৭। মুসআব ইবনে সাদ (রাহঃ) বলেন, আমি (আমার পিতা) সাদ (রাযিঃ)-র জন্য কুরআন শরীফ তুলছিলাম। আমি আমার দেহ চুলকালাম। পিতা বললেন, খুব সম্ভব তুমি তোমার লিঙ্গ স্পর্শ করেছো। আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বলেন, উঠো এবং উযু করে এসো। অতএব আমি উঠে গিয়ে উযু করলাম।

৮। সালেম ইবনে আব্দুল্লাহ্ (রাহঃ) থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি (আব্দুল্লাহ ইবনে উমার) গোসল করার পর উযু করতেন। সালেম (রাহঃ) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, উযুর জন্য কি আপনার গোসল যথেষ্ট নয়। তিনি বলেন, হ্যাঁ, যথেষ্ট। কিন্তু আমি কখনো কখনো নিজের লিঙ্গ স্পর্শ করি, তাই উযু করে নেই।
ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ) বলেন, লিঙ্গ স্পর্শ করলে পুনরায় উযু করার প্রয়োজন নেই। ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ)-এরও এই মত। এর সমর্থনে বহু সংখ্যক হাদীস রয়েছে।

৯। কায়েস ইবনে তলক (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তার পিতা তাকে বলেছেন যে, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ ﷺ -এর কাছে এক লোক সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলো, সে নিজের লিঙ্গ স্পর্শ করেছে, এতে তাকে (পুনর্বার) উযু করতে হবে কি? তিনি বলেনঃ এটা তোমার দেহের একটি মাংসপিণ্ড মাত্র।

১০। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। নামাযরত অবস্থায় লিঙ্গ স্পর্শ করলে উযু যাবে কিনা এ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি আমার লিঙ্গ অথবা নাকে হাত লাগানোকে দূষণীয় কিছু মনে করি না।

১১। ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, লজ্জাস্থান স্পর্শ করাতে উযু করতে হবে না।

১২। হারিস ইবনে আবু যুবাব(রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যাব (রাহঃ)-কে বলতে শুনেছেন, লজ্জাস্থান স্পর্শ করাতে উযু নেই (উযু নষ্টও হয় না বা পুনরায় উযু করতেও হয় না)।

১৩। আবুল আওয়াম আল-বসরী (রাহঃ) বলেন, এক ব্যক্তি আতা ইবনে আবু রবাহ (রাহঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আবু মুহাম্মাদ! এক ব্যক্তি উযু করার পর নিজের লিঙ্গ স্পর্শ করলো (তার হুকুম কি)? উপস্থিত লোকদের মধ্য থেকে এক ব্যক্তি বললো, ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলতেন, তুমি যদি এটাকে এতোই নাপাক মনে করো তবে তা কেটে ফেলে দাও। আতা ইবনে আবু রবাহ (রাহঃ) বলেন, আল্লাহর শপথ! এটা ইবনে আব্বাসেরই কথা।

১৪। আলী ইবনে আবু তালিব (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি লজ্জাস্থান স্পর্শ করা সম্পর্কে বলেন, আমি পুরুষাঙ্গ অথবা নাক স্পর্শ করার মধ্যে কোন পার্থক্য দেখছি না ।

১৫। ইবরাহীম নাখঈ (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। ইবনে মাসউদ (রাযিঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করলে উযু নষ্ট হয় কিনা? তিনি বলেন, যদি এটা নাপাক জিনিস হয়ে থাকে তবে তা কেটে ফেলে দাও।

১৬। ইবরাহীম নাখঈ (রাহঃ) নামাযরত অবস্থায় লিঙ্গ স্পর্শ করা সম্পর্কে বলেন, এটা তোমার (দেহের) একটা টুকরা মাত্র ।

১৭। আরকাম ইবনে শুরাহবীল (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ)-কে বললাম, আমি নামাযরত অবস্থায় শরীর চুলকাতে চুলকাতে লিঙ্গ স্পর্শ করে ফেলি । তিনি বলেন, এটা তোমার দেহের একটি টুকরা মাত্র ।

১৮। আল-বারাআ ইবনে কায়েস (রাহঃ) বলেন, আমি হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান (রাযিঃ)-কে কোন ব্যক্তির নিজ লিঙ্গ স্পর্শ করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলেন, তার লিঙ্গে হাত লাগানো আর তার মাথায় হাত লাগানোর মধ্যে পার্থক্য নেই।

১৯। উমায়ের ইবনে সাদ (রাহঃ) বলেন, আমি এক মজলিসে ছিলাম। সেখানে আম্মার ইবনে ইয়াসির (রাযিঃ)-ও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে লজ্জাস্থান স্পর্শ করা সম্পর্কে কথা উঠলো। আম্মার (রাযিঃ) বলেন, এটা তোমার দেহেরই একটি অংশ আর তোমার হাত তোমার সব জায়গাই স্পর্শ করে থাকে (অর্থাৎ যৌনাঙ্গ স্পর্শ করলে উযু নষ্ট হবে না)।

২০। হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান (রাযিঃ) বলেন, লিঙ্গ স্পর্শ করা তোমার নাক স্পর্শ করারই অনুরূপ।

২১ । আলী ইবনে আবু তালিব (রাযিঃ) বলেন, আমি আমার যৌনাঙ্গ বা নাক বা কান স্পর্শ করার মধ্যে কোন পার্থক্য দেখছি না।

২২। কায়েস (রাহঃ) বলেন, এক ব্যক্তি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ)-এর কাছে উপস্থিত হয়ে বললো, আমি নামাযের মধ্যে আমার লিঙ্গ স্পর্শ করি। আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) বলেন, তুমি তা কেটে ফেলে দিচ্ছো না কেন? অতঃপর তিনি বলেন, তোমার লজ্জাস্থান তোমার দেহের অন্যান্য অংশেরই অনুরূপ।

২৩। কায়েস ইবনে আবু হাযেম (রাহঃ) বলেন, এক ব্যক্তি সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রাযিঃ)-র কাছে এসে জিজ্ঞেস করলো, নামাযের মধ্যে আমার পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করা কি আমার জন্য হালাল? তিনি বলেন, তুমি যদি এটাকে নিজের দেহের নাপাক অঙ্গ মনে করো তবে তা কেটে ফেলে দাও।

২৪। আবু দারদা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তাকে যৌনাঙ্গ স্পর্শ করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো । তিনি বলেন, এটা তোমার দেহের একটি অংশমাত্র।*

* ইমাম আবু হানীফা, সুফিয়ান সাওরী ও অধিকাংশ ফিকহবিদের মতে যৌনাঙ্গ স্পর্শ করলে উযু নষ্ট হয় না। কিন্তু ইমাম শাফিঈ ও আহমাদের মতে যৌনাঙ্গ স্পর্শ করলে উযু নষ্ট হয়। তারা আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাযিঃ)-র হাদীস নিজেদের মতের স্বপক্ষে গ্রহণ করেছেন। হানাফীদের মতে হাদীসটি মানসূখ অথবা মুস্তাহাব পর্যায়ের নির্দেশ জ্ঞাপক (অনুবাদক)।