আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

الجامع الصحيح للبخاري

৪৯- নবীজী সাঃ ও সাহাবা রাঃ ; মর্যাদা ও বিবিধ ফাযায়েল - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ৩৬০৮
আন্তর্জাতিক নং: ৩৮৮৭
২১৫১. মি‘রাজের ঘটনা
৩৬০৮। হুদবা ইবনে খালিদ (রাহঃ) .... মালিক ইবনে সা‘সা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর নবী (ﷺ)- কে যে রাতে ভ্রমণ করানো হয়েছে সে রাতের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, একদা আমি কা‘বা ঘরের হাতিমের অংশে ছিলাম। কখনো কখনো রাবী (কাতাদা) বলেছেন, হিজরে শুয়েছিলাম। হঠাৎ একজন আগন্তুক আমার নিকট এলেন এবং আমার এ স্থান থেকে সে স্থানের মধ্যবর্তী অংশটি চিরে ফেললেন। রাবী কাতাদা বলেন, আনাস (রাযিঃ) কখনো কাদ্দা (চিরলেন) শব্দ, আবার কখনো শাককা (বিদীর্ণ) শব্দ বলেছেন। রাবী বলেন, আমি আমার পার্শ্বে বসা জারূদ (রাহঃ)- কে জিজ্ঞাসা করলাম, এ দ্বারা কী বুঝিয়েছেন? তিনি বললেন, হলকুমের নিম্নদেশ থেকে নাভী পর্যন্ত। কাতাদা (রাহঃ) বলেন, আমি আনাস (রাযিঃ)- কে এ-ও বলতে শুনেছি বুকের উপরিভাগ থেকে নাভির নিচ পর্যন্ত। তারপর (নবী কারীম (ﷺ) বলেন) আগন্তুক আমার হৃদপিণ্ড বের করলেন। তারপর আমার নিকট একটি স্বর্ণের পাত্র আনা হল যা ঈমানে পরিপূর্ণ ছিল। তারপর আমার হৃদপিণ্ডটি (যমযমের পানি দ্বারা) ধৌত করা হল এবং ঈমান দ্বারা পরিপূর্ণ করে যথাস্থানে পুনরায় রেখে দেয়া হল।
তারপর সাদা রং এর একটি জন্তু আমার নিকট আনা হল। যা আকারে খচ্চর থেকে ছোট ও গাধা থেকে বড় ছিল? জারূদ তাকে বলেন, হে আবু হামযা, ইহাই কি বুরাক? আনাস (রাযিঃ) বললেন, হ্যাঁ। সে একেক কদম রাখে দৃষ্টির শেষ প্রান্তে। আমাকে তার উপর সওয়ার করানো হল। তারপর আমাকে নিয়ে জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) চললেন, প্রথম আসমানে নিয়ে এসে দরজা খুলে দিতে বললেন, জিজ্ঞাসা করা হল, ইনি কে? তিনি বললেন জিবরাঈল। আবার জিজ্ঞাসা করা হল, আপনার সঙ্গে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ (ﷺ)। আবার জিজ্ঞাসা করা হল, তাঁকে কি ডেকে পাঠান হয়েছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন বলা হল, তার জন্য খোশ-আমদেদ, উত্তম আগমনকারীর আগমন হয়েছে। তারপর আসমানের দরজা খুলে দেওয়া হল।
আমি যখন পোঁছালাম, তখন তথায় আদম (আলাইহিস সালাম)- এর সাক্ষাত পেলাম। জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) বললেন, ইনি আপনার আদি পিতা আদম (আলাইহিস সালাম) তাঁকে সালাম করুন। আমি তাঁকে সালাম দিলাম। তিনি সালামের জবাব দিলেন এবং বললেন, নেককার পুত্র ও নেককার নবীর প্রতি খোশ-আমদেদ। তারপর উপরের দিকে চলে দ্বিতীয় আসমানে পৌঁছে দরজা খুলে দিতে বললেন, জিজ্ঞাসা করা হল কে? তিনি বললেন জিবরাঈল। জিজ্ঞাসা করা হল আপনার সঙ্গে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ (ﷺ)। জিজ্ঞাসা করা হল, তাঁকে কি ডেকে পাঠান হয়েছে? তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। তারপর বলা হল- তাঁর জন্য খোশ-আমদেদ। উত্তম আগমনকারীর আগমন হয়েছে। তারপর খুলে দেওয়া হল। যখন তথায় পৌঁছলাম তখন সেখানে ইয়াহয়া ও ঈসা (আলাইহিমুস সালাম)- এর সাক্ষাত পেলাম। তাঁরা দু’জন ছিলেন পরস্পরের খালাত ভাই। তিনি (জিবরাঈল) বললেন, এরা হলেন ইয়াহয়া ও ঈসা (আলাইহিমুস সালাম)। তাঁদের প্রতি সালাম করুন। তখন আমি সালাম দিলাম। তাঁরা জবাব দিলেন, তারপর বললেন, নেককার ভাই ও নেককার নবীর প্রতি খোশ-আমদেদ।
এরপর তিনি আমাকে নিয়ে তৃতীয় আসমানের দিকে চললেন, সেখানে পৌঁছে জিবরাঈল বললেন খুলে দাও। তাঁকে বলা হল কে? তিনি উত্তর দিলেন, জিবরাঈল। জিজ্ঞাসা করা হল আপনার সঙ্গে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ (ﷺ)। জিজ্ঞাসা করা হল, তাঁকে কি ডেকে পাঠান হয়েছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। বলা হল, তাঁর জন্য খোশ-আমদেদ। উত্তম আগমনকারীর আগমন হয়েছে। তারপর দরজা খুলে দেওয়া হল। আমি তথায় পৌঁছে ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)- কে দেখতে পেলাম। জিবরাঈল বললেন, ইনি ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) আপনি তাঁকে সালাম করুন। আমি তাঁকে সালাম দিলাম, তিনিও জবাব দিলেন এবং বললেন, নেককার ভাই ও নেককার নবীর প্রতি খোশ-আমদেদ।
তারপর জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) আমাকে নিয়ে উর্ধ্ব-যাত্রা করলেন এবং চতুর্থ আসমানে পৌঁছলেন। আর (ফিরিশতাকে) দরজা খুলে দিতে বললেন। জিজ্ঞাসা করা হল, আপনি কে? তিনি বললেন, জিবরাঈল। জিজ্ঞাসা করা হল আপনার সঙ্গে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ (ﷺ)। জিজ্ঞাসা করা হল, তাঁকে কি ডেকে পাঠান হয়েছে? তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। তখন বলা হল- তাঁর প্রতি খোশ-আমদেদ। উত্তম আগমনকারীর আগমন হয়েছে। তখন খুলে দেওয়া হল। আমি ইদ্রীস (আলাইহিস সালাম)- এর কাছে পৌঁছলে জিবরাঈল বললেন, ইনি ইদ্রীস আলাইহিস সালাম। তাকে সালাম করুন। আমি তাঁকে সালাম দিলাম। তিনিও জবাব দিলেন। তারপর বললেন, নেককার ভাই ও নেককার নবীর প্রতি খোশ-আমদেদ।
এরপর তিনি (জিবরাঈল) আমাকে নিয়ে উর্ধ্ব-যাত্রা করে পঞ্চম আসমানে পৌঁছে দরজা খুলতে বললেন। জিজ্ঞাসা করা হল, আপনি কে? তিনি বললেন, জিবরাঈল। জিজ্ঞাসা করা হল, আপনার সঙ্গে কে? তিনি উত্তর দিলেন, মুহাম্মাদ (ﷺ)। জিজ্ঞাসা করা হল। তাঁকে ডেকে পাঠান হয়েছে? তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। বলা হল, তাঁর প্রতি খোশ-আমদেদ। উত্তম আগমনকারীর আগমন হয়েছে। তথায় পৌঁছে হারূন (আলাইহিস সালাম)- কে পেলাম। জিবরাঈল বললেন, ইনি হারূন (আলাইহিস সালাম) তাঁকে সালাম করুন। আমি তাঁকে সালাম দিলাম; তিনিও জবাব দিলেন, এবং বললেন, নেককার ভাই ও নেককার নবীর প্রতি খোশ-আমদেদ।
তারপর আমাকে নিয়ে যাত্রা করে ষষ্ঠ আকাশে পৌঁছে দরজা খুলতে বললেন। জিজ্ঞাসা করা হল, আপনি কে? তিনি বললেন, জিবরাঈল। জিজ্ঞাসা করা হল, আপনার সঙ্গে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ (ﷺ)। প্রশ্ন করা হল, তাঁকে কি ডেকে পাঠান হয়েছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। ফিরিশতা বললেন, তাঁর প্রতি খোশ-আমদেদ। উত্তম আগন্তুক এসেছেন। তথায় পৌঁছে আমি মুসা (আলাইহিস সালাম)- কে পেলাম। জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) বললেন, ইনি মুসা (আলাইহিস সালাম) তাঁকে সালাম করুন। আমি তাঁকে সালাম দিলাম; তিনি জবাব দিলেন, এবং বললেন, নেককার ভাই ও নেককার নবীর প্রতি খোশ-আমদেদ।
আমি যখন অগ্রসর হলাম তখন তিনি কেঁদে ফেললেন। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হল, আপনি কিসের জন্য কাঁদছেন? তিনি বললেন আমি এজন্য কাঁদছি যে, আমার পর একজন যুবককে নবী বানিয়ে পাঠানো হয়েছে, যার উম্মত আমার উম্মত থেকে অধিক সংখ্যায় জান্নাতে প্রবেশ করবে। তারপর জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) আমাকে নিয়ে সপ্তম আকাশের দিকে গেলেন এবং দরজা খুলে দিতে বললেন, জিজ্ঞাসা করা হল, এ কে? তিনি উত্তর দিলেন, আমি জিবরাঈল। আবার জিজ্ঞাসা করা হল, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ (ﷺ)। জিজ্ঞাসা করা হল, তাঁকে ডেকে পাঠান হয়েছে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ। বলা হল, তাঁর প্রতি খোশ-আমদেদ। উত্তম আগমনকারীর আগমন হয়েছে। আমি সেখানে পৌঁছে ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)- কে দেখতে পেলাম। জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) বললেন, ইনি আপনার পিতা। তাঁকে সালাম করুন। আমি তাঁকে সালাম দিলাম। তিনি সালামের জবাব দিলেন এবং বললেন, নেককার পুত্র ও নেককার নবীর প্রতি খোশ-আমদেদ। তারপর আমাকে সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত উঠানো হল। দেখতে পেলাম, উহার ফল হাজার অঞ্চলের মটকার ন্যায় এবং তার পাতাগুলি হাতির কানের মত। আমাকে বলা হল, এ হল সিদরাতুল মুনতাহা (জড় জগতের শেষ প্রান্ত)।
সেখানে আমি চারটি নহর দেখতে পেলাম, যাদের দু’টি ছিল অপ্রকাশ্য দু’টি ছিল প্রকাশ্য। তখন আমি জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম)- কে জিজ্ঞাসা করলাম, এ নহরগুলো কী? অপ্রকাশ্য দু’টি হল জান্নাতের দুইটি নহর। আর প্রকাশ্য দুটি হল নীল নদী ও ফুরাত নদী। তারপর আমার সামনে ‘আল-বায়তুল মামুর’ প্রকাশ করা হল, এরপর আমার সামনে একটি শরাবের পাত্র, একটি দুধের পাত্র ও একটি মধুর পাত্র পরিবেশন করা হল। আমি দুধের পাত্রটি গ্রহণ করলাম। তখন জিবরাঈল বললেন, এ-ই হচ্ছে ফিতরাত (দ্বীন-ই-ইসলাম)। আপনি ও আপনার উম্মতগণ এর উপর প্রতিষ্ঠিত। তারপর আমার উপর দৈনিক ৫০ ওয়াক্ত সালাম ফরয করা হল।
এরপর আমি ফিরে আসলাম। মুসা (আলাইহিস সালাম)- এর সম্মুখ দিয়ে যাওয়ার সময় তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন। আল্লাহ তাআলা আপনাকে কী আদেশ করেছেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, আমকে দৈনিক পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাযের আদেশ করা হয়েছে। তিনি বললেন, আপনার উম্মত দৈনিক পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামায আদায় করতে সক্ষম হবে না। আল্লাহর কসম। আমি আপনার আগে লোকদের পরীক্ষা করেছি এবং বনী ইসরাইলের হেদায়েতের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছি। তাই আপনি আপনার প্রতিপালকের নিকট ফিরে যান এবং আপনার উম্মতের (বোঝা) হাল্কা করার জন্য আবেদন করুন।
আমি ফিরে গেলাম। ফলে আমার উপর থেকে দশ ওয়াক্ত নামায হ্রাস করে দিলেন। আমি আবার মুসা (আলাইহিস সালাম)- এর নিকট ফিরে এলাম তিনি আবার আগের মত বললেন, আমি আবার ফিরে গেলাম। ফলে আল্লাহ তাআলা আরো দশ (ওয়াক্ত নামায) কমিয়ে দিলেন। ফিরার পথে মুসা (আলাইহিস সালাম)- এর নিকট পৌঁছলে, তিনি আবার পূর্বোক্ত কথা বললেন, আমি আবার ফিরে গেলাম। আল্লাহ তাআলা আরো দশ (ওয়াক্ত) হ্রাস করলেন। আমি মুসা (আলাইহিস সালাম)-এর নিকট ফিরে এলাম। তিনি আবার ঐ কথাই বললেন আমি আবার ফিরে গেলাম। তখন আমাকে দশ (ওয়াক্ত) নামাযের আদেশ দেওয়া হয়। আমি (তা নিয়ে) ফিরে এলাম। মুসা (আলাইহিস সালাম) ঐ কথাই আগের মত বললেন। আমি আবার ফিরে গেলাম, তখন আমাকে পাঁচ (ওয়াক্ত) নামাযের আদেশ করা হয়।
তারপর মুসা (আলাইহিস সালাম)- এর নিকট ফিরে এলাম। তিনি বললেন, আপনাকে কী আদেশ দেওয়া হয়েছে। আমি বললাম, দৈনিক পাঁচ (ওয়াক্ত) নামায আদায়ের আদেশ দেওয়া হয়েছে। মুসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, আপনার উম্মত দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করতেও সক্ষম হবে না। আপনার পূর্বে আমি লোকদের পরীক্ষা করেছি। বনী ইসরাইলের হেদায়েতের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছি। আপনি আপনার রবের নিকট ফিরে যান এবং আপনার উম্মতের জন্য আরো সহজ করার আবেদন করুন।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, আমি আমার রবের নিকট (অনেকবার) আবেদন করেছি, এতে আমি লজ্জাবোধ করছি। আর আমি এতেই সন্তুষ্ট হয়েছি এবং তা মেনে নিয়েছি। এরপর তিনি বললেন, আমি যখন (মুসা (আলাইহিস সালাম)- কে অতিক্রম করে) অগ্রসর হলাম, তখন জনৈক ঘোষণাকারী ঘোষণা দিলেন, আমি আমার অবশ্য পালনীয় আদেশটি জারি করে দিলাম এবং আমার বান্দাদের উপর লঘু করে দিলাম।
باب الْمِعْرَاجِ
3887 - حَدَّثَنَا هُدْبَةُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ صَعْصَعَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَدَّثَهُمْ عَنْ لَيْلَةِ أُسْرِيَ بِهِ: " بَيْنَمَا أَنَا فِي الحَطِيمِ، - وَرُبَّمَا قَالَ: فِي الحِجْرِ - مُضْطَجِعًا إِذْ أَتَانِي آتٍ، فَقَدَّ: قَالَ: وَسَمِعْتُهُ يَقُولُ: فَشَقَّ مَا بَيْنَ هَذِهِ إِلَى هَذِهِ - فَقُلْتُ لِلْجَارُودِ وَهُوَ إِلَى جَنْبِي: مَا يَعْنِي بِهِ؟ قَالَ: مِنْ ثُغْرَةِ نَحْرِهِ إِلَى شِعْرَتِهِ، وَسَمِعْتُهُ يَقُولُ: مِنْ قَصِّهِ إِلَى شِعْرَتِهِ - فَاسْتَخْرَجَ قَلْبِي، ثُمَّ أُتِيتُ بِطَسْتٍ مِنْ ذَهَبٍ [ص:53] مَمْلُوءَةٍ إِيمَانًا، فَغُسِلَ قَلْبِي، ثُمَّ حُشِيَ ثُمَّ أُعِيدَ، ثُمَّ أُتِيتُ بِدَابَّةٍ دُونَ البَغْلِ، وَفَوْقَ الحِمَارِ أَبْيَضَ، - فَقَالَ لَهُ الجَارُودُ: هُوَ البُرَاقُ يَا أَبَا حَمْزَةَ؟ قَالَ أَنَسٌ: نَعَمْ - يَضَعُ خَطْوَهُ عِنْدَ أَقْصَى طَرْفِهِ، فَحُمِلْتُ عَلَيْهِ، فَانْطَلَقَ بِي جِبْرِيلُ حَتَّى أَتَى السَّمَاءَ الدُّنْيَا فَاسْتَفْتَحَ، فَقِيلَ مَنْ هَذَا؟ قَالَ: جِبْرِيلُ، قِيلَ: وَمَنْ مَعَكَ؟ قَالَ: مُحَمَّدٌ، قِيلَ: وَقَدْ أُرْسِلَ إِلَيْهِ؟ قَالَ: نَعَمْ، قِيلَ: مَرْحَبًا بِهِ فَنِعْمَ المَجِيءُ جَاءَ فَفَتَحَ، فَلَمَّا خَلَصْتُ فَإِذَا فِيهَا آدَمُ، فَقَالَ: هَذَا أَبُوكَ آدَمُ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ، فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ، فَرَدَّ السَّلاَمَ، ثُمَّ قَالَ: مَرْحَبًا بِالِابْنِ الصَّالِحِ، وَالنَّبِيِّ الصَّالِحِ، ثُمَّ صَعِدَ بِي حَتَّى أَتَى السَّمَاءَ الثَّانِيَةَ، فَاسْتَفْتَحَ قِيلَ: مَنْ هَذَا؟ قَالَ: جِبْرِيلُ، قِيلَ: وَمَنْ مَعَكَ؟ قَالَ: مُحَمَّدٌ، قِيلَ: وَقَدْ أُرْسِلَ إِلَيْهِ؟ قَالَ: نَعَمْ، قِيلَ: مَرْحَبًا بِهِ فَنِعْمَ المَجِيءُ جَاءَ فَفَتَحَ، فَلَمَّا خَلَصْتُ إِذَا يَحْيَى وَعِيسَى، وَهُمَا ابْنَا الخَالَةِ، قَالَ: هَذَا يَحْيَى وَعِيسَى فَسَلِّمْ عَلَيْهِمَا، فَسَلَّمْتُ فَرَدَّا، ثُمَّ قَالاَ: مَرْحَبًا بِالأَخِ الصَّالِحِ، وَالنَّبِيِّ الصَّالِحِ، ثُمَّ صَعِدَ بِي إِلَى السَّمَاءِ الثَّالِثَةِ، فَاسْتَفْتَحَ، قِيلَ: مَنْ هَذَا؟ قَالَ: جِبْرِيلُ، قِيلَ: وَمَنْ مَعَكَ؟ قَالَ: مُحَمَّدٌ، قِيلَ: وَقَدْ أُرْسِلَ إِلَيْهِ؟ قَالَ: نَعَمْ، قِيلَ: مَرْحَبًا بِهِ فَنِعْمَ المَجِيءُ جَاءَ فَفُتِحَ، فَلَمَّا خَلَصْتُ إِذَا يُوسُفُ، قَالَ: هَذَا يُوسُفُ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ، فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ، فَرَدَّ ثُمَّ قَالَ: مَرْحَبًا بِالأَخِ الصَّالِحِ وَالنَّبِيِّ الصَّالِحِ، ثُمَّ صَعِدَ بِي حَتَّى أَتَى السَّمَاءَ الرَّابِعَةَ فَاسْتَفْتَحَ، قِيلَ: مَنْ هَذَا؟ قَالَ: جِبْرِيلُ، قِيلَ: وَمَنْ مَعَكَ؟ قَالَ: مُحَمَّدٌ، قِيلَ: أَوَقَدْ أُرْسِلَ إِلَيْهِ؟ قَالَ: نَعَمْ، قِيلَ: مَرْحَبًا بِهِ، فَنِعْمَ المَجِيءُ جَاءَ فَفُتِحَ، فَلَمَّا خَلَصْتُ إِلَى إِدْرِيسَ، قَالَ: هَذَا إِدْرِيسُ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ، فَرَدَّ ثُمَّ قَالَ: مَرْحَبًا بِالأَخِ الصَّالِحِ وَالنَّبِيِّ الصَّالِحِ، ثُمَّ صَعِدَ بِي، حَتَّى أَتَى السَّمَاءَ الخَامِسَةَ فَاسْتَفْتَحَ، قِيلَ: مَنْ هَذَا؟ قَالَ: جِبْرِيلُ، قِيلَ: وَمَنْ مَعَكَ؟ قَالَ: مُحَمَّدٌ، قِيلَ: وَقَدْ أُرْسِلَ إِلَيْهِ؟ قَالَ: نَعَمْ، قِيلَ: مَرْحَبًا بِهِ، فَنِعْمَ المَجِيءُ جَاءَ، فَلَمَّا خَلَصْتُ فَإِذَا هَارُونُ، قَالَ: هَذَا هَارُونُ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ، فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ، فَرَدَّ ثُمَّ قَالَ: مَرْحَبًا بِالأَخِ الصَّالِحِ، وَالنَّبِيِّ الصَّالِحِ، ثُمَّ صَعِدَ بِي حَتَّى أَتَى السَّمَاءَ السَّادِسَةَ فَاسْتَفْتَحَ، قِيلَ: مَنْ هَذَا؟ قَالَ: جِبْرِيلُ، قِيلَ: مَنْ مَعَكَ؟ قَالَ: مُحَمَّدٌ، قِيلَ: وَقَدْ أُرْسِلَ إِلَيْهِ؟ قَالَ: نَعَمْ، قَالَ: مَرْحَبًا بِهِ، فَنِعْمَ المَجِيءُ جَاءَ، فَلَمَّا خَلَصْتُ فَإِذَا مُوسَى، قَالَ: هَذَا مُوسَى فَسَلِّمْ عَلَيْهِ فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ، فَرَدَّ ثُمَّ قَالَ: مَرْحَبًا بِالأَخِ الصَّالِحِ، وَالنَّبِيِّ الصَّالِحِ، فَلَمَّا تَجَاوَزْتُ بَكَى، قِيلَ لَهُ: مَا يُبْكِيكَ؟ قَالَ: أَبْكِي لِأَنَّ غُلاَمًا بُعِثَ بَعْدِي يَدْخُلُ الجَنَّةَ مِنْ أُمَّتِهِ أَكْثَرُ مِمَّنْ يَدْخُلُهَا مِنْ أُمَّتِي، ثُمَّ صَعِدَ بِي إِلَى [ص:54] السَّمَاءِ السَّابِعَةِ فَاسْتَفْتَحَ جِبْرِيلُ، قِيلَ: مَنْ هَذَا؟ قَالَ: جِبْرِيلُ، قِيلَ: وَمَنْ مَعَكَ؟ قَالَ: مُحَمَّدٌ، قِيلَ: وَقَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ؟ قَالَ: نَعَمْ، قَالَ: مَرْحَبًا بِهِ، فَنِعْمَ المَجِيءُ جَاءَ، فَلَمَّا خَلَصْتُ فَإِذَا إِبْرَاهِيمُ قَالَ: هَذَا أَبُوكَ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ، قَالَ: فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ فَرَدَّ السَّلاَمَ، قَالَ: مَرْحَبًا بِالِابْنِ الصَّالِحِ وَالنَّبِيِّ الصَّالِحِ، ثُمَّ رُفِعَتْ إِلَيَّ سِدْرَةُ المُنْتَهَى، فَإِذَا نَبْقُهَا مِثْلُ قِلاَلِ هَجَرَ، وَإِذَا وَرَقُهَا مِثْلُ آذَانِ الفِيَلَةِ، قَالَ: هَذِهِ سِدْرَةُ المُنْتَهَى، وَإِذَا أَرْبَعَةُ أَنْهَارٍ: نَهْرَانِ بَاطِنَانِ وَنَهْرَانِ ظَاهِرَانِ، فَقُلْتُ: مَا هَذَانِ يَا جِبْرِيلُ؟ قَالَ: أَمَّا البَاطِنَانِ فَنَهْرَانِ فِي الجَنَّةِ، وَأَمَّا الظَّاهِرَانِ فَالنِّيلُ وَالفُرَاتُ، ثُمَّ رُفِعَ لِي البَيْتُ المَعْمُورُ، ثُمَّ أُتِيتُ بِإِنَاءٍ مِنْ خَمْرٍ، وَإِنَاءٍ مِنْ لَبَنٍ، وَإِنَاءٍ مِنْ عَسَلٍ، فَأَخَذْتُ اللَّبَنَ فَقَالَ: هِيَ الفِطْرَةُ الَّتِي أَنْتَ عَلَيْهَا وَأُمَّتُكَ، ثُمَّ فُرِضَتْ عَلَيَّ الصَّلَوَاتُ خَمْسِينَ صَلاَةً كُلَّ يَوْمٍ، فَرَجَعْتُ فَمَرَرْتُ عَلَى مُوسَى، فَقَالَ: بِمَا أُمِرْتَ؟ قَالَ: أُمِرْتُ بِخَمْسِينَ صَلاَةً كُلَّ يَوْمٍ، قَالَ: إِنَّ أُمَّتَكَ لاَ تَسْتَطِيعُ خَمْسِينَ صَلاَةً كُلَّ يَوْمٍ، وَإِنِّي وَاللَّهِ قَدْ جَرَّبْتُ النَّاسَ قَبْلَكَ، وَعَالَجْتُ بَنِي إِسْرَائِيلَ أَشَدَّ المُعَالَجَةِ، فَارْجِعْ إِلَى رَبِّكَ فَاسْأَلْهُ التَّخْفِيفَ لِأُمَّتِكَ، فَرَجَعْتُ فَوَضَعَ عَنِّي عَشْرًا، فَرَجَعْتُ إِلَى مُوسَى فَقَالَ مِثْلَهُ، فَرَجَعْتُ فَوَضَعَ عَنِّي عَشْرًا، فَرَجَعْتُ إِلَى مُوسَى فَقَالَ مِثْلَهُ، فَرَجَعْتُ فَوَضَعَ عَنِّي عَشْرًا، فَرَجَعْتُ إِلَى مُوسَى فَقَالَ مِثْلَهُ، فَرَجَعْتُ فَأُمِرْتُ بِعَشْرِ صَلَوَاتٍ كُلَّ يَوْمٍ، فَرَجَعْتُ فَقَالَ مِثْلَهُ، فَرَجَعْتُ فَأُمِرْتُ بِخَمْسِ صَلَوَاتٍ كُلَّ يَوْمٍ، فَرَجَعْتُ إِلَى مُوسَى، فَقَالَ: بِمَ أُمِرْتَ؟ قُلْتُ: أُمِرْتُ بِخَمْسِ صَلَوَاتٍ كُلَّ يَوْمٍ، قَالَ: إِنَّ أُمَّتَكَ لاَ تَسْتَطِيعُ خَمْسَ صَلَوَاتٍ كُلَّ يَوْمٍ، وَإِنِّي قَدْ جَرَّبْتُ النَّاسَ قَبْلَكَ وَعَالَجْتُ بَنِي إِسْرَائِيلَ أَشَدَّ المُعَالَجَةِ، فَارْجِعْ إِلَى رَبِّكَ فَاسْأَلْهُ التَّخْفِيفَ لِأُمَّتِكَ، قَالَ: سَأَلْتُ رَبِّي حَتَّى اسْتَحْيَيْتُ، وَلَكِنِّي أَرْضَى وَأُسَلِّمُ، قَالَ: فَلَمَّا جَاوَزْتُ نَادَى مُنَادٍ: أَمْضَيْتُ فَرِيضَتِي، وَخَفَّفْتُ عَنْ عِبَادِي "
হাদীস নং: ৩৬০৯
আন্তর্জাতিক নং: ৩৮৮৮
২১৫১. মি‘রাজের ঘটনা
৩৬০৯। আল হুমাইদী (রাহঃ) .... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহ তাআলার বাণী “আর আমি যে দৃশ্য আপনাকে দেখিয়েছি তা কেবল মানুষের পরীক্ষার জন্য” এর তাফসীরে বলেন, এটি হল চোখের দেখা চাক্ষুস যা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে সে রাতে দেখানো হয়েছে। যে রাতে তাঁকে বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত ভ্রমণ করানো হয়েছিল। ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) আরো বলেন, কুরআন শরীফে যে অভিশপ্ত বৃক্ষের কথা বলা হয়েছে, তা হল যাককুম বৃক্ষ।
باب الْمِعْرَاجِ
3888 - حَدَّثَنَا الحُمَيْدِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا عَمْرٌو، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، فِي قَوْلِهِ تَعَالَى: {وَمَا جَعَلْنَا الرُّؤْيَا الَّتِي أَرَيْنَاكَ إِلَّا فِتْنَةً لِلنَّاسِ} [الإسراء: 60] قَالَ: «هِيَ رُؤْيَا عَيْنٍ، أُرِيَهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْلَةَ أُسْرِيَ بِهِ إِلَى بَيْتِ المَقْدِسِ» ، قَالَ: {وَالشَّجَرَةَ المَلْعُونَةَ فِي القُرْآنِ} [الإسراء: 60] ، قَالَ: «هِيَ شَجَرَةُ الزَّقُّومِ»