আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

الجامع الصحيح للبخاري

৪৯- নবীজী সাঃ ও সাহাবা রাঃ ; মর্যাদা ও বিবিধ ফাযায়েল - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ২০ টি

হাদীস নং: ৩৩১৮
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫৭১
২০৭৫. ইসলাম আগমনের পর নবুওয়্যাতের নিদর্শনসমূহ
৩৩১৮। আবুল ওয়ালিদ (রাহঃ) .... ইমরান ইবনে হুসাইন (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক সফরে (খায়বার যুদ্ধ থেকে প্রত্যাবর্তন কালে) তাঁরা নবী কারীম (ﷺ)- এর সাথে ছিলেন। সারারাত পথ চলার পর যখন ভোর নিকটবর্তী হল, তখন বিশ্রাম গ্রহণের জন্য থেমে গেলেন এবং গভীর নিদ্রায় ঘুমিয়ে পড়লেন। অবশেষে সূর্য উদিত হয়ে অনেক উপরে উঠে গেল (কিন্তু কেউই জাগলেন না)। (ইমরান (রাযিঃ) বলেন) যিনি সর্বপ্রথম ঘুম থেকে জাগলেন তিনি হলেন আবু বকর (রাযিঃ)। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) স্বেচ্ছায় জাগ্রত না হলে তাকেঁ জাগানো হত না। তারপর উমর (রাযিঃ) জাগলেন। আবু বকর (রাযিঃ) তাঁর শিয়রের নিকট গিয়ে বসে উচ্চস্বরে ‘আল্লাহু আকবার’ বলতে লাগলেন। অবশেষে নবী কারীম (ﷺ) জেগে উঠলেন এবং অন্যত্র চলে গিয়ে অবতরণ করে আমাদেরকে নিয়ে ফজরের নামায আদায় করলেন।
তখন এক ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে নামায আদায় না করে দূরে দাঁড়িয়ে রইল। নবী কারীম (ﷺ) যখন নামায শেষ করলেন তখন বললেন, হে অমুক, আমাদের সাথে নামায আদায় করতে কিসে বাধা দিল? লোকটি বলল, আমি অপবিত্র হয়েছি (গোসলের প্রয়োজন হয়েছিল)। নবী কারীম (ﷺ) তাকে পাক মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করার আদেশ দিলেন, তারপর সে নামায আদায় করল।
(ইমরান (রাযিঃ) বলেন), নবী কারীম (ﷺ) আমাকে অগ্রগামী দলের সাথে পাঠিয়ে দিলেন এবং আমরা ভীষণ তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়লাম। এমতাবস্থায় আমরা পথ চলছি। হঠাৎ এক উষ্ট্রারোহিণী মহিলা আমাদের নযরে পড়লো। সে পানি ভর্তি দু’টি মশকের মধ্যখানে পা ঝুলিয়ে বসে ছিল। আমরা তাকে জিজ্ঞাসা করলাম পানি কোথায়? সে বলল, (আশেপাশে) কোথায়ও পানি নেই। আমরা বললাম, তোমার ও পানির জায়গার মধ্যে দূরত্ব কতটুকু? সে বলল একদিন ও একরাতের দূরত্ব। আমরা তাকে বললাম রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর নিকট চল। সে বলল, রাসূলুল্লাহ কি? আমরা তাকে যেতে না দিয়ে তাকে নবী কারীম (ﷺ)- এর খেদমতে নিয়ে গেলাম।
নবী কারীম (ﷺ) -এর খেদমতে এসেও ঐ জাতীয় কথাবার্তাই বলল যা সে আমাদের সঙ্গে বলেছিল। তবে সে তাঁর নিকট বলল সে কয়েকজন ইয়াতীম সন্তানের মাতা। নবী কারীম (ﷺ) তাঁর মশক দু’টি নামিয়ে ফেলতে আদেশ করলেন। তারপর তিনি মশক দু’টির মুখে হাত বুলালেন। আমরা তৃষ্ণাকাতর চল্লিশজন মানুষ পানি পান করে পিপাসা নিবারণ করলাম। তারপর আমাদের সকল মশক, বাসনপত্র পানি ভর্তি করে নিলাম। তবে উটগুলোকে পানি পান করানো হয় নাই।
এত সবের পরও মহিলার মশকগুলি এত পানি ভর্তি ছিল যে তা ফেটে যাওয়ার উপক্রম হয়ে গিয়েছিল। তারপর নবী কারীম (ﷺ) বললেন, তোমাদের নিকট (খাবার জাতীয়) যা কিছু আছে উপস্থিত কর। কিছু খেজুর আর রুটির টুকরা জমা করে তাকে দেয়া হল। এ নিয়ে মহিলা আনন্দের সাথে তার গৃহে ফিরে গেল। গৃহে গিয়ে সে সকলের কাছে বলল, আমার সাক্ষাত হয়েছিল এক মহাযাদুকরের সাথে অথবা মানুষ যাকে নবী (ﷺ) বলে ধারণা করে তার সাথে। আল্লাহ্ এই মহিলার মাধ্যমে এ বস্তিবাসীকে হিদায়াত দান করলেন। মহিলাটি নিজেও ইসলাম গ্রহণ করল এবং বস্তিবাসী সকলেই ইসলাম গ্রহণে ধন্য হল।
باب عَلاَمَاتِ النُّبُوَّةِ فِي الإِسْلاَمِ
3571 - حَدَّثَنَا أَبُو الوَلِيدِ، حَدَّثَنَا سَلْمُ بْنُ زَرِيرٍ، سَمِعْتُ أَبَا رَجَاءٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عِمْرَانُ بْنُ حُصَيْنٍ، أَنَّهُمْ كَانُوا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي مَسِيرٍ، فَأَدْلَجُوا لَيْلَتَهُمْ، حَتَّى إِذَا كَانَ وَجْهُ الصُّبْحِ عَرَّسُوا، فَغَلَبَتْهُمْ أَعْيُنُهُمْ حَتَّى ارْتَفَعَتِ الشَّمْسُ، فَكَانَ أَوَّلَ مَنِ اسْتَيْقَظَ مِنْ مَنَامِهِ أَبُو بَكْرٍ، وَكَانَ لاَ يُوقَظُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ مَنَامِهِ حَتَّى يَسْتَيْقِظَ، فَاسْتَيْقَظَ عُمَرُ، فَقَعَدَ أَبُو بَكْرٍ عِنْدَ رَأْسِهِ، فَجَعَلَ يُكَبِّرُ وَيَرْفَعُ صَوْتَهُ حَتَّى اسْتَيْقَظَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَنَزَلَ وَصَلَّى بِنَا الغَدَاةَ، فَاعْتَزَلَ رَجُلٌ مِنَ القَوْمِ لَمْ يُصَلِّ مَعَنَا، فَلَمَّا انْصَرَفَ قَالَ: «يَا فُلاَنُ، مَا يَمْنَعُكَ أَنْ تُصَلِّيَ مَعَنَا» قَالَ: أَصَابَتْنِي جَنَابَةٌ، فَأَمَرَهُ أَنْ يَتَيَمَّمَ بِالصَّعِيدِ، ثُمَّ صَلَّى، وَجَعَلَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي رَكُوبٍ بَيْنَ يَدَيْهِ، وَقَدْ عَطِشْنَا عَطَشًا شَدِيدًا فَبَيْنَمَا نَحْنُ نَسِيرُ، إِذَا نَحْنُ بِامْرَأَةٍ سَادِلَةٍ رِجْلَيْهَا بَيْنَ مَزَادَتَيْنِ، فَقُلْنَا لَهَا: أَيْنَ المَاءُ؟ فَقَالَتْ: إِنَّهُ لاَ مَاءَ، فَقُلْنَا: كَمْ بَيْنَ أَهْلِكِ وَبَيْنَ المَاءِ؟ قَالَتْ: يَوْمٌ وَلَيْلَةٌ، فَقُلْنَا: انْطَلِقِي إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَتْ: وَمَا رَسُولُ اللَّهِ؟ فَلَمْ نُمَلِّكْهَا مِنْ أَمْرِهَا حَتَّى اسْتَقْبَلْنَا بِهَا النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَحَدَّثَتْهُ بِمِثْلِ [ص:192] الَّذِي حَدَّثَتْنَا، غَيْرَ أَنَّهَا حَدَّثَتْهُ أَنَّهَا مُؤْتِمَةٌ، فَأَمَرَ بِمَزَادَتَيْهَا، فَمَسَحَ فِي العَزْلاَوَيْنِ، فَشَرِبْنَا عِطَاشًا أَرْبَعِينَ رَجُلًا حَتَّى رَوِينَا، فَمَلَأْنَا كُلَّ قِرْبَةٍ مَعَنَا وَإِدَاوَةٍ، غَيْرَ أَنَّهُ لَمْ نَسْقِ بَعِيرًا، وَهِيَ تَكَادُ تَنِضُّ مِنَ المِلْءِ، ثُمَّ قَالَ: «هَاتُوا مَا عِنْدَكُمْ» فَجُمِعَ لَهَا مِنَ الكِسَرِ وَالتَّمْرِ، حَتَّى أَتَتْ أَهْلَهَا، قَالَتْ: لَقِيتُ أَسْحَرَ النَّاسِ، أَوْ هُوَ نَبِيٌّ كَمَا زَعَمُوا، فَهَدَى اللَّهُ ذَاكَ الصِّرْمَ بِتِلْكَ المَرْأَةِ، فَأَسْلَمَتْ وَأَسْلَمُوا
হাদীস নং: ৩৩১৯
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫৭২
২০৭৫. ইসলাম আগমনের পর নবুওয়্যাতের নিদর্শনসমূহ
৩৩১৯। মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার (রাহঃ) .... আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, নবী কারীম (ﷺ)- এর নিকট একটি পানির পাত্র আনা হল, তখন তিনি (মদীনার নিকটবর্তী) যাওরা নামক স্থানে অবস্থান করছিলেন। নবী কারীম (ﷺ) তাঁর হাত মোবারক ঐ পাত্রে রেখে দিলেন আর তখনই পানি আঙ্গুলির ফাঁক দিয়ে উপচে পড়তে লাগল। ঐ পানি দিয়ে উপস্থিত সকলেই উযু করে নিলেন। কাতাদা (রাহঃ) বলেন, আমি আনাস (রাযিঃ)- কে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনাদের লোক সংখ্যা কত ছিল? তিনি বললেন, আমরা তিনশ’ অথবা তিনশ’ এর কাছাকাছি ছিলাম।
باب عَلاَمَاتِ النُّبُوَّةِ فِي الإِسْلاَمِ
3572 - حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: أُتِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِإِنَاءٍ، وَهُوَ بِالزَّوْرَاءِ، فَوَضَعَ يَدَهُ فِي الإِنَاءِ، «فَجَعَلَ المَاءُ يَنْبُعُ مِنْ بَيْنِ أَصَابِعِهِ، فَتَوَضَّأَ القَوْمُ» قَالَ قَتَادَةُ: قُلْتُ لِأَنَسٍ: كَمْ كُنْتُمْ؟ قَالَ: ثَلاَثَ مِائَةٍ، أَوْ زُهَاءَ ثَلاَثِ مِائَةٍ
হাদীস নং: ৩৩২০
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫৭৩
২০৭৫. ইসলাম আগমনের পর নবুওয়্যাতের নিদর্শনসমূহ
৩৩২০। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসলামা (রাহঃ) .... আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী কারীম (ﷺ)- কে (এমন অবস্থায়) দেখতে পেলাম যখন আসরের নামাযের সময় নিকটবর্তী। সকলেই পেরেশান হয়ে পানি খুঁজছেন কিন্তু পানি পাওয়া যাচ্ছিল না। তখন নবী কারীম (ﷺ)- এর নিকট উযুর পানি (একটি পাত্রসহ আনা হল)। নবী কারীম (ﷺ) সে পাত্রে তাঁর হাত মোবারক রেখে দিলেন এবং সকলকে এ পাত্রের পানি দ্বারা উযু করতে আদেশ দিলেন। আমি দেখলাম তাঁর হাত মোবারকের নীচ হতে পানি সজোরে উথলে পড়ছিল। কাফিলার শেষ ব্যক্তিটি পর্যন্ত সকলেই এই পানি দিয়ে উযু করে নিলেন।
باب عَلاَمَاتِ النُّبُوَّةِ فِي الإِسْلاَمِ
3573 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّهُ قَالَ: رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَحَانَتْ صَلاَةُ العَصْرِ، فَالْتُمِسَ الوَضُوءُ فَلَمْ يَجِدُوهُ، فَأُتِيَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِوَضُوءٍ، فَوَضَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَهُ فِي ذَلِكَ الإِنَاءِ، فَأَمَرَ النَّاسَ أَنْ يَتَوَضَّئُوا مِنْهُ، «فَرَأَيْتُ المَاءَ يَنْبُعُ مِنْ تَحْتِ أَصَابِعِهِ، فَتَوَضَّأَ النَّاسُ حَتَّى تَوَضَّئُوا مِنْ عِنْدِ آخِرِهِمْ»
হাদীস নং: ৩৩২১
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫৭৪
২০৭৫. ইসলাম আগমনের পর নবুওয়্যাতের নিদর্শনসমূহ
৩৩২১। আব্দুর রহমান ইবনে মুবারক (রাহঃ) .... আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারীম (ﷺ) কোন এক সফরে বের হয়েছিলেন। তাঁর সাথে সাহাবায়ে কেরামও ছিলেন। তাঁরা চলতে লাগলেন তখন নামাযের সময় হয়ে গেল কিন্তু উযু করার জন্য কোথাও পানি পাওয়া গেল না। কাফিলার এক ব্যক্তি (আনাস (রাযিঃ) নিজেই) সামান্য পানিসহ একটি পেয়ালা নবী কারীম (ﷺ)- এর নিকট উপস্থিত করলেন। তিনি পেয়ালাটি হাতে নিয়ে তারই পানি দ্বারা উযু করলেন এবং তাঁর হাতের চারটি আঙ্গুল পেয়ালার মধ্যে সোজা করে ধরে রাখলেন। আর বললেন, উঠ তোমরা সকলে উযু কর। সকলেই ইচ্ছামত উযু করে নিলেন। তাদেঁর সংখ্যা সত্তর বা এর কাছাকাছি ছিল।
باب عَلاَمَاتِ النُّبُوَّةِ فِي الإِسْلاَمِ
3574 - حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مُبَارَكٍ، حَدَّثَنَا حَزْمٌ، قَالَ: سَمِعْتُ الحَسَنَ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: " خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي بَعْضِ مَخَارِجِهِ، وَمَعَهُ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِهِ، فَانْطَلَقُوا يَسِيرُونَ، فَحَضَرَتِ الصَّلاَةُ، فَلَمْ يَجِدُوا مَاءً يَتَوَضَّئُونَ، فَانْطَلَقَ رَجُلٌ مِنَ القَوْمِ، فَجَاءَ بِقَدَحٍ مِنْ مَاءٍ يَسِيرٍ، فَأَخَذَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَتَوَضَّأَ، ثُمَّ مَدَّ أَصَابِعَهُ الأَرْبَعَ عَلَى القَدَحِ ثُمَّ قَالَ: «قُومُوا فَتَوَضَّئُوا» فَتَوَضَّأَ القَوْمُ حَتَّى بَلَغُوا فِيمَا يُرِيدُونَ مِنَ الوَضُوءِ، وَكَانُوا سَبْعِينَ أَوْ نَحْوَهُ "
হাদীস নং: ৩৩২২
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫৭৫
২০৭৫. ইসলাম আগমনের পর নবুওয়্যাতের নিদর্শনসমূহ
৩৩২২। আব্দুল্লাহ ইবনে মুনীর (রাহঃ) .... আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নামাযের সময় উপস্থিত হল (কিন্তু পানির ব্যবস্থা ছিল না) যাদের বাড়ী মসজিদের নিকটে ছিল তাঁরা উযু করার জন্য নিজ নিজ বাড়ীতে চলে গেলেন। কিন্তু কিছু সংখ্যক লোক থেকে গেলেন (যাদের উযুর কোন ব্যবস্থা ছিল না)। তখন নবী কারীম (ﷺ)- এর সামনে প্রস্তর নির্মিত একটি (ছোট্ট) পাত্র আনা হল। এতে সামান্য পানি ছিল। নবী কারীম (ﷺ) ঐ পাত্রে তাঁর হাত মোবারক রাখলেন। কিন্তু পাত্রটি ছোট্ট বিধায় হাতের আঙ্গুল প্রসারিত করতে পারলেন না বরং একত্রিত করে রেখে দিলেন। তারপর উপস্থিত সকলেই ঐ পানি দ্বারাই উযু করে নিলেন। হুমাইদ (একজন রাবী) (রাহঃ) বলেন, আমি আনাস (রাযিঃ)- কে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনারা কতজন ছিলেন, তিনি বললেন, আশি জন।
باب عَلاَمَاتِ النُّبُوَّةِ فِي الإِسْلاَمِ
