ফয়জুল কালাম

উম্মতের প্রতি নবিজির দরদ -এর বিষয়সমূহ

টি হাদীস

মিশকাতুল মাসাবীহ

হাদীস নং:৫৫৭৭
প্রথম অনুচ্ছেদ - হাওযে কাওসার ও শাফাআতের বর্ণনা
৫৫৭৭। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর ইবনুল আস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদা নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত ইবরাহীমের উক্তি সম্বলিত এই আয়াতটি তেলাওয়াত করিলেন, (অর্থাৎ,) “হে আমার রব! এই সমস্ত প্রতিমাগুলি বহু মানুষকে বিভ্রান্ত ও গোমরাহ্ করিয়াছে, সুতরাং যে আমার অনুসরণ করিবে সে-ই আমার দলভুক্ত, কিন্তু কেহ আমার অবাধ্য হইলে তুমি তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” আর হযরত ঈসা (আঃ)-এর উক্তিও পাঠ করিলেন, (অর্থাৎ,) “যদি তুমি তাহাদিগকে শাস্তি দাও, তাহারা তো তোমারই বান্দা” (আর যদি তাহাদিগকে ক্ষমা করিয়া দাও, তবে তুমি মহা ক্ষমতাশালী ও মহাজ্ঞানী)। অতঃপর নবী (ছাঃ) নিজের হস্তদ্বয় উঠাইয়া এই ফরিয়াদ করিতে লাগিলেন, হে আল্লাহ্! আমার উম্মত, আমার উম্মত! (তুমি তাহাদেরে ক্ষমা কর !) এই বলিয়া তিনি কাঁদিতে লাগিলেন। তখন আল্লাহ্ তা'আলা হযরত জিবরাঈলকে বলিলেন: তুমি মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর নিকট যাও এবং তাঁহাকে জিজ্ঞাসা কর তিনি কেন কাঁদিতেছেন? অবশ্য আল্লাহ্ ভালভাবেই জানেন তাঁহার কাঁদার কারণ কি? তখন জিবরাঈল আসিয়া তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলে, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁহাকে উহাই অবহিত করিলেন যাহা তিনি বলিয়া ছিলেন, অতঃপর আল্লাহ্ তা'আলা জিবরাঈলকে পুনরায় বলিলেনঃ মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর কাছে যাও এবং তাঁহাকে বল, আমি আপনাকে আপনার উম্মতের ব্যাপারে সন্তুষ্ট করিয়া দিব এবং আপনাকে ব্যথা দিব না। — মুসলিম
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَلَا قَوْلَ اللَّهِ تَعَالَى فِي إِبْرَاهِيمَ: [رَبِّ إِنَّهُنَّ أَضْلَلْنَ كَثِيرًا مِنَ النَّاسِ فَمَنْ تَبِعَنِي فَإِنَّهُ مني] وَقَالَ عِيسَى: [إِن تُعَذبهُمْ فَإِنَّهُم عِبَادك] فَرَفَعَ يَدَيْهِ فَقَالَ «اللَّهُمَّ أُمَّتِي أُمَّتِي» . وَبَكَى فَقَالَ اللَّهُ تَعَالَى: «يَا جِبْرِيلُ اذْهَبْ إِلَى مُحَمَّدٍ وَرَبُّكَ أَعْلَمُ فَسَلْهُ مَا يُبْكِيهِ؟» . فَأَتَاهُ جِبْرِيلُ فَسَأَلَهُ فَأَخْبَرَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمَا قَالَ فَقَالَ اللَّهُ لِجِبْرِيلَ اذْهَبْ إِلَى مُحَمَّدٍ فَقُلْ: إِنَّا سَنُرْضِيكَ فِي أمَّتك وَلَا نسوؤك . رَوَاهُ مُسلم
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

explanationহাদীসের ব্যাখ্যা

মিশকাতুল মাসাবীহ

হাদীস নং:৫৭৫১
প্রথম অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ
৫৭৫১। হযরত সা'দ (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনু মুআবিয়ার মসজিদের নিকট দিয়া যাইতেছিলেন। তখন উহাতে প্রবেশ করিয়া দুই রাকআত নামায পড়িলেন এবং আমরাও তাঁহার সাথে নামায আদায় করিলাম। নামায শেষে তিনি এক দীর্ঘ দো'আ করিলেন, অতঃপর আমাদের দিকে ফিরিয়া বলিলেন: আমি আমার রবের কাছে তিনটি বিষয়ে ফরিয়াদ করিয়াছিলাম। তিনি আমাকে দুইটি দিয়াছেন এবং একটি নিষেধ করিয়া ছেন। (১) আমি আমার রবের কাছে চাহিয়াছিলাম, ব্যাপক দুর্ভিক্ষ দ্বারা যেন আমার উম্মতকে ধ্বংস না করা হয়। আমার এই দো'আ তিনি কবুল করিয়াছেন। (২) আমি আমার রবের কাছে ইহাও চাহিয়াছিলাম যেন আমার উম্মতকে পানিতে ডুবাইয়া ধ্বংস করা না হয়। তিনি আমার এই দো'আও কবুল করিয়াছেন। এবং (৩) আমি তাঁহার কাছে চাহিয়াছিলাম যেন আমার উম্মতের পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধ-বিগ্রহ না হয়। কিন্তু তিনি ইহা আমাকে দান করেন নাই।—মুসলিম
وَعَنْ سَعْدٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّ بِمَسْجِدِ بَنِي مُعَاوِيَةَ دَخَلَ فَرَكَعَ فِيهِ رَكْعَتَيْنِ وَصَلَّيْنَا مَعَهُ وَدَعَا رَبَّهُ طَوِيلًا ثُمَّ انْصَرَفَ فَقَالَ: «سَأَلْتُ رَبِّي ثَلَاثًا فَأَعْطَانِي ثِنْتَيْنِ وَمَنَعَنِي وَاحِدَةً سَأَلْتُ رَبِّي أَنْ لَا يُهْلِكَ أُمَّتِي بِالسَّنَةِ فَأَعْطَانِيهَا وَسَأَلْتُهُ أَنْ لَا يُهْلِكَ أُمَّتِي بِالْغَرَقِ فَأَعْطَانِيهَا وَسَأَلْتُهُ أَنْ لَا يَجْعَلَ بأسهم بَينهم فَمَنَعَنِيهَا» . رَوَاهُ مُسلم
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

জামে' তিরমিযী

হাদীস নং:৮৭৩
আন্তর্জাতিক নং: ৮৭৩
কাবা শরীফের অভ্যন্তরে প্রবেশ করা।
৮৭৪. ইবনে আবু উমর (রাহঃ) ...... আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (ﷺ) যখন আমার নিকট থেকে বের হয়ে গেলেন তখন খুবই উৎফুল্ল ও আনন্দিত চিত্তে ছিলেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর যখন ফিরে এলেন তখন তাকে খুবই বিষন্ন দেখাচ্ছিল। আমি তাকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, আমি কা‘বার অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছিলাম। কিন্তু আমার মন চাচ্ছে আমি যদি এরূপ না করতাম। আমার আশঙ্কা হচ্ছে আমার পরবর্তীতে আমার উম্মতদেরকে হয়ত কষ্টে ফেলে দিলাম।* - ইবনে মাজাহ ইমাম আবু ঈসা (রাহঃ) বলেন, এই হাদীসটি হাসান-সহীহ। * কেননা সকলেই আমার অনুকরণে এতে প্রবেশ করতে চাইবে অথচ তা প্রত্যেকের জন্য সম্ভব হবে না। ফলে তা তাদের জন্য কষ্টকর হবে।
باب مَا جَاءَ فِي دُخُولِ الْكَعْبَةِ
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ عَبْدِ الْمَلِكِ، عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ خَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِنْ عِنْدِي وَهُوَ قَرِيرُ الْعَيْنِ طَيِّبُ النَّفْسِ فَرَجَعَ إِلَىَّ وَهُوَ حَزِينٌ فَقُلْتُ لَهُ فَقَالَ " إِنِّي دَخَلْتُ الْكَعْبَةَ وَوَدِدْتُ أَنِّي لَمْ أَكُنْ فَعَلْتُ إِنِّي أَخَافُ أَنْ أَكُونَ أَتْعَبْتُ أُمَّتِي مِنْ بَعْدِي " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .

সহীহ মুসলিম

হাদীস নং:২৮২১
আন্তর্জাতিক নং: ১২১৮ -
১৭. নবী (ﷺ) এর হজ্জের বিবরণ
২৮২১। আবু বকর ইবনে শায়বা ও ইসহাক ইবনে ইবরাহীম (রাহঃ) ......... হাতিম ইবনে ইসমাঈল জাফর ইবনে মুহাম্মাদ (রাহঃ) থেকে, তিনি তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) এর কাছে গেলাম। তিনি সকলের পরিচয় জিজ্ঞাসা করলেন। অবশেষে আমার পরিচয় জানতে চাইলেন। আমি বললাম, আমি মুহাম্মাদ ইবনে আলী ইবনে হুসাইন। অতএব তিনি আমার দিকে হাত বাড়িয়ে আমার মাথার উপর রাখলেন। তিনি আমার জামার উপরদিকের বোতাম খুললেন তারপর নীচের বোতাম খুললেন। তারপর তার হাত আমার বুকের মাঝে রাখলেন। আমি তখন ছিলাম যুবক। বললেন, হে ভ্রাতুষ্পুত্র! তোমাকে স্বাগত জানাই, তুমি যা জানতে চাও, জিজ্ঞাসা কর। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, তখন তিনি (বার্ধক্যজনিত কারণে) দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন। ইতিমধ্যে নামাযের ওয়াক্ত হয়ে গেল। তিনি নিজেকে একটি চাঁদর আবৃত করে উঠে দাঁড়ালেন। তিনি যখনই চাঁদরের প্রান্ত নিজ কাঁধের উপর রাখতেন- তা (আকারে) ছোট হওয়ার কারণে নীচে পড়ে যেত। তার আরেকটি বড় চাঁদর তার পাশেই আলনায় রাখা ছিলো। তিনি আমাদের নিয়ে নামাযের ইমামতি করলেন। অতঃপর আমি বললাম- আপনি আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর (বিদায়) হজ্জ সম্পর্কে অবহিত করুন। জাবির (রাযিঃ) স্বহস্তে নয় সংখ্যার প্রতি ইঙ্গিত করে বললেনঃ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নয় বছর (মদীনায়) অবস্থান করেন এবং এ সময়কালের মধ্যে হজ্জ করেননি। অতঃপর ১০ম বর্ষে লোকদের মধ্যে ঘোষণা দেয়া হল যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এ বছর হজ্জে যাবেন। এবং মদীনায় বহুলোকের আগমন হল। তাদের প্রত্যেকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর অনুসরণ করতে এবং তার অনুরূপ আমল করতে আগ্রহী ছিল। আমরা তাঁর সঙ্গে রওয়ানা হলাম। আমরা যখন যুল হুলাইফা নামক স্থানে পৌছলাম- আসমা বিনতে উমায়স (রাযিঃ) মুহাম্মাদ ইবনে আবু বকরকে প্রসব করলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট লোক পাঠিয়ে জানতে চাইলেন এখন আমি কি করব? তিনি বললেন, তুমি গোসল কর, একখণ্ড কাপড় দিয়ে পট্টি বেঁধে নাও এবং ইহরামের পোশাক পরিধান কর। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মসজিদে (ইহরামের দু’রাকআত) নামায আদায় করলেন। অতঃপর “কাসওয়া” নামক উটে আরোহণ করলেন। অতঃপর বায়দা নামক স্থানে তাঁর উট যখন তাঁকে নিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াল, আমি সামনের দিকে যতদূর দৃষ্টি যায়, তাকিয়ে দেখলাম লোকে লোকারণ্য কতক সওয়ারীতে, কতক পদব্রজে অগ্রসর হচ্ছে। ডানদিকে, বাঁদিকে এবং পেছনেও একই দৃশ্য। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদের মাঝখানে ছিলেন এবং তার উপর কুরআন নাযিল হচ্ছিল। একমাত্র তিনিই এর আসল তাৎপর্য জানেন এবং তিনি যা করতেন, আমরাও তাই করতাম। তিনি আল্লাহর তাওহীদ সম্বলিত এই তালবিয়া পাঠ করলেনঃ লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইকা, লাব্বাইকা না শারীকা লাকা লাব্বাইকা, ইন্নাল-হামদা ওয়ান-নি মাতা লাকা ওয়াল মূলক, লা শারীকা লাক। অর্থঃ আমি তোমার নিকটে হাযির আছি হে আল্লাহ, আমি তোমার নিকটে হাযির, আমি তোমার নিকটে হাযির, তোমার কোন শরীক নাই, আমি তোমার নিকটে উপস্থিত। নিশ্চিত সমস্ত প্রশংসা, নি’আমত তোমারই এবং সমগ্র রাজত্ব তোমার, তোমার কোন শরীক নেই। লোকেরাও উপরোক্ত তালবিযা পাঠ করল যা (আজকাল) পাঠ করা হয়। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর থেকে বেশী কিছু বলেন নাই! আর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উপরোক্ত তালবিয়া পাঠ করতে থাকলেন। জাবির (রাযিঃ) বলেন, আমরা হজ্জ ছাড়া অন্য কিছুর নিয়ত করিনি, আমরা উমরার কথা জানতাম না। অবশেষে আমরা যখন তাঁর সঙ্গে বায়তুল্লাহ শরীফে পৌছলাম তিনি রুকন (হাজারে আসওয়াদ) স্পর্শ করলেন, তারপর সাতবার কাবা ঘর তাওয়াফ করলেন- তিনবার দ্রুতগতিতে এবং চারবার স্বাভাবিক গতিতে। এরপর তিনি মাকামে ইবরাহীমে পৌছে এই আয়াত তিলাওয়াত করলেনঃ وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى অর্থঃ “তোমরা ইবরাহীমের দাঁড়াবার স্থানকে নামাযের স্থানরূপে গ্রহণ কর”- (সূরা বাকারাঃ ১২৫)। তিনি মাকামে ইবরাহীমকে তাঁর ও বায়তূল্লাহর মাঝখানে রেখে (দু’রাক’আত নামায আদায় করলেন)। (জাফর বলেন) আমার পিতা (মুহাম্মাদ) বলতেন, আমি যতদুর জানি, তিনি (জাবির) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি দু-রাক’আত নামাযে সূরা ’কুল হুআল্লাহু আহাদ’ ও ’কুল ইয়া আইয়্যুহাল কাফিরুন’ পাঠ করেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হাজারে আসওয়াদের কাছে প্রত্যাবর্তন করলেন এবং তাতে চুমো খেলেন। তারপর তিনি দরজা দিয়ে সাফা পাহাড়ের দিকে বের হলেন এবং সাফার নিকটবর্তী হয়ে তিলাওয়াত করলেনঃ إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللَّهِ অর্থঃ নিশ্চয়ই সাফা-মারওইয়া আল্লাহর দুটি নিদর্শনসমূহের অন্যতম” (সূরা বাকারাঃ ১৫৮) এবং আরো বললেন আল্লাহ তাআলা যে পাহাড়ের উল্লেখ করে আরম্ভ করেছেন, আমিও তা দিয়ে আরম্ভ করব। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সাফা পাহাড় থেকে শুরু করলেন এবং তারপর এতটা উপরে আরোহণ করলেন যে, বায়তুল্লাহ শরীফ দেখতে পেলেন। তিনি কিবলামুখী হলেন, আল্লাহর একত্ব ও মাহাত্ন ঘোষণা করলেন এবং বললেনঃ ″লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়া হুল হামদু, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদীর। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু আনজাযা ওয়াহদাহু ওয়া নাসারা আব্দাহ ওয়া হাযামাল আহযাবা ওয়াহদাহু।″ অর্থঃ ″আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বুদ নেই, তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নেই। তাঁর জন্য রাজত্ব এবং তাঁর জন্য সমস্ত প্রশংসা, তিনি প্রতিটি জিনিসের উপর শক্তিমান। আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই। তিনি এক, তিনি নিজের প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করেছেন এবং তার বান্দাকে সাহায্য করেছেন ও শত্রু বাহিনীকে একাই পরাস্ত করেছেন″ তিনি এ দুআ পড়লেন এবং তিনি অনুরূপ তিনবার বললেন। অতঃপর তিনি নেমে মারওয়া পাহাড়ের দিকে অগ্রসর হলেন- যাবত না তাঁর পা উপত্যকার সমতল ভূমিতে গিয়ে ঠেকল। তিনি দ্রুত চললেন- যাবত না উপত্যকা অতিক্রম করলেন। মারওয়া পাহাড়ে উঠার সময় হেঁটে উঠলেন, অতঃপর এখানেও তাই করলেন যা তিনি সাফা পাহাড়ে করেছিলেন। সর্বশেষ তাওয়াফে যখন তিনি মারওয়া পাহাড়ে পৌছলেন, তখন (লোকদের সম্বোধন করে) বললেনঃ যদি আমি আগেই ব্যাপারটি বুঝতে পারতাম, তাহলে আমি সাথে করে কুরবানীর পশু আনতাম না এবং (হজ্জের ইহরামকে উমরায় পরিবর্তন করতাম। অতএব তোমাদের মধ্যে যার সাথে কুরবানীর পশু নাই, সে যেন ইহরাম খুলে ফেলে এবং একে উমরায় পরিণত করে। এ সময় সুরাকা ইবনে মালিক ইবনে জু’শুম (রাযিঃ) দাঁড়িয়ে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এই ব্যবস্থা কি আমাদের এ বছরের জন্য, না সর্বকালের জন্য? রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হাতের আঙ্গুলগুলো পরস্পরের ফাঁকে ঢূকালেন এবং দু’বার বললেন, উমরা হজ্জের মধ্যে প্রবেশ করেছে। আরও বললেনঃ না, বরং সর্বকালের জন্য, সর্বকালের জন্য। এ সময় আলী (রাযিঃ) ইয়েমেন থেকে নবী (ﷺ) এর জন্য কুরবানীর পশু নিয়ে এলেন এবং যারা ইহরাম খুলে ফেলেছে, ফাতিমা (রাযিঃ) কে তাদের অন্তর্ভুক্ত দেখতে পেলেন। তিনি রং্গীণ কাপড় পরিহিতা ছিলেন এবং চোখে সুরমা দিয়েছিলেন। আলী (রাযিঃ) তা অপছন্দ করলেন। ফাতিমা (রাযিঃ) বললেন, আমার পিতা আমাকে এরূপ করার নির্দেশ দিয়েছেন। রাবী বলেন, আলী (রাযিঃ) ইরাকে থাকতেন, অতএব ফাতিমা (রাযিঃ) যা করেছেন তার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে আমি তাকে জানালাম যে আমি তার এ কাজ অপছন্দ করেছি। তিনি যা উল্লেখ করেছেন, সে বিষয়ে জানার জন্য আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে গেলাম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, ফাতিমা সত্য বলেছে, সত্য বলেছে। তুমি হজ্জের ইহরাম বাঁধার সময় কি বলেছিলে? আলী (রাযিঃ) বললেন আমি বলেছি, ইয়া আল্লাহ! আমি ইহরাম বাঁধলাম, যেরূপ ইহরাম বেঁধেছেন আপনার রাসুল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ তোমার সঙ্গে হাদী (কুরবানীর পশু) আছে অতএব তুমি ইহরাম খুলবে না। জাবির (রাযিঃ) বলেন, আলী (রাযিঃ) ইয়েমেন থেকে যে পশুপাল নিয়ে এসেছেন এবং নবী (ﷺ) নিজের সঙ্গে করে যে সব পশু নিয়ে এসেছিলেন, সর্বসাকুল্যে এর সংখ্যা দাঁড়াল একশত। অতএব নবী (ﷺ) এবং যাদের সঙ্গে কুরবানীর পশু ছিল তারা ব্যতীত আর সকলেই ইহরাম খুলে ফেললেন এবং চুল কাটলেন। তারপর যখন তারবিয়ার দিন (৮ যিলহজ্জ) আসল, লোকেরা পুনরায় ইহরাম বাঁধল এবং মিনার দিকে রওয়ানা হল। আর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তার বাহনে সওয়ার হয়ে গেলেন এবং সেখানে যোহর, আসর, মাগরিব, ইশা ও ফজরের নামায আদায় করলেন। তারপর তিনি সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত সেখানে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলেন এবং নামিরা নামক স্থানে গিয়ে তার জন্য একটি তাঁবু খাটানোর নির্দেশ দিলেন এবং নিজেও রওয়ানা হয়ে গেলেন। কুরাইশগণ নিঃসন্দেহ ছিল যে, নবী (ﷺ) মাশ’আরুল হারামের কাছে অবস্থান করবেন যেমন জাহিলী যুগে কুরাইশগণ করত। কিন্তু তিনি সামনে অগ্রসর হলেন, তারপরে আরাফাতে পৌছলেন এবং দেখতে পেলেন নামিরায় তাঁর জন্য তাঁবু খাটানো হয়েছে। তিনি এখানে অবতরণ করলেন। তারপর যখন সূর্য ঢলে পড়ল, তখন তিনি তাঁর কাসওয়া (নামক উষ্ঠী) কে প্রস্তুত করার নির্দেশ দিলেন। তার পিঠে হাওদা লাগান হল। তখন তিনি বাতনে ওয়াদীতে এলেন এবং লোকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন। তিনি বললেনঃ “তোমাদের রক্ত ও তোমাদের সস্পদ তোমাদের জন্য হারাম (মর্যাদাপূর্ণ) যেমন তা হারাম(মর্যাদাপূর্ণ) তোমাদের এ দিনে, তোমাদের এ মাসে এবং তোমাদের এ শহরে।” ″সাবধান! জাহিলী যুগের সকল ব্যাপার (অপসংস্কৃতি) আমার উভয় পায়ের নীচে। জাহিলী যুগের রক্তের দাবিও বাতিল হল। আমি সর্ব প্রথম যে রক্তপণ বাতিল করছি, তা হল আমাদের বংশের রবীআ ইবনে হারিসের পূত্রের রক্তপণ। সে শিশু অবস্থায় বনু সা’দ এ দুগ্ধপোষ্য ছিল, তখন হুযায়ল গোত্রের লোকেরা তাকে হত্যা করে। জাহিলী যুগের সুদও বাতিল হল। আমি প্রথমে যে সুদ বাতিল করছি তা হল আমাদের বংশের আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিরের সুদ। তার সমস্ত সুদ বাতিল হল। তোমরা স্ত্রীলোকদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর। তোমরা তাদের আল্লাহর আমানত হিসেবে গ্রহণ করেছ এবং আল্লাহর কালেমার মাধ্যমে তাদের লজ্জাস্থান নিজেদের জন্য হালাল করেছ। তাদের উপরে তোমাদের অধিকার এই যে, তারা যেন তোমাদের শয্যায় এমন কোন লোককে স্থান না দেয় যাকে তোমরা অপছন্দ কর। যদি তারা এরূপ করে তবে হালকাভাবে প্রহার কর। আর তোমাদের উপর তাদের ন্যায়সঙ্গত ভরণ-পোষণের ও পোশাক-পরিচ্ছেদের হুকুম রয়েছে। আমি তোমাদের মাঝে এমন এক জিনিস রেখে যাচ্ছি, যা দৃঢ়ভাবে আকড়ে ধরে থাকলে তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না। তা হচ্ছে আল্লাহর কিতাব।” “আমার সম্পর্কে তোমরা জিজ্ঞাসিত হলে, তখন তোমরা কি বলবে?” তারা বলল, আমরা সাক্ষ্য দিব যে, আপনি (আল্লাহর বাণী) পৌছিয়েছেন, আপনার হক আদায় করেছেন এবং সদুপদেশ দিয়েছেন। তারপর তিনি তর্জনী আকাশের দিকে তুলে লোকদের ইশারা করে বললেন, “ইয়া আল্লাহ! তুমি সাক্ষী থাক, তিনি তিনবার এরূপ বললেন। তারপর (মুয়াযযিন) আযান দিলেন ও ইকামত দিলেন এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যোহরের নামায আদায় করলেন। এরপর ইকামত দিলেন এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আসরের নামায আদায় করলেন। তিনি এই দুই নামাযের মাঝখানে অন্য কোন নামায আদায় করেননি। তারপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সওয়ার হয়ে মাওকিফ (অবস্থানস্থল) এলেন, তাঁর কাসওয়া উটের পেট পাথরের স্তুপের দিকে করে দিলেন এবং লোকদের একত্র হওয়ার জায়গা সামনে রেখে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়ালেন। সূর্যাস্ত পর্যন্ত তিনি এভাবে উকুফ করলেন। হলদে আভা কিছু দূরীভূত হল, এমনকি সূর্য গোলক সম্পূর্ণ অদৃশ্য হয়ে গেল। তিনি উসামা (রাযিঃ) কে তাঁর বাহনের পেছনদিকে বসালেন এবং কাসওয়ার নাকের দড়ি সজোরে টান দিলেন, ফলে তার মাথা মাওরিক (সওয়ারী ক্লান্তি অবসাদর জন্য যাতে পা রাখে) স্পর্শ করল। তিনি ডান হাতের ইশারায় বলেন, হে জনমণ্ডলী! ধীরে সুস্থে, ধীরে সুস্থে অগ্রসর হও। যখনই তিনি বালূর স্তূপের নিকট পৌছতেন, কাসওয়ার নাকের রশি কিছুটা ঢিল দিতেন যাতে সে উপরদিকে উঠতে পারে। এভাবে তিনি মুযদালিফায় পৌছলেন এবং এখানে একই আযানে ও দুই ইকামতে মাগরিব ও ইশার সালাম আদায় করলেন। এই নামাযের মাঝখানে অন্য কোন নফল নামায আদায় করেননি। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) শুয়ে পড়লেন যাবত না ফজরের ওয়াক্ত হল। অতঃপর ভোর হয়ে গেলে তিনি আযান ও ইকামত সহ ফজরের নামায আদায় করলেন। অতঃপর তিনি কাসওয়ার পিঠে আরোহণ করে মাশ’আরুল হারাম নামক স্থানে আসলেন। এখানে তিনি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর নিকট দুআ করলেন, তার মহাত্ব বর্ণনা করলেন, কালেমা তাওহীদ পড়লেন এবং তাঁর একত্ব ঘোষণা করলেন। দিনের আলো যথেষ্ট উজ্জ্বল না হওয়া পর্যন্ত তিনি দাঁড়িয়ে এরূপ করতে থাকলেন। সূর্য উদয়ের পূর্বে তিনি আবার রওয়ানা করছিলেন এবং ফযল ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) সওয়ারীতে তাঁর পেছনে বসলেন। তিনি ছিলেন যুবক এবং তার মাথার চুল ছিল অত্যন্ত সুন্দর। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন অগ্রসর হলেন- পাশাপাশি একদল মহিলাও যাচ্ছিলো। ফযল (রাযিঃ) তাদের দিকে তাকাতে লাগলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নিজের হাত ফযলের চেহারার উপর রাখলেন এবং তিনি তার মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিলেন এবং ফযল (রাযিঃ) অপরদিক হতে দেখতে লাগলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পূনরায় অন্যদিক হতে ফযল (রাযিঃ) এর মুখমণ্ডলে হাত রাখলেন। তিনি আবার অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে দেখতে লাগলেন। ″বাতনে মুহাসসাব″ নামক স্থানে পৌঁছলেন এবং সওয়ারীর গতি কিছুটা দ্রুত করলেন। তিনি মধ্যপথে অগ্রসর হলেন যা জামরাতুল কুবরার দিকে বেরিয়ে গেছে। তিনি বৃক্ষের নিকটের জামরায় এলেন এবং নীচের খালি জায়গায় দাঁড়িয়ে এখানে সাতটি কংকর নিক্ষেপ করলেন এবং প্রত্যেকবার আল্লাহু আকবার- বললেন। অতঃপর সেখানে থেকে কুরবানীর স্থানে এলেন এবং নিজ হাতে ৬৩ পশু যবেহ করলেন। তিনি কুরবানীর পশুতে আলী (রাযিঃ) কেও শরীক করলেন। অতঃপর তিনি প্রতিটি পশুর গোশতের কিছু অংশ নিয়ে একত্রে রান্না করার নির্দেশ দিলেন। অতএব তাই করা হল। তারা উভয়ে এই গোশত থেকে খেলেন এবং ঝোল পান করলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সওয়ার হয়ে বায়তুল্লাহর দিকে রওয়ানা হলেন এবং মক্কায় পৌছে যোহরের নামায আদায় করলেন। অতএব বনু আব্দিল মূত্তালিব এর লোকদের কাছে আসলেন, তারা লোকদের যমযমের পানি পান করাচ্ছিল। তিনি বললেনঃ হে আব্দুল মুত্তালিবের বংশধরগণ! পানি তোল। আমি যদি আশঙ্কা না করতাম যে, পানি পান করানোর ব্যাপারে লোকেরা তোমাদের পরাভুত করে দেবে, তবে আমি নিজেও তোমাদের সাথে পানি তুলতাম। তখন তারা তাঁকে এক বালতি পানি দিল এবং তিনি তা থেকে কিছু পান করলেন।
باب حَجَّةِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، جَمِيعًا عَنْ حَاتِمٍ، - قَالَ أَبُو بَكْرٍ حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ الْمَدَنِيُّ، - عَنْ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ دَخَلْنَا عَلَى جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ فَسَأَلَ عَنِ الْقَوْمِ، حَتَّى انْتَهَى إِلَىَّ فَقُلْتُ أَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ حُسَيْنٍ، . فَأَهْوَى بِيَدِهِ إِلَى رَأْسِي فَنَزَعَ زِرِّي الأَعْلَى ثُمَّ نَزَعَ زِرِّي الأَسْفَلَ ثُمَّ وَضَعَ كَفَّهُ بَيْنَ ثَدْيَىَّ وَأَنَا يَوْمَئِذٍ غُلاَمٌ شَابٌّ فَقَالَ مَرْحَبًا بِكَ يَا ابْنَ أَخِي سَلْ عَمَّا شِئْتَ . فَسَأَلْتُهُ وَهُوَ أَعْمَى وَحَضَرَ وَقْتُ الصَّلاَةِ فَقَامَ فِي نِسَاجَةٍ مُلْتَحِفًا بِهَا كُلَّمَا وَضَعَهَا عَلَى مَنْكِبِهِ رَجَعَ طَرَفَاهَا إِلَيْهِ مِنْ صِغَرِهَا وَرِدَاؤُهُ إِلَى جَنْبِهِ عَلَى الْمِشْجَبِ فَصَلَّى بِنَا فَقُلْتُ أَخْبِرْنِي عَنْ حَجَّةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . فَقَالَ بِيَدِهِ فَعَقَدَ تِسْعًا فَقَالَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَكَثَ تِسْعَ سِنِينَ لَمْ يَحُجَّ ثُمَّ أَذَّنَ فِي النَّاسِ فِي الْعَاشِرَةِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَاجٌّ فَقَدِمَ الْمَدِينَةَ بَشَرٌ كَثِيرٌ كُلُّهُمْ يَلْتَمِسُ أَنْ يَأْتَمَّ بِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَيَعْمَلَ مِثْلَ عَمَلِهِ فَخَرَجْنَا مَعَهُ حَتَّى أَتَيْنَا ذَا الْحُلَيْفَةِ فَوَلَدَتْ أَسْمَاءُ بِنْتُ عُمَيْسٍ مُحَمَّدَ بْنَ أَبِي بَكْرٍ فَأَرْسَلَتْ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَيْفَ أَصْنَعُ قَالَ " اغْتَسِلِي وَاسْتَثْفِرِي بِثَوْبٍ وَأَحْرِمِي " . فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الْمَسْجِدِ ثُمَّ رَكِبَ الْقَصْوَاءَ حَتَّى إِذَا اسْتَوَتْ بِهِ نَاقَتُهُ عَلَى الْبَيْدَاءِ نَظَرْتُ إِلَى مَدِّ بَصَرِي بَيْنَ يَدَيْهِ مِنْ رَاكِبٍ وَمَاشٍ وَعَنْ يَمِينِهِ مِثْلَ ذَلِكَ وَعَنْ يَسَارِهِ مِثْلَ ذَلِكَ وَمِنْ خَلْفِهِ مِثْلَ ذَلِكَ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ أَظْهُرِنَا وَعَلَيْهِ يَنْزِلُ الْقُرْآنُ وَهُوَ يَعْرِفُ تَأْوِيلَهُ وَمَا عَمِلَ بِهِ مِنْ شَىْءٍ عَمِلْنَا بِهِ فَأَهَلَّ بِالتَّوْحِيدِ " لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ لَبَّيْكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ لَبَّيْكَ إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ " . وَأَهَلَّ النَّاسُ بِهَذَا الَّذِي يُهِلُّونَ بِهِ فَلَمْ يَرُدَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَيْهِمْ شَيْئًا مِنْهُ وَلَزِمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم تَلْبِيَتَهُ قَالَ جَابِرٌ - رضى الله عنه - لَسْنَا نَنْوِي إِلاَّ الْحَجَّ لَسْنَا نَعْرِفُ الْعُمْرَةَ حَتَّى إِذَا أَتَيْنَا الْبَيْتَ مَعَهُ اسْتَلَمَ الرُّكْنَ فَرَمَلَ ثَلاَثًا وَمَشَى أَرْبَعًا ثُمَّ نَفَذَ إِلَى مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ - عَلَيْهِ السَّلاَمُ - فَقَرَأَ ( وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى) فَجَعَلَ الْمَقَامَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْبَيْتِ فَكَانَ أَبِي يَقُولُ وَلاَ أَعْلَمُهُ ذَكَرَهُ إِلاَّ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقْرَأُ فِي الرَّكْعَتَيْنِ ( قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ) وَ ( قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ) ثُمَّ رَجَعَ إِلَى الرُّكْنِ فَاسْتَلَمَهُ ثُمَّ خَرَجَ مِنَ الْبَابِ إِلَى الصَّفَا فَلَمَّا دَنَا مِنَ الصَّفَا قَرَأَ ( إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللَّهِ) " أَبْدَأُ بِمَا بَدَأَ اللَّهُ بِهِ " . فَبَدَأَ بِالصَّفَا فَرَقِيَ عَلَيْهِ حَتَّى رَأَى الْبَيْتَ فَاسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ فَوَحَّدَ اللَّهَ وَكَبَّرَهُ وَقَالَ " لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كَلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ أَنْجَزَ وَعْدَهُ وَنَصَرَ عَبْدَهُ وَهَزَمَ الأَحْزَابَ وَحْدَهُ " . ثُمَّ دَعَا بَيْنَ ذَلِكَ قَالَ مِثْلَ هَذَا ثَلاَثَ مَرَّاتٍ ثُمَّ نَزَلَ إِلَى الْمَرْوَةِ حَتَّى إِذَا انْصَبَّتْ قَدَمَاهُ فِي بَطْنِ الْوَادِي سَعَى حَتَّى إِذَا صَعِدَتَا مَشَى حَتَّى أَتَى الْمَرْوَةَ فَفَعَلَ عَلَى الْمَرْوَةِ كَمَا فَعَلَ عَلَى الصَّفَا حَتَّى إِذَا كَانَ آخِرُ طَوَافِهِ عَلَى الْمَرْوَةِ فَقَالَ " لَوْ أَنِّي اسْتَقْبَلْتُ مِنْ أَمْرِي مَا اسْتَدْبَرْتُ لَمْ أَسُقِ الْهَدْىَ وَجَعَلْتُهَا عُمْرَةً فَمَنْ كَانَ مِنْكُمْ لَيْسَ مَعَهُ هَدْىٌ فَلْيَحِلَّ وَلْيَجْعَلْهَا عُمْرَةً " . فَقَامَ سُرَاقَةُ بْنُ مَالِكِ بْنِ جُعْشُمٍ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلِعَامِنَا هَذَا أَمْ لأَبَدٍ فَشَبَّكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَصَابِعَهُ وَاحِدَةً فِي الأُخْرَى وَقَالَ " دَخَلَتِ الْعُمْرَةُ فِي الْحَجِّ - مَرَّتَيْنِ - لاَ بَلْ لأَبَدٍ أَبَدٍ " . وَقَدِمَ عَلِيٌّ مِنَ الْيَمَنِ بِبُدْنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَوَجَدَ فَاطِمَةَ - رضى الله عنها - مِمَّنْ حَلَّ وَلَبِسَتْ ثِيَابًا صَبِيغًا وَاكْتَحَلَتْ فَأَنْكَرَ ذَلِكَ عَلَيْهَا فَقَالَتْ إِنَّ أَبِي أَمَرَنِي بِهَذَا . قَالَ فَكَانَ عَلِيٌّ يَقُولُ بِالْعِرَاقِ فَذَهَبْتُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مُحَرِّشًا عَلَى فَاطِمَةَ لِلَّذِي صَنَعَتْ مُسْتَفْتِيًا لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِيمَا ذَكَرَتْ عَنْهُ فَأَخْبَرْتُهُ أَنِّي أَنْكَرْتُ ذَلِكَ عَلَيْهَا فَقَالَ " صَدَقَتْ صَدَقَتْ مَاذَا قُلْتَ حِينَ فَرَضْتَ الْحَجَّ " . قَالَ قُلْتُ اللَّهُمَّ إِنِّي أُهِلُّ بِمَا أَهَلَّ بِهِ رَسُولُكَ . قَالَ " فَإِنَّ مَعِيَ الْهَدْىَ فَلاَ تَحِلُّ " . قَالَ فَكَانَ جَمَاعَةُ الْهَدْىِ الَّذِي قَدِمَ بِهِ عَلِيٌّ مِنَ الْيَمَنِ وَالَّذِي أَتَى بِهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِائَةً - قَالَ - فَحَلَّ النَّاسُ كُلُّهُمْ وَقَصَّرُوا إِلاَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَمَنْ كَانَ مَعَهُ هَدْىٌ فَلَمَّا كَانَ يَوْمُ التَّرْوِيَةِ تَوَجَّهُوا إِلَى مِنًى فَأَهَلُّوا بِالْحَجِّ وَرَكِبَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَصَلَّى بِهَا الظُّهْرَ وَالْعَصْرَ وَالْمَغْرِبَ وَالْعِشَاءَ وَالْفَجْرَ ثُمَّ مَكَثَ قَلِيلاً حَتَّى طَلَعَتِ الشَّمْسُ وَأَمَرَ بِقُبَّةٍ مِنْ شَعَرٍ تُضْرَبُ لَهُ بِنَمِرَةَ فَسَارَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَلاَ تَشُكُّ قُرَيْشٌ إِلاَّ أَنَّهُ وَاقِفٌ عِنْدَ الْمَشْعَرِ الْحَرَامِ كَمَا كَانَتْ قُرَيْشٌ تَصْنَعُ فِي الْجَاهِلِيَّةِ فَأَجَازَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى أَتَى عَرَفَةَ فَوَجَدَ الْقُبَّةَ قَدْ ضُرِبَتْ لَهُ بِنَمِرَةَ فَنَزَلَ بِهَا حَتَّى إِذَا زَاغَتِ الشَّمْسُ أَمَرَ بِالْقَصْوَاءِ فَرُحِلَتْ لَهُ فَأَتَى بَطْنَ الْوَادِي فَخَطَبَ النَّاسَ وَقَالَ " إِنَّ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ حَرَامٌ عَلَيْكُمْ كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا فِي شَهْرِكُمْ هَذَا فِي بَلَدِكُمْ هَذَا أَلاَ كُلُّ شَىْءٍ مِنْ أَمْرِ الْجَاهِلِيَّةِ تَحْتَ قَدَمَىَّ مَوْضُوعٌ وَدِمَاءُ الْجَاهِلِيَّةِ مَوْضُوعَةٌ وَإِنَّ أَوَّلَ دَمٍ أَضَعُ مِنْ دِمَائِنَا دَمُ ابْنِ رَبِيعَةَ بْنِ الْحَارِثِ كَانَ مُسْتَرْضِعًا فِي بَنِي سَعْدٍ فَقَتَلَتْهُ هُذَيْلٌ وَرِبَا الْجَاهِلِيَّةِ مَوْضُوعٌ وَأَوَّلُ رِبًا أَضَعُ رِبَانَا رِبَا عَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَإِنَّهُ مَوْضُوعٌ كُلُّهُ فَاتَّقُوا اللَّهَ فِي النِّسَاءِ فَإِنَّكُمْ أَخَذْتُمُوهُنَّ بِأَمَانِ اللَّهِ وَاسْتَحْلَلْتُمْ فُرُوجَهُنَّ بِكَلِمَةِ اللَّهِ وَلَكُمْ عَلَيْهِنَّ أَنْ لاَ يُوطِئْنَ فُرُشَكُمْ أَحَدًا تَكْرَهُونَهُ . فَإِنْ فَعَلْنَ ذَلِكَ فَاضْرِبُوهُنَّ ضَرْبًا غَيْرَ مُبَرِّحٍ وَلَهُنَّ عَلَيْكُمْ رِزْقُهُنَّ وَكِسْوَتُهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ وَقَدْ تَرَكْتُ فِيكُمْ مَا لَنْ تَضِلُّوا بَعْدَهُ إِنِ اعْتَصَمْتُمْ بِهِ كِتَابَ اللَّهِ . وَأَنْتُمْ تُسْأَلُونَ عَنِّي فَمَا أَنْتُمْ قَائِلُونَ " . قَالُوا نَشْهَدُ أَنَّكَ قَدْ بَلَّغْتَ وَأَدَّيْتَ وَنَصَحْتَ . فَقَالَ بِإِصْبَعِهِ السَّبَّابَةِ يَرْفَعُهَا إِلَى السَّمَاءِ وَيَنْكُتُهَا إِلَى النَّاسِ " اللَّهُمَّ اشْهَدِ اللَّهُمَّ اشْهَدْ " . ثَلاَثَ مَرَّاتٍ ثُمَّ أَذَّنَ ثُمَّ أَقَامَ فَصَلَّى الظُّهْرَ ثُمَّ أَقَامَ فَصَلَّى الْعَصْرَ وَلَمْ يُصَلِّ بَيْنَهُمَا شَيْئًا ثُمَّ رَكِبَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى أَتَى الْمَوْقِفَ فَجَعَلَ بَطْنَ نَاقَتِهِ الْقَصْوَاءِ إِلَى الصَّخَرَاتِ وَجَعَلَ حَبْلَ الْمُشَاةِ بَيْنَ يَدَيْهِ وَاسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ فَلَمْ يَزَلْ وَاقِفًا حَتَّى غَرَبَتِ الشَّمْسُ وَذَهَبَتِ الصُّفْرَةُ قَلِيلاً حَتَّى غَابَ الْقُرْصُ وَأَرْدَفَ أُسَامَةَ خَلْفَهُ وَدَفَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ شَنَقَ لِلْقَصْوَاءِ الزِّمَامَ حَتَّى إِنَّ رَأْسَهَا لَيُصِيبُ مَوْرِكَ رَحْلِهِ وَيَقُولُ بِيَدِهِ الْيُمْنَى " أَيُّهَا النَّاسُ السَّكِينَةَ السَّكِينَةَ " . كُلَّمَا أَتَى حَبْلاً مِنَ الْحِبَالِ أَرْخَى لَهَا قَلِيلاً حَتَّى تَصْعَدَ حَتَّى أَتَى الْمُزْدَلِفَةَ فَصَلَّى بِهَا الْمَغْرِبَ وَالْعِشَاءَ بِأَذَانٍ وَاحِدٍ وَإِقَامَتَيْنِ وَلَمْ يُسَبِّحْ بَيْنَهُمَا شَيْئًا ثُمَّ اضْطَجَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى طَلَعَ الْفَجْرُ وَصَلَّى الْفَجْرَ - حِينَ تَبَيَّنَ لَهُ الصُّبْحُ - بِأَذَانٍ وَإِقَامَةٍ ثُمَّ رَكِبَ الْقَصْوَاءَ حَتَّى أَتَى الْمَشْعَرَ الْحَرَامَ فَاسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ فَدَعَاهُ وَكَبَّرَهُ وَهَلَّلَهُ وَوَحَّدَهُ فَلَمْ يَزَلْ وَاقِفًا حَتَّى أَسْفَرَ جِدًّا فَدَفَعَ قَبْلَ أَنْ تَطْلُعَ الشَّمْسُ وَأَرْدَفَ الْفَضْلَ بْنَ عَبَّاسٍ وَكَانَ رَجُلاً حَسَنَ الشَّعْرِ أَبْيَضَ وَسِيمًا فَلَمَّا دَفَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَرَّتْ بِهِ ظُعُنٌ يَجْرِينَ فَطَفِقَ الْفَضْلُ يَنْظُرُ إِلَيْهِنَّ فَوَضَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَدَهُ عَلَى وَجْهِ الْفَضْلِ فَحَوَّلَ الْفَضْلُ وَجْهَهُ إِلَى الشِّقِّ الآخَرِ يَنْظُرُ فَحَوَّلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَدَهُ مِنَ الشِّقِّ الآخَرِ عَلَى وَجْهِ الْفَضْلِ يَصْرِفُ وَجْهَهُ مِنَ الشِّقِّ الآخَرِ يَنْظُرُ حَتَّى أَتَى بَطْنَ مُحَسِّرٍ فَحَرَّكَ قَلِيلاً ثُمَّ سَلَكَ الطَّرِيقَ الْوُسْطَى الَّتِي تَخْرُجُ عَلَى الْجَمْرَةِ الْكُبْرَى حَتَّى أَتَى الْجَمْرَةَ الَّتِي عِنْدَ الشَّجَرَةِ فَرَمَاهَا بِسَبْعِ حَصَيَاتٍ يُكَبِّرُ مَعَ كُلِّ حَصَاةٍ مِنْهَا مِثْلِ حَصَى الْخَذْفِ رَمَى مِنْ بَطْنِ الْوَادِي ثُمَّ انْصَرَفَ إِلَى الْمَنْحَرِ فَنَحَرَ ثَلاَثًا وَسِتِّينَ بِيَدِهِ ثُمَّ أَعْطَى عَلِيًّا فَنَحَرَ مَا غَبَرَ وَأَشْرَكَهُ فِي هَدْيِهِ ثُمَّ أَمَرَ مِنْ كُلِّ بَدَنَةٍ بِبَضْعَةٍ فَجُعِلَتْ فِي قِدْرٍ فَطُبِخَتْ فَأَكَلاَ مِنْ لَحْمِهَا وَشَرِبَا مِنْ مَرَقِهَا ثُمَّ رَكِبَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَفَاضَ إِلَى الْبَيْتِ فَصَلَّى بِمَكَّةَ الظُّهْرَ فَأَتَى بَنِي عَبْدِ الْمُطَّلِبِ يَسْقُونَ عَلَى زَمْزَمَ فَقَالَ " انْزِعُوا بَنِي عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَلَوْلاَ أَنْ يَغْلِبَكُمُ النَّاسُ عَلَى سِقَايَتِكُمْ لَنَزَعْتُ مَعَكُمْ " . فَنَاوَلُوهُ دَلْوًا فَشَرِبَ مِنْهُ .

সুনানে নাসায়ী

হাদীস নং:৫৩৪
আন্তর্জাতিক নং: ৫৩৪
ইশার নামায দেরী করে আদায় করা মুস্তাহাব।
৫৩৫। মুহাম্মাদ ইবনে মানসুর (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ যদি আমার উম্মতের পক্ষে কষ্টকর হবে বলে মনে না করতাম, তাহলে ইশার নামায বিলম্বে আদায় করার এবং প্রত্যেক নামাযের (উযুর) সময় মিসওয়াক করার জন্য আদেশ করতাম।
ما يستحب من تأخير العشاء
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مَنْصُورٍ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لَوْلاَ أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي لأَمَرْتُهُمْ بِتَأْخِيرِ الْعِشَاءِ وَبِالسِّوَاكِ عِنْدَ كُلِّ صَلاَةٍ " .

মিশকাতুল মাসাবীহ

হাদীস নং:১২৯৫
৩৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - রমাযান মাসের ক্বিয়াম (তারাবীহ সালাত) মূলে 'কিয়ামু শাহরে রামাযান' শব্দ রহিয়াছে, যাহার অর্থ, 'রমযান মাসের নামায' অর্থাৎ, তারাবীর নামায। এখানে তিনটি কথা জানা আবশ্যক। তারাবী কত রাকআত তারাবী পড়া কি এবং তারাবী জামাআতে পড়া কেমন ? (ক) ইবনে হাব্বানের কিতাবে হযরত জাবের প্রমুখাৎ বর্ণিত আছে, “নবী করীম (ﷺ) তাঁহাদের লইয়া তারাবী আট রাকআত পড়িয়াছিলেন।” কিন্তু ইবনে আবী শায়বার ‘মুসান্নাফ্’-এ হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস কর্তৃক বর্ণিত এক হাদীসে আছে, হুযূর (ﷺ) তারাবী বিশ রাকআত পড়িয়াছিলেন। এই হাদীসটিকে কোন কোন মোহাদ্দেস সনদগত যয়ীফ বলিলেও ইহার মর্ম সহীহ্। কারণ, ইমাম বায়হাকীর এক সহীহ্ বর্ণনায় আছে, “হযরত ওমর, হযরত ওসমান ও হযরত আলীর যমানায় তারাবী বিশ রাকআত পড়া হইত।” এখানে বিবেচ্য বিষয় এই যে, যদি হুযূর (ﷺ) কখনও বিশ রাকআত না-ই পড়িয়া থাকেন অথবা উহার অনুমতিই না দিয়া থাকেন, তাহা হইলে ইহারা এ ব্যাপারে এ সাহস করিবেন কেন এবং অপর সাহাবীগণও ইহাতে চুপ থাকিবেন কেন? ইহাতে বুঝা যায় যে, হুযূর (ﷺ) প্রথম দিকে আট রাকআত পড়িলেও শেষের দিকে বিশ রাকআতই পড়িয়াছিলেন। সুতরাং হাদীসটির মর্ম সহীহ্। আর ইমাম আ'যম আবু হানীফা ও ইমাম শাফেয়ী (রঃ) ইহাকেই গ্রহণ করিয়াছেন। (খ) ইমাম আবু হানীফা, শাফেয়ী ও ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলের মতে তারাবী ‘সুন্নতে মোআক্কাদা।' ইয়োর কিতাবে আছে, একদা ইমাম আবু ইউসুফ (রঃ) ইমাম আবু হানীফাকে তারাবী এবং উহা সম্পর্কে হযরত ওমর (রাঃ) যে ব্যবস্থা করিয়াছেন তৎসম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করিলেন। উত্তরে ইমাম সাহেব বলিলেন, তারাবী সুন্নতে মোআক্কাদা। হযরত ওমর (রাঃ) ইহা নিজের মনগড়া মতে করেন নাই এবং তিনি বেদআতীও (দ্বীনের ব্যাপারে নূতন কথা আবিষ্কারক) ছিলেন না। (গ) তারাবীর নামায একা পড়া জায়েয; কিন্তু জামাআতে পড়াই উত্তম। কেননা, ইহাতে আলস্যের কারণে নামায ফউত হইবার আশংকা থাকে না। নবী করীম (ﷺ) উহা সর্বদা জামাআতে না পড়িলেও হযরত আবু যর গেফারীর হাদীসে (১২২৪) দেখা যায়, তিনি কয়েক দিন উহা জামাআতে পড়িয়াছিলেন এবং ফরয হওয়ার আশংকায় পরে জামাআত ছাড়িয়া দিয়াছিলেন। তাঁহার ওফাতের পর অর্থাৎ, ফরয হওয়ার আশংকা দূরীভূত হওয়ার পর হযরত ওমর (রাঃ) উহার জন্য নিয়মিত জামাআতের ব্যবস্থা করিয়া দেন। সুতরাং ইহা কখনও সুন্নতের খেলাফ নহে। —অনুবাদক
১২৯৫। হযরত যায়দ ইবনে সাবেত (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার মসজিদে মাদুর দ্বারা একটি হুজরা প্রস্তুত করিলেন এবং তথায় কয়েক রাত্রি (নফল) নামায পড়িলেন, যাহাতে লোকসকল তাহার নিকট একত্রিত হইতে লাগিল। অতঃপর এক রাত্রি সাহাবীগণ তাঁহার কোন সাড়া-শব্দ পাইলেন না এবং ধারণা করিলেন যে, তিনি হয়তো ঘুমাইয়া আছেন; অতএব, তাঁহাদের কেহ কেহ গলা খাকাইতে লাগিলেন— যেন তিনি তাহাদের নিকট (জামাআতের জন্য) বাহির হইয়া আসেন। ইহা দেখিয়া তিনি বলিয়া উঠিলেন, আমি তোমাদের বরাবরের (আগ্রহের) অবস্থা দেখিয়াছি এবং আশংকা করিতেছি যে, ইহা যেন তোমাদের উপর ফরয হইয়া না যায়। আর যদি ফরয হইয়া যায়, তাহা হইলে তোমরা উহা পালন করিতে পারিবে না। সুতরাং হে লোকসকল! তোমরা (নফল) নামায তোমাদের ঘরেই পড়। কেননা, কাহারও উত্তম নামায হইতেছে তাহার ঘরের নামায ফরয নামায ব্যতীত। – মোত্তাঃ
بَابُ قِيَامِ شَهْرِ رَمَضَانَ
عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اتَّخَذَ حُجْرَةً فِي الْمَسْجِدِ مِنْ حَصِيرٍ فَصَلَّى فِيهَا لَيَالِيَ حَتَّى اجْتَمَعَ عَلَيْهِ نَاسٌ ثُمَّ فَقَدُوا صَوْتَهُ لَيْلَةً وَظَنُّوا أَنَّهُ قَدْ نَامَ فَجَعَلَ بَعْضُهُمْ يَتَنَحْنَحُ لِيَخْرُجَ إِلَيْهِمْ. فَقَالَ: مَا زَالَ بِكُمُ الَّذِي رَأَيْتُ مِنْ صَنِيعِكُمْ حَتَّى خَشِيتُ أَنْ يُكْتَبَ عَلَيْكُمْ وَلَوْ كُتِبَ عَلَيْكُمْ مَا قُمْتُمْ بِهِ. فَصَلُّوا أَيُّهَا النَّاسُ فِي بُيُوتِكُمْ فَإِنَّ أَفْضَلَ صَلَاةِ الْمَرْء فِي بَيته إِلَّا الصَّلَاة الْمَكْتُوبَة)
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

explanationহাদীসের ব্যাখ্যা

সহীহ মুসলিম

হাদীস নং:১৫৩৫
আন্তর্জাতিক নং: ৭১৮
১৩. চাশতের (পূর্বাহ্নের) নামায মুস্তাহাব হওয়া
১৫৩৫। ইয়াহয়া ইবনে ইয়াহয়া (রাহঃ) ......... আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি দু’হার সময় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে কখনো নামায আদায় করতে দেখিনি। কিন্তু আমি তা আদায় করি। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কোন কোন কাজ পছন্দ করতেন; কিন্তু পাছে লোকেরা তা আকড়ে ধরবে এবং তাদের উপর তা ফরয হয়ে পড়বে এ আশঙ্কায় তা ছেড়ে দিতেন।
باب اسْتِحْبَابِ صَلاَةِ الضُّحَى
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ مَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي سُبْحَةَ الضُّحَى قَطُّ . وَإِنِّي لأُسَبِّحُهَا وَإِنْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَيَدَعُ الْعَمَلَ وَهُوَ يُحِبُّ أَنْ يَعْمَلَ بِهِ خَشْيَةَ أَنْ يَعْمَلَ بِهِ النَّاسُ فَيُفْرَضَ عَلَيْهِمْ .

সহীহ মুসলিম

হাদীস নং:৪৭৭
আন্তর্জাতিক নং: ২৪৯ -
১২. উযুতে মুখমণ্ডলের শুভ্রতা এবং হাত-পায়ের দীপ্তি বাড়িয়ে নেয়া মুস্তাহাব
৪৭৭। ইয়াহয়া ইবনে আইয়ুব, সুরায়জ ইবনে ইউনুস, কুতায়বা ইবনে সাঈদ ও আলী ইবনে হুজর (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। একবার রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একটি কবরস্থানে এসে বললেন, তোমাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। এটা মুমিনদের বাড়ী। ইনশাআল্লাহ আমরাও তোমাদের সাথে এসে মিলব। আমার বড় ইচ্ছা হয় আমাদের ভাইদেরকে দেখি। সাহাবায়ে কিরাম আরয করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা কি আপনার ভাই নই? তিনি বললেন, তোমরা তো আমার সাহাবী। আর যারা এখনো (পৃথিবীতে) আসেনি তারা আমাদের ভাই। সাহাবায় কিরাম আরয করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনার উম্মতের মধ্যে যারা এখনো (পৃথিবীতে) আসেনি তাদেরকে আপনি কিভাবে চিনবেন? তিনি বললেন, “কেন, যদি কোন ব্যক্তির কপাল ও হাত-পা সাদাযুক্ত ঘোড়া ঘোর কালো ঘোড়ার মধ্যে মিশে যায় তবে সে কি তার ঘোড়াকে চিনে নিতে পারে না? তাঁরা বললেন, হ্যাঁ, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেন, তাঁরা (আমার উম্মত) সেদিন এমন অবস্থায় আসবে যে, উযুর ফলে তাদের মুখমণ্ডল হবে নূরানী এবং হাত-পা দীপ্তীময়। আর হাউযের পাড়ে আমি হব তাদের অগ্রনায়ক। জেনে রাখ, কিছু সংখ্যক লোককে সেদিন আমার হাউয থেকে হটিয়ে দেয়া হবে যেমনিভাবে পথহারা উটকে হটিয়ে দেয়া হয়। আমি তাদেরকে ডাকব, এসো এসো। তখন বলা হবে, “এরা আপনার পরে (আপনার দ্বীনকে) পরিবর্তন করে দিয়েছিল। তখন আমি বলবঃ ″দূর হ, দূর হ।”
باب اسْتِحْبَابِ إِطَالَةِ الْغُرَّةِ وَالتَّحْجِيلِ فِي الْوُضُوءِ
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، وَسُرَيْجُ بْنُ يُونُسَ، وَقُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَعَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، جَمِيعًا عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ جَعْفَرٍ، - قَالَ ابْنُ أَيُّوبَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، - أَخْبَرَنِي الْعَلاَءُ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَتَى الْمَقْبُرَةَ فَقَالَ " السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ دَارَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ بِكُمْ لاَحِقُونَ وَدِدْتُ أَنَّا قَدْ رَأَيْنَا إِخْوَانَنَا " . قَالُوا أَوَلَسْنَا إِخْوَانَكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " أَنْتُمْ أَصْحَابِي وَإِخْوَانُنَا الَّذِينَ لَمْ يَأْتُوا بَعْدُ " . فَقَالُوا كَيْفَ تَعْرِفُ مَنْ لَمْ يَأْتِ بَعْدُ مِنْ أُمَّتِكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَقَالَ " أَرَأَيْتَ لَوْ أَنَّ رَجُلاً لَهُ خَيْلٌ غُرٌّ مُحَجَّلَةٌ بَيْنَ ظَهْرَىْ خَيْلٍ دُهْمٍ بُهْمٍ أَلاَ يَعْرِفُ خَيْلَهُ " . قَالُوا بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ " فَإِنَّهُمْ يَأْتُونَ غُرًّا مُحَجَّلِينَ مِنَ الْوُضُوءِ وَأَنَا فَرَطُهُمْ عَلَى الْحَوْضِ أَلاَ لَيُذَادَنَّ رِجَالٌ عَنْ حَوْضِي كَمَا يُذَادُ الْبَعِيرُ الضَّالُّ أُنَادِيهِمْ أَلاَ هَلُمَّ . فَيُقَالُ إِنَّهُمْ قَدْ بَدَّلُوا بَعْدَكَ . فَأَقُولُ سُحْقًا سُحْقًا " .

সহীহ মুসলিম

হাদীস নং:৩৮৭
আন্তর্জাতিক নং: ১৯৯ -
৮০. সর্বনিম্ন মর্যাদার জান্নাতবাসী
৩৮৭। আবু বকর ইবনে আবি শাঈবা ও আবু কুরায়ব (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেনঃ প্রত্যেক নবীর জন্য একটি বিশেষ দুআ আছে তন্মধ্যে সকলেই তাদের দুআ পৃথিবীতেই করে নিয়েছেন। আমি আমার দুআটি কিয়ামত দিবসে আমার উম্মতের জন্য রেখে দিয়েছি। আমার উম্মতের যে ব্যক্তি কোন প্রকার শিরক না করা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে সে ইনশাআল্লাহ আমার এ দুআ পাবে।
باب أَدْنَى أَهْلِ الْجَنَّةِ مَنْزِلَةً فِيهَا
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ - وَاللَّفْظُ لأَبِي كُرَيْبٍ - قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لِكُلِّ نَبِيٍّ دَعْوَةٌ مُسْتَجَابَةٌ فَتَعَجَّلَ كُلُّ نَبِيٍّ دَعْوَتَهُ وَإِنِّي اخْتَبَأْتُ دَعْوَتِي شَفَاعَةً لأُمَّتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَهِيَ نَائِلَةٌ إِنْ شَاءَ اللَّهُ مَنْ مَاتَ مِنْ أُمَّتِي لاَ يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا " .
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান