আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

الجامع الصحيح للبخاري

৫১- কুরআনের তাফসীর অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ৪৫৫৯
আন্তর্জাতিক নং: ৪৯২০
সূরা হাককা
ইবনে যুবাইর (রহ) বলেন, عِيْشَةٍ رَّاضِيَةٍ অর্থ সন্তোষজনক জীবন। الْقَاضِيَةَ অর্থ প্রথম মৃত্যুটাই যদি এমন হত যে, তারপর আর জীবিত না করা হত। مِنْ أَحَدٍ عَنْهُ حَاجِزِيْنَ তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই, যে তাকে রক্ষা করতে পারে। أحد শব্দটি একবচন ও বহুবচন উভয়ের জন্যই ব্যবহৃত হয়।
ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, الْوَتِيْنَ অর্থ হৃদপিণ্ডের সাথে সংযুক্ত রগ।
ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, طَغٰى অর্থ অতিরিক্ত হয়েছে বা অধিক হয়েছে। বলা হয় بِالطَّاغِيَةِ অর্থ তাদের বিদ্রোহ এবং কুফরীর কারণে; বলা হয় طغت على الخزان كما طغى الماء على قوم نوح অর্থ বায়ু নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে এবং সামূদ সম্প্রদায়কে ধ্বংস করে দিয়েছে যেমন পানি নূহ্ সম্প্রদায়ের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল।

সূরা মা’আরিজ
الْفَصِيْلَةُ অর্থ তাদের পূর্ব-পুরুষদের থেকে সর্বাধিক নিকটাত্মীয়, যাদের থেকে তারা পৃথক হয়েছে এবং যাদের দিকে তাদেরকে সম্পৃক্ত করা হয়। لِلشَّوٰى অর্থ দু’হাত, দু’পা, শরীরের বিভিন্ন প্রান্ত ভাগ এবং মাথার চামড়া সবগুলোকে شَوَاةٌ বলা হয়। । এবং যা কাটা হয়নি, তাকে شوى বলে । الْعِزُوْنَ দলসমূহ। এর একবচন عِزَةٌ।

সূরা নুহ
طْوَارًا অর্থ পর্যায়ক্রমে। বলা হয়, عَدَا طَوْرَهُ সে তার মর্যাদাকে অতিক্রম করে গেছে। بِالتَّخْفِيْفِ) الكبار) এর তুলনায় بالتشديد) الكُبَّارُ) এর অর্থের মাঝে কিছু আধিক্য ও কঠোরতা বিদ্যমান রয়েছে। এমনিভাবে جُمَّالٌ এর মাঝে جَمِيْلٌ -এর তুলনায় অধিকতর সৌন্দর্যের অর্থ বিদ্যমান আছে। كُبَّارٌ الْكَبِيْرُ ও بِالتَّخْفِيْفِ) الكبار) এর অবস্থা অনুরূপই। আরবীয় লোকের তাশ্দীদের সাথে رَجُلٌ حُسَّانٌ وَجُمَّالٌ ও বলেন, এমনিভাবে তাখ্ফীফের সাথে رَجُلٌ وَحُسَانٌ وَجُمَالٌ ও বলে থাকেন। دَيَّارًا শব্দটির উৎপত্তি دَوْرٍ ধাতু থেকে। তবে যদি তাকে فَيْعَالٌ এর ওজনে ধরা হয় তাহলে এর উৎপত্তি হবে الدَّوَرَانِ শব্দমূল থেকে। যেমন, উমর (রাযিঃ) الْحَيُّ الْقَيَّامُ পড়েছেন قُمْتُ থেকে শব্দটির উৎপত্তি।
অন্যান্য মুফাসসির বলেছেন, دَيَّارًا অর্থ কোন গৃহবাসী। تَبَارًا অর্থ ধ্বংস।
ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, مِدْرَارًا অর্থ একটি অপরটির পেছনে। وَقَارًا অর্থ আযমত, শ্রেষ্ঠত্ব।

পরিচ্ছেদঃ ২৫৮২. আল্লাহর বাণীঃ ودا ولا سواعا ولا يغوث ويعوق "তোমরা পরিত্যাগ করবে না ওয়াদ, সুওয়’আ, ইয়াগুস, ইয়াউক ও নসরকে (৭১ঃ ২৩)
৪৫৫৯। ইবরাহীম ইবনে মুসা (রাহঃ) ......... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে প্রতিমার পূজা নূহ (আলাইহিস সালাম) এর কাওমের মাঝে প্রচলিত ছিল, পরবর্তী সময়ে আরবদের মাঝেও তার পূজা প্রচলিত হয়েছিল। ওয়াদ ‘দাওমাতুল জান্দাল’ নামক স্থানে অবস্থিত কালব গোত্রের একটি দেবমূর্তি, সূওয়া’ হল হুযাইল গোত্রের একটি দেবমূর্তি এবং ইয়াগুস ছিল মুরাদ গোত্রের, অবশ্য পরে তা গাতীফ গোত্রের হয়ে যায়। এর আস্তানা ছিল কওমে সাবার নিকটে ‘জাওফ’ নামক স্থানে। ইয়া‘উক ছিল হামাদান গোত্রের দেবমূর্তি, নসর ছিল যুল-কালা গোত্রের শাখা হিময়ার গোত্রের দেবমূর্তি।
এসব ছিল নূহ (আলাইহিস সালাম)-এর উম্মতের নেক্কার ব্যক্তিবর্গের নাম। তারা মারা গেলে, শয়তান তাদের কওমের লোকদের অন্তরে এ কথা ডেলে দিল যে, তারা যেখানে বসে মজলিস করত, সেখানে তোমরা কতিপয় মূর্তি স্থাপন কর এবং ঐ সমস্ত পুণ্যবান লোকের নামানুসারেই এগুলোর নামকরণ কর। সুতরাং তারা তাই করল, কিন্তু তখনও ঐসব মূর্তির পূজা করা হত না। তবে মূর্তি স্থাপনকারী লোকগুলো যখন মারা গেলো আর এ সম্পর্কে সত্যিকারের জ্ঞান বিলুপ্ত হলো, তখন লোকজন তাদের পূজা করতে শুরু করে দেয়।
سورة الحاقة قال ابن جبير: {عيشة راضية} [الحاقة: 21]: «يريد فيها الرضا»، {القاضية} [الحاقة: 27]: «الموتة الأولى التي متها لم أحي بعدها»، {من أحد عنه حاجزين} [الحاقة: 47]: «أحد يكون للجمع وللواحد» وقال ابن عباس: {الوتين} [الحاقة: 46]: «نياط القلب» قال ابن عباس: {طغى} [طه: 24]: " كثر، ويقال: {بالطاغية} [الحاقة: 5]: بطغيانهم، ويقال: طغت على الخزان كما طغى الماء على قوم نوح

سورة {سأل سائل} [المعارج: 1] الفصيلة: أصغر آبائه القربى، إليه ينتمي من انتمى، {للشوى} [المعارج: 16]: اليدان والرجلان والأطراف، وجلدة الرأس يقال لها شواة، وما كان غير مقتل فهو شوى، عزين والعزون: الحلق والجماعات، وواحدها عزة "

سورة نوح: {إنا أرسلنا} [هود: 70] {أطوارا} [نوح: 14]: " طورا كذا وطورا كذا، يقال: عدا طوره أي قدره، والكبار أشد من الكبار، وكذلك جمال وجميل لأنها أشد مبالغة، وكبار الكبير، وكبارا أيضا بالتخفيف، والعرب تقول: رجل حسان وجمال وحسان، مخفف، وجمال، مخفف {ديارا} [نوح: 26]: من دور، ولكنه فيعال من الدوران " كما قرأ عمر: " الحي القيام: وهي من قمت " وقال غيره: {ديارا} [نوح: 26]: «أحدا»، {تبارا} [نوح: 28]: «هلاكا» وقال ابن عباس: {مدرارا} [الأنعام: 6]: «يتبع بعضها بعضا»، {وقارا} [نوح: 13]: «عظمة»

بَابُ قَوْلِهِ تعالى {وَدًّا وَلاَ سُواعًا، وَلاَ يَغُوثَ وَيَعُوقَ} [نوح: 23]
4920 - حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى، أَخْبَرَنَا هِشَامٌ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، وَقَالَ عَطَاءٌ: عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، «صَارَتِ الأَوْثَانُ الَّتِي كَانَتْ فِي قَوْمِ نُوحٍ فِي العَرَبِ بَعْدُ أَمَّا وَدٌّ كَانَتْ لِكَلْبٍ بِدَوْمَةِ الجَنْدَلِ، وَأَمَّا سُوَاعٌ كَانَتْ لِهُذَيْلٍ، وَأَمَّا يَغُوثُ فَكَانَتْ لِمُرَادٍ، ثُمَّ لِبَنِي غُطَيْفٍ بِالْجَوْفِ، عِنْدَ سَبَإٍ، وَأَمَّا يَعُوقُ فَكَانَتْ لِهَمْدَانَ، وَأَمَّا نَسْرٌ فَكَانَتْ لِحِمْيَرَ لِآلِ ذِي الكَلاَعِ، أَسْمَاءُ رِجَالٍ صَالِحِينَ مِنْ قَوْمِ نُوحٍ، فَلَمَّا هَلَكُوا أَوْحَى الشَّيْطَانُ إِلَى قَوْمِهِمْ، أَنِ انْصِبُوا إِلَى مَجَالِسِهِمُ الَّتِي كَانُوا يَجْلِسُونَ أَنْصَابًا وَسَمُّوهَا بِأَسْمَائِهِمْ، فَفَعَلُوا، فَلَمْ تُعْبَدْ، حَتَّى إِذَا هَلَكَ أُولَئِكَ وَتَنَسَّخَ العِلْمُ عُبِدَتْ»