আল-আদাবুল মুফরাদ- ইমাম বুখারী রহঃ
الأدب المفرد للبخاري
আল-আদাবুল মুফরাদের পরিচ্ছেদসমূহ - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১ টি
অনুসন্ধান করুন...
হাদীস নং:৩৯৮
১৮৮- লোকের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করা
৩৯৮। হযরত আওফ ইব্ন হারিস যিনি মায়ের দিক হইতে হযরত আয়েশার ভ্রাতুষ্পুত্র ছিলেন—বর্ণনা করেন যে, কেহ আসিয়া হযরত আয়েশা (রাযিঃ)-কে বলিল যে, হযরত আব্দুল্লাহ্ ইব্ন যুবায়র (রাযিঃ) হযরত আয়েশার একটি বিক্রী চুক্তি বা প্রদত্ত দান সম্পর্কে বলিয়াছেনঃ আল্লাহ্র কসম, যদি উহা হইতে তিনি বিরত না হন, তবে আমি এই কাজে তাহাকে বাধা প্রদান করিব। হযরত আয়েশা (রাযিঃ) জিজ্ঞাসা করিলেন, সেই কি উহা বলিয়াছে ? সকলে বলিল, হ্যাঁ, তিনিই তো বলিয়াছেন। তখন হযরত আয়েশা (রাযিঃ) বলিলেন, তাহা হইলে আমি আল্লাহ্র নামে শপথ করিতেছি যে, ইব্ন যুবায়রের সহিত কোন দিন কথা বলিব না। ইব্ন যুবায়র (রাযিঃ) যখন দেখিলেন যে, তাঁহার সহিত হযরত আয়েশা (রাযিঃ)-এর এই সম্পর্কচ্ছেদ দীর্ঘতর হইতেছে—তিনি কতিপয় মুহাজির সাহাবীকে এই ব্যাপারে তাঁহার নিকট সুপারিশ করিবার জন্য ধরিলেন। কিন্তু আয়েশা (রাযিঃ) বলিলেন, আল্লাহ্র কসম! এই ব্যাপারে আমি কাহারও সুপারিশ গ্রহণ করিব না বা আমার শপথও ভঙ্গ করিব না। ইব্ন যুবায়র (রাযিঃ) দেখিলেন যে, এই সম্পর্কচ্ছেদ দীর্ঘতর হইতেছে, তখন তিনি হযরত মিস্ওয়ার ইব্ন মাখরামা এবং আব্দুর রহমান ইব্ন আস্ওয়াদ ইব্ন আব্দে ইয়াগুসকে ধরিলেন। তাঁহারা উভয়ে বনু যুহরার লোক ছিলেন। ইব্নুয্ যুবায়র (রাযিঃ) তাহাদিগকে বলেন, দোহাই আল্লাহ্র, আপনারা আমাকে লইয়া হযরত আয়েশার নিকট চলুন এবং বলুন যে, তাঁহার জন্য আমার সহিত সম্পর্কচ্ছেদের কসম খাওয়া ঠিক নহে। মিসওয়ার ও আব্দুর রহমান (রাযিঃ) তখন তাঁহাদের চাদর দ্বারা ইব্ন যুবায়রকে ঢাকিয়া লইয়া তাঁহাকেসহ হযরত আয়েশার নিকট গিয়া পৌছিলেন এবং তাঁহার দ্বারপ্রান্তে গিয়া বলিলেন, আস্সালামু আলাইকি ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু—আমরা কি আসিতে পারি ? হযরত আয়েশা (রাযিঃ) বলিলেন, আসুন। তাঁহারা দুইজনে বলিলেনঃ আমরা সকলেই কি আসিব হে মুসলিমকুল জননী! আয়েশা বলিলেনঃ হ্যাঁ আপনারা সকলেই আসিতে পারেন। তিনি জানিতেন না যে, তাঁহাদের সহিত ইব্ন যুবায়রও রহিয়াছেন। তাঁহারা যখন ঘরে প্রবেশ করিলেন, তখন ইবনুয যুবায়র (রাযিঃ) পর্দার ভিতরে (অন্দরে) চলিয়া গেলেন এবং হযরত আয়েশা (রাযিঃ)-কে জড়াইয়া ধরিয়া আল্লাহ্র দোহাই দিয়া কাঁদিতে কাঁদিতে তাঁহার সহিত কথা বলিবার জন্য আবেদন করিতে লাগিলেন। এদিকে মিস্ওয়ার ও আব্দুর রহমানও ইব্নু যুবায়রের ওযরখাহী মানিয়া লইয়া তাঁহার সহিত কথা বলিবার জন্য আল্লাহ্র দোহাই দিয়া হযরত আয়েশা (রাযিঃ)-কে পীড়াপীড়ি করিতে লাগিলেন। তাঁহারা আরো বলিলেনঃ আপনার তো অজানা নাই যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) সম্পর্কচ্ছেদ করিতে নিষেধ করিয়াছেন। তিনি বলিয়াছেনঃ কোন মুসলমানের জন্য তাঁহার কোন মুসলমান ভাইয়ের সহিত তিন রাত্রির অধিককাল সম্পর্কচ্ছেদ করিয়া থাকা জায়িয নহে। রাবী বলেনঃ তাঁহারা যখন হযরত আয়েশাকে অনেক রকমে বুঝাইলেন, তখন তিনিও কাঁদিতে কাঁদিতে তাঁহাদিগকে উপদেশমূলক কথাবার্তা বলিতে লাগিলেন। তিনি বলিলেনঃ আমি তো শপথ করিয়া রাখিয়াছি আর শপথ গুরুতর ব্যাপার! তাঁহাদের এই বিরামহীন পীড়াপীড়ির ফলে অবশেষে তিনি ইব্নুয্ যুবায়রের সহিত কথা বলিতে লাগিলেন এবং তাঁহার শপথ ভঙ্গের কাফ্ফারা স্বরূপ চল্লিশটি দাস মুক্ত করিয়া দিলেন। পরবর্তীকালে যখনই তাঁহার এই শপথের কথা মনে পড়িত তখনই তিনি ক্রন্দনে ভাঙিয়া পড়িতেন, এমন কি তাঁহার চোখের পানিতে তাঁহার ওড়না ভিজিয়া যাইত।
بَابُ هِجْرَةِ الرَّجُلِ
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ صَالِحٍ قَالَ: حَدَّثَنِي اللَّيْثُ قَالَ: حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ خَالِدٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَوْفِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ الطُّفَيْلِ، وَهُوَ ابْنُ أَخِي عَائِشَةَ لِأُمِّهَا، أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا حُدِّثَتْ، أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ الزُّبَيْرِ قَالَ فِي بَيْعٍ، أَوْ عَطَاءٍ، أَعْطَتْهُ عَائِشَةُ: وَاللَّهِ لَتَنْتَهِيَنَّ عَائِشَةُ أَوْ لَأَحْجُرَنَّ عَلَيْهَا، فَقَالَتْ: أَهُوَ قَالَ هَذَا؟ قَالُوا: نَعَمْ، قَالَتْ عَائِشَةُ: فَهُوَ لِلَّهِ نَذْرٌ أَنْ لاَ أُكَلِّمَ ابْنَ الزُّبَيْرِ كَلِمَةً أَبَدًا، فَاسْتَشْفَعَ ابْنُ الزُّبَيْرِ بِالْمُهَاجِرِينَ حِينَ طَالَتْ هِجْرَتُهَا إِيَّاهُ، فَقَالَتْ: وَاللَّهِ، لاَ أُشَفِّعُ فِيهِ أَحَدًا أَبَدًا، وَلاَ أُحَنِّثُ نَذْرِي الَّذِي نَذَرْتُ أَبَدًا. فَلَمَّا طَالَ عَلَى ابْنِ الزُّبَيْرِ كَلَّمَ الْمِسْوَرَ بْنَ مَخْرَمَةَ وَعَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ الأَسْوَدِ بْنِ يَغُوثَ، وَهُمَا مِنْ بَنِي زُهْرَةَ، فَقَالَ لَهُمَا: أَنْشُدُكُمَا بِاللَّهِ إِلاَّ أَدْخَلْتُمَانِي عَلَى عَائِشَةَ، فَإِنَّهَا لاَ يَحِلُّ لَهَا أَنْ تَنْذِرَ قَطِيعَتِي، فَأَقْبَلَ بِهِ الْمِسْوَرُ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ مُشْتَمِلَيْنِ عَلَيْهِ بِأَرْدِيَتِهِمَا، حَتَّى اسْتَأْذَنَا عَلَى عَائِشَةَ فَقَالاَ: السَّلاَمُ عَلَيْكِ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ، أَنَدْخُلُ؟ فَقَالَتْ عَائِشَةُ: ادْخُلُوا، قَالاَ: كُلُّنَا يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ؟ قَالَتْ: نَعَمْ، ادْخُلُوا كُلُّكُمْ. وَلاَ تَعْلَمُ عَائِشَةُ أَنَّ مَعَهُمَا ابْنَ الزُّبَيْرِ، فَلَمَّا دَخَلُوا دَخَلَ ابْنُ الزُّبَيْرِ فِي الْحِجَابِ، وَاعْتَنَقَ عَائِشَةَ وَطَفِقَ يُنَاشِدُهَا يَبْكِي، وَطَفِقَ الْمِسْوَرُ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ يُنَاشِدَانِ عَائِشَةَ إِلاَّ كَلَّمَتْهُ وَقَبِلَتْ مِنْهُ، وَيَقُولاَنِ: قَدْ عَلِمْتِ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَمَّا قَدْ عَلِمْتِ مِنَ الْهِجْرَةِ، وَأَنَّهُ لاَ يَحِلُّ لِلرَّجُلِ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلاَثِ لَيَالٍ. قَالَ: فَلَمَّا أَكْثَرُوا التَّذْكِيرَ وَالتَّحْرِيجَ طَفِقَتْ تُذَكِّرُهُمْ وَتَبْكِي وَتَقُولُ: إِنِّي قَدْ نَذَرْتُ وَالنَّذْرُ شَدِيدٌ، فَلَمْ يَزَالُوا بِهَا حَتَّى كَلَّمَتِ ابْنَ الزُّبَيْرِ، ثُمَّ أَعْتَقَتْ بِنَذْرِهَا أَرْبَعِينَ رَقَبَةً، ثُمَّ كَانَتْ تَذْكُرُ بَعْدَ مَا أَعْتَقَتْ أَرْبَعِينَ رَقَبَةً فَتَبْكِي حَتَّى تَبُلَّ دُمُوعُهَا خِمَارَهَا.

তাহকীক:
তাহকীক চলমান