আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

الجامع الصحيح للبخاري

৪৩- সন্ধি - আপোষরফা সংক্রান্ত অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ২৫১৮
আন্তর্জাতিক নং: ২৬৯৮
১৬৭৮. কিভাবে সন্ধিপত্র লেখা হবে? অমুকের পুত্র অমুক এবং অমুকের পুত্র অমুক লিখতে হবে। গোত্র বা বংশের দিকে সম্বোধন না করলেও ক্ষতি নেই।
২৫১৮। মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার (রাহঃ) .... বারা’ ইবনে আযিব (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হুদায়বিয়াতে (মক্কাবাসীদের সাথে) সন্ধি করার সময় আলী (রাযিঃ) উভয় পক্ষের মাঝে এক চুক্তিপত্র লিখলেন। তিনি লিখলেন, ’মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ (ﷺ)। মুশরিকরা বলল, ’মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ লেখা চলবে না। আপনি রাসূল (ﷺ) হলে আপনার সঙ্গে লড়াই কিসের?’ তখন তিনি আলীকে বললেন, ‘ওটা মুছে দাও। ’আলী (রাযিঃ) বললেন, আমি তা মুছব না।’ তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তা নিজ হাতে মুছে দিলেন এবং এই শর্তে তাদের সাথে সন্ধি করলেন যে, তিনি এবং তাঁর সাহাবাগণসহ তিন দিনের জন্য মক্কায় প্রবেশ করবেন এবং জুলুব্বান جُلُبَّانِ السِّلاَحِ ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে প্রবেশ করবেন না। তারা জিজ্ঞাসা করল, جُلُبَّانِ السِّلاَحِ মানে কি? তিনি বললেন, ‘জুলুব্বান’ অর্থ ভিতরে তরবারীসহ খাপ।’
بَابُ كَيْفَ يُكْتَبُ هَذَا مَا صَالَحَ فُلاَنُ بْنُ فُلاَنٍ. وَفُلاَنُ بْنُ فُلاَنٍ وَإِنْ لَمْ يَنْسُبْهُ إِلَى قَبِيلَتِهِ، أَوْ نَسَبِهِ
2698 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ: سَمِعْتُ البَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: لَمَّا صَالَحَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَهْلَ الحُدَيْبِيَةِ، كَتَبَ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ بَيْنَهُمْ كِتَابًا، فَكَتَبَ مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ، فَقَالَ المُشْرِكُونَ: لاَ تَكْتُبْ مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ، لَوْ كُنْتَ رَسُولًا لَمْ نُقَاتِلْكَ، فَقَالَ لِعَلِيٍّ: «امْحُهُ» ، فَقَالَ عَلِيٌّ: مَا أَنَا بِالَّذِي أَمْحَاهُ، فَمَحَاهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِيَدِهِ، وَصَالَحَهُمْ عَلَى أَنْ يَدْخُلَ هُوَ وَأَصْحَابُهُ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ، وَلاَ يَدْخُلُوهَا إِلَّا بِجُلُبَّانِ السِّلاَحِ، فَسَأَلُوهُ مَا جُلُبَّانُ السِّلاَحِ؟ فَقَالَ: القِرَابُ بِمَا فِيهِ
হাদীস নং: ২৫১৯
আন্তর্জাতিক নং: ২৬৯৯
১৬৭৮. কিভাবে সন্ধিপত্র লেখা হবে? অমুকের পুত্র অমুক এবং অমুকের পুত্র অমুক লিখতে হবে। গোত্র বা বংশের দিকে সম্বোধন না করলেও ক্ষতি নেই।
২৫১৯। উবাইদুল্লাহ ইবনে মুসা (রাহঃ) .... বারা’ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যিলকদ মাসে নবী (ﷺ) উমরার উদ্দেশ্যে বের হলেন। কিন্তু মক্কাবাসীরা তাঁকে মক্কা প্রবেশের জন্য ছেড়ে দিতে অস্বীকার করল। অবশেষে এই শর্তে তাদের সাথে ফয়সালা করলেন যে, তিন দিন সেখানে অবস্থান করবেন। সন্ধিপত্র লিখতে গিয়ে মুসলিমরা লিখলেন, এ সন্ধিপত্র সম্পাদন করেছেন, আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ (ﷺ)।’ তারা (মুশরিকরা) বলল, আমরা তাঁর রিসালাত স্বীকার করি না। আমরা যদি এ কথাই মনে করতাম যে, আপনি আল্লাহর রাসূল তাহলে আপনাকে বাধা দিতাম না। তবে আপনি হলেন, আব্দুল্লাহর পুত্র মুহাম্মাদ।’ তিনি বললেন, আমি আল্লাহর রাসূল এবং আব্দুল্লাহর পুত্র মুহাম্মাদ।’
তারপর তিনি আলীকে বললেন, রাসূলুল্লাহ শব্দটি মুছে দাও। তিনি বললেন, না। আল্লাহর কসম, আমি আপনাকে (রাসূলুল্লাহ শব্দটি) কখনো মুছবো না।’ রাসূলুল্লাহ(ﷺ) তখন চুক্তিপত্রটি নিলেন এবং লিখলেন, ‘এ সন্ধিপত্র মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ সম্পন্ন করেন-খাপবদ্ধ অস্ত্র ছাড়া আর কিছু নিয়ে তিনি মক্কায় প্রবেশ করবেন না। মক্কাবাসীদের কেউ তাঁর সঙ্গে যেতে চাইলে তিনি বের করে দিবেন না। আর তাঁর সঙ্গীদের কেউ মক্কায় থাকতে চাইলে তাকে বাধা দিবেন না।’ (সন্ধির শর্ত মুতাবেক) তিনি যখন মক্কায় প্রবেশ করলেন এবং নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হয়ে গেল, তখন তারা এসে আলীকে বলল, ‘তোমার সঙ্গীকে আমাদের এখান থেকে বের হতে বল। কেননা নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হয়ে গেছে।’
নবী (ﷺ) রওয়ানা হলেন। তখন হামযার মেয়ে হে চাচা, হে চাচা, বলে তাদের পেছনে পেছনে চলল। আলী (রাযিঃ) তাকে হাত ধরে নিয়ে এলেন এবং ফাতিমাকে বললেন, ‘এই নাও তোমার চাচার মেয়েকে। আমি ওকে তুলে এনেছি।’ আলী, যায়দ ও জা‘ফর তাকে নেয়ার ব্যাপারে বিতর্কে প্রবৃত্ত হলেন। আলী (রাযিঃ) বললেন, আমি তার বেশী হকদার। কারণ সে আমার চাচার মেয়ে। জাফর (রাযিঃ) বললেন, সে আমার চাচার মেয়ে এবং তার খালা আমার স্ত্রী।’ যায়দ (রাযিঃ) বললেন, ‘সে আমার ভাইয়ের মেয়ে।’
এরপর নবী (ﷺ) খালার অনুকূলে ফয়সালা দিলেন এবং বললেন, ‘খালা মায়ের স্থলবর্তিনী।’ আর আলীকে বললেন, আমি তোমার এবং তুমি আমার।’ জাফরকে বললেন, ‘তুমি আকৃতি ও প্রকৃতিতে আমার সদৃশ। আর যায়দকে বললেন, ‘তুমি তো আমাদের ভাই ও আযাদকৃত গোলাম।’
بَابُ كَيْفَ يُكْتَبُ هَذَا مَا صَالَحَ فُلاَنُ بْنُ فُلاَنٍ. وَفُلاَنُ بْنُ فُلاَنٍ وَإِنْ لَمْ يَنْسُبْهُ إِلَى قَبِيلَتِهِ، أَوْ نَسَبِهِ
2699 - حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ البَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: اعْتَمَرَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي ذِي القَعْدَةِ، فَأَبَى أَهْلُ مَكَّةَ أَنْ يَدَعُوهُ يَدْخُلُ مَكَّةَ حَتَّى [ص:185] قَاضَاهُمْ عَلَى أَنْ يُقِيمَ بِهَا ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ، فَلَمَّا كَتَبُوا الكِتَابَ، كَتَبُوا هَذَا مَا قَاضَى عَلَيْهِ مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ، فَقَالُوا: لاَ نُقِرُّ بِهَا، فَلَوْ نَعْلَمُ أَنَّكَ رَسُولُ اللَّهِ مَا مَنَعْنَاكَ، لَكِنْ أَنْتَ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: «أَنَا رَسُولُ اللَّهِ، وَأَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ» ، ثُمَّ قَالَ لِعَلِيٍّ: «امْحُ رَسُولُ اللَّهِ» ، قَالَ: لاَ وَاللَّهِ لاَ أَمْحُوكَ أَبَدًا، فَأَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الكِتَابَ، فَكَتَبَ هَذَا مَا قَاضَى عَلَيْهِ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، لاَ يَدْخُلُ مَكَّةَ سِلاَحٌ إِلَّا فِي القِرَابِ، وَأَنْ لاَ يَخْرُجَ مِنْ أَهْلِهَا بِأَحَدٍ، إِنْ أَرَادَ أَنْ يَتَّبِعَهُ، وَأَنْ لاَ يَمْنَعَ أَحَدًا مِنْ أَصْحَابِهِ أَرَادَ أَنْ يُقِيمَ بِهَا، فَلَمَّا دَخَلَهَا وَمَضَى الأَجَلُ، أَتَوْا عَلِيًّا فَقَالُوا: قُلْ لِصَاحِبِكَ اخْرُجْ عَنَّا، فَقَدْ مَضَى الأَجَلُ، فَخَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَتَبِعَتْهُمْ ابْنَةُ حَمْزَةَ: يَا عَمِّ يَا عَمِّ، فَتَنَاوَلَهَا عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَأَخَذَ بِيَدِهَا، وَقَالَ لِفَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلاَمُ: دُونَكِ ابْنَةَ عَمِّكِ، حَمَلَتْهَا، فَاخْتَصَمَ فِيهَا عَلِيٌّ، وَزَيْدٌ، وَجَعْفَرٌ، فَقَالَ عَلِيٌّ: أَنَا أَحَقُّ بِهَا وَهِيَ ابْنَةُ عَمِّي، وَقَالَ جَعْفَرٌ: ابْنَةُ عَمِّي وَخَالَتُهَا تَحْتِي، وَقَالَ زَيْدٌ: ابْنَةُ أَخِي، فَقَضَى بِهَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِخَالَتِهَا، وَقَالَ: «الخَالَةُ بِمَنْزِلَةِ الأُمِّ» ، وَقَالَ لِعَلِيٍّ: «أَنْتَ مِنِّي وَأَنَا مِنْكَ» ، وَقَالَ لِجَعْفَرٍ: «أَشْبَهْتَ خَلْقِي وَخُلُقِي» ، وَقَالَ لِزَيْدٍ: «أَنْتَ أَخُونَا وَمَوْلاَنَا»