আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
الجامع الصحيح للبخاري
৫০- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৭ টি
হাদীস নং: ৩৯২৭
আন্তর্জাতিক নং: ৪২৫১
২২০৭. উমরাতুল কাযার বর্ণনা। আনাস (রাযিঃ) নবী কারীম (ﷺ) থেকে এ বিষয়ে বর্ণনা করেছেন
৩৯২৭। উবাইদুল্লাহ্ ইবনে মুসা (রাহঃ) .... বারা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারীম (ﷺ) যিলকদ মাসে উমরা আদায় করার ইচ্ছায় মক্কা অভিমুখে রওয়ানা করেন। মক্কাবাসীরা তাঁকে মক্কা নগরীতে প্রবেশের অনুমতি দিতে অস্বীকৃতি জানালো। অবশেষে তিনি তাদের সঙ্গে এ কথার উপর সন্ধি-চুক্তি সম্পাদন করেন যে, (আগামী বছর উমরা পালন করতে এসে) তিনি মাত্র তিন দিন মক্কায় অবস্থান করবেন। মুসলিমগণ সন্ধিপত্র লেখার সময় এভাবে লিখেছিলেন, আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ আমাদের সঙ্গে এ চুক্তি সম্পাদন করেছেন। ফলে তারা (কথাটির উপর আপত্তি উঠিয়ে) বললো, আমরা তো এ কথা (মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল) স্বীকার করিনি। যদি আমরা আপনাকে আল্লাহর রাসূল বলে স্বীকারই করতাম তা হলে মক্কা প্রবেশে মোটেই বাধা দিতাম না। বরং আপনি তো মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ। তখন তিনি বললেন, আমি আল্লাহর রাসূল এবং মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ (উভয়টিই)। তারপর তিনি আলী (রাযিঃ)-কে বললেন, “রাসূলুল্লাহ” শব্দটি মুছে ফেল। আলী (রাযিঃ) উত্তর দিলেন, আল্লাহর কসম, আমি কখনো এ কথা মুছতে পারবো না।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তখন নিজেই চুক্তিপত্রটি হাতে নিলেন। তিনি (আক্ষরিকভাবে) লিখতে জানতেন না, তবুও তিনি (তার এক মু‘জিযা হিসেবে) লিখে দিলেন যে, মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ এ চুক্তিপত্র সম্পাদন করে দিয়েছে যে, তিনি কোষবদ্ধ তরবারি ব্যতীত অন্য কোন অস্ত্র নিয়ে মক্কায় প্রবেশ করবেন না। মক্কার অধিবাসীদের কেউ তাঁর সাথে যেতে চাইলেও তিনি তাকে সঙ্গে নিয়ে যাবেন না। তাঁর সাথীদের কেউ মক্কায় (পুনরায়) অবস্থান করতে চাইলে তিনি তাকে বাধা দেবেন না। (পরবর্তী বছর সন্ধি অনুসারে) যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মক্কায় প্রবেশ করলেন এবং নির্দিষ্ট মেয়াদ অতিক্রম হল তখন মুশরিকরা আলীর কাছে এসে বললো, আপনার সাথী [রাসূলুল্লাহ (ﷺ)]- কে বলুন যে, নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। তাই তিনি যেন আমাদের নিকট থেকে চলে যান। নবী কারীম (ﷺ) সে মতে প্রত্যাবর্তন করলেন।
এ সময়ে হামযা (রাযিঃ)-এর কন্যা চাচা চাচা বলে ডাকতে ডাকতে তার পেছনে ছুটলো। আলী (রাযিঃ) তার হাত ধরে তুলে নিয়ে ফাতিমা (রাযিঃ)- কে দিয়ে বললেন, তোমার চাচার কন্যাকে নাও। ফাতিমা (রাযিঃ) বাচ্চাটিকে তুলে নিলেন। (কাফেলা মদীনা পৌঁছার পর) বাচ্চাটি নিয়ে আলী, যায়দ (ইবনে হারিসা) ও জা‘ফর [ইবনে আবু তালিব (রাযিঃ)]-এর মধ্যে ঝগড়া আরম্ভ হয়ে গেল। আলী (রাযিঃ) বললেন, আমি তাকে (প্রথমে) কোলে নিয়েছি এবং সে আমার চাচার কন্যা (তাই সে আমার কাছে থাকবে)! জা‘ফর দাবি করলেন, সে আমার চাচার কন্যা এবং তার খালা হল আমার স্ত্রী। যায়দ [ইবনে হারিসা (রাযিঃ)] বললেন, সে আমার ভাইয়ের কন্যা (অর্থাৎ সবাই নিজ নিজ সম্পর্কের ভিত্তিতে নিজের কাছে রাখার অধিকার পেশ করলো)।
তখন নবী কারীম (ﷺ) মেয়েটিকে তার খালার জন্য (অর্থাৎ জা‘ফরের পক্ষে) ফায়সালা দিয়ে বললেন (আদর ও লালন-পালনের ব্যাপারে) খালা মায়ের সমপর্যায়ের। এরপর তিনি আলীর দিকে লক্ষ্য করে করে বললেন, তুমি আমার এবং আমি তোমার। জা‘ফর (রাযিঃ)- কে বললেন, তুমি দৈহিক গঠন এবং চারিত্রিক গুণে আামার মতো। আর যায়দ (রাযিঃ)- কে বললেন, তুমি আমাদের ঈমানী ভাই ও আযাদকৃত গোলাম। আলী (রাযিঃ) [নবী কারীম (ﷺ)- কে] বললেন, আপনি হামযার মেয়েটিকে বিয়ে করছেন না কেন? তিনি [নবী কারীম (ﷺ)] উত্তরে বললেন, সে আমার দুধ-ভাই (হামযা)-এর মেয়ে।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তখন নিজেই চুক্তিপত্রটি হাতে নিলেন। তিনি (আক্ষরিকভাবে) লিখতে জানতেন না, তবুও তিনি (তার এক মু‘জিযা হিসেবে) লিখে দিলেন যে, মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ এ চুক্তিপত্র সম্পাদন করে দিয়েছে যে, তিনি কোষবদ্ধ তরবারি ব্যতীত অন্য কোন অস্ত্র নিয়ে মক্কায় প্রবেশ করবেন না। মক্কার অধিবাসীদের কেউ তাঁর সাথে যেতে চাইলেও তিনি তাকে সঙ্গে নিয়ে যাবেন না। তাঁর সাথীদের কেউ মক্কায় (পুনরায়) অবস্থান করতে চাইলে তিনি তাকে বাধা দেবেন না। (পরবর্তী বছর সন্ধি অনুসারে) যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মক্কায় প্রবেশ করলেন এবং নির্দিষ্ট মেয়াদ অতিক্রম হল তখন মুশরিকরা আলীর কাছে এসে বললো, আপনার সাথী [রাসূলুল্লাহ (ﷺ)]- কে বলুন যে, নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। তাই তিনি যেন আমাদের নিকট থেকে চলে যান। নবী কারীম (ﷺ) সে মতে প্রত্যাবর্তন করলেন।
এ সময়ে হামযা (রাযিঃ)-এর কন্যা চাচা চাচা বলে ডাকতে ডাকতে তার পেছনে ছুটলো। আলী (রাযিঃ) তার হাত ধরে তুলে নিয়ে ফাতিমা (রাযিঃ)- কে দিয়ে বললেন, তোমার চাচার কন্যাকে নাও। ফাতিমা (রাযিঃ) বাচ্চাটিকে তুলে নিলেন। (কাফেলা মদীনা পৌঁছার পর) বাচ্চাটি নিয়ে আলী, যায়দ (ইবনে হারিসা) ও জা‘ফর [ইবনে আবু তালিব (রাযিঃ)]-এর মধ্যে ঝগড়া আরম্ভ হয়ে গেল। আলী (রাযিঃ) বললেন, আমি তাকে (প্রথমে) কোলে নিয়েছি এবং সে আমার চাচার কন্যা (তাই সে আমার কাছে থাকবে)! জা‘ফর দাবি করলেন, সে আমার চাচার কন্যা এবং তার খালা হল আমার স্ত্রী। যায়দ [ইবনে হারিসা (রাযিঃ)] বললেন, সে আমার ভাইয়ের কন্যা (অর্থাৎ সবাই নিজ নিজ সম্পর্কের ভিত্তিতে নিজের কাছে রাখার অধিকার পেশ করলো)।
তখন নবী কারীম (ﷺ) মেয়েটিকে তার খালার জন্য (অর্থাৎ জা‘ফরের পক্ষে) ফায়সালা দিয়ে বললেন (আদর ও লালন-পালনের ব্যাপারে) খালা মায়ের সমপর্যায়ের। এরপর তিনি আলীর দিকে লক্ষ্য করে করে বললেন, তুমি আমার এবং আমি তোমার। জা‘ফর (রাযিঃ)- কে বললেন, তুমি দৈহিক গঠন এবং চারিত্রিক গুণে আামার মতো। আর যায়দ (রাযিঃ)- কে বললেন, তুমি আমাদের ঈমানী ভাই ও আযাদকৃত গোলাম। আলী (রাযিঃ) [নবী কারীম (ﷺ)- কে] বললেন, আপনি হামযার মেয়েটিকে বিয়ে করছেন না কেন? তিনি [নবী কারীম (ﷺ)] উত্তরে বললেন, সে আমার দুধ-ভাই (হামযা)-এর মেয়ে।
باب عُمْرَةُ الْقَضَاءِ ذَكَرَهُ أَنَسٌ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
4251 - حَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ البَرَاءِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: لَمَّا اعْتَمَرَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي ذِي القَعْدَةِ، فَأَبَى أَهْلُ مَكَّةَ أَنْ يَدَعُوهُ يَدْخُلُ مَكَّةَ، حَتَّى قَاضَاهُمْ عَلَى أَنْ يُقِيمَ بِهَا ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ، فَلَمَّا كَتَبُوا الكِتَابَ، كَتَبُوا: هَذَا مَا قَاضَى عَلَيْهِ مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ، قَالُوا: لاَ نُقِرُّ لَكَ بِهَذَا، لَوْ نَعْلَمُ أَنَّكَ رَسُولُ اللَّهِ مَا مَنَعْنَاكَ شَيْئًا، وَلَكِنْ أَنْتَ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، فَقَالَ «أَنَا رَسُولُ اللَّهِ، وَأَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ» ، ثُمَّ قَالَ: لِعَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: «امْحُ رَسُولَ اللَّهِ» ، قَالَ عَلِيٌّ: لاَ وَاللَّهِ لاَ أَمْحُوكَ أَبَدًا، فَأَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الكِتَابَ، وَلَيْسَ يُحْسِنُ يَكْتُبُ، فَكَتَبَ: هَذَا مَا قَاضَى عَلَيْهِ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، لاَ يُدْخِلُ مَكَّةَ السِّلاَحَ إِلَّا السَّيْفَ فِي القِرَابِ، وَأَنْ لاَ يَخْرُجَ مِنْ أَهْلِهَا بِأَحَدٍ إِنْ أَرَادَ أَنْ يَتْبَعَهُ، وَأَنْ لاَ يَمْنَعَ مِنْ أَصْحَابِهِ أَحَدًا، إِنْ أَرَادَ أَنْ يُقِيمَ بِهَا. فَلَمَّا دَخَلَهَا وَمَضَى الأَجَلُ أَتَوْا عَلِيًّا، فَقَالُوا: قُلْ لِصَاحِبِكَ: اخْرُجْ عَنَّا، فَقَدْ مَضَى الأَجَلُ، فَخَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَتَبِعَتْهُ ابْنَةُ حَمْزَةَ، تُنَادِي يَا عَمِّ يَا عَمِّ، فَتَنَاوَلَهَا عَلِيٌّ فَأَخَذَ بِيَدِهَا، وَقَالَ لِفَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلاَمُ: دُونَكِ ابْنَةَ عَمِّكِ حَمَلَتْهَا، فَاخْتَصَمَ فِيهَا عَلِيٌّ وَزَيْدٌ وَجَعْفَرٌ، قَالَ عَلِيٌّ: أَنَا أَخَذْتُهَا، وَهِيَ بِنْتُ عَمِّي، وَقَالَ جَعْفَرٌ: ابْنَةُ عَمِّي وَخَالَتُهَا تَحْتِي، وَقَالَ زَيْدٌ: ابْنَةُ أَخِي. فَقَضَى بِهَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِخَالَتِهَا، وَقَالَ: «الخَالَةُ بِمَنْزِلَةِ الأُمِّ» وَقَالَ لِعَلِيٍّ: «أَنْتَ مِنِّي وَأَنَا مِنْكَ» وَقَالَ لِجَعْفَرٍ: «أَشْبَهْتَ خَلْقِي وَخُلُقِي» ، وَقَالَ لِزَيْدٍ: «أَنْتَ [ص:142] أَخُونَا وَمَوْلاَنَا» ، وَقَالَ عَلِيٌّ: أَلاَ تَتَزَوَّجُ بِنْتَ حَمْزَةَ؟ قَالَ: «إِنَّهَا ابْنَةُ أَخِي مِنَ الرَّضَاعَةِ»
হাদীস নং: ৩৯২৮
আন্তর্জাতিক নং: ৪২৫২
২২০৭. উমরাতুল কাযার বর্ণনা।
৩৯২৮। মুহাম্মাদ ইবনে রাফি ও মুহাম্মাদ ইবনে হুসাইন ইবনে ইবরাহীম (রাহঃ) .... ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, উমরা পালনের উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) (মক্কা অভিমুখে) রওয়ানা করলে কুরাইশী কাফেররা তাঁর এবং বায়তুল্লাহর মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়ালো। কাজেই তিনি হুদায়বিয়া নামক স্থানেই কুরবানীর জন্তু যবেহ্ করলেন এবং মাথা মুণ্ডন করলেন (হালাল হয়ে গেলেন), আর তিনি তাদের সঙ্গে এই মর্মে চুক্তি সম্পাদন করলেন যে, আগামী বছর তিনি উমরা পালনের জন্য আসবেন। কিন্তু তরবারি ব্যতীত অন্য কোন অস্ত্র সাথে আনবেন না এবং মক্কাবাসীরা যে ক’দিন ইচ্ছা করবে এর বেশী দিন তিনি সেখানে অবস্থান করবেন না। সে মতে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) (পরবর্তী বছর উমরা পালন করতে আসলে) সম্পাদিত চুক্তিনামা অনুসারে তিনি মক্কায় প্রবেশ করলেন। তারপর তিন দিন অবস্থান করলে মক্কাবাসীরা তাঁকে চলে যেতে বলল। তাই তিনি (মক্কা থেকে) চলে গেলেন।
باب عُمْرَةُ الْقَضَاءِ
4252 - حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا سُرَيْجٌ، حَدَّثَنَا فُلَيْحٌ، ح وحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ الحُسَيْنِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبِي، حَدَّثَنَا فُلَيْحُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا «أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ مُعْتَمِرًا، فَحَالَ كُفَّارُ قُرَيْشٍ بَيْنَهُ وَبَيْنَ البَيْتِ، فَنَحَرَ هَدْيَهُ وَحَلَقَ رَأْسَهُ بِالحُدَيْبِيَةِ، وَقَاضَاهُمْ عَلَى أَنْ يَعْتَمِرَ العَامَ المُقْبِلَ، وَلاَ يَحْمِلَ سِلاَحًا عَلَيْهِمْ إِلَّا سُيُوفًا، وَلاَ يُقِيمَ بِهَا إِلَّا مَا أَحَبُّوا، فَاعْتَمَرَ مِنَ العَامِ المُقْبِلِ، فَدَخَلَهَا كَمَا كَانَ صَالَحَهُمْ، فَلَمَّا أَنْ أَقَامَ بِهَا ثَلاَثًا، أَمَرُوهُ أَنْ يَخْرُجَ فَخَرَجَ»

তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৯২৯
আন্তর্জাতিক নং: ৪২৫৩ - ৪২৫৪
২২০৭. উমরাতুল কাযার বর্ণনা।
৩৯২৯। উসমান ইবনে আবী শাঈবা (রাহঃ) .... মুজাহিদ (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি এবং উরওয়া ইবনে যুবাইর (রাযিঃ) মসজিদে নববীতে প্রবেশ করেই দেখলাম আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) আয়েশা (রাযিঃ)- এর হুজরার কিনারেই বসে আছেন। উরওয়া (রাযিঃ) তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, নবী কারীম (ﷺ) ক’টি উমরা আদায় করেছিলেন? উত্তরে তিনি বললেন, চারটি। এ সময় আমরা (ঘরের ভিতরে) আয়েশা (রাযিঃ)- এর মিসওয়াক করার আওয়াজ শুনতে পেলাম। উরওয়া (রাযিঃ) বললেন, হে উম্মুল মু’মিনীন! আবু আব্দুর রহমান [ইবনে উমর (রাযিঃ)] কি বলছেন, তা আপনি শুনেছেন কি যে, নবী কারীম (ﷺ) চারটি উমরা করেছেন? আয়েশা (রাযিঃ) উত্তর দিলেন যে, নবী কারীম (ﷺ) যে কয়টি উমরা আদায় করেছিলেন তার সবটিতেই তিনি (ইবনে উমর) তাঁর সাথে ছিলেন। [তাই ইবনে উমর (রাযিঃ) ঠিকই বলবেন] তবে তিনি রজব মাসে কখনো উমরা আদায় করেননি।
باب عُمْرَةُ الْقَضَاءِ
حَدَّثَنِي عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ مُجَاهِدٍ، قَالَ دَخَلْتُ أَنَا وَعُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ الْمَسْجِدَ، فَإِذَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ جَالِسٌ إِلَى حُجْرَةِ عَائِشَةَ ثُمَّ قَالَ كَمِ اعْتَمَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَرْبَعًا (إِحْدَاهُنَّ فِي رَجَبٍ) ثُمَّ سَمِعْنَا اسْتِنَانَ، عَائِشَةَ قَالَ عُرْوَةُ يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ أَلاَ تَسْمَعِينَ مَا يَقُولُ أَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم اعْتَمَرَ أَرْبَعَ عُمَرٍ. فَقَالَتْ مَا اعْتَمَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عُمْرَةً إِلاَّ وَهْوَ شَاهِدُهُ، وَمَا اعْتَمَرَ فِي رَجَبٍ قَطُّ.

তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৯৩০
আন্তর্জাতিক নং: ৪২৫৫
২২০৭. উমরাতুল কাযার বর্ণনা।
৩৯৩০। আলী ইবনে আব্দুল্লাহ (রাহঃ) .... ইবনে আবু আওফা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন উমরাতুল কাযা আদায় করছিলেন তখন আমরা তাঁকে মুশরিক ও তাদের যুবকদের থেকে (তাঁর চতুর্দিকে ঘিরে দাঁড়িয়ে) আড়াল করে রেখেছিলাম যেন তারা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে কোন প্রকার কষ্ট বা আঘাত দিতে না পারে।
باب عُمْرَةُ الْقَضَاءِ
4255 - حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، سَمِعَ ابْنَ أَبِي أَوْفَى، يَقُولُ «لَمَّا اعْتَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَتَرْنَاهُ مِنْ غِلْمَانِ المُشْرِكِينَ وَمِنْهُمْ، أَنْ يُؤْذُوا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ»

তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৯৩১
আন্তর্জাতিক নং: ৪২৫৬
২২০৭. উমরাতুল কাযার বর্ণনা।
৩৯৩১। সুলাইমান ইবনে হারব (রাহঃ) .... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এবং তাঁর সাহাবীগণ (উমরাতুল কাযা আদায়ের উদ্দেশ্যে মক্কা) আগমন করলে মুশরিকরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগল যে, তোমাদের সামনে এমন একদল লোক আসছে, ইয়াসরিবের জ্বর যাদেরকে দুর্বল করে দিয়েছে। এজন্য নবী কারীম (ﷺ) সাহাবীগণকে প্রথম তিন সাওত বা চক্করে দেহ হেলিয়ে দুলিয়ে চলার জন্য এবং দু’ রুকনের মধ্যবর্তী স্থানে স্বাভাবিকভাবে চলতে নির্দেশ দেন। অবশ্য তিনি তাঁদেরকে সবকটি চক্করেই হেলে দুলে চলার আদেশ করতেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি তাঁর অনুভূতিই কেবল তাঁকে এ হুকুম দেওয়া থেকে বিরত রেখেছিল।
অন্য এক সনদে ইবনে সালামা (রাহঃ) আইয়ুব ও সাঈদ ইবনে যুবাইর (রাহঃ)-এর মাধ্যমে ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, সন্ধি সম্পাদনের মাধ্যমে নিরাপত্তা লাভের পরবর্তী বছর যখন নবী কারীম (ﷺ) (মক্কায়) আগমন করলেন তখন মুশরিকরা যেন সাহাবীদের দৈহিক-বল অবলোকন করতে পারে এজন্য তিনি তাঁদের বলেছেন, তোমরা হেলেদুলে তাওয়াফ করো। এ সময় মুশরিকরা কুআয়কিআন পাহাড়ের দিক থেকে মুসলমানদেরকে দেখছিল।*
*ইয়াসরিব মদীনার পুরাতন নাম। এ এলাকায় দীর্ঘদিন পূর্ব থেকেই এক প্রকার জ্বরের প্রাদুর্ভাব লেগে থাকত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর মদীনায় আগমনের পর তাঁর দু'আর বরকতে সেটি মদীনা থেকে দূর হয়ে গেল। মুশরিকরা ঐ জ্বরের প্রতি ইঙ্গিত করেই বলেছিল মুসলিমরা দুর্বল হয়ে গিয়েছে। তাই রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সাহাবীদেরকে রমল করার আদেশ দিলেন যেন তাঁদের শৌর্য-বীর্য অবলোকন করে মুশরিকরা হতভম্ব হয়ে পড়ে। আর যেহেতু তারা কুআয়কিআন পর্বত থেকেই মুসলিমদের দিকে তাকিয়েছিল আর সেখান থেকে দু’ রুকনের মধ্যবর্তী স্থানটি দেখা যেতো না, এ কারণে তিনি সাহাবাদেরকে এ স্থান স্বাভাবিক ভাবে হেঁটে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন।
অন্য এক সনদে ইবনে সালামা (রাহঃ) আইয়ুব ও সাঈদ ইবনে যুবাইর (রাহঃ)-এর মাধ্যমে ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, সন্ধি সম্পাদনের মাধ্যমে নিরাপত্তা লাভের পরবর্তী বছর যখন নবী কারীম (ﷺ) (মক্কায়) আগমন করলেন তখন মুশরিকরা যেন সাহাবীদের দৈহিক-বল অবলোকন করতে পারে এজন্য তিনি তাঁদের বলেছেন, তোমরা হেলেদুলে তাওয়াফ করো। এ সময় মুশরিকরা কুআয়কিআন পাহাড়ের দিক থেকে মুসলমানদেরকে দেখছিল।*
*ইয়াসরিব মদীনার পুরাতন নাম। এ এলাকায় দীর্ঘদিন পূর্ব থেকেই এক প্রকার জ্বরের প্রাদুর্ভাব লেগে থাকত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর মদীনায় আগমনের পর তাঁর দু'আর বরকতে সেটি মদীনা থেকে দূর হয়ে গেল। মুশরিকরা ঐ জ্বরের প্রতি ইঙ্গিত করেই বলেছিল মুসলিমরা দুর্বল হয়ে গিয়েছে। তাই রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সাহাবীদেরকে রমল করার আদেশ দিলেন যেন তাঁদের শৌর্য-বীর্য অবলোকন করে মুশরিকরা হতভম্ব হয়ে পড়ে। আর যেহেতু তারা কুআয়কিআন পর্বত থেকেই মুসলিমদের দিকে তাকিয়েছিল আর সেখান থেকে দু’ রুকনের মধ্যবর্তী স্থানটি দেখা যেতো না, এ কারণে তিনি সাহাবাদেরকে এ স্থান স্বাভাবিক ভাবে হেঁটে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন।
باب عُمْرَةُ الْقَضَاءِ
4256 - حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ هُوَ ابْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَصْحَابُهُ، فَقَالَ المُشْرِكُونَ: إِنَّهُ يَقْدَمُ عَلَيْكُمْ وَفْدٌ وَهَنَهُمْ حُمَّى يَثْرِبَ، «وَأَمَرَهُمُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يَرْمُلُوا الأَشْوَاطَ الثَّلاَثَةَ، وَأَنْ يَمْشُوا مَا بَيْنَ الرُّكْنَيْنِ، وَلَمْ يَمْنَعْهُ أَنْ يَأْمُرَهُمْ، أَنْ يَرْمُلُوا الأَشْوَاطَ كُلَّهَا إِلَّا الإِبْقَاءُ عَلَيْهِمْ» قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: وَزَادَ ابْنُ سَلَمَةَ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: لَمَّا قَدِمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِعَامِهِ الَّذِي اسْتَأْمَنَ، قَالَ: «ارْمُلُوا» لِيَرَى المُشْرِكُونَ قُوَّتَهُمْ، وَالمُشْرِكُونَ مِنْ قِبَلِ قُعَيْقِعَانَ

তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৯৩২
আন্তর্জাতিক নং: ৪২৫৭
২২০৭. উমরাতুল কাযার বর্ণনা।
৩৯৩২। মুহাম্মাদ (রাহঃ) .... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বায়তুল্লাহ্ এবং সাফা ও মারওয়া- এর মধ্যখানে এ জন্যই নবী কারীম (ﷺ) ‘সাঈ’ করেছিলেন, যেন মুশরিকদেরকে তাঁর শৌর্য-বীর্য অবলোকন করাতে পারেন।
باب عُمْرَةُ الْقَضَاءِ
4257 - حَدَّثَنِي مُحَمَّدٌ، عَنْ سُفْيَانَ بْنِ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ عَطَاءٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: «إِنَّمَا سَعَى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْبَيْتِ، وَبَيْنَ الصَّفَا وَالمَرْوَةِ، لِيُرِيَ المُشْرِكِينَ قُوَّتَهُ»

তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৯৩৩
আন্তর্জাতিক নং: ৪২৫৮ - ৪২৫৯
২২০৭. উমরাতুল কাযার বর্ণনা।
৩৯৩৩। মুসা ইবনে ইসমাঈল (রাহঃ) .... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারীম (ﷺ) ইহরাম অবস্থায় মাইমুনা (রাযিঃ)- কে বিয়ে করেছেন এবং (ইহরাম খোলার পরে) হালাল অবস্থায় তিনি তাঁর সাথে বাসর যাপন করেন। মাইমুনা (রাযিঃ) (মক্কার নিকটেই) সারিফ নামক স্থানে ইন্তিকাল করেছেন।
[ইমাম বুখারী (রাহঃ) বলেন] অপর একটি সনদে ইবনে ইসহাক-ইবনে আবু নাজীহ্ ও আবান ইবনে সালিহ-আতা ও মুজাহিদ (রাহঃ)-ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে অতিরিক্ত এতটুকু বর্ণনা করেছেন যে, নবী কারীম (ﷺ) উমরাতুল কাযা আদায়ের সফরে মাইমুনা (রাযিঃ)- কে বিয়ে করেছিলেন।
[ইমাম বুখারী (রাহঃ) বলেন] অপর একটি সনদে ইবনে ইসহাক-ইবনে আবু নাজীহ্ ও আবান ইবনে সালিহ-আতা ও মুজাহিদ (রাহঃ)-ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে অতিরিক্ত এতটুকু বর্ণনা করেছেন যে, নবী কারীম (ﷺ) উমরাতুল কাযা আদায়ের সফরে মাইমুনা (রাযিঃ)- কে বিয়ে করেছিলেন।
باب عُمْرَةُ الْقَضَاءِ
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ تَزَوَّجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَيْمُونَةَ وَهْوَ مُحْرِمٌ، وَبَنَى بِهَا وَهْوَ حَلاَلٌ وَمَاتَتْ بِسَرِفَ.
وَزَادَ ابْنُ إِسْحَاقَ حَدَّثَنِي ابْنُ أَبِي نَجِيحٍ، وَأَبَانُ بْنُ صَالِحٍ، عَنْ عَطَاءٍ، وَمُجَاهِدٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ تَزَوَّجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَيْمُونَةَ فِي عُمْرَةِ الْقَضَاءِ.
وَزَادَ ابْنُ إِسْحَاقَ حَدَّثَنِي ابْنُ أَبِي نَجِيحٍ، وَأَبَانُ بْنُ صَالِحٍ، عَنْ عَطَاءٍ، وَمُجَاهِدٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ تَزَوَّجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَيْمُونَةَ فِي عُمْرَةِ الْقَضَاءِ.

তাহকীক: