আল-আদাবুল মুফরাদ- ইমাম বুখারী রহঃ

الأدب المفرد للبخاري

আল-আদাবুল মুফরাদের পরিচ্ছেদসমূহ - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:৭৫২
৩১৭- মেহমানের সম্মুখে খাবার দিয়া নিজে নামাযে দাঁড়াইয়া যাওয়া
৭৫২. নু'আয়ম ইবন কানাব বলেন, আমি হযরত আবু যারের বাড়িতে গিয়া তাঁহাকে ঘরে পাইলাম না। আমি তাঁহার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করিলাম, আবু যার কোথায় ? জবাবে তিনি বলিলেনঃ কোন কাজে বাহিরে গিয়াছেন, এখনই হয়ত আসিয়া পড়িবেন। সুতরাং আমি তাঁহার অপেক্ষায় বসিয়া রহিলাম। এমন সময় তিনি আসিলেন। সঙ্গে তাঁহার দুইটি উট, একটির পিছনে আরেকটি বাঁধা, প্রত্যেকটির ঘাড়ে একটি করিয়া মশক ঝুলিতেছিল। তিনি প্রথমে এইগুলি নামাইলেন তারপরে আসিলেন। আমি বলিলাম, আবু যার যাহাদের সহিত আমি সাক্ষাৎ করি তাঁহাদের মধ্যে আপনার চাইতে প্রিয়তর আর আমার কাছে কেহই নাই, আবার এ ধরনের লােকদের মধ্যে আপনার চাইতে অপ্রিয়ও আমার কাছে আর কেহই নাই। তিনি বলিলেন, আমার পিতা তােমার জন্য কুরবান হউক। তিনি বলিলেন, এই পরস্পর বিরােধী দুইটি একত্র হইল কেমন করিয়া তাহা বলুন! আমি জাহেলিয়াতের যুগে একটি কন্যা সন্তানকে জীবন্ত প্রােথিত করিয়াছি। আমার ভয় হয় আপনার সহিত সাক্ষাৎ করিলেই আপনি বলিবেন, তােমার তাওবা বা নিষ্কৃতির কোন ব্যবস্থাই নাই। আবার এই আশাও মনে জাগে, হয়ত বা আপনি বলিবেন, তােমার তাওবা ও নিষকৃতির ব্যবস্থা আছে। তিনি বলিলেনঃ তুমি এটি জাহেলিয়াতের যুগে করিয়াছিলে না? আমি বলিলাম, জী-হ্যা! তিনি বলিলেন, অতীতের গুনাহসমূহ আল্লাহ্ মাফ করিয়া দিয়াছেন। তিনি তাঁহার স্ত্রীকে বলিলেনঃ খাবার নিয়া আস। মহিলাটি তাহাতে অস্বীকৃতি জানাইলেন। তিনি পুনরায় তাঁহাকে এই আদেশ করিলেন আর মহিলাটিও, পুনরায় অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করিলেন। এমন কি বাদানুবাদে স্বরউচ্চ মাত্রায় উঠিল। তিনি বলিলেন, ওহে তােমরা তাে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর বাণীর ধারও ধার না। আমি বলিলাম রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ), উহাদের সম্পর্কে কি বলিয়াছেন? রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেন, নারী জাতি হইতেছে পাঁজরের বাঁকা হাড়। তুমি যদি উপড়ে সােজা করিতে যাও তবে উহাকে ভাঙিয়া ফেলিবে। যদি (তাহাদের অবস্থার উপর ছাড়িয়া দিয়া) তাহাদের সহিত সৌজন্যমূলক আচরণ করিয়া যাও তবুও তাহাদের মধ্যে বক্রতা ও কোমলতা দুইটিই আছে। (একথা শুনিয়া) মহিলাটি চলিয়া গেলেন এবং সারীদ (ঝােলের মধ্যে প্রদত্ত রুটি) লইয়া বিড়ালের মত চুপিসারে ফিরিয়া আসিলেন। তখন আবু যার (রাযিঃ) আমাকে বলিলেন, তুমি খাও, আমার কথা ভাবিও না। আমি রােযা আছি। অতঃপর তিনি নামায পড়িতে দাঁড়াইয়া গেলেন এবং অত্যন্ত ধীরে সুস্থে রুকূ (সিজ্দা) করিলেন। অতঃপর নামাযান্তে তিনি আসিয়া খাওয়া আরম্ভ করিলেন। আমি বলিয়া উঠিলাম, ইন্না লিল্লাহ্! আমি তাে কোনদিন এইরূপ আশা করি নাই যে, আপনি আমার সাথে মিথ্যা কথা বলিবেন। তিনি বলিলেনঃ তােমার পিতা আমার জন্য কুরবান হউক, তুমি সাক্ষাত করা অবধি তােমার সাথে একটা মিথ্যা কথাও বলি নাই। আমি বলিলাম, কেন আপনি কি বলেন নাই যে, আপনি রােযা আছেন? তিনি বলিলেন ও হ্যা আমি এই মাসের তিনদিন রােযা রাখিয়াছি সুতরাং পূর্ণ মাসের সাওয়াব আমার জন্য হইয়া গিয়াছে এবং অবশিষ্ট দিনগুলিতে খাওয়া-দাওয়া আমার জন্য লিপিবদ্ধ সিদ্ধ হইয়া গিয়াছে। (তাই মেহমানের খাতিরে নফল রােযা ভাঙিয়াই খাইতে বসিয়াছি।)
بَابُ مَنْ قَدَّمَ إِلَى ضَيْفِهِ طَعَامًا فَقَامَ يُصَلِّي
حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، قَالَ‏:‏ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ قَالَ‏:‏ حَدَّثَنِي الْجُرَيْرِيُّ، قَالَ‏:‏ حَدَّثَنَا أَبُو الْعَلاَءِ بْنُ عَبْدِ اللهِ، عَنْ نُعَيْمِ بْنِ قَعْنَبٍ قَالَ‏:‏ أَتَيْتُ أَبَا ذَرٍّ فَلَمْ أُوَافِقْهُ، فَقُلْتُ لِامْرَأَتِهِ‏:‏ أَيْنَ أَبُو ذَرٍّ‏؟‏ قَالَتْ‏:‏ يَمْتَهِنُ، سَيَأْتِيكَ الْآنَ، فَجَلَسْتُ لَهُ، فَجَاءَ وَمَعَهُ بَعِيرَانِ، قَدْ قَطَرَ أَحَدَهُمَا بِعَجُزِ الْآخَرِ، فِي عُنُقِ كُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا قِرْبَةٌ، فَوَضَعَهُمَا ثُمَّ جَاءَ، فَقُلْتُ‏:‏ يَا أَبَا ذَرٍّ، مَا مِنْ رَجُلٍ كُنْتُ أَلْقَاهُ كَانَ أَحَبَّ إِلَيَّ لُقْيًا مِنْكَ، وَلاَ أَبْغَضَ إِلَيَّ لُقْيًا مِنْكَ، قَالَ‏:‏ لِلَّهِ أَبُوكَ، وَمَا جَمَعَ هَذَا‏؟‏ قَالَ‏:‏ إِنِّي كُنْتُ وَأَدْتُ مَوْءُودَةً فِي الْجَاهِلِيَّةِ أَرْهَبُ إِنْ لَقِيتُكَ أَنْ تَقُولَ‏:‏ لاَ تَوْبَةَ لَكَ، لاَ مَخْرَجَ لَكَ، وَكُنْتُ أَرْجُو أَنْ تَقُولَ‏:‏ لَكَ تَوْبَةٌ وَمَخْرَجٌ، قَالَ‏:‏ أَفِي الْجَاهِلِيَّةِ أَصَبْتَ‏؟‏ قُلْتُ‏:‏ نَعَمْ، قَالَ‏:‏ عَفَا اللَّهُ عَمَّا سَلَفَ‏.‏ وَقَالَ لِامْرَأَتِهِ‏:‏ آتِينَا بِطَعَامٍ، فَأَبَتَ، ثُمَّ أَمَرَهَا فَأَبَتَ، حَتَّى ارْتَفَعَتْ أَصْوَاتُهُمَا، قَالَ‏:‏ إِيهِ، فَإِنَّكُنَّ لاَ تَعْدُونَ مَا قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قُلْتُ‏:‏ وَمَا قَالَ رَسُولُ اللهِ فِيهِنَّ‏؟‏ قَالَ‏:‏ إِنَّ الْمَرْأَةَ خُلِقَتْ مِنْ ضِلَعٍ، وَإِنَّكَ إِنْ تُرِدْ أَنْ تُقِيمَهَا تَكْسِرُهَا، وَإِنْ تُدَارِهَا فَإِنَّ فِيهَا أَوَدًا وَبُلْغَةً، فَوَلَّتْ فَجَاءَتْ بِثَرِيدَةٍ كَأَنَّهَا قَطَاةٌ، فَقَالَ‏:‏ كُلْ وَلاَ أَهُولَنَّكَ فَإِنِّي صَائِمٌ، ثُمَّ قَامَ يُصَلِّي، فَجَعَلَ يُهَذِّبُ الرُّكُوعَ، ثُمَّ انْفَتَلَ فَأَكَلَ، فَقُلْتُ‏:‏ إِنَّا لِلَّهِ، مَا كُنْتُ أَخَافُ أَنْ تَكْذِبَنِي، قَالَ‏:‏ لِلَّهِ أَبُوكَ، مَا كَذَبْتُ مُنْذُ لَقِيتَنِي، قُلْتُ‏:‏ أَلَمْ تُخْبِرْنِي أَنَّكَ صَائِمٌ‏؟‏ قَالَ‏:‏ بَلَى، إِنِّي صُمْتُ مِنْ هَذَا الشَّهْرِ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ فَكُتِبَ لِي أَجْرُهُ، وَحَلَّ لِيَ الطَّعَامُ‏.‏
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

explanationহাদীসের ব্যাখ্যা