আল-আদাবুল মুফরাদ- ইমাম বুখারী রহঃ

الأدب المفرد للبخاري

আল-আদাবুল মুফরাদের পরিচ্ছেদসমূহ - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:৯২৯
৪১৭. যে হাঁচি দেয় তাহার জবাব দেওয়া
৯২৯. হযরত আব্দুর রহমান ইব্‌ন যিয়াদ আফ্রীকী তাঁহার পিতার প্রমুখাৎ বর্ণনা করেন যে, তিনি বলিয়াছেন, তাঁহারা হযরত মু’আবিয়া (রাযিঃ)-এর আমলে নৌ-যুদ্ধে যোদ্ধা ছিলেন। (তিনি বলেন) একদা যখন আমাদের জাহাজ হযরত আবু আইয়ুব আনসারীর জাহাজের নিকটবর্তী হইল এবং আমাদের দুপুরের খাওয়ার সময় হইল, তখন আমরা তাঁহাকে আনার জন্য তাঁহার জাহাজে লোক পাঠাইলাম। তিনি আসিয়া বলিলেনঃ তোমরা আমাকে দাওয়াত করিয়াছ অথচ আমি রোযা অবস্থায় আছি। এতদসত্ত্বেও আমি যে তোমাদের আহবানে সাড়া দিলাম, তাহার কারণ হইতেছে আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলিতে শুনিয়াছি, এক মুসলমানের উপর তাহার অপর মুসলমান ভাইয়ের ছয়টি অনিবার্য কাজ রহিয়াছে। যদি তাহার একটাও কেহ লংঘন করে তবে সে একটি ওয়াজিব হক লঙ্ঘন যাহা তাহার উপর তাহার ভাইয়ের হক ছিল।
১. যখন তাহার সাথে সাক্ষাৎ করিবে তখন তাহাকে সালাম দিবে।
২. যখন সে তাহাকে আহবান করিবে বা দাওয়াত করিবে তখন তাহার আহ্বানে সাড়া দিবে।
৩. সে যখন হাঁচি দিবে তখন (ইয়ারহামুকাল্লাহ্) বলিয়া তাহার হাঁচির জবাব দিবে।
৪. যখন সে রোগগ্রস্ত হইবে, তখন তাহাকে দেখিতে যাইবে।
৫. সে যখন ইন্তিকাল করিবে, তখন তাহার দাফন-কাফনে অংশগ্রহণ করিবে এবং
৬. সে যখন পরামর্শ চাহিবে, তখন তাহাকে উত্তম পরামর্শ দিবে।
বর্ণনাকারী বলেনঃ আমাদের সাথে (ঐ অভিযানে) একজন হাস্যরসিক লোকও ছিলেন। সে আমাদের সাথে ভোজনে শামিল এক ব্যক্তিকে বলিল, ‘জাযাকাল্লাহু খায়রান ওবার্রান’ --আল্লাহ্ তোমাকে উত্তম প্রতিদান দিন। কিন্তু বারবার তাহাকে এইরূপ বলিলে সে ব্যক্তি ক্ষেপিয়া যাইত। তখন সেই হাস্যরসিক ব্যক্তিটি হযরত আবু আইয়ুব (রাযিঃ)-কে জিজ্ঞাসা করিল (হুযুর) এই লোকটি সম্পর্কে আপনি কী বলেন, যদি আমি তাহাকে জাযাকাল্লাহু খায়রান ও বার্রান’ বলি তখন সে ক্ষেপিয়া যায় এবং আমাকে গালি দিতে শুরু করে। হযরত আবু আইয়ুব (রাযিঃ) বলেনঃ আমি বলি মঙ্গলে যাহাকে সাজে না অমঙ্গলেই তাহাকে সাজে, সুতরাং তাহার জন্য উহা পাল্টাইয়া দাও। তখন ঐ লোকটি তাহার নিকটে আসিলে তাহাকে বলিল, ‘জাযাকাল্লাহু ওয়া শার্রান ওয়া আর্রা’ “আল্লাহ্ তোমাকে অমঙ্গল ও কঠোর প্রতিদান দিন!” তখন সে ব্যক্তি হাসিয়া উঠিল এবং প্রসন্ন হইয়া গেল এবং বলিয়া উঠিল, তুমি বুঝি তোমার হাস্য-রসিকতা ছাড়িতে পার না! তখন সে বলিলঃ আল্লাহ্ আবু আইয়ুব আনসারীকে উত্তম প্রতিদান দিন! (কেননা তাঁহার পরামর্শেই তো ইহা হইল!)
بَابُ تَشْمِيتِ الْعَاطِسِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلامٍ , قَالَ : أَخْبَرَنَا الْفَزَارِيُّ ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ زِيَادِ بْنِ أَنْعَمَ الإِفْرِيقِيِّ , قَالَ : حَدَّثَنِي أَبِي ، أَنَّهُمْ كَانُوا غُزَاةً فِي الْبَحْرِ زَمَنَ مُعَاوِيَةَ ، فَانْضَمَّ مَرْكَبُنَا إِلَى مَرْكَبِ أَبِي أَيُّوبَ الأَنْصَارِيِّ ، فَلَمَّا حَضَرَ غَدَاؤُنَا أَرْسَلْنَا إِلَيْهِ ، فَأَتَانَا , فَقَالَ : دَعَوْتُمُونِي وَأَنَا صَائِمٌ ، فَلَمْ يَكُنْ لِي بُدٌّ مِنْ أَنْ أُجِيبَكُمْ ، لأَنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ : " إِنَّ لِلْمُسْلِمِ عَلَى أَخِيهِ سِتَّ خِصَالٍ وَاجِبَةٍ ، إِنْ تَرَكَ مِنْهَا شَيْئًا فَقَدْ تَرَكَ حَقًّا وَاجِبًا لأَخِيهِ عَلَيْهِ : يُسَلِّمُ عَلَيْهِ إِذَا لَقِيَهُ ، وَيُجِيبُهُ إِذَا دَعَاهُ ، وَيُشَمِّتُهُ إِذَا عَطَسَ ، وَيَعُودُهُ إِذَا مَرِضَ ، وَيَحْضُرُهُ إِذَا مَاتَ ، وَيَنْصَحُهُ إِذَا اسْتَنْصَحَهُ " ، قَالَ : وَكَانَ مَعَنَا رَجُلٌ مَزَّاحٌ , يَقُولُ لِرَجُلٍ أَصَابَ طَعَامَنَا : جَزَاكَ اللَّهُ خَيْرًا وَبِرًّا ، فَغَضِبَ عَلَيْهِ حِينَ أَكْثَرَ عَلَيْهِ ، فَقَالَ لأَبِي أَيُّوبَ : مَا تَرَى فِي رَجُلٍ إِذَا قُلْتُ لَهُ : جَزَاكَ اللَّهُ خَيْرًا وَبِرًّا ، غَضِبَ وَشَتَمَنِي ؟ ، فَقَالَ أَبُو أَيُّوبَ : إِنَّا كُنَّا نَقُولُ : إِنَّ مَنْ لَمْ يُصْلِحْهُ الْخَيْرُ أَصْلَحْهُ الشَّرُّ ، فَاقْلِبْ عَلَيْهِ ، فَقَالَ لَهُ حِينَ أَتَاهُ : جَزَاكَ اللَّهُ شَرًّا وَعَرًّا ، فَضَحِكَ وَرَضِيَ ، وَقَالَ : مَا تَدَعُ مُزَاحَكَ ، فَقَالَ الرَّجُلُ : جَزَى اللَّهُ أَبَا أَيُّوبَ الأَنْصَارِيَّ خَيْرًا
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

explanationহাদীসের ব্যাখ্যা
হাদীস নং:৯৩০
৪১৭. যে হাঁচি দেয় তাহার জবাব দেওয়া
৯৩০. হযরত আবু মাসউদ (রাযিঃ) বলেন, নবী করীম (ﷺ) বলিয়াছেনঃ এক মুসলমানের উপর অপর মুসলমানের চারটি হক রহিয়াছেঃ
১. যখন সে অসুস্থ হয়, তখন তাহাকে দেখিতে যাইবে।
২. সে যখন মৃত্যুমুখে পতিত হইবে, তখন তাহার জানাযায় শামিল হইবে।
৩. সে যখন তাহাকে আহবান করিবে, তখন সে তাহার আহবানে (বা দাওয়াতে) সাড়া দিবে এবং
৪. সে যখন হাঁচি দিবে, তখন তাহার হাঁচির জবাব দিবে।
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ، قَالَ‏:‏ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ‏:‏ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْحَمِيدِ بْنُ جَعْفَرٍ قَالَ‏:‏ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ حَكِيمِ بْنِ أَفْلَحَ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ‏:‏ أَرْبَعٌ لِلْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ‏:‏ يَعُودُهُ إِذَا مَرِضَ، وَيَشْهَدُهُ إِذَا مَاتَ، وَيُجِيبُهُ إِذَا دَعَاهُ، وَيُشَمِّتُهُ إِذَا عَطَسَ‏.‏
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৯৩১
৪১৭. যে হাঁচি দেয় তাহার জবাব দেওয়া
৯৩১. হযরত বারা ইব্‌ন আযিব (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমাদিগকে সাতটি কাজের আদেশ দিয়াছেন এবং সাতটি কাজ হইতে বারণ করিয়াছেন। যে সাতটি কাজের আদেশ করিয়াছেন তাহা হইলঃ ১. অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখিতে যাওয়া, ২. জানাযায় শরীক হওয়া, ৩. যে হাঁচি দেয়, তাহার হাঁচির জবাব দেওয়া, ৪. প্রতিজ্ঞা পালন, ৫. উৎপীড়িতের সাহায্য, ৬. সালামের বহুল প্রচলন এবং ৭. আহবানকারীর আহবানে সাড়া দেওয়া এবং তিনি আমাদিগকে বারণ করিয়াছেনঃ ১. স্বর্ণের আংটি, ২. রৌপ্যের বাসনপত্র, ৩. গদীর উপর নরম বিলাসবহুল রেশমী চাদর, ৪. অচল মুদ্রা এবং ৫. ইসতিবরাক (তসর), ৬. দীবাজ, (খাঁটি রেশমী কাপড়) এবং ৭. হারীর খাঁটি রেশমী পোশাক হইতে।
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلاَمٍ، قَالَ‏:‏ أَخْبَرَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ أَشْعَثَ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ سُوَيْدٍ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ قَالَ‏:‏ أَمَرَنَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِسَبْعٍ، وَنَهَانَا عَنْ سَبْعٍ‏:‏ أَمَرَنَا بِعِيَادَةِ الْمَرِيضِ، وَاتِّبَاعِ الْجَنَائِزِ، وَتَشْمِيتِ الْعَاطِسِ، وَإِبْرَارِ الْمُقْسِمِ، وَنَصْرِ الْمَظْلُومِ، وَإِفْشَاءِ السَّلاَمِ، وَإِجَابَةِ الدَّاعِي‏.‏ وَنَهَانَا عَنْ‏:‏ خَوَاتِيمِ الذَّهَبِ، وَعَنْ آنِيَةِ الْفِضَّةِ، وَعَنِ الْمَيَاثِرِ، وَالْقَسِّيَّةِ، وَالإِسْتَبْرَقِ، وَالدِّيبَاجِ، وَالْحَرِيرِ‏.‏
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

explanationহাদীসের ব্যাখ্যা
হাদীস নং:৯৩২
৪১৭. যে হাঁচি দেয় তাহার জবাব দেওয়া
৯৩২. হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ এক মুসলমানের উপর অপর মুসলমানের ছয়টি হক রহিয়াছে। জিজ্ঞাসা করা হইল, সেই হকগুলি কি কি ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তিনি বলিলেনঃ
১. যখন তুমি তাহার সহিত সাক্ষাৎ করিবে, তখন তাহাকে সালাম দিবে।
২. সে যখন তোমাকে আহবান করিবে, তখন তাহার আহবানে সাড়া দিবে।
৩. সে যখন তোমার কাছে পরামর্শ চাহিবে, তখন উত্তম পরামর্শ দিবে।
৪. সে যখন হাঁচি দিয়া (আল-হামদুলিল্লাহ্ বলিয়া) আল্লাহ্‌র প্রশংসা করিবে, তখন তাহার জবাব দিবে।
৫. সে যখন অসুস্থ হইবে, তখন তাহাকে দেখিতে যাইবে এবং
৬. সে যখন মৃত্যুমুখে পতিত হইবে, তখন তাহার জানাযায় ও দাফন-কাফনে শরীক হইবে।
وَعَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ جَعْفَرٍ، عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ‏:‏ حَقُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ سِتٌّ، قِيلَ‏:‏ مَا هِيَ يَا رَسُولَ اللهِ‏؟‏ قَالَ‏:‏ إِذَا لَقِيتَهُ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ، وَإِذَا دَعَاكَ فَأَجِبْهُ، وَإِذَا اسْتَنْصَحَكَ فَانْصَحْ لَهُ، وَإِذَا عَطَسَ فَحَمِدَ اللَّهَ فَشَمِّتْهُ، وَإِذَا مَرِضَ تَعُودُهُ، وَإِذَا مَاتَ فَاتَّبِعْهُ‏.‏
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

explanationহাদীসের ব্যাখ্যা