আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

الجامع الصحيح للبخاري

৪৮- নবীগণের আঃ আলোচনা - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ২০ টি

হাদীস নং: ৩২১৯
আন্তর্জাতিক নং: ৩৪৬৫
২০৪৮. মহান আল্লাহর বাণীঃ আসহাবে কাহাফ ও রাকীম সম্পর্কে আপনার কি ধারণা? (৯ঃ ১৮) المَرْقُومٌ শব্দটি الرقم হতে উদ্ভুত, অর্থ লিপিবদ্ধ। فرَبَطْنَا عَلَى قُلُوبِهِمْ এর অর্থ তাদের অন্তরে আমি (ধৈর্যের) প্রেরণা প্রদান করেছি। যদি আমি তার অন্তরে সহনশীলতা প্রেরণ করতাম। شَطَطًا অতিশয় অতিরিক্ত। الْوَصِيدُ গুহার পাড়। এটা একবচন। এর বহুবচন وَصَائِدُ এবং وَوُصُدٌ ; কেউ কেউ বলেন, الْوَصِيدُ অর্থ দরজা। مُؤْصَدَةٌ বন্ধ। এ অর্থেই ব্যবহার করা হয়। آصَدَ الْبَابَ وَأَوْصَدَ আমি তাদেরকে জীবিত করলাম। أَزْكَى পবিত্র ও সুস্বাদু খাদ্য। এরপর আল্লাহ তাদের কানে ছাপ মেরে দিলেন। তারা ঘুমিয়ে পড়লো। رَجْمًا بِالْغَيْبِ যা স্পষ্ট হল না। আর মুজাহিদ (রাহঃ) বলেন, تَقْرِضُهُمْ তাদের পাশ কেটে যায়।
৩২১৯ ইসমাঈল ইবনে খালীল (রাহঃ) .... ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, তোমাদের পূর্ববর্তী যুগের লোকেদের মধ্যে তিনজন লোক ছিল। তারা পথ চলছিল। হঠাৎ তাদের বৃষ্টি পেয়ে গেল। তখন তারা এক গুহায় আশ্রয় নিল। অমনি তাদের গুহার মুখ (একটি পাথর চাপা পড়ে) বন্ধ হয়ে গেল। তাদের একজন অন্যদেরকে বললেন, বন্ধুগণ আল্লাহর কসম! এখন সত্য ছাড়া কিছুই তোমাদেরকে মুক্ত করতে পারবে না। কাজেই, এখন তোমাদের প্রত্যেকের সেই জিনিসের উসিলায় দুআ করা উচিত, যে ব্যাপারে জানা রয়েছে যে, এ কাজটিতে সে সত্যতা বহাল রেখেছে।
তখন তাদের একজন (এই বলে) দুআ করলেন, হে আল্লাহ! আপনি জানেন যে, আমার একজন মযদুর ছিল। সে এক ফারাক চাউলের বিনিময়ে আমার কাজ করে দিয়েছিল। পরে সে মজুরী না নিয়েই চলে গিয়েছিল। আমি তার এ মজুরী দিয়ে কিছু একটা করতে মনস্থ করলাম এবং কৃষি কাজে লাগালাম। এতে যা উৎপাদন হয়েছে, তার বিনিময়ে আমি একটি গাভী কিনলাম। সে মযদুর আমার নিকট এসে তার মজুরী দাবী করল। আমি তাকে বললাম, এ গাভিটির দিকে তাকাও এবং তা হাঁকিয়ে নিয়ে যাও। সে জবাব দিল, আমার তো আপনার কাছে মাত্র এক ‘ফারাক’ চাউলই প্রাপ্য। আমি তাকে বললাম গাভীটি নিয়ে যাও। কেননা (তোমার) সেই এক ‘ফারাক’ দ্বারা যা উৎপাদিত হয়েছে, তারই বিনিময়ে এটি খরীদ করা হয়েছে। তখন সে গাভীটি হাঁকিয়ে নিয়ে গেল। (হে আল্লাহ) আপনি জানেন যে, তা আমি একমাত্র আপনার ভয়েই করেছি। তাহলে আমাদের (গুহার মুখ) থেকে (এ পাথরটি) সরিয়ে দাও। তখন তাদের কাছ থেকে পাথরটি কিছুটা সরে গেল।
তাদের আরেকজন দুআ করল, হে আল্লাহ! আপনি জানেন যে, আমার মা-বাপ খুব বৃদ্ধ ছিলেন। আমি প্রতি রাতে তাঁদের জন্য আমার বকরীর দুধ নিয়ে তাঁদের কাছে যেতাম। ঘটনাক্রমে এক রাতে তাঁদের কাছে যেতে আমি দেরী করে ফেললাম। তারপর এমন সময় গেলাম, যখন তাঁরা উভয়ে ঘুমিয়ে পড়েছেন। এদিকে আমার পরিবার পরিজন ক্ষুধার কারণে চিৎকার করছিল। আমার মাতা-পিতাকে দুধ পান না করান পর্যন্ত ক্ষুধায় কাতর আমার সন্তানদের দুধ পান করাইনি। কেননা, তাঁদেরকে ঘুম থেকে জাগানটি আমি পছন্দ করি নি। অপরদিকে তাঁদেরকে বাদ দিতেও ভাল লাগেনি। কারণ, এ দুধটুকু পান না করালে তাঁরা উভয়ে দুর্বল হয়ে যাবেন। তাই (দুধ হাতে) আমি (সারারাত) ভোর হয়ে যাওয়া পর্যন্ত (তাদের জাগ্রত হবার) অপেক্ষা করছিলাম। আপনি জানেন যে, একাজ আমি করেছি, একমাত্র আপনার ভয়ে, তাই, আমাদের থেকে (পাথরটি) সরিয়ে দিন। তারপর পাথরটি তাদের থেকে আরেকটু সরে গেল। এমনকি তারা আসমান দেখতে পেল।
অপর ব্যক্তি দুআ করল, হে আল্লাহ! আপনি জানেন যে, আমার একটি চাচাত বোন ছিল। সবার চেয়ে সে আমার নিকট অধিক প্রিয় ছিল। আমি তার সাথে (মিলনের) বাসনা করেছিলাম। কিন্তু সে একশ’ দীনার (স্বর্ণ মুদ্রার) প্রদান ব্যতীত ঐ কাজে রাজি হতে চাইল না। আমি স্বর্ণ মুদ্রা অর্জনের চেষ্টা আরম্ভ করলাম এবং তা অর্জনে সমর্থও হলাম। তারপর কথিত মুদ্রাসহ তার নিকট উপস্থিত হয়ে তাকে তা অর্পণ করলাম। সেও তার দেহ আমার ভোগে অর্পণ করলো। আমি যখন তার দুই পায়ের মাঝে বসে পড়লাম। তখন সে বলল, আল্লাহকে ভয় কর, অন্যায় ও অবৈধ ভাবে পবিত্র ও রক্ষিত আবরুকে বিনষ্ট করো না। আমি তৎক্ষণাৎ সরে পড়লাম এবং স্বর্ণ মুদ্রা ছেড়ে আসলাম। হে আল্লাহ! আপনি জানেন যে, আমি প্রকৃতই আপনার ভয়ে তা করে ছিলাম। তাই আমাদের রাস্তা প্রশস্ত করে দাও। আল্লাহ (তাদের) সংকট দূরীভূত করলেন। তারা বের হয়ে আসল।
بَاب: {أَمْ حَسِبْتَ أَنَّ أَصْحَابَ الْكَهْفِ وَالرَّقِيمِ} /الكهف: 9/.
الْكَهْفُ الْفَتْحُ فِي الْجَبَلِ، وَالرَّقِيمُ الْكِتَابُ. {مَرْقُومٌ} /المطففين: 9/: مَكْتُوبٌ، مِنَ الرَّقْمِ. {رَبَطْنَا عَلَى قُلُوبِهِمْ} /الكهف: 14/: أَلْهَمْنَاهُمْ صَبْرًا. {شَطَطًا} /الكهف: 14/: إِفْرَاطًا. الْوَصِيدُ: الْفِنَاءُ، وَجَمْعُهُ وَصَائِدُ وَوُصُدٌ، وَيُقَالُ: الْوَصِيدُ الْبَابُ. {مُؤْصَدَةٌ} /البلد: 20/ و/الهمزة: 8/: مُطْبَقَةٌ، آصَدَ الْبَابَ وَأَوْصَدَ. {بَعَثْنَاهُمْ} /الكهف: 19/: أَحْيَيْنَاهُمْ. {أَزْكَى} /الكهف: 19/: أَكْثَرُ رَيْعًا. فَضَرَبَ اللَّهُ عَلَى آذَانِهِمْ فَنَامُوا. {رَجْمًا
بِالْغَيْبِ} /الكهف: 22/: لَمْ يَسْتَبِنْ. وَقَالَ مُجَاهِدٌ: {تَقْرِضُهُمْ} /الكهف: 17/: تَتْرُكُهُمْ.
باب حَدِيثُ الْغَارِ
3465 - حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ خَلِيلٍ، أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: " بَيْنَمَا ثَلاَثَةُ نَفَرٍ مِمَّنْ كَانَ قَبْلَكُمْ يَمْشُونَ، إِذْ أَصَابَهُمْ مَطَرٌ، فَأَوَوْا إِلَى غَارٍ فَانْطَبَقَ عَلَيْهِمْ، فَقَالَ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ: إِنَّهُ وَاللَّهِ يَا هَؤُلاَءِ، لاَ يُنْجِيكُمْ إِلَّا الصِّدْقُ، فَليَدْعُ كُلُّ رَجُلٍ مِنْكُمْ بِمَا يَعْلَمُ أَنَّهُ قَدْ صَدَقَ فِيهِ، فَقَالَ وَاحِدٌ مِنْهُمْ: اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّهُ كَانَ لِي أَجِيرٌ عَمِلَ لِي عَلَى فَرَقٍ مِنْ أَرُزٍّ، فَذَهَبَ وَتَرَكَهُ، وَأَنِّي عَمَدْتُ إِلَى ذَلِكَ الفَرَقِ فَزَرَعْتُهُ، فَصَارَ مِنْ أَمْرِهِ أَنِّي اشْتَرَيْتُ مِنْهُ بَقَرًا، وَأَنَّهُ أَتَانِي يَطْلُبُ أَجْرَهُ، فَقُلْتُ لَهُ: اعْمِدْ إِلَى تِلْكَ البَقَرِ فَسُقْهَا، فَقَالَ لِي: إِنَّمَا لِي عِنْدَكَ فَرَقٌ مِنْ أَرُزٍّ، فَقُلْتُ لَهُ: اعْمِدْ إِلَى تِلْكَ البَقَرِ، فَإِنَّهَا مِنْ ذَلِكَ الفَرَقِ فَسَاقَهَا، فَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنِّي [ص:173] فَعَلْتُ ذَلِكَ مِنْ خَشْيَتِكَ فَفَرِّجْ عَنَّا، فَانْسَاحَتْ عَنْهُمُ الصَّخْرَةُ، فَقَالَ الآخَرُ: اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّهُ كَانَ لِي أَبَوَانِ شَيْخَانِ كَبِيرَانِ، فَكُنْتُ آتِيهِمَا كُلَّ لَيْلَةٍ بِلَبَنِ غَنَمٍ لِي، فَأَبْطَأْتُ عَلَيْهِمَا لَيْلَةً، فَجِئْتُ وَقَدْ رَقَدَا وَأَهْلِي وَعِيَالِي يَتَضَاغَوْنَ مِنَ الجُوعِ، فَكُنْتُ لاَ أَسْقِيهِمْ حَتَّى يَشْرَبَ أَبَوَايَ فَكَرِهْتُ أَنْ أُوقِظَهُمَا، وَكَرِهْتُ أَنْ أَدَعَهُمَا، فَيَسْتَكِنَّا لِشَرْبَتِهِمَا، فَلَمْ أَزَلْ أَنْتَظِرُ حَتَّى طَلَعَ الفَجْرُ، فَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنِّي فَعَلْتُ ذَلِكَ مِنْ خَشْيَتِكَ فَفَرِّجْ عَنَّا، فَانْسَاحَتْ عَنْهُمُ الصَّخْرَةُ حَتَّى نَظَرُوا إِلَى السَّمَاءِ، فَقَالَ الآخَرُ: اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّهُ كَانَ لِي ابْنَةُ عَمٍّ، مِنْ أَحَبِّ النَّاسِ إِلَيَّ، وَأَنِّي رَاوَدْتُهَا عَنْ نَفْسِهَا فَأَبَتْ، إِلَّا أَنْ آتِيَهَا بِمِائَةِ دِينَارٍ، فَطَلَبْتُهَا حَتَّى قَدَرْتُ، فَأَتَيْتُهَا بِهَا فَدَفَعْتُهَا إِلَيْهَا، فَأَمْكَنَتْنِي مِنْ نَفْسِهَا، فَلَمَّا قَعَدْتُ بَيْنَ رِجْلَيْهَا، فَقَالَتْ: اتَّقِ اللَّهَ وَلاَ تَفُضَّ الخَاتَمَ إِلَّا بِحَقِّهِ، فَقُمْتُ وَتَرَكْتُ المِائَةَ دِينَارٍ، فَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنِّي فَعَلْتُ ذَلِكَ مِنْ خَشْيَتِكَ فَفَرِّجْ عَنَّا، فَفَرَّجَ اللَّهُ عَنْهُمْ فَخَرَجُوا "
হাদীস নং: ৩২২০
আন্তর্জাতিক নং: ৩৪৬৬
২০৫০. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩২২০। আবুল ইয়ামান (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে বলতে শুনেছি যে, একদা একজন মহিলা তার কোলের শিশুকে স্তন্য পান করাচ্ছিল। এমন সময় একজন অশ্বারোহী তাদের নিকট দিয়ে গমন করে। মহিলাটি বলল, হে আল্লাহ! আমার পুত্রকে এই অশ্বারোহীর মতো না বানিয়ে মৃত্যু দান করো না। তখন কোলের শিশুটি বলে উঠল- হে আল্লাহ! আমাকে ঐ অশ্বারোহীর মত করো না, এই বলে পুনরায় সে স্তন্য পানে মনোনিবেশ করল। তারপর একজন মহিলাকে কতিপয় লোক অপমানজনক ঠাট্টা বিদ্রূপ করতে করতে টেনে নিয়ে চলছিল। ঐ মহিলাকে দেখে শিশুর মাতা বলে উঠল- হে আল্লাহ! আমার পুত্রকে ঐ মহিলার মত করো না। শিশুটি বলে উঠল, হে আল্লাহ! আমাকে ঐ মহিলার ন্যায় কর। নবী (ﷺ) বলেন, ঐ অশ্বারোহী ব্যক্তি কাফির ছিল আর ঐ মহিলাকে লক্ষ্য করে লোকজন বলছিল, তুই ব্যভিচারিণী, সে বলছিল হাসবি আল্লাহ-আল্লাহ-ই আমার জন্য যথেষ্ট। তারা বলছিল তুই চোর আর সে বলছিল হাসবি আল্লাহ-আল্লাহ-ই আমার জন্য যথেষ্ট।
باب
3466 - حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، حَدَّثَهُ أَنَّهُ، سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: " بَيْنَا امْرَأَةٌ تُرْضِعُ ابْنَهَا إِذْ مَرَّ بِهَا رَاكِبٌ وَهِيَ تُرْضِعُهُ، فَقَالَتِ اللَّهُمَّ لاَ تُمِتِ ابْنِي، حَتَّى يَكُونَ مِثْلَ هَذَا، فَقَالَ: اللَّهُمَّ لاَ تَجْعَلْنِي مِثْلَهُ، ثُمَّ رَجَعَ فِي الثَّدْيِ، وَمُرَّ بِامْرَأَةٍ تُجَرَّرُ وَيُلْعَبُ بِهَا، فَقَالَتْ: اللَّهُمَّ لاَ تَجْعَلِ ابْنِي مِثْلَهَا، فَقَالَ: اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِثْلَهَا، فَقَالَ أَمَّا الرَّاكِبُ فَإِنَّهُ كَافِرٌ، وَأَمَّا المَرْأَةُ فَإِنَّهُمْ يَقُولُونَ لَهَا تَزْنِي، وَتَقُولُ حَسْبِيَ اللَّهُ، وَيَقُولُونَ تَسْرِقُ، وَتَقُولُ حَسْبِيَ اللَّهُ "
হাদীস নং: ৩২২১
আন্তর্জাতিক নং: ৩৪৬৭
২০৫০. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩২২১। সাঈদ ইবনে তালীদ (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন যে, একদা একটি কুকুর এক কূপের চারদিকে ঘুরছিল এবং প্রবল পিপাসার কারণে সে মৃত্যুর নিকটে পৌছেছিল। তখন বনী ইসরাঈলের ব্যভিচারিণীদের একজন কুকুরটির অবস্থা লক্ষ্য করল, এবং তার পায়ের মোজার সাহায্যে পানি সংগ্রহ করে কুকুরটিকে পান করাল। এ কাজের প্রতিদানে আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দিলেন।
باب
3467 - حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ تَلِيدٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي جَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «بَيْنَمَا كَلْبٌ يُطِيفُ بِرَكِيَّةٍ، كَادَ يَقْتُلُهُ العَطَشُ، إِذْ رَأَتْهُ بَغِيٌّ مِنْ بَغَايَا بَنِي إِسْرَائِيلَ، فَنَزَعَتْ مُوقَهَا فَسَقَتْهُ فَغُفِرَ لَهَا بِهِ»
হাদীস নং: ৩২২২
আন্তর্জাতিক নং: ৩৪৬৮
২০৫০. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩২২২। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসলামা (রাহঃ) .... হুমায়দ ইবনে আব্দুর রহমান (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি মুআবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান (রাযিঃ)- কে বলতে শুনেছেন যে, হজ্জ পালনের বছর মিম্বরে নববীতে উপবিষ্ট অবস্থায় তাঁর দেহরক্ষীদের নিকট হতে মহিলাদের একগুচ্ছ কেশ নিজ হাতে নিয়ে তিনি বলেন যে, হে মদীনাবাসী! কোথায় তোমাদের আলিম সমাজ? আমি নবী (ﷺ)- কে এ জাতীয় পরচুলা ব্যবহার থেকে নিষেধ করতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, বনী ইসরাঈল তখনই ধ্বংস প্রাপ্ত হয়, যখন তাদের মহিলাগণ এ জাতীয় পরচুলা ব্যবহার করতে আরম্ভ করে।
باب
3468 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّهُ سَمِعَ مُعَاوِيَةَ بْنَ أَبِي سُفْيَانَ عَامَ حَجَّ عَلَى المِنْبَرِ، فَتَنَاوَلَ قُصَّةً مِنْ شَعَرٍ، وَكَانَتْ فِي يَدَيْ حَرَسِيٍّ، فَقَالَ: يَا أَهْلَ المَدِينَةِ، أَيْنَ عُلَمَاؤُكُمْ؟ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَنْهَى [ص:174] عَنْ مِثْلِ هَذِهِ؟ وَيَقُولُ: «إِنَّمَا هَلَكَتْ بَنُو إِسْرَائِيلَ حِينَ اتَّخَذَهَا نِسَاؤُهُمْ»
হাদীস নং: ৩২২৩
আন্তর্জাতিক নং: ৩৪৬৯
২০৫০. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩২২৩। আব্দুল আযীয ইবনে আব্দুল্লাহ (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নবী (ﷺ) বলেছেন, তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতগণের মধ্যে মুহাদ্দাস (ইলহাম প্রেরণাপ্রাপ্ত) ব্যক্তিবর্গ ছিলেন। আমার উম্মতের মধ্যে যদি এমন কেউ থাকে, তবে সে নিশ্চয় উমর ইবনুল খাত্তাব (রাযিঃ) হবেন।
باب
3469 - حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: إِنَّهُ قَدْ كَانَ فِيمَا مَضَى قَبْلَكُمْ مِنَ الأُمَمِ مُحَدَّثُونَ، وَإِنَّهُ إِنْ كَانَ فِي أُمَّتِي هَذِهِ مِنْهُمْ فَإِنَّهُ عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ "
হাদীস নং: ৩২২৪
আন্তর্জাতিক নং: ৩৪৭০
২০৫০. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩২২৪। মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার (রাহঃ) .... আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, বনী ইসরাঈলের মাঝে এমন এক ব্যক্তি ছিল, যে নিরানব্বইটি নর হত্যা করেছিল। তারপর (অনুশোচনা করতঃ নাজাতের পথের অনুসন্ধানে বাড়ী থেকে) বের হয়ে একজন পাদ্রীকে জিজ্ঞাসা করল, আমার তওবা কবুল হওয়ার আশা আছে কি? পাদ্রী বলল, না। তখন সে পাদ্রীকেও হত্যা করল। এরপর পুনরায় সে (লোকদের নিকট) জিজ্ঞাসাবাদ করতে লাগল। তখন এক ব্যক্তি তাকে বলল, তুমি অমুক স্থানে চলে যাও। সে রওয়ানা হোল এবং পথিমধ্যে তার মৃত্যু এসে গেল।
সে তার বক্ষদেশ দ্বারা সে স্থানটির দিকে ঘুরে গেল। মৃত্যুর পর রহমত ও আযাবের ফিরিশতাগণ তার রূহকে নিয়ে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হলেন। আল্লাহ সম্মুখের ভূমিকে (যেখানে সে তওবার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল) আদেশ করলেন, তুমি মৃত ব্যক্তির নিকটবর্তী হয়ে যাও এবং পশ্চাতে ফেলে আসে স্থানকে (যেখানে হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল) আদেশ দিলেন, তুমি দূরে সরে যাও। তারপর ফিরিশতাদের উভয় দলকে আদেশ দিলেন- তোমরা এখান থেকে উভয় দিকের দূরত্ব পরিমাপ কর। পরিমাপ করা হল, দেখা গেল যে, মৃত লোকটি সম্মুখের দিকে এক বিঘত অধিক অগ্রসরমান। আল্লাহর রহমতে সে ক্ষমাপ্রাপ্ত হল।
باب
3470 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي الصِّدِّيقِ النَّاجِيِّ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدْرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: " كَانَ فِي بَنِي إِسْرَائِيلَ رَجُلٌ قَتَلَ تِسْعَةً وَتِسْعِينَ إِنْسَانًا، ثُمَّ خَرَجَ يَسْأَلُ، فَأَتَى رَاهِبًا فَسَأَلَهُ فَقَالَ لَهُ: هَلْ مِنْ تَوْبَةٍ؟ قَالَ: لاَ، فَقَتَلَهُ، فَجَعَلَ يَسْأَلُ، فَقَالَ لَهُ رَجُلٌ: ائْتِ قَرْيَةَ كَذَا وَكَذَا، فَأَدْرَكَهُ المَوْتُ، فَنَاءَ بِصَدْرِهِ نَحْوَهَا، فَاخْتَصَمَتْ فِيهِ مَلاَئِكَةُ الرَّحْمَةِ وَمَلاَئِكَةُ العَذَابِ، فَأَوْحَى اللَّهُ إِلَى هَذِهِ أَنْ تَقَرَّبِي، وَأَوْحَى اللَّهُ إِلَى هَذِهِ أَنْ تَبَاعَدِي، وَقَالَ: قِيسُوا مَا بَيْنَهُمَا، فَوُجِدَ إِلَى هَذِهِ أَقْرَبَ بِشِبْرٍ، فَغُفِرَ لَهُ "
হাদীস নং: ৩২২৫
আন্তর্জাতিক নং: ৩৪৭১
২০৫০. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩২২৫। আলী ইবনে আব্দুল্লাহ (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন নবী (ﷺ) ফজরের নামায শেষে লোকজনের দিকে ঘুরে বসলেন এবং বললেন, একদা এক ব্যক্তি একটি গরু হাঁকিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ সে এটির পিঠে চড়ে বসল এবং ওকে প্রহার করতে লাগল। তখন গরুটি বলল, আমাদেরকে এজন্য সৃষ্টি করা হয় নি, আমাদেরকে চাষাবাদের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। ইহা শুনে লোকজন বলে উঠল, সুবহানাল্লাহ! গরুও কথা বলে? নবী (ﷺ) বললেন, আমি এবং আবু বকর ও উমর ইহা বিশ্বাস করি অথচ তখন তাঁরা উভয়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।
এবং জনৈক রাখাল একদিন তার ছাগল পালের মাঝে অবস্থান করছিল, এমন সময় একটি চিতা বাঘ পালে ঢুকে একটি ছাগল নিয়ে গেল। রাখাল বাঘের পিছে ধাওয়া করে ছাগলটি উদ্ধার করল। তখন বাঘটি বলল, তুমি ছাগলটি আমার থেকে কেড়ে নিলে বটে তবে ঐদিন কে ছাগল রক্ষা করবে? যেদিন হিংস্র জন্তু ওদের আক্রমণ করবে এবং আমি ছাড়া তাদের অন্য কোন রাখাল থাকবে না। লোকেরা বলল, সুবহানাল্লাহ! চিতা বাঘ কথা বলে! নবী (ﷺ) বললেন, আমি এবং আবু বকর ও উমর ইহা বিশ্বাস করি অথচ তখন তাঁরা উভয়েই সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।
আলী ইবনে আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) নবী (ﷺ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
باب
3471 - حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، صَلاَةَ الصُّبْحِ، ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَى النَّاسِ، فَقَالَ: " بَيْنَا رَجُلٌ يَسُوقُ بَقَرَةً إِذْ رَكِبَهَا فَضَرَبَهَا، فَقَالَتْ: إِنَّا لَمْ نُخْلَقْ لِهَذَا، إِنَّمَا خُلِقْنَا لِلْحَرْثِ " فَقَالَ النَّاسُ: سُبْحَانَ اللَّهِ بَقَرَةٌ تَكَلَّمُ، فَقَالَ: " فَإِنِّي أُومِنُ بِهَذَا، أَنَا وَأَبُو بَكْرٍ، وَعُمَرُ، - وَمَا هُمَا ثَمَّ - وَبَيْنَمَا رَجُلٌ فِي غَنَمِهِ إِذْ عَدَا الذِّئْبُ، فَذَهَبَ مِنْهَا بِشَاةٍ، فَطَلَبَ حَتَّى كَأَنَّهُ اسْتَنْقَذَهَا مِنْهُ، فَقَالَ لَهُ الذِّئْبُ هَذَا: اسْتَنْقَذْتَهَا مِنِّي، فَمَنْ لَهَا يَوْمَ السَّبُعِ، يَوْمَ لاَ رَاعِيَ لَهَا غَيْرِي " فَقَالَ النَّاسُ: سُبْحَانَ اللَّهِ ذِئْبٌ يَتَكَلَّمُ، قَالَ: «فَإِنِّي أُومِنُ بِهَذَا أَنَا وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ، - وَمَا هُمَا ثَمَّ -» ، وحَدَّثَنَا عَلِيٌّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مِسْعَرٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: بِمِثْلِهِ
হাদীস নং: ৩২২৬
আন্তর্জাতিক নং: ৩৪৭২
২০৫০. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩২২৬। ইসহাক ইবনে নাসর (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, (নবী (ﷺ)- এর আগে) এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তি হতে একখণ্ড জমি ক্রয় করেছিল। ক্রেতা খরীদকৃত জমিতে একটা স্বর্ণ ভর্তি ঘড়া পেল। ক্রেতা বিক্রেতাকে তা ফেরত নিতে অনুরোধ করে বলল, কারণ আমি জমি ক্রয় করেছি, স্বর্ণ ক্রয় করিনি। বিক্রেতা বলল, আমি জমি এবং এতে যা কিছু আছে সবই বিক্রি করে দিয়েছি। তারপর তারা উভয়ই অপর এক ব্যক্তির নিকট এর মীমাংসা চাইল। তিনি বললেন, তোমাদের কি ছেলে-মেয়ে আছে? একজন বলল, আমার একটি ছেলে আছে। অপর ব্যক্তি বলল, আমার একটি মেয়ে আছে। মীমাংসাকারী বললেন, তোমার মেয়েকে তার ছেলের সাথে বিবাহ দাও আর প্রাপ্ত স্বর্ণের মধ্যে কিছু তাদের বিবাহে ব্যয় কর এবং অবশিষ্টাংশ তাদেরকে দিয়ে দাও।
باب
3472 - حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ هَمَّامٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " اشْتَرَى رَجُلٌ مِنْ رَجُلٍ عَقَارًا لَهُ، فَوَجَدَ الرَّجُلُ الَّذِي اشْتَرَى العَقَارَ فِي عَقَارِهِ جَرَّةً فِيهَا ذَهَبٌ، فَقَالَ لَهُ الَّذِي اشْتَرَى العَقَارَ: خُذْ ذَهَبَكَ مِنِّي، إِنَّمَا اشْتَرَيْتُ مِنْكَ الأَرْضَ، وَلَمْ أَبْتَعْ مِنْكَ الذَّهَبَ، وَقَالَ الَّذِي لَهُ الأَرْضُ: إِنَّمَا بِعْتُكَ الأَرْضَ وَمَا فِيهَا، فَتَحَاكَمَا إِلَى رَجُلٍ، فَقَالَ: الَّذِي تَحَاكَمَا إِلَيْهِ: أَلَكُمَا وَلَدٌ؟ قَالَ أَحَدُهُمَا: لِي غُلاَمٌ، وَقَالَ الآخَرُ: لِي جَارِيَةٌ، قَالَ: أَنْكِحُوا الغُلاَمَ الجَارِيَةَ وَأَنْفِقُوا عَلَى أَنْفُسِهِمَا مِنْهُ [ص:175] وَتَصَدَّقَا "
হাদীস নং: ৩২২৭
আন্তর্জাতিক নং: ৩৪৭৩
২০৫০. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩২২৭। আব্দুল আযীয ইবনে আব্দুল্লাহ (রাহঃ) .... সা‘দ ইবনে আবী ওয়াককাস (রাযিঃ) উসামাহ ইবনে যায়দ (রাযিঃ)- কে জিজ্ঞাসা করেন, আপনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে প্লেগ সম্বন্ধে কি শুনেছেন? উসামাহ (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, প্লেগ একটি আযাব। যা বনী ইসরাঈলের এক সম্প্রদায়ের উপর আপতিত হয়েছিল। অথবা তোমাদের পূর্বে যারা ছিল। তোমরা যখন কোন স্থানে প্লেগের প্রাদুর্ভাব শুনতে পাও, তখন তোমরা সেখানে যেয়োনা। আর যখন প্লেগ এমন স্থানে দেখা দেয়, যেখানে তুমি অবস্থান করছো, তখন সে স্থান থেকে পালানোর উদ্দেশ্যে বের হয়োনা। আবু নযর (রাহঃ) বলেন, পলায়নের উদ্দেশ্যে এলাকা ত্যাগ করো না। তবে অন্য প্রয়োজনে যেতে পার, তাতে বাঁধা নেই।
باب
3473 - حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ المُنْكَدِرِ، وَعَنْ أَبِي النَّضْرِ، مَوْلَى عُمَرَ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ سَمِعَهُ يَسْأَلُ أُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ، مَاذَا سَمِعْتَ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الطَّاعُونِ؟ فَقَالَ أُسَامَةُ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الطَّاعُونُ رِجْسٌ أُرْسِلَ عَلَى طَائِفَةٍ مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ، أَوْ عَلَى مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ، فَإِذَا سَمِعْتُمْ بِهِ بِأَرْضٍ، فَلاَ تَقْدَمُوا عَلَيْهِ، وَإِذَا وَقَعَ بِأَرْضٍ، وَأَنْتُمْ بِهَا فَلاَ تَخْرُجُوا، فِرَارًا مِنْهُ» قَالَ أَبُو النَّضْرِ: «لاَ يُخْرِجْكُمْ إِلَّا فِرَارًا مِنْهُ»
হাদীস নং: ৩২২৮
আন্তর্জাতিক নং: ৩৪৭৪
২০৫০. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩২২৮। মুসা ইবনে ইসমাঈল (রাহঃ) .... নবী সহধর্মিণী আয়েশা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে প্লেগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে, উত্তরে তিনি বলেলেন, তা একটি আযাব বিশেষ। আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাদের প্রতি ইচ্ছা করেন তাদের উপর তা প্রেরণ করেন। আর আল্লাহ তাআলা তাঁর মুমিন বান্দাগণের উপর তা (আযাবের সুরতে) রহমত স্বরূপ করে দিয়েছেন। কোন ব্যক্তি যখন প্লেগাক্রান্ত স্থানে সাওয়াবের আশায় ধৈর্য ধরে অবস্থান করে এবং তার অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস থাকে যে, আল্লাহ তাকদীরে যা লিখে রেখেছেন তাই হবে। তবে সে একজন শহীদের সমান সাওয়াব পাবে।
باب
3474 - حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا دَاوُدُ بْنُ أَبِي الفُرَاتِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بُرَيْدَةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ يَعْمَرَ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَتْ: سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الطَّاعُونِ، فَأَخْبَرَنِي «أَنَّهُ عَذَابٌ يَبْعَثُهُ اللَّهُ عَلَى مَنْ يَشَاءُ، وَأَنَّ اللَّهَ جَعَلَهُ رَحْمَةً لِلْمُؤْمِنِينَ، لَيْسَ مِنْ أَحَدٍ يَقَعُ الطَّاعُونُ، فَيَمْكُثُ فِي بَلَدِهِ صَابِرًا مُحْتَسِبًا، يَعْلَمُ أَنَّهُ لاَ يُصِيبُهُ إِلَّا مَا كَتَبَ اللَّهُ لَهُ، إِلَّا كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِ شَهِيدٍ»
হাদীস নং: ৩২২৯
আন্তর্জাতিক নং: ৩৪৭৫
২০৫০. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩২২৯। কুতায়বা ইবনে সাঈদ (রাহঃ) .... আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, মাখযূম গোত্রের জনৈকা চোর মহিলার ঘটনা কুরাইশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন করে তুললো। এ অবস্থায় তারা (পরস্পর) বলাবলি করতে লাগল এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর সঙ্গে কে আলাপ আলোচনা (সুপারিশ) করতে পারে? তারা বলল, একমাত্র রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর প্রিয়তম ব্যক্তি ওসামা ইবনে যায়দ (রাযিঃ) এ জটিল ব্যাপারে আলোচনা করার সাহস করতে পারেন। (নবীজীর খেদমতে তাঁকে পাঠান হল তিনি এ প্রসঙ্গ উত্থাপন করে) ক্ষমা করেও দেয়ার সুপারিশ করলেন।
নবী (ﷺ) বললেন, তুমি কি আল্লাহর নির্ধারিত সীমা লংঘনকারিণীর সাজা (হাত কাটা) মাউকুফের সুপারিশ করছ? তারপর নবী (ﷺ) দাঁড়িয়ে খুতবায় বললেন, তোমাদের পূর্ববর্তী জাতিসমূহকে এ কাজই ধ্বংস করেছে যে, যখন তাদের মধ্যে কোন সম্ভ্রান্ত লোক চুরি করত, তখন তারা বিনা সাজায় তাকে ছেড়ে দিত। অপরদিকে যখন কোন সহায়হীন দরিদ্র সাধারণ লোক চুরি করত, তখন তার উপর হদ (হাতকাটা দণ্ডবিধি) প্রয়োগ করত। আল্লাহর কসম, যদি মুহাম্মাদ এর কন্যা ফাতিমা চুরি করত (আল্লাহ তাকে হিফাযত করুন) তবে আমি তার হাত অবশ্যই কেটে ফেলতাম।
باب
3475 - حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، أَنَّ قُرَيْشًا أَهَمَّهُمْ شَأْنُ المَرْأَةِ المَخْزُومِيَّةِ الَّتِي سَرَقَتْ، فَقَالُوا: وَمَنْ يُكَلِّمُ فِيهَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ فَقَالُوا: وَمَنْ يَجْتَرِئُ عَلَيْهِ إِلَّا أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ، حِبُّ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَكَلَّمَهُ أُسَامَةُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَتَشْفَعُ فِي حَدٍّ مِنْ حُدُودِ اللَّهِ، ثُمَّ قَامَ فَاخْتَطَبَ، ثُمَّ قَالَ: إِنَّمَا أَهْلَكَ الَّذِينَ قَبْلَكُمْ، أَنَّهُمْ كَانُوا إِذَا سَرَقَ فِيهِمُ الشَّرِيفُ تَرَكُوهُ، وَإِذَا سَرَقَ فِيهِمُ الضَّعِيفُ أَقَامُوا عَلَيْهِ الحَدَّ، وَايْمُ اللَّهِ لَوْ أَنَّ فَاطِمَةَ بِنْتَ مُحَمَّدٍ سَرَقَتْ لَقَطَعْتُ يَدَهَا "
হাদীস নং: ৩২৩০
আন্তর্জাতিক নং: ৩৪৭৬
২০৫০. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩২৩০। আদম (রাহঃ) .... আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি এক ব্যক্তিকে কুরআনের একটি আয়াত (এমনভাবে) পড়তে শুনলাম যা নবী (ﷺ) থেকে আমার শ্রুত তিলাওয়াতের বিপরীত। আমি তাকে নিয়ে নবী (ﷺ)- এর দরবারে উপস্থিত হয়ে ঘটনাটি বললাম তখন তাঁর চেহারায় অসন্তোষের ভাব লক্ষ্য করলাম। তিনি বললেন, তোমরা উভয়ই ভাল ও সুন্দর পড়েছ। তবে তোমারা ইখতিলাফ (মতবিরোধ) করো না। তোমাদের পূর্ববর্তীগণ ইখতিলাফ ও মতবিরোধের কারণেই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে।
باب
3476 - حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ المَلِكِ بْنُ مَيْسَرَةَ، قَالَ: سَمِعْتُ النَّزَّالَ بْنَ سَبْرَةَ الهِلاَلِيَّ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: سَمِعْتُ رَجُلًا قَرَأَ آيَةً، وَسَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ خِلاَفَهَا، فَجِئْتُ بِهِ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرْتُهُ، فَعَرَفْتُ فِي وَجْهِهِ الكَرَاهِيَةَ، وَقَالَ: «كِلاَكُمَا مُحْسِنٌ، وَلاَ تَخْتَلِفُوا، فَإِنَّ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمُ اخْتَلَفُوا فَهَلَكُوا»
হাদীস নং: ৩২৩১
আন্তর্জাতিক নং: ৩৪৭৭
২০৫০. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩২৩১। উমর ইবনে হাফস (রাহঃ) .... আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি যেন এখনো নবী (ﷺ)- কে দেখছি যখন তিনি একজন নবী (আলাইহিস সালাম)- এর অবস্থা বর্ণনা করেছিলেন যে, তাঁর স্বজাতিরা তাঁকে প্রহার করে রক্তাক্ত করে দিয়েছে আর তিনি তাঁর চেহারা থেকে রক্ত মুছে ফেলছেন এবং বলছেন, হে আল্লাহ! আমার জাতিকে ক্ষমা করে দাও, যেহেতু তাঁরা অজ্ঞ।
باب
3477 - حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، قَالَ: حَدَّثَنِي شَقِيقٌ، قَالَ عَبْدُ اللَّهِ: كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَحْكِي نَبِيًّا مِنَ الأَنْبِيَاءِ [ص:176]، ضَرَبَهُ قَوْمُهُ فَأَدْمَوْهُ، وَهُوَ يَمْسَحُ الدَّمَ عَنْ وَجْهِهِ وَيَقُولُ: «اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِقَوْمِي فَإِنَّهُمْ لاَ يَعْلَمُونَ»
হাদীস নং: ৩২৩২
আন্তর্জাতিক নং: ৩৪৭৮
২০৫০. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩২৩২। আবুল ওয়ালীদ (রাহঃ) .... আবু সাঈদ (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তোমাদের পূর্ববর্তী যুগে এক ব্যক্তি, আল্লাহ তাআলা তাকে প্রচুর ধন-সম্পদ দান করেছিলেন। যখন তার মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এল তখন সে তার ছেলেদেরকে একত্রিত করে জিজ্ঞাসা করল, আমি তোমাদের কেমন পিতা ছিলাম? তারা উত্তর দিল, আপনি আমাদের উত্তম পিতা ছিলেন। সে বলল, আমি জীবনে কখনও কোন নেক আমল করতে পারিনি। আমি যখন মারা যাব তখন তোমরা আমার লাশকে জ্বালিয়ে ভস্ম করে রেখে দিও এবং প্রচণ্ড ঝড়ের দিনে ঐ ভস্ম বাতাসে উড়িয়ে দিও। সে মারা গেল। ছেলেরা ওসিয়াত অনুযায়ী কাজ করল। আল্লাহ তাআলা তার ভস্ম একত্রিত (পুনঃজীবিত) করে জিজ্ঞাসা করলেন, এমন অদ্ভুত ওসিয়াত করতে কে তোমাকে উদ্ধুদ্ধ করল? সে জবাব দিল, হে আল্লাহ! তোমার শাস্তির ভয়। ফলে আল্লাহর রহমত তাকে ঢেকে নিল। মু‘আয (রাহঃ) আবু সা‘য়ীদ (রাযিঃ) নবী (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন।
باب
3478 - حَدَّثَنَا أَبُو الوَلِيدِ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَبْدِ الغَافِرِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَنَّ رَجُلًا كَانَ قَبْلَكُمْ، رَغَسَهُ اللَّهُ مَالًا، فَقَالَ لِبَنِيهِ لَمَّا حُضِرَ: أَيَّ أَبٍ كُنْتُ لَكُمْ؟ قَالُوا: خَيْرَ أَبٍ، قَالَ: فَإِنِّي لَمْ أَعْمَلْ خَيْرًا قَطُّ، فَإِذَا مُتُّ فَأَحْرِقُونِي، ثُمَّ اسْحَقُونِي، ثُمَّ ذَرُّونِي فِي يَوْمٍ عَاصِفٍ، فَفَعَلُوا، فَجَمَعَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ، فَقَالَ: مَا حَمَلَكَ؟ قَالَ: مَخَافَتُكَ، فَتَلَقَّاهُ بِرَحْمَتِهِ " وَقَالَ مُعَاذٌ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، سَمِعْتُ عُقْبَةَ بْنَ عَبْدِ الغَافِرِ، سَمِعْتُ أَبَا سَعِيدٍ الخُدْرِيَّ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
হাদীস নং: ৩২৩৩
আন্তর্জাতিক নং: ৩৪৭৯
২০৫০. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩২৩৩। মুসাদ্দাদ (রাহঃ) .... হুযাইফা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ)- কে বলতে শুনেছি, এক ব্যক্তির যখন মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এল এবং সে জীবন থেকে নিরাশ হয়ে গেল। তখন সে তার পরিবার পরিজনকে ওসিয়াত করল, যখন আমি মরে যাব তখন তোমরা আমার জন্য অনেক লাকড়ি জমা করে (তার ভিতরে আমাকে রেখে) আগুন জ্বালিয়ে দিও। আগুন যখন আমার গোশত জ্বালিয়ে পুড়িয়ে হাড় পর্যন্ত পৌছে যাবে তখন (অদগ্ধ) হাড়গুলি পিষে ছাই করে নিও। তারপর সেই ছাই গরমের দিন কিংবা প্রচণ্ড বাতাসের দিনে সাগরে ভাসিয়ে দিও। (তারা তাই করল) আল্লাহ তাআলা (তার ভস্মীভূত দেহ একত্রিত করে) জিজ্ঞাসা করলেন, এমন কেন করলে? সে বলল, আপনার ভয়ে। আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিলেন। উকবা (রাহঃ) বলেন, আর আমিও তাঁকে (হুযাইফা (রাযিঃ)-কে) বলতে শুনেছি।
মুসা (রাহঃ) .... আব্দুল মালিক (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, فِي يَوْمٍ رَاحٍ অর্থাৎ প্রচণ্ড বাতাসের দিন।
باب
3479 - حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ عَبْدِ المَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ رِبْعِيِّ بْنِ حِرَاشٍ، قَالَ: قَالَ عُقْبَةُ لِحُذَيْفَةَ: أَلاَ تُحَدِّثُنَا مَا سَمِعْتَ مِنَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَ: سَمِعْتُهُ يَقُولُ " إِنَّ رَجُلًا حَضَرَهُ المَوْتُ، لَمَّا أَيِسَ مِنَ الحَيَاةِ أَوْصَى أَهْلَهُ: إِذَا مُتُّ فَاجْمَعُوا لِي حَطَبًا كَثِيرًا، ثُمَّ أَوْرُوا نَارًا، حَتَّى إِذَا أَكَلَتْ لَحْمِي، وَخَلَصَتْ إِلَى عَظْمِي، فَخُذُوهَا فَاطْحَنُوهَا فَذَرُّونِي فِي اليَمِّ فِي يَوْمٍ حَارٍّ، أَوْ رَاحٍ، فَجَمَعَهُ اللَّهُ فَقَالَ؟ لِمَ فَعَلْتَ؟ قَالَ: خَشْيَتَكَ، فَغَفَرَ لَهُ " قَالَ عُقْبَةُ: وَأَنَا سَمِعْتُهُ يَقُولُ: حَدَّثَنَا مُوسَى، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ المَلِكِ، وَقَالَ: «فِي يَوْمٍ رَاحٍ»
হাদীস নং: ৩২৩৪
আন্তর্জাতিক নং: ৩৪৮০
২০৫০. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩২৩৪। আব্দুল আযীয ইবনে আব্দুল্লাহ (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) সূত্রে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, পূর্বযূগে কোন এক ব্যক্তি ছিল, যে মানুষকে ঋণ প্রদান করত। সে তার কর্মচারীকে বলে দিত, তুমি যখন কোন অভাবীর নিকট টাকা আদায় করতে যাও, তখন তাকে মাফ করে দাও। হয়ত আল্লাহ তাআলা এ কারণে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। নবী (ﷺ) বলেন, (মৃত্যুর পর) যখন সে আল্লাহ তাআলার সাক্ষাত লাভ করল, তখন আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিলেন।
باب
3480 - حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: " كَانَ الرَّجُلُ يُدَايِنُ النَّاسَ، فَكَانَ يَقُولُ لِفَتَاهُ: إِذَا أَتَيْتَ مُعْسِرًا فَتَجَاوَزْ عَنْهُ، لَعَلَّ اللَّهَ أَنْ يَتَجَاوَزَ عَنَّا، قَالَ: فَلَقِيَ اللَّهَ فَتَجَاوَزَ عَنْهُ "
হাদীস নং: ৩২৩৫
আন্তর্জাতিক নং: ৩৪৮১
২০৫০. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩২৩৫। আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, পূর্বযূগে এক ব্যক্তি তার নফসের উপর অনেক যুলুম করেছিল। যখন তার মৃত্যুকাল ঘনিয়ে এলো, সে তার পুত্রদেরকে বলল, মৃত্যুর পর আমার দেহ হাড় গোশতসহ পুড়িয়ে দিয়ে ভস্ম করে নিও এবং (ভস্ম) প্রবল বাতাসে উড়িয়ে দিও। আল্লাহর কসম! যদি আল্লাহ আমাকে ধরে ফেলেন, তবে তিনি আমাকে এমন কঠোরতম শাস্তি দেবেন যা অন্য কাউকেও দেননি। যখন তার মৃত্যু হল, তার সাথে সেভাবেই করা হল। অতঃপর আল্লাহ যমীনকে আদেশ করলেন, তোমার মাঝে ঐ ব্যক্তির যা আছে একত্রিত করে দাও। (যমীন তৎক্ষণাৎ তা করে দিল) এ ব্যক্তি তখনই (আল্লাহ সম্মুখে) দাঁড়িয়ে গেল। আল্লাহ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, কিসে তোমাকে এ কাজ করতে উদ্ধুদ্ধ করল? সে বলল, হে প্রতিপালক তোমার ভয়ে, অতঃপর তাকে ক্ষমা করা হল। অন্য রাবী (مَخَافَتُكَ) স্থলে (خَشْيَتُكَ) বলেছেন।
باب
3481 - حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: " كَانَ رَجُلٌ يُسْرِفُ عَلَى نَفْسِهِ فَلَمَّا حَضَرَهُ المَوْتُ قَالَ لِبَنِيهِ: إِذَا أَنَا مُتُّ فَأَحْرِقُونِي، ثُمَّ اطْحَنُونِي، ثُمَّ ذَرُّونِي فِي الرِّيحِ، فَوَاللَّهِ لَئِنْ قَدَرَ عَلَيَّ رَبِّي لَيُعَذِّبَنِّي عَذَابًا مَا عَذَّبَهُ أَحَدًا، فَلَمَّا مَاتَ فُعِلَ بِهِ ذَلِكَ، فَأَمَرَ اللَّهُ الأَرْضَ فَقَالَ: اجْمَعِي مَا فِيكِ مِنْهُ، فَفَعَلَتْ، فَإِذَا هُوَ قَائِمٌ، فَقَالَ: مَا حَمَلَكَ عَلَى مَا صَنَعْتَ؟ قَالَ: يَا رَبِّ خَشْيَتُكَ، فَغَفَرَ لَهُ " وَقَالَ غَيْرُهُ: «مَخَافَتُكَ يَا رَبِّ»
হাদীস নং: ৩২৩৬
আন্তর্জাতিক নং: ৩৪৮২
২০৫০. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩২৩৬। আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আসমা (রাহঃ) .... আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, একজন মহিলাকে একটি বিড়ালের কারণে আযাব দেয়া হয়েছিল। সে বিড়ালটিকে বেঁধে রেখেছিল। সে অবস্থায় বিড়ালটি মরে যায়। মহিলা ঐ কারণে জাহান্নামে গেল। কেননা সে বিড়ালটিকে দানা-পানি কিছুই দেয়নি এবং ছেড়েও দেয়নি যাতে সে নিজ খুশিমত যমীনের পোকা-মাকড় খেয়ে বেঁচে থাকত।
باب
3482 - حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَسْمَاءَ، حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ بْنُ أَسْمَاءَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ [ص:177] بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «عُذِّبَتِ امْرَأَةٌ فِي هِرَّةٍ سَجَنَتْهَا حَتَّى مَاتَتْ، فَدَخَلَتْ فِيهَا النَّارَ، لاَ هِيَ أَطْعَمَتْهَا وَلاَ سَقَتْهَا، إِذْ حَبَسَتْهَا، وَلاَ هِيَ تَرَكَتْهَا تَأْكُلُ مِنْ خَشَاشِ الأَرْضِ»
হাদীস নং: ৩২৩৭
আন্তর্জাতিক নং: ৩৪৮৩
২০৫০. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩২৩৭। আহমাদ ইবনে ইউনুস (রাহঃ) .... আবু মাসউদ উকবা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন, আম্বিয়া-এ-কিরামের সর্বসম্মত উক্তি সমূহ যা মানব জাতি লাভ করেছে, তন্মধ্যে একটি হল, “যখন তোমার লজ্জা-শরম না থাকে, তখন তুমি যা ইচ্ছা তাই করতে পার।”
باب
3483 - حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، عَنْ زُهَيْرٍ، حَدَّثَنَا مَنْصُورٌ، عَنْ رِبْعِيِّ بْنِ حِرَاشٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مَسْعُودٍ عُقْبَةُ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ مِمَّا أَدْرَكَ النَّاسُ مِنْ كَلاَمِ النُّبُوَّةِ، إِذَا لَمْ تَسْتَحْيِ فَافْعَلْ مَا شِئْتَ»
হাদীস নং: ৩২৩৮
আন্তর্জাতিক নং: ৩৪৮৪
২০৫০. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩২৩৮। আদম (রাহঃ) .... আবু মাসউদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন, প্রথমযুগের আম্বিয়া-এ-কিরামের সর্বসম্মত উক্তি সমূহ যা মানব জাতি লাভ করেছে, তন্মধ্যে একটি হল, “যখন তোমার লজ্জা-শরম না থাকে, তখন তুমি যা ইচ্ছা তাই করতে পার।”
باب
3484 - حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مَنْصُورٍ، قَالَ: سَمِعْتُ رِبْعِيَّ بْنَ حِرَاشٍ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ، قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ مِمَّا أَدْرَكَ النَّاسُ مِنْ كَلاَمِ النُّبُوَّةِ، إِذَا لَمْ تَسْتَحْيِ فَاصْنَعْ مَا شِئْتَ»