) নীরব থাকেন ঐ সময় কি বলেন? তিনি বললেন, আমি বলি, হে আল্লাহ্! আমার এবং গুনাহসমূহের মধ্যে ব্যবধান করে দিন, যেভাবে আপনি মাশরেক ও মাগরেবের মধ্যে ব্যবধান করেছেন। হে আল্লাহ্! আপনি আমাকে গুনাহ হতে পরিষ্কার করে দিন, যেভাবে সাদা কাপড়কে ময়লা হতে পরিষ্কার করা হয়। হে আল্লাহ্! আপনি আমার গুনাহসমূহকে পানি, বরফ এবং মুষলধারায় বৃষ্টি দ্বারা ধুয়ে ফেলুন। -বুখারী, মুসলিম

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নংঃ ৮১৩
details icon

পরিচ্ছেদঃ ১১. প্রথম অনুচ্ছেদ - তাকবীরে তাহরীমার পর যা পড়তে হয়
৮১৩। হযরত আলী (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, নবী পাক (ﷺ) যখন নামাযের জন্য দাঁড়াতেন, বর্ণনান্তরে রয়েছে, যখন নামায শুরু করতেন, তাকবীরে তাহরীমা বলতেন। তারপর বলতেন, আমি যাবতীয় দিক হতে মুখ ফিরিয়ে আমার মুখ ফিরিয়েছি তাঁর দিকে। যিনি আসমান ও যমিনের সৃষ্টিকর্তা এবং আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই। নিশ্চয় আমার নামায, আমার কুরবানী, আমার জীবন এবং আমার মরণ সারা জাহানের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। তাঁর কোন অংশীদার নেই। আর এরই জন্য আমি আদিষ্ট হয়েছি এবং আমি মুসলমানদের অন্তর্গত। হে আল্লাহ্! আপনিই রাজাধিরাজ। আপনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই। আপনি আমার প্রভু এবং আমি আপনার দাসানুদাস। আমি আমার নিজের উপর জুলুম করেছি এবং আমি আমার অন্যায়-অপরাধ স্বীকার করছি; সুতরাং আপনি আমার যাবতীয় অপরাধ মাফ করুন। নিশ্চয় আপনি ছাড়া আর কেউ অপরাধসমূহ মাফ করতে পারে না। আপনি আমাকে উত্তম চরিত্রের পথে পরিচালিত করুন। আপনি ছাড়া উত্তম চরিত্রের পথে আর কেউ পরিচালিত করতে পারে না। আপনি আমা হতে মন্দ আচরণকে দূরে রাখুন। আপনি ছাড়া অপর কেউ আমাকে তা হতে দূরে রাখতে পারে না। হে আল্লাহ্! আমি আপনার নিকটে উপস্থিত আছি এবং আপনার আদেশ পালনে প্রস্তুত আছি। যাবতীয় কল্যাণই আপনার হাতে এবং কোন অকল্যাণই আপনার দ্বারা হয় না। আমি আপনার সাহায্যেই প্রতিষ্ঠিত আছি এবং আপনারই দিকে প্রত্যাবর্তন করছি। আপনি মঙ্গলময়। আপনি উচ্চ। আমি আপনার নিকট ক্ষমা ভিক্ষা করছি এবং আপনার দিকেই মুখ ফেরাচ্ছি।
আর যখন তিনি রুকূ করতেন, তখন বলতেন, হে আল্লাহ্! আমি আপনারই জন্য রুকূ করলাম এবং আপনাকেই বিশ্বাস করলাম। আর আপনারই নিকট আত্মসমর্পণ করলাম। আপনার নিকটই অবনত আমার শ্রবণশক্তি, আমার দৃষ্টিশক্তি, আমার মজ্জা, আমার অস্থি এবং শিরা-উপশিরা। এরপর মাথা উঠিয়ে বলতেন, হে আল্লাহ্! হে আমাদের প্রতিপালক! আপনারই প্রশংসায় যাবতীয় আসমান ও যমিন এবং তার মধ্যকার সকল কিছু ন্যস্ত রয়েছে।
আর যখন তিনি সিজদাহ করতেন, তখন বলতেন, হে আল্লাহ্! আমি আপনারই উদ্দেশ্যে সিজদাহ করছি এবং আপনাকেই বিশ্বাস করছি। আর আপনারই প্রতি আত্মসমর্পণ করছি। আমার চেহারা তাঁরই উদ্দেশ্যে সিজদাহ করল, যিনি তাকে সৃষ্টি করেছেন এবং তার আকৃতি দান করেছেন। আর তার কান এবং চক্ষু খুলে দিয়েছেন। তিনিই মঙ্গলময় আল্লাহ্, শ্রেষ্ঠ সৃষ্টিকর্তা। এরপর তিনি সবশেষে তাশাহহুদ এবং সালামের মাঝখানে যা বলতেন, তা হলো এইঃ হে আল্লাহ্! আমাকে মাফ করুন। আমার পূর্বকৃত কাজগুলো এবং যা পরে করব। আর যা আমি গোপনে করেছি এবং প্রকাশ্যে করেছি। যা সীমাতিরিক্ত করেছি। আর যা আপনি আমার চেয়ে অধিক জানেন। আপনিই আদি, আপনিই শেষ। আপনি ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই। -মুসলিম
ইমাম শাফেয়ীর এক বর্ণনায় আছে, মন্দ আপনার জন্য নয় এবং সুপথ লাভ করেছে সে-ই, যাকে আপনি সুপথ দেখিয়েছেন। আমি আপনারই সাহায্যে বহাল রয়েছি এবং আপনারই দিকে প্রত্যাবর্তন করছি। আপনার হাত হতে রক্ষা পাওয়ার কোন স্থান নেই এবং আপনি ব্যতীত আশ্রয় লাভেরও কোন স্থান নেই। আপনি মঙ্গলময়।

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নংঃ ৮১৪
details icon

পরিচ্ছেদঃ ১১. প্রথম অনুচ্ছেদ - তাকবীরে তাহরীমার পর যা পড়তে হয়
৮১৪। হযরত আনাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত রয়েছে, এক ব্যক্তি এসে নামাযের কাতারে প্রবেশ করল। সে তখন হ্যাঁপাচ্ছিল। সে বলল, “আল্লাহু আকবার, আলহামদু লিল্লাহি হামদান কাছীরান তাইয়্যিবান, মুবারাকান ফীহি” অর্থাৎ আল্লাহ অতি মহান আল্লাহর জন্য যাবতীয় প্রশংসা। তিনি পবিত্র এবং মঙ্গলময়। এরপর যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নামায শেষ করলেন। তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে এই কথাগুলো কে বলেছে? সকলে নীরব রইল। তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের মধ্যে কথাগুলো কে বলেছে? (তখনও) সকলে নীরব রইল। তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের মধ্যে কে এই কথাগুলো বলেছে? সে খারাপ কোন কথা বলেনি। তখন একটি লোক বলে উঠল, ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)! আমি। আমিই ওই কথাগুলো বলেছি। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললন, আমি বারজন ফিরিশতাকে দেখেছি, তারা তা নিয়ে আল্লাহর দরবারে কে প্রথম যেতে পারে তজ্জন্য তাড়াহুড়া করছে।—মুসলিম

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান