আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

الجامع الصحيح للبخاري

১৫- সূর্য-চন্দ্র গ্রহনের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ৯৮৩
আন্তর্জাতিক নং: ১০৪০
৬৬৪. সুর্যগ্রহণের সময় নামায।
৯৮৩। আমর ইবনে আওন (রাহঃ) ......... আবু বাকরা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী (ﷺ) এর কাছে ছিলাম, এ সময় সুর্যগ্রহণ শুরু হয়। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তখন উঠে দাঁড়ালেন এবং নিজের চাদর টানতে টানতে মসজিদে প্রবেশ করলেন এবং আমরাও প্রবেশ করলাম। তিনি আমাদেরকে নিয়ে সূর্য প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত দু’রাক'আত নামায আদায় করলেন।* এরপর তিনি বললেনঃ কারো মৃত্যুর কারণে কখনো সূর্যগ্রহণ কিংবা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। তোমরা যখন সূর্যগ্রহণ দেখবে, তখন এ অবস্থা কেটে যাওয়া পর্যন্ত নামায আদায় করবে এবং দুআ করতে থাকবে।

*সূর্যগ্রহণের নামায মূলত নফল শ্রেণির মধ্যে গণ্য। আর নফলে বাধ্য-বাধকতার পরিবর্তে প্রশস্ততা থাকে। সে কারণে সংশ্লিষ্ট হাদীসগুলোর প্রতি লক্ষ্য করলে দেখা যায় খোদ মহানবী (ﷺ)-ই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম আমল করেছেন। তাই অপরাপর নামাযের সাধারণ নিয়মে দু'রাক'আত নামায পড়ে নিলেই কুসূফ-এর নামায আদায় হয়ে যাবে। এতে চার ইমামের কারও দ্বিমত নেই। যা আলোচ্য ৯৮৩নং হাদীসে বিবৃত হয়েছে। তবে ২ রাক'আত নামায ৪ রুকু ও ৪ সিজদাসহ আদায় করা অন্য তিন ইমামের মতে উত্তম; কিন্তু ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ) বলেন, সাধারণ নিয়মে দুই রাক'আত পড়াই উম্মতের জন্য উত্তম। (আল-ফিক্‌হু 'আলাল মাযাহিবিল আরবা' : খ-১, পৃ-২৯৫ দ্রষ্টব্য)।
ইমাম শাফিয়ী ও আহমদ (রাহঃ) বলেন, সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ উভয় নামাযই জামাতে পড়া উত্তম। ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ) বলেন, সূর্যগ্রহণের নামায জামাতে পড়া যেতে পারে; যদি ইমাম পাওয়া যায়। নতুবা উভয় নামাযই একাকী আদায় করবে। ইমাম মালিক (রাহঃ) বলেন, সূর্যগ্রহণের নামায জামাতে পড়া উত্তম এবং চন্দ্রগ্রহণের নামায একাকী পড়া উত্তম। (মূল বুখারী, টীকা অংশ, টীকা নং-২, আল্লামা ত্বীবী (রাহঃ) সূত্রে উদ্ধৃত)
أَبْوَابُ الكُسُوفِ بَابُ الصَّلاَةِ فِي كُسُوفِ الشَّمْسِ
1040 - حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَوْنٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا خَالِدٌ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ الحَسَنِ، عَنْ أَبِي بَكْرَةَ، قَالَ: كُنَّا عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَانْكَسَفَتِ [ص:34] الشَّمْسُ، فَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَجُرُّ رِدَاءَهُ حَتَّى دَخَلَ المَسْجِدَ، فَدَخَلْنَا، فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ حَتَّى انْجَلَتِ الشَّمْسُ، فَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ الشَّمْسَ وَالقَمَرَ لاَ يَنْكَسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ، فَإِذَا رَأَيْتُمُوهُمَا، فَصَلُّوا، وَادْعُوا حَتَّى يُكْشَفَ مَا بِكُمْ»
হাদীস নং: ৯৮৪
আন্তর্জাতিক নং: ১০৪১
৬৬৪. সুর্যগ্রহণের সময় নামায।
৯৮৪। শিহাব ইবনে আব্বাদ (রাহঃ) ......... আবু মাসউদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেনঃ কোন লোকের মৃত্যুর কারণে কখনো সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। তবে তা আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্যে দুটি নিদর্শন। তাই তোমরা যখন সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ হতে দেখবে, তখন দাঁড়িয়ে যাবে এবং নামায আদায় করবে।
أَبْوَابُ الكُسُوفِ بَابُ الصَّلاَةِ فِي كُسُوفِ الشَّمْسِ
1041 - حَدَّثَنَا شِهَابُ بْنُ عَبَّادٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ حُمَيْدٍ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ قَيْسٍ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا مَسْعُودٍ، يَقُولُ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ الشَّمْسَ وَالقَمَرَ لاَ يَنْكَسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ مِنَ النَّاسِ، وَلَكِنَّهُمَا آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمُوهُمَا، فَقُومُوا، فَصَلُّوا»
হাদীস নং: ৯৮৫
আন্তর্জাতিক নং: ১০৪২
৬৬৪. সুর্যগ্রহণের সময় নামায।
৯৮৫। আসবাগ (রাহঃ) ......... ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি নবী (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন যে, কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ হয় না। তবে তা আল্লাহর নিদর্শন সমূহের মধ্যে দু’টি নিদর্শন। কাজেই তোমরা যখনই গ্রহণ হতে দেখবে, তখনই নামায আদায় করবে।
أَبْوَابُ الكُسُوفِ بَابُ الصَّلاَةِ فِي كُسُوفِ الشَّمْسِ
1042 - حَدَّثَنَا أَصْبَغُ، قَالَ: أَخْبَرَنِي ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عَمْرٌو، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ القَاسِمِ، حَدَّثَهُ عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، أَنَّهُ كَانَ يُخْبِرُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ الشَّمْسَ وَالقَمَرَ لاَ يَخْسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلاَ لِحَيَاتِهِ، وَلَكِنَّهُمَا آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمُوهَا فَصَلُّوا»
হাদীস নং: ৯৮৬
আন্তর্জাতিক নং: ১০৪৩
৬৬৪. সুর্যগ্রহণের সময় নামায।
৯৮৬। আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ (রাহঃ) ......... মুগীরা ইবনে শু’বা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সময় যে দিন (তাঁর পুত্র) ইবরাহীম (রাযিঃ) ইন্‌তিকাল করেন, সেদিন সূর্যগ্রহণ হয়েছিল। লোকেরা তখন বলতে লাগলো, ইবরাহীম (রাযিঃ) এর মৃত্যুর কারণেই সুর্যগ্রহণ হয়েছে। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ কারো মৃত্যু অথবা জন্মের কারণে সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। তোমরা যখন তা দেখবে, তখন নামায আদায় করবে এবং আল্লাহর নিকট দুআ করবে।
أَبْوَابُ الكُسُوفِ بَابُ الصَّلاَةِ فِي كُسُوفِ الشَّمْسِ
1043 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا هَاشِمُ بْنُ القَاسِمِ، قَالَ: حَدَّثَنَا شَيْبَانُ أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ زِيَادِ بْنِ عِلاَقَةَ، عَنِ المُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ، قَالَ: كَسَفَتِ الشَّمْسُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ مَاتَ إِبْرَاهِيمُ، فَقَالَ النَّاسُ: كَسَفَتِ الشَّمْسُ لِمَوْتِ إِبْرَاهِيمَ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ الشَّمْسَ وَالقَمَرَ لاَ يَنْكَسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلاَ لِحَيَاتِهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمْ فَصَلُّوا، وَادْعُوا اللَّهَ»