3575 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُنِيرٍ، سَمِعَ يَزِيدَ، أَخْبَرَنَا حُمَيْدٌ، عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: حَضَرَتِ الصَّلاَةُ فَقَامَ مَنْ كَانَ قَرِيبَ الدَّارِ مِنَ المَسْجِدِ يَتَوَضَّأُ، وَبَقِيَ قَوْمٌ، فَأُتِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمِخْضَبٍ مِنْ حِجَارَةٍ فِيهِ مَاءٌ، «فَوَضَعَ كَفَّهُ، فَصَغُرَ المِخْضَبُ أَنْ يَبْسُطَ فِيهِ كَفَّهُ، فَضَمَّ أَصَابِعَهُ فَوَضَعَهَا فِي المِخْضَبِ فَتَوَضَّأَ القَوْمُ كُلُّهُمْ جَمِيعًا» قُلْتُ: كَمْ كَانُوا؟ قَالَ: ثَمَانُونَ [ص:193] رَجُلًا
হাদীস নং: ৩৩২৩
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫৭৬
২০৭৫. ইসলাম আগমনের পর নবুওয়্যাতের নিদর্শনসমূহ
৩৩২৩। মুসা ইবনে ইসমাঈল (রাহঃ) .... জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হুদায়বিয়ায় অবস্থান কালে একদিন সাহাবায়ে কেরাম পানির পীপাসায় অত্যন্ত কাতর হয়ে পড়লেন। নবী কারীম (ﷺ)- এর সম্মুখে একটি (চামড়ার) পাত্রে অল্প পানি ছিল। তিনি উযু করলেন। তাঁর নিকট পানি আছে মনে করে সকলে ঐ দিকে ধাবিত হলেন। নবী কারীম (ﷺ) বললেন, তোমাদের কি হয়েছে? তাঁরা বললেন, আপনার সম্মুখস্থ পাত্রের সামান্য পানি ব্যতীত উযু ও পান করার মত পানি আমাদের নিকট নাই। নবী কারীম (ﷺ) ঐ পাত্রে তাঁর হাত রাখলেন। তখনই তাঁর হাত উপচিয়ে ঝর্ণা ধারার ন্যায় পানি ছুটিয়ে বের হতে লাগলো। আমরা সকলেই পানি পান করলাম আর উযু করলাম। সালিম (রাহঃ) (একজন রাবী) বলেন, আমি জাবির (রাযিঃ)- কে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনারা কতজন ছিলেন? তিনি বললেন, আমরা যদি এক লক্ষও হতাম, তবুও আমাদের জন্য পানি যথেষ্ট হত। তবে আমরা ছিলাম মাত্র পনেরশ।
باب عَلاَمَاتِ النُّبُوَّةِ فِي الإِسْلاَمِ
3576 - حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا حُصَيْنٌ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الجَعْدِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: عَطِشَ النَّاسُ يَوْمَ الحُدَيْبِيَةِ وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَيْنَ يَدَيْهِ رِكْوَةٌ فَتَوَضَّأَ، فَجَهِشَ النَّاسُ نَحْوَهُ، فَقَالَ: «مَا لَكُمْ؟» قَالُوا: لَيْسَ عِنْدَنَا مَاءٌ نَتَوَضَّأُ وَلاَ نَشْرَبُ إِلَّا مَا بَيْنَ يَدَيْكَ، فَوَضَعَ يَدَهُ فِي الرِّكْوَةِ، فَجَعَلَ المَاءُ يَثُورُ بَيْنَ أَصَابِعِهِ، كَأَمْثَالِ العُيُونِ، فَشَرِبْنَا وَتَوَضَّأْنَا قُلْتُ: كَمْ كُنْتُمْ؟ قَالَ: لَوْ كُنَّا مِائَةَ أَلْفٍ لَكَفَانَا، كُنَّا خَمْسَ عَشْرَةَ مِائَةً
হাদীস নং: ৩৩২৪
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫৭৭
২০৭৫. ইসলাম আগমনের পর নবুওয়্যাতের নিদর্শনসমূহ
৩৩২৪। মালিক ইবনে ইসমাঈল (রাহঃ) .... বারা (ইবনে আযিব) (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী কারীম (ﷺ)- এর সাথে হুদায়বিয়ায় চৌদ্দশ লোক ছিলাম। হুদায়বিয়া একটি কূপ, আমরা তা হতে পানি এমনভাবে উঠিয়ে নিলাম যে তাতে এক ফোঁটা পানিও বাকী থাকলো না। নবী কারীম (ﷺ) কূপের কিনারায় বসে কিছু পানি আনার জন্য আদেশ করলেন। (সামান্য পানি আনা হল) তিনি কুলি করে ঐ পানি কূপে নিক্ষেপ করলেন। কিছু সময় অপেক্ষা করলাম। তখন কূপটি পানিতে ভরে গেল। আমরা পান করে তৃপ্তি লাভ করলাম, আমাদের উটগুলোও পানি পানে তৃপ্ত হল। অথবা বলেছেন আমাদের উটগুলো পানি পান করে প্রত্যাবর্তন করল।
باب عَلاَمَاتِ النُّبُوَّةِ فِي الإِسْلاَمِ
3577 - حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ البَرَاءِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: كُنَّا يَوْمَ الحُدَيْبِيَةِ أَرْبَعَ عَشْرَةَ مِائَةً وَالحُدَيْبِيَةُ بِئْرٌ، فَنَزَحْنَاهَا، حَتَّى لَمْ نَتْرُكْ فِيهَا قَطْرَةً، فَجَلَسَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى شَفِيرِ البِئْرِ «فَدَعَا بِمَاءٍ فَمَضْمَضَ وَمَجَّ فِي البِئْرِ» فَمَكَثْنَا غَيْرَ بَعِيدٍ ثُمَّ اسْتَقَيْنَا حَتَّى رَوِينَا، وَرَوَتْ، أَوْ صَدَرَتْ رَكَائِبُنَا
হাদীস নং: ৩৩২৫
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫৭৮
২০৭৫. ইসলাম আগমনের পর নবুওয়্যাতের নিদর্শনসমূহ
৩৩২৫। আব্দুল্লাহ ইবনে ইউসুফ (রাহঃ) .... আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবু তালহা (রাযিঃ) তদীয় (পত্নী) উম্মে সুলায়মকে বললেন, আমি নবী কারীম (ﷺ)- এর কন্ঠস্বর দুর্বল শুনেছি। আমি তাঁর মধ্যে ক্ষুধা বুঝতে পেরেছি। তোমার নিকট খাবার কিছু আছে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ আছে। এই বলে তিনি কয়েকটা যবের রুটি বের করলেন। তারপর তাঁর একখানা ওড়না বের করে এর কিয়দংশ দিয়ে রুটিগুলো মুড়ে আমার হাতে গোপন করে রেখে দিলেন ও ওড়নার অপর অংশ আমার শরীর জড়িয়ে দিলেন এবং আমাকে নবী কারীম (ﷺ)- এর খেদমতে পাঠালেন।
রাবী আনাস বলেন, আমি তাঁর নিকট গেলাম। ঐ সময় তিনি কতিপয় লোকসহ মসজিদে অবস্থান করছিলেন। আমি গিয়ে তাদের সম্মুখে দাঁড়ালাম। নবী কারীম (ﷺ) আমাকে দেখে বললেন, তোমাকে আবু তালহা পাঠিয়েছে? আমি বললাম, জি হ্যাঁ। নবী কারীম (ﷺ) বললেন, খাওয়ার দাওয়াত দিয়ে পাঠিয়েছে? আমি বললাম, জি হ্যাঁ। তখন নবী কারীম (ﷺ) সঙ্গীদেরকে বললেন, চলো, আবু তালহা আমাদেরকে দাওয়াত করেছে।
আমি তাঁদের আগেই চলে গিয়ে আবু তালহা (রাযিঃ)- কে নবী কারীম (ﷺ)- এর আগমন বার্তা শোনালাম। ইহা শুনে আবু তালহা (রাযিঃ) বলেন, হে উম্মে সুলাইম, নবী কারীম (ﷺ) তাঁর সঙ্গী সাথীদেরকে নিয়ে আসছেন। তাঁদেরকে খাওয়ানোর মত কিছু আমাদের নিকট নেই। উম্মে সুলাইম (রাযিঃ) বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন।
আবু তালহা (রাযিঃ) তাঁদেরকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য বাড়ী হতে কিছুদূর অগ্রসর হলেন এবং নবী কারীম (ﷺ)- এর সাক্ষাত করলেন এবং নবী কারীম (ﷺ) আবু তালহাকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর ঘরে আসলেন, আর বললেন, হে উম্মে সুলাইম। তোমার নিকট যা কিছু আছে নিয়ে এসো। তিনি যবের ঐ রুটিগুলো হাযির করলেন এবং তাঁর নির্দেশে রুটিগুলো টুকরা টুকরা করা হল। উম্মে সুলাইম ঘিয়ের পাত্র ঝেড়ে মুছে কিছু ঘি বের করে তা তরকারী স্বরূপ পেশ করলেন। এরপর নবী কারীম (ﷺ) দোআ পাঠ করে তাতে ফুঁ দিলেন এবং দশজনকে নিয়ে আসতে বললেন। তাঁরা দশজন আসলেন এবং রুটি খেয়ে পরিতৃপ্ত হয়ে বেরিয়ে গেলেন। তারপর আরো দশজনকে আসতে বলা হল। তাঁরাও আসলেন এবং পেটভরে খেয়ে নিলেন। অনুরূপভাবে সমবেত সকলেই রুটি খেয়ে পরিতৃপ্ত হলেন। লোকজন সর্বমোট সত্তর বা আশিজন ছিলেন।
باب عَلاَمَاتِ النُّبُوَّةِ فِي الإِسْلاَمِ
3578 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ: قَالَ أَبُو طَلْحَةَ لِأُمِّ سُلَيْمٍ لَقَدْ سَمِعْتُ صَوْتَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ضَعِيفًا، أَعْرِفُ فِيهِ الجُوعَ، فَهَلْ عِنْدَكِ مِنْ شَيْءٍ؟ قَالَتْ: نَعَمْ، فَأَخْرَجَتْ أَقْرَاصًا مِنْ شَعِيرٍ، ثُمَّ أَخْرَجَتْ خِمَارًا لَهَا، فَلَفَّتِ الخُبْزَ بِبَعْضِهِ، ثُمَّ دَسَّتْهُ تَحْتَ يَدِي وَلاَثَتْنِي بِبَعْضِهِ، ثُمَّ أَرْسَلَتْنِي إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: فَذَهَبْتُ بِهِ، فَوَجَدْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي المَسْجِدِ، وَمَعَهُ النَّاسُ، فَقُمْتُ عَلَيْهِمْ، فَقَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «آرْسَلَكَ أَبُو طَلْحَةَ» فَقُلْتُ: نَعَمْ، قَالَ: «بِطَعَامٍ» فَقُلْتُ: نَعَمْ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِمَنْ مَعَهُ: «قُومُوا» فَانْطَلَقَ وَانْطَلَقْتُ بَيْنَ أَيْدِيهِمْ، حَتَّى جِئْتُ أَبَا طَلْحَةَ فَأَخْبَرْتُهُ، فَقَالَ أَبُو طَلْحَةَ: يَا أُمَّ سُلَيْمٍ قَدْ جَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالنَّاسِ، وَلَيْسَ عِنْدَنَا مَا نُطْعِمُهُمْ؟ فَقَالَتْ: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ، فَانْطَلَقَ أَبُو طَلْحَةَ حَتَّى لَقِيَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَقْبَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَبُو طَلْحَةَ مَعَهُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «هَلُمِّي يَا أُمَّ سُلَيْمٍ، مَا عِنْدَكِ» فَأَتَتْ بِذَلِكَ الخُبْزِ، فَأَمَرَ بِهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَفُتَّ، وَعَصَرَتْ أُمُّ سُلَيْمٍ عُكَّةً فَأَدَمَتْهُ، ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيهِ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَقُولَ، ثُمَّ قَالَ: «ائْذَنْ لِعَشَرَةٍ» فَأَذِنَ لَهُمْ، فَأَكَلُوا حَتَّى شَبِعُوا ثُمَّ خَرَجُوا، ثُمَّ قَالَ: «ائْذَنْ لِعَشَرَةٍ» فَأَذِنَ لَهُمْ، فَأَكَلُوا حَتَّى شَبِعُوا ثُمَّ خَرَجُوا، ثُمَّ قَالَ: «ائْذَنْ لِعَشَرَةٍ» [ص:194] فَأَذِنَ لَهُمْ، فَأَكَلُوا حَتَّى شَبِعُوا ثُمَّ خَرَجُوا، ثُمَّ قَالَ: «ائْذَنْ لِعَشَرَةٍ» فَأَكَلَ القَوْمُ كُلُّهُمْ وَشَبِعُوا، وَالقَوْمُ سَبْعُونَ أَوْ ثَمَانُونَ رَجُلًا "
হাদীস নং: ৩৩২৬
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫৭৯
২০৭৫. ইসলাম আগমনের পর নবুওয়্যাতের নিদর্শনসমূহ
৩৩২৬। মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না (রাহঃ) .... আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা (সাহাবাগণ) অলোকিক ঘটনাসমূহকে বরকত ও কল্যাণকর মনে করতাম আর তোমরা (যারা সাহাবী নও) ঐ সব ঘটনাকে ভীতিকর মনে কর। আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর সাথে কোন এক সফরে ছিলাম। আমাদের পানি কমিয়ে আসল। তখন নবী কারীম (ﷺ) বললেন, অতিরিক্ত পানি তালাশ কর। (তালাশের পর) সাহাবাগণ একটি পাত্র নিয়ে আসলেন যার ভেতর সামান্য পানি ছিল। নবী কারীম (ﷺ) তাঁর হাত মোবারক ঐ পাত্রের ভেতর ঢুকিয়ে দিলেন এবং ঘোষণা করলেন, বরকতময় পানি নিতে সকলেই এসো। এ বরকত আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে। তখন আমি দেখতে পেলাম রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে পানি উপচে পড়ছে। সময় বিশেষে আমরা খাদ্য-দ্রব্যের তাসবীহ পাঠ শুনতাম আর তা খাওয়া হতো।
باب عَلاَمَاتِ النُّبُوَّةِ فِي الإِسْلاَمِ
3579 - حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ المُثَنَّى، حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ الزُّبَيْرِيُّ، حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: كُنَّا نَعُدُّ الآيَاتِ بَرَكَةً، وَأَنْتُمْ تَعُدُّونَهَا تَخْوِيفًا، كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي سَفَرٍ، فَقَلَّ المَاءُ، فَقَالَ: «اطْلُبُوا فَضْلَةً مِنْ مَاءٍ» فَجَاءُوا بِإِنَاءٍ فِيهِ مَاءٌ قَلِيلٌ فَأَدْخَلَ يَدَهُ فِي الإِنَاءِ، ثُمَّ قَالَ: «حَيَّ عَلَى الطَّهُورِ المُبَارَكِ، وَالبَرَكَةُ مِنَ اللَّهِ» فَلَقَدْ رَأَيْتُ المَاءَ يَنْبُعُ مِنْ بَيْنِ أَصَابِعِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَقَدْ كُنَّا نَسْمَعُ تَسْبِيحَ الطَّعَامِ وَهُوَ يُؤْكَلُ
হাদীস নং: ৩৩২৭
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫৮০
২০৭৫. ইসলাম আগমনের পর নবুওয়্যাতের নিদর্শনসমূহ
৩৩২৭। আবু নু‘আইম (রাহঃ) .... জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, তাঁর পিতা (আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) উহুদ যুদ্ধে) ঋণ রেখে শাহাদাত বরণ করেন। তখন আমি নবী কারীম (ﷺ)- এর দরবারে উপস্থিত হয়ে বললাম, আমার পিতা অনেক ঋণ রেখে গেছেন। আমার নিকট বাগানের উৎপন্ন কিছু খেজুর ব্যতীত অন্য কোন সম্পদ নেই। কয়েক বছরের উৎপাদিত খেজুর একত্রিত করলেও তদ্বারা তাঁর ঋণ শোধ হবে না। আপনি দয়া করে আমার সাথে চলুন, যাতে পাওনাদারগণ (আপনাকে দেখে) আমার প্রতি কঠোর মনোভাব গ্রহণ না করে। নবী কারীম (ﷺ) তাঁর সাথে গেলেন এবং খেজুরের একটি স্তুপের চারদিক ঘুরে দু'আ করলেন। এরপর অন্য স্তুপের নিকটে গেলেন এবং এর নিকটে বসে পড়লেন এবং জাবির (রাযিঃ)- কে বললেন, খেজুর বের করে দিতে থাক। অতঃপর সকল পাওনাদারের প্রাপ্য শোধ করে দিলেন অথচ পাওনাদারদের যা দিলেন তাঁর সমপরিমাণ রয়ে গেল।
باب عَلاَمَاتِ النُّبُوَّةِ فِي الإِسْلاَمِ
3580 - حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا زَكَرِيَّاءُ، قَالَ: حَدَّثَنِي عَامِرٌ، قَالَ: حَدَّثَنِي جَابِرٌ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّ أَبَاهُ تُوُفِّيَ وَعَلَيْهِ دَيْنٌ، فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ: إِنَّ أَبِي تَرَكَ عَلَيْهِ دَيْنًا، وَلَيْسَ عِنْدِي إِلَّا مَا يُخْرِجُ نَخْلُهُ، وَلاَ يَبْلُغُ مَا يُخْرِجُ سِنِينَ مَا عَلَيْهِ، فَانْطَلِقْ مَعِي لِكَيْ لاَ يُفْحِشَ عَلَيَّ الغُرَمَاءُ، فَمَشَى حَوْلَ بَيْدَرٍ مِنْ بَيَادِرِ التَّمْرِ فَدَعَا، ثَمَّ آخَرَ، ثُمَّ جَلَسَ عَلَيْهِ، فَقَالَ: «انْزِعُوهُ» فَأَوْفَاهُمُ الَّذِي لَهُمْ وَبَقِيَ مِثْلُ مَا أَعْطَاهُمْ
হাদীস নং: ৩৩২৮
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫৮১
২০৭৫. ইসলাম আগমনের পর নবুওয়্যাতের নিদর্শনসমূহ
৩৩২৮। মুসা ইবনে ইসমা‘ঈল (রাহঃ) .... আব্দুর রহমান ইবনে আবু বকর (রাযিঃ) বর্ণনা করেন, আসহাবে সুফফায় কতিপয় অসহায় দরিদ্র লোক ছিলেন। নবী কারীম (ﷺ) একবার বললেন, যার ঘরে দু’জনের পরিমাণ খাবার আছে সে যেন এদের মধ্য থেকে তৃতীয় একজন নিয়ে যায়। আর যার ঘরে চার জনের পরিমাণ খাবার আছে সে এদের মধ্য থেকে পঞ্চম একজন বা ষষ্ঠ একজনকে নিয়ে যায় অথবা নবী কারীম (ﷺ) যা বলেছেন। আবু বকর (রাযিঃ) তিনজন নিলেন। আর নবী কারীম (ﷺ) নিলেন দশজন। এবং আবু বকর (রাযিঃ) তিনজন। আব্দুর রহমান (রাযিঃ) বলেন, (আমরা বাড়ীতে ছিলাম তিনজন)। আমি আমার আব্বা ও আম্মা। আবু উসমান (রাযিঃ) বলেন, আমার মনে নাই আব্দুর রহমান (রাযিঃ) কি ইহাও বলেছিলেন যে আমার স্ত্রী ও আমাদের পিতা-পুত্রের একজন গৃহভৃত্যও ছিল।
আবু বকর (রাযিঃ) ঐ রাতে নবীজীর বাড়ীতেই খেয়ে নিলেন এবং ইশার নামায পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করলেন। ইশার নামাযের পর পুনরায় তিনি নবী কারীম (ﷺ)- এর গৃহে গমন করলেন। নবী কারীম (ﷺ)- এর রাতের আহার গ্রহণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তথায়ই অবস্থান করলেন। অনেক রাতের পর গৃহে ফিরলেন। তখন তাঁর স্ত্রী তাঁকে বললেন, মেহমান পাঠিয়ে দিয়ে আপনি এতক্ষণ কোথায় ছিলেন? তিনি বললেন, তাদের কি এখনও রাতের আহার দাওনি? স্ত্রী বললেন, আপনার না আসা পর্যন্ত তারা আহার খেতে রাযী হননি। তাদেরকে ঘরের লোকজন আহার দিয়েছিল। কিন্তু তাদের অসম্মতির নিকট আমাদের লোকজনকে হার মানতে হয়েছে। আব্দুর রহমান (রাযিঃ) বলেন, আমি (অবস্থা বেগতিক দেখে) তাড়াতাড়ি কেটে পড়লাম। আবু বকর (রাযিঃ) (আমাকে উদ্দেশ্য করে) বললেন, ওরে বেউকুফ! আহম্মক! আরো কিছু কড়া কথা বলে ফেললেন।
তারপর মেহমান পক্ষকে সম্বোধন করে বললেন, আপনারা খেয়ে নিন। আমি কিছুতেই খাবো না। (এর মধ্যে আরো কিছু কথা কাটাকাটি হয়ে গেল অবশেষে সকলেই খেতে বসলেন।) আব্দুর রহমান (রাযিঃ) বলেন, আল্লাহর কসম, আমরা যখন গ্রাস তুলে নেই তখন দেখি পাত্রের খাবার অনেক বেড়ে যায়। খাওয়ার শেষে আবু বকর (রাযিঃ) লক্ষ করলেন যে, পরিতৃপ্তভাবে আহারের পরও পাত্রে খাবার পূর্বাপেক্ষা অধিক রয়ে গেছে। তখন স্ত্রীকে লক্ষ করে বললেন, হে বনী ফিরাস গোত্রের বোন, ব্যাপার কি? তিনি বললেন, হে আমার নয়নমণি। খাদ্যের পরিমাণ এখন তিনগুণের চেয়েও অধিক রয়েছে।
আবু বকর (রাযিঃ) তা থেকে কয়েক গ্রাস খেলেন এবং বললেন, আমার কসম শয়তানের প্ররোচনায় ছিল। তারপর অবশিষ্ট খাদ্য নবী কারীর (ﷺ)- এর নিকট নিয়ে গেলেন এবং ভোর পর্যন্ত ঐ খাদ্য নবী কারীর (ﷺ)- এর হেফাযতে রইল। রাবী বলেন, আমাদের (মুসলমানদের) ও অন্য একটি গোত্রের মধ্যে সন্ধি ছিল। চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়াতে তাদের মোকাবেলা করার জন্য আমাদের বার জনকে নেতা মনোনীত করা হল। প্রত্যেক নেতার অধীনে আবার কয়েকজন করে লোক ছিল। আল্লাহই ভালো জানেন তাদের প্রত্যেকের সাথে কতজন করে দেয়া হয়েছিল! আব্দুর রহমান (রাযিঃ) বলেন, এদের প্রত্যেকেই এ খাবার থেকে খেয়ে নিলেন। অথবা তিনি যা বলেছেন।
باب عَلاَمَاتِ النُّبُوَّةِ فِي الإِسْلاَمِ
3581 - حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ، عَنْ أَبِيهِ، حَدَّثَنَا أَبُو عُثْمَانَ، أَنَّهُ حَدَّثَهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي بَكْرٍ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا أَنَّ أَصْحَابَ الصُّفَّةِ كَانُوا أُنَاسًا فُقَرَاءَ، وَأَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَرَّةً: «مَنْ كَانَ عِنْدَهُ طَعَامُ اثْنَيْنِ فَلْيَذْهَبْ بِثَالِثٍ، وَمَنْ كَانَ عِنْدَهُ طَعَامُ أَرْبَعَةٍ فَلْيَذْهَبْ بِخَامِسٍ أَوْ سَادِسٍ» أَوْ كَمَا قَالَ: وَأَنَّ أَبَا بَكْرٍ جَاءَ بِثَلاَثَةٍ، وَانْطَلَقَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعَشَرَةٍ، وَأَبُو بَكْرٍ ثَلاَثَةً، قَالَ: فَهُوَ أَنَا وَأَبِي وَأُمِّي، وَلاَ أَدْرِي هَلْ قَالَ: امْرَأَتِي وَخَادِمِي، بَيْنَ بَيْتِنَا وَبَيْنَ بَيْتِ أَبِي بَكْرٍ، وَأَنَّ أَبَا بَكْرٍ تَعَشَّى عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ لَبِثَ حَتَّى صَلَّى العِشَاءَ، ثُمَّ رَجَعَ فَلَبِثَ حَتَّى تَعَشَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَجَاءَ بَعْدَ مَا مَضَى مِنَ اللَّيْلِ مَا شَاءَ اللَّهُ، قَالَتْ لَهُ امْرَأَتُهُ: مَا حَبَسَكَ عَنْ أَضْيَافِكَ أَوْ ضَيْفِكَ؟، قَالَ: أَوَعَشَّيْتِهِمْ؟ قَالَتْ: أَبَوْا حَتَّى تَجِيءَ، قَدْ عَرَضُوا عَلَيْهِمْ فَغَلَبُوهُمْ، فَذَهَبْتُ فَاخْتَبَأْتُ، فَقَالَ يَا غُنْثَرُ، فَجَدَّعَ وَسَبَّ، وَقَالَ: كُلُوا، وَقَالَ: لاَ أَطْعَمُهُ أَبَدًا، قَالَ: وَايْمُ اللَّهِ، مَا كُنَّا نَأْخُذُ مِنَ اللُّقْمَةِ إِلَّا رَبَا مِنْ أَسْفَلِهَا أَكْثَرُ مِنْهَا حَتَّى شَبِعُوا، وَصَارَتْ أَكْثَرَ مِمَّا كَانَتْ قَبْلُ، فَنَظَرَ أَبُو بَكْرٍ فَإِذَا شَيْءٌ أَوْ أَكْثَرُ، قَالَ لِامْرَأَتِهِ: يَا أُخْتَ بَنِي فِرَاسٍ، قَالَتْ [ص:195]: لاَ وَقُرَّةِ عَيْنِي، لَهِيَ الآنَ أَكْثَرُ مِمَّا قَبْلُ بِثَلاَثِ مَرَّاتٍ، فَأَكَلَ مِنْهَا أَبُو بَكْرٍ وَقَالَ: إِنَّمَا كَانَ الشَّيْطَانُ، يَعْنِي يَمِينَهُ، ثُمَّ أَكَلَ مِنْهَا لُقْمَةً، ثُمَّ حَمَلَهَا إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَصْبَحَتْ عِنْدَهُ، وَكَانَ بَيْنَنَا وَبَيْنَ قَوْمٍ عَهْدٌ، فَمَضَى الأَجَلُ فَتَفَرَّقْنَا اثْنَا عَشَرَ رَجُلًا، مَعَ كُلِّ رَجُلٍ مِنْهُمْ أُنَاسٌ، اللَّهُ أَعْلَمُ كَمْ مَعَ كُلِّ رَجُلٍ، غَيْرَ أَنَّهُ بَعَثَ مَعَهُمْ، قَالَ: أَكَلُوا مِنْهَا أَجْمَعُونَ، أَوْ كَمَا قَالَ
হাদীস নং: ৩৩২৯
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫৮২
২০৭৫. ইসলাম আগমনের পর নবুওয়্যাতের নিদর্শনসমূহ
৩৩২৯। মুসাদ্দাদ (রাহঃ) .... আনাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর যুগে একবার মদীনাবাসী অনাবৃষ্টির দরুন (দুর্ভিক্ষে) পতিত হল। ঐ সময় কোন এক জুমু'আর দিনে নবী কারীম (ﷺ) খুতবা দিয়েছিলেন, তখন এক ব্যক্তি উঠে দাঁড়ালো, এবং বলল ইয়া রাসূলাল্লাহ! (অনাবৃষ্টির কারণে) ঘোড়াগুলো নষ্ট হয়ে গেল, বকরীগুলো ধ্বংস হয়ে গেল। আল্লাহর নিকটে বৃষ্টির জন্য দুআ করুন। নবী কারীম (ﷺ) তৎক্ষণাৎ দু’হাত উঠিয়ে দুআ করলেন। আনাস (রাযিঃ) বলেন, তখন আকাশ স্ফটিক সদৃশ্য নির্মল ছিল। হঠাৎ মেঘ সৃষ্টিকারী বাতাস বইতে শুরু করল এবং মেঘ ঘনীভূত হয়ে গেল। তারপর শুরু হল প্রবল বারিপাত যেন আকাশ তার দ্বার উন্মুক্ত করে দিল। আমরা (নামায শেষে মসজিদ থেকে বের হয়ে) পানি ভেঙ্গে বাড়ি পৌঁছলাম।
পরবর্তী শুক্রবার পর্যন্ত অনবরত বৃষ্টিপাত হল। ঐ শুক্রবারে জুমু'আর সময় ঐ ব্যক্তি বা অন্য কেউ দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! (অতিবৃষ্টির কারণে) গৃহগুলো বিধ্বস্ত হয়ে গেল। বৃষ্টি বন্ধের জন্য আল্লাহর নিকটে দুআ করুন। তখন নবী (ﷺ) (তাঁর কথা শুনে) মুচকি হাঁসলেন এবং বললেন, (হে আল্লাহ!) আমাদের আশে পাশে বৃষ্টি হউক। আমাদের উপর নয়। (আনাস (রাযিঃ) বলেন) তখন আমি দেখলাম, মদীনার আকাশ থেকে মেঘমালা চতুর্দিক সরে গেছে আর মদীনা (যেন মেঘমুক্ত হয়ে) মুকুটের ন্যায় শোভা পাচ্ছে।
باب عَلاَمَاتِ النُّبُوَّةِ فِي الإِسْلاَمِ
3582 - حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ عَبْدِ العَزِيزِ، عَنْ أَنَسٍ، وَعَنْ يُونُسَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: أَصَابَ أَهْلَ المَدِينَةِ قَحْطٌ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَبَيْنَا هُوَ يَخْطُبُ يَوْمَ جُمُعَةٍ، إِذْ قَامَ رَجُلٌ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلَكَتِ الكُرَاعُ، هَلَكَتِ الشَّاءُ، فَادْعُ اللَّهَ يَسْقِينَا، «فَمَدَّ يَدَيْهِ وَدَعَا» ، قَالَ أَنَسٌ: وَإِنَّ السَّمَاءَ لَمِثْلُ الزُّجَاجَةِ، فَهَاجَتْ رِيحٌ أَنْشَأَتْ سَحَابًا، ثُمَّ اجْتَمَعَ ثُمَّ أَرْسَلَتِ السَّمَاءُ عَزَالِيَهَا، فَخَرَجْنَا نَخُوضُ المَاءَ حَتَّى أَتَيْنَا مَنَازِلَنَا، فَلَمْ نَزَلْ نُمْطَرُ إِلَى الجُمُعَةِ الأُخْرَى، فَقَامَ إِلَيْهِ ذَلِكَ الرَّجُلُ أَوْ غَيْرُهُ، فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ: تَهَدَّمَتِ البُيُوتُ فَادْعُ اللَّهَ يَحْبِسْهُ، فَتَبَسَّمَ، ثُمَّ قَالَ: «حَوَالَيْنَا وَلاَ عَلَيْنَا» فَنَظَرْتُ إِلَى السَّحَابِ تَصَدَّعَ حَوْلَ المَدِينَةِ كَأَنَّهُ إِكْلِيلٌ
হাদীস নং: ৩৩৩০
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫৮৩
২০৭৫. ইসলাম আগমনের পর নবুওয়্যাতের নিদর্শনসমূহ
৩৩৩০। মুহাম্মাদ ইবনে মুসান্না (রাহঃ) .... ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারীম (ﷺ) (মসজিদে) খেজুরের একটি কাণ্ডের সাথে (হেলান দিয়ে) খুতবা প্রদান করতেন। যখন মিম্বার তৈরী করে দেয়া হল, তখন তিনি মিম্বারে উঠে খুতবা দিতে লাগলেন। কাণ্ডটি তখন (নবী কারীম (ﷺ)- এর বিরহে) কাঁদতে শুরু করল। নবী কারীম (ﷺ) কাণ্ডটির নিকটে গিয়ে হাত বুলাতে লাগলেন। (তখন স্তম্ভটি শান্ত হল।) উপরোক্ত হাদীসটি আব্দুল হামীদ ও আবু আসিম (রাহঃ) .... ইবনে উমর (রাযিঃ) সূত্রে .... নবী কারীম (ﷺ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
باب عَلاَمَاتِ النُّبُوَّةِ فِي الإِسْلاَمِ
3583 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ المُثَنَّى، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ كَثِيرٍ أَبُو غَسَّانَ، حَدَّثَنَا أَبُو حَفْصٍ وَاسْمُهُ عُمَرُ بْنُ العَلاَءِ، أَخُو أَبِي عَمْرِو بْنِ العَلاَءِ، قَالَ: سَمِعْتُ نَافِعًا، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ إِلَى جِذْعٍ، فَلَمَّا اتَّخَذَ المِنْبَرَ تَحَوَّلَ إِلَيْهِ فَحَنَّ الجِذْعُ فَأَتَاهُ فَمَسَحَ يَدَهُ عَلَيْهِ " وَقَالَ عَبْدُ الحَمِيدِ: أَخْبَرَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ، أَخْبَرَنَا مُعَاذُ بْنُ العَلاَءِ، عَنْ نَافِعٍ بِهَذَا، وَرَوَاهُ أَبُو عَاصِمٍ، عَنْ ابْنِ أَبِي رَوَّادٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
হাদীস নং: ৩৩৩১
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫৮৪
২০৭৫. ইসলাম আগমনের পর নবুওয়্যাতের নিদর্শনসমূহ
৩৩৩১। আবু নু‘আইম (রাহঃ) .... জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, নবী কারীম (ﷺ) একটি বৃক্ষের উপর কিংবা একটি খেজুর বৃক্ষের কাণ্ডের উপর (হেলান দিয়ে) শুক্রবারে খুতবা প্রদানের জন্য দাঁড়াতেন। এমতাবস্থায় একজন আনসারী মহিলা অথবা একজন পুরুষ বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার জন্য একটি মিম্বার তৈরী করে দেব কি? নবী কারীম (ﷺ) বললেন, তোমাদের ইচ্ছা হলে দিতে পার। অতঃপর তাঁরা একটি কাঠের মিম্বার তৈরী করে দিলেন। যখন শুক্রবার এল নবী কারীম (ﷺ) মিম্বারে আসন গ্রহণ করলেন, তখন কাণ্ডটি শিশুর ন্যায় চিৎকার করে কাঁদতে লাগল। নবী কারীম (ﷺ) মিম্বার হতে নেমে এসে উহাকে জড়িয়ে ধরলেন। কিন্তু কাণ্ডটি (আবেগ আপ্লুত কণ্ঠে) শিশুর মত আরো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগল।রাবী বলেন, কিন্তু কাণ্ডটি এজন্য কাঁদছিল যেহেতু সে খুতবাকালে অনেক যিক্‌র শুনতে পেত।
باب عَلاَمَاتِ النُّبُوَّةِ فِي الإِسْلاَمِ
3584 - حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَاحِدِ بْنُ أَيْمَنَ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبِي، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: كَانَ يَقُومُ يَوْمَ الجُمُعَةِ إِلَى شَجَرَةٍ أَوْ نَخْلَةٍ، فَقَالَتِ امْرَأَةٌ مِنَ الأَنْصَارِ، أَوْ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَلاَ نَجْعَلُ لَكَ مِنْبَرًا؟ قَالَ: «إِنْ شِئْتُمْ» ، فَجَعَلُوا لَهُ مِنْبَرًا، فَلَمَّا كَانَ يَوْمَ الجُمُعَةِ دُفِعَ إِلَى المِنْبَرِ، فَصَاحَتِ النَّخْلَةُ صِيَاحَ الصَّبِيِّ، ثُمَّ نَزَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَضَمَّهُ إِلَيْهِ، تَئِنُّ أَنِينَ الصَّبِيِّ الَّذِي يُسَكَّنُ. قَالَ: «كَانَتْ تَبْكِي عَلَى مَا كَانَتْ تَسْمَعُ مِنَ الذِّكْرِ عِنْدَهَا»
হাদীস নং: ৩৩৩২
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫৮৫
২০৭৫. ইসলাম আগমনের পর নবুওয়্যাতের নিদর্শনসমূহ
৩৩৩২। ইসমাঈল (রাহঃ) .... জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) বর্ণনা করেন যে, প্রথম দিকে খেজুরের কয়েকটি কাণ্ডের উপর মসজিদে নববীর ছাদ করা হয়েছিল। নবী কারীম (ﷺ) যখনই খুতবা প্রদানের ইচ্ছা প্রদান করতেন, তখন একটি কাণ্ডে হেলান দিয়ে দাঁড়াতেন। অতঃপর তাঁর জন্য মিম্বার তৈরী করে দেওয়া হলে তিনি সেই মিম্বারে উঠে দাঁড়াতেন। ঐ সময় আমরা কাণ্ডটির ভেতর থেকে দশ মাসের গর্ভবতী উষ্ট্রীর স্বরের ন্যায় কান্নার আওয়াজ শুনলাম। অবশেষে নবী কারীম (ﷺ) তাঁর নিকটে এসে তাকে হাত বুলিয়ে সোহাগ করলেন। তারপর কাণ্ডটি শান্ত হল।
باب عَلاَمَاتِ النُّبُوَّةِ فِي الإِسْلاَمِ
3585 - حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَخِي، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بِلاَلٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي حَفْصُ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَنَسِ [ص:196] بْنِ مَالِكٍ، أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، يَقُولُ: «كَانَ المَسْجِدُ مَسْقُوفًا عَلَى جُذُوعٍ مِنْ نَخْلٍ، فَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا خَطَبَ يَقُومُ إِلَى جِذْعٍ مِنْهَا، فَلَمَّا صُنِعَ لَهُ المِنْبَرُ وَكَانَ عَلَيْهِ، فَسَمِعْنَا لِذَلِكَ الجِذْعِ صَوْتًا كَصَوْتِ العِشَارِ، حَتَّى جَاءَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَوَضَعَ يَدَهُ عَلَيْهَا فَسَكَنَتْ»
হাদীস নং: ৩৩৩৩
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫৮৬
২০৭৫. ইসলাম আগমনের পর নবুওয়্যাতের নিদর্শনসমূহ
৩৩৩৩। মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার (রাহঃ) ও বিশর ইবনে খালিদ .... উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তোমাদের মধ্যে কে নবী (ﷺ)- এর (ভবিষ্যতের) ফিতনা সম্পর্কীয় হাদীস স্মরণ রেখেছ? যেমনভাবে তিনি বর্ণনা করেছেন। হুযাইফা (রাযিঃ) বললেন, আমিই সর্বাধিক স্মরণ রেখেছি। উমর (রাযিঃ) বললেন, বর্ণনা কর, তুমি তো, অত্যন্ত সাহসী ব্যক্তি। হুযাইফা (রাযিঃ) বললেন, নবী (ﷺ) বলেছেন, মানুষের পরিবার-পরিজন, ধন-সম্পদ এবং প্রতিবেশী দ্বারা সৃষ্ট ফিতনা-ফাসাদের ক্ষতিপূরণ হয়ে যাবে নামায, সাদ্‌কা এবং সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ প্রদানের দ্বারা। উমর (রাযিঃ) বললেন, আমি এ জাতীয় ফিতনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিনি বরং উদ্বেলিত সাগর তরঙ্গের ন্যায় ভীষণ আঘাত হানে ঐ জাতীয় ফিতনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি। হুযাইফা (রাযিঃ) বলেন, হে আমীরুল মু'মিনীন! এ জাতীয় ফিতনা সম্পর্কে আপনার শঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই। আপনার এবং এ জাতীয় ফিতনার মধ্যে একটি সুদৃঢ় কপাট বন্ধ অবস্থায় রয়েছে।
উমর (রাযিঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, এ কপাটটি কি (সাধারণ নিয়মে) খোলা হবে, না (জোরপূর্বক) ভেঙ্গে ফেলা হবে? হুযাইফা (রাযিঃ) বলেন, (জোরপূর্বক) ভেঙ্গে ফেলা হবে। উমর (রাযিঃ) বললেন, তা হলে এ কপাটটি আর সহজে বন্ধ করা যাবে না। আমরা (সাহাবীগণ) হুযাইফাকে জিজ্ঞাসা করলাম, উমর (রাযিঃ) কি জানতেন, ঐ কপাট দ্বারা কাকে বুঝানো হয়েছে? তিনি বললেন, অবশ্যই; যেমন নিশ্চিতভাবে জানতেন আগামী দিনের পূর্বে, অদ্য রাতের আগমন অনিবার্য। আমি তাঁকে এমন একটি হাদীস শুনিয়েছি, যাতে ভুল-ভ্রান্তির অবকাশ নেই। আমরা (সাহাবীগণ) হুযাইফাকে ভয়ে জিজ্ঞাসা করতে সাহস পাইনি, তাই মাসরূককে বললাম, (তুমি জিজ্ঞাসা কর) মাসরূক (রাহঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, ঐ বন্ধ কপাট দ্বারা উদ্দেশ্য কি? হুযাইফা (রাযিঃ) বললেন, উমর (রাযিঃ) স্বয়ং।
باب عَلاَمَاتِ النُّبُوَّةِ فِي الإِسْلاَمِ
3586 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ شُعْبَةَ، ح حَدَّثَنِي بِشْرُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ سُلَيْمَانَ، سَمِعْتُ أَبَا وَائِلٍ، يُحَدِّثُ عَنْ حُذَيْفَةَ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ الخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: أَيُّكُمْ يَحْفَظُ قَوْلَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الفِتْنَةِ؟ فَقَالَ حُذَيْفَةُ: أَنَا أَحْفَظُ كَمَا قَالَ، قَالَ: هَاتِ، إِنَّكَ لَجَرِيءٌ، قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «فِتْنَةُ الرَّجُلِ فِي أَهْلِهِ وَمَالِهِ وَجَارِهِ، تُكَفِّرُهَا الصَّلاَةُ، وَالصَّدَقَةُ، وَالأَمْرُ بِالْمَعْرُوفِ، وَالنَّهْيُ عَنِ المُنْكَرِ» ، قَالَ: لَيْسَتْ هَذِهِ، وَلَكِنِ الَّتِي تَمُوجُ كَمَوْجِ البَحْرِ، قَالَ: يَا أَمِيرَ المُؤْمِنِينَ، لاَ بَأْسَ عَلَيْكَ مِنْهَا، إِنَّ بَيْنَكَ وَبَيْنَهَا بَابًا مُغْلَقًا، قَالَ: يُفْتَحُ البَابُ أَوْ يُكْسَرُ؟ قَالَ: لاَ، بَلْ يُكْسَرُ، قَالَ: ذَاكَ أَحْرَى أَنْ لاَ يُغْلَقَ، قُلْنَا: عَلِمَ عُمَرُ البَابَ؟ قَالَ: نَعَمْ، كَمَا أَنَّ دُونَ غَدٍ اللَّيْلَةَ، إِنِّي حَدَّثْتُهُ حَدِيثًا لَيْسَ بِالأَغَالِيطِ، فَهِبْنَا أَنْ نَسْأَلَهُ، وَأَمَرْنَا مَسْرُوقًا فَسَأَلَهُ فَقَالَ: مَنِ البَابُ؟، قَالَ: عُمَرُ
হাদীস নং: ৩৩৩৪
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫৮৭ - ৩৫৮৯
২০৭৫. ইসলাম আগমনের পর নবুওয়্যাতের নিদর্শনসমূহ
৩৩৩৪। আবুল ইয়ামান (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, নবী কারীম (ﷺ) বলেন, কিয়ামত সংঘটিত হবে না ততক্ষণ, যতক্ষণ না তোমাদের যুদ্ধ হবে এমন এক জাতির সঙ্গে যাদের পায়ের জুতা হবে পশমের এবং যতক্ষণ না তোমাদের যুদ্ধ হবে তুর্কিদের সহিত যাদের চক্ষু ক্ষুদ্রাকৃতি, নাক চ্যাপটা, চেহারা লাল বর্ণ যেন তাদের চেহারা পেটানো ঢাল। তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম মানুষ হবে যারা নেতৃত্বে ও শাসন ক্ষমতায় জড়িয়ে না পড়া পর্যন্ত একে অত্যন্ত ঘৃণা ও অপছন্দ করবে। মানুষ খনির ন্যায় (এতে ভালো মন্দ সবই আছে) যারা জাহিলীয়্যাতের যুগে শ্রেষ্ঠ ও উত্তম, ইসলাম গ্রহণের পরও তাঁরা শ্রেষ্ঠ ও উত্তম। তোমাদের নিকট এমন যুগ আসবে যখন তোমাদের পরিবার-পরিজনরা, ধন-সম্পদের অধিকারী হওয়ার চাইতেও আমার সাক্ষাত লাভ তার কাছে অত্যন্ত প্রিয় মনে হবে।
باب عَلاَمَاتِ النُّبُوَّةِ فِي الإِسْلاَمِ
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تُقَاتِلُوا قَوْمًا نِعَالُهُمُ الشَّعَرُ، وَحَتَّى تُقَاتِلُوا التُّرْكَ، صِغَارَ الأَعْيُنِ، حُمْرَ الْوُجُوهِ، ذُلْفَ الأُنُوفِ كَأَنَّ وُجُوهَهُمُ الْمَجَانُّ الْمُطْرَقَةُ ".
"«وَتَجِدُونَ مِنْ خَيْرِ النَّاسِ أَشَدَّهُمْ كَرَاهِيَةً لِهَذَا الأَمْرِ، حَتَّى يَقَعَ فِيهِ، وَالنَّاسُ مَعَادِنُ، خِيَارُهُمْ فِي الْجَاهِلِيَّةِ خِيَارُهُمْ فِي الإِسْلاَمِ."
"وَلَيَأْتِيَنَّ عَلَى أَحَدِكُمْ زَمَانٌ لأَنْ يَرَانِي أَحَبُّ إِلَيْهِ مِنْ أَنْ يَكُونَ لَهُ مِثْلُ أَهْلِهِ وَمَالِهِ."
হাদীস নং: ৩৩৩৫
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫৯০
২০৭৫. ইসলাম আগমনের পর নবুওয়্যাতের নিদর্শনসমূহ
৩৩৩৫। ইয়াহয়া (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, নবী কারীম (ﷺ) বলেন, কিয়ামত সংঘটিত হবে না যে পর্যন্ত তোমাদের যুদ্ধ না হবে খুয ও কিরমান নামক স্থানে (বসবাসরত) অনারব জাতিগুলোর সাথে, যাদের চেহারা লালবর্ণ, চেহারা যেন পিটানো ঢাল, নাক চ্যাপটা, চক্ষু ক্ষুদ্রাকৃতি এবং জুতা পশমের। ইয়াহয়া ব্যতীত অন্যান্য রাবীগণ ও আব্দুর রাজ্জাক (রাহঃ) থেকে পূর্বের হাদীস বর্ণনায় তার অনুসরণ করেছেন।
باب عَلاَمَاتِ النُّبُوَّةِ فِي الإِسْلاَمِ
3590 - حَدَّثَنِي يَحْيَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ هَمَّامٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: " لاَ تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تُقَاتِلُوا خُوزًا، وَكَرْمَانَ مِنَ الأَعَاجِمِ حُمْرَ الوُجُوهِ، فُطْسَ الأُنُوفِ، صِغَارَ الأَعْيُنِ وُجُوهُهُمُ المَجَانُّ المُطْرَقَةُ، نِعَالُهُمُ الشَّعَرُ تَابَعَهُ غَيْرُهُ عَنْ عَبْدِ الرَّزَّاقِ
হাদীস নং: ৩৩৩৬
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫৯১
২০৭৫. ইসলাম আগমনের পর নবুওয়্যাতের নিদর্শনসমূহ
৩৩৩৬। আলী ইবনে আব্দুল্লাহ (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী কারীম (ﷺ)- এর সাহচর্যে তিনটি বছর কাটিয়েছি। আমার জীবনে হাদীস মুখস্ত করার আগ্রহ এ তিন বছরের চেয়ে অধিক আর কখনো ছিল না। আমি নবী কারীম (ﷺ)- কে হাত দ্বারা এভাবে ইশারা করে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের পূর্বে তোমরা (পরবর্তীরা) এমন এক জাতির সাথে যুদ্ধ করবে যাদের জুতা হবে পশমের। এরা হবে পারস্যবাসী অথবা পাহাড়বাসী অনারব।
باب عَلاَمَاتِ النُّبُوَّةِ فِي الإِسْلاَمِ
3591 - حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ: قَالَ إِسْمَاعِيلُ، أَخْبَرَنِي قَيْسٌ، قَالَ: أَتَيْنَا أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَقَالَ: صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلاَثَ سِنِينَ لَمْ أَكُنْ فِي سِنِيَّ أَحْرَصَ عَلَى أَنْ أَعِيَ الحَدِيثَ مِنِّي فِيهِنَّ، سَمِعْتُهُ يَقُولُ: وَقَالَ هَكَذَا [ص:197] بِيَدِهِ: «بَيْنَ يَدَيِ السَّاعَةِ تُقَاتِلُونَ قَوْمًا نِعَالُهُمُ الشَّعَرُ» وَهُوَ هَذَا البَارِزُ "، وَقَالَ سُفْيَانُ مَرَّةً وَهُمْ أَهْلُ البَازِرِ
হাদীস নং: ৩৩৩৭
আন্তর্জাতিক নং: ৩৫৯২
২০৭৫. ইসলাম আগমনের পর নবুওয়্যাতের নিদর্শনসমূহ
৩৩৩৭। সুলাইমান ইবনে হারব (রাহঃ) .... আমর ইবনে তাগলিব (রাযিঃ) বর্ণনা করেন, আমি নবী কারীম (ﷺ)- কে বলতে শুনেছি, তোমরা কিয়ামতের পূর্বে এমন এক জাতির সাথে যুদ্ধ করবে যারা পশমের জুতা ব্যবহার করে এবং তোমরা এমন এক জাতির সাথে যুদ্ধ করবে যাদের চেহারা হবে পিটানো ঢালের ন্যায়।
باب عَلاَمَاتِ النُّبُوَّةِ فِي الإِسْلاَمِ
3592 - حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ، سَمِعْتُ الحَسَنَ، يَقُولُ: حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ تَغْلِبَ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: «بَيْنَ يَدَيِ السَّاعَةِ تُقَاتِلُونَ قَوْمًا يَنْتَعِلُونَ الشَّعَرَ، وَتُقَاتِلُونَ قَوْمًا كَأَنَّ وُجُوهَهُمُ المَجَانُّ المُطْرَقَةُ»
tahqiq

তাহকীক: