আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

الجامع الصحيح للبخاري

৪৮- নবীগণের আঃ আলোচনা - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ৩১০৯
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩৪৬
২০০৬. ইয়াজুজ ও মাজুজের ঘটনা। মহান আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই ইয়াজুজ মাজুজ পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টিকারী (১৮ঃ ৯৪)

২০০৭.পরিচ্ছেদঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ (হে নবী) তারা আপনাকে যুল-কারনাইন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করছে। আয়াতে سَبَبًا অর্থ চলাচলের পথ ও রাস্তা। তোমরা আমার কাছে লোহার টুকরা নিয়ে আস (১৮ঃ ৮৩-৯৬)। এখানে زُبَرَ শব্দটি বহুবচন। একবচনে زُبْرَةٌ অর্থ টুকরা। অবশেষে মাঝের ফাঁকা জায়গা পূর্ণ হয়ে যখন লোহার স্তূপ দু’পর্বতের সমান হল (১৮ঃ ৯৬)। তখন তিনি লোকদেরকে বললেন, এখন তাতে ফুঁক দিতে থাক। এ আয়াতে الصَّدَفَيْنِ শব্দের অর্থ ইবন আব্বাস (রা)-এর বর্ণনা অনুযায়ী দু’টি পর্বতকে বুঝানো হয়েছে। আর وَالسُّدَّيْنِ -এর অর্থ দু’টি পাহাড়। خَرْجًا অর্থ পারিশ্রমিক। যুল-কারনাইন বলল, তোমরা হাঁফরে ফুক দিতে থাক। যখন তা আগুনের ন্যায় উত্তপ্ত হল, তখন তিনি বললেন, তোমরা গলিত তামা নিয়ে আস, আমি তা এর উপর ঢেলে দেই (১৮ঃ ৯৬)। قِطْرًا অর্থ সীসা। আবার লৌহ গলিত পদার্থকেও বলা হয়, এবং তামাকেও বলা হয়। আর ইবন আব্বাস (রা)-এর অর্থ তামা গলিত পদার্থ বলেছেন। (আল্লাহর বাণী)ঃ এরপর তারা (ইয়াজুজ ও মাজুজ) এ প্রাচীর অতিক্রম করতে পারল না (১৮ঃ ৯৭)। অর্থাৎ তারা এর উপরে চড়তে সক্ষম হল না। اسْتَطَاعَ শব্দটি طَعْتُ لَهُ থেকে باب استفعال আনা হয়েছে। একে أَسط ও يَسْطيعُ যবরসহ পড়া হয়ে থাকে। আর কেহ কেহ একে استطاع يستطيع রূপে পড়েন। (আল্লাহর বাণী) তারা তা ছিদ্রও করতে পারল না। তিনি বললেন, এটা আমার রবের অনুগ্রহ। যখন আমার রবের প্রতিশ্রুতি পুরা হবে তখন তিনি এটাকে চূর্ণ বিচূর্ণ করে দিবেন (১৮ঃ ৯৭-৯৮)। دكا অর্থ মাটির সাথে মিশিয়ে দিবেন। ناقة دكاء বলে যে উটের কুঁজ নেই। دكداك من الأرض যমীনের সেই সমতল উপরিভাগকে বলা হয় যা শুকিয়ে যায় এবং উঁচু নিচু না থাকে। (আল্লাহর বাণী) আর আমার রবের প্রতিশ্রুতি সত্য, সে দিন আমি তাদেরকে ছেড়ে দিব, এ অবস্থায় যে, একদল অপর দলের উপর তরঙ্গের ন্যায় পতিত হবে (১৮ঃ ৯৯)। (আল্লাহর বাণী) এমন কি যখন ইয়াজুজ ও মাজুজকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং তারা প্রতি উচ্চ ভূমি থেকে ছুটে আসবে (২১ঃ ৯৬)। কাতাদা (র) বলেনঃ حدب অর্থ টিলা। এক সাহাবী নবী (ﷺ)-কে বললেন, আমি প্রাচীরটিকে কারুকার্য খচিত চাদরের মত দেখেছি। নবী (ﷺ) বললেন, তুমি তা ঠিকই দেখেছ।
৩১০৯। ইয়াহয়া ইবনে বুকায়র (রাহঃ) .... যায়নাব বিনতে জাহাশ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, একদা নবী (ﷺ) ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায় তাঁর কাছে আসলেন এবং বলতে লাগলেন, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ। আরবের লোকদের জন্য সেই অনিষ্টের কারণে ধ্বংস অনিবার্য যা নিকটবর্তী হয়েছে। আজ ইয়াজুজ ও মাজুজের প্রাচীর এ পরিমাণ খুলে (ছিদ্র হয়ে) গেছে। এ কথা বলার সময় তিনি তাঁর বৃদ্ধাংগুলির অগ্রভাগকে তাঁর সাথের শাহাদাত আঙ্গুলির অগ্রভাগের সাথে মিলিয়ে গোলাকৃতি করে ছিদ্রের পরিমাণ দেখান। যায়নাব বিনতে জাহাশ (রাযিঃ) বলেন, তখন আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের মধ্যে নেক ও পুণ্যবান লোকজন বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও কি আমরা ধ্বংস হয়ে যাব? তিনি বললেন, হ্যাঁ যখন পাপাচার অধিক মাত্রায় বেড়ে যাবে। (তখন অল্প সংখ্যক পূনবান লোকের বিদ্যমানেই মানুষের ধ্বংস নেমে আসবে।)
بَابُ قِصَّةِ يَأْجُوجَ، وَمَأْجُوجَوَ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: قَالُوا {يَا ذَا القَرْنَيْنِ إِنَّ يَأْجُوجَ، وَمَأْجُوجَ مُفْسِدُونَ فِي الأَرْضِ} [الكهف: 94]
قَوْلُ اللَّهِ تَعَالَى {وَيَسْأَلُونَكَ عَنْ ذِي القَرْنَيْنِ قُلْ سَأَتْلُو عَلَيْكُمْ مِنْهُ ذِكْرًا. إِنَّا مَكَّنَّا لَهُ [ص:138] فِي الأَرْضِ وَآتَيْنَاهُ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ سَبَبًا} [الكهف: 84] . (فَاتَّبَعَ سَبَبًا) - إِلَى قَوْلِهِ - (ائْتُونِي زُبَرَ الحَدِيدِ) : «وَاحِدُهَا زُبْرَةٌ وَهِيَ القِطَعُ» {حَتَّى إِذَا سَاوَى بَيْنَ الصَّدَفَيْنِ} [الكهف: 96] يُقَالُ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ: الجَبَلَيْنِ، وَالسُّدَّيْنِ الجَبَلَيْنِ {خَرْجًا} [الكهف: 94] : «أَجْرًا» ، {قَالَ انْفُخُوا حَتَّى إِذَا جَعَلَهُ نَارًا قَالَ آتُونِي أُفْرِغْ عَلَيْهِ قِطْرًا} [الكهف: 96] : " أَصْبُبْ عَلَيْهِ رَصَاصًا، وَيُقَالُ الحَدِيدُ، وَيُقَالُ: الصُّفْرُ " وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: «النُّحَاسُ» {فَمَا اسْطَاعُوا أَنْ يَظْهَرُوهُ} [الكهف: 97] " يَعْلُوهُ، اسْتَطَاعَ اسْتَفْعَلَ، مِنْ أَطَعْتُ لَهُ، فَلِذَلِكَ فُتِحَ أَسْطَاعَ يَسْطِيعُ، وَقَالَ بَعْضُهُمْ: اسْتَطَاعَ يَسْتَطِيعُ "، وَمَا اسْتَطَاعُوا لَهُ نَقْبًا. (قَالَ هَذَا رَحْمَةٌ مِنْ رَبِّي فَإِذَا جَاءَ وَعْدُ رَبِّي جَعَلَهُ دَكًّا) : أَلْزَقَهُ بِالأَرْضِ، وَنَاقَةٌ دَكَّاءُ لاَ سَنَامَ لَهَا، وَالدَّكْدَاكُ مِنَ الأَرْضِ مِثْلُهُ، حَتَّى صَلُبَ وَتَلَبَّدَ، {وَكَانَ وَعْدُ رَبِّي حَقًّا. وَتَرَكْنَا بَعْضَهُمْ يَوْمَئِذٍ يَمُوجُ فِي بَعْضٍ} [الكهف: 98] {حَتَّى إِذَا فُتِحَتْ يَأْجُوجُ وَمَأْجُوجُ وَهُمْ مِنْ كُلِّ حَدَبٍ يَنْسِلُونَ} [الأنبياء: 96] قَالَ قَتَادَةُ: " حَدَبٌ: أَكَمَةٌ " قَالَ رَجُلٌ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: رَأَيْتُ السَّدَّ مِثْلَ البُرْدِ المُحَبَّرِ، قَالَ: «رَأَيْتَهُ»
3346 - حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، أَنَّ زَيْنَبَ بِنْتَ أَبِي سَلَمَةَ، حَدَّثَتْهُ عَنْ أُمِّ حَبِيبَةَ بِنْتِ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ زَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُنَّ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، دَخَلَ عَلَيْهَا فَزِعًا يَقُولُ: «لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَيْلٌ لِلْعَرَبِ مِنْ شَرٍّ قَدِ اقْتَرَبَ، فُتِحَ اليَوْمَ مِنْ رَدْمِ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ مِثْلُ هَذِهِ» وَحَلَّقَ بِإِصْبَعِهِ الإِبْهَامِ وَالَّتِي تَلِيهَا، قَالَتْ زَيْنَبُ بِنْتُ جَحْشٍ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ: أَنَهْلِكُ وَفِينَا الصَّالِحُونَ؟ قَالَ: «نَعَمْ إِذَا كَثُرَ الخَبَثُ»
হাদীস নং: ৩১১০
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩৪৭
২০০৬. ইয়াজুজ ও মাজুজের ঘটনা। মহান আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই ইয়াজুজ মাজুজ পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টিকারী (১৮ঃ ৯৪)

২০০৭.পরিচ্ছেদঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ (হে নবী) তারা আপনাকে যুল-কারনাইন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করছে। আয়াতে سَبَبًا অর্থ চলাচলের পথ ও রাস্তা। তোমরা আমার কাছে লোহার টুকরা নিয়ে আস (১৮ঃ ৮৩-৯৬)। এখানে زُبَرَ শব্দটি বহুবচন। একবচনে زُبْرَةٌ অর্থ টুকরা। অবশেষে মাঝের ফাঁকা জায়গা পূর্ণ হয়ে যখন লোহার স্তূপ দু’পর্বতের সমান হল (১৮ঃ ৯৬)। তখন তিনি লোকদেরকে বললেন, এখন তাতে ফুঁক দিতে থাক। এ আয়াতে الصَّدَفَيْنِ শব্দের অর্থ ইবন আব্বাস (রা)-এর বর্ণনা অনুযায়ী দু’টি পর্বতকে বুঝানো হয়েছে। আর وَالسُّدَّيْنِ -এর অর্থ দু’টি পাহাড়। خَرْجًا অর্থ পারিশ্রমিক। যুল-কারনাইন বলল, তোমরা হাঁফরে ফুক দিতে থাক। যখন তা আগুনের ন্যায় উত্তপ্ত হল, তখন তিনি বললেন, তোমরা গলিত তামা নিয়ে আস, আমি তা এর উপর ঢেলে দেই (১৮ঃ ৯৬)। قِطْرًا অর্থ সীসা। আবার লৌহ গলিত পদার্থকেও বলা হয়, এবং তামাকেও বলা হয়। আর ইবন আব্বাস (রা)-এর অর্থ তামা গলিত পদার্থ বলেছেন। (আল্লাহর বাণী)ঃ এরপর তারা (ইয়াজুজ ও মাজুজ) এ প্রাচীর অতিক্রম করতে পারল না (১৮ঃ ৯৭)। অর্থাৎ তারা এর উপরে চড়তে সক্ষম হল না। اسْتَطَاعَ শব্দটি طَعْتُ لَهُ থেকে باب استفعال আনা হয়েছে। একে أَسط ও يَسْطيعُ যবরসহ পড়া হয়ে থাকে। আর কেহ কেহ একে استطاع يستطيع রূপে পড়েন। (আল্লাহর বাণী) তারা তা ছিদ্রও করতে পারল না। তিনি বললেন, এটা আমার রবের অনুগ্রহ। যখন আমার রবের প্রতিশ্রুতি পুরা হবে তখন তিনি এটাকে চূর্ণ বিচূর্ণ করে দিবেন (১৮ঃ ৯৭-৯৮)। دكا অর্থ মাটির সাথে মিশিয়ে দিবেন। ناقة دكاء বলে যে উটের কুঁজ নেই। دكداك من الأرض যমীনের সেই সমতল উপরিভাগকে বলা হয় যা শুকিয়ে যায় এবং উঁচু নিচু না থাকে। (আল্লাহর বাণী) আর আমার রবের প্রতিশ্রুতি সত্য, সে দিন আমি তাদেরকে ছেড়ে দিব, এ অবস্থায় যে, একদল অপর দলের উপর তরঙ্গের ন্যায় পতিত হবে (১৮ঃ ৯৯)। (আল্লাহর বাণী) এমন কি যখন ইয়াজুজ ও মাজুজকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং তারা প্রতি উচ্চ ভূমি থেকে ছুটে আসবে (২১ঃ ৯৬)। কাতাদা (র) বলেনঃ حدب অর্থ টিলা। এক সাহাবী নবী (ﷺ)-কে বললেন, আমি প্রাচীরটিকে কারুকার্য খচিত চাদরের মত দেখেছি। নবী (ﷺ) বললেন, তুমি তা ঠিকই দেখেছ।
৩১১০। মুসলিম ইবনে ইবরাহীম (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেন, ইয়াজুজ ও মাজুজের প্রাচীরে আল্লাহ এ পরিমাণ ছিদ্র করে দিয়েছেন। এই বলে, তিনি তাঁর হাতে নব্বই সংখ্যার আকৃতি ধারণ করে দেখালেন। (অর্থাৎ তিনি নিজ শাহাদাত আঙ্গুলীর মাথা বৃদ্ধাংগুলের গোড়ায় লাগিয়ে ছিদ্রের পরিমাণ দেখালেন।
بَابُ قِصَّةِ يَأْجُوجَ، وَمَأْجُوجَوَ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: قَالُوا {يَا ذَا القَرْنَيْنِ إِنَّ يَأْجُوجَ، وَمَأْجُوجَ مُفْسِدُونَ فِي الأَرْضِ} [الكهف: 94]
قَوْلُ اللَّهِ تَعَالَى {وَيَسْأَلُونَكَ عَنْ ذِي القَرْنَيْنِ قُلْ سَأَتْلُو عَلَيْكُمْ مِنْهُ ذِكْرًا. إِنَّا مَكَّنَّا لَهُ [ص:138] فِي الأَرْضِ وَآتَيْنَاهُ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ سَبَبًا} [الكهف: 84] . (فَاتَّبَعَ سَبَبًا) - إِلَى قَوْلِهِ - (ائْتُونِي زُبَرَ الحَدِيدِ) : «وَاحِدُهَا زُبْرَةٌ وَهِيَ القِطَعُ» {حَتَّى إِذَا سَاوَى بَيْنَ الصَّدَفَيْنِ} [الكهف: 96] يُقَالُ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ: الجَبَلَيْنِ، وَالسُّدَّيْنِ الجَبَلَيْنِ {خَرْجًا} [الكهف: 94] : «أَجْرًا» ، {قَالَ انْفُخُوا حَتَّى إِذَا جَعَلَهُ نَارًا قَالَ آتُونِي أُفْرِغْ عَلَيْهِ قِطْرًا} [الكهف: 96] : " أَصْبُبْ عَلَيْهِ رَصَاصًا، وَيُقَالُ الحَدِيدُ، وَيُقَالُ: الصُّفْرُ " وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: «النُّحَاسُ» {فَمَا اسْطَاعُوا أَنْ يَظْهَرُوهُ} [الكهف: 97] " يَعْلُوهُ، اسْتَطَاعَ اسْتَفْعَلَ، مِنْ أَطَعْتُ لَهُ، فَلِذَلِكَ فُتِحَ أَسْطَاعَ يَسْطِيعُ، وَقَالَ بَعْضُهُمْ: اسْتَطَاعَ يَسْتَطِيعُ "، وَمَا اسْتَطَاعُوا لَهُ نَقْبًا. (قَالَ هَذَا رَحْمَةٌ مِنْ رَبِّي فَإِذَا جَاءَ وَعْدُ رَبِّي جَعَلَهُ دَكًّا) : أَلْزَقَهُ بِالأَرْضِ، وَنَاقَةٌ دَكَّاءُ لاَ سَنَامَ لَهَا، وَالدَّكْدَاكُ مِنَ الأَرْضِ مِثْلُهُ، حَتَّى صَلُبَ وَتَلَبَّدَ، {وَكَانَ وَعْدُ رَبِّي حَقًّا. وَتَرَكْنَا بَعْضَهُمْ يَوْمَئِذٍ يَمُوجُ فِي بَعْضٍ} [الكهف: 98] {حَتَّى إِذَا فُتِحَتْ يَأْجُوجُ وَمَأْجُوجُ وَهُمْ مِنْ كُلِّ حَدَبٍ يَنْسِلُونَ} [الأنبياء: 96] قَالَ قَتَادَةُ: " حَدَبٌ: أَكَمَةٌ " قَالَ رَجُلٌ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: رَأَيْتُ السَّدَّ مِثْلَ البُرْدِ المُحَبَّرِ، قَالَ: «رَأَيْتَهُ»
3347 - حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، حَدَّثَنَا ابْنُ طَاوُسٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «فَتَحَ اللَّهُ مِنْ رَدْمِ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ مِثْلَ هَذَا وَعَقَدَ بِيَدِهِ تِسْعِينَ»
হাদীস নং: ৩১১১
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩৪৮
২০০৬. ইয়াজুজ ও মাজুজের ঘটনা। মহান আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই ইয়াজুজ মাজুজ পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টিকারী (১৮ঃ ৯৪)

২০০৭.পরিচ্ছেদঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ (হে নবী) তারা আপনাকে যুল-কারনাইন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করছে। আয়াতে سَبَبًا অর্থ চলাচলের পথ ও রাস্তা। তোমরা আমার কাছে লোহার টুকরা নিয়ে আস (১৮ঃ ৮৩-৯৬)। এখানে زُبَرَ শব্দটি বহুবচন। একবচনে زُبْرَةٌ অর্থ টুকরা। অবশেষে মাঝের ফাঁকা জায়গা পূর্ণ হয়ে যখন লোহার স্তূপ দু’পর্বতের সমান হল (১৮ঃ ৯৬)। তখন তিনি লোকদেরকে বললেন, এখন তাতে ফুঁক দিতে থাক। এ আয়াতে الصَّدَفَيْنِ শব্দের অর্থ ইবন আব্বাস (রা)-এর বর্ণনা অনুযায়ী দু’টি পর্বতকে বুঝানো হয়েছে। আর وَالسُّدَّيْنِ -এর অর্থ দু’টি পাহাড়। خَرْجًا অর্থ পারিশ্রমিক। যুল-কারনাইন বলল, তোমরা হাঁফরে ফুক দিতে থাক। যখন তা আগুনের ন্যায় উত্তপ্ত হল, তখন তিনি বললেন, তোমরা গলিত তামা নিয়ে আস, আমি তা এর উপর ঢেলে দেই (১৮ঃ ৯৬)। قِطْرًا অর্থ সীসা। আবার লৌহ গলিত পদার্থকেও বলা হয়, এবং তামাকেও বলা হয়। আর ইবন আব্বাস (রা)-এর অর্থ তামা গলিত পদার্থ বলেছেন। (আল্লাহর বাণী)ঃ এরপর তারা (ইয়াজুজ ও মাজুজ) এ প্রাচীর অতিক্রম করতে পারল না (১৮ঃ ৯৭)। অর্থাৎ তারা এর উপরে চড়তে সক্ষম হল না। اسْتَطَاعَ শব্দটি طَعْتُ لَهُ থেকে باب استفعال আনা হয়েছে। একে أَسط ও يَسْطيعُ যবরসহ পড়া হয়ে থাকে। আর কেহ কেহ একে استطاع يستطيع রূপে পড়েন। (আল্লাহর বাণী) তারা তা ছিদ্রও করতে পারল না। তিনি বললেন, এটা আমার রবের অনুগ্রহ। যখন আমার রবের প্রতিশ্রুতি পুরা হবে তখন তিনি এটাকে চূর্ণ বিচূর্ণ করে দিবেন (১৮ঃ ৯৭-৯৮)। دكا অর্থ মাটির সাথে মিশিয়ে দিবেন। ناقة دكاء বলে যে উটের কুঁজ নেই। دكداك من الأرض যমীনের সেই সমতল উপরিভাগকে বলা হয় যা শুকিয়ে যায় এবং উঁচু নিচু না থাকে। (আল্লাহর বাণী) আর আমার রবের প্রতিশ্রুতি সত্য, সে দিন আমি তাদেরকে ছেড়ে দিব, এ অবস্থায় যে, একদল অপর দলের উপর তরঙ্গের ন্যায় পতিত হবে (১৮ঃ ৯৯)। (আল্লাহর বাণী) এমন কি যখন ইয়াজুজ ও মাজুজকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং তারা প্রতি উচ্চ ভূমি থেকে ছুটে আসবে (২১ঃ ৯৬)। কাতাদা (র) বলেনঃ حدب অর্থ টিলা। এক সাহাবী নবী (ﷺ)-কে বললেন, আমি প্রাচীরটিকে কারুকার্য খচিত চাদরের মত দেখেছি। নবী (ﷺ) বললেন, তুমি তা ঠিকই দেখেছ।
৩১১১। ইসহাক ইবনে নাসর (রাহঃ) .... আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত নবী (ﷺ) বলেন, মহান আল্লাহ (হাশরের দিন) ডাকবেন, হে আদম (আলাইহিস সালাম)! তখন তিনি জবাব দিবেন, আমি হাযির আমি সৌভাগ্যবান এবং সকল কল্যাণ আপনার হাতেই। তখন আল্লাহ বলবেন জাহান্নামী দলকে বের করে দাও। আদম (আলাইহিস সালাম) বলবেন, জাহান্নামী দল কারা? আল্লাহ বলবেন, প্রতি হাজারে নয়শত নিরানব্বই জন। এ সময় (চরম ভয়ের কারণে) ছোটরা বুড়ো হয়ে যাবে। প্রত্যেক গর্ভবতী তাঁর গর্ভপাত করে ফেলবে। মানুষকে দেখবে মাতাল সদৃশ যদিও তারা নেশাগ্রস্ত নয়। বস্তুতঃ আল্লাহর শাস্তি কঠিন (২২ঃ ২)। সাহাবাগণ বলবেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! (প্রতি হাজারের মধ্যে একজন) আমাদের মধ্যে সেই একজন কে? তিনি বললেন, তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর। কেননা তোমাদের মধ্য থেকে একজন আর এক হাজারের অবশিষ্ট ইয়াজুজ-মাজুজ হবে।*
তারপর তিনি বললেন, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তাঁর কসম। আমি আশা করি, তোমরা (যারা আমার উম্মত) সমস্ত জান্নাতবাসীদের এক চতুর্থাংশ হবে। (আবু সাঈদ (রাযিঃ) বলেন আমরা এ সুসংবাদ শুনে) আল্লাহু আকবার বলে তাকবীর দিলাম। এরপর তিনি আবার বললেন, আমি আশা করি তোমরা সমস্ত জান্নাতীদের এক তৃতীয়াংশ হবে। আমরা পুনরায় আল্লাহু আকবার বলে তাকবীর দিলাম। তিনি আবার বললেন, আমি আশা করি তোমরা সমস্ত জান্নাতীদের অর্ধেক হবে। একথা শুনে আমরা আবার আল্লাহু আকবার বলে তাকবীর দিলাম। তিনি বললেন, তোমরা তো অন্যান্য মানুষের তুলনায় এমন, যেমন সাদা ষাঁড়ের দেহে কয়েকটি কাল পশম অথবা কালো ষাঁড়ের দেহে কয়েকটি সাদা পশম।
* সমস্ত মানব জাতির মধ্যে প্রতি হাজারে একজন হবে মুসলিম এবং জান্নাতী, আর বাকী নয়শত নিরানব্বই জন হবে ইয়াজুজ-মাজুজসহ অমুসলিম ও জাহান্নামী।
بَابُ قِصَّةِ يَأْجُوجَ، وَمَأْجُوجَوَ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: قَالُوا {يَا ذَا القَرْنَيْنِ إِنَّ يَأْجُوجَ، وَمَأْجُوجَ مُفْسِدُونَ فِي الأَرْضِ} [الكهف: 94]
قَوْلُ اللَّهِ تَعَالَى {وَيَسْأَلُونَكَ عَنْ ذِي القَرْنَيْنِ قُلْ سَأَتْلُو عَلَيْكُمْ مِنْهُ ذِكْرًا. إِنَّا مَكَّنَّا لَهُ [ص:138] فِي الأَرْضِ وَآتَيْنَاهُ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ سَبَبًا} [الكهف: 84] . (فَاتَّبَعَ سَبَبًا) - إِلَى قَوْلِهِ - (ائْتُونِي زُبَرَ الحَدِيدِ) : «وَاحِدُهَا زُبْرَةٌ وَهِيَ القِطَعُ» {حَتَّى إِذَا سَاوَى بَيْنَ الصَّدَفَيْنِ} [الكهف: 96] يُقَالُ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ: الجَبَلَيْنِ، وَالسُّدَّيْنِ الجَبَلَيْنِ {خَرْجًا} [الكهف: 94] : «أَجْرًا» ، {قَالَ انْفُخُوا حَتَّى إِذَا جَعَلَهُ نَارًا قَالَ آتُونِي أُفْرِغْ عَلَيْهِ قِطْرًا} [الكهف: 96] : " أَصْبُبْ عَلَيْهِ رَصَاصًا، وَيُقَالُ الحَدِيدُ، وَيُقَالُ: الصُّفْرُ " وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: «النُّحَاسُ» {فَمَا اسْطَاعُوا أَنْ يَظْهَرُوهُ} [الكهف: 97] " يَعْلُوهُ، اسْتَطَاعَ اسْتَفْعَلَ، مِنْ أَطَعْتُ لَهُ، فَلِذَلِكَ فُتِحَ أَسْطَاعَ يَسْطِيعُ، وَقَالَ بَعْضُهُمْ: اسْتَطَاعَ يَسْتَطِيعُ "، وَمَا اسْتَطَاعُوا لَهُ نَقْبًا. (قَالَ هَذَا رَحْمَةٌ مِنْ رَبِّي فَإِذَا جَاءَ وَعْدُ رَبِّي جَعَلَهُ دَكًّا) : أَلْزَقَهُ بِالأَرْضِ، وَنَاقَةٌ دَكَّاءُ لاَ سَنَامَ لَهَا، وَالدَّكْدَاكُ مِنَ الأَرْضِ مِثْلُهُ، حَتَّى صَلُبَ وَتَلَبَّدَ، {وَكَانَ وَعْدُ رَبِّي حَقًّا. وَتَرَكْنَا بَعْضَهُمْ يَوْمَئِذٍ يَمُوجُ فِي بَعْضٍ} [الكهف: 98] {حَتَّى إِذَا فُتِحَتْ يَأْجُوجُ وَمَأْجُوجُ وَهُمْ مِنْ كُلِّ حَدَبٍ يَنْسِلُونَ} [الأنبياء: 96] قَالَ قَتَادَةُ: " حَدَبٌ: أَكَمَةٌ " قَالَ رَجُلٌ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: رَأَيْتُ السَّدَّ مِثْلَ البُرْدِ المُحَبَّرِ، قَالَ: «رَأَيْتَهُ»
3348 - حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ نَصْرٍ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، حَدَّثَنَا أَبُو صَالِحٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدْرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: " يَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى: " يَا آدَمُ، فَيَقُولُ: لَبَّيْكَ وَسَعْدَيْكَ، وَالخَيْرُ فِي يَدَيْكَ، فَيَقُولُ: أَخْرِجْ بَعْثَ النَّارِ، قَالَ: وَمَا بَعْثُ النَّارِ؟، قَالَ: مِنْ كُلِّ أَلْفٍ تِسْعَ مِائَةٍ وَتِسْعَةً وَتِسْعِينَ، فَعِنْدَهُ يَشِيبُ الصَّغِيرُ، وَتَضَعُ كُلُّ ذَاتِ حَمْلٍ حَمْلَهَا، وَتَرَى النَّاسَ سُكَارَى وَمَا هُمْ بِسُكَارَى، وَلَكِنَّ عَذَابَ اللَّهِ شَدِيدٌ " قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَأَيُّنَا ذَلِكَ الوَاحِدُ؟ قَالَ [ص:139]: " أَبْشِرُوا، فَإِنَّ مِنْكُمْ رَجُلًا وَمِنْ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ أَلْفًا. ثُمَّ قَالَ: وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، إِنِّي أَرْجُو أَنْ تَكُونُوا رُبُعَ أَهْلِ الجَنَّةِ " فَكَبَّرْنَا، فَقَالَ: «أَرْجُو أَنْ تَكُونُوا ثُلُثَ أَهْلِ الجَنَّةِ» فَكَبَّرْنَا، فَقَالَ: «أَرْجُو أَنْ تَكُونُوا نِصْفَ أَهْلِ الجَنَّةِ» فَكَبَّرْنَا، فَقَالَ: «مَا أَنْتُمْ فِي النَّاسِ إِلَّا كَالشَّعَرَةِ السَّوْدَاءِ فِي جِلْدِ ثَوْرٍ أَبْيَضَ، أَوْ كَشَعَرَةٍ بَيْضَاءَ فِي جِلْدِ ثَوْرٍ أَسْوَدَ»