আল-আদাবুল মুফরাদ- ইমাম বুখারী রহঃ
الأدب المفرد للبخاري
আল-আদাবুল মুফরাদের পরিচ্ছেদসমূহ - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১ টি
অনুসন্ধান করুন...
হাদীস নং:৩৩
১৭- পিতামাতার দু'আ
৩৩। হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, ঈসা ইবন মরিয়ম (আ) এবং জুরায়জওয়ালা ছাড়া আর কোন মানব-সন্তানই ভূমিষ্ঠ হওয়ামাত্র মাতৃকোলে কথা বলে নাই। তখন তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করা হইল ঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ ! জুরায়জওয়ালা আবার কি? ফরমাইলেন ঃ জুরায়জ
ছিলেন একজন আশ্রমবাসী সংসার ত্যাগী দরবেশ। তাঁহার আশ্রম-প্রান্তেই এক রাখাল বাস করিত। গ্রামবাসিনী এক মহিলা সেই রাখালের কাছে আসা-যাওয়া করিত। একদা জুরায়জের মাতা তাঁহার দ্বারপ্রান্তে আসিয়া জুরায়জ, জুরায়জ!!' বলিয়া ডাকিতে লাগিলেন। তিনি তখন ইবাদতরত অবস্থায়ই
ভাবিলেন, এক দিকে জননী, অপর দিকে ইবাদত, এখন কি করা যায় ! তিনি ভাবিলেন, ইবাদতকে জননীর উপর অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। তখন দ্বিতীয়বারের মত তাহার মা হাঁক দিলেন- জুরায়জ, জুরায়জ!!' জুরায়জ ইবাদতরত অবস্থাই ভাবিলেন, এক দিকে মাতা অপর দিকে ইবাদত ! মায়ের উপর
ইবাদতকে প্রাধান্য দানকেই তিনি শ্রেয় বিবেচনা করিলেন। তৃতীয়বার মা হাঁক দিলেন ঃ ‘জুরায়জ, জুরায়জ!!' এবারও সাধু ইবাদতকে মায়ের উপরে প্রাধান্য দান শ্রেয় বিবেচনা করিলেন। জুরায়জ উত্তর দিলেন না। তখন রুষ্ট মা তাহাকে অভিশাপ দিলেন-“পতিতা নারীদের মুখ না দেখাইয়া যেন আল্লাহ
তাের মৃত্যু না ঘটান।” অতঃপর তাঁহার মাতা প্রস্থান করিলেন। ঘটনাক্রমে সদ্যভূমিষ্ঠ একটি অবােধ শিশুসন্তানসহ সেই মহিলাটিকে রাজ দরবারে উপস্থিত করা হইল। রাজা জিজ্ঞাসা করিলেন-“কাহার ঔরসে এ শিশুটির জন্ম হে ?” সে বলিল ঃ জুরায়জের ঔরসে। রাজা আবার জিজ্ঞাসা করিলেন ?
আশ্রমবাসী সেই জুরায়জ? মহিলাটি বলিল- জ্বী হ্যাঁ। রাজা তখন তাঁহার লােকজনকে নির্দেশ দিলেন ঃ আশ্রমটিকে চুরমার করিয়া দিয়া ঐ ভণ্ড তাপসকে আমার সকাশে হাযির কর। তাহারা কুঠারাঘাতে সাধুর আশ্রমটিকে চুরমার করিয়া দিল এবং তাহার হস্তদ্বয় তাহার ঘাড়ের সহিত রজ্জবদ্ধ অবস্থায় তাহাকে
লইয়া রাজদরবারের দিকে যাত্রা করিল। সম্মুখে পতিতা নারীরা পড়িল। সাধু পতিতা নারীদিগকে দেখিলেন এবং মৃদুহাস্য করিলেন। তাহারাও তাহাকে লােকজন পরিবেষ্টিত অবস্থায় দেখিল। রাজা সাধুকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেনঃ (সাধুপ্রবর।) সে কি ধারণা করে জানেন? সাধু বলিলেন ঃ সে কি ধারণা করে ? রাজা বলিলেন ঃ তাহার ধারণা, ঐ শিশু সন্তানটি আপনার ঐরশজাত। সাধু তখন পতিতাকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন- “সত্য সত্যই কি তােমার ধারণা এই ?” সে বলিল 'হ্যাঁ'। সাধু বলিলেন ঃ কোথায়। সেই সন্তানটি ? তাহারা বলিল ঃ ঐ যে তাহার মায়ের কোলে। সাধু তখন তাহার সম্মুখে গেলেন এবং শিশুটিকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন ঃ কি হে ! তােমার পিতা কে? তৎক্ষণাৎ শিশুটি বলিয়া উঠিল ঃ (আমার পিতা) গরু রাখাল।
এবার (লজ্জিত ও অনুতপ্ত) রাজা বলিলেন, সাধু প্রবর ! আমরা কি স্বর্ণের দ্বারা উহা (আপনার আশ্রম) গড়াইয়া দিব ? সাধু বলিলেন, জ্বী না। রাজা পুনর্বার বলিলেন, তবে কি রৌপ্যের দ্বারা গড়াইয়া দিব ? সাধু বলিলেন ঃ উহাকে পূর্বাবস্থায় ফিরাইয়া দিন। তখন রাজা জিজ্ঞাসা করিলেন ? তবে আপনার মৃদুহাস্যের হেতু কি ? সাধু বলিলেন ঃ মৃদু হাস্যের পিছনে একটি ব্যাপার আছে-যাহা আমার জানা ছিল, আমার মায়ের অভিশাপই আমাকে স্পর্শ করিয়াছে। অতঃপর তিনি আনুপূর্বিক সকল ঘটনা তাহাদিগকে অবহিত করিলেন।
ছিলেন একজন আশ্রমবাসী সংসার ত্যাগী দরবেশ। তাঁহার আশ্রম-প্রান্তেই এক রাখাল বাস করিত। গ্রামবাসিনী এক মহিলা সেই রাখালের কাছে আসা-যাওয়া করিত। একদা জুরায়জের মাতা তাঁহার দ্বারপ্রান্তে আসিয়া জুরায়জ, জুরায়জ!!' বলিয়া ডাকিতে লাগিলেন। তিনি তখন ইবাদতরত অবস্থায়ই
ভাবিলেন, এক দিকে জননী, অপর দিকে ইবাদত, এখন কি করা যায় ! তিনি ভাবিলেন, ইবাদতকে জননীর উপর অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। তখন দ্বিতীয়বারের মত তাহার মা হাঁক দিলেন- জুরায়জ, জুরায়জ!!' জুরায়জ ইবাদতরত অবস্থাই ভাবিলেন, এক দিকে মাতা অপর দিকে ইবাদত ! মায়ের উপর
ইবাদতকে প্রাধান্য দানকেই তিনি শ্রেয় বিবেচনা করিলেন। তৃতীয়বার মা হাঁক দিলেন ঃ ‘জুরায়জ, জুরায়জ!!' এবারও সাধু ইবাদতকে মায়ের উপরে প্রাধান্য দান শ্রেয় বিবেচনা করিলেন। জুরায়জ উত্তর দিলেন না। তখন রুষ্ট মা তাহাকে অভিশাপ দিলেন-“পতিতা নারীদের মুখ না দেখাইয়া যেন আল্লাহ
তাের মৃত্যু না ঘটান।” অতঃপর তাঁহার মাতা প্রস্থান করিলেন। ঘটনাক্রমে সদ্যভূমিষ্ঠ একটি অবােধ শিশুসন্তানসহ সেই মহিলাটিকে রাজ দরবারে উপস্থিত করা হইল। রাজা জিজ্ঞাসা করিলেন-“কাহার ঔরসে এ শিশুটির জন্ম হে ?” সে বলিল ঃ জুরায়জের ঔরসে। রাজা আবার জিজ্ঞাসা করিলেন ?
আশ্রমবাসী সেই জুরায়জ? মহিলাটি বলিল- জ্বী হ্যাঁ। রাজা তখন তাঁহার লােকজনকে নির্দেশ দিলেন ঃ আশ্রমটিকে চুরমার করিয়া দিয়া ঐ ভণ্ড তাপসকে আমার সকাশে হাযির কর। তাহারা কুঠারাঘাতে সাধুর আশ্রমটিকে চুরমার করিয়া দিল এবং তাহার হস্তদ্বয় তাহার ঘাড়ের সহিত রজ্জবদ্ধ অবস্থায় তাহাকে
লইয়া রাজদরবারের দিকে যাত্রা করিল। সম্মুখে পতিতা নারীরা পড়িল। সাধু পতিতা নারীদিগকে দেখিলেন এবং মৃদুহাস্য করিলেন। তাহারাও তাহাকে লােকজন পরিবেষ্টিত অবস্থায় দেখিল। রাজা সাধুকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেনঃ (সাধুপ্রবর।) সে কি ধারণা করে জানেন? সাধু বলিলেন ঃ সে কি ধারণা করে ? রাজা বলিলেন ঃ তাহার ধারণা, ঐ শিশু সন্তানটি আপনার ঐরশজাত। সাধু তখন পতিতাকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন- “সত্য সত্যই কি তােমার ধারণা এই ?” সে বলিল 'হ্যাঁ'। সাধু বলিলেন ঃ কোথায়। সেই সন্তানটি ? তাহারা বলিল ঃ ঐ যে তাহার মায়ের কোলে। সাধু তখন তাহার সম্মুখে গেলেন এবং শিশুটিকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন ঃ কি হে ! তােমার পিতা কে? তৎক্ষণাৎ শিশুটি বলিয়া উঠিল ঃ (আমার পিতা) গরু রাখাল।
এবার (লজ্জিত ও অনুতপ্ত) রাজা বলিলেন, সাধু প্রবর ! আমরা কি স্বর্ণের দ্বারা উহা (আপনার আশ্রম) গড়াইয়া দিব ? সাধু বলিলেন, জ্বী না। রাজা পুনর্বার বলিলেন, তবে কি রৌপ্যের দ্বারা গড়াইয়া দিব ? সাধু বলিলেন ঃ উহাকে পূর্বাবস্থায় ফিরাইয়া দিন। তখন রাজা জিজ্ঞাসা করিলেন ? তবে আপনার মৃদুহাস্যের হেতু কি ? সাধু বলিলেন ঃ মৃদু হাস্যের পিছনে একটি ব্যাপার আছে-যাহা আমার জানা ছিল, আমার মায়ের অভিশাপই আমাকে স্পর্শ করিয়াছে। অতঃপর তিনি আনুপূর্বিক সকল ঘটনা তাহাদিগকে অবহিত করিলেন।
بَابُ دَعْوَةِ الْوَالِدَيْنِ
حَدَّثَنَا عَيَّاشُ بْنُ الْوَلِيدِ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ قُسَيْطٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ شُرَحْبِيلَ، أَخِي بَنِي عَبْدِ الدَّارِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ: مَا تَكَلَّمَ مَوْلُودٌ مِنَ النَّاسِ فِي مَهْدٍ إِلاَّ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ صلى الله عليه وسلم، وَصَاحِبُ جُرَيْجٍ، قِيلَ: يَا نَبِيَّ اللهِ، وَمَا صَاحِبُ جُرَيْجٍ؟ قَالَ: فَإِنَّ جُرَيْجًا كَانَ رَجُلاً رَاهِبًا فِي صَوْمَعَةٍ لَهُ، وَكَانَ رَاعِيَ بَقَرٍ يَأْوِي إِلَى أَسْفَلِ صَوْمَعَتِهِ، وَكَانَتِ امْرَأَةٌ مِنْ أَهْلِ الْقَرْيَةِ تَخْتَلِفُ إِلَى الرَّاعِي، فَأَتَتْ أُمُّهُ يَوْمًا فَقَالَتْ: يَا جُرَيْجُ، وَهُوَ يُصَلِّي، فَقَالَ فِي نَفْسِهِ وَهُوَ يُصَلِّي: أُمِّي وَصَلاَتِي؟ فَرَأَى أَنْ يُؤْثِرَ صَلاَتَهُ، ثُمَّ صَرَخَتْ بِهِ الثَّانِيَةَ، فَقَالَ فِي نَفْسِهِ: أُمِّي وَصَلاَتِي؟ فَرَأَى أَنْ يُؤْثِرَ صَلاَتَهُ، ثُمَّ صَرَخَتْ بِهِ الثَّالِثَةَ، فَقَالَ: أُمِّي وَصَلاَتِي؟ فَرَأَى أَنْ يُؤْثِرَ صَلاَتَهُ، فَلَمَّا لَمْ يُجِبْهَا قَالَتْ: لاَ أَمَاتَكَ اللَّهُ يَا جُرَيْجُ حَتَّى تَنْظُرَ فِي وَجْهِ الْمُومِسَاتِ، ثُمَّ انْصَرَفَتْ. فَأُتِيَ الْمَلِكُ بِتِلْكَ الْمَرْأَةِ وَلَدَتْ، فَقَالَ: مِمَّنْ؟ قَالَتْ: مِنْ جُرَيْجٍ، قَالَ: أَصَاحِبُ الصَّوْمَعَةِ؟ قَالَتْ: نَعَمْ، قَالَ: اهْدِمُوا صَوْمَعَتَهُ، وَأْتُونِي بِهِ، فَضَرَبُوا صَوْمَعَتَهُ بِالْفُئُوسِ حَتَّى وَقَعَتْ. فَجَعَلُوا يَدَهُ إِلَى عُنُقِهِ بِحَبْلٍ، ثُمَّ انْطُلِقَ بِهِ، فَمَرَّ بِهِ عَلَى الْمُومِسَاتِ، فَرَآهُنَّ فَتَبَسَّمَ، وَهُنَّ يَنْظُرْنَ إِلَيْهِ فِي النَّاسِ، فَقَالَ الْمَلِكُ: مَا تَزْعُمُ هَذِهِ؟ قَالَ: مَا تَزْعُمُ؟ قَالَ: تَزْعُمُ أَنَّ وَلَدَهَا مِنْكَ، قَالَ: أَنْتِ تَزْعُمِينَ؟ قَالَتْ: نَعَمْ، قَالَ: أَيْنَ هَذَا الصَّغِيرُ؟ قَالُوا: هَذا هُوَ فِي حِجْرِهَا، فَأَقْبَلَ عَلَيْهِ فَقَالَ: مَنْ أَبُوكَ؟ قَالَ: رَاعِي الْبَقَرِ. قَالَ الْمَلِكُ: أَنَجْعَلُ صَوْمَعَتَكَ مِنْ ذَهَبٍ؟ قَالَ: لاَ، قَالَ: مِنْ فِضَّةٍ؟ قَالَ: لاَ، قَالَ: فَمَا نَجْعَلُهَا؟ قَالَ: رُدُّوهَا كَمَا كَانَتْ، قَالَ: فَمَا الَّذِي تَبَسَّمْتَ؟ قَالَ: أَمْرًا عَرَفْتُهُ، أَدْرَكَتْنِي دَعْوَةُ أُمِّي، ثُمَّ أَخْبَرَهُمْ.