মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ

مسند الامام الأعظم أبي حنيفة رحـ برواية الحصكفي

৪. নামায অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:১৬৬
সূর্যগ্রহণের নামায
১৬৬। হযরত আব্দুল্লাহ্ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর পুত্র হযরত
ইবরাহীমের মৃত্যুর দিন সূর্যগ্রহণ হয়। তখন তিনি দাঁড়িয়ে খুতবা প্রদান করে বলেনঃ সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর চিহ্নসমূহের মধ্যে একটি চিহ্ন। এতে কারো মৃত্যু বা কারো জন্মের কারণে গ্রহণ লাগে না। সুতরাং যখন তোমরা এতে গ্রহণ লাগতে দেখ, তখন নামায পড়, আল্লাহর হাম্দ বর্ণনা কর,
তাকবীর বল, তাসবীহ পড়, যার ফলে গ্রহণ দূরীভূত হয়ে যাবে। অতঃপর তিনি মিম্বর থেকে অবতরণ করেন এবং দু'রাকাআত (কুসুফের নামায) আদায় করেন।
عَنْ حَمَّادٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: انْكَسَفَتِ الشَّمْسُ يَوْمَ مَاتَ إِبْرَاهِيمُ بْنُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَخَطَبَ فَقَالَ: " إِنَّ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ، لَا يَنْكَسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلَا لِحَيَاتِهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمْ ذَلِكَ فَصَلُّوا، وَاحْمَدُوا اللَّهِ وَكَبِّرُوهُ، وَسَبِّحُوهُ حَتَّى يَنْجَلِيَ: أَيُّهُمَا انْكَسَفَ، ثُمَّ نَزَلَ رَسُولُ اللَّهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ
হাদীস নং:১৬৭
সূর্যগ্রহণের নামায
১৬৭। হযরত ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে, নবী (ﷺ)-এর পুত্র হযরত ইবরাহীম (রাযিঃ)-এর ইনতিকালের দিন সূর্য গ্রহণ হয় (লোকজন বলতে থাকে যে, হযরত ইবরাহীমের ইনতিকালের কারণেই সূর্য গ্রহণ লেগেছে)। নবী করীম (ﷺ) নামাযের জন্য দাঁড়িয়ে যান এবং এত দীর্ঘ সময় পর্যন্ত দাঁড়িয়ে (قيام) থাকেন যে, যার ফলে লোকজন মনে করেন তিনি রুকূ' করবেন না। অতঃপর তিনি রুকূ'র মধ্যে কিয়ামের (قيام) মত দীর্ঘ সময় ব্যয় করেন। এরপর রুকূ' থেকে পবিত্র মাথা উত্তোলন করেন এবং রুকূর মত দীর্ঘক্ষণ কিয়াম করেন। অতঃপর সিজদা করেন এবং কিয়ামের মত দীর্ঘ সময় ব্যয় করেন। এরপর তিনি বসেন এবং এই দু'সিজদার মধ্যে বসায় সিজদার মত দীর্ঘ সময় ব্যয় করেন। অতঃপর বসার ন্যায় দীর্ঘক্ষণ সিজদা করেন। এরপর প্রথম রাকাআতের ন্যায় দ্বিতীয় রাকাআত আদায় করেন এবং দ্বিতীয় রাকাআতের সিজদায় গিয়ে তিনি তীব্রভাবে কাঁদতে থাকেন। আমরা তাঁকে এই বলতে শুনেছি যে, হে আল্লাহ্! তুমি কি আমার নিকট এই ওয়াদা করনি যে, তুমি তাদেরকে আযাব দেবে না যতক্ষণ আমি তাদের মধ্যে অবস্থান করি। অতঃপর তিনি বসেন এবং তাশাহহুদ পাঠ করেন। এরপর নামায শেষ করেন এবং আমাদের দিকে মুখ করে ইরশাদ করেন : সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ আল্লাহর চিহ্ন ও প্রমাণসমূহের মধ্যে একটি প্রমাণ। আল্লাহ্ এরদ্বারা তাঁর বান্দাদেরকে ভয় দেখিয়ে থাকেন। কারে মৃত্যু বা জন্মের কারণে চন্দ্র ও সূর্য গ্রহণ হয় না। সুতরাং এরূপ অবস্থা সৃষ্টি হলে নামায আদায় কর (এবং আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনা কর)। নিঃসন্দেহে আমি দেখেছি, বেহেশত আমার এমনি নিকটবর্তী করা হয়েছিল যে, যদি আমি ইচ্ছে করতাম তা হলে এর বৃক্ষসমূহের কোন এক বৃক্ষের ডাল আমার দিকে নিয়ে আসতে পারতাম। আবার আমি দেখেছি, দোযখ আমার এমন নিকটবর্তী করা হয়েছিল যে, আমি এর প্রজ্জ্বলিত অগ্নি থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করেছি। এছাড়া আমি দেখেছি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর চোর (অর্থাৎ যারা তাঁর লাশ চুরি করতে চেয়েছিল) অন্য রিওয়ায়েতে বর্ণিত আছে, আমি রাসূলের ঘরের চোরকে শাস্তি দিতে দেখেছি। আমি আরো দেখেছি, আব্দা ইবনে দা'দা" (عبد بن دعدع) নামক এক ব্যক্তিকে, যে হাজীদের কাপড় ইত্যাদি তার বাঁকা লাকড়ির দ্বারা চুরি করেছে, আমি আরো দেখেছি যে, হিমায়ার গোত্রের একজন সুন্দরী মহিলাকে একটি বিড়ালের কারণে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। কারণ সে ঐ বিড়ালটি বেঁদে রেখেছিল, এটাকে কোন খাদ্যও দেয়নি আবার ছেড়েও দেয়নি যাতে বিড়ালটি মাটি থেকে পোকা-মাকড় খেতে পারে।
অন্য এক রিওয়ায়েতে একই ধরনের হাদীস বর্ণিত হয়েছে, এতে বর্ণিত আছে, আমি আব্দা ইবনে দা'দা' নামক এক ব্যক্তিকে দেখেছি যে তার বাঁকা লাঠি দ্বারা হাজীদের কাপড় চুরি করে থাকে। যদি কেউ না দেখে, তা হলে উড়িয়ে নিয়ে যায়। যদি কেউ দেখে ফেলে, তা হলে বলে, আমার বাঁকা লাঠির সাথে এটা আটকিয়ে গেছে।
অন্য এক রিওয়ায়েতে আছে, যদি কোন বস্তু কারো দৃষ্টি থেকে আড়াল হয়ে যেত, তখন সে তা নিয়ে যেত এবং যখন তা কেউ দেখে ফেলত, তখন বলত, এটা আমার লাঠির সাথে আটকে গেছে।
عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عَمْرٍو، قَالَ: انْكَسَفَتِ الشَّمْسُ يَوْمَ مَاتَ إِبْرَاهِيمُ ابْنُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ النَّاسُ: انْكَسَفَتِ الشَّمْسُ لِمَوْتِ إِبْرَاهِيمَ، فَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قِيَامًا طَوِيلًا حَتَّى ظَنُّوا أَنَّهُ لَا يَرْكَعُ، ثُمَّ رَكَعَ، فَكَانَ رُكُوعُهُ قَدْرَ قِيَامِهِ، ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ، فَكَانَ قِيَامُهُ قَدْرَ رُكُوعِهِ، ثُمَّ سَجَدَ قَدْرَ قِيَامِهِ، فَكَانَ جُلُوسُهُ بَيْنَ السَّجْدَتَيْنِ قَدْرَ سُجُودِهِ، ثُمَّ سَجَدَ قَدْرَ جُلُوسِهِ، ثُمَّ صَلَّى الرَّكْعَةَ الثَّانِيَةَ، فَفَعَلَ مِثْلَ ذَلِكَ حَتَّى إِذَا كَانَتِ السَّجْدَةُ مِنْهَا، بَكَى، فَاشْتَدَّ بُكَاؤُهُ، فَسَمِعْنَا، وَهُوَ يَقُولُ: " أَلَمْ تَعِدْنِي أَنْ لَا تُعَذِّبْهُمْ وَأَنَا فِيهِمْ، ثُمَّ جَلَسَ فَتَشَهَّدَ، ثُمَّ انْصَرَفَ وَأَقْبَلَ عَلَيْهِمْ بِوَجْهِهِ، ثُمَّ قَالَ: «إِنَّ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ، يُخَوِّفُ اللَّهُ تَعَالَى بِهِمَا عِبَادَهُ لَا يَكْسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلَا لِحَيَاتِهِ، فَإِذَا كَانَ كَذَلِكَ، فَعَلَيْكُمْ بِالصَّلَاةِ، وَلَقَدْ رَأَيْتُنِي أُدْنِيتُ مِنَ الْجَنَّةِ حَتَّى لَوْ شِئْتُ أَنْ أَتَنَاوَلَ غُصْنًا مِنْ أَغْصَانِ شَجَرِهَا فَعَلْتُ، وَلَقَدْ رَأَيْتُنِي أُدْنِيتُ مِنَ النَّارِ حَتَّى جَعَلْتُ أَتَّقِي، وَلَقَدْ رَأَيْتُ فِيهَا سَارِقَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ» ، وَفِي رِوَايَةٍ: «سَارِقَ بَيْتِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعَذَّبُ بِالنَّارِ، وَلَقَدْ رَأَيْتُ فِيهَا عَبْدَ بْنِ دَعْدَعٍ سَارِقَ الْحُجَّاجِ بِمِحْجَنِهِ، وَلَقَدْ رَأَيْتُ فِيهَا امْرَأَةً أَدْمَاءَ حِمْيَرِيَّةً تُعَذَّبُ فِي هِرَّةٍ لَهَا رَبَطَتْهَا، فَلَمْ تُطْعِمْهَا، وَلَمْ تَدَعْهَا تَأْكُلُ مِنْ خَشَاشِ الْأَرْضِ وَحَشَرَاتِهَا» .
وَفِي رِوَايَةٍ نَحْوُهُ.
وَفِيهِ: " لَقَدْ رَأَيْتُ عَبْدَ بْنِ دَعْدَعٍ سَارِقَ الْحَاجَّ بِمِحْجَنِهِ، فَكَانَ إِذَا خَفَى ذَهَبَ، وَإِذَا رَآهُ أَحَدٌ، قَالَ: إِنَّمَا تَعَلَّقَ بِمِحْجَنِي ".
وَفِي رِوَايَةٍ: " كَانَ إِذَا خَفِيَ لَهُ شَيْءٌ، وَإِذَا ظَهَرَ عَلَيْهِ، قَالَ: إِنَّمَا تَعَلَّقَ بِمِحْجَنِي