আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
الجامع الصحيح للبخاري
৫২- কুরআনের ফাযাঈল অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ২ টি
হাদীস নং: ৪৬২৫
আন্তর্জাতিক নং: ৪৯৮৬
কুরআন সংকলন
৪৬২৫। মুসা ইবনে ইসমা‘ঈল (রাহঃ) ......... যায়দ ইবনে সাবিত (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইয়ামামার যদ্ধে বহু লোক শহীদ হবার পর আবু বকর সিদ্দীক (রাযিঃ) আমাকে ডেকে পাঠালেন। এ সময় উমর (রাযিঃ)ও তাঁর কাছে উপস্থিত ছিলেন। আবু বকর বললেন, উমর (রাযিঃ) আমার কাছে এসে বলেছেন, ইয়ামামার যুদ্ধে শাহাদাত প্রাপ্তদের মধ্যে কারীদের সংখ্যা অনেক। আমি আশঙ্কা করছি, এমনিভাবে যদি কারীগণ শহীদ হয়ে যান, তাহলে কুরআন শরীফের বহু অংশ হারিয়ে যাবে। অতএব আমি মনে করি যে, আপনি কুরআন সংকলনের নির্দেশ দিন। উত্তরে আমি উমর (রাযিঃ) কে বললাম, যে কাজ আল্লাহর রাসূল(ﷺ) করেননি, সে কাজ তুমি কিভাবে করবে? উমর (রাযিঃ) এর জবাবে বললেন, আল্লাহর কসম! এটা একটা উত্তম কাজ। উমর (রাযিঃ) এ কথাটি আমার কাছে বার বার বলতে থাকলে অবশেষে আল্লাহ তাআলা ও কাজের জন্য আমার বক্ষকে প্রশস্ত করে দিলেন এবং এ বিষয়ে উমর যা ভাল মনে করলেন আমিও তাই করলাম।
যায়দ (রাযিঃ) বলেন, আবু বকর সিদ্দীক (রাযিঃ) আমাকে বললেন, তুমি একজন বুদ্ধিমান যুবক। তোমার ব্যাপারে আমার কোন সংশয় নেই। অধিকন্তু তুমি রাসূল (ﷺ) এর ওহীর লেখক ছিলে। সুতরাং তুমি কুরআন শরীফের অংশগুলোকে তালাশ করে একত্রিত কর। আল্লাহর শপথ! তারা যদি আমাকে একটি পাহাড় এক স্থান হতে অন্যত্র সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিত, তাহলেও তা আমার কাছে কুরআন সংকলেনর নির্দেশের চাইতে কঠিন বলে মনে হত না। আমি বললাম, যে কাজ রাসূল (ﷺ) করেননি, আপনারা সে কাজ কিভাবে করবেন? তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! এটা একটা কল্যাণকর কাজ। এ কথাটি আবু বকর সিদ্দীক (রাযিঃ) আমার কাছে বার বার বলতে থাকেন, অবশেষে আল্লাহ পাক আমার বক্ষকে প্রশস্ত ও প্রসন্ন করে দিলেন সে কাজের জন্য, যে কাজের জন্য তিনি আবু বকর এবং উমর (রাযিঃ) এর বক্ষকে প্রশস্ত ও প্রসন্ন করে দিয়েছিলেন।
এরপর আমি কুরআন অনুসন্ধান কাজে আত্মনিয়োগ করলাম এবং খেজুর পাতা, প্রস্তরখণ্ড ও মানুষের বক্ষ থেকে আমি তা সংগ্রহ করতে থাকলাম। এমনকি আমি সূরা তাওবার শেষাংশ আবু খুযায়মা আনসারী (রাযিঃ) থেকে সংগ্রহ করলাম। এ অংশটুকু তিনি ব্যতীত আর কারো কাছে আমি পাইনি। আয়াতগুলো হচ্ছে এইঃ তোমাদের মধ্য হতে তোমাদের কাছে এক রাসূল (ﷺ) এসেছে। তোমাদেরকে যা বিপন্ন করে তা তাঁর জন্য কষ্টদায়ক। সে তোমাদের মঙ্গলকামী, মু’মিনদের প্রতি সে দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু। এরপর তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে তুমি বলো, আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নাই। আমি তাঁরই উপর নির্ভর করি এবং তিনি মহান আরশের অধিপতি (১২৮-১২৯)।
তারপর সংকলিত সহীফাসমূহ মৃত্যু পর্যন্ত আবু বকর (রাযিঃ) এর কাছে সংরক্ষিত ছিল। তাঁর মৃত্যুর পর তা উমর (রাযিঃ) এর কাছে সংরক্ষিত ছিল, যতদিন তিনি জীবিত ছিলেন। এরপর তা উমর-তনয়া হাফসা (রাযিঃ) এর কাছে সংরক্ষিত ছিল।
যায়দ (রাযিঃ) বলেন, আবু বকর সিদ্দীক (রাযিঃ) আমাকে বললেন, তুমি একজন বুদ্ধিমান যুবক। তোমার ব্যাপারে আমার কোন সংশয় নেই। অধিকন্তু তুমি রাসূল (ﷺ) এর ওহীর লেখক ছিলে। সুতরাং তুমি কুরআন শরীফের অংশগুলোকে তালাশ করে একত্রিত কর। আল্লাহর শপথ! তারা যদি আমাকে একটি পাহাড় এক স্থান হতে অন্যত্র সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিত, তাহলেও তা আমার কাছে কুরআন সংকলেনর নির্দেশের চাইতে কঠিন বলে মনে হত না। আমি বললাম, যে কাজ রাসূল (ﷺ) করেননি, আপনারা সে কাজ কিভাবে করবেন? তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! এটা একটা কল্যাণকর কাজ। এ কথাটি আবু বকর সিদ্দীক (রাযিঃ) আমার কাছে বার বার বলতে থাকেন, অবশেষে আল্লাহ পাক আমার বক্ষকে প্রশস্ত ও প্রসন্ন করে দিলেন সে কাজের জন্য, যে কাজের জন্য তিনি আবু বকর এবং উমর (রাযিঃ) এর বক্ষকে প্রশস্ত ও প্রসন্ন করে দিয়েছিলেন।
এরপর আমি কুরআন অনুসন্ধান কাজে আত্মনিয়োগ করলাম এবং খেজুর পাতা, প্রস্তরখণ্ড ও মানুষের বক্ষ থেকে আমি তা সংগ্রহ করতে থাকলাম। এমনকি আমি সূরা তাওবার শেষাংশ আবু খুযায়মা আনসারী (রাযিঃ) থেকে সংগ্রহ করলাম। এ অংশটুকু তিনি ব্যতীত আর কারো কাছে আমি পাইনি। আয়াতগুলো হচ্ছে এইঃ তোমাদের মধ্য হতে তোমাদের কাছে এক রাসূল (ﷺ) এসেছে। তোমাদেরকে যা বিপন্ন করে তা তাঁর জন্য কষ্টদায়ক। সে তোমাদের মঙ্গলকামী, মু’মিনদের প্রতি সে দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু। এরপর তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে তুমি বলো, আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নাই। আমি তাঁরই উপর নির্ভর করি এবং তিনি মহান আরশের অধিপতি (১২৮-১২৯)।
তারপর সংকলিত সহীফাসমূহ মৃত্যু পর্যন্ত আবু বকর (রাযিঃ) এর কাছে সংরক্ষিত ছিল। তাঁর মৃত্যুর পর তা উমর (রাযিঃ) এর কাছে সংরক্ষিত ছিল, যতদিন তিনি জীবিত ছিলেন। এরপর তা উমর-তনয়া হাফসা (রাযিঃ) এর কাছে সংরক্ষিত ছিল।
باب جَمْعِ الْقُرْآنِ
4986 - حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ شِهَابٍ، عَنْ عُبَيْدِ بْنِ السَّبَّاقِ، أَنَّ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «أَرْسَلَ إِلَيَّ أَبُو بَكْرٍ مَقْتَلَ أَهْلِ اليَمَامَةِ، فَإِذَا عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ عِنْدَهُ» ، قَالَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: إِنَّ عُمَرَ أَتَانِي فَقَالَ: إِنَّ القَتْلَ قَدْ اسْتَحَرَّ يَوْمَ اليَمَامَةِ بِقُرَّاءِ القُرْآنِ، وَإِنِّي أَخْشَى أَنْ يَسْتَحِرَّ القَتْلُ بِالقُرَّاءِ بِالْمَوَاطِنِ، فَيَذْهَبَ كَثِيرٌ مِنَ القُرْآنِ، وَإِنِّي أَرَى أَنْ تَأْمُرَ بِجَمْعِ القُرْآنِ، قُلْتُ لِعُمَرَ: «كَيْفَ تَفْعَلُ شَيْئًا لَمْ يَفْعَلْهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟» قَالَ عُمَرُ: هَذَا وَاللَّهِ خَيْرٌ، «فَلَمْ يَزَلْ عُمَرُ يُرَاجِعُنِي حَتَّى شَرَحَ اللَّهُ صَدْرِي لِذَلِكَ، وَرَأَيْتُ فِي ذَلِكَ الَّذِي رَأَى عُمَرُ» ، قَالَ زَيْدٌ: قَالَ أَبُو بَكْرٍ: إِنَّكَ رَجُلٌ شَابٌّ عَاقِلٌ لاَ نَتَّهِمُكَ، وَقَدْ كُنْتَ تَكْتُبُ الوَحْيَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَتَتَبَّعِ القُرْآنَ فَاجْمَعْهُ، «فَوَاللَّهِ لَوْ كَلَّفُونِي نَقْلَ جَبَلٍ مِنَ الجِبَالِ مَا كَانَ أَثْقَلَ عَلَيَّ مِمَّا أَمَرَنِي بِهِ مِنْ جَمْعِ القُرْآنِ» ، قُلْتُ: «كَيْفَ تَفْعَلُونَ شَيْئًا لَمْ يَفْعَلْهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟» ، قَالَ: هُوَ وَاللَّهِ خَيْرٌ، " فَلَمْ يَزَلْ أَبُو بَكْرٍ يُرَاجِعُنِي حَتَّى شَرَحَ اللَّهُ صَدْرِي لِلَّذِي شَرَحَ لَهُ صَدْرَ أَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، فَتَتَبَّعْتُ القُرْآنَ أَجْمَعُهُ مِنَ العُسُبِ وَاللِّخَافِ، وَصُدُورِ الرِّجَالِ، حَتَّى وَجَدْتُ آخِرَ سُورَةِ التَّوْبَةِ مَعَ أَبِي خُزَيْمَةَ الأَنْصَارِيِّ لَمْ أَجِدْهَا مَعَ أَحَدٍ غَيْرِهِ، {لَقَدْ جَاءَكُمْ رَسُولٌ مِنْ أَنْفُسِكُمْ عَزِيزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ} [التوبة: 128] حَتَّى خَاتِمَةِ بَرَاءَةَ، فَكَانَتِ الصُّحُفُ عِنْدَ أَبِي بَكْرٍ حَتَّى تَوَفَّاهُ اللَّهُ، ثُمَّ عِنْدَ عُمَرَ حَيَاتَهُ، ثُمَّ عِنْدَ حَفْصَةَ بِنْتِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ "

তাহকীক:

বর্ণনাকারী:
হাদীস নং: ৪৬২৬
আন্তর্জাতিক নং: ৪৯৮৭ - ৪৯৮৮
কুরআন সংকলন
৪৬২৬। মুসা (রাহঃ) ......... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুযাইফা ইবনুল ইয়ামান (রাযিঃ) একবার উসমান (রাযিঃ) এর কাছে এলেন। এ সময় তিনি আরমিনিয়া ও আযারবাইজান বিজয়ের ব্যাপারে সিরীয় ও ইরাকী যোদ্ধাদের জন্য রণ-প্রস্তুতির কাজে ব্যস্ত ছিলেন। কুরআন পাঠে তাঁদের মতবিরোধ হুযাইফাকে ভীষণ চিন্তিত করল। সুতরাং তিনি উসমান (রাযিঃ) কে বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন! কিতাব সম্পর্কে ইহুদী ও নাসারাদের মত- মত পার্থক্যে লিপ্ত হবার পূর্বে এই উম্মতকে রক্ষা করুন। তারপর উসামান (রাযিঃ) হাফসা (রাযিঃ) এর কাছে জনৈক ব্যক্তিকে এ বলে পাঠালেন যে, আপনার কাছে সংরক্ষিত কুরআনের সহীফাসমূহ আমাদের কাছে পাঠিয়ে দিন, যাতে আমরা সেগুলোকে পরিপূর্ণ মাসহাফসমূহে লিপিবদ্ধ করতে পারি। এরপর আমরা তা আপনার কাছে ফিরিয়ে দেব।
হাফসা (রাযিঃ) তখন সেগুলো উসমান (রাযিঃ) এর কাছে পাঠিয়ে দিলেন। এরপর উসমান (রাযিঃ) যায়দ ইবনে সাবিত (রাযিঃ), আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের (রাযিঃ), সাঈদ ইবনে আস (রাযিঃ) এবং আব্দুর রহমান ইবনে হারিস ইবনে হিশাম (রাযিঃ) কে নির্দেশ দিলেন। তাঁরা মাসহাফে তা লিপিবদ্ধ করলেন। এ সময় উসমান (রাযিঃ) তিনজন কুরাইশী ব্যক্তিকে বললেন, কুরআনের কোন বিষয়ে যদি যায়দ ইবনে সাবিতের সঙ্গে তোমাদের মতপার্থক্য দেখা দেয়, তাহলে তোমরা তা কুরাইশদের ভাষায় লিপিবদ্ধ করবে। কারণ, কুরআন তাদের ভাষায় অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তাঁরা তাই করলেন। যখন মূল লিপিগুলো থেকে কয়েকটি পরিপূর্ণ গ্রন্থ লিপিবদ্ধ হয়ে গেল, তখন উসমান (রাযিঃ) মূল লিপিগুলো হাফসা (রাযিঃ) এর কাছে ফিরিয়ে দিলেন। তারপর তিনি কুরআনের লিখিত মাসহাফ সমূহের এক একখানা মাসহাফ এক এক প্রদেশে পাঠিয়ে দিলেন এবং এতদভিন্ন আলাদা আলাদা বা একত্রে সন্নিবেশীত কুরআনের যে কপিসমূহ রয়েছে তা জ্বালিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিলেন।
ইবনে শিহাব (রাহঃ) খারিজা ইবনে যায়দ ইবনে সাবিতের মাধ্যমে যায়দ ইবনে সাবিত থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমরা যখন গ্রন্থকারে কুরআন লিপিবদ্ধ করছিলাম তখন সূরা আহযাবের একটি আয়াত আমার থেকে হারিয়ে যায়; অথচ আমি তা রাসূল (ﷺ) কে পাঠ করতে শুনেছি। তাই আমরা অনুসন্ধান করতে লাগলাম। অবশেষে আমরা তা খুযায়মা ইবনে সাবিত আনসারী (রাযিঃ) এর কাছে পেলাম। আয়াতটি হচ্ছে এইঃ “মু’মিনদের মধ্যে কতক আল্লাহর সঙ্গে তাদের কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ করেছে, তাদের কেউ কেউ শাহাদত বরণ করেছে এবং কেউ কেউ প্রতীক্ষায় রয়েছে। তাঁরা তাদের অঙ্গীকারে কোন পরিবর্তন করেনি”। (৩৩: ২৩)
তারপর আমরা এ আয়াতটি সংশ্লিষ্ট সূরার সাথে মাসহাফে লিপিবদ্ধ করলাম।
হাফসা (রাযিঃ) তখন সেগুলো উসমান (রাযিঃ) এর কাছে পাঠিয়ে দিলেন। এরপর উসমান (রাযিঃ) যায়দ ইবনে সাবিত (রাযিঃ), আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের (রাযিঃ), সাঈদ ইবনে আস (রাযিঃ) এবং আব্দুর রহমান ইবনে হারিস ইবনে হিশাম (রাযিঃ) কে নির্দেশ দিলেন। তাঁরা মাসহাফে তা লিপিবদ্ধ করলেন। এ সময় উসমান (রাযিঃ) তিনজন কুরাইশী ব্যক্তিকে বললেন, কুরআনের কোন বিষয়ে যদি যায়দ ইবনে সাবিতের সঙ্গে তোমাদের মতপার্থক্য দেখা দেয়, তাহলে তোমরা তা কুরাইশদের ভাষায় লিপিবদ্ধ করবে। কারণ, কুরআন তাদের ভাষায় অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তাঁরা তাই করলেন। যখন মূল লিপিগুলো থেকে কয়েকটি পরিপূর্ণ গ্রন্থ লিপিবদ্ধ হয়ে গেল, তখন উসমান (রাযিঃ) মূল লিপিগুলো হাফসা (রাযিঃ) এর কাছে ফিরিয়ে দিলেন। তারপর তিনি কুরআনের লিখিত মাসহাফ সমূহের এক একখানা মাসহাফ এক এক প্রদেশে পাঠিয়ে দিলেন এবং এতদভিন্ন আলাদা আলাদা বা একত্রে সন্নিবেশীত কুরআনের যে কপিসমূহ রয়েছে তা জ্বালিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিলেন।
ইবনে শিহাব (রাহঃ) খারিজা ইবনে যায়দ ইবনে সাবিতের মাধ্যমে যায়দ ইবনে সাবিত থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমরা যখন গ্রন্থকারে কুরআন লিপিবদ্ধ করছিলাম তখন সূরা আহযাবের একটি আয়াত আমার থেকে হারিয়ে যায়; অথচ আমি তা রাসূল (ﷺ) কে পাঠ করতে শুনেছি। তাই আমরা অনুসন্ধান করতে লাগলাম। অবশেষে আমরা তা খুযায়মা ইবনে সাবিত আনসারী (রাযিঃ) এর কাছে পেলাম। আয়াতটি হচ্ছে এইঃ “মু’মিনদের মধ্যে কতক আল্লাহর সঙ্গে তাদের কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ করেছে, তাদের কেউ কেউ শাহাদত বরণ করেছে এবং কেউ কেউ প্রতীক্ষায় রয়েছে। তাঁরা তাদের অঙ্গীকারে কোন পরিবর্তন করেনি”। (৩৩: ২৩)
তারপর আমরা এ আয়াতটি সংশ্লিষ্ট সূরার সাথে মাসহাফে লিপিবদ্ধ করলাম।
باب جَمْعِ الْقُرْآنِ
حَدَّثَنَا مُوسَى، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ، حَدَّثَنَا ابْنُ شِهَابٍ، أَنَّ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، حَدَّثَهُ أَنَّ حُذَيْفَةَ بْنَ الْيَمَانِ قَدِمَ عَلَى عُثْمَانَ وَكَانَ يُغَازِي أَهْلَ الشَّأْمِ فِي فَتْحِ إِرْمِينِيَةَ وَأَذْرَبِيجَانَ مَعَ أَهْلِ الْعِرَاقِ فَأَفْزَعَ حُذَيْفَةَ اخْتِلاَفُهُمْ فِي الْقِرَاءَةِ فَقَالَ حُذَيْفَةُ لِعُثْمَانَ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ أَدْرِكْ هَذِهِ الأُمَّةَ قَبْلَ أَنْ يَخْتَلِفُوا فِي الْكِتَابِ اخْتِلاَفَ الْيَهُودِ وَالنَّصَارَى فَأَرْسَلَ عُثْمَانُ إِلَى حَفْصَةَ أَنْ أَرْسِلِي إِلَيْنَا بِالصُّحُفِ نَنْسَخُهَا فِي الْمَصَاحِفِ ثُمَّ نَرُدُّهَا إِلَيْكِ فَأَرْسَلَتْ بِهَا حَفْصَةُ إِلَى عُثْمَانَ فَأَمَرَ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ وَعَبْدَ اللَّهِ بْنَ الزُّبَيْرِ وَسَعِيدَ بْنَ الْعَاصِ وَعَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ فَنَسَخُوهَا فِي الْمَصَاحِفِ وَقَالَ عُثْمَانُ لِلرَّهْطِ الْقُرَشِيِّينَ الثَّلاَثَةِ إِذَا اخْتَلَفْتُمْ أَنْتُمْ وَزَيْدُ بْنُ ثَابِتٍ فِي شَىْءٍ مِنَ الْقُرْآنِ فَاكْتُبُوهُ بِلِسَانِ قُرَيْشٍ فَإِنَّمَا نَزَلَ بِلِسَانِهِمْ فَفَعَلُوا حَتَّى إِذَا نَسَخُوا الصُّحُفَ فِي الْمَصَاحِفِ رَدَّ عُثْمَانُ الصُّحُفَ إِلَى حَفْصَةَ وَأَرْسَلَ إِلَى كُلِّ أُفُقٍ بِمُصْحَفٍ مِمَّا نَسَخُوا وَأَمَرَ بِمَا سِوَاهُ مِنَ الْقُرْآنِ فِي كُلِّ صَحِيفَةٍ أَوْ مُصْحَفٍ أَنْ يُحْرَقَ.
قَالَ ابْنُ شِهَابٍ وَأَخْبَرَنِي خَارِجَةُ بْنُ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ، سَمِعَ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ، قَالَ فَقَدْتُ آيَةً مِنَ الأَحْزَابِ حِينَ نَسَخْنَا الْمُصْحَفَ قَدْ كُنْتُ أَسْمَعُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ بِهَا فَالْتَمَسْنَاهَا فَوَجَدْنَاهَا مَعَ خُزَيْمَةَ بْنِ ثَابِتٍ الأَنْصَارِيِّ (مِنَ الْمُؤْمِنِينَ رِجَالٌ صَدَقُوا مَا عَاهَدُوا اللَّهَ عَلَيْهِ) فَأَلْحَقْنَاهَا فِي سُورَتِهَا فِي الْمُصْحَفِ.
قَالَ ابْنُ شِهَابٍ وَأَخْبَرَنِي خَارِجَةُ بْنُ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ، سَمِعَ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ، قَالَ فَقَدْتُ آيَةً مِنَ الأَحْزَابِ حِينَ نَسَخْنَا الْمُصْحَفَ قَدْ كُنْتُ أَسْمَعُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ بِهَا فَالْتَمَسْنَاهَا فَوَجَدْنَاهَا مَعَ خُزَيْمَةَ بْنِ ثَابِتٍ الأَنْصَارِيِّ (مِنَ الْمُؤْمِنِينَ رِجَالٌ صَدَقُوا مَا عَاهَدُوا اللَّهَ عَلَيْهِ) فَأَلْحَقْنَاهَا فِي سُورَتِهَا فِي الْمُصْحَفِ.

তাহকীক: