আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

الجامع الصحيح للبخاري

৪৮- নবীগণের আঃ আলোচনা - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ১০ টি

হাদীস নং: ৩০৯১
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩২৬
২০০০. নবীগণের আলোচনা অধ্যায়ঃ আদম (আলাইহিস সালাম) ও তাঁর সন্তানদের সৃষ্টির বর্ণনা।
আল্লাহর বাণীঃ স্মরণ করুন, যখন আপনার রব ফিরিশতাগণকে বললেন, আমি পৃথিবীতে খলীফা সৃষ্টি করছি। (২ঃ ৩০) صَلْصَالٌ বালি মিশ্রিত শুকনো মাটি যা শব্দ করে যেমন আগুনে পোড়া মাটি শব্দ করে। আরো বলা হয়, তা হলো দুর্ঘন্ধযুক্ত মাটি। আরবরা এ দিয়ে صَلَّ এর অর্থ নিয়ে থাকে, যেমন তারা দরজা বন্ধ করার শব্দের ক্ষেত্রে صَرَّ الْبَابُ এবং صَرْصَرَ শব্দদ্বয় ব্যবহার করে থাকে। অনুরূপ كَبْكَبْتُهُ এর অর্থ كَبَبْتُهُ নিয়ে থাকে। فَمَرَّتْ بِهِ তার গর্ভ স্থিতি লাভ করল এবং এর মেয়াদ পূর্ণ করল। أَنْ لاَ تَسْجُدَ এর لاَ শব্দটি অতিরিক্ত। أَنْ تَسْجُدَ অর্থ সিজদা করতে হবে। মহান আল্লাহর বাণীঃ এবং স্মরণ করুন, যখন আপনার রব ফিরিশতাগণকে বললেন, আমি পৃথিবীতে খলিফা সৃষ্টি করছি। (২ঃ ৩০) ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, لَمَّا عَلَيْهَا حَافِظٌ এর অর্থ কিন্তু তার উপর রয়েছে তত্ত্বাবধায়ক। فِي كَبَدٍ সৃষ্টিগত ক্লেশের মধ্যে وَرِيشا -এর অর্থ সম্পদ। ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) ছাড়া অন্যরা বলেন, الرِّيَاشُ এবং الرِّيشُ উভয়ের একই অর্থ। আর তা হল পরিচ্ছেদের বাহ্যিক দিক। مَا تُمْنُونَ স্ত্রীলোকদের জরায়ুতে পতিত বীর্য। আর মুজাহিদ (রাহঃ) আল্লাহর বাণীঃ إِنَّهُ عَلَى رَجْعِهِ لَقَادِرٌ এর অর্থ বলেছেন, পুরুষের লিঙ্গ পুনরায় ফিরিয়ে আনতে আল্লাহ সক্ষম। আল্লাহ সকল বস্তুকে জোড়া জোড়া সৃষ্টি করেছেন। আকাশেরও জোড়া আছে, কিন্তু আল্লাহ বেজোড়। فِي أَحْسَنِ تَقْوِيمٍ উত্তম আকৃতিতে। যারা ঈমান এনেছে তারা ব্যতীত সকলেই হীনতাগ্রস্তদের হীনতমে। خُسْرٍ পথভ্রষ্ট। এরপর استثناء করে আল্লাহ বলেন, কিন্তু যারা ঈমান এনেছে তারা ব্যতীত। لاَزِبٍ অর্থ আঠালো। نُنْشِئَكُمْ অর্থ যে কোন আকৃতিতে আমি ইচ্ছা করি তোমাদেরকে সৃষ্টি করব। نُسَبِّحُ بِحَمْدِكَ অর্থ আমরা প্রশংসার সাথে আপনার মহিমা বর্ণনা করব। আর আবুল আলীয়া (রাহঃ) বলেন, অতঃপর আদম (আলাইহিস সালাম) যা শিক্ষা করলেন তা হল তার উক্তি “হে আমাদের রব! আমরা আমাদের নফসের উপর যুলুম করেছি।” তিনি আরো বলেন, فَأَزَلَّهُمَا শয়তান তাঁদের উভয়কে পদস্খলিত করল। يَتَسَنَّهْ পরিবর্তিত হবে। آسِنٌ পরিবর্তিত। الْمَسْنُونُ পরিবর্তিত। حَمَإٍ শব্দটি حَمْأَةٍ শব্দের বহুবচন। যার অর্থ গলিত কাদা মাটি। يَخْصِفَانِ তারা উভয়ে (আদম ও হাওয়া) জান্নাতের পাতাগুলো জোড়া দিতে লাগলেন। (জোড়া দিয়ে নিজেদের লজ্জাস্থান ঢাকতে শুরু করলেন) سَوْآتُهُمَا দ্বারা তাঁদের উভয়ের লজ্জাস্থানের প্রতি ইশারা করা হয়েছে। আর مَتَاعٌ إِلَى حِينٍ এর অর্থ এখানে কিয়ামতের দিন পর্যন্ত। আর আরববাসীগণ الْحِينُ শব্দ দ্বারা কিছু সময় থেকে অগণিত সময়কে বুঝিয়ে থাকেন। قَبِيلُهُ এর অর্থ তার ঐ দল যাদের মধ্যে সেও শামিল।
৩০৯১। আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেন, আল্লাহ্ তাআলা আদম (আলাইহিস সালাম)- কে সৃষ্টি করেছেন। তাঁর দৈর্ঘ্য ছিল ষাট হাত। এরপর তিনি (আল্লাহ্) তাঁকে (আদমকে) বললেন, যাও। ঐ ফিরিশতা দলের প্রতি সালাম কর, এবং তাঁরা তোমার সালামের জওয়াব কিরূপে দেয় তা মনোযোগ দিয়ে শোন। কেননা এটাই হবে তোমার এবং তোমার সন্তানদের সালামের রীতি। তারপর আদম (আলাইহিস সালাম) (ফিরিশতাদের) বললেন, “আসসালামু আলাইকুম”। ফিরিশতাগণ তার উত্তরে “আসসালামু আলাইকা ওয়া রাহামাতুল্লাহ” বললেন। ফিরিশতারা সালামের জওয়াবে “ওয়া রাহমাতুল্লাহ” শব্দটি বাড়িয়ে বললেন। যারা জান্নাতে প্রবেশ করবেন তারা আদম (আলাইহিস সালাম)- এর আকৃতি বিশিষ্ট হবেন। তবে আদম সন্তানদের দেহের দৈর্ঘ্য সর্বদা কমতে কমতে বর্তমান পরিমাপ পর্যন্ত পোঁছেছে।
كِتَابُ أَحَادِيثِ الأَنْبِيَاءِ بَابُ خَلْقِ آدَمَ صَلَوَاتُ اللَّهِ عَلَيْهِ وَذُرِّيَّتِهِ {صَلْصَالٍ} [الحجر: 26]: " طِينٌ خُلِطَ بِرَمْلٍ، فَصَلْصَلَ كَمَا يُصَلْصِلُ الفَخَّارُ، وَيُقَالُ: مُنْتِنٌ، يُرِيدُونَ بِهِ صَلَّ، كَمَا يُقَالُ: صَرَّ البَابُ وَصَرْصَرَ عِنْدَ الإِغْلاَقِ، مِثْلُ كَبْكَبْتُهُ يَعْنِي كَبَبْتُهُ "، فَمَرَّتْ بِهِ: «اسْتَمَرَّ بِهَا الحَمْلُ فَأَتَمَّتْهُ»، {أَلَّا تَسْجُدَ} [الأعراف: 12]: «أَنْ تَسْجُدَ»، وَقَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى {وَإِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلاَئِكَةِ إِنِّي جَاعِلٌ فِي الأَرْضِ خَلِيفَةً} [البقرة: 30] قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: {لَمَّا عَلَيْهَا حَافِظٌ} [الطارق: 4]: «إِلَّا عَلَيْهَا حَافِظٌ»، {فِي كَبَدٍ} [البلد: 4]: فِي شِدَّةِ خَلْقٍ. (وَرِيَاشًا): المَالُ " وَقَالَ غَيْرُهُ: الرِّيَاشُ وَالرِّيشُ وَاحِدٌ، وَهُوَ مَا ظَهَرَ مِنَ اللِّبَاسِ، {مَا تُمْنُونَ} [الواقعة: 58]: النُّطْفَةُ فِي أَرْحَامِ النِّسَاءِ " وَقَالَ مُجَاهِدٌ: {إِنَّهُ عَلَى رَجْعِهِ لَقَادِرٌ} [الطارق: 8]: «النُّطْفَةُ فِي الإِحْلِيلِ، كُلُّ شَيْءٍ خَلَقَهُ فَهُوَ شَفْعٌ، السَّمَاءُ شَفْعٌ، وَالوَتْرُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ»، {فِي أَحْسَنِ تَقْوِيمٍ} [التين: 4]: «فِي أَحْسَنِ خَلْقٍ»، {أَسْفَلَ سَافِلِينَ} [التين: 5]: «إِلَّا مَنْ آمَنَ»، {خُسْرٍ} [النساء: 119]: «ضَلاَلٍ، ثُمَّ اسْتَثْنَى إِلَّا مَنْ آمَنَ». {لاَزِبٍ} [الصافات: 11]: «لاَزِمٌ»، {نُنْشِئَكُمْ} [الواقعة: 61]: «فِي أَيِّ خَلْقٍ نَشَاءُ»، {نُسَبِّحُ بِحَمْدِكَ} [البقرة: 30]: «نُعَظِّمُكَ» وَقَالَ أَبُو العَالِيَةِ {فَتَلَقَّى آدَمُ مِنْ رَبِّهِ كَلِمَاتٍ} [البقرة: 37]: فَهُوَ قَوْلُهُ: {رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنْفُسَنَا} [الأعراف: 23]. {فَأَزَلَّهُمَا} [البقرة: 36]: «فَاسْتَزَلَّهُمَا» وَ {يَتَسَنَّهْ} [البقرة: 259]: «يَتَغَيَّرْ»، {آسِنٌ} [محمد: 15]: «مُتَغَيِّرٌ، وَالمَسْنُونُ المُتَغَيِّرُ»، {حَمَإٍ} [الحجر: 26]: «جَمْعُ حَمْأَةٍ وَهُوَ الطِّينُ المُتَغَيِّرُ»، {يَخْصِفَانِ} [الأعراف: 22]: «أَخْذُ الخِصَافِ مِنْ وَرَقِ الجَنَّةِ، يُؤَلِّفَانِ الوَرَقَ وَيَخْصِفَانِ بَعْضَهُ إِلَى بَعْضٍ»، {سَوْآتُهُمَا} [طه: 121]: «كِنَايَةٌ عَنْ فَرْجَيْهِمَا»، {وَمَتَاعٌ إِلَى حِينٍ} [البقرة: 36]: «هَا هُنَا إِلَى يَوْمِ القِيَامَةِ، الحِينُ عِنْدَ العَرَبِ مِنْ سَاعَةٍ إِلَى مَا لاَ يُحْصَى عَدَدُهُ» {قَبِيلُهُ} [الأعراف: 27]: «جِيلُهُ الَّذِي هُوَ مِنْهُمْ»
3326 - حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ هَمَّامٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: " خَلَقَ اللَّهُ آدَمَ وَطُولُهُ سِتُّونَ ذِرَاعًا، ثُمَّ قَالَ: اذْهَبْ فَسَلِّمْ عَلَى أُولَئِكَ مِنَ المَلاَئِكَةِ، فَاسْتَمِعْ مَا يُحَيُّونَكَ، تَحِيَّتُكَ وَتَحِيَّةُ ذُرِّيَّتِكَ، فَقَالَ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ، فَقَالُوا: السَّلاَمُ عَلَيْكَ وَرَحْمَةُ اللَّهِ [ص:132]، فَزَادُوهُ: وَرَحْمَةُ اللَّهِ، فَكُلُّ مَنْ يَدْخُلُ الجَنَّةَ عَلَى صُورَةِ آدَمَ، فَلَمْ يَزَلِ الخَلْقُ يَنْقُصُ حَتَّى الآنَ "
হাদীস নং: ৩০৯২
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩২৭
২০০০. নবীগণের আলোচনা অধ্যায়ঃ আদম (আলাইহিস সালাম) ও তাঁর সন্তানদের সৃষ্টির বর্ণনা।
৩০৯২। কুতায়বা ইবনে সাঈদ (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, সর্বপ্রথম যে দল জান্নাতে প্রবেশ করবে তাদের মুখমণ্ডল হবে পূর্ণিমার রাতের চাঁদের মত উজ্জ্বল। তারপর যে দল তাদের অনুগামী হবে তাদের মুখমণ্ডল হবে আকাশের সর্বাদিক দীপ্তমান উজ্জ্বল তারকার মত। তারা না করবে পেশাব আর না করবে পায়খানা। তাদের থুথু ফেলার প্রয়োজন হবে না এবং তাদের নাক হতে শ্লেষ্মাও বের হবে না। তাদের চিরুনি হবে স্বর্ণের তৈরী। তাদের ঘাম হবে মিসকের ন্যায় সুগন্ধ পূর্ণ। তাদের ধনুচি হবে সুগন্ধ যুক্ত চন্দন কাঠের। বড় চক্ষু বিশিষ্ট হুরগণ হবেন তাদের স্ত্রী। তাদের সকলের দেহের গঠন হবে একই। তারা সবাই তাদের আদি-পিতা আদম (আলাইহিস সালাম)- এর আকৃতিতে হবেন। উচ্ছতায় তাদের দেহের দৈর্ঘ্য হবে ষাট হাত বিশিষ্ট।
كِتَابُ أَحَادِيثِ الأَنْبِيَاءِ بَابُ خَلْقِ آدَمَ صَلَوَاتُ اللَّهِ عَلَيْهِ وَذُرِّيَّتِهِ
3327 - حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ عُمَارَةَ، عَنْ أَبِي زُرْعَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ أَوَّلَ زُمْرَةٍ يَدْخُلُونَ الجَنَّةَ عَلَى صُورَةِ القَمَرِ لَيْلَةَ البَدْرِ، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ عَلَى أَشَدِّ كَوْكَبٍ دُرِّيٍّ فِي السَّمَاءِ إِضَاءَةً، لاَ يَبُولُونَ وَلاَ يَتَغَوَّطُونَ، وَلاَ يَتْفِلُونَ وَلاَ يَمْتَخِطُونَ، أَمْشَاطُهُمُ الذَّهَبُ، وَرَشْحُهُمُ المِسْكُ، وَمَجَامِرُهُمْ الأَلُوَّةُ الأَنْجُوجُ، عُودُ الطِّيبِ وَأَزْوَاجُهُمُ الحُورُ العِينُ، عَلَى خَلْقِ رَجُلٍ وَاحِدٍ، عَلَى صُورَةِ أَبِيهِمْ آدَمَ، سِتُّونَ ذِرَاعًا فِي السَّمَاءِ»
হাদীস নং: ৩০৯৩
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩২৮
২০০০. নবীগণের আলোচনা অধ্যায়ঃ আদম (আলাইহিস সালাম) ও তাঁর সন্তানদের সৃষ্টির বর্ণনা।
৩০৯৩। মুসাদ্দাদ (রাহঃ) .... উম্মে সালামা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, উম্মে সুলায়ম (রাযিঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহ সত্য প্রকাশ করতে লজ্জাবোধ করেন না। মেয়েদের স্বপ্নদোষ হলে কি তাদের উপর গোসল ফরয হবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। যখন সে বীর্য দেখতে পাবে। এ কথা শুনে উম্মে সালামা (রাযিঃ) হাসলেন এবং বললেন, মেয়েদের কি স্বপ্নদোষ হয়? তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তা না হলে সন্তান তার সদৃশ হয় কিভাবে।
كِتَابُ أَحَادِيثِ الأَنْبِيَاءِ بَابُ خَلْقِ آدَمَ صَلَوَاتُ اللَّهِ عَلَيْهِ وَذُرِّيَّتِهِ
3328 - حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ زَيْنَبَ بِنْتِ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، أَنَّ أُمَّ سُلَيْمٍ، قَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ لاَ يَسْتَحْيِي مِنَ الحَقِّ فَهَلْ عَلَى المَرْأَةِ الغَسْلُ إِذَا احْتَلَمَتْ؟ قَالَ: «نَعَمْ، إِذَا رَأَتِ المَاءَ» فَضَحِكَتْ أُمُّ سَلَمَةَ، فَقَالَتْ: تَحْتَلِمُ المَرْأَةُ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «فَبِمَ يُشْبِهُ الوَلَدُ»
হাদীস নং: ৩০৯৪
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩২৯
২০০০. নবীগণের আলোচনা অধ্যায়ঃ আদম (আলাইহিস সালাম) ও তাঁর সন্তানদের সৃষ্টির বর্ণনা।
৩০৯৪। মুহাম্মাদ ইবনে সালাম (রাহঃ) .... আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনে সালামের কাছে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর মদীনায় আগমনের খবর পৌঁছল, তখন তিনি তাঁর কাছে আসলেন। এরপর তিনি বলেছেন, আমি আপনাকে এমন তিনটি বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে চাই যার উত্তর নবী (ﷺ) ছাড়া আর কেও অবগত নয়। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কিয়ামতের প্রথম নিদর্শন কি? আর সর্বপ্রথম খাবার কি, যা জান্নাতবাসী খাবে? আর কি কারণে সন্তান তার পিতার সাদৃশ্য লাভ করে? আর কিসের কারণে (কোন কোন সময়) তার মামাদের সাদৃশ্য হয়? তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, এইমাত্র জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) আমাকে এ বিষয়ে অবহিত করেছেন। রাবী বলেন, তখন আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) বললেন, সে তো ফিরিশতাগণের মধ্যে ইয়াহুদীদের শত্রু।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, কিয়ামতের প্রথম নিদর্শন হল আগুন যা মানুষকে পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে তাড়িয়ে নিয়ে একত্রিত করবে। আর প্রথম খাবার যা জান্নাতবাসীরা খাবেন তা হল মাছের কলিজার অতিরিক্ত অংশ। আর সন্তান সদৃশ হওয়ার রহস্য এই যে, পুরুষ যখন তার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে তখন যদি পুরুষের বীর্য প্রথমে স্খলিত হয় তবে সন্তান তার সদৃশ হবে, আর যখন স্ত্রীর বীর্য পুরুষের বীর্যের পূর্বে স্খলিত হয় তখন সন্তান তার সাদৃশ্যতা লাভ করে । তিনি বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি-নিঃসন্দেহে আপনি আল্লাহর রাসুল।
এরপর তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! ইয়াহুদীরা অপবাদ ও কুৎসা রটনাকারী সম্প্রদায়। আপনি তাদেরকে আমার সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করার পূর্বে তারা যদি আমার ইসলাম গ্রহণের বিষয় জেনে ফেলে, তাহলে তারা আপনার কাছে আমার কুৎসা রটনা করবে। তারপর ইয়াহুদীরা এলো এবং আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) ঘরে প্রবেশ করলেন। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের মধ্যে আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম কেমন লোক? তারা বলল, তিনি আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বিজ্ঞ ব্যক্তি এবং সবচেয়ে বিজ্ঞ ব্যক্তির পুত্র। তিনি আমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি এবং সর্বোত্তম ব্যক্তির পুত্র।
তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, যদি আব্দুল্লাহ ইসলাম গ্রহণ করে, এতে তোমাদের অভিমত কি হবে? তারা বলল, এর থেকে আল্লাহ তাঁকে রক্ষা করুক। এমন সময় আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) তাদের সামনে বের হয়ে আসলেন এবং তিনি বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ(ﷺ) আল্লাহর রাসূল। তখন তারা বলতে লাগল, সে আমাদের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তি এবং সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তির সন্তান এবং তারা তাঁর গীবত ও কুৎসা রটনায় লিপ্ত হয়ে গেল।
كِتَابُ أَحَادِيثِ الأَنْبِيَاءِ بَابُ خَلْقِ آدَمَ صَلَوَاتُ اللَّهِ عَلَيْهِ وَذُرِّيَّتِهِ
3329 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلاَمٍ، أَخْبَرَنَا الفَزَارِيُّ، عَنْ حُمَيْدٍ، عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: بَلَغَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ سَلاَمٍ مَقْدَمُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ المَدِينَةَ فَأَتَاهُ، فَقَالَ: إِنِّي سَائِلُكَ عَنْ ثَلاَثٍ لاَ يَعْلَمُهُنَّ إِلَّا نَبِيٌّ قَالَ: مَا أَوَّلُ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ؟ وَمَا أَوَّلُ طَعَامٍ يَأْكُلُهُ أَهْلُ الجَنَّةِ؟ وَمِنْ أَيِّ شَيْءٍ يَنْزِعُ الوَلَدُ إِلَى أَبِيهِ؟ وَمِنْ أَيِّ شَيْءٍ يَنْزِعُ إِلَى أَخْوَالِهِ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «خَبَّرَنِي بِهِنَّ آنِفًا جِبْرِيلُ» قَالَ: فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ ذَاكَ عَدُوُّ اليَهُودِ مِنَ المَلاَئِكَةِ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَمَّا أَوَّلُ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ فَنَارٌ تَحْشُرُ النَّاسَ مِنَ المَشْرِقِ إِلَى المَغْرِبِ، وَأَمَّا أَوَّلُ طَعَامٍ يَأْكُلُهُ أَهْلُ الجَنَّةِ فَزِيَادَةُ كَبِدِ حُوتٍ، وَأَمَّا الشَّبَهُ فِي الوَلَدِ: فَإِنَّ الرَّجُلَ إِذَا غَشِيَ المَرْأَةَ فَسَبَقَهَا مَاؤُهُ كَانَ الشَّبَهُ لَهُ، وَإِذَا سَبَقَ مَاؤُهَا كَانَ الشَّبَهُ لَهَا " قَالَ: أَشْهَدُ أَنَّكَ رَسُولُ اللَّهِ، ثُمَّ قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ اليَهُودَ قَوْمٌ بُهُتٌ، إِنْ عَلِمُوا بِإِسْلاَمِي قَبْلَ أَنْ تَسْأَلَهُمْ بَهَتُونِي عِنْدَكَ، فَجَاءَتِ اليَهُودُ وَدَخَلَ عَبْدُ اللَّهِ البَيْتَ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «أَيُّ رَجُلٍ فِيكُمْ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَلاَمٍ» قَالُوا أَعْلَمُنَا، وَابْنُ أَعْلَمِنَا، وَأَخْيَرُنَا، وَابْنُ أَخْيَرِنَا، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «أَفَرَأَيْتُمْ إِنْ أَسْلَمَ عَبْدُ اللَّهِ» قَالُوا: أَعَاذَهُ اللَّهُ مِنْ ذَلِكَ، فَخَرَجَ عَبْدُ اللَّهِ إِلَيْهِمْ فَقَالَ: أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، فَقَالُوا: شَرُّنَا، وَابْنُ شَرِّنَا، وَوَقَعُوا فِيهِ
হাদীস নং: ৩০৯৫
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩৩০
২০০০. নবীগণের আলোচনা অধ্যায়ঃ আদম (আলাইহিস সালাম) ও তাঁর সন্তানদের সৃষ্টির বর্ণনা।
৩০৯৫। বিশর ইবনে মুহাম্মাদ (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে অনুরূপ বর্ণিত আছে, অর্থাৎ নবী (ﷺ) বলেছেন, বনী ইসরাঈল যদি না হত তবে গোশত দুর্গন্ধ যুক্ত হতো না। আর যদি হাওয়া (আলাইহিস সালাম) না হতেন তবে কোন নারীই তাঁর স্বামীর খেয়ানত করত না।*
*মূসা (আ)-এর সময় বনী ইসরাঈল আল্লাহ্ তাআলার আদেশ অমান্য করে ‘সালওয়া’ নামক এক প্রকার পাখীর গোশত জমা করা শুরু করে। ফলে এ জমাকৃত গোশতে পচন ধরে। এ ঘটনা থেকেই গোশতে পচনের সূত্রপাত হয়। হাদীসের দ্বিতীয় অংশে আদম ও হাওয়ার নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফল খাওয়ার ঘটনার দিকে ইশারা করা হয়েছে। আদম (আ)-এর ফল খাওয়ার ব্যাপারে স্ত্রী হাওয়ার ভূমিকা ও প্রভাব কম ছিল না। আদি-মাতা হাওয়ার ভূমিকা স্বভাবত নারী জাতি এখনও বহন করে যাচ্ছে। এ দু'টো ঘটনাই হাদীসের উভয় বাক্যের তাৎপর্য। (আইনী)
كِتَابُ أَحَادِيثِ الأَنْبِيَاءِ بَابُ خَلْقِ آدَمَ صَلَوَاتُ اللَّهِ عَلَيْهِ وَذُرِّيَّتِهِ
3330 - حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ [ص:133]، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، نَحْوَهُ يَعْنِي «لَوْلاَ بَنُو إِسْرَائِيلَ لَمْ يَخْنَزِ اللَّحْمُ، وَلَوْلاَ حَوَّاءُ لَمْ تَخُنَّ أُنْثَى زَوْجَهَا»
হাদীস নং: ৩০৯৬
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩৩১
২০০০. নবীগণের আলোচনা অধ্যায়ঃ আদম (আলাইহিস সালাম) ও তাঁর সন্তানদের সৃষ্টির বর্ণনা।
৩০৯৬। আবু কুরায়ব ও মুসা ইবনে হিযাম (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, তোমরা নারীদেরকে উত্তম উপদেশ দিবে। কেননা নারী জাতিকে পাঁজরের হাড় দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে। আর পাঁজরের হাড়গুলোর মধ্যে উপরের হাড়টি অধিক বাঁকা। তুমি যদি তা সোজা করতে যাও, তাহলে তা ভেঙ্গে ফেলবে, আর যদি ছেড়ে দাও, তাহলে সব সময় তা বাকাই থেকে যাবে। কাজেই নারীদের সাথে উপদেশপূর্ণ কথাবার্তা বলবে।
كِتَابُ أَحَادِيثِ الأَنْبِيَاءِ بَابُ خَلْقِ آدَمَ صَلَوَاتُ اللَّهِ عَلَيْهِ وَذُرِّيَّتِهِ
3331 - حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، وَمُوسَى بْنُ حِزَامٍ، قَالاَ: حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ عَلِيٍّ، عَنْ زَائِدَةَ، عَنْ مَيْسَرَةَ الأَشْجَعِيِّ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ، فَإِنَّ المَرْأَةَ خُلِقَتْ مِنْ ضِلَعٍ، وَإِنَّ أَعْوَجَ شَيْءٍ فِي الضِّلَعِ أَعْلاَهُ، فَإِنْ ذَهَبْتَ تُقِيمُهُ كَسَرْتَهُ، وَإِنْ تَرَكْتَهُ لَمْ يَزَلْ أَعْوَجَ، فَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ»
হাদীস নং: ৩০৯৭
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩৩২
২০০০. নবীগণের আলোচনা অধ্যায়ঃ আদম (আলাইহিস সালাম) ও তাঁর সন্তানদের সৃষ্টির বর্ণনা।
৩০৯৭। উমর ইবনে হাফস (রাহঃ) .... আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, সত্যবাদী-সত্যনিষ্ট হিসাবে স্বীকৃত রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, তোমাদের প্রত্যেকের সৃষ্টির উপাদান স্বীয় মাতৃগর্ভে চল্লিশ দিন পর্যন্ত জমা রাখা হয়। এরপর অনুরূপভাবে (চল্লিশ দিনে) তা আলাকা (রক্তপিন্ড) রূপে পরিণত হয়। তারপর অনুরূপভাবে (চল্লিশ দিনে) তা গোশতের টুকরার রূপ লাভ করে। এরপর আল্লাহ তার কাছে চারটি বিষয়ের নির্দেশ নিয়ে একজন ফিরিশতা পাঠান। সে তার আমল, মৃত্যু, রিযক এবং সে কি পাপি হবে না পুণ্যবান হবে, এসব লিখে দেন। তারপর তার মধ্যে রূহ ফুঁকে দেয়া হয়।
(ভূমিষ্টের পর) এক ব্যক্তি একজন জাহান্নামীর আমলের ন্যায় আমল করতে থাকে এমনকি তার ও জাহান্নামের মধ্যে এক হাতের ব্যবধান থেকে যায়, এমন সময় তার ভাগ্যের লিখন এগিয়ে আসে। তখন সে জান্নাতবাসীদের আমলের ন্যায় আমল করে থাকে। ফলে সে জান্নাতে প্রবেশ করে। আর এক ব্যক্তি (প্রথম হতেই) জান্নাতবাসীদের আমলের অনুরূপ আমল করতে থাকে। এমন কি শেষ পর্যন্ত তার ও জান্নাতের মাঝে মাত্র এক হাতের ব্যবধান থেকে যায়। এমন সময় তার ভাগ্যের লিখন এগিয়ে আসে। তখন সে জাহান্নামীদের আমলের অনুরূপ আমল করে থাকে এবং পরিণতিতে সে জাহান্নামে প্রবেশ করে।
كِتَابُ أَحَادِيثِ الأَنْبِيَاءِ بَابُ خَلْقِ آدَمَ صَلَوَاتُ اللَّهِ عَلَيْهِ وَذُرِّيَّتِهِ
3332 - حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ وَهْبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ، حَدَّثَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ الصَّادِقُ المَصْدُوقُ، «إِنَّ أَحَدَكُمْ يُجْمَعُ فِي بَطْنِ أُمِّهِ أَرْبَعِينَ يَوْمًا، ثُمَّ يَكُونُ عَلَقَةً مِثْلَ ذَلِكَ، ثُمَّ يَكُونُ مُضْغَةً مِثْلَ ذَلِكَ، ثُمَّ يَبْعَثُ اللَّهُ إِلَيْهِ مَلَكًا بِأَرْبَعِ كَلِمَاتٍ، فَيُكْتَبُ عَمَلُهُ، وَأَجَلُهُ، وَرِزْقُهُ، وَشَقِيٌّ أَوْ سَعِيدٌ، ثُمَّ يُنْفَخُ فِيهِ الرُّوحُ، فَإِنَّ الرَّجُلَ لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ، حَتَّى مَا يَكُونُ بَيْنَهُ وَبَيْنَهَا إِلَّا ذِرَاعٌ، فَيَسْبِقُ عَلَيْهِ الكِتَابُ فَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ الجَنَّةِ فَيَدْخُلُ الجَنَّةَ، وَإِنَّ الرَّجُلَ لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ الجَنَّةِ، حَتَّى مَا يَكُونُ بَيْنَهُ وَبَيْنَهَا إِلَّا ذِرَاعٌ، فَيَسْبِقُ عَلَيْهِ الكِتَابُ، فَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ، فَيَدْخُلُ النَّارَ»
হাদীস নং: ৩০৯৮
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩৩৩
২০০০. নবীগণের আলোচনা অধ্যায়ঃ আদম (আলাইহিস সালাম) ও তাঁর সন্তানদের সৃষ্টির বর্ণনা।
৩০৯৮। আবু নু‘মান (রাহঃ) .... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেন, আল্লাহ মাতৃগর্ভে একজন ফিরিশতা নিযুক্ত করে রেখেছেন। (সন্তান জন্মের সূচনায়) সে ফিরিশতা বলেন, হে রব! এ তো বীর্য। হে রব! এ তো আলাকা। হে রব! এ তো গোশতের টুকরা। এরপর আল্লাহ যদি তাকে সৃষ্টি করতে চান। তাহলে ফিরিশতা বলেন, হে রব! সন্তানটি ছেলে হবে, না মেয়ে হবে? হে রব! সে কি পাপীষ্ঠ হবে, না পুণ্যবান হবে? তার রিযক কি পরিমাণ হবে, তার আয়ু কত হবে? এভাবে তার মাতৃগর্ভে সব কিছুই লিখে দেয়া হয়।
كِتَابُ أَحَادِيثِ الأَنْبِيَاءِ بَابُ خَلْقِ آدَمَ صَلَوَاتُ اللَّهِ عَلَيْهِ وَذُرِّيَّتِهِ
3333 - حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: " إِنَّ اللَّهَ وَكَّلَ فِي الرَّحِمِ مَلَكًا، فَيَقُولُ: يَا رَبِّ نُطْفَةٌ، يَا رَبِّ عَلَقَةٌ، يَا رَبِّ مُضْغَةٌ، فَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَخْلُقَهَا قَالَ: يَا رَبِّ أَذَكَرٌ، يَا رَبِّ أُنْثَى، يَا رَبِّ شَقِيٌّ أَمْ سَعِيدٌ، فَمَا الرِّزْقُ، فَمَا الأَجَلُ، فَيُكْتَبُ كَذَلِكَ فِي بَطْنِ أُمِّهِ "
হাদীস নং: ৩০৯৯
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩৩৪
২০০০. নবীগণের আলোচনা অধ্যায়ঃ আদম (আলাইহিস সালাম) ও তাঁর সন্তানদের সৃষ্টির বর্ণনা।
৩০৯৯। কায়স ইবনে হাফস (রাহঃ) .... আনাস (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে শুনে বর্ণনা করেছেন, আল্লাহ তাআলা জাহান্নামবাসীদের মধ্যে সবচেয়ে সহজ আযাব ভোগকারীকে জিজ্ঞাসা করবেন, যদি পৃথিবীর সব ধন-সম্পদ তোমার হয়ে যায়, তবে তুমি কি আযাবের বিনিময়ে তা দিয়ে দিবে? সে উত্তর দিবে হ্যাঁ। তখন আল্লাহ বলবেন, যখন তুমি আদম (আলাইহিস সালাম)- এর পৃষ্ঠদেশে ছিলে, তখন আমি তোমার কাছে এর চেয়েও সহজ একটি জিনিস চেয়েছিলাম। সেটা হল, তুমি আমার সাথে কাউকে শরীক করবে না। কিন্তু তুমি তা মানতে অস্বীকার করে শিরক করতে লাগলে।
كِتَابُ أَحَادِيثِ الأَنْبِيَاءِ بَابُ خَلْقِ آدَمَ صَلَوَاتُ اللَّهِ عَلَيْهِ وَذُرِّيَّتِهِ
3334 - حَدَّثَنَا قَيْسُ بْنُ حَفْصٍ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ الحَارِثِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي عِمْرَانَ الجَوْنِيِّ، عَنْ أَنَسٍ، يَرْفَعُهُ: " إِنَّ اللَّهَ يَقُولُ لِأَهْوَنِ أَهْلِ النَّارِ عَذَابًا: لَوْ أَنَّ لَكَ مَا فِي الأَرْضِ مِنْ شَيْءٍ كُنْتَ تَفْتَدِي بِهِ؟ قَالَ: نَعَمْ، قَالَ: فَقَدْ سَأَلْتُكَ مَا هُوَ أَهْوَنُ مِنْ هَذَا وَأَنْتَ فِي صُلْبِ آدَمَ، أَنْ لاَ تُشْرِكَ بِي، فَأَبَيْتَ إِلَّا الشِّرْكَ "
হাদীস নং: ৩১০০
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩৩৫
২০০০. নবীগণের আলোচনা অধ্যায়ঃ আদম (আলাইহিস সালাম) ও তাঁর সন্তানদের সৃষ্টির বর্ণনা।
৩১০০। উমর ইবনে হাফস ইবনে গিয়াস (রাহঃ) .... আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, কোন ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হলে, তার এ খুনের পাপের একাংশ আদম (আলাইহিস সালাম)- এর প্রথম ছেলের (কাবিলের) উপর বর্তায়। কারণ সেই সর্বপ্রথম হত্যার প্রচলন করেছে।
كِتَابُ أَحَادِيثِ الأَنْبِيَاءِ بَابُ خَلْقِ آدَمَ صَلَوَاتُ اللَّهِ عَلَيْهِ وَذُرِّيَّتِهِ
3335 - حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، قَالَ: حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُرَّةَ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لاَ تُقْتَلُ نَفْسٌ ظُلْمًا، إِلَّا كَانَ عَلَى ابْنِ آدَمَ الأَوَّلِ كِفْلٌ مِنْ دَمِهَا، لِأَنَّهُ أَوَّلُ مَنْ سَنَّ القَتْلَ